দেশভাগ, বাটওয়ারা, পার্টিশান – উপমহাদেশের চুপচুপে রক্তভেজা এক অধ্যায় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা, নির্মম কাটাছেঁড়া এই সবই ভারতে শুরু হয় মোটামুটি ১৯৪৭ এর পঞ্চাশ বছর পূর্তির সময়, অর্থাৎ ১৯৯৭ থেকে। তার আগে স্থাবর অস্থাবর সবকিছু ছেড়ে কোনওমতে প্রাণ নিয়ে পালানো মানুষজনও নিজেদের একান্ত আলাপচারিতায় এর হিংস্র ক্ষতবিক্ষত অংশটুকু সযত্নে এড়িয়ে যেতেন বা কোনও রূপকের (আগুনে ঝড় বা ভূমিকম্প) সাহায্যে বর্ননা করতেন। হ্যাঁ খুশবন্ত সিঙের ‘আ ট্রেইন ট্যু পাকিস্তান’ খুবই ব্যতিক্রমী ছিল। খুব সম্ভবত আউটলোক পত্রিকার বিস্তারিত আলোচ ... ...
সারা জীবনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বুঝেছি যে ক্যাপিটালিজম অথবা কমিউনিজম দুইই মানবজাতির পক্ষে চরম বিপদজনক। আজ সময় এসেছে নতুন চিন্তাভাবনা ও বিশ্লেষণ করার। নতুন রাজনীতি তৈরী করার। ... ...
০১. কবি শহীদ কাদরীর প্রথম প্রেমিকা, প্রথম স্ত্রী পিয়ারী বছর দশেক আগে এসেছিলেন ঢাকায়। বার্লিন প্রবাসী প্রায় ৬০ বছর বয়সী পিয়ারী এখনো দারুন সুন্দর, উজ্জল। ঢাকা ক্লাবের এক পার্টিতে কোনো এক সাংবাদিক বন্ধু পরিচয় করিয়ে দেন তার সঙ্গে।পানপ্রীতি, সাংবাদিকতা, নাকি অন্য কোনো কারণে জানি না, কেনো যেনো দ্রুত বন্ধুত্ব হয় তার সঙ্গে। পিয়ারী নিমন্ত্রণ করেন একসন্ধ্যায় তাকে সময় দেবার।ভূতের গলিতে তার এক ভাইয়ের ছোট্ট দোতলার ঘরের সোফায় আয়েশ করে বসি দুজনে। আমি পছন্দের রক্ত গোলাপ কলিরগুচ ... ...
মৎস্য পুরান (১)----------------------সেদিন ভোররাতে একটা পুরোনো সপ্ন দেখলো মিতুল। স্বপ্ন না বলে বহুযুগ আগের স্মৃতি ভেসে ওঠার মতো ব্যাপার মনে হলো। একটা আড়েবহরে তিনফুট বাই চারফুটের একুরিয়ামের কাঁচের ওই পাশে একটা গোল্ডফিস। প্রায় স্থির চোখে তাকিয়ে আছে। সাইজে প্রায় মিতুলের মাথার সমান বড়ো।***একুরিয়ামটা যেরকম মিতুলদের পুরোনো বনেদি বাড়ির টানা বারান্দার পশ্চিম কোনে থাকতো। ইস্কুল থেকে বিকেল তিনটের দিকে ফিরে কাঁধের ব্যাগ (যার ওজন প্রায় মন খানেক মনে হতো তখন) হেঁইও বলে ঘরে ছুঁড়ে ফেলে , একু ... ...
ঋতুবৃত্তান্ত এক কিস্তিতে শেষ হবার নয়। এতো বহুমাত্রিক তাঁর কাজ যে বারবার দেখি। ফিরে ফিরে দেখি। হয়তো একটু বেশিই সাজানো গোছানো। একটু বেশি মাত্রায় নান্দনিক। সাজের টেবিলে ঠিক যে ফুল থাকলে মানায় তাই থাকে। ঠিকঠাক থাকে পর্দার রং। দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথের ছবি চোখ দিয়ে কথা বলে। অধিকাংশ চরিত্র কথা বলেন নিচু স্বরে। পরিশীলিত। মৃদু।সোফিস্টিকেশনের চূড়ান্ত। খাবার টেবিলের আলো থেকে শুরু করে ল্যাম্প শেড, পোশাক ,গয়না, কোথাও এতটুকু খুঁত নেই। ঋতুপর্ণর ছবিতে অন্দরসজ্জা। এই নিয়ে একটা প্রবন্ধ হয়। লেখার সুপ্ত ইচ্ছেও আছে। কারণ ওঁর ছবিত ... ...
ভাস্কর বলত, তার মাথায় একটা প্রজাপতি ছিল। কিছু একটা লেখার চেষ্টা করেছিলাম সেটা নিয়ে কয়েক বছর আগে। কি মনে করে উদোমাদা সেই লেখা ছেপেও ছিল 'যত্নঘর' (যেটার নতুন নাম রেখেছি 'প্রত্নঘর')। কথাটা সেটা নয়; কথাটা হল প্রজাপতি হোক বা শুয়োর, প্রত্যেকের মাথায় একটা করে জরায়ু থাকে। আর সেই জরায়ুতে থাকে একটা ভাবনা। সব ভাবনা ফাটে না। কিন্তু ফেটেও আটকে গেলে? কনসটিপেশন জানেন? কিম্বা, সিজারিয়ান ডেলিভারি? অথবা, রাইটার্স’ ডেজার্ট? এগুলোর কোনওটাই টের না থাকলে থেমে যান, আর এগিয়ে লাভ নেই। অনেকেই নিশ্চই ... ...
ধানজমির মাঝে এক্সোটিক রেষ্টুরান্ট! জীবনে ভাবিনি এ জিনিসও দেখতে হবে! যাঁরা বালি গেছেন তাঁরা হয়ত জানবেন আরো নানাবিধ খাবারের মধ্যে বাইরের লোকেদের কাছে বালির এক অন্যতম জনপ্রিয় ডিসের নাম ‘ক্রিসপি ডাক’। মানে ঠিক হাঁসের মাংস ডিপ ফ্রায়েড বললে ওই ডিসটিকে ঠিক ঠাক সম্মান দেওয়া হবে না, কিন্তু অনেকটা তাই। এমনিতে বালির প্রায় সব রেষ্টুরান্টেই এই ক্রিসপি ডাক সার্ভ করা হয় – তবে আমি বলব যদি বালি যান তাহলে উবুদের দিকে বিস্তৃর্ণ ধানক্ষেতের মধ্যে বেশ কিছু খুব সুন্দর সুন্দর রেষ্টুরান্ট আছে, সেখানেই খেতে। এগুলো মূলত টুরিষ্টের কথা ভেবেই বানানো – কিন্তু একটা অভিজ্ঞতা। অনেক রেষ্টুরান্ট আছে, কিন্তু সব থেকে বিখ্যাত বা জনপ্রিয় মনে হয় ‘বেবেক টেপি সাওয়া’ (Bebek Tepi Sawah) নামক রেষ্টুরান্টটি। ... ...
আঠেরোশোতে আলেক্সান্ডার কানিংহ্যাম, তারপর জন মার্শাল, হ্যারল্ড হারগ্রিভস হয়ে সারনাথে শেষ খোঁড়াখুঁড়ি করেছেন দয়ারাম সাহানি। এখানে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে বারোশো শতাব্দীর সময়কালীন একগাদা বিহার , স্তুপ , মন্দির , লিপি , মূর্তি পাওয়া গেছে। জার্মান প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্রিডরিখ অস্কার ওয়ের্টেল সারনাথের অশোক স্তম্ভ আবিষ্কার করেন ১৯০৫ সালের মার্চ মাসে। এত এত জিনিস পাওয়া যাচ্ছিল দেখে ১৯১০ সালে জন মার্শাল উদ্যোগ নিয়ে সেসব জিনিস রাখার জন্য অর্ধেক বৌদ্ধ সংঘারামের মত ধাঁচে সারনাথ সংগ্রশালা বানানোর নির্দেশ দেন। জাতীয় প্রতীকের সঙ্গে নিজস্বী তোলার ভিড় কমাতে এখন সারনাথ সংগ্রহশালায় মোবাইল নিয়ে ঢোকা বারণ। বাইরে বিনামূল্যে ব্যাগ এবং মোবাইল জমা রাখার লকার আছে। ... ...
১.রাজধানী এক্সপ্রেস তুমুল গতিতে ছুটে চলেছিল।তখন অনেক রাত। যাত্রীরা নিজেদের বার্থে শুয়ে ঘুমে মগ্ন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেনের কামরার জানলাগুলো শক্ত করে আঁটা। তার ঝাপ্সা কাঁচে কালো মসৃণ রাতের ছায়া পিছলে পিছলে যাচ্ছে। কখনও কখনও শোনা যাচ্ছে দু একটা পায়ের শব্দ। কখনও বা বেসিনের জলের কলের কলকল। একটা সুন্দর দুলুনি অনুভব করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। তিনি মানে যে কেউ হতে পারেন। আমি, আপনি, বা অন্য কেউ। ধরে নেওয়া যাক, তাঁর নাম অমুক চন্দ্র অমুক। সংক্ষেপে অমুকবাবু। টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত মার্কা ... ...
কালীপূজোর সময় ছাত থেকে বোতলের সাহায্যে ছাড়া হত হাউইবাজি, পরের প্রজন্মে রকেট বোম। তারাও ফিরে আসত প্যারাবোলার পথেই। কিন্তু প্যারাবোলার গঠন তো রেললাইনের মত সমান্তরাল নয়, বরং খানিকটা চুলের কাঁটার মত; ফলে শুরুর বিন্দু আর শেষের বিন্দু একজায়গায় মেলে না। ভূমি একই, কিন্তু দুটোর মধ্যে বেশ কিছু তফাৎ থেকে যায় । ... ...
মিছিল শুরুর তাড়া ছিল, কিন্তু কাজ সারতে বেলা গেল দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম যাদবপুরে গিয়ে মিছিল ধরব। চায়ের দোকানে প্রায় একঘন্টা উসখুস করার পর দূর থেকে দেখি শীত এলে বসন্ত কী কাছে না এসে পারে, এই কবিবাক্য মনে করিয়ে দিয়ে, এগিয়ে আসছে কলকাতা পুলিশের গাড়ি আর পুলিশ। পেছনে ম্যাটাডোরে মুহুর্মুহু শ্লোগান, গান। দুরন্ত ঝড়ের মতো রাজপথের দখল নিয়ে নিলো এনার্সি বিরোধী, সিএএ বিরোধী মিছিল। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সামিল অজস্র মুখ। মাথার ওপর আন্দোলিত জাতীয় পতাকা।থেকে থেকে তরুণরা ছুটে যাচ্ছে ... ...
ওয়েবসাইটে জ্যামিতির বনিয়াদ নিয়ে আমার এই লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে...এখানে লেখাটা একই ভাবেই দিলাম... আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ, আমার লেখাটা না পোষালেও ওয়েবসাইট টায় ঘুরে আসতে ভুলবেন না...আজ দ্বিতীয় পর্ব, যা ২৮শে জানুয়ারী, ২০১৫ ( ইংরাজি সন) এ প্রকাশিত হয়েছিল...জ্যামিতির গোড়ার কথা : ইউক্লিড থেকে রীমান ( দ্বিতীয় পর্ব ) ... ...
আজ সক্কাল সক্কাল উঠতে হয়েছে। টেলিফোন অফিস থেকে লোক আসবে। ভোরটা তরতাজা। কারণ উঠেই নিয়মমত হাফ গ্লাস সবুজ রসের সামনাসামনি হতে হল না আজ। না, রসতত্ত্বের নবীন কোন রস নয়, নির্ভেজাল করলার থকথকে নির্যাস, যা খেলে অন্তরাত্মাও খিঁচড়ে যায় সারাদিনের জন্য। সেটাই পান করি রোজ প্রাতঃকালে। ফলত, ক্লাসে যাই তেতো মুখে, লেকচার দিই তেতো স্বরে, নম্বর বসাই তিতকুটে। প্রেমের কথা যদি বলার হত, তবে বোধহয় তাও বলতাম তিক্ত সুরে। তবে রক্ষে এই যে, আমার এই আধবুড়ো বয়সে অত ঝুঁকি নিতে কেউ সাহস পায় না। ... ...
ভূতচতুর্দশী অমিত বাড়িতে ঢুকে বাজারের ব্যাগটা নামিয়ে বারান্দায় বসল। এবার এক কাপ চা আর খবরের কাগজ। এই পুজো গন্ডার দিনে বাজার করা যে কি চাপের। এপার বাঙলার লোকজন কাল লক্ষীপুজো করবে। বাজারে ভীড় ভর্তি। আয়েশ করে চেয়ারে বসতে না বসতেই রান্নাঘর থেকে বাসন্তীর আর্তনাদ ভেসে আসে, "দাদা আ আ, চোদ্দ শাক কই?!!!"এই রে! তালেগোলে ওটাই তো ভুলে গেছি, ভাবে অমিত। বলে, " নেই রে। বাজারে নেই। সব জায়গায় ফ্ল্যাট উঠে গিয়ে আর শাক পাওয়া যায় না। তুই ওই ধনেপাতা চোদ্দটা নিয়ে নে না!"কোমরে হাত দিয়ে বাসন্তী বাইর ... ...
১.কাল থেকেই আমার মালিকের মেজাজে আগুন। আমাকে দেখলেই কেমন উস্কে উঠছে সেটা। আমি তাই আড়ালে আছি আপাতত। দু'জনারই নাওয়া খাওয়া হয়নি কাল দুপুরের পর থেকে। অফিসের কাজ শেষে ফিরতে ফিরতে মালিকের সন্ধ্যে গড়িয়ে যায়। আমি তখন একাই থাকি বাড়িতে। সকালে অফিসে বের হবার আগে আমার দুপুরের খাবার বন্দোবস্ত করে তবেই অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন মালিক।গতকালও রুটিন ... ...
হিন্দু মহাসভা আর এস এস জনসঙ্ঘ বিজেপি - হিন্দুত্ববাদ ও তার ইতিহাস------------৩ অক্টোবর ২০১৪, বিজয়া দশমীর দিনটাতে একটা বিশেষ ঘটনা ঘটল। সেদিন বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর দূরদর্শনের মতো সরকারী প্রচারমাধ্যমে ‘জাতির উদ্দেশে’ বক্তব্য রাখার জন্য সসম্মানে জায়গা করে দেওয়া হল বর্তমান সঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী প্রজাতন্ত্র দিবস বা স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেই চিরাচরিত প্রথার সঙ্গে বিজয়া দশমীর দিনটাকে কেন জুড়ে নেও ... ...
গত ৯ বছরের প্রবাসী জীবনের জ্বালায় গাদা গাদা মিছিলে পাশে থেকেছি শুধু মনে মনে আর অন্তর্জালের জগতে... শহর কাঁপানো হোককলরবের বৃষ্টিভেজা আগুনের দিনে ফেবুকে কটা সলিডারিটি পেজের মডারেশনের কাজ, অসংখ্য চ্যাট, স্কাইপ কল আর আইএসডি কলের বাইরে কিছুই করতে পারিনি, তাতে ওই মূহুর্তে ওইখানে না থাকতে পারার আপসোস, ছটফটানি সামলানো যায় না অথচ নিজের প্রবাসকে অভিসম্পাত দেওয়া ছাড়া খুব কিছু করারও থাকে না। এসবের মধ্যেই বেড়েছে বয়স, যত না শরীরের, তারও বেশী হয়ত বা মনের।অন্তত তাইই ভাবতাম। এতগুলো বছর বাদে ... ...
ওয়েবসাইটে জ্যামিতির বনিয়াদ নিয়ে আমার এই লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে...এখানে লেখাটা একই ভাবেই দিলাম... আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ, আমার লেখাটা না পোষালেও ওয়েবসাইট টায় ঘুরে আসতে ভুলবেন না...আজ দ্বিতীয় পর্ব, যা ২৮শে জানুয়ারী, ২০১৫ ( ইংরাজি সন) এ প্রকাশিত হয়েছিল...জ্যামিতির গোড়ার কথা : ইউক্লিড থেকে রীমান ( চতুর্থ পর্ব ) ... ...