অ্যাডমিন, পর্বগুলোর লিংক পাশাপাশি করে দেবেন, প্লীজ। ... ...
দূরবীন সিংযের একটি বৈশিষ্ট্য হল উনি কখনও কারও ঘরে সিঁদ দিতেন না, সোজা পাঁচিল টপকে ঢুকতেন। উনি সুযোগ পেলে যেকোন রাজ্যে পোলভল্ট চ্যাম্পিয়ন হতে পারতেন। গোড়ার দিকে টাকাপয়সার টানাটানি হলে কালেভদ্রে পাঁচিল টপকাতে যেতেন। পরের দিকে এ’ধরণের কাজকম্মো কখনো সখনো শুধু নতুন চ্যালাদের প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং দেবার জন্যে করতেন। সে যুগে চোর শুধু চোরই হত, আর ডাকাতেরা ডাকাত। ... ...
দেখি দুজন বয়স্ক সুদর্শন সুপোশাক পরিহিত মানুষ এসেছেন এইচ আইভি নিয়ে কথা বলতে, এরকম বয়সের লোকজন সাধারণত আসেন কোনও না কোনও এন জি ও র তরফে এইচআইভি সচেতনতার কাজ কর্ম করতে সাহায্য পাওয়া যাবে কিনা জানতে। কথা বলতে গিয়ে দেখলাম না এনারা দুই বন্ধু এসেছেন এইচ আইভির পরীক্ষা, চিকিৎসা কোথায় হয় সেসব জানতে।মনে মনে ভাবলাম আজকাল তো অনেকেই ছেলে মেয়েদের বিয়ের আগে থ্যালসেমিয়া এইচ আইভি পরীক্ষা করায়, ওনাদের হয়তো তেমন কোনও ব্যাপার। তাও বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে গেলে নিজেকে যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ রাখা উচিত সে ভাবেই আলোচনা শুরু করলাম। জানতেও চাইলাম ওনারা কেন হঠাৎ এইচ আইভি পরীক্ষা করাতে চাইছেন। কথায় কথায় জানলাম ওনাদের কোনও এক আত্মীয় বিদেশ থেকে ফিরেছেন, অনেক দিন যোগাযোগ না থাকায় তার যাপণ সম্পর্কে ওনারা জানেননা, সে হয়তো সেখানে ড্রাগ নিত, তার গায়েও উল্কি আছে অনেক তাই ওনারা তাকে এইচ আইভি পরীক্ষা করাতে চান। আর তাই সরাসরি স্বাস্থ্য দপ্তরে খোঁজ নিতে এসেছেন, বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে রাজ্য সরকারের এডস্ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় পৌঁছেছেন। তার সঙ্গে সঙ্গে আরও জানতে চাইলেন এডস হয়েছে কিনা সেটাও কি করে জানা যায়। দেখলাম এনারা এডস আর এইচ আইভি র তফাতটা জানেন। কথা বলতে উৎসাহ পেলাম। ওনারা এইচ আইভি নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন নিয়েও জানতে চাইলেন। জানালাম বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এইচ আইভি নিয়েও লোকজন দীর্ঘদিন ভাল থাকেন, এবং আমিও ভাল আছি। ওনারা ধাতস্থ হলেন। কিন্তু মানুষের কৌতূহল অসীম, ওনাদের মধ্যে একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন কিভাবে আমার এইচ আইভি হল। আজকাল এটাতে অবাক হই না হাসিমুখে বললাম, "সেটা জানাটা বোধহয় জরুরি না"। ... ...
বাবা একদিন বললেন পনের-কুড়ি দিন তো হয়ে গেল, আর ফোন নয়; একবার ওই অফিসে গিয়ে খোঁজ নাও। আর এক বন্ধুও সেখানে চাকরি পেয়েছিল আর আমারই মত হাপিত্যেস করে বসে ছিল। দুজনে মিলে গেলাম ডালহৌসি পাড়ার সেই অফিসে যেখানে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আর গিয়ে বুঝলাম মহামতি নিৎসে কেন ওই কথাটা বলেছিলেন। কথাটা হল, “যাবতীয় খারাপ জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে বাজে হল আশা, কারণ মানুষের যন্ত্রণাকে সে ব্যাটা দীর্ঘায়িত করে।” ... ...
সত্যি কথা, পার্কসার্কাসের ওই ১/সি সার্কাস মার্কেট প্লেসের তিনকামরার ছোট্ট ফ্ল্যাট, যার ভেতরে গাদাগাদি করে আমরা অন্ততঃ আঠেরো জন থাকি, তাতে চলতে ফিরতে কারও না কারও গায়ে ধাক্কা লাগার কথা। লাগত না, তার দুটো কারণ। এক, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের সংখ্যা কমতে থাকত। সবাই এক এক করে স্কুল-কলেজে বা অফিস-কাচারিত, একেবারে ‘যাও সবে নিজ নিজ কাজে’। ... ...
তবুও কোথাও যেন একটা খচখচানি। বুঝতে পারতাম না আমি কেন আলাদা! সবাই যখন সিনেমার নায়িকাদের শরীর, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের হাতছানিতে ছন্নছাড়া হতে রাজী বুঝতে পারতাম না আমার কেন মনে মনে নায়কের পৌরুষ বা লোমশবুক অনেক বেশি টানে। দ্য গ্রেট আর্টিস্ট পত্রিকার পাতায় পাতায় নগ্ন পুরুষ দেখার লোভ কেন এত বেশি। বলতে দ্বিধা নেই ওইবয়সে ক্লাসের বন্ধুদের সাথে ক্লাসের কোলের ওপর ব্যাগ রেখে গোপন অঙ্গে স্পর্শের হাতছানি অগ্রাহ্য করিনি। ... ...
বিজ্ঞান এক self-correcting, self-nourishing, ever-expanding বিদ্যা। অসম্পূর্ণতাই তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তাই আমাদের হাতে অন্তত একটা অসম্পূর্ণ ছবি গবেষকরা তুলে দিয়েছেন। নতুন কোনো টুকরোর হদিস পেলেই পরিমার্জন, পরিবর্ধন চলছে। অনেক জায়গা আবছা, ছোটো ছোটো সূত্র ধরে একটা অস্পষ্ট রূপরেখা আমাদের সামনে ফুটে উঠছে। তাই ভেজা-ডিম জলজ উভচরদের থেকে শুকনো-ডিম স্থলজ চারপেয়েদের বংশপঞ্জী এবং বৈশিষ্ট্য যদি খুঁজে দেখতে যাই, তাহলে ঝকঝকে পরিষ্কার ধারণার চেয়ে ছোপ-ছোপ ধারণা পাবার সম্ভাবনাই বেশী। আর সেই শতছিন্ন রোডম্যাপ ধরেই আমাদের এই গাইডেড ট্যুর। ... ...
বাবা আমার নাম রেখেছিল কুন্দনন্দিনী, বিষবৃক্ষের নায়িকা। কিন্তু আমার বয়ে গেছে অমন ন্যাকাবোকা মেয়ে হতে। আমি একেবারে রোহিণী, হ্যাঁ, ‘কৃষ্ণকান্তের উইলে’র রোহিণী। আমি যা চাই তা আদায় করে নিতে পিছপা হই না।আমি দিদির মত অত ভাবের ঘোরে থাকি না। বেশি সংস্কৃত সাহিত্য আর বৈষ্ণব পদাবলী পড়লে অমন হয়। দিদির ওই ‘মথুরা নগরে প্রতি ঘরে ঘরে যাইব যোগিনী হইয়ে’ ভাব আমার পোষায় না। আসলে ওই যারা অমন ‘ধরি ধরি মনে করি ধরতে গেলে আর পেলাম না’ ভাবে থাকে তারা হয় নিজেকে ঠকায়, নয় হিপোক্রিট। ... ...
আমরা বাচ্চারা ফুটপাথ আর গলির মুখে চার আনার রবারের বল নিয়ে ক্রিকেট খেলায় মশুগুল। ব্যাট করছে নীচের তলার আখতারদা -- নিলোফারের ছোড়দা -- ক্লাস এইটে পড়ে। বল করছি আমি, ক্লাস টু। লোপ্পা বলটায় আখতারদা এমন মারলো যে রাস্তা পেরিয়ে সার্কাস হোটেলের বারান্দায় শিককাবাব তৈরির উনুনের পাশে গিয়ে পড়লো। ওরা গেল খেপে, বল আটকে রেখে দিল। আখতারদা গিয়ে কীসব বলে নিয়ে এল বটে, কিন্তু তারপর ব্যাটটা অভিজিতের হাতে দিয়ে নিজে বল তুলে নিল। ... ...
গাড়ি, মহাভারত, কৃষ্ঞ, কর্ণ, বুদ্ধদেব, নেতাজী, রবীন্দ্রনাথ | সবাই একসূত্রে বাঁধা। ... ...
যখন দেখলাম আমার এইচ আই ভির পুরো গোপন ব্যাপারটা হাট হয়ে গেল, তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এসব নিয়েই চলব। যত বেশি আমি আপসেট হব ততবেশি সমাজ আমার ঘাড়ে চেপে বসবে। যতই জানি একই সুঁচ- সিরিঞ্জের ব্যবহারে, সংক্রমিত রক্ত বা রক্তজাত দ্রব্যের সংবাহনে, এমনকি গর্ভবতী মা যদি এইচ আই ভি আক্রান্ত হন তাহলে তার ভবিষ্যৎ শিশুর এইচ আই ভি সংক্রমণ হয়। তবুও অসুরক্ষিত বা বিনা কন্ডোমে যৌনমিলনে এইচ আই ভি ছড়ানোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেননা খিদে ঘুমের মত সেক্সটাও যে মানুষের জীবনে অপরিহার্য। আর সেক্স নিয়ে আমাদের অনেকরকম ট্যাবু, অনেকরকম ঢাকঢাক গুড়গুড়। আর তাছাড়া তথাকথিত যৌনতার বাইরের যৌনতা তো এই সেদিনও আইনস্বীকৃত ছিল না। এর ওপর ছিল আমার চূড়ান্ত নীতিবাগীশ দায়িত্ব। তাই যত বেশি আমাকে কোনও সম্পর্কে যেতে দেখলে লোকে আমার এইচ আই ভি নিয়ে বাকীদের সাবধান করত, তার থেকেও বেশি আগেভাগে কোনও ক্যাজুয়াল সম্পর্কে যেতে হলে আমার এইচ আই ভি নিয়ে আমিই সোচ্চার হয়ে বলতে শুরু করলাম। তাতে করে আমার যৌনজীবনটা অনেকটা কম্প্রোমাইজড হলেও মনে হত সুখের থেকে স্বস্তি ভাল। যদিও আজ আমার অনেক বন্ধুই সম্পর্কে আছেন যাদের একজন এইচ আই ভি আক্রান্ত আর অন্য জন এই আই ভি আক্রান্ত নন। ... ...
ছবি আঁকার প্রতি আমার আগ্রহ ছিল ছেলে বেলা থেকেই, পুসুমার উতসাহে বাড়ির পাশে আঁকার স্কুলেও যাওয়া শুরু হয়েছিল, প্রায় হাতেখড়ির সঙ্গে সঙ্গেই ।আমাদের বাড়িটা ছিল বাস রাস্তার লাগোয়া। তাই বাড়ির বাইরে যাতে খুব বেশি যেতে না হয়, তারজন্যই হয়তো ছবি আঁকার পাঠ শুরু হয়েছিল আমার। খেলাধুলা আমায় কোনও কালেই টানেনি। পুসুমার দৌলতে খবরের কাগজের সাথে সাথে আসত চাঁদমামা। আর বামপন্থী ছোটকাকুর দৌলতে আসত সোভিয়েত ইউনিয়ন পত্রিকা। ছবিতে রুশ উপকথার গল্প, আর চাঁদমামার উত্তর রামায়ণ আর বিক্রমাদিত্যের ও বেতালের গল্প আজও আমার স্মৃতিতে অমলিন। ... ...
একমাস আগের কথা।তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে - মার্চের ২৬। সেদিন ঠিক বেলা একটার সময় আমার কাছে একটা ফোন এসেছিল।- ওয়াচ অ্যান্ড সিকিউরিটিজ? বিলাসপুর, লিংক রোড?-জী হ্যাঁ, বোল রহা হুঁ। - মিঃ কোসলে? ডায়রেক্টর?- না, আমি ওঁর অ্যাসিসট্যান্ট বিশ্বাস বলছি।উনি একটা কাজে একটু বাইরে গেহেন। কাল রাত্তিরে ফিরবেন।-- সৌরভ? সৌরভ বিশ্বাস? বাবুমোশায়? জাস্ট দ্য ম্যান আই ওয়ান্ট!--জী হ্যাঁ, আপ কৌন?-- কাজের কথাটা আগে শুনে নিন। আগামীকাল আপনাকে ইন্দোর এক্সপ্রেসে বুড়ার যেতে হবে। বুড়ার হোল জবলপুর লাইনে শাহডোলের আগের স্টেশন। পরশুদিন বিকেলে একই ট্রেনে করে ফেরতের ব্যবস্থা। টিকিট, অন্য খরচা এবং কিছু অ্যাডভান্স একটু পরে আজ রাত্তির আটটার মধ্যে আপনাদের ... ...
ধর্মের সৃষ্টি হয়েছিল হয়তো সামাজিক বিধি-বিধান থেকে অথবা আশঙ্কা ও উদ্বেগ থেকে মুক্তির আশায়। কিন্তু সেই ধর্মই এখন সারা বিশ্বের অন্যতম উদ্বেগের মূল কারণ ... ... ...
- আমাদের বাড়িটা খুলে দিতে পারি? - মানে ঢুকতে ভিসা পাসপোর্ট লাগবে না? - স্টপ ইট। বলছি আমি একা মানুষ। নানান বাড়িতে ঘোরাঘুরি করে দান সংগ্রহ আর প্যাক করার চেয়ে ভালো হয় যদি সেই সব দান আমাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়। তাহলে বাড়িতে বসে আমি আর কয়েকজন সেগুলো বেঁধে দিতে পারি। শুক্র থেকে রবিবার মায়াও সাহায্য করবে। - তাহলে চালাঘর আর সুইমিং পুলটাও খুলে রাখো। এখন কেউ কি আর জলে নামবে? ... ...
দলগঞ্জন সিং কোসলে বা ডি এস কোসলে রিটায়ার হওয়ার আগে বিলাসপুর জেলার ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের বড়কর্তা ছিলেন। র্যাঙ্ক ছিল ডেপুটি সুপারিন্ডেন্ট অফ পুলিস, সংক্ষেপে ডিএসপি। উনি আইপিএস ন’ন; খেটেখুটে সারাজীবন পরিশ্রম করে রিটায়ার হবার তিনবছর আগে ডিএসপি র্যাংক পান। চাকরি আরম্ভ হয়েছিল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর হয়ে। কোসলে রিটায়ার করেছেন বছর পাঁচ, কিন্তু এখনও ‘ডিএসপি স্যার’ সম্বোধন শুনতে ভালবাসেন। ... ...
ভাবলাম, বাঁচা গেল। কারণ, ছোড়দি মানে কুন্দনন্দিনী যে আমাকে উপেক্ষা করছেন তা আমার একেবারে ভালো লাগছে না। আমার কী দোষ? অথচ উনি একবারও আমার দিকে তাকাচ্ছেন না। আমার কাছে মোবাইলটা জমা রাখবার সময়ে হোক বা স্টেটমেন্ট সাইন করে কলম ফেরৎ দেবার সময় – ওঁর দৃষ্টি রঞ্জন রশ্মির মত আমাকে ভেদ করে আরপার হয়ে পেছনের দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। ... ...