মা গো আমায় ছুটি দিতে বল, সকাল থেকে ভ্যারেণ্ডা ভেজেছি যে মেলা। বিপি হাই, হ্যালো বলছে টালমাটাল সবুজ পথ। এখন কোথাও সকাল কোথাও রাত, গেঁটে বাত, আর এইসব নিয়েই উড়ালপুল, তার নীচে যেমন সংসার। প্রচুর আলো জ্বলছিল সারারাত, সাঁইসাঁই রকেট, চুমুক জুড়ে ছিল তুবড়ি, হাতুড়ি ও কাস্তে, এইভাবে একখানা ছাদ ঘুরে আসতে কলম্বাসের আর কতক্ষণ সময় লাগে। কতগুলো পাতা, বইখানা ফরফর করছিল টেবেলে, পাখাও যেমন ঘুরছে, মাছ নিয়ে গেছে চিলে। আমাদের গল্পের ঈ উঠে চলে গেল, মেঝে জুড়ে ছড়ান নিফার, সীতা যে কোথায় চলে যান, দেবা ন জানন্তি । জবার ডাল ... ...
বাঙালি মধ্যবিত্তের মার্জিত ও পরিশীলিত হাবভাব দেখতে বেশ লাগে। অপসংস্কৃতি নিয়ে বাঙালি চিরকাল ওয়াকিবহাল ছিল। আজও আছে। বেশ লাগে। কিন্তু, বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনার প্রবল ক্ষোভ ও অপমানে আপনার কি খুব পরিশীলিত, গঙ্গাজলে ধোওয়া আদ্যন্ত সাত্ত্বিক শব্দ মনে পড়ে? না প্রাণভরে বেশ খারাপ খারাপ কথা উচ্চারণ করতে মন চায়? আপনি কি কিশোর বয়সে, তরুণ বয়সে একটিও খারাপ উচ্চারণ-অযোগ্য অসাংবিধানিক অমার্জিত শব্দ বলেন নি? ঠাট্টাছলেও বলেন নি? বেশ, যদি একদমই না বলে থাকেন তাহলে তো আপনি প্রায় বোধি গাছের তলায় বসে আছেন, চরাচর আপনার ... ...
লে-পর্ব (০৩.০৯.২০১৮)--------------------------দিল্লী থেকে সরাসরি ফ্লাইটে লাদাখের মূল শহর লে-তে এসে পৌঁছলে একটা কমন প্রবলেম হয়। হাই অল্টিটিউড সিকনেস। হওয়ারই কথা। দিল্লীর অল্টিটিউড ৭০০ ফুট। লে সেখানে ১১,৫০০ ফুট। মানে, দেড় ঘন্টায় ঝপ্ করে প্রায় ১১,০০০ ফুট অল্টিটিউড গেইন। শরীরের কলকব্জা বিগড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। লে এয়ারপোর্টে নেমেই শুনলাম মাইকে অ্যানাউন্স করা হচ্ছে ... কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা, পারলে ৭২ ঘন্টা রেস্ট নিন। গুছিয়ে জল খান। নিজেকে অ্যাক্লেমাটাইজ করুন। তারপর যত খুশি ঘুরে বেড়ান। ... ...
এই ভাবেও জাস্ট, বাই বলে চলে যাওয়া যায়। আপাতত বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় কাটআউট হয়ে নন্দনের গেটের বাইরে, তবে বাঁয়ে রয়ে গেছে। আমরা ডান দিকে রই, প্রেম ও চুলবুলি জলাঞ্জলি দিয়া রে। বাকী রইল পল গুজম্যান ও হুয়ো সিয়ো-সেন। ২১ শে পড়ল কলির চলচ্চিত্র উৎসব। মদের দোকানের বাইরে বা ভেতরে এখন সে সহজেই ঢুকে পড়তে পারে। নন্দনের দুই কদমে আপাতসুখের স্পাইসগার্ডেন এখন ড্যান্সবার। তবে এখন দাদাযুগ। সকলের হাতেই সাদা জলের বোতল। কতটা সাদা আমি জানি না। ১৯৯৮ সালে চলে যাচ্ছি বারবার, ফাঁকা বাসে গুটিকয় লোক। দুই বৃদ্ধ - ... ...
গল্পের বই হিসেবে "পাড়াতুতো চাঁদ" নাম একটু মিস্টিক। প্ল্যাটফর্মের কৌলিন্য না বিচার করে যেসব লেখক অকপটে গভীর ভাবনার ফসল প্রকাশ করে চলেন , ইন্দ্রাণী সেই গোত্রের লেখক। আন্তর্জালে বহু গল্প প্রকাশিত, যার অধিকাংশই উচ্চ প্রশংসিত হলে যা হয়, সেসব কিছুই না করে ইন্দ্রাণী আরো ভালো লেখার চেষ্টা, বলা ভালো আরো ভালো আঁকার চেষ্টা করে গেছেন। নিজের লেখা নিয়ে কঠোর সমালোচক হওয়ার একটা ভালো দিক হলো, তাতে সত্যিই লেখা ভালো হয়। কিন্তু খারাপ দিক হলো লেখক ও লেখাগুলো (যাদের মজা করে লেখক "টেখা" বলে থাকেন) ক্রমশ অজস্র বাজারি ছ ... ...
গরুমোষ আর দেবাসুর! এই সব প্রশ্ন ধরে আর সামান্য কিছুটা এগোলেই আমরা আলোচ্য সমস্যার একেবারে মূলে পৌঁছে যেতে পারব এবং সমাধানেরও কিঞ্চিত হদিশ হয়ত পেয়ে যাব। এবার সেই কথা।সকলেই জানেন, হিন্দু ধর্মের ক্ষেত্রে বৌদ্ধ খ্রিস্টান বা ইসলাম ধর্মগুলির মতো কেন্দ্রীয় শাস্ত্র গ্রন্থ, অনুশাসন, আচারবিধি, (এক বা বহু বচনে) নির্দিষ্ট দেবতা বা দেবমণ্ডলি, সামাজিক রীতি—কোনো কিছুই নেই। নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতে যাকে জনজাতীয় ধর্ম (tribal religion) বলা হয়, তার মতোই এর সমস্ত প্রকরণই প্রকটভাবে আঞ্চ ... ...
আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী ,শ্যামের নাম ‘ কানাই ‘ রেখে রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বে রাজ্যে চুক্তি চাষ শুরু হতে চলেছে । চুক্তি চাষ কথাটি যেহেতু সিঙ্গুর ,নন্দীগ্রাম পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে বিপদজনক সেহেতু এই প্রকল্পটির নাম রাখা হয়েছে পার্টিসিপেটারি ফার্মিং - অংশগ্রহণ মূলক চাষ । আনন্দবাজারের এই খবর যদি সত্য হয় তাহলে শাসকের পালটি খাওয়া শুরু ,তাও এমন এক ভদ্রলোকের হাত ধরে যিনি বিগত সরকারের সময়ে সমস্ত কৃষক বিরোধী কাজকর্মের পাণ্ডা ছিলেন । আদিবাসি জমি ,খাস জমির চরিত্র বদল করে হাজার হাজার একর জমি উনি উত্তর ... ...
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা দেখার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। কোভিড জনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় ওটিটি গুলি লাভবান হয়েছে। আগামী দিনে সিনেমা হল খুললেও দর্শক কতটা ফিরে আসবেন তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এর ফলাফল কী হবে, কারা লাভবান হবেন আর কাদের হবে ক্ষতি সেটা নিয়ে নানা ভাবনা মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই লাভ ক্ষতির হিসেবটা সবসময়ই আপেক্ষিক। দর্শক হিসেবে আমাদের কি প্রাপ্তি, সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে আর আর্ট হিসেবে বিকাশের পথে এই পরিস্থিতি কতটা সহায়ক তা নিয়ে নানা ভাবনার সমাবেশ দরকার। তার প্রাথমিক সূত্রপাত এই লেখাটি। ... ...
অরিনের এক গুচ্ছ ভাট করোনা নিয়ে । ... ...
এই উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও একটা পাঁচিল খাড়া হয়ে গেল আড়াআড়িভাবে। ভারতবর্ষে এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিয়ের মধ্যে সামাজিক চোখ রাঙানি তো ছিলই,এবার তার সঙ্গে যোগ হল আইনি হাতিয়ার। ... ...
[তুরু তুরু তুরুরু বাজি বাজেনেই, পারায় পারায় বেরেবং বেক্কুন মিলিনেই...এচ্চ্যা বিঝু...বিঝু...বিঝু....এচ্চ্যা বিঝু..বিঝু বিঝু..বেক্কুনরে বিঝুর পাত্তুরুতুরু...]চাকমা ভাষায় ‘ফেগ’ কথাটির মানে হচ্ছে পাখি। বিঝু পাখি আমি কখনো দেখিনি, তবে শুনেছি, ছোট্ট এই রঙিন পাখিটি নাকি বিঝুর সময় অবিকল ‘বিঝু-বিঝু’ করে ডেকে ওঠে। তাই চাকমা লোকগানে গুনবন্দনা করা হয়েছে এই পাখির। তখন নাকি দূর পাহাড়ে পাপড়ি মেলে বিঝু ফুল।ওহ, বলতে ভুলে গেছি, বিঝু হচ্ছে চাকমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বা ... ...
রিহার্সাল দিতে দিতে একদিন নূপুর বললো, নাটক করতে গেলে তো গয়না কিনতে হবে - চলো চাঁদা তুলি। ক্লাসের মেয়েরা কতো আর চাঁদা দেবে, তবু কেউ কেউ দিল। সামান্য সেই টাকা নিয়ে নূপুর আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে এলো শহরের বড় ইমিটেশন গয়নার দোকানে। মালিক খুব সস্নেহ ব্যবহার করছিলেন কিন্তু নিজে নিজে গয়না কেনার উত্তেজনায় আমরা কী করে যেন শোকেসের কাঁচ ভেঙে ফেললাম। উনি আর কী করেন, বললেন স্কুলে জানাবেন। উপায়ান্তর না পেয়ে যৎপরোনাস্তি ভীত সন্ত্রস্ত আমরা সবাই গিয়ে দিদিমণিকে বলতেই দিদিমণি ক্ষোভে দুঃখে অস্থির। নূপুর কি করেছো, উইদাউট পারমিশন সরকারি স্কুলে চাঁদা তুলেছো। আমার মানসম্মান জলে গেল, বেআইনি কাজ করেছো তোমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। ঐসব নিয়ে একপ্রস্থ লাঞ্ছনা গঞ্জনা হলো। ... ...
আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী ১৯৬৮র শীতের শেষে ময়দানে মুক্তমেলার আয়োজন করলেন। এক রোববার। জানা গেল কোথায় তুষার রায় গাছের তলায় দাঁড়িয়ে তাঁর কবিতা ""ব্যান্ড মাস্টার'' পড়ছেন। সমরেশ বসু গান শোনাচ্ছেন দেখে সুনীল গাঙ্গুলী বলছেন আমিও গান গাইব। পাবলিক উৎসাহ দিচ্ছে—চালিয়ে যাও মহারাজ! কোথাও একটি আলাদা ভীড়ের সামনে কোন বাউল পল্লীগীতি গাইছে। কোথাও থিয়েটার ক্যাম্প বলে একটি নাটকের দল ভিয়েৎনাম নিয়ে নাটক করছে। ... ...
সতী : শেষ পর্বপ্ৰসেনজিৎ বসু[ ঠিক এই সময়েই, বাংলার ঘোরেই কিনা কে জানে, বিরু বলেই ফেলল কথাটা। "একবার চান্স নিয়ে দেখবি ?" ]-- "যাঃ ! পাগল নাকি শালা ! পাড়ার ব্যাপার। জানাজানি হলে কেলো হয়ে যাবে।"--"কেলো করতে আছেটা কে বে ? তিনকুলে কেউ আসে ? একা মাল। তিনজনের ঠাপ খেলে বাপ বলার জোর থাকবে না।"--"ঠাপের লোভ দেখাস না ওয়াড়া। একেই চড়ে আছে। ভালমন্দ করে দেব কিছু একটা।"--"ভালমন্দ করতেই তো বলছি শালা। তিনজন আছি। ঠিক সাল্টে নেব। কী ? ঠিক কিনা ?"প্রথমে ... ...
অন্যান্য আর পাঁচটা সাধারণ খুনের সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য ছিল না পঞ্চম শুক্লা মার্ডার কেসের। কিন্তু অতি সাধারণ হয়েও এই হত্যা রহস্যের জট খুলেছিল অভাবিতভাবে। বস্তুতপক্ষে এই কেসের সূত্র ধরেই মৃতদেহের সঠিক পরিচয় পেতে ভারতের বুকে প্রথম ব্যবহার করা হল সুপার ইম্পজিশন পদ্ধতি। যা তৎকালীন সময়ে ছিল বর্তমানের ডিএনএ পরীক্ষার সমতুল্য। ... ...
কিউবার বিপ্লবকে নতুন আলোয় দেখার চেষ্টা করা আজ প্রয়োজন। তার বৈশিষ্ট্যকে অনুধাবন করে, তার প্রাণবস্তুকে আহরণ করে ভারতীয় বাস্তবতার সঙ্গে তাকে অন্বিত করার চেষ্টা খুব জরুরী। হয়তো সেই স্বপ্নসম্ভব রোমান্টিক আদর্শবাদের স্ফূরণের কাল আজ নেই, কিন্তু আদর্শবাদ আর শুদ্ধতার আবাহন, সংকীর্ণতার বিসর্জনের অনেক সম্ভাবনা রয়ে গেছে যার উৎসভূমিতে কিউবার সেই রূপকথাসম বিপ্লবের ইতিহাসমন্থন আমাদের ফিরে যেতে প্ররোচিত করে। ... ...
দানিশ সিদ্দিকির কাজ নিয়ে একটা লেখার কথা ভেবেছিলাম। হয়তো কয়েক বছর পর হত, আবার হয়তো কোনওদিনই হত না। স্বাধীন ভারতের একমাত্র পুলিৎজার জয়ী ফোটো জার্নালিস্ট, তাঁর কথা দেশের মানুষ জানল তালিবানের হাতে মারা যাওয়ার পর। দানিশের কেরিয়ার আর ছবি নিয়ে বিশেষ আলোচনাও হল না, ন্যারেটিভ ঘুরিয়ে দেওয়া হল অন্যদিকে। ... ...
বুড়ার গেস্ট হাউসে জায়গা নেই, কারণ দুটো মাত্র ঘর। সে দুটোয় আমি এবং দুই বাঙালি দিদি আগে থেকেই রয়েছি। তাই আমার বস কোসলে স্যার আর বিলাসপুরের এসপি মিঃ শ্রীবাস্তব রাজবাড়িরই একটা ঘরে আস্তানা গেড়েছেন। ওঁরা সন্ধ্যেবেলা পৌঁছে আগে কুমারসাহেব এবং থানেদার ঈশ্বর পান্ডের সঙ্গে কথা বলে সব শুনে নিয়েছেন। জবানবন্দীর ফাইলের এক সেট কপি এখন ওনাদের কাছে। বডি রয়েছে বুড়ারের সরকারি হাসপাতালের মর্গে। সেখানে পাঠানোর আগে থানেদার ঈশ্বর পান্ডে বডি যে অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছিল তার ছবি তুলে নিয়েছেন। হাসপাতালের ডাক্তার রক্তের স্যাম্পলও নিয়েছে। ... ...
শিক্ষাচার্য বিদ্যুৎকুমার মধ্যাহ্নের দিবাস্বপ্ন দেখছিলেন। এমন সময় প্রধানসেবক এসে কাঁচুমাচু মুখে জানালেন -- চারদিকে কি লেখা হচ্ছে জানেন স্যার? বিদ্যুতের বড্ড তেজ করে দেব লো ভোল্টেজ। শুনে বিদ্যুৎকুমারের স্থির ভ্রূ কিঞ্চিৎ কুঞ্চিত হল। তিনি দাঁত খিঁচিয়ে বললেন, লো-ভোল্টেজ? দেখাচ্ছি তোদের। যন্ত্রবিদ, ইধার আও। আজ থেকে গোটা বিশ্বভারতীতে সারা রাত গনগন করে আলো জ্বলবে। কোথাও কোনো আলো নিভলেই, তোমার চাকরি নট। ... ...