না গুরুর বইয়ের কথা হচ্ছে না, সে তো না কিনলে আপনার ভদ্রসমাজে মুখ দেখানোর উপায় থাকবেনা। কিন্তু আর কী কিনবেন ঠিক করতে পারছেন না? বন্ধুবান্ধব নেট ঘেঁটে বইয়ের লিস্টি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে, আর আপনি ভ্যাবলার মতো হাঁ করে বসে আছেন? ঘাবড়াবেননা। কেবলমাত ডজনখানেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জেনে নিন, আপনার উপযুক্ত বই কোনটি। ... ...
আমরা বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণ হিসেবে গণ্য করি যে সময়কে, প্রফুল্লচন্দ্র তারই এক প্রতিভূ।ইউরোপের নবজাগরণের সঙ্গে তুলনীয় নাই হতে পারে আমাদের নবজাগরণ, হওয়া উচিত নয় এবং সম্ভবও নয়। কিন্তু বিজ্ঞান-কারিগরি ও শিল্পের আমূল পরিবর্তন কে বাদ দিয়ে কোনো রকম নবজাগরণের কথাই ওঠে না।সেদিক থেকে দেখলে নিজেদের মত করে বিজ্ঞান ও কারিগরি জ্ঞানের আত্তীকরণ করে, নিজেদের সমাজ সংস্কৃতি ইতিহাসের সঙ্গে সুসমঞ্জস ভারী শিল্পের পথিকৃৎ বলতে হয় প্রফুল্লচন্দ্রকেই। তিনি যেন প্রাচ্যের পার্কিন (স্যার উইলিয়াম হেনরি পার্কিন, কৃত্রিম জৈব রঞ্জক পদার্থের সংশ্লেষণ পদ্ধতির প্রথম উদ্ভাবক এবং শিল্পপতি, ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লবের নতুন ঘরানার প্রতিনিধি - বিজ্ঞানী এবং শিল্পপতি)। কিন্তু না, আমাদের ভাবনায় নবজাগরণ আসতে পারে, 'স্বদেশী শিল্প' হতে পারে, কিন্তু 'পুঁজি ‘ ‘শিল্প ' এসব হতে পারে না।আমরা বরং আক্ষেপ করেছি, এ হে, প্রফুল্লচন্দ্রের মত একজন ঋষিতুল্য মানুষ কিনা পুঁজিপতি বনে গেলেন! একটু বিপথে চলে যাচ্ছি বোধহয়।বেঙ্গল কেম-এর মত একটা উদ্যোগ যে শুধুমাত্র একটি উৎপাদনশিল্প, একটি কারখানা নয়, তার উপযোগিতা যে শুধু লাভ ক্ষতির হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না, সেটা আমরা বোঝার চেষ্টা করলাম না! ... ...
ভারতকে খুঁজে পাই ছ'বছরের কিছু বেশি আগে, যখন সদ্য অ্যামেরিকা এসেছি। অক্সিজেনের ঘাটতি না হলে সেটা যে ছিল টের পাওয়া যায় না, আমার ভারতে পাওয়াও কিছুটা ওরকম। ভৌগোলিক ভারতবর্ষে থাকতে মনেপ্রাণে উপলিব্ধি করতাম, কলকাতাটাই আমার দেশ। বাকি এলাকাগুলো পাসপোর্ট-ভিসাহীন বিদেশ, আসলে দেশ আর ঘরের পার্থক্য বুঝিনি। যাই হোক, সেই পার্থক্য নিরূপণের জন্য এ লেখা নয়, তবে দেশ মানে কেবল ঘুম থেকে দাঁত মাজতে মাজতে পাড়া ঘোরার আরামটুকুই নয়, সেটাই হয়তো বাকি লেখায় বোঝার চেষ্টা করবো। অ্যামেরিকায় এসে যেটা খেয়াল করতে শুরু করি, যে, এদেশের বৈভব ও বিস্তারে আমার কোনও অধিকার নেই। অধিকার নেই আমার কলেজ যাওয়ার রাস্তার গা ছমছমে অঞ্চলটায় কেন পুলিশ থাকেনা জিজ্ঞেস করার কিম্বা সিম্পলি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ম্যাগাজিন হক করার। ভারতে এসব বললেও হাইলি কোনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পাত্তা দেবেনা, কিন্তু বলবার/করবার অধিকারটুকু আছে- এই অধিকার থাকা আর না থাকার বোধ একটাভাবে নিজের জীবনচর্যাটায় পার্থক্য এনে দিচ্ছিল- দেখছিলাম, সত্যিই বিদেশে আছি। কিন্তু এ গল্প দেশ ও বিদেশের, মহাভারতের নয়; তবে হয়তো এইখান থেকেই শুরু। কোনওভাবেই মানিয়ে নিতে পারিনি অ্যামেরিকান সমাজে। মানিয়ে না নিতে পারা অবশ্যই অক্ষমতা, আর, আর-পাঁচজন দেশির মতন আমিও অ্যাপার্টমেন্ট ডিপার্টমেন্ট ও দেশি পার্টিতে বন্দি হয়ে বছর কাটাতে লাগলাম। আর, এই জীবনটা খুব পীড়া দিচ্ছিল। ক্রমশঃ কোর্সওয়ার্ক ক্লাসরুম থেকে দূরে সরে এলাম যখন এদেশি বন্ধুবান্ধবের সংখ্যাও কমলো, ফলে বিচ্ছিন্নতা বাড়লো- পুরো সমাজটার মধ্যে একদম বাইরের একজন অবজ়ার্ভার হয়ে থাকলাম। এবং এই পীড়াদায়ক বিচ্ছিন্নতা যেহেতু সবচেয়ে বাজে রাখে নিজেকে বারবার একটা খোঁজার জায়গা এলো, কোথায় আটকাচ্ছে বোঝার জায়গা এলো। ... ...
স্বাস্থ্যের জগতে দু’ধরনের নাগরিকত্ব (health citizenship) তৈরি হল। একটি পূর্ণ রাশি ১, আরেকটি ০। আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও এরকম integer দেখা হয় – হয় ০ কিংবা ১। এখানে ভগ্নাংশের কোন জায়গা নেই। যেমনটা আজকের ভারতে এবং বিশ্বে দেখছি আমরা। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল যে স্বাস্থ্যের পরিবর্তে শিক্ষার চোখ দিয়ে দেখলেও আমরা একইরকম অবস্থান দেখতে পাবো। ১৯শ শতাব্দিতে আধুনিক রাষ্ট্র তৈরির শুরু থেকেই রাষ্ট্রের প্রয়োজন ছিল মানুষ যাতে “স্বাভাবিক (normal)” এবং “অস্বাভাবিক (pathological)” এই দ্বৈত বিভাজনের গবাক্ষ দিয়ে দেখতে শেখে, সড়গড় হয়ে ওঠে। কিন্ডারগার্টেন, নার্সারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়োত্তর গবেষণা সবকিছুর মধ্য দিয়ে এ শিক্ষা চারিয়ে যায় প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের বোধের মধ্যে। ... ...
পশ্চিমবঙ্গের করোনা মোকাবিলার হালহকিকৎ নিয়ে অনেক কিছু ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু হোয়াটস্যাপে, কিছু সংবাদপত্রে। তার সত্যতা যাচাই করার জন্য এই লেখা নয়। এই লেখার উদ্দেশ্য নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া। ... ...
ছবি দেখার কি আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে? (অথবা, রাগসঙ্গীত শোনার? সাহিত্যপাঠের? কিম্বা, ভালো সিনেমা দেখার? এককথায়, শিল্পবিষয়ে সচেতন চর্চার কি আদপেই কোনো যুক্তি আছে?) ভেবেছিলাম, এই প্রশ্নের অতি স্বাভাবিক উত্তরটি অস্তিবাচক। কিন্তু, কিছু আলাপ-আলোচনার শেষে বুঝলাম, এই প্রশ্নের সর্বজনগ্রাহ্য উত্তর পাওয়া মুশকিল। যেমন, আমার মনে হয়, এই অভ্যেস জরুরী। এই প্রসঙ্গেই, আগের একটি লেখায় বলেছিলাম, নান্দনিকতার বোধ গড়ে তুলতে এই অভ্যেস অবশ্যপ্রয়োজনীয়। পশ্চিমী দেশে, স্কুলের বাচ্চাদের নিয়মিত আর্ট গ্যালারী বা চিত্রপ্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়ার চল রয়েছে। এবং, শুধু দেখাই নয়, ছবি দেখে কেমন লাগলো, সেই অনুভব নিয়ে তাদের দস্তুরমতো লিখতেও হয়। এইভাবেই নান্দনিকতার বোধ তৈরী হয়, আর সাথে সাথে নিজের ভালো লাগাটিকে বিচার বা বিশ্লেষণ করার বোধটিও তৈরী হয়। সুকুমার হৃদয়বৃত্তির গঠনে এমন চর্চা বা পাঠ জরুরী, এমনই আমার ধারণা। ... ...
আমি রুকু বিনায়ক। সবাই বলে আমি বুদ্ধু। ভোঁদাই। মা আমাকে গাধা বলে না মুনা বলে। পাপা বলে পুচাই। আমার দুটো হাত,দশটা হাতের আঙ্গুল,দুটো চোখ আছে,যা দিয়ে আমি ছবি আঁকা। পাপা মা বলে আমার অটিজম আছে। অটিজম কী আমি জানিনা। তবে আমি একটু কেমন যেন। আমার গাড়ীর চাকা,টেবিল ফ্যান,ছোট ছোট রবারের পুতুল ,রং,তুলি পেন্সিল ভালো লাগে। আমি লাফাতে ভালোবাসি। এ দেয়াল থেকে ও দেয়াল। সব দেয়ালে হাতের চাপ,সব দেয়ালে সর্দি,নাকের পোঁটা লাগে। মা বলে যাতা। আর মোছে। এই শিশুদিবসে বিনায়করুকু গুরুচণ্ডা৯কে ছাপতে দিয়েছে তার ডায়েরির কিছু পাতা, বেড়ানোর গল্প, আর ছবি। বিনায়করুকুর সঙ্গে একটু বেড়িয়ে আসি এদিক ওদিক। ... ...
...রাজনীতিতে দীর্ঘকালীন জয়-পরাজয় শুধু একটি ভোটে নির্ধারিত হয়না। হয় দীর্ঘকালীন অ্যাজেন্ডা স্থাপনের মধ্যে দিয়ে। যাকে বলা হয় মেরুকরণ। নির্বাচনে বিভিন্ন দলের হাজার হাজার অ্যাজেন্ডা থাকে। কিন্তু জনসমাজে সবকটিই গুরুত্ব পায়না। অল্প কয়েকটিই পায়। অর্থাৎ, জনতার চর্চার, তর্কের মূল বিষয় থাকে সীমিত সংখ্যক কিছু অ্যাজেন্ডা। যাকে ঘিরে মেরুকরণ তৈরি হয়। রাজনীতির দীর্ঘকালীন লক্ষ্যে তিনিই জয়লাভ করেন, যিনি নিজের অ্যাজেন্ডাকে জনতার অ্যাজেন্ডা হিসেবে তৈরি করতে পারেন (উল্টো ভাবে বলা যায়, জনতার অ্যাজেন্ডা তাঁর অ্যাজেন্ডা হয়ে ওঠে -- এর মধ্যে ডিম আগে না মুর্গি আগে, সে আলোচনায় এখানে ঢুকছিনা)। সেই অ্যাজেন্ডাকে ঘিরেই জনসমাজ এবং বাকি দলগুলি আবর্তিত হয়। পক্ষ ও বিপক্ষ নির্মিত হয়। স্বল্পমেয়াদে এটি সবসময় অ্যাজেন্ডা-রচয়িতার ভোটে জয় নির্ধারিত করে তা নয়, কখনও সখনও তিনি হেরেও যেতে পারেন, যদি মেরুকরণে উল্টো দিকের পাল্লার ওজন বেশি হয় (যদিও সাধারণভাবে সেরকম হয়না)। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে জাতি ও অন্যান্য দলগুলিকে নিজের অ্যাজেন্ডার চারপাশে আবর্তিত করতে পরা সাফল্যের একটি বড়ো সোপান... ... ...
কিন্তু, আসল ব্যাপারটা মোটেই এরকম নয়, এই ‘অহিংস’ ঘটনা ঘটার দিন বিকেলে প্রেসিডেন্সির বন্ধ গেটের বাইরে সাধন পাণ্ডে মহাশয়ের নেতৃত্বাধীন জনসভার বক্তব্য থেকে আসল ব্যাপার পরিস্ফুট হয় । ‘চক্রান্ত’-এর অন্ধকার কেটে আলোর দ্যাখা পান ডিরোজিয়ানরা এবং অন্যান্য মূঢ় ব্যক্তিবর্গ । আসলে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রেসিডেন্সি থেকে বেরিয়ে ছাত্রছাত্রীরা হামলা করে, যে জন্য মিছিলে উপস্থিত লোকজন বাধা দিতে বাধ্য হন । যে কারণে পরের দিন প্রেসিডেন্সির হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক-কর্মচারী-প্রাক্তনী যখন পথে নামেন, তখন প্রেসিডেন্সির ছাত্র দেবর্ষি চক্রবর্তী এবং প্রেসিডেন্সি প্রাক্তনী ছন্দক চ্যাটারজির বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে টি এম সি পি , ১৪৭, ১৪৮ ও ১৪৯ নং ধারায়, দাঙ্গা বাধানো এবং উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে । এই দেবর্ষি চক্রবর্তী আগেরদিন হাসপাতালে গেছিলেন আহত হয়ে ? ও সে তো নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে গিয়ে লেগে গেছিল । আরেকজন ছাত্রকেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল না? ওরা দুজন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছিল । সিম্পিল । ... ...
৩০০ বছরের মধ্যে শল্য চিকিৎসার ধারা আয়ুর্বেদের মূল ধারা থেকে হারিয়ে যায়। এ জ্ঞান কালের স্রোতে এবং ঐতিহাসিক ঘটনাক্রমে জমা হয়ে থাকে নাপিত, কুমোর বা কামার সহ অন্য বর্গের মানুষের মাঝে। ফ্রান্সিস জিমারম্যান তাঁর “Terminological Problems in the Process of Editing and Traslating Sanskrit Medical Texts” প্রবন্ধে বলছেন যে শুধু এটুকু আমাদের মাথায় রাখলে চলবেনা যে সুশ্রুত-সংহিতা এবং চরক-সংহিতা-র দৃঢ়বদ্ধ টেক্সট হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ১০ থেকে ১৫ শতাব্দী লেগেছে এবং মধ্যযুগের বিভিন্ন ভাষ্য এতে যুক্ত হয়েছে, এর সাথে এটাও মাথায় রাখতে হবে এত দীর্ঘ সময়কালে সমষ্টিগত চিন্তার জগতে প্রচুর ভাঙ্গাচোরা এবং পরিবর্তন ঘটেছে। ... ...
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং আরএসএস এর সমালোচনা করে গর্গ জানালেন, খুব সুকৌশলে হিন্দি হিন্দু হিন্দুস্থানের একটি প্রকল্প বাঙালির ওপর চাপানো হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বাংলায় কথা বলার জন্য অপদস্থ হতে হচ্ছে বাঙালিকে। এ ধরনের ঘটনার বিরোধিতায় বাংলা পক্ষ সর্বদা তৎপর থেকেছে বলে তাঁর দাবি। ... ...
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী সুইডেনের নোবেল কমিটি এই সর্বাত্মক নোবেল বিরোধিতায় খুবই বিব্রত। নোবেলজয়ীও ভারতীয়ত্বের এই হঠাৎ উত্থানে এমআইটিতে বসে থরথর করে কাঁপছেন। আর দ্বিতীয়বার নোবেল পাওয়ার সাহস তাঁর হবেনা, এমনকি একবার পাওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েও নিতে পারেন বলেই ওয়াকিবহাল মহল আশাবাদী। ... ...
ঋণ অনাদায়ী হয়, যখন ঋণীরা ঋণ থেকে পাওয়া পুঁজিটি নিয়ে ফাটকা খেলেন বা তা অন্য ব্যবসায়ে লাগিয়ে দেন। আমাদের দেশের পশ্চিম প্রান্তে একটি রাজ্য রয়েছে। যেখান থেকে আসা বণিকরা সরকার নির্বিশেষে এদেশের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন। অতীতে সব বৃহৎ অর্থনৈতিক কেলেংকারিই তাঁদের মগজের জোরে হয়েছিলো। এই তালিকাতেও তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফাটকাবাজি তাঁদের রক্তে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে তাঁরা এককথায় কিনে রাখেন। প্রতি নির্বাচনের সময় যেসব লক্ষকোটি টাকা বেআইনি হাতবদল হয়, তার রাশটি তাঁদের হাতেই থাকে। যে দলই সরকারে আসুন না কেন, এই সব বণিক তাঁদের থেকে শাইলকের ভাগের মাংস উঁচু সুদসহ উসুল করে নেন। ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণও সেই ভাগের মাংস। ... ...
কাদম্বিনীকে কোন ছাঁচেই ঠিকঠাক ফেলা যায় না, তিনি স্নেহময়ী মাতৃমূর্তি নন, বিদ্রোহিনী নন, সন্ন্যাসিনীও নন - আবার এই সবই। তাঁর ছবিটা এই রকম - ফিটন চেপে এক মহিলা যাচ্ছেন শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, রোগী দেখতে। হাতে কুরুশ-কাঠি, অপূর্ব সূক্ষ্ম কাজের লেস বুনছেন যাতায়াতের সময়টুকুতে, বিধবা বড় ননদের জন্য হিন্দু মতে রান্না করছেন, পূত্রবধূকে লিখছেন, ‘কাল বিকালেও রাঁধুনি আইসে নাই। আজও ক্যাঁও ক্যাঁও করিয়াছে শরীর ভাল না। কাল আসিবে কি না জানি না।’ আবার বিহার, ওড়িশায় খনিমজুর মেয়েরা কেমন আছেন, তা সরেজমিনে দেখে রিপোর্ট দিচ্ছেন সরকারকে। ... ...
উৎসব হয় কোথায়? মণ্ডপে রাস্তায় বাড়িতে মসজিদে গির্জায় কোন বাড়িতে। উৎসব আসে কোথায়? উৎসব আসে মনে। মন না জাগলে মন না মাতলে উৎসবের কোনো মূল্য নেই। প্রকৃতি সুন্দর। ততক্ষণই, যখন আপনার চোখ ও চোখের ভিতরে থাকা মন প্রস্তুত তাকে দেখতে। ... ...
এ তল্লাটে কে না জানে, আজুদের বাড়ির পাশের ঢিবির উত্তর পশ্চিম কোণে চালা পড়ো পড়ো ভিটেয় ঘাপটি মেরে বাস-করা আকালু আসলে এক ভয়ানক গুনিন। যতো গরু ছাগল মরা বাচ্চা বিয়োয়, যতো মেয়েছেলের অসময়ে গর্ভজল খসে, সবের পেছনে ঐ আকালু শালা। ওর নজর পড়লে ফলন্ত লাউ কুমড়ো অব্দি বিলাই কুত্তার শুকনো নাদির মতো খটখটে হয়ে যায়। আবার ভ্যান চালানো ছেড়ে দিয়ে কেউ যদি বিপুল বিষয়আশয়ের মালিক বনে যায় রাতারাতি, ঠিক জানবে তার পেছনে রয়েছে আকালুর দেওয়া মাদুলি আর কবচের কেরামতি। ... ...
রামজনমভূমি-বাবরি মসজিদ নিয়ে শীর্ষ আদালতের ৫ সদস্যের বেঞ্চের রায়ে যা বলা হয়েছে, এই কথাটাই তো ৩০ বছর আগে বলেছিলেন এল কে আদবানি। তখনও মসজিদ ভাঙা হয়নি, ১৯৮৯ সালে তাঁর সমাধানসূত্র ছিল মসজিদকে তুলে নিয়ে গিয়ে (রিলোকেট) নতুন জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হোক, আর সেই জায়গায় মন্দির তৈরি হোক। মসজিদ ভেঙে দেওয়ার পর, আদবানি একদিকে বলেছিলেন, সেদিনটা (৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২) নাকি ছিল (মাই কান্ট্রি মাই লাইফ) তাঁর জীবনের সব থেকে দুঃখের দিন। আর বলেছিলেন, ভারতে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই যে দল প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে পারে যে তারা ক্ষমতায় এলে নতুন করে ওই খানেই বাবরি মসজিদ তৈরি করে দেবে। শনিবার, ৯ নভেম্বর, শীর্ষ আদালতের রায় শোনার পর এই কথাগুলোই মনে পড়ে গেল। ... ...
ভারতের ক্ষেত্রে আমরা দেখছি বস্তি অঞ্চলের চাইতে অপেক্ষকৃত স্বচ্ছল এবং সম্ভ্রান্ত অঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা বেশি। তাছাড়াও দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের ক্ষেত্রেও দুটি মানুষের মাঝে পার্থক্য ঘটছে, সংক্রমণ হবার পরে কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ছে, আবার কেউবা প্রায় কোন সমস্যা ছাড়া সুস্থ হয়ে উঠছে। জনসমষ্টির বিশেষ অংশ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে, অন্য অংশ কম। কেন এরকম ঘটে? এ প্রশ্ন কি বিজ্ঞানীদের কি সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের গভীরভাবে ভাবাচ্ছে। এর কোন সরল একমাত্রিক উত্তর নেই। ... ...
এসব শুনতে বলছি কেন? কোন মেডিক্যাল কলেজের ঝামেলা বা কে মার খেল বা কে হোস্টেল না পেল তাতে আপনার আমার দিন গুজরানে সরাসরি কিছু যায় আসে না তো ঠিকই, কিন্তু আসতেও তো পারে কখোনো। হঠাৎ করে আপনার নিজের বা কাছের কারোর শরীর খারাপ তো হতেই পারে। এমনই অবস্থা, যে মেডিক্যাল কলেজের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এ (CCU) তে ভর্তি করতে হল। জানেন এই CCU এর ডেপুটি ইনচার্জ কে? এমন একজন ডাক্তার, যিনি ২০১৬ সালে এমবিবিএস পাশ করেন। CCU এর কাজ, অর্থাৎ ক্রিটিকাল কেয়ারে কাজের জন্য প্রথামত কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রী তার নেই। উপরন্তু তিনি পাশ করার পর বড়জোর দুবছর রোগী দেখেছেন (যদিও এই দুবছরে কতদিন ডিউটি দিয়েছেন তার খবর যদি আপনি সঠিক ভাবে নেন তাহলে আপনি বাকরুদ্ধ হবেন এ নিশ্চিত) । ... ...
এই মুহুর্তে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত। এক, বামপন্থী ডেমোক্র্যাট (লেফট-লিবারল)। দুই, মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাট (মডারেট, সেন্ট্রিস্ট)। দ্বিতীয় দল প্রথম দলকে সোশালিস্ট বলে এবং ভয় পায় যে আমেরিকায় সোসালিজম নিয়ে যে ভয় রয়েছে, তার ফলে রিপাব্লিকানরা লাভবান হবে। অন্যদিকে প্রথম দল দ্বিতীয় দলকে কর্পোরেট ডেমোক্র্যাট নামে ডাকে, কারণ এই দলের প্রার্থীরা কর্পোরেটদের পয়সায় ক্যাম্পেইন চালায় এবং কিছু কর্পোরেট এদের হয়ে প্রচার করে। এবং প্রথম দল মনে করে যে এই কর্পোরেট সেন্ট্রিস্ট ডেমোক্র্যাটদের জন্যই রিপাব্লিকানদের বাড়বাড়ন্ত। যদিও রিপাব্লিকান পার্টিতেও এইরকম দুই ভাগ ছিল এই কয়েক বছর আগে অবধিও: মডারেট দক্ষীনপন্থী এবং চরম দক্ষীনপন্থী । কিন্তু হাউসের এক প্রাক্তন রিপাব্লিকান স্পীকারের মতে এইমুহুর্তে ওটি ট্রাম্পের পার্টি। ... ...