পর্ব ৪ তাতান এখন একসমুদ্র প্রশ্নের মাঝে সঠিক দিশা খুঁজে পাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠল। সে এবার কোনো একটা সূত্র পাবার জন্য দাদুর ব্যবহার্য টেবিলে রাখা খাতাপত্র আর টুকরো কিছু কাগজ নিয়ে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে নিয়ে জোরালো গবেষণা করতে বসে গেল। সামনে রাখা চেয়ারখানি টেনে নিয়ে তাতে বসে সেগুলো নিয়ে কিঞ্চিৎ নাড়াচাড়া করতে লাগল। দাদুর প্রতিদিন ডায়েরী লেখার অভ্যাসের কথা বাড়ির সবাই ... ...
তৃতীয় পর্বশিমলার দিকেএবার আসি শিমলা-ভ্রমণের কথায়। অমৃতসর থেকে আবার মোহালি ফিরে একদিন রেস্ট। পরের দিন সকালে উঠে আইজারের পুরো কাম্পাসটি প্রদক্ষিণ, মর্নিং ওয়াকের ছলে। এত বড় ক্যাম্পাস, এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিং-এ যেতে পায়ে ব্যথা হয়ে যাবে। আমরা ছিলাম ভিজিটরস হোস্টেলে। আমরা যাকে গেস্ট হাউস বলি তাই এখানে এই নামে পরিচিত। এই গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাপনা দারুণ। কি নেই! দুটি বড় ... ...
আমার একটা গল্প ছিল তোমার সাথে গাছ গাছালি রোদের ছায়ায় পলাশ ফুলের ডানদিকে যেই মোড় নিয়েছে একটা মানুষ কুড়াল কাঁধে জঙ্গলেতে বউটি উয়ার ' পলাশ ফুলের মালা গাঁথে ওদের মেয়ে স্কুলে নয় ভর দুপুরে টুরিস্ট মেলায় পান্তা পেটে মালা বেচে আমরা এলাম শহর থেকে এসি গাড়ি হাজার টাকার নেশা জিনে রামের পেগে দশ হাজারী সুইট নিয়েছি সেই ভাড়াতে নাচছে সবাই তাল মিলিয়ে ছ' এর লাফে ... ...
পর্ব ৩ সারাবাড়ি এখন লোকে লোকারণ্য। সারাদিন বিভিন্ন মানুষের শোকপ্রকাশ আর কান্নাকাটির পর্ব শেষ হওয়ার পর দাদুর দেহ সৎকার সেরে তাতান বিমর্ষ মুখ নিয়ে বিছানায় তার পরিশ্রান্ত দেহ এলিয়ে দিল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকের মতো একটা কথা মনে আসতেই সে হঠাৎ শোয়া থেকে এক ঝটকায় লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল। তারপর দাদুর শুন্য ঘরখানার দিকে দ্রুতবেগে ধাবমান হল। দাদু বেঁচে থাকতে তো সে ঘরখানায় ... ...
সে তার ব্যাগপত্র কোনোভাবে নিজের ঘরে রেখে দিয়েই তড়িঘড়ি করে দাদুর ঘরে চলে এসেছিল। ধীর পায়ে ঢুকেছিল সে দাদুর ঘরে। আস্তে করে দাদুর বিছানার পাশে রাখা চেয়ারখানি নিয়ে বসেছিল। তারপর সে নিষ্পলক তাকিয়েছিল দাদুর চোখের দিকে আর দাদুর যন্ত্রনাক্লিষ্ট চোখ দুখানি স্হিরভাবে নিবদ্ধ ছিল তাতানের চোখের দিকে। বেশ কিছুক্ষণের এই নিস্তব্ধতাতেই নিঃশব্দে হয়ে গেল অনেক কথার মূক ... ...
পর্ব ১ ঘোষপুকুর লেনের গা ঘেঁষে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে যে সুবিশাল তিনতলা বাড়িখানা, সেটি একটি যৌথ পরিবার। পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে দিনরাত ব্যস্ত থাকে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা, আর বাড়ির গিন্নিরা প্রায় ভোর থেকেই কোমরে আঁচল কষে গুঁজে নিয়ে লেগে যায় গৃহকর্ম সম্পাদনার কাজে আর সন্ধ্যার পর নিজের নিজের স্বামীকে আরও বেশি টাকা ইনকাম করার জন্য তাগাদা দেওয়ার রোজনামচায় ... ...
তায় ঘরটিকে অচেনা আগন্তুকের পক্ষে একটু বাসযোগ্য করতে গিয়েই দিনের এই বাকি সময়টুকু যেন এক লহমাতেই ফুরিয়ে গেল।এখন এই পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে রান্না করা তো দূর,ভাত বসাতে গিয়েও যেন মনে হচ্ছে,হাঁটুতে যেন কেউ ভারী পাথর বেঁধে দিয়েছে।সে মুড়ির টিন থেকে বাটিতে কিছুটা মুড়ি ঢেলে নিয়ে তাতে কিছুটা চানাচুর ঢেলে নিল।ক্ষুধার্ত পেটে সেটাই এক নিমেষে শেষ করে রান্নাঘরের আলো বন্ধ করে সে শোবার ঘরে এল।ঘরে ঢুকে সে দেখল,মশারির ভিতরে সারা শরীরখানিকে গুটুলি পাকিয়ে নিয়ে পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে কাদা হয়ে রয়েছে মেয়েটা।জামাকাপড় কেমন করে পরতে হয় এটাই বোধহয় মেয়েটা আজ পর্যন্ত শিখে উঠতে পারেনি।একমুখ মায়া ঢালা গভীর ঘুমে অবচেতন শরীরটির আনাচে কানাচে ... ...
পর্ব ২ বেশ। তুমি তাহলে হাত মুখ ধুয়ে এসো আমি বিলটা পে করে আসি। তিয়াসা লক্ষী মেয়ের মতো ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়ে রাতুলের অঙ্গুলি নির্দেশ অনুসরণ করে মুখ ধোওয়ার বেসিনের দিকে এগিয়ে গেল। রাতুল খাবার বিল পে করে নিয়ে তিয়াসাকে নিতে এল ভিতরে। ভিতরে এসে তার একেবারে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ার মতো অবস্হা হল। সে দেখল, হাতমুখ ধুতে গিয়ে মেয়েটা কলের জলে পুরো স্নান ... ...
জন্মেজয়বাবুর মনটা আজ বেশ ফুরফুরে আছে। অখিল তাদের সবাইকে বোটানিকাল গার্ডেনে নিয়ে যাবে শিবপুরে। সে নাকি এক প্রকান্ড বাগান। হেঁটে হেঁটে শেষ করা যায় না। ওখানে গিয়ে তারা দেখল ওমা সত্যিই তাই। তাদের কুমিল্লার গ্রামে এরকম গাছগাছালি অনেক আছে। কিন্তু এরকম সাজানো গোছানো নয়। খোলামেলা মাঠ ঘাট, নদী, ধানক্ষেত, পাটক্ষেত, জল মাটি গাছপালা সব অযত্নে ছড়িয়ে ... ...
দ্বিতীয় পর্ব মোহালি থেকে অমৃতসর পরের দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি সকালে হোটেল থেকে অটোতে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে। সাতটায় ট্রেন। ছেলের বর্তমান ঠিকানা মোহালির IISER-এ আমাদের অন্তবর্তীকালীন বিশ্রামস্থল। সরস্বতী পূজার দিন সন্ধ্যায় ঢুকে পরের দিন শক্তি সঞ্চয় করে ১৬ তারিখে বেরিয়ে পড়লাম অমৃতসরের উদ্দেশে, চণ্ডিগড়-অমৃতসর ইন্টারসিটি ধরে। সাড়ে এগারোটায় অমৃতসরের গোল্ডেন অ্যাভিনিউ-এর একটি হোটেলে ... ...
অক্টোবর ১: গতকাল, ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৮৭৬, সকাল এগারোটার কয়েক মিনিট বাদে মস্কো থেকে আগত মারিয়া বরিসভা নামে এক দরজি বিশ নম্বর গালেরনায়া স্ট্রীটের ছয়তলা উঁচু অভ্সিয়ান্নিকভ হাউসের চিলেকোঠার জানলা থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। ... আত্মহত্যার সময়ে বরিসভার দু-হাতে মেরি-মাতার আইকন ধরা ছিল। (জনৈক সংবাদপত্রে প্রকাশিত কলামের অংশবিশেষ) দস্তয়েভস্কির মতে, এটি ‘বিনীত, বিনম্র আত্মহননের এক অভূতপূর্ব ... ...
চিঠঠি আই হ্যায় ————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ————— “চিঠঠি আই হ্যায়” বলে “আহিস্তা -আহিস্তা” চলে গেলেন গজলের এক কিংবদন্তী জাদুকর না ফেরার দেশে। রেখে গেলেন এমন সুরের মুর্ছনা
ইঞ্চিজি জিন্দাবাদ সংসদে প্রণাম করেছিলেন। সংসদ ভবন তালাবন্ধ। পেটিএম নোটবন্দির পরদিন তাঁর ছবি দিয়ে। মার্চ থেকে পেটিএম পেমেন্টস ব্যাঙ্ক বন্ধ। নোটবন্দির সুফল না পেলে ৫০ দিন পর জ্বালিয়ে দেবেন বলেছিলেন। দেশ জ্বলছে। ক্ষমতায় আসার একমাসের মধ্যে ২৫% করে জিনিসের দাম কমাবেন বলেছিলেন। জিনিসপত্রের দাম ৩০০-৫০০% বেড়েছে। বছরে ২কোটি করে চাকরির কথা বলেছিলেন। ১৪ কোটির চাকরি চলে গেছে। বিএসএনএলে এক লাখ ৯৭ হাজারের চাকরি ... ...
বাঙ্গালের প্রথম বিদেশ ভ্রমণপ্রবীরজিৎ সরকারআমি এবং আমার বাবা কলকাতায় জন্মালেও আমরা বাঙাল। কারণ আমাদের পূর্ব পুরুষ সবাই বাঙাল। বাঙাল কথাটা ওপার বাংলা থেকে কলকাতা আসা লোকজনকে বলা হত বুদ্ধু ভেবে।ইংরেজ রাজত্বে প্রথমে কলকাতাকে ওদের ভারতীয় উপনিবেশের রাজধানী করা হয়েছিল। ওপার বাংলা থেকে পড়াশুনা চাকরি করতে অনেকে আসতো। তারা রাস্তাঘাট চিনত না । এত বড় শহর অবাক বিস্ময়ে ... ...
(এ মাসেই আগ্রা, অমৃতসর ও শিমলা ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। সেই ভ্রমণ-কাহিনি আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।) (প্রথম পর্ব) মুখবন্ধ সেবার ছিল ২০১৮। ইউরোপ-পর্যটনে গিয়েছিলাম টমাস কুকের ব্যবস্থাপনায়। সময়টা ছিল জুনের শেষ ও জুলাই-এর প্রথম, আরো স্পষ্ট করে বললে, জুনের ২৯ থেকে জুলাই-এর ৯ তারিখ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের জনা পঁচিশ সহযাত্রীর সঙ্গে বর্ধমান থেকে আমার এক সহকর্মীর পরিবারের চারজনের সঙ্গে আমরা সপুত্র তিন-- সব মিলে ৩২ জন-- আন্তর্জাতিক পর্যটনে। লণ্ডন, প্যারিস, রোম, ভ্যাটিক্যান ও সুইৎজারল্যাণ্ড ছিল গন্তব্য। বেশ ভালো করে ঘুরেছি। আল্পসের সর্বোচ্চ ... ...
এই রাজপথে একটু আগেই চোদ্দটা গাড়ির কনভয়সাইরেন বাজিয়ে ছুটে গিয়েছিল প্রতিটি গাড়ির চাকার নিচে ভেঙে পড়েছিল ইতিহাসপ্রতিটি গাড়ির চাকার নিচে বিলকিস বানুর কান্নাপ্রতিটি গাড়ির চাকার নিচে ভাঙনে তলিয়ে যাওয়াপ্রতিটি গাড়ির চাকার নিচে চেতনা গুলিয়ে দেয়া একটু আগেই চোদ্দটা বেওয়ারিশ লাশের ট্রাককুণ্ডলী পাকিয়ে ছুটে গিয়েছিল প্রতিটি ট্রাকের চাকার তলায গড়ে উঠেছিল নতুন ইতিহাস প্রতিটি ট্রাকের চাকার তলায়গরম ভাতের গন্ধ প্রতিটি ট্রাকের চাকার তলায়প্রতিরোধের আগুন প্রতিটি ট্রাকের চাকার তলায়দগ্ধ হৃদয় জ্বালা প্রতিটি ট্রাকের চাকার তলায় এক পা এগিয়ে চলা। ... ...
<< এই লেখার এই অংশটি/পর্বটি এখন অসমাপ্ত, কিছু পরিমার্জনার পরে এই ট্যাগটি উঠিয়ে দেওয়া হবে >> # পরিচয়পত্র #পরিচয় কী? না কোনো ব্যক্তির প্রাথমিক পরিচয়গত তথ্য, যেমন নাম, বয়স, ছবি এবং হয়তো ঠিকানা, অর্থাৎ সেই তথ্য যা তাকে চিনতে অন্যদের সাহায্য করে। পরিচয়পত্র অবশ্য বেশ সাম্প্রতিক ব্যাপার। সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানের সদস্য বা গ্রাহক হওয়ার জন্যে নিজের পরিচয় দিতে হয়। যেকোনো প্রামাণ্য বৈধ নথির একটা দিলেই হত। এগুলো ঠিক পরিচয়পত্র নয়, এদের পরিচয়গত তথ্যের শংসাপত্র (certificate) ছিল। এই পরিচয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হত।কিছু ক্ষেত্রে যেমন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা বা ইমেইল অ্যাকাউন্টে লগ ইন করার সময় ব্যক্তিকে নিজের প্রামাণীকরণের (authentication) মধ্যে দিয়ে যেতে ... ...
ভোরের অস্ফুট আলোর মতোএকটা অনাঘ্রাত কুসুমের যতোনির্দোষ গোধূলির প্রশান্তির মতোঅনেক শব্দের ভীড়েও ভূমিষ্ঠ -নবজাতকের সুতীব্র ঘোষণার মতো: অনাবিল,নিটোল একটা শব্দের টুকরো আমায় ভিক্ষা দাও ইসাবেলা।যা শুধু আপোষহীন ভাবে তোমাকেই বোঝায়; তোমার শপথ,তোমার লড়াই মিলিয়েই তোমার অন্তঃকরন!আর কিছু নয়।।
যখন বাবার উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য বালখে লড়ছেন যোদ্ধা শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব তখন শাহাজাদা এ বুলন্দ ইকবাল - সৌভাগ্যমণ্ডিত শাহাজাদা দারা শুকোহর অন্য এক শাহী ইমেজ তৈরিতে উৎসাহ দিয়েছিলেন শাজাহান। সেটা হল স্বর্গীয় আশীর্বাদপুষ্ট বাদশাহের উপযুক্ত দার্শনিক শাহাজাদার ইমেজ যা দারার পছন্দের সঙ্গে খাপও খায়। ষোলোশো ছেচল্লিশে মুরাদকে মধ্য এশিয়ায় পাঠানোর সময় শাজাহান তাঁকে এগিয়ে দিতে কাবুল পর্যন্ত এলেন। শাহাজাদা দারা শুকোহ আসছিলেন বাবার সঙ্গে। পথে লাহোরের শেখুপুরায় জাহাঙ্গীরের প্রিয় পোষ্য কৃষ্ণসার হরিণ মনসরাজের স্মৃতিতে ... ...
# শুরুর কথা # এক প্রখ্যাত মার্কিন সংস্থার পাঞ্চ কার্ড প্রযুক্তির সহায়তায় নাৎসি জার্মানিতে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জীবিকা প্রভৃতি তথ্য সংগ্রহ করে একটি নাগরিক পঞ্জী (citizens’ register/tabulation) নির্মাণ করা হয়েছিল, অনেকেই জানেন হয়তো। একটি আরও ব্যাপক ব্যবস্থা আজকের ভারতে গড়ে উঠছে, যার বুনিয়াদি (foundational) প্রকল্পটি হল আধার (Aadhaar) আর এটিও চরিত্রে, আমি মনে করি ফ্যাসিস্ট। আমরা এর সম্ভাব্য অপব্যবহার ও বিপদের জায়গাগুলো এখানে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। আলোচনাটি সব ধরণের পাঠকের কথা ভেবে সহজ ভাষায় ও বিশদে করার চেষ্টা করলেও, অতিরিক্ত দীর্ঘ করে না ফেলার দিকেও নজর থাকবে।এদেশে আধার নিয়ে ওজর আপত্তি অনেকই হয়েছে, তবে বেশিরভাগই পরিচয় চুরি (identity theft, impersonation), ... ...