বইমেলা বলতেই আমার প্রথম যে স্মৃতি মনে আসে, তা ক্লাস টু-থ্রির। বাবা-মার সঙ্গে গিয়েছিলাম, বলাবাহুল্য। আগে থেকে বায়না করে রাখা ছিল, আমি নিজের পছন্দে বই কিনব। তা, ঘুরে-ঘুরে কিনলাম, ছবি আঁকা ভয়াল ভয়ঙ্কর সব বই। কেউ কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। কী কী মনে নেই, যেটা মনে আছে, সেটা হল, আমার মামাতো দাদার জন্য বই কেনা হয়েছিল মায়ের পছন্দে। সত্যজিৎ রায়ের একডজন সিরিজের কোনো একাটা। প্রথমটাই মনে হয় ... ...
এই যে চারদিকে মিছিল হলেই স্লোগান শোনেন, 'চলছে-চলবে', কিংবা 'চলছেনা-চলবেনা' - এর উৎপত্তি কোথায় কখনও ভেবেছেন? সেটা ১৯৬৫ সাল। উৎপল দত্ত মিনার্ভা থিয়েটারে নিয়ে এলেন তাঁর প্রবাদপ্রতিম নাটক, কল্লোল। নাটকটা তখনও প্রবাদ হয়নি, কিন্তু প্রথম দিন থেকেই বিতর্কিত। পটভূমিকায় ছিল ১৯৪৬ এর নৌবিদ্রোহ। ব্রিটিশ জমানার শেষ সময়ে নৌসেনাদের বিদ্রোহ, কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের পিছনে ছুরি মারা। তারপর দেশভাগ ... ...
এ শহরেরই একপ্রান্তে প্রতি বছর নিয়মমাফিক আন্তর্জাতিক বইমেলা হয়। আর অপর প্রান্তে শতাধিক বছর পুরনো গ্রন্থাগার তিলেতিলে ধ্বংস হয়। শত শত লেখকের স্বপ্নের বইগুলো সরকারি খরচে গ্রন্থাগারে আজও আসে। কিন্তু পাঠকদের ধরাছোঁয়ার বাইরে তারা তাকবন্দী হয়েই রয়ে যায়। কালের পরিবর্তনে এখন টিভির গায়েও শ্যাওলা জমছে। মুঠোফোনের ইউটিউবে দুর্নিবার আকর্ষণ। আট থেকে আশির যাবতীয় জ্ঞানগম্যি ... ...
অপালার পাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। রাস্তায় একদিন দেখা। বলল, নতুন বাড়ি, ধম্মো-কম্মো-গৃহপ্রবেশ করিসনা, ঠিক আছে, কিন্তু ডেকে চা খাওয়া একদিন। ওদিকে লজ্জার কথা হল, বাড়িতে আমার কিছুই নেই, গ্যাস-ওভেন-ফ্রিজ দূরস্থান, চেয়ার-তোশক-বালিশ পর্যন্ত না। অপালা বলল, যত বাজে ঢপ। আমি বললাম, আরে, সব হলেই তোকে নেমন্তন্ন করব একদিন। শুনে বলল, হ্যাঁ, যেরকম ঢোঁড়াই চরিত মানসটা পড়তে দিয়েছিলি। এসবের আর কী উত্তর দেবে লোকে। মুখে বলে তো বোঝানো ... ...
নিখিল ব্যানার্জী অঙ্কের অসাধারণ শিক্ষক। কিন্তু কাবেরীর মনে হল তিনি ফিলজফির টিচার হলেই ভাল হত। তিনি সেদিন বললেন, ' আমাদের এই ইউনিভার্সের বাইরে আমরা খুব একটা কিছু জানি না। এই মহাকাশে এমন তারা আছে আমাদের এই পৃথিবী থেকে যার দূরত্ব এক কোটি আলোকবর্ষ। মানে, ওই তারার আলোকরশ্মি ওখান থেকে বেরোবার ... ...
'কৃবু'র (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) "কৃত্রিমতা" নিয়ে আমার একটা আপত্তি আছে। আসলে যার সৃষ্টি/নির্মাণের পেছনে মানুষের অবদান থাকে তাকে কৃত্রিম বলা হয়। সেইদিক থেকে ঠিক আছে, এই বুদ্ধিমত্তার জন্ম মানুষই দিয়েছে। কিন্তু কৃত্রিম কথাটার মানে অনেকসময় নকল/মেকী (unreal/false) ধরা হয়। এই অর্থে বললে আপত্তি আছে। কৃবুর বুদ্ধিমত্তার মধ্যে নকল/মেকী কিছুই নেই, মানুষের বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পার্থক্যও তেমন কিছু নেই। অবশ্য মানুষের বুদ্ধিমত্তায় মানুষের আবেগ/বায়োলজি একটা ইনপুট হিসেবে থাকে, সেটা এক্সট্রা এবং অনেককিছু পাল্টে দেয়। কিন্তু সেই পার্থক্য বাদে এ একেবারেই আসল বুদ্ধিমত্তা। বরং আমার অনেক সময়ে মনে হয় হয়তো অজৈবিক/যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তা বলা যায়, যদিও যন্ত্রকে অনেকদিন আগেই গবেট ধরে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু মেকানিক্যাল ... ...
পটল বলল, ' হ্যাঁ বলুন ... আমি পটল ... 'মেয়েটি উৎকন্ঠিত গলায় বলল, ' আমি ... মানে ... শিবপ্রসাদ রায়ের মেয়ে .... '----- ' ও আচ্ছা ... বুঝতে পেরেছি ... ' , বলে সাগরকে দেখিয়ে বলল, ' এই যে ... দাদা এখানেইআছে ... কথা বলুন ... 'সাগর উঠে দাঁড়াল ।----- ' বলুন ... 'বাবার জ্বর এসেছে । আমাকে বলল আপনার সঙ্গে দেখা ... ...
ছিল পাড়ার মোড়ের ফুলের দোকান, অনলাইন কারবার করতে গিয়েই আমার সব্বোনাশ হল। প্রথম দিকে ভালই চলছিল। অর্ডারের চোটে ফুলে-ফেঁপে ঢোল। দোকানে নতুন লোক রাখতে হল। ডেলিভারি আমি নিজেই করতাম। ফুল নিয়ে গেলে গোমড়া-খিটখিটে লোকেরাও ফিল্টার দেওয়া সেলফির মতো মোলায়েম হয়ে যায়। সুন্দরী মেয়েরা লজ্জায় লাল হয়ে হাসি দেয়। পয়সার সঙ্গে সেসব ফাউ। তখন কে জানত, ওসব মধুচন্দ্রিমার
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ফুলচোর উপন্যাসে এক মাস্টার মশাই ছিলেন যিনি কিনা কোয়ালিফিকেশন খ্যাপা! টাইপ শেখো, ইলেকট্রিকের কাজ শেখো.. দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে শুধু শিখে যাও!এতগুলি বিজাতীয় যোগ্যতা ধুয়ে কী ভাবে জল খাবো সেটি জিজ্ঞেস করেছো তো মরেছো! বাস্তব জীবনে এরকম নানান কিসিমের উৎসাহদাতার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত।এক অংক স্যার বিদঘুটে সময়ে অংক করাতে আসতেন, শীতের রাত সাড়ে দশটা ... ...
বর্তমানের স্যোশাল মিডিয়ার যুগে যে কোনো দেশের খবর খুব সহজেই সারা পৃথিবীর লোক জানতে পেরে যায়। আর সব দেশেরই লোকেদের এখন অর্থ উপাজর্নের বা সহজে পরিচিতি পাওয়ার মাধ্যম হলো স্যোশাল মিডিয়া। স্যোশাল মিডিয়ার যেমন ভালো দিক আছে বা ভালোভাবে লোকেরা ব্যবহার করছে এই মাধ্যমকে তেমনি বহুলোক আছে যারা এই মাধ্যমকে অত্যন্ত খারাপভাবে ব্যবহার করছে। আবার বহুলোকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে কিছু বিতর্কিত ... ...
ইরানে জল বেশোয়ান বলে একটা পাহাড় আছে।মানে জল বেশি।খোররমাবাদ ইরানের একটা শহর।সেই শহরের গায়ে একটা পাহাড় জল বেশোয়ান।ইরানের একটা গ্রামের নাম জল।আরেকটি গ্রামের নাম--জল খোবর। এর্তুগ্রুল বলে একটা ছবিতে দেখলাম চরিত্রগুলো জল বলতে জ.. উচ্চারণ করছেন প্রাচীন রীতি অনুযায়ী। ইন্দো ইরানিয়রা জল শব্দ বহন করে এনেছিল বলেই মনে হয়।জল এবং পানীয় দুটোই প্রচলিত।জল প্রাচীন ফারসি। স্বপ্নময় চক্রবর্তী লিখেছেন, পারসিক বা পার্সিদের মধ্যে একটা প্রথা আছে, যাঁর নাম জলমিলা। বর কনে একসঙ্গে জলপূণ পাত্রে আঙ্গুল ডুবায়।পারসিক মানে পারস্য দেশীয়।পারসিকদের ভাষাই ফারসি।পারস্য দেশের বর্তমান নাম ইরান।ভাষাতত্ত্বে পড়েছেন বোধহয়, ইন্দো-ইরানিয় ভাষার কথা।ভাষা নিয়ে ভাসা ভাসা সাম্প্রদায়িক কথা নাই বা বললেন। 'হিন্দু' শব্দটা ফারসি।'সঙ্ঘ' শব্দটি পালি। 'বঙ্গ' অস্ট্রিক ভাষার ... ...
আজ এক সপ্তাহ হল বাড়িতে, বিশেষ কোন কাজ নেই। বেশিরভাগ সময় কাটে গল্পের বই পড়ে আর মোবাইল ঘেটে।তাই হরদম ই মায়ের বকা শুনতে হয় যে আমি নাকি দিন দিন অলস হয়ে পরছি আর মোটা হয়ে যাচ্ছি। প্রথম কিছু দিন খুব একটা রিয়াক্ট করিনি , কিন্তু আজ নিজের বৈপ্লবিক রূপ ধারন করলাম , চিৎকার করে নিজের অভিমান জানালাম। কিছুক্ষণ পর আমার হাতে একটা ঝাড়ু ধরিয়ে দিয়ে বললো "আজ আমি ছুটি নিলাম তুই কর দেখি" । নিজেকে প্রমাণ করতে গিয়ে অগত্যা তুলতে হল ঝাড়ু। ঠিক মনে হল স্বচ্ছ ভারতের পুরো দায়টা পরল আমার ঘাড়ে। লেগে পরলাম ঝাড়ু নিয়ে ,পুরো ভারত পরিস্কার করতে। একবার এদিক ... ...
ইতালিদেশের যেমন তাস্কেনি, যুক্তরাজ্যের যেমন স্কটল্যান্ড, মেদিনীপুরের তেমন ধর্মা (দেশ ও শহরের বিস্তারগত পার্থক্য মাথায় রেখে এখানে আনুপাতিক হিসাবটি কষে না নিলে আতিশয্য দোষ হবে)। যাই হোক,পাতনে নিষ্কাসিত থির বিজুরি অথবা নিপাতনে সিদ্ধ ফেনিল উচ্ছ্বাস---দুই ধরণের মদিরতার আশ্বাস নিয়েই ধর্মা ভ্রু পল্লবে ডাক দেয় রসিকজনকে! সে এক আশ্চর্য এলদোরাদো ! রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্য থেকে আলো ওঠে। আলেয়া বলে ভয় পায়না কেবল তারাই, যারা জানে ... ...
ক্লাস টেন এর টেস্ট পরীক্ষার রেসাল্ট নিয়ে হটাৎ ই বেরিয়ে পড়া গোটা দশ বারোজন। চলো আমতলা ঘাট। বদনাম আছে ওই ঘাটের । জলের তলায় ঘূর্ণি! একদিনে পাঁচ- পাঁচ টা ইস্কুলের ছেলেকে খেয়েছে ও নদী! তবু কৈশোর পেছনে তাকাতে পারেনা! পেছনে কতটুকুই বা সে মনে করতে পারে? তাই কল্পনা তার সামনের বাঁকটি ঘিরে ,যদি না ইতিমধ্যে কোনো অঘটন ঘটে! তাই হিহি করতে করতে রাঢ় বাঙলার পৌষের ... ...
মেরুদন্ডহীন ছাপ্পান্ন ইঞ্চির রাজত্বে সন্দেশখালী কখন কাশ্মীর হয়ে যাবে ধরতে পারবেন না। সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দুকে কনডোম পরানো ছিল।
নিতাইবাবু অঞ্জলিকে বললেন, ‘জমিটা অনেকদিন দেখা হয়নি, চল একদিন দেখে আসি। বর্ষা তো পড়েই গেল। বৃষ্টি বাদলা হলে অবশ্য যাওয়া যাবে না।’ অঞ্জলি বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ .... চল চল ... আমাদের পিকনিকটা কিন্তু বেশ ভাল হয়েছিল। দত্তবাবুকেও যেতে বলব ...’ ----- ’হ্যাঁ, তা বললে হয় ... ওদের
বিকল্প মিডিয়া নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম আগের দিন। আমাদের কথা, অর্থাৎ গুরুচণ্ডা৯ নিয়ে কিছু লিখিনি। সেটাও বলা দরকার। আগামী বছর গুরুচণ্ডা৯র কুড়ি বছর হবে। ২০০৪ সালে ওয়েবসাইট খোলা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত গুরুচণ্ডা৯ সম্পূর্ণ অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ, আমরা বই ছাপি, বিক্রিও করি, কিন্তু যদি তা থেকে লাভ-টাভ কখনও হবার সম্ভাবনা হয়, তাহলে সেটা পকেটে পুরে কেউ বাড়ি নিয়ে যায়না। বইয়ের ক্ষেত্রে লাভ করার বিশেষ চেষ্টাও অবশ্য আমরা করিনা, কম দামে সুলভে বই দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য। লেখালিখির ক্ষেত্রে লক্ষ্য, 'অন্যরকম' ঘরানাকে উৎসাহ দেওয়া, তৈরি করা। আর ইন্টারনেটে লক্ষ্য একটা আলোচনার পরিসর তৈরি করা। বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক অ্যাফিলিয়েশন আমাদের কোত্থাও নেই। ... ...
বিজেপির বাংলা ব্লগ থেকে দেখলাম, এই দল খোলাখুলি নিজেকে ‘একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল’ বলে ঘোষণা করেছে, যে দল ‘সামাজিক রক্ষণশীলতার প্রবক্তা’। ‘সামাজিক রক্ষণশীলতা’ বলতে এই দল ঠিক কী বোঝে তা পরিষ্কার হল আরএসএস-এর ওয়েবসাইটে ‘ভিসন এণ্ড মিশন’ থেকে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বর্ণ, শ্রেণী ও বহু ভাষাভাষী মানুষে বিভক্ত এই সমাজে সমাজ-কর্মীদের মহত্তম কর্তব্য হল এই সামাজিক বুননকে অটুট রাখা’। সংঘ পরিবারের ... ...
জানুয়ারি একটা ভুলভাল রকমের ভালো মাস! শীত জব্বর, অথচ দুপুরের পর হারিয়ে যাওয়া সোনালী বিকেল আবার ফিরতে থাকে, আসে স্পোর্টস আর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী। প্রাইজ পাওয়া গুটিকতক ব্যক্তিগত আনন্দ ক্যাবলা হেসে নিজেদের সমর্পণ করে তাদের চারপাশ ঘিরে রাখা প্রাইজ না পাওয়াদের উদ্দাম গুষ্টিসুখের দরাজ বুকে। তা, সে বছর কলকাতা