শিকড়ের সন্ধানে / চলেছি ছিন্নমূল / তিতাসের তীর ছেড়ে / আম-জাম-হিজলের হাত ছেড়ে
স্বাধীনতা দিবস বলে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে, এ সব কথা নৈমিত্তিক জীবনে এখন অর্থহীন। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় এই দিনটির অর্থ ছিল। বাবা সকাল সকাল ঘুম থেকে তুলে স্নান করিয়ে ভাল জামা পরিয়ে স্কুলে পাঠাতেন। ভাল মনে আছে, অন্য দিন ছেঁড়া হাই চপ্পল পরলেও এই একটা দিন কালো বুট পরে স্কুলে যেতাম। তার আগে বাবা সন্দুর করে পালিশ করে রাখতেন জুতো জোড়াখানা। একবার স্বাধীনতা দিবসের দু’দিন আগে স্কুলের বড়দিভাই ডেকে বললেন, ‘শোন তোকে একটি কবিতা পাঠ করতে হবে। যা মেয়েদের স্কুলে গিয়ে ক্লাস ফাইভের বাংলা বইটা নিয়ে আয়।’ পড়তাম প্রাইমারি স্কুলে। আর মেয়েদের হাইস্কুলে যেতে হবে শুনে বুকটা ধড়াস ... ...
মেঘালয় পর্যটনে গেছিলাম। সেখানে রাজা আলীর সঙ্গে পরিচয় হল। এক ঝাঁক অবিন্যস্ত চুল, নীল শার্ট পাজামা পরিধানে। যেন নদীর জলের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পরেছে। দেখে ২০-২২ বছরের লাগে।রাজা আলী বাংলাদেশী, ডাউকি নদীর কূলে কুলের আচার বেচে।ডাউকি নদী ভারতে মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়েছ। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ডাউকি নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি লীলাভূমি। নদীর জল খুব স্বচ্ছ। একটা নদীর জল ঠিক কতটা স্বচ্ছ হতে পারে? ... ...
১. শেখ মুজিবুর রহমান ও খন্দকার মোস্তাক আহমেদকে নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। বঙ্গবন্ধুর পিতা যেদিন মারা যান সেদিন মোস্তাক বঙ্গবন্ধুর পিতার কবরে নেমে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চিৎকার করে বলতে থাকেন, এখন আমার কি হবে? বিব্রত মুজিব মোস্তাককে স্বান্তনা দিয়ে বলেছিলেন, শান্ত হও মোস্তাক। পিতা-মাতা আজীবন কারো বেঁচে থাকে না। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠবন্ধু ছিলেন খন্দকার মোস্তাক। হত্যার মাত্র একদিন পূর্বেই বাড়ি বয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হাঁসের মাংস খাইয়ে এসেছিলেন মোস্তাক। খন্দকার মোস্তাকের প্রতি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস এতটাই অটল ছিল যে সন্তানদের বলেছিলেন, আমার যদি কখনো কিছু হয়ে যায়, তোমরা মোশতাক কাকার কাছে চলে যেও। ২.স্বাধীনতার পর কলকাতা থেকে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ঢাকায় এসেছিলেন শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা ... ...
দুশো-সাত ফুট বাঁশ / পেছনে লাগিয়ে উড়ছে / স্বাধীনতা / দেশের / আনাচে কানাচে
বহুদিন আগে, আনন্দবাজার পত্রিকার উত্তর সম্পাদকীয় বিভাগে কবীর সুমন একটি সিনেমায় পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে গানটির শুরুতে একটি হু লা লা ব্যবহার নিয়ে লিখেছিলেন, একজন সঙ্গীত পরিচালকের উদ্দেশে - হাওয়া টা পাগল, আপনি বা আমি পাগল নই। এবং আরো অনেক কিছু। আমি নিশ্চই একা নই। অনেকেই ভাবছেন, কেনো এরম ভাবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন অঞ্জনবাবু। উনি তো অঞ্জন চৌধুরী নন। OTT র সুবিধা হলো যে সবাই দেখবে। আজ না হয় কাল দেখবে। পছন্দ না হলেও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে দেখবে। লোকের সাথে কথা বলতে গিয়ে মুখেন মারিতং জগৎ করতে গেলেও দেখবে। চানাচুরের মত। সকাল বিকেল এক গরস করে না হলে চলে না। তাই যদি ... ...
প্যারেন্টস-টিচার মিটিং-এ প্রি-নার্সারির এক বাচ্চার মা খুব উদ্বেগের সঙ্গে জানান যে তার ছেলে বড্ড মুডি। সে সব রাইমস বলতে পারে, নেচে কুঁদে দেখতেও পারে সাথে সাথে। কিন্তু করবে কি করবে না, সবটাই নির্ভর করে তার মুডের উপর। এখন চিন্তার বিষয় হল, পরীক্ষার সময় যদি মুড অফ থাকে!! এই চিন্তায় চিন্তায় তার রাতের ঘুম চলে গেছে। হ্যাঁ, লিটাইরালি। আমরা হেসে উঠেছিলাম শুনে। তারপর কথায় কথায় জানা গেল যে তার বর নাকি রাগারাগি করে, বলে, "একটাই তো কাজ, সেটাও ঠিক করে করতে পারো না!?"মেয়েটার বয়স বেশী হবে না। অল্প বয়সে বিয়ে, মাতৃত্ব। সে হয়ত বুঝে উঠতে চাইছে কী ভাবে এগোবে। হয়ত বুঝছে ... ...
ঘুম যখন আসবে না-ই ঠিক করেছে তখন দু এক লাইন লিখেনি। এরকমটা আমার মনে হয় যখন প্রভ সকালবেলা আরামসে ঘুমায়। আমার ঘুম ঘুম পেলেও ঘুমপাড়ানি মাসি আর চোখের পাতায় বসে না। তখন কাজের লিস্টিটা মাথার মধ্যে ভেসে ওঠে কিন্তু ইচ্ছা নামক বস্তুটার আর উদয় হয়না। তখন করতে ইচ্ছে করার মধ্যে পড়ে থাকি এই লেখালেখি। অবশ্য টাইপ করাটাকে লেখালেখি না বলে টেপাটেপি বলা উচিত। গতকাল থেকে ঘাড়ে মাথায় অসহ্য ব্যথা। হিমালয়ার একটা ব্যথা কমানোর ওষুধ লাগলাম ভোর রাতে। আসলে বাঁ দিকে ফিরে শুতে শুতে এই অবস্থা। একজন পাশে থাকলে তার দিকে তো আর পিছন ফিরে শোওয়া যায় না! তাও শুই মাঝেমাঝে। কালকেও ... ...
জীবন তো নদী, বয়ে চলে, কখনো বন্ধুর পথ বেয়ে, কখনো সমতল, কখনো ফুলে ঘেরা উপত্যকার পাশ দিয়ে। আমরা তবে কোথায় আছি এই বহমান নদীর স্রোতে? আমরা সেই জলের কণা। কেউ মিলবে সমুদ্রের বিশালতার সাথে, কেউ বা ছোট্ট ঝোরা হয়ে কারোর বুকে জল সিঞ্চিত করবে। কেউ বা উত্তাল হয়ে সাজানো বাগান ভেঙে ফেলবে, কেউ বা স্রোত হারিয়ে পঙ্কিল হয়ে পড়বে, কেউ হয়তো বাষ্প হয়ে বিলীন হয়ে যাবে। কেউ নিজের পরিণতি জানে না। জীবন নিয়ে চলে। ... ...
আমাদের এই নীল গ্রহ থেকে তেরোশো কোটি আলোকবর্ষ দূরে একটি নক্ষত্রপুঞ্জ আছে, আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে তার নাম EGS-zs8-1। অন্যান্য হাজার হাজার galaxyর সঙ্গে EGS-zs8-1র এমনিতে কোন তফাৎ নেই, কিন্তু আবার আছেও। কারণ, প্রাচীন স্ক্যানডিনেভিয়া'র নর্স পুরান-রচয়িতারা এর নাম দিয়েছিলেন আসগার্ড। আসগার্ড - নর্স দেবরাজ ওডিন ও থরের স্বর্গ। আসগার্ড - এমন এক স্বর্গ যেখানে একমাত্র নরশ্রেষ্ঠরা অমরত্ব লাভ করে অনন্তকাল সেখানে বাস করার ছাড়পত্র পান।আসগার্ড বেশ দৃষ্টিনন্দন মনোরম জায়গা। আমাদের কল্পনার স্বর্গ যেমন হয়। আর আজ, যখন আমাদের এই কাহিনী শুরু, সেখানে পার্কে বসে আছেন এমন একজন যিনি দীর্ঘ সতেরো বছর তাঁর দেশের সর্বোচ্চ নেতা ছিলেন। সে অবশ্য অনেকদিন আগের কথা। ... ...
১৬ই ডিসেম্বর বা ২৬শে জুলাই জানেন কি? কেনই বা জানবেন। আসলে প্রসঙ্গগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর আপামর ভারতবাসী সেটা গিলছেও। আসলে অশিক্ষা নয় রীতিমত কুশিক্ষায় দেশটা ভরে গেছে। তাই আত্মদানের এই মহান স্বাধীনতা দিবস আজ আমাজন আর ফিল্পকার্টের সেলেই সীমাবদ্ধ। আর বাঙালি? বাঙালি নিজ স্বত্তা ভুলে হুবাহু এই কুশিক্ষাকে নিজ অন্তরে মজ্জাগত করে চলছে। পথের পাঁচালি খ্যাত বাঙালি আজকাল বাংলা সিনেমাকে ন্যাস্টি কালচার বলে। কথায় কথায় ফাক ইউ আর WTF বলা বাঙালি আজ সারাদিন সেট ম্যাক্স নয় তো জি সিনেমা বা স্টার মুভিস নিয়ে বসবে। ... ...
হাঁফাতে হাঁফাতে গাড়িটা যখন বসুমতি কটেজে এসে পৌঁছাল, তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামি নামি করছে। সূর্যটা নিভু নিভু করছে। একটু পরেই পাহাড়ের খাঁদে আত্তহত্যা করবে। উঁচু পাহাড়ের ভিড়ে লুকিয়ে থাকা কটেজটা, তোফায়েলের পছন্দ হল। ওরই এক ভক্তের কটেজ। বলেছিলো- "আপনাদের তো নিরবতা, নির্জনতা পছন্দ। রাঙামাটিতে আমার একটা কটেজ আছে। চারপাশে উঁচু পাহাড় ছাড়া আর কিছু নেই। সবচেয়ে কাছের গ্রামও ৫কি:মি: দূরে। আপনি চাইলে যেতে পারেন। আপনার ভালো লাগবে। সেখানে আমাদের এক কাজের লোক আছে, নাম সুতং। কটেজটা ওই দেখাশোনা করে। সর্ব ঘাটের কাঁঠালি কলা, রান্নাবান্না সব পারে। আপনার কোন অসুবিধা হবে না।" অফারটা শুনেই লোভনীয় লেগেছিলো তোফায়েলের। জিহ্বা বেরিয়েইছিলো কিন্তু সময় ... ...
একটা ছোটো বিষয় পরিষ্কার করা দরকার হতে পারে। আমি সিপিএম সমর্থক হিসেবে শ্রমজীবি ক্যান্টিন পরিচালনার কাজে জড়িয়ে আছি। গত লকডাউন থেকেই অনিয়মিত ভাবে এ কাজ পাড়ায় চালাচ্ছেন সিপিএম-এর সদস্য সমর্থকরা। তখন ছিলাম এখনও আছি। যা প্রয়োজন তার তুলনায় কিছুই করতে পারি নি এবং ব্যক্তিগত সামর্থ্যের শেষ সীমায় পৌঁছেছি, দুটি কথাই সত্যি। প্রথমটিই বেশি সত্যি, তবে নির্মম না, কারণ কিছু লোক শ্রমের মূল্য পান না তার চেয়ে নির্মম কিসু নাই। আমার রাজনৈতিক কাজকর্ম রাজনৈতিক ভাবে বামেরা কোণঠাসা হবার পরে আরো বেড়েছে। এতদ্বারা আমি মহান প্রমাণ হল না অবশ্যই। ... ...
সৈয়দ মুজতবা আলীকে নিয়ে কিছু লিখবো এমন বুকের পাটা আমার নেই। শুধু ভালোলাগাটুকু জানানো। মুজতবা আলীর জন্ম ১৯০৪ সালে। প্রথম দিকে পড়াশুনা সিলেটে। তারপরে কবিগুরুর চিঠি পেয়ে অভিভূত হয়ে তিনি শান্তিনিকেতন চলে আসেন। পাঁচ বছর সেখানে পড়াশোনা করেন। বিশ্বভারতীর প্রথম বছর এর স্নাতক তিনি। এর পরে তিনি কাবুল চলে যান। শিক্ষা বিভাগে চাকরি নিয়ে। সেখানে ২ বছর থাকেন। তার সেই কাবুলবাসের সরস বর্ণনা আছে তার বহুসমাদৃত "দেশে বিদেশে" গ্রন্হে। এর পরে তিনি ... ...
চার প্রতিভা মাস্ক খুলিয়া এক হইল কোভিডোত্তর কালে। মিলিয়া জুলিয়া কিছু একটা করিবে। প্রথম প্রতিভাঃ অমুক সিনেমাটা দেখলাম। হোয়াট আ জার্নি। দ্বিতীয় প্রতিভাঃ কোথায় জার্নি? থেমেই তো ছিল। তৃতীয় প্রতিভাঃ অরিজিনাল বইটা পড়ো। সিনেমাটা কিছুই হয় নি। চতুর্থ প্রতিভাঃ বই পড়া খুব কমে গেছে আজকাল। আসলে একটা বয়সের পর কি পড়ব ঠিক করার চেয়ে কি পড়ব না ঠিক করাই বেশী দরকার হয়। ... ...
এইবার সুগতবাবুর এক পিস গল্প লিখি। গল্প মানে সত্য ঘটনা। ক্লাশ হচ্ছে হেডুর ঘরের ঠিক নীচে। স্যার ইতিহাসের কিছু একটা পড়াচ্ছেন। হাই ফাই নোটস দিচ্ছেন। ভালো ছেলেরা মন দিয়ে নোট নিচ্ছে আর "স্যার আর এক বার বলুন" "আর এক বার বলুন" করছে। আমি এবং আরও বেশ কিছু ওঁচা ছেলে খাতার পেছন দিকে ট্যালি মার্ক দিয়ে স্যার কটা 'কেমন' বললেন গুনছি। ... ...
IPCC (Intergovernmental Panel on Climate Change)-র ষষ্ঠ রিপোর্ট: ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন মানব সভ্যতা। বিশ্বের প্রতিটি এলাকার জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণার পর ১৯৫ টি সদস্য দেশকে নিয়ে দুই সপ্তাহ জুড়ে বৈঠকের পর ষষ্ঠ রিপোর্ট পেশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃরাষ্ট্র প্যানেল (IPCC- 6th Report1) এই বছরের ৯ ই আগস্ট। এই রিপোর্টের পদে পদে পৃথিবীবাসীর জন্য রয়েছে চরম বিপদ বার্তা। যদিও এটা রিপোর্টের প্রথম ধাপ, পুরো রিপোর্টটি প্রকাশিত হবে ২০২২ সালের মধ্যে। এই রিপোর্টের ভয়ানক বার্তাগুলি নিম্নরূপ। প্রথমত: মনুষ্যকৃত নানা উন্নয়ন, নগরায়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির অত্যধিক ব্যবহারের ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড সহ অন্যান্য গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন ... ...