তৃতীয় ঢেউ আসছে আসছে শুনছি — অনেক দিন ধরেই — এসেছে কিনা সঠিক জানি না, তবে তলে তলে তো শুনছি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷যাদবপুরের কলোনী অন্চলের বাসিন্দা, সার্স কোভ—২ বাবাজীবন এদিক পানে মাড়াবেন না — তা তো বলা যায় না, তবু মাস্ক থুতনী থেকে ওপরে উঠছে না এসব অঞ্চলে। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতন আবার পূজো বাজার দরজায় কড়া নাড়ছে—মত্ত বাঙ্গালি মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে দিব্বি ঝাঁপিয়ে পড়ছে। যদিও বাজারে নানান ডিজাইনার মাস্ক বিক্রি হচ্ছে। ... ...
#rebuildbengalleft বিজেপির রাজ্য সভাপতি তাঁর নিজের দলের কাউন্সেলর এর বাড়ির পিছনে বা সামনে বা অন্তত অনতিদূরে নাগরিক দের মলত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন। এরকম সিভিক সলিউশন সত্যিই বিরল।আরেকজন আদ্যপান্ত সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ, রাজনীতি থেকে চলে গেলেও, সাংসদ পদটি ছাড়তে পারছেন না। একজন রীতিমত শিক্ষিত বিজেপি নেতা, তিনি আবার রাজ্যপাল পদ অলঙ্কৃত করে থাকেন, নিয়মিত কদর্য আক্রমণ করেন সমাজের নানা অংশের মানুষকে। আর দুজনের অপূর্ব রূপকথার মতো শাসন কালে দাড়ি ও টাক ফ্যাশনেবল হওয়া ছাড়া আর কিছু বিশেষ দেশের কাজ হয় নি, যা হয়েছিল তা বানচাল করা চলছে। আপাদমস্তক স্বৈরাচারী এবং মিথ্যাচারী। তাঁদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী হুমকি এবং এনকাউন্টার দিয়ে রাজ্য চালান। বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল জোর ... ...
~রহিম ব্যাপারীর অন্তর্ধান~ সবচে' চটকদার ব্যাপারটা হলো, রহিম ব্যাপারীর চলে যাওয়া। রহিম ব্যাপারী কোথায় গিয়েছে? ওর শ্বাশুড়ির বদ্ধমূল ধারণা রহিম ব্যাপারী এই পৃথিবী ছেড়েই হাওয়া হয়ে গেছে, যদিও ওর স্ত্রী রিনা মনে করে রহিম ব্যাপারী জাহাজ বা অন্য কোনো যানের সাহায্যে ওদের ছেড়ে বিদেশ চলে গেছে, অর্থাৎ দেশ ছেড়েছে। যেহেতু, রহিম ব্যাপারী বর্তমানে আশেপাশে উপস্থিত নেই। তাই, ওর অন্তর্ধান নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা করা মানায় না। কারণ, এই চিন্তাভাবনার ফলাফল একটাই আসবে, রহিম ব্যাপারী কোথায় হারিয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে আমরা কেউ-ই জানি না। এবার ওর পরিবারের দিকে তাকানো যাক। ব্যাপারীর সতেরো বছরের একটি মেয়ে রয়েছে, যাকে ওর দাদী কালী বলে ডাকে। এই কালী ডাক থেকে আমরা ... ...
এক একটা ঘটনা ধূপের গন্ধের মতো। ধূপের গন্ধ যেমন ঠাকুর ঘর মনে করায় তেমন বর্তমানে ঘটে চলা কোনো ঘটনা হাত ধরে নিয়ে চলে পুরোনো কোনো স্মৃতির অলিন্দে।জগতের আনন্দজজ্ঞে সবে মাত্র সমাপ্ত হওয়া অলিম্পিক্স সেই ধূপের গন্ধ। অলিম্পিকের মানে বুঝতে আশির দশকের শিশুর ক্লাস সেভেনে উঠতে হয়েছিল। আর যেমনি বোঝা অমনি শুরু হল আয়োজন। এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অধরা থেকে যাবে তা তো হয় না। মনে আছে আমাদের পাড়ার যে খেলার গ্ৰুপ ছিল সেখানে সদস্য হতে গেলে বয়সের কোনো সীমারেখা রাখা হত না। তা না হলে সদস্য বে-দল হতে পারে। প্রত্যেক সদস্যই নিজ নিজ যোগ্যতায় স্বমহিমায় থাকতেন।সেই গ্ৰুপে একবার অলিম্পিক্সের আয়োজন করতে ... ...
কন্টিনেন্ট এবং আমেরিকায় ছোটগল্প প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছিল ঊনবিংশ শতাব্দীতেই। কিন্তু সাহিত্য সংস্কৃতি ঐশ্বর্য্য এ মদমত্ত ইংল্যান্ডের চূড়ান্ত আত্মপ্রসাদে তখনও ফাটল ধরে নি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিপর্যস্ত মানসিকতা, বিচ্ছিন্নতা বোধ, ক্লান্তি আর যন্ত্রণার মধ্যেই সাবালক হল ইংল্যান্ডের ছোট গল্প। রবার্ট লুই স্টিভেনসন বা এইচ জি ওয়েলসের আডভেঞ্চার বা ওসকার ওয়াইল্ডের আলিগরির জগত থেকে সমারসেট মম, এইচ ই বেয়টস, ডি এইচ লরেন্স, ই এম ফস্টার এবং ক্যাথারিন ম্যানসফিল্ডের ছোটগল্পের জগত সম্পূর্ণ আলাদা। এদের দাবি অল্প কিন্তু অখণ্ড মনোযোগ। ডি এইচ লরেন্সের "Lady Chatterley's Lover" পড়েছি। ফস্টারের পড়েছি "A passage to India". অবশ্য ক্যাথারিন ম্যানসফিল্ডের কোন লেখা পড়ার সৌভাগ্য এখনও আমার হয় নি। ... ...
বাড়ি ফেরার আকাঙ্খায় পরিযায়ী শ্রমিক ভেসে যায়, দিবারাত্রি সহস্র পথ হাঁটে ঘরে ফেরার তাড়নায়।রেল লাইনে পড়ে থাকে অচেনা শ্রমিকের লাশ, ওরা এখন বিরোধী রাজনীতির তুরুপের তাস।তবু ঘরে ফেরার আকাঙ্খায়
বছরে বেশ কয়েকবার দূরপাল্লার মেল বা এক্সপ্রেসের যাত্রী হওয়ার সুযোগ আমার হয়েই থাকে। ট্রেনে সবসময়ই আমার বড় পছন্দের জালনার ধার। নির্দিষ্ট সীটটি বেশ কিছু ঘন্টার জন্য আমার নিজস্ব পৃথিবীর মতো হয়ে যায়। একই পথে বহুবার আসা যাওয়া করলেও জালনার বাইরের পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রতিবারই আমাকে নতুনভাবে আকর্ষণ করে থাকে। বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ঋতুতে সেই বিশেষ যাত্রাপথটি বিভিন্ন রূপ, রসে আমার চোখে ধরা দেয়। যত বয়স বাড়ছে, ঐ পরিচিত রূপ রসের দুনিয়ার বহু গোপন রহস্য অন্তরে উন্মোচিত হচ্ছে। বুঝতে পারি এই পাঠশালার পাঠ্যক্রমের কিছুই বিশেষ পড়া হল না আজও। তাই বারেবারে ইচ্ছে হয় অমনভাবে জালনার পাশে বসে সৃষ্টিকর্তার অতি যত্নে রচিত প্রকৃতিকে দু চোখ ভরে দেখতে, ... ...
গ্রামে দুটো মাত্র প্যান্ডেল হত। ছোটখাটো। দুটোরই মঞ্চে যারা থাকতেন তাদের জন্যই আপনি গালি খেতেন। সিক্সে জানতাম আপনি ঠাকুর। দাঁড়িবালা ঠাকুর। হেব্বি লাগতো স্টাইলটা। চাচা নাখুস ছিল। বলতো সালা কুজাতের লোক, মুসলমানদের মত দাঁড়ি রাখে। ঈমান নাই। তখন থেকেই মনে হয় ধর্মে খড়ি। তখন থেকেই কাফের মনে হয়। আপনিই দায়ী। এইটে যখন পামেলা এন্ডারসন হিট। তখন শুনলাম আপনি বৌদিবাজ। হেব্বি কেচ্ছা নাকি কিসব চিঠিপত্র নিয়ে। সদ্য তখন টেস্টোস্টেরন থেকে প্রজেস্টরনের শুরু। আপনি তখন থেকেই গুরু, দেব নন। দেব মানে মূর্তি মনে হয়। ... ...
টিকা না বলা কথার মৃত্যু হয় না / জারজ সময়ে মৃত্যুমেধ যজ্ঞের ঘোড়া, / দূর থেকে কাছে আসে শুধু! / আদ্যিকালের মানুষ জলদগম্ভীর আকাশের দিকে চেয়ে বসে থাকে, / অনেক জন্মের সাধ তাঁরও তো ছিল! / রুক্ষ মাঠে পাতা ট্রাম, / শেষ কামরায় শেষ রাতে প্রভূত কামনায় বিস্ফারিত চোখ শুধু কথা রাখে! ... ...
গুরুর অসীম কৃপায় খেরোর খাতায় আঁকিবুকি কাটা শুরু করছি। শিষ্য তার সাফল্য প্রার্থনা জানাচ্ছে।
বস্তুতঃ, বাইশে শ্রাবণ যে বিষয়টি সর্বাধিক আলোচিত হল তা হচ্ছে 'পরীমণির পর্ন'।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একবার সস্ত্রীক রেল পথে ভ্রমণ করছিলের। এক যুবক অনেকক্ষণ ধরে তাঁর স্ত্রীকে দেখার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। বিষয়টা বুঝতে পেরে বঙ্কিমবাবু যুবকটিকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কী করা হয়?' ছেলেটি উত্তর দিল যে সে চাকরি করে এবং ত্রিশ টাকা মাইনে৷ বঙ্কিম হেসে বললেন, 'আমি সরকারি চাকরি করি৷ সঙ্গে বইও লিখি৷ হাজার দুয়েক রোজগার৷ সবই স্ত্রীর চরণে দিই। তাও মন পাইনে ভাই৷ ত্রিশ টাকায় সে মন কি তুমি পাবে?' যুবকটি লজ্জিত হয়ে তৎক্ষনাৎ প্রস্থান করে ... ...
প্রায় এক বছর চার মাস লকডাউনের দরুন ট্রেন বন্ধ, যারা গৃহসহকারীর কাজ করতে কলকাতাতে আসতেন রোজ, ওনাদের সবারই আসা বন্ধ, এখন কাজ নেই, ফলে রোজগারও নেই৷৷ তেমনই একজন এসে উপস্থিত, আজ৷হঠাৎই আজ একটি ট্রেন চলেছে, তাতে করেই এসেছেন৷৷ ওনার গল্প শুনছিলাম৷৷ক্লাস ইলেভেনে পড়া ছেলেটির একটি মোবাইলের দরকার ছিল, অনলাইন ক্লাসের জন্য ৷৷ স্কুলের অনলাইন ক্লাস নয়, সে বিষয়ে সরকারী শিক্ষুককুল নেটওয়ার্কের সমস্যার দরুন ভেটো দিয়েছেন পড়ানোতে৷৷প্রয়োজন প্রাইভেট টিচারের অনলাইন ক্লাসের জন্য, প্রাইভেট পড়ানোর সময় ঔ শিক্ষকগন কোন যাদুবলে নেটওয়ার্ক পেয়ে যান সেটা দিদি বলতে পারলেন না অবশ্য৷৷শুধু বললেন—"যা টাকা জমিয়েছিনু দিদি, তাই দি ছেলেকে মোবাইল ফোং কিনে দিছি,পড়তি হবে, মাষ্ঠারে বলেছে, হাতে ... ...
#rebuildbengalleftযাঁরা সংবিধান পূজা করার পরে কৃষকের স্বাধীনতা বড় বিপণনকারী সংস্থার পায়ে লুটিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে, কৃষি আইন আনতে, অর্জিত অধিকার হরণের উদ্দেশ্যে, শ্রম আইনের পরিবর্তন আনতে, দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা জাতীয় সম্পদ বিকিয়ে দিতে পিছপা হননা, হতদরিদ্র মানুষের নাগরিকত্ব হরণের জন্য ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করেন, দুই রাজ্যের মধ্যে কার্যত জাতিগোষ্ঠীর যুদ্ধ ঘোষণা করেন, যাঁদের রামরাজ্যে মানুষ বাচ্চাকাচ্চা সহ হেঁটে পাড়ি দেয় হাজার কিলোমিটার, মৃত প্রিয়জনকে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বাধ্য হয়, ভ্যাকসিন নেবার জন্য মারামারি করতে বাধ্য হয়, খাদ্য, বস্ত্রে স্বনির্বাচনের অধিকার হারায়, অভিযুক্ত বিচার হবার আগে এনকাউন্টারের সম্মুখীন হয়, ডাক্তার বা দেশের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় ও তার পরিবার আক্রান্ত হন শুধু তাঁদের ... ...
২৫শে বৈশাখ এবং ২২শে শ্রাবণ কি মনে রাখেন ৮ই অক্টোবর কিংবা ৬ই সেপ্টেম্বরের কথা? আলাউদ্দিন খাঁ। যাঁর হাতে তৈরি হয়েছিলেন অগণিত সংগীতশিল্পী। আমি ২৫শে বৈশাখ বা ২২শে শ্রাবণকে একেবারেই ভুলতে বলছি না। বরং মনে রেখেই বলছি– ২২শে শ্রাবণ একটা মিথ্যে দিন, কারণ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়নি। বরং রবীন্দ্রনাথ প্রতিনিয়ত সমাজের হাতে খুন হন। আজকের সমাজ তো রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড়ো দুঃশ্চিন্তা করেন। তাঁর বৌদিকে নিয়ে বেশি ভাবেন। তাঁর রচনাগুলো ক’জন পড়েন? রবীন্দ্রনাথের বৌদিকে নিয়ে কে কি লিখলেন সেটায় বিশ্বাসী, সেটাই পড়েন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের রচনাবলী তাঁদের কাছে বদহজম। আলাউদ্দিন খাঁর হাতে তৈরি বাঁশির ঈশ্বর পান্নালাল ঘোষের কথা আমরা মনে রাখি না। অনেক ... ...
গতবছর ধান কাটার মৌসুমের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধকালে শিক্ষার্থীরা যখন আরাম-আয়েসে দিনাতিপাত করছে, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ধান তোলার কাজে সাহায্য করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন৷ সেই ডাকে সাড়া দেন আমাদের এলাকার স্থানীয় ছাত্রলীগের এক শীর্ষনেতা। মাথায় গামছা, নিম্নাঙ্গে লুঙ্গি পেঁচিয়ে হাতে একটা কাস্তে নিয়ে নেমে পড়েন ধান গাছ কাটতে৷ ঘন্টাখানেক বাদে ধান কেটে শ দেড়েক ছবি তুলে সাঙ্গপাঙ্গ সমেত ধান ক্ষেত থেকে উঠে আসেন। কিছুক্ষণ পর ফেসবুকেছবিগুলো সংযুক্ত করে শিরোনামে লিখেন হেলাল হাফিজেরভূমিহীন কৃষকের গান কবিতার প্রথম পঙক্তি। "দুই ইঞ্চি জায়গা হবে? / বহুদিন চাষাবাদ করি না সুখের।" ছবির সাথে এই শিরোনাম দেখে আমি রীতিমতো আঁৎকে উঠেছিলাম। আমার জায়গায় কবি হেলাল হাফিজ থাকলেও নির্ঘাত আঁৎকে উঠতেন। ... ...
সময় বয়ে যায়, আর সঙ্গে বদলে দিয়ে যায় মানুষ এবং তার জীবনযাত্রা, সঙ্গে বদলায় বাসস্থান-গ্রাম-শহর। ছোটবেলায় যে শহরের প্রতিটি কোনা ছিল নখদর্পনে আজ কালের ব্যবধানে সেই শহর অচেনা ঠেকে, বদলে যাওয়া শহরের মাঝে দাঁড়িয়ে দিকভ্রান্ত আজ আমি। ছেড়ে আসা শহরের পরিচিত গলি, পরিচিত পাড়া অচেনা চোখে তাকায়, যেন প্রশ্ন করে - "কে তুমি?"। অভিমান বুকে পাথরের মত চেপে বসে, প্রয়োজন আর সময় - এ দুই'এর চাপে পরদেশবাসী আমি ঠোঁট ফুলিয়ে উত্তর দিতে চাই "শহর, তুমি বদলে যাচ্ছো কেন? আমি যে তোমায় চিনতে পারছি না, আমি তোমায় খুব ভালবাসি, তুমি কি আমায় ভুলে গেছ শহর?" — মুচকি হাসে অচেনা শহর ... ...