আমাদের পাঠকদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় লেখকদের মেরে ফেলার অদ্ভুত এক প্রবণতা রয়েছে। অনেকের ধারণা একজন জনপ্রিয় লেখক মাত্রই মৃত। ধৈর্য্য ধরুন, খুলে বলছি।
পাকিস্তান ঘাস খেয়ে এটম বোমা বানানোর স্বপ্ন দেখেছিল। ১৯৭২ সালে দেখা সেই স্বপ্নটা তারা এসে পূরণ করেছে ১৯৯৮ সালে। এটম বোম বানিয়েই ছেড়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের নিউক্লিয়ার সাইন্সে উন্নত করছে। উন্নত করেছে গবেষণায়। চীনের সাথে মিলে তৈরি করছে ফাইটার জেট।
কাশী থেকে কলকাতা। বৈষ্ণবের খঞ্জনি থেকে জিমি হেনড্রিক্স। কেকাবউদি থেকে স্বর্ণকেশী ম্যাডলিন। মলয় রায়চৌধুরির এই লেখা, এক অন্য পৃথিবীর উড়ান, যা চেনা হলেও দূরবর্তী। মানুষের হাতে ধরা থাকে লাটাই, কিন্তু ঘুড়ি ওড়ে অন্য কোনো আকাশে। যা কিছুটা চেনা, কিছুটা মেঘের কাছাকাছি। মলয় রায়চৌধুরির লেখালিখি তো এরকমই। গত পঞ্চাশ-টঞ্চাশ বছর ধরে। পদ্যের কথা আপাতত বাদই থাক। কিন্তু বাংলা গদ্য যখন পুজাবার্ষিকী থেকে পুজাবার্ষিকীতে সরল থেকে সরলতর হয়ে ক্রমে টিভি-সিরিয়ালে পরিণত হচ্ছে, প্যান্ডেল হপিং আর উপন্যাসপাঠের মধ্যে তফাত ক্রমশ মুছে আসছে, তখন চিরতরুণ মলয় রায়চৌধুরি হাঁটছেন উল্টোদিকে। উল্টে দিচ্ছেন চেনা ছক, বাঁকিয়ে দিচ্ছেন সরলরেখা। অমৃতের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে অমলেট। সে এক বিচ্ছিরি ব্যাপার ... ...
আমার মন ভালো নেই প্রিয়া! / বহুদিন পর আজ এমনটা হল!
হারিয়ে যাও হারিয়ে যাও / নদীভাঙনে তলিয়ে যাওয়া সুদর্শন অট্টালিকার মতন!
মাখন খেয়ে মাখামাখি! কপাল! / নাম জানো না আমার?
হেলায় পড়িয়া আঁধার দেখিয়া তাকাই আসমানেঝিঁঝিঁর ডাকে সায় দিয়া উঁকি দিল চাঁদখবর এল চারিধারেসকলে দেখিল শশীকেবল আমি দেখিলাম প্রিয়ার মুখ! ঢলে পড়া শেষরাতে জাগিয়া উঠিল, ওগো প্রিয়,কেবলই তোমার মুখ!
একটা তাল নিয়ে যা দুলালী। খালি মুখ থেকে বেরিয়ে গেছিল - আমাদের আর কি জন্মাষ্টমী দিদি? আমাদের ঠাকুর কি সেই ভাগ্য দিয়েছে? দুলালীর একটি পাঁচ বছরের ছেলে আছে - নাম পরিমল। বাবাকে সে দেখে নি। ওর বাবা ওর জন্মের আগেই মরে গেছে। কারখানায় কাজ করত। এক্সিডেন্টে মারা গেছে। শোনা যায় - ভালোবেসে নাকি ওদের বিয়ে হয়েছিল। অর্থের তাড়নায় দুলালী আট বাড়িতে কাজ ধরেছে। বেগোর খালের ধারে একটি বসতিতে মা ছেলে থাকে। সুমনা প্রায় জোর করেই হাতে একটি তাল দুলালীকে দিয়ে বললো - তুই তালের বড়া করে ঠাকুরকে দিবি আর ছেলেকে খাওয়াবি।মা তাল নিয়ে ঘরে এসেছে। মা ওকে শুধু পরি বলে ডাকে। ... ...
গ্রীষ্মকালের চরম শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার তৃণভূমিতে আগুনলাগা নতুন কোনো ব্যাপার নয়। তীব্র তাপমাত্রায় বয়ে যাওয়া ঝড়ো বাতাস, বজ্রপাত, অসাবধানী ক্যাম্প ফায়ার ও নানা কারণে তৃণভূমিতে প্রায়ই আগুন লাগে।
আমরা হারালাম আমাদের একজন প্রিয় লেখককে - বুদ্ধদেব গুহ মহাশয়কে। চার মাস আগে কোরোনাকে পরাজিত করলেও - ৮৫ বয়েসে হৃদরোগে প্রয়াত হলেন গতকাল রাতে। উনিও ছিলেন আমার অনেক প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন। তার সৃষ্ট 'ঋজুদা' অথবা 'ঋভুদা' কিশোর বয়সে মনকে আকৃষ্ট করে রাখতো।
বিছানায় এসে শুয়েছি তা প্রায় ঘণ্টাখানেক হল। কিছুতেই ঘুম আসছে না। বাইরে নিস্তব্ধ নিঝুম শীতের রাত। ঘরের নাইট ল্যাম্পটা নিভিয়ে দিয়েছি ইচ্ছে করেই। একটুও আলো সহ্য হচ্ছে না আর। যদিও এই মুহূর্তে কেবলি মনে হচ্ছে কেউ যেন একটা কালো রঙ ধেবড়ে দিয়েছে আমার শরীর জুড়ে। আমি কিছুতেই তা ঘষে মুছে তুলে ফেলতে পারছি না। মনের যে গোপন কুঠুরির মুখ সযত্নে এতদিন বন্ধ করে রেখেছিলাম। আজ সেই বন্ধ মুখের ঢাকনাটা সরে গিয়ে কত স্মৃতি গলগল করে বেরিয়ে আসছে। ... ...
বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে রাধাকৃষ্ণ সর্বাধিক পূজনীয়। বৈষ্ণবধর্ম তো রাধাকেন্দ্রিক। আবার সাহিত্যাঙ্গনেও রাধাকৃষ্ণ দখল করে আছে বিস্তর জায়গা। সেই রাধার পরিচয়োদঘাটন করার জন্য এই পোস্টটি। রাধার শাস্ত্রীয় পরিচয়ের পূর্বে কৃষ্ণের শাস্ত্রীয় পরিচয় কিছুটা জেনে নেয়ার প্রয়োজন আছে। ঋগ্বেদের কয়েক জায়গায় কৃষ্ণের উল্লেখ পাওয়া যায় কিন্তু তাঁরা দেবকীনন্দন বা মহাভারতের বা বর্তমানে যাঁর পূজা করা হয় সে কৃষ্ণ নন। তবে, অথর্ববেদে কৃষ্ণের উল্লেখ পাওয়া যায়। বেদ আরও বেশি অধ্যয়ন করলে কৃষ্ণ নাম পাওয়া না গেলেও কৃষ্ণের বৈশিষ্ট্যধারণকারী বেশ কিছু নামের উল্লেখ আছে। তবে, সেই বৃহৎ শাস্ত্র থেকে খুঁজে বের করে আনা একটু কঠিন। ... ...
গত রাতে ঘুমোতে গিয়ে সোমেশ্বরের প্রথম মনে আসে, ‘পিকিং’ বলে এককালে পার্কস্ট্রিটে যেখানে রেস্তোরাঁটা ছিল তার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে পরাগ। না, পার্কস্ট্রিটই কি? পিকিং-এর মতনই তো দেখতে দোকানটা, ঐ যে চারমাথার মোড়টা! ‘চল, কোথাও গিয়ে বসি, কথা আছে’, পরাগই বা এখানে এলো কোথা থেকে! তাহলে কি এটা অফিসের মোড়, ওয়েলিংটন স্কোয়ার! কবে যে পিকিং উঠে গেল টেরই পাওয়া গেল না, কি ছিল আর কি হল মানুষ শুধু সেটাই মনে রাখে, সরকারি নথির মত নয় ব্যাপারটা। ‘কোথায় যাবে! সামনের ঐ সেলুনটায় গেলে হয় না? চুল কাটতে হবে।‘ – মাথায় হাত বোলায় সোম। ... ...
আহ্বানঅখিল রঞ্জন দেজাগ্ বাঙালি, ওঠ্ বাঙালি, কান পেতে দেখ্, মনে তোর,জগৎ মাঝে, কি সুর বাজে, ধর্ চেপে ধর্, প্রাণে তোর।ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে, কাটালি যে তুই, শতবছর করলি পার,এবার যে তোকে, জাগতে হবে, বাঙলা "মা" যে, উপসি আজ!যা আছে তোর, মনের ভিতর, মনের যতো মলিনতা,ঝাড় ঝাড় সব, ঝেড়ে ফেলে, চলরে চল্, এগিয়ে চল্।পরের 'ধনে', পরের 'মানে, করবি কতো বল্, পোদ্দারি, আপন 'ধনে', আপন 'মানে', ... ...
আজ যখন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িকতার বিষ আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়ছে, আর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর চাপা পড়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পায়ের তলায়, তখন আবার করে জরুরী হয়ে পড়েছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।
ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা নতুন কিছু নয়। মানব সভ্যতার গোড়া থেকেই চলে আসছে এই প্রচেষ্টা। ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে অনেক ভালো শাসকের ভালো কাজকে নষ্ট করে দেওয়া যায় বা নিজের খারাপ কাজকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভাল হিসাবে তুলে ধরা যায়।ইতিহাস হচ্ছে মানব সভ্যতার দর্পণ বিশেষ। এই দর্পণে চোখ রেখে বর্তমানের মানুষ অতীত দেখার মাধ্যমে ভবিষ্যতকে অনুমান করতে পারে। তাই ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।উদাহরণস্বরূপ বলা যায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের যখন প্রাথমিক ধারা শুরু হয়েছিল সেই সময়কার মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান সম্পূর্ণ ধামাচাপা দিয়ে কৃতিত্ব নিয়ে নিয়েছে ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানীরা। ইংরেজরা ভারতবর্ষে যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছু উন্নয়ন দেখিয়ে দুশো বছর ব্যাপী তাদের ভয়াবহ লুন্ঠন অত্যাচারের ... ...
দুনিয়ায় নিখাদ আনন্দের উৎস কি / তাই খুঁজব বলেই তোমায় ভালোবাসি!
দসমি সেই কবে গ্ৰাম ছেড়ে প্রিয়রঞ্জনের সঙ্গে সংসার করতে এসেছিল আর তা মনে নেই। মেয়েদের তো এই! এই প্রিয়রঞ্জনের ঘরই তার নিজের ঘর। নিজের বাপের ঘর সব মেয়েদের মতো ভুলেই গিয়েছিল দসমি। বিয়ে হয়ে গেলে সে ঘর কি আর নিজের থাকে? দূরেও বটে বাপের গ্ৰাম। তাছাড়া তিনটে মেয়ে, দুটো ছেলে নিয়ে ভরা সংসার। তাই সেই যে বিয়ে হয়েছিল, আর যাওয়া হয় নি সেখানে। জ্ঞান হওয়া অবধি জানত মা, বাপ, ছোট দুটো ভাইকে নিয়ে জগৎটা ওরই। ওরাও তো দসমিকে ভালোবাসত বলেই মনে হত। বাপটা নেশায় চুড় হয়ে থাকলেও হাটবারে দসমির পছন্দের লাল চুড়ি, মাথার ফিতে মনে করে এনে হাতে দিত। ... ...
ছড়াটির ছত্রে ছত্রে চিত্রিত গ্রাম বাংলার সাধারন মানুষের জীবন যাত্রার চিত্র। বাদশাহ বা রাজা কয়েকটি গ্রামেরখাজনা আদায়ের জন্য এর শ্রেণীর তহশিলদার নিযুক্ত করতেন এদের বলা হত "মুজলিমদার"। মজুমদার কথাটি এরই অপভ্রংশ। "ইকির মিকির চাম চিকির" কথাটি সম্ভবত সেই অত্যাচারী শাসক শ্রেণীভুক্ত কর আদায়কারীর চিত্র তুলে ধরেছে। যারা দাঁত কিড়মিড় করে পিঠের ছালচামড়া তুলে নেবার হুমকি দিচ্ছে নিরীহ কৃষককে। ... ...
জাগরীঅখিল রঞ্জন দে নিশীথ রজনী কালে, নক্ষত্ররা জ্বলে,নিভৃতে আল্পনা আঁকি, চিত্রপট মনে।আঁখি-দ্বয় ভারী হয়, নয়ন সজলে,কেহ নাই, কিছু নাই, তিমির গগনে।ক্ষনিকের চলাচল, নক্ষত্র মন্ডলে, কতো বর্ণ, কতো রূপ, বর্ণিব কেমনে! সৃষ্টি-বিনাশ সেথায়, অহরহ চলে,কালের অমোঘে 'মঘা', প্রবীণা যৌবনে,ক্ষয়ে ক্ষয়ে হলি সারা, তবু এতো দম্ভ !মিছে কোন গরিমায়, প্রলম্বিত মন? ঘুরে আয়, দেহ-মন, ক্ষয়িত জীবন।সঞ্চিত সম্পদ ত্যাগী, করো কল্পারম্ভ,মানব কল্যাণে যেন, সপিকায় মন,দাম্ভিক মনন হতে, দূর হয় দম্ভ ।। ... ...