তোমাদের সাথে সেই ভূতনাথ / পরে তার প্রিয় আলখাল্লা - / কি যে কয়, কারে কয় - কে জানে? / এক জানে তাঁর প্রিয় (হক) আল্লা ।
নিশাপুর গ্রামে এক দুপুর বেলায় সবার সামনে শামসুকে ন্যাংটা করা হলো, এবং তারে পুরা নিশাপুর গ্রাম ঘুরানো হল। উলঙ্গ অবস্থায় মাথা নিচু করে শামসু হেঁটে গেল। তার পেছনে পেছনে উৎসুক গ্রাম জনতা, তাদের নেতৃত্বে বিচারকবৃন্দ, তবারক আলি, করিম মিয়া, মুতাহার হুসেন ও আফতাব শেখ। শামসুর শাস্তি কী হবে এ নিয়ে মতবিরোধ হয়েছিল। গতকাল রাতে, টিনের বাড়ির সামনের বিস্তৃত উঠানের এক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে, এতে পোড়া কাঠ, বাঁশপাতা ইত্যাদি দিয়ে আগুন ধরিয়ে বসেছিলেন বিচারকেরা। শীত পড়া শুরু হয়েছে, এমন আবহাওয়ায়, এমন ঠান্ডা ঠান্ডা রাতের বাতাসে আগুনের সামনে বসে গল্প করতে ভাল লাগে গ্রামবাসীদের। চা আর মুড়ি খেতে খেতে করিম মিয়া প্রসঙ্গটা তুলেন। ... ...
এই নিউ নর্মাল আর নেওয়া যাচ্ছেনা। কিন্তু কথা হল, দুঃখের মধ্যে লোকে কী করবে? গান-টান গাইবে। নইলে তো মরে যাবে। জেলখানায় বসে জেলখানার গান গাইবে। অন্ধকারে বসে অন্ধকারের গান গাইবে। এ সব অন্ধকারের গান। তার মানে এই নয়, যে, হেবি সিরিয়াস, গম্ভীর গলায় বসে দরবারী কানাড়া সাধা হচ্ছে। বরং উল্টো। হাল্কা করে টাইম-পাস। অল্প ফুর্তি। সময়টাই তো এরকম। কে জানে আর কদ্দিন। ... ...
আমার বন্ধু প্রতীক সাইফুল। কবিতা লিখত। গল্পও লিখেছে বেশ কিছু। কোনো বই নেই। ঢাকার চারুকলা থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী পাশ করেছিল। আমাদের মধ্যে প্রতীকই প্রকৃত লেখক হয়ে উঠেছিল। ওর বাবা ছিল কবি। নাট্যকার। কালিবাড়ির পুকুরের উপর ছিল ওদের বাসা। সামনে ছিল কবির চেম্বার। ছিল মৌমাছির চাক। বাবুই পাখির ঘর। পাখির পালক। কয়েকটা মানিপ্লান্ট। আর বিড়াল। কয়েকটি ক্যাশ বই। তাতে লেখা নাক্সভমিকা আর নানারকম পদ্য। ওদের বাড়ির বারান্দা থেকে বড়শি পেতে মাঝে মাঝে পুকুর থেকে মাছ ধরেছি।। এই চেম্বারে বর্ণির বাওড় থেকে আবুল হাসান এসে বসে থাকতেন। সদ্য লেখা কবিতা শোনাতেন। পরে রাজা যায় আসে, পৃথক পালঙ্ক, যে তুমি হরণ করো নামে তাঁর তিনটি কবিতার ... ...
বাণী ব্যাপারটা গোলমেলে। সে খালি গুরুদের একচেটিয়া। মানে যারা নিজেদের গুরু মনে করে, আর বাকি পৃথিবীকে চন্ডালতুল্য, তাদের একচেটিয়া। কাজ অবশ্য খুব কঠিন না, কারণ একবার গুরু বনে গেলেই বেরিয়ে আসতে থাকে অমৃতভাষণ, যার বেশিরভাগই আসলে অনৃতভাষণ। সচেতনভাবে যদি ঢপ না-ও দিয়ে থাকে, তবুও। সেই কোন প্রাচীনকালে ভারতচন্দ্র বলে গেছেন "সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর"।কোন ভারতচন্দ্র? মানে? কেশনগরের ভারতচন্দ্র হে। রায়গুণাকর। বিদ্যাসুন্দরের ভারতচন্দ্র।বিদ্যাসুন্দর বললেই মনটা কেমন সিক্ত হয়ে উঠলো, না? আফটার অল বাঙালি তো। মানে, বলছি যে ভারতচন্দ্র আফটার অল বাঙালি। ফলে বাকি ভারত আগামিকাল ভেবে ফেলার আগে তিনি আজই চরম সত্যিটা লিখে রাখলেন। উত্তরকালের জন্য।তো কথা হচ্ছিলো ... ...
গিটার শিখার আগেই মামু / রেখে ছিলেন চুল, / কুল ট্যাটুটা আঁকিয়ে নিলেন / চলছিলো নির্ভুল।
যাক্, অবশেষে জানা গেল। এ বার রাত্তিরে একটু ঘুম হবে। এতদিন নুসরতের সন্তানের বাবা কে ভাবতে ভাবতে চোখের তলায় কালি পড়ে গিয়েছিল। সিগারেটের পর সিগারেট। হাউজ ফিজিসিয়ানকে বলে কয়ে ঘুমের ওষুধও খাওয়া শুরু করেছিলাম। শুভশ্রীর সন্তান হওয়ার সময় এমনটা হয়নি। করিনার প্রথম সন্তান তৈমূরের নাম শুনে ভীষণ উদ্দীপনা ছিল, এতটাই উদ্দীপনা যে পানের পিক ফেলে ফেলে ফেসবুকের দেওয়াল রঙিন করে দিয়েছিলাম। সে এক দিন ছিল! কিন্তু নুসরতের বেলায় এতটাই টেনশন হচ্ছিল বলে বোঝানো যাবে না। নিজের সন্তানের বাবা হওয়ার সময় এত টেনশন ছিল না। আজ বিন্দাস, নুসরতের সন্তানের বাবার নাম জানলাম। বাবার নাম হিন্দু জেনে আরও খুশি হলাম। ... ...
গত জুন মাসে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আত্মহত্যার হার নিয়ে একটা চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করে। ওই তথ্য অনুযায়ী নাইন ইলেভেনের পর বিভিন্ন মার্কিন সামরিক অভিযানে ৭০৫৭ জন সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছে।.একই সময়ের মধ্যে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় বা অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছে ৩০,১৭৭ জন। অর্থাৎ সরাসরি সামরিক দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় যা মারা গেছে তার থেকে চার গুণ বেশি মারা গেছে আত্মহত্যা করে।.মার্কিন সামরিক বাহিনীতে সৈন্যদের খুব উঁচু স্তরের সামরিক ও মানসিক ট্রেনিং দেওয়া হয়। ট্রেনারদের লক্ষ্য থাকে সৈন্যদের সমস্ত মানবিক গুণাবলী সরিয়ে ফেলে শুধু আদেশ পালন করার মেশিনে পরিণত করার। ... ...
আশির দশকের বুড়ুদের মফস্বলি ছেলেবেলা, সত্তরের স্বর্ণযুগ আর নব্বইয়ের আধুনিকতার মাঝে "মাতাল হাওয়ারই মত হয়ে, যেতে যেতে পায়ে পায়ে" গেছে জড়িয়ে। উত্তম-সুচিত্রার "ঘুম ঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা, এই মাধবী রাতে"র সাদা-কালো পর্দা ছেড়ে সবে রঙিন পর্দার জগতে উঁকি মারছে। সাদা-কালো পোর্টেবল টিভি আসছে ঘরে ঘরে। একটাই চ্যানেল। বেশীরভাগ সময় সাদা-কালো পোকা ওড়ে শোঁ শোঁ শব্দ করে। "রুকাবট কে লিয়ে খেদ হ্যায়।" তবুও তখন ছুটির দিনের দুপুরের ভাতঘুম কামাই করে বালিশের নীচে 'শ্রীকান্ত'। ... ...
"বেলা!! আসবে কি তুমি এবার ? সময় কি হল তোমার?" "সাগর, আবার! আবার !! কেন বারবার এমনভাবে হাতছানি দিয়ে যাও? অবুঝ তুমি বড়। কবে বুঝবে?" "বেলা, তুমি কি অবুঝ নও? আর কতদিন? আরোও কতদিন সাগর ফিরে ফিরে যাবে?" "তুমি বড় অস্থির ,সাগর! দিন নেই, রাত নেই – এত চঞ্চল কেন তুমি? একটু শান্ত কি হতে পার না কখনও? " ... ...
একটু ব্যক্তিগত কথা দিয়ে শুরু করি। বাংলা কথাভুবনে যে নারী সত্যান্বেষীর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ হয় তাঁর নাম বিন্দী পিসি। ১৯৮১ সালের কথা। ১৯৬০-এ প্রকাশিত দেব সাহিত্য কুটীরের পূজাবার্ষিকী ‘অপরূপা’ পুনর্মুদ্রিত হল, আর সেখানেই পড়লাম সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের গোয়েন্দা গল্প – ‘বিন্দী পিসির গোয়েন্দাগিরি’।দিন কেটে গেল। বড়ো হলাম। আলাপ হল আগাথা ক্রিস্টির সঙ্গে। তারপরই শকট্ হলাম। ‘দ্য স্টোরিটেলার’ পত্রিকায়, ১৯৩০-এর ফেব্রুয়ারিতে, ক্রিস্টি একটা গল্প লেখেন। নাম ‘দ্য রেসারেকশন অফ এমি ডুরান্ট’। পরে এর নাম হয়, ‘দ্য কমপ্যানিয়ন’। এটা ইংরেজ নারী সত্যান্বেষী মিস জেন মার্পল-এর প্রথম দিকের রহস্যভেদ কাহিনিগুলির একটা।দেখলাম, ১৯৬০-এ লেখা ‘বিন্দী পিসির গোয়েন্দাগিরি’ তার তিরিশ বছর আগে লেখা ‘দ্য রেসারেকশন ... ...
সূর্য কর তপ্ত করে / ভাবনা আমার উদাসি, / রোদ্দুরের একটা কবিতা লিখতে, রোদ্দুরে আসি।
আমি উর্দু বা হিন্দির কোনোটাই তেমন জানি না। বা জানিই না। কিন্তু উর্দু গান শুনতে বা মির্জা গালিবের কবিতা গান শুনতে ভালোই লাগে। মানে না বুঝলেও শুনতে ভালো লাগে। সুরের জন্য ভাল্লাগে। আর একটু বলতে পারি, উর্দু ভাষার গানে যে মিষ্টতা আছে সেই মিষ্টতা হিন্দিভাষায় মোটেও পাই না। এটা আমি শুনে বলছি। যাঁরা শুনেছেন তাঁরা হয়তো বুঝতে পারবেন। বাংলা আমার মাতৃভাষা আমার পিতৃভাষা। আমার এই নিজস্ব ভাষাটি সবচেয়ে শ্রুতিমধুর। এটা শুধু আমার কথা না, ইউনেস্কো স্বীকৃত শ্রতিমধুর ভাষা বাংলা। যে ভাষা শুনতে এবং বলতে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। ভারতবর্ষ উপমহাদেশে হিন্দি নামে কোনও ভাষাই ছিল না। শুধু ভারতবর্ষে কেন সারা ... ...
বাণীবিনোদ বাণী দিয়েছেন আবার। কৃষকদের জন্য তিনি ও তাঁর সরকার পাশে আছে। পাশে আছে? না বাঁশে আছে! বাঁশ নিয়ে বসে আছে। তাই টমেটোচাষী - দু টাকা করে টমেটো বেচে মরে, আপনি ৫০ টাকায় কিনে সুখ পান।
কী জীবন এল?এ ওকে একটু ঠুকে দাও।সে তাকে।পছন্দের লোক হলে চুলকে দাও পিঠ। ঠিক ততটাই, যতটা সে দেবে।প্রশংসাও হবে ডেসিবেল মেপে। লিখতে পারো, এর ওর ঝেঁপে।লোকজন পড়ে কম। লেখে বেশি। তাই ধরা পড়বে না। লাইন দূরে থাক কমা ফুলস্টপ যায় সেমিকোলন ঝেড়ে সুকুমারী ভট্টাচার্য থেকে, পুরস্কার পেয়ে গেল।আনন্দই আনন্দ।আর কিছু নয়। ... ...