“যে রাত্রে শমী গিয়েছিল, সে রাত্রে সমস্ত মন দিয়ে বলেছিলুম, বিরাট বিশ্বসত্তার মধ্যে তার অবাধ গতি হোক, আমার শোক তাকে একটুও পিছনে যেন না টানে। ... সেখানে আমাদের সেবা পৌঁছয় না, কিন্তু ভালোবাসা হয়তো বা পৌঁছয় – নইলে ভালোবাসা এখনও টিঁকে থাকে কেন?"
আজকে পুণ্যদিন। ধুতি, শাড়ি, হারমোনিয়াম ইত্যাদি। পিঠেপুলি, পায়েস, পদ্মার ইলিশ…। বাঙালী মতে বানানো বিরিয়ানিও চলবে
অনেক দিন থেকেই বন্ধুবর সন্দীপ বলছে ব্রতীন ধানবাদটা ঘুরে যা। অবশেষে এক গ্রীষ্মের দিনে প্ল্যান করলাম। সকালে উঠতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে দেখি তখনও ইন্টারসিটি হাওড়া ধানবাদ এক্সপ্রেস দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে। চটপট নিজের কামরায় উঠে পরা গেল। পুরো ট্রেনটাই বাতানুকূল। আর খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও বেশ ভালো। ক্ষণেক্ষণে চা, কফি, স্যান্ডুইচ, অমলেট এই সব আসতেই থাকছে। আর ইয়ে বলতে নেই খাবার দেখলেই টেনিদার ভাষার আমি একটু "মেফিস্টোফিলিস" "মেফিস্টোফিলিস" হয়ে যাই। ... ...
তুমি কোন কাননের ফুল? কোন গগনের তারা? - তাতে তোর কি ? - আমারই তো সব - পলাশ তুলে এনে না দিলে তখন তো আবার চোখে মুখে নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে - হ্যাঁ তোর পিঠেও কিল চড় পড়বে - তিল ঠাই থাকবে না - অতএব খোয়াইএর পথে -
শান্তিনিকেতন যাতায়াতের পথের জীবন দর্শন আর আমার শেষ হয় না। পাঁচ দশক অতিক্রান্ত। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নবাবহাটের মোড়ে রাজ্য সড়কে পড়লে উত্তরা বাসস্ট্যান্ডের পাশে দিয়ে গুসকরা, ভাতার, ভেদিয়া, বোলপুর, শান্তিনিকেতন আসার রাস্তা আজ অতি পরিচিত ও অতি ব্যবহৃত। অতিবৃষ্টিতে দুপাশের কিছু কিছু জমিতে জল দাঁড়িয়ে। পূর্ব বর্ধমান, দক্ষিণ বীরভূমের দিগন্ত সারা জীবন আমায় মুগ্ধ করেছে আজও করে। কিন্তু কর্মী মানুষের সম্মানের ব্যাপারে উদাসীনতা আমাদের দেশের প্রতি কোণায় এত ব্যাপক, এত পরিচিত, এত দৃশ্যমান আমরা এতই অভ্যস্ত তাতে আমাদের বেদনা, ক্রোধ, লজ্জা, ন্যূনতম অসোয়াস্তি জেগে ওঠাটাই আশ্চর্যের। ... ...
লকডাউনের জানলা মানে আমার জানলা। কোভিড ১৯ এর লকডাউনে বাড়িতে আটকে আছি, আজ দুমাস পেরিয়ে তিন মাসে পড়ল। বাইরে বেরোতে পারছি না বটে, কিন্তু অবাক হয়ে যাচ্ছি, যে আমার বাড়িতে জানলা অনেক বেড়ে গেছে, এতগুলো জানলা আগে কখনও ছিলনা।হাওড়ার ঘিঞ্জি গলিতে দোতলার ছোট ফ্ল্যাট। এক চিলতে বারান্দা, জানলার এক্সটেনশন। যে দিকে চাই, নজর আটকে বড় বড় বাড়ি। খুব কষ্ট করে ফালি আকাশ দেখা যায়। দুটো বাড়ির ফাঁক দিয়ে দেখি একটু রাস্তার আভাস। ঘরে রোদের মুখ দেখিনা তাই দিনেও বিদ্যুতের আলোয় কাজ চালিয়ে নিই। তিনটে ঘরে জানলা সাকুল্যে চারটি। এতদিন এসব নিয়ে মাথা ঘামাইনি, কারণ দরকার হয়নি। ... ...
হাজং উৎসব : প্যাঁক খেলা -- লিখেছেন বিপ্লব রহমানহাজংদের ‘প্যাঁক খেলার’ মতো কক্সবাজার-পটুয়াখালির রাখাইনদের রয়েছে আরেক ঐতিহ্যবাহী পানি-খেলা উৎসব-- সাংগ্রেং। পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমারাও পানি খেলার আয়োজন করেন, তারা একে বলেন-- সাংগ্রেই পোয়ে। সেটি অবশ্য বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের ভিন্ন এক উৎসব। আর বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলে বসবাসকারী গারো বা মান্দি জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে বীজ বপনের উৎসব ‘রঞ্চুগালা’ ও নবান্ন উৎসব ‘ওয়ানগালা’। আর চাকমাদের বর্ষ বরণ ও বর্ষ বিদায় উৎসবের নাম ‘বিঝু’। ত্রিপুরারা তাদের চৈত্র সংক্রান্তির উৎসবকে বলেন ‘বৈসুক’। সাঁওতাল আদিবাসীর রয়েছে নবান্ন উৎসব ‘সোহরাই বাহা’ ও বৃক্ষ বন্দনা ‘কারাম’ উৎসবের ঐতিহ্য। পুরোটা পড়ুন ... ...
স্কুলে আমাদের দুজন বড় গীতাদি ছিলেন। আবার দুজনেই আমার মায়ের শিক্ষয়িত্রী। একজন ছোটোবাড়ির মানে প্রাথমিক বিভাগের, আরএকজন বড়বাড়ির মানে মাধ্যমিক বিভাগের। ছোটোবাড়িতে দুই গীতাদি। সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ত্যাগপ্রাণা - প্রাথমিকের অধ্যক্ষা - তিনি ছোটোবাড়ির বড় গীতাদি। আর যিনি অঙ্ক করান, তিনি হলেন ছোটো গীতাদি। বড় বাড়িতে উল্টো। ব্রহ্মচারিনী গীতাদি গম্ভীর হয়ে অঙ্ক করান তিনি ছোটো গীতাদি। বোর্ডে কিছু লেখার আগে একেবারে ওপরে তিনি কিছু চিহ্ন আঁকতেন বা হয়তো মন্ত্র লিখতেন, সেটা যে কী আমরা বুঝি নি। জিজ্ঞাসা করলেও তিনি বলেন নি। একবার আমরা যখন সিক্সে পড়ি আমাদের ক্লাসের শর্বরী হোস্টেলে ওনার খাটে উঠে নেচেছিল। আসলে শর্বরী তো ছোটো থেকে এই ইস্কুলে পড়ে নি। ... ...
আজ রামনবমী। নিবেদিতা ইস্কুলে তখন আমি প্রাইমারি বিভাগে মানে নিবেদিতা লেনের ছোটোবাড়িতে পড়ি। মনে হয় তখন একটু বড় হয়েছি, মানে এই ক্লাস টু হবে। রামনবমীর একটি স্মৃতি আজও মনের মণিকোঠায় অমলিন। বড়বাড়িতে মানে সেকেন্ডারি কবে যাব এমন একটা ইচ্ছে মনের মধ্যে বেশ জোরালো হয়েছে তখন। আমার বন্ধুরা বড়বাড়ির ভিতরটা কেমন তখন হয়তো সকলে জানতোনা। আমি ছোটো থেকে জানতাম। কারণ আমি ছিলাম কৃষ্ণকুমারীর মেয়ে। সেই ওয়ানে পড়া থেকেই মাঝে মাঝে বড়বাড়িতে আমার ডাক পড়ত। ইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পরে কোনো শিক্ষিকা কৃষ্ণকুমারীর মেয়েকে এখনো দেখেননি একথা জানাজানি হলেই মনে হয় আমার ডাক পড়ে যেত। আমি বেণুমাসির পিছন পিছন বড়বাড়িতে স্টাফরুমে যেতাম। সেখানে ... ...
আমাদের ছোট্ট বেলায় খুব মজার ব্যাপার ছিল গরমের ছুটি। এখনকার সদা ব্যস্ত আর পরীক্ষা দিতে দিতে ক্লান্ত ছোট্ট পড়ুয়া রা বোধহয় এর মাধুর্য্য উপভোগ করতে পারবে না। ১৫০টা অঙ্ক, ৩০ পাতা বাংলা আর ৩০ পাতা ইংরেজী হাতের লেখা এই সব দিয়ে আমার মতো ফাঁকিবাজ ছেলেকে আটকানো যাবে? গরমের ছুটি শুরু হলেই আমি চলে যেতাম আমার গ্রামের বাড়িতে । গ্রামের বাড়ি আর মামার বাড়ি একই গ্রামে। হুগলী জেলার তারকেশ্বরর কাছে গোপীনগর বলে একটা গ্রাম। মামার বাড়ি তে আক্ষরিক অর্থেই অনেক মজা। বড়মামা, ছোট মামা, ছাড়াও ঝন্টু মামা, গুপী মামা, টোকন মামা আর সবার থেকে বড় হল দীপু মামা। মায়ের পিসতুতো ভাই রা। ... ...
হলোকস্টে লক্ষ লক্ষ প্রাণের নির্মূলে / নরপিশাচের আত্মহনন তিরিশে এপ্রিলে। / তবে কি যুদ্ধ শেষ! / নাকি ব্রহ্মাস্ত্রের পেশ?
একটা অসাধারণ উপন্যাস পড়লাম। প্রফুল্ল রায়ের লেখা "ক্রান্তিকাল"। পুলিশের তাড়া খেয়ে বেড়ানো বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজীব যে রাজবাড়িতে আশ্রয় নেয় সেটা এক সময় দেশীয় রাজ্য ছিল। প্রতাপপুর। আর বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজীব ভারতের উত্তর পূর্ব অঞ্চলের। আসাম ওই অঞ্চলের। বঞ্চনার প্রতিবাদ হিসাবে ভারত থেকে বেড়িয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র চায়। তার মাথার দাম ৫০ লক্ষ টাকা। এক হৃতগৌরব রাজবাড়িতে আশ্রয় নেওয়া এক বিচ্ছিন্নতাবাদীকে নিয়ে এই গল্প। প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা একবারে টানটান। ... ...
কানাকড়ি বলে দেগে এলেবেলে, / গোঁজামিলে তাকে দিলে কোণে ঠেলে, / আমি তো জানি, আমি থেকে যাবো, / তোমরাই যাবে চলে।।
ঠক ঠক ঠক। দরজায় লাঠি।কে আইজ্ঞা!"দরজা খোলো"।আরে হুজুর আপনে!"হুঁ, ডাক পড়েছে"।কার ডাক?"কাজির"।ক্যান কত্তা? আমি তো কিছু করি নাই!"সে আমি জানিনা। কাল ঠিক তিন পোহোরে কাজির কাছে হাজিরা। ভুল না হয়"--বলতে বলতে পেয়াদা চলে গেল।সারা রাত রহিমের ঘুম হলনা। সকালে মালিকের বাড়ি গিয়ে কাজেও মন লাগেনা। মালিক একবার দুম করে একটা কিল মেরে চলে গেল। এটাই নিয়ম। তবু আজকে মার কম। কেন, কে জানে!"রহিম মোল্লা হাজির?"জী হুজুর।"ঐ ঘরে যাও।"গম্ভীরমুখে কাজি সাহেব বসে। "কি নাম তোমার?আইজ্ঞা রহিম। কিন্তু আমি কিছু করি নাই হুজুর।"দাঁড়াও। ওদিকে তাকাও। চিনতে পারো"?বাপরে, মালিক! খাইসে।"তোমার মালিক তোমাকে খুব মারধর করে"?না হুজুর মানে।..."মালিকের পড়শীরা নালিশ করেছে। মিছে কথা বোলোনা। ... ...
যে-সব কথাবার্তাকে বইয়ের চেহারা দিতে পেরেছি, 'অপরাজিতা'ই তাদের মধ্যে আমার ঘনিষ্ঠতম। দেড় বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষার শেষে বইটির সমালোচনা প্রকাশিত হলো। ভাগ করে নিলাম সবার সঙ্গে। চাইলে লেখাটিতে মতামত জানাতে পারেন। Silly পয়েন্ট এবং সমালোচক রোহন রায়কে কৃতজ্ঞতা জানাই।
সমুদ্রের দেশে, বহুদিন পর ...মুখোমুখি -- লিখেছেন শুভংকর ঘোষ রায় চৌধুরীধরে নাও, সমুদ্রতীরের কোনও শহরে আমার আর তোমার দেখা হয়ে গেল, বহুদিন পর, প্রথমবারের মতো। দু'জনেই অন্তরে বেশ অবাক, কিছুটা ক্ষুণ্ণই হলাম একে অন্যকে ভালো থাকতে দেখে, কারণ, আমরা তো ভাবিনি ভালো থাকবে অন্যজন আমাদের ছাড়া। ভালো তো কারুরই থাকার কথা নয়, ভেবেছিলাম, কারণ প্রত্যেকে কারুর সঙ্গে যেমন আছে, কাউকে ছেড়েও তো আছে? তাই মুখে শুধু বলি, "ভালো তো? কতদিন পর...!" পুরোটা পড়ুন ... ...
রাখাইনরা কেন দেশ ছেড়ে যান? -- লিখেছেন বিপ্লব রহমানশেষ বিকেলের আলোয় ডলি রাখাইনের ফর্সা কচিপানা মুখে লালচে আভা। কণ্ঠস্বর বাস্পরূদ্ধ, যেন অস্পষ্ট থেকে অস্পষ্ট হতে থাকে, আচ্ছা, বিপ্লব দা, আপনার তো ঢাকায় অনেক টাকার চাকরি! এ রকম একটা বাড়ি সস্তায় কিনতে পারেন? মানবিক লোকজন এসবের দখল নিলে রাখাইন মালিকটি দেশান্তরে গিয়েও অন্তত নিশ্চিন্ত যে, যাক, পূর্বপুরুষের ভিটেমাটির নিশানাটুকু তো টিকে থাকবে, সেটুকু তো আর একেবারে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না! … পুরোটা পড়ুন ... ...