এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্কুলের শিক্ষা পদ্ধতি, এদেশীয় বনাম বিদেশীয়....

    M
    অন্যান্য | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ | ১১৯১৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • M | 59.93.197.14 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৯:১২432633
  • বন্ধুরা,
    আসুন এখানেই স্কুল কেমন হওয়া উচিত, কোথায় পড়াবো, কেন পড়াবো আলোচনা করা যাক।সাথে সাথে আমাদের সিস্টেমের ভালো ও গলদ দিকটা দেখা যাক।দেশকে ভালোবাসা ভালো আর তার সাথে গলতটা চোখের সামনে এনে শুধরে নেওয়া আরো ভালো। কারর আমার দেশ পরের দেশ পরমানান্দ কেস নয়।:P
  • M | 59.93.197.14 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৯:১৩432744
  • কারন
  • aka | 24.42.203.194 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৯:১৮432855
  • গুজ্জব।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১০:১৬432966
  • খান তিনেক পুরনো টই আছে - সেগুলো লিংক করে দাও। ফের অত টাইপানো সম্ভব নয়।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৩:১১433077
  • কই?
    আমারে সেটার লিং দাও।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৩:১২433126
  • আর এটারে ডিলিটানোর কিং ব্যবস্থা করা যাবে?
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৩:৩৬433148
  • থ্যাঙ্কু অজ্জিত :)
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৩:৩৮433159
  • ব্যাপক ঘুম্পাচ্ছে, তাও স্টার্টিয়ে যাচ্ছি:

    ব্যপক এলোমেলো লিখবো আগে থাকতে বলে দিচ্ছি, আর সবই আমার মনে হওয়া বা নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে।

    ড: কারোরে জ্ঞানদানের স্পর্ধা আমার নেই বাপু।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৩:৫৫432634
  • আমার গপ্প থেকেই শুরু।

    আমার বাবা মা আমাকে আর ভাইকে একই রকম ভালোবাসে মাঝে মাঝে আতুপুতু কেসটা আমার দিকেই ঝুলে পরে বেশী।হেবি চাপের।

    তা তখন আমরা মানিকতলা থেকে ব্যায়লা চলে যাচ্ছি,ভাইকে ওর চাকরি বাকরি কত্তে যেতে হবে বলে প্রথম থেকেই,স্কটিশ স্টতিশে পড়ানো হয়েছে, ক্যামন স্মার্ট, গট গট করে পরীক্ষা দে এলো। আমায় গাধার পিঠ। আমি বড় ছেলুম কিনা।দু:খু তখন মোট্টে ছিলোনা।

    ব্যায়লাতেও ভাই আর্য্য বিদ্যামন্দির,যেখানে ছেলেরা স্ট্যান্ড করে। আমি গাধার পিঠ।

    আমার স্কুলে খুব কম মেয়ে পড়তে আসতো।স্টুডেন্ট টিচার রেশিও ১:২৫/৩০,আর টিচারদের চাপ ছিলোনা ভালো রেজাল্ট করানোর, সবাই জানে এখানের রেজাল্ট ভালো হবার নয়।

    কিন্তু ভারী যত্ন করে দিদিরা আমাদের পড়াতেন। ভুগোল দিদিমনি ম্যাপ ছাড়া ক্লাসে ঢুকছেন মনে পড়েনি।সেলাই দিদিমনি খুব রাগ করতেন ক্লাসে সেলাই না করলে, মা করে দেন চাইতেন না।অঙ্ক দিদিমনি একটা টোপ রাখতেন, ঠিক করে সবাই পড়াশুনা করলে শনিবার গল্প বলবেন।ওনার কাছেই ফ্রাঙ্কেস্টাইন,রবিনহুড আরো ভালো ভালো গল্প শুনি।

    বাবার কাছে শুনেছি বাবাদের এক টিচার ছিলেন, বাঙাল, উদ্বাস্তু, তিনি নাকি একথালা ভাতের মাথায় একটা মাছের পিস রেখে তাতে ভাত ঠেকিয়ে খেতেন, এত দুরবস্তা, কিন্তু ছাত্রদের পড়তে চাইলে বাড়ীতে ডেকে পড়াতেন , কিন্তু কখন ও পয়সা নেন নি।

    আবার কলেজে কোন প্রফেসার এত ভালো পড়াতেন যে ওনার কাছে এনসিয়েন্ট মেরিনার শুনলে সারাদিন উদাশ বসে থাকতে হত।

    এইরকম টিচারদের কাছে তৈরী হওয়া আমার বাবা যাকে বি এস সি পড়তে পড়তে কারনবশত ছেড়ে দিতে হয়, মানে আমি বলতে চাইছি কোন ডিগ্রী সে অর্থে তাঁর নেই, তার কাছেই আমার ভিত তৈরী, আর পাস গ্রাজুয়েট আমি অনায়াসে ক্লাস টেন পর্যন্ত্য পড়িয়ে দিতে পারি ভালোভাবে।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:০২432645
  • আবার ভাইদের স্কুলের টিচারদের ও দেখেছি, চাপ দিয়ে অথচ খুব ভালোবেসে ছেলে তৈরী করতে।

    একজন টিচার ছিলেন, বিনয় স্যার।আর্যোর কোন ছেলে থাকলে, সে সময়ের, ঠিক চিনতে পারবে। ওনার বাতিক ছিলো গিয়ে গিয়ে ছেলে ধরে বাড়ীতে গিয়ে পড়িয়ে বা পড়ছে কিনা দেখে আসা।আর এত পাজি ছেলেগুলো ওনাকে দেখলেই বাড়ীর পিছন দিয়ে পালিয়ে যেত।

    কিন্তু ওনারা বাচ্চাদের ব্যাপারে এতটাই ওয়াকিবহাল থাকতেন যে কোন বাচ্চা কতটা এগোবে ঠিক বলে দিতেন। আরো ছিলেন অসিত স্যার। এত ডেডিকেটেড টিচার খুব কম দেখা যায়।আর সেসব ছিলো স্বর্ন যুগ।আমার ছোটবেলাটাতে মানে মাধ্যমিক পর্যন্ত্য কেবল ভালো দিক দেখেই বড় হলাম। ক্যামন সব কিছুই আদর্শ বা সব কিছুতেই তেমন কিছু মানে সেই স্বদেশী যুগের গন্ধ থাকবে জেনে বড় হলাম।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:১৪432656
  • এবার কোএড স্কুল। এখানে ধাক্কা খাওয়া শুরু।
    আমাদের সময় থেকেই সায়েন্স নিতে গেলে ফার্স্ট ডিভিসন মাষ্ট ছিলো। রেজাল্ট তখন ও এত ভালো খুব বেশী হতনা যে স্টার থাকতে হবে।

    অথচ দুটো মেয়ে এলো, একজন শাকোয়াদ(উচ্চারনটা এমন ই তো?)আরেকজন একটা ইংলিশ মিডিয়াম থেকে, একজন সেকেন্ড ডিভিসন আরেকজন টায়ে টুয়ে ফার্ষ্ট ডিভিশন, তাদের কেতাও আলাদা আর তাদের প্রতি টিচারদের ব্যবহার ও অন্যরকম।

    এরপর দ্বিতীয় ধাক্কা,আমার রেজাল্ট হাই সেকেন্ড ডিভিসন, বায়োতে ৭২%, আমি অনার্স পেলাম না, কিন্তু আমার দুই বান্ধবী তাদেরSC সার্টিফিকেটের জোরে দিব্যি অনার্স পেলো অনেক সহজেই, যদিও তাদের নম্বর কম, বাড়ীর আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো, বায়োতেও টিচার ছিলো, আমার ছিলোনা, লাগেইনি।কিছু মনে করিনি, জানতাম এটাই স্বাভাবিক, আমার স্কুল ভালো শিক্ষার সাথে একটা খারাপ শিক্ষা দিয়েছিলো, নিজেকে গুটিয়ে ফেলার।

    পরে দেখেছি, অত্যন্ত সাধারন মানের ছেলে মেয়েরাও অনেক এগিয়ে যেতে সাহস করেছে, কেবল স্কুল তাদের সেই গ্রুমিং দিয়েছে বলে।

    কমরেড, আমি এক্সেপসন বাচ্চাদিগের কথা কইছি না। তাদের আলাদা ক্যালী থাকে, আমি আমার মতো সাধারনদের কথা বলছি।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:১৫432667
  • যাচ্চোলে ডি: টা ড: হয়ে গেছে।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:২১432678
  • আমাদের আরেকটা সুবিধা ছিলো, সায়েন্সের বই মানে রেফারেন্স বুকগুলো ইংরাজীতেই ভালো হতো।অথচ মাতৃদুগে্‌ধর সমান মাতৃ ভাষাতে তখন গ্রাজুয়েশান পড়ানো শুরু, আর কি কেস, আমাদের গুটি কয়েক মিডিয়াম বাংলারা হাঁ করে ইংরাজী লেকচার শুনতাম, টুকতাম, বাড়ী গিয়ে তর্জমা করতাম।অঙ্কের মিডিয়াম অলয়েজ ইংলিশ।

    আ মরি বাংলা ভাষা!
  • . | 198.96.180.245 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:২৪432689
  • আর্যো, সে সময়ের ছেলের কথা বলিস নি তো কখনও? :-P
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৩৭432700
  • পোচ্চুর জীবন দেখলাম।

    ছেলের ক্ষেত্রে কোনো আবেগ গদগদ হওয়া নেই।

    সটাং আড়াই বছরের যখন একটা ইংলিশ, আসলে বাংলিশ(একজন ইংলিশ মিডিয়াম টিচারের মুখেই শোনা আমাদের প:ব: এর আদ্দেক ইংলিশ মিডিয়াম ই আসলে বাংলিশ মিডিয়াম)মিডিয়াম বাচ্চাদের স্কুলে দিলাম যেখানে অধিকাংশ বাচ্চাই আড়াই থেকে ছ'বছরের, মানে কুঁচোকাঁচাদের স্কুল।

    এখানে দেখি আজব ব্যাপার, আমার ছেলেকে প্রায় তিন মাস বাইরে বারান্দায় বসিয়ে রাখা হলো, কেন? কেনকি ব্যাটা এত কাঁদে যে ওকে ক্লাসে ঢোকানো বিপজ্জনক।অন্য গুলো ও পোঁ ধরে।

    ভালো কথা,এদিকে দিন কয়েক খেয়াল করেচি যে বাইরে যখন এক চিলতে জায়গায় বাচ্চাদের নিয়ে টিচার খেলাচ্চে, তখন মিত্তি বাচ্চা কাচ্চাদের কোলে তুলে আদর করছেন।কার না ভালো লাগে, আর আমার হোঁদল শাড়ী টেনে নিজেকে টিচারের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করলে, তিনি বিরক্ত মুখে শাড়ী টেনে নিচ্ছেন।

    এরপর আমার হাবি চলে গেলেন বিদেশ, আর ছেলেটার দুর্দ্দশার চরম হলো।স্কুলে মার খাওয়া শুরু, আগেই সেসব বলেছি।
    গিয়ে জানলাম যে কেন ওকে মারা হচ্ছে, খোঁজ নিয়ে যা জানা গেলো কোনো অন্য বাচ্চা দুষ্টুমি করছে, আর ওকে মার খেতে হচ্ছে। ও চিহ্নিত হয়ে গেছে, যা কিছু হচ্ছে ওর উপরেই বেদম প্রহার চলছে। জানতে চেয়েছিলাম যেই দুষ্টুমি করুকনা কেন, মারবেন কেন? এখানেতো সব বাচ্চারাই পড়ে,উত্তর ছিলো, না মারলে চলে না, কেউ কেউ দার্জিলিং এর বিখ্যাত স্কুলে বেঁধে লাঠিপেটার ও উদাহরন দিয়েছিলেন, ঠিক যেন তাতে বিশাল ক্যালী আছে এরকম।যাঁদের প্রতিবাদ করার ছিলো সেই প্যারেন্টসরাই সমর্থন জানিয়েছিলেন।কাজেই ছেলেকে স্কুল ছাড়িয়ে বাড়ী নিয়ে চলে আসি।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৩৯432711
  • আরে এ এ এ এ,
    আমি বলে হেভি সিরিয়াস হয়ে টাইপ এর ঝড় তুলচি আর এনারে দ্যাখো, এমনি করলে লিখবো আরো বেশী, এই বলে দিলুম।
  • Arpan | 204.138.240.254 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৪১432722
  • শেখাওয়াত মেমোরিয়াল।
  • Samik | 219.64.11.35 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৪৩432733
  • বম্মা,

    একটা রিকো। পড়ছি, আরো পড়তে লোভ জাগছে খুবই, কিন্তু একটা পুরোপুরি ল্যাখা দ্যাও না বুলবুলভাজার জন্যে? এখানে না-লিখে?
  • . | 198.96.180.245 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৪৮432745
  • আমি একটাই জীবন দেখলাম।
    অমর আকবর অ্যান্টনিতে।
    তাকে সবাই জীওয়ান বলে ডাকত।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৫০432756
  • এরপর উত্তর দমদমের বিখ্যাত এক ইংলিশ মিডিয়াম।
    খুব ভালো ছিলো প্রথম দিকে, কিন্তু প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে পলিটিকস শুরু হয়ে স্কুলটার বারোটা বাজিয়ে দিলো স্কুলের মালিকেরা, শুধুমাত্র কিছু ক্ষমতাবান আকাট গার্জিয়ানদের কথায়।কিছু উঁচু ক্লাসের ছেলেমেয়েদের বদমায়েসীর কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিলেন মহিলা।এখন স্কুলটা পুরো গোয়াল হয়ে গেছে।ছেলের সময়েই শুনেছিলাম টিচাররা, হাঁটকে পাটকে ওদের ভালো টিফিন খেয়ে নেয়।ক্লাস প্রায় বাংলাতেই নিয়ে নেই,এসব।চলো ঠিক হ্যায়, বিশাল কিছু প্রবলেম লাগেনি।

    তারপর মাস দুই ছুটি নিয়ে ছেলে নিয়ে বরের কাছে কেটে গেলাম,একমাস সামার ভ্যাকেশন ছিলো। ফিরে ছেলে আবার অসুস্থ। ব্যাস অনেক পিছিয়ে পড়লো, আর এসব ভালো স্কুলের একটা রুল আছে, এরা কেবল ক্রীম বাচ্চাদের গ্রুম করে,যেকোনো অনুষ্ঠানে এসব বাচ্চারাই আগে চান্স পাবে।ছেলে যেকোন ফাংশানের গান ঠোঁটস্থ করে চলে আসে।ব্যাজার মুখে বাড়ীতেই করে।অথচ ওকে নেওয়া হয় না।তবু অত ভাবিনি। তারপর শুরু হলো অকথ্য মানসিক পিড়ন।কিছু পারে না যে ও ,সেটা টিচার এবং তার সহোযোগিতায় বাচ্চারা ছেলেকে বুঝিয়ে দিলো আর আমার ছেলেটা ঢুকে গেলো গর্তে। আমি তো কিছু পারিনা। সব সময় চুপ করে থাকে। অত হাসতে ভালোবাসা ছেলে আমার হাসতে ভুলে গেলো।
  • dipu | 61.12.12.83 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৫২432778
  • বিটিডব্লু, সেদিন সিয়েনেন -আইবিয়েনে বলল শিবসেনা অমর-আকবর-অ্যান্টনি কে অমর-আপ্তে-আচরেকর করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৫২432767
  • শমীক,
    লিখে ফেললাম যে,আর বুলবুলভাজা লেখার জন্য আমার ভাষা অত্যন্ত খাজা যে।
  • Samik | 219.64.11.35 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৫৬432789
  • ভাষায় গুলি মারো। কনটেন্টটা থাকলেই হল। যেটা তোমার আছে।
  • . | 198.96.180.245 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:১২432800
  • আর বন্দুকটা?
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:২১432811
  • এরপর নানান টানা পোড়েনে ঠিক হয় ছেলেকে হোস্টেল স্কুলে দেওয়া হবে।

    আমি প্রথম থেকে ঠিক করি যে কলকাতার কোনো স্কুলে দেবো।সেই মতো খোঁজ শুরু করি।প্রথমেই যাই নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে।ছেলে তখন ক্লাস টু তে উঠবে।ক্লাস ফাইভে বা সিক্সে ওরা নেয়, ঠিক মনে নেই।খুব আদর্শ তখন ও মনে ছিলো।ছেলে দেশীয় ভাবধারায় বড় হবে, শিকড় না জানলে ও নিজেকে জানবে কেমন করে।আমার বরের এসব বালাই ছিলো না। ও বাইরে বড় হওয়া, যেটা ঠিক মনে করবে করে ফেলবে, সেটা নিয়ে আগুপিছু করার মানসিক দুর্বলতা তাঁর নেই।

    গেলাম রামকৃষ্ণ মিশনে।যেখানে এনকয়ারি সেখানের লোকটি কি মাপলো তারপর পাঠিয়ে দিলো পাশের ঘরে। একটা বিদঘুটে লোক কান খোঁচাচ্ছে।বিদঘুটে মানে হাবভাব, আমায় জিগ্গেস করলো অত্যন্ত জঘন্ন ভাবে, বর কি করে? যেন একটা ভালো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বলে ওকে অধিকার দেওয়া হয়েছে যা খুশি তাই করবার।

    কোথায় থাকেন, কি করেন ,শুনে স্পষ্ট দেখলাম লোকটির জিব দিয়ে জল পড়ছে ভালো শিকারের আশায়।আসলে এখন ও লোকের ধারনা বিদেশে থাকলেই বিরাট কিছু।আমায় বললেন(একদম সত্যি কিন্তু, পরীক্ষা করে দেখতে পারেন)এখানে রোবিবার ক্লাস নেওয়া হয়, সপ্তাহে একদিন,মাসে বারোশো টাকা, বন্ধুরা, তখন হোস্টেলে, স্কুল সহ মাস মাইনে দু হাজার।

    আরো বললেন, আপনাকে নিয়ে আসতে হবে না, আমি গিয়ে পড়িয়ে আসবো, দুদিন, মাসে তিন হাজার লাগবে।খুব অবাক হয়ে জিগাসা করেছিলাম , দুদিনে কি পড়া হবে? ক্লাস টুয়ের বাচ্চা? বললেন, আপনিতো পড়াবেন, আমি তো শুধু ম্যাটার দেবো আর একটু আধটু দেখিয়ে আসবো, এরকম স্কুলে ভর্তি করতে যাচ্ছেন যেখান থেকে ছেলেরা দেশ বিদেশে নাম উঙ্কÄল করে,আর একটু খাটবেন না? খুব রাগ হয়ে ছিলো আমার বাচ্চা আমার রক্ত মাংসে তৈরী ,তার প্রতি আমি কি করবো, অন্য কেউ, যে কিনা আমায় বিন্দু বিসর্গ জানেনা শেখাচ্ছে দেখে।

    এরপর এনিয়ে আলোচনা করে জানলাম যে আসলে এইসব স্কুল গুলোর একটা গল্প আছে, এরা সব বাচ্চাদের নিয়ে নেবে এ ভাবে, আর ক্রীম গুলোকে রেখে এইট থেকে বাকীগুলোকে ছেঁটে বাদ দিয়ে দেবে।এতে এই সব স্কুলের কি ক্যালী ভেবে পেলাম না। খুব ঘেন্না লেগেছিলো। বলাই বাহুল্য আর এগোয়নি।
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:৩৫432822
  • দুদিন আগে দেওঘর রামকৃষ্ণ মিশনের আরেক গল্প শুনলাম,এটা বোধহয় খবরের কাগজে এসেছিলো,

    ওখানকার মহারাজ না অন্য কোনো টিচারের পার্ভারসান ছিলো। বাচ্চাদের অত্যাচার করতো। আর তারা সে নিয়ে কিছু বলতে ভয় পেত, কারন তাঁদের প্যারেন্টসরা খুব চাপে থাকতো, এত ভালো স্কুল, ছাড়িয়ে দিলে কি হবে এই ভেবে, আর বাচ্চারাও চাপে থাকতো। তো যার কাছে শুনেছি তার আত্মীয় ছেলেটি, তুখার ভালো পড়াশুনায়, সে তখন ক্লাস ইলেভেন। আরেকটি ক্লাস সেভেন না সিক্সের বাচ্চার উপর তখন অত্যাচার চলছে, ছেলেটিকে কোনো ছুটিতেও বাড়ী যেতে দেওয়া হচ্ছিলো না, আর গার্জিয়ানরাও ভালো পড়াশুনা করছে ভেবে গা করেনি।

    তখন এই ছেলেটির কাছে ভয়ে ভয়ে ছেলেটি বলেছিলো আমার ভালো লাগছে না, আর আমি তো বাড়ীর লোকের সঙ্গে কথা বলতে পারবো না।তুমি তো পারো, একটু বলে দেবে। ছেলেটি ইলেভেনে পড়ে, ওর সে অধিকার ছিলো, ও কিছু আঁচ ও করেছিলো, ও বাবাকে ফোন করে আভাস দেয় যে এখানে আমার ভালো লাগছে না, আমি রাতে পড়তে পারিনা, আমায় অন্য কোথাও ভর্তি করো আর এই নম্বরে এই গার্জেনের সাথে কথা বলে বলো ওদের ছেলে অসুস্থ , ওরা যেনো জোর করে ছেলেটিকে নিয়ে যায় বাড়ীতে।ছেলেটির বাবা সব আঁচ করেন, দেন অ্যান্ড দেয়ার ছেলেটিকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন আর সেই গার্জিয়ানকে ফোন করেন।

    পরে এই নিয়ে খুব আলোচনা হয়। ছেলেটির পিছনে ঘা হয়ে গেছিলো। সেটা তো চিকিৎসায় সেরে যাবে, কিন্তু ও বাচ্চা মনে যে আতংক গেঁথে গেলো তা যাবে কি করে কে জানে!
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:৩৬432833
  • শমীক,
    থ্যাঙ্কু, পরে কখন ও চেষ্টা করবো।
    আর তাছাড়া আমি ভাট বা টইতেই বেশী স্বচ্ছন্দ!
  • M | 59.93.195.140 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:৪৮432844
  • তারপর আমার ছেলেকে ওয়ার্ল্ড স্কুলে দেই, এখানে হস্টেল আছে, ডে বোর্ডিং ও আছে।এক বছর ও ডে বোর্ডার হিসাবে স্কুল যায়।তারপর হস্টেল।দু বছর, আবার ডে বোর্ডার।

    এই স্কুলে হয়তো মাইনেটা অস্বাভাবিক বেশী, কিন্তু, সারাদিন খাওয়া দাওয়া, সুইমিং, স্টাডি, ক্যারাটে, গান বাজনা, টেনিস বা যে যেটা খেলবে, তার অপশন থাকে।যেমন কেউ ইচ্ছে করলে ঘোড়ায় চড়া শিখতে পারে। বাধ্যতা মুলক নয়।

    প্রথমে আমারো নানান খটকা ছিলো।এত বেশী পয়সা।এখানে যাঁরা আসবেন সবাই অনেক বড় ঘর থেকে আসবে, ছেলে কিভাবে নেবে আমাদের সাধারনত্ব।

    কিন্তু পরে ক্রমশ: দেখলাম এটা সমস্যা নয়।আমার ছেলে যথেষ্ট খুশী এই স্কুলে,টিচাররা বাচ্চাদের যথেষ্ট নজর দেন। একটা উষ্ণ ব্যাপার আছে টিচারদের ব্যবহারে।আমরা যথেষ্ট আমাদের সুবিধা অসুবিধা জানাতে পারি।ছেলে নিজেকে শামুকের খোল থেকে বের করে নিচ্ছে।এখন আবার গান গায়, হাসে , কিছু করতে পারার আনন্দটা নিচ্ছে, কনফিডেন্স ফিরে আসছে।

    আমি হিসাব করে দেখেছি বাড়ীতে বাচ্চাদের রেখে এমনি স্কুলে যাঁরা পড়াচ্ছেন আর সব শিখিয়ে স্পেশাল টিচার দিয়ে টিয়ে বাচ্চাদের পিছনে তাঁদের ঐ খরচাই যায়।
  • a | 59.161.88.114 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:৪৯432856
  • আমি বলি এখানেই লেখো। তাপ্পর কেউ কপি করে এডিট করে বুবুভাতে দিয়ে দাও, বম্মাকে একবার দেখিয়ে নিয়ে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন