এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • ধ্যান ও  স্নায়ুবিজ্ঞান 

    অরিন লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৫৯৮০ বার পঠিত | রেটিং ৩.৮ (৪ জন)
  • | |

     
    গোড়ার কথা: কি, কেন, ইত্যাদি 
     
    এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ",  কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য । 
     
    এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
     
    লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের  ভূমিকা রয়েছে।  সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে  ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না। 
     
    ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা 

    এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে  মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
     

    (জনৈকা ধ্যানরতা)
     
    ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি  বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে  তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান  করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি  ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে  পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন?  একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি । 
     
    চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না
    যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে  "চুপটি  করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়?   মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের  মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত  মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
     
    এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই  ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে? 
     
    সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
     

    এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি  শব্দে, বা কোন একটি  মন্ত্রে ।  মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
     
    আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
     
    আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে  নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন ।  এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে  "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি  মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল  যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
     
    আকাশ ও মেঘ 
     
    এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন  ব্যাপার নেই,  মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন।  প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় ।  উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি  ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি  ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।

    তার পর লক্ষ  করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা  সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার  নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার  মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন  বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
     

     
    এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই  মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি  আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি  "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ  করবেন :
     এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না ।
    দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা,  বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির  উপলব্ধি হবে  । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে  যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই  কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে  ।  সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত  না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন ।  এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
     
    স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে  কেন?
     
    এই  ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি  উদাহরণ  ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে  কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না,  কলেরার জীবাণু  আবিষ্কার করবেন  ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর  ভিটামিন সি  আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে  এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ  জানা যায় না, পরে জানা যাবে ।  এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের  evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না ।  সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান  (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান,  সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা  থেকে শুরু হয়েছিল? 
     
    অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে  যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা  চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন  যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি"  বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত  ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস  বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা  এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক:  (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো  কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
     
    (এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে  )
     
     
     
    ---
    তথ্যপঞ্জী 
    ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৫৯৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যুক্তিবাদীদের বোধোদয় হোক | 103.249.39.163 | ১৫ জুন ২০২৪ ২০:৪৮533221
  • @মাননীয় দেবাশিসবাবু 
    বুঝলাম যে দেশি বিদেশি যে কোন জিনিস বৈজ্ঞানিক হলেই আপনারা তাকে পুজো করেন। আপনা(দে)র স্ট্যান্ড স্পষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ। 
    আমি আপনার মত পণ্ডিত নই, কিন্তু এই অধমের একটা প্রশ্ন ছিল। দুনিয়ার সবকিছুকে বিজ্ঞান দিয়ে শাসন করা, দমিয়ে রাখা, এটাও কি মৌলবাদ নয়? এটাও তো বিজ্ঞান মৌলবাদ!! প্রেমিকাকে ভালবাসার পিছনে কী করে বিজ্ঞান খুঁজি বলুন তো! গ্রামের এক প্রায় নিরক্ষর মহিলা বর বাচ্চা ছেড়ে পরপুরুষের হাত ধরে অনিশ্চিত জীবনে ঝাঁপ দেয় যে ভালবাসার টানে, তাঁর পিছনে কী বিজ্ঞান খুঁজি বলুন তো? শুধু বায়োলজির যৌনতা দিয়ে আপনি এঁকে ব্যাখা করতে পারবেন? বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছিলেন, এঁকে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখা করতে পারবেন? 
     
    আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। অধমকে মার্জনা করবেন, ধন্যবাদ।
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ২০:৪৯533222
  • মহেশ যোগী হলেন কুকীর্তির এক পর্বতবিশেষ। ওপরে একজন তার উল্লেখ করে দিয়ে আমার খাটুনি বিস্তর বাঁচিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। 
  • dc | 2401:4900:6349:662e:6dfd:c4ad:6dfc:4c6 | ১৫ জুন ২০২৪ ২০:৫৭533224
  • বোধোদয়ের পোস্টগুলো ক্রমে খোরাক থেকে খোরাকতর হয়ে উঠছে। 
  • যুক্তিবাদীদের বোধোদয় হোক | 103.249.39.163 | ১৫ জুন ২০২৪ ২১:০২533225
  • @ডিসি
    কেন?
  • kk | 172.58.242.148 | ১৫ জুন ২০২৪ ২১:০৮533226
  • মূল লেখাটা তো অনেক লম্বা হবে। স্ক্রল করে আগের দিন এর পর থেকে পড়তে একটু অসুবিধে হচ্ছে। কোনোভাবে কি পর্বে পর্বে ভেঙে লেখা সম্ভব? আগাম ধন্যবাদ জানিয়ে রাখলাম।
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ২১:১৩533230
  • মাননীয় কী-একটা-যেন,
     
    আপনাকে মার্জনা করবার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর জানি না ভাই। মাঝে মাঝে বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় কেন যে খামোখা বগল চুলকোতে চুলকোতে চা দিয়ে মুড়িমাখা খেতে ইচ্ছে করে, তার বৈজ্ঞানিক কারণ যেমন জানিনা, তেমনি আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তরও জানিনা। তবে অনুমান করি, জীববিদ্যা মনস্তত্ত্ব সমাজতত্ত্ব সব মিলিয়ে এর কিছু উত্তর হয়ত বা পাওয়া সম্ভব, বা অন্তত তার যথাযথ অনুসন্ধান সম্ভব। আপনার এ সমস্ত জানতে চাওয়ার মধ্যে অন্যায় কিছু দেখিনা, বরং জানতে পারলে ভালই হত এই রকম মনে হয়। আমি তো বিজ্ঞানী নই, তুচ্ছ একজন যুক্তিবাদী অ্যাক্টিভিস্ট মাত্র, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কিছু প্রচার করে থাকি এই মাত্র। আপনি বরং যোগ্যতর লোকেদের কাছে গিয়ে খোঁজখবর করুন। আমার চেয়ে ঢের বেশি জ্ঞানীগুণী অনেক মানুষ এই গুরু-র থ্রেডে বিচরণ করেন, হয়ত তাঁরাই এ বিষয়ে মূল্যবান কিছু জানাতে পারবেন। জানতে পারলে গুরু-তে লিখবেন প্লিজ, আমিও আগ্রহভরে পড়ব। 
  • যুক্তিবাদীদের বোধোদয় হোক | 103.249.39.163 | ১৫ জুন ২০২৪ ২১:১৫533231
  • @দেবাশিসবাবু
    আমার জন্য সময় নষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
    বেশ, এবার মূল আলোচনা চলতে থাকুক। 
    আপনাদের আলোচনা ভাল লাগছে।
    ভাল থাকবেন
  • dc | 2401:4900:6349:662e:6dfd:c4ad:6dfc:4c6 | ১৫ জুন ২০২৪ ২১:১৫533232
  • গুরু-তে শুধু নয়, গুরু নিক থেকে laugh
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ২২:১০533235
  • প্রত্যয় ভুক্ত,
     
    আপনি বলেছেন, ধ্যানের উপকারিতা আপনি মানেন, কারণ ধ্যানের নানা সুফল আপনি পেয়েছেন। আপনার কথায় অবিশ্বাস করার কারণ দেখিনা। নিশ্চয়ই সুফল পেয়েছেন, না হলে বলবেন কেন। কেউ কপালে দইয়ের ফোঁটা পরে পরীক্ষা দিতে গিয়ে সুফল পায়, কেউ মনসার চরণামৃত খেয়ে সুফল পায়, কেউ বউয়ের সঙ্গে ঝগড়ার পরে অন্ধকার ঘরে দুঘণ্টা শুয়ে থেকে সুফল পায়, কেউ মন খারাপের সময়ে রবীন্দ্রনাথের গান শুনে শান্তি পায়, কেউ আপিসে ওপরওয়ালার কাছে অপমানিত হয়ে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে রাত দুটোর সময়ে দু পাত্তর হুইস্কি খেয়েও সুফল পেতে পারে। মানুষের জীবন কুফলে ভর্তি, কাজেই মাঝেসাঝে এমন সব সুফল পেলে তো ভালই। 
     
    কিন্তু, সমস্যাটা কোথায় জানেন? দুটো জায়গায়। 
     
    প্রথমত, এতে কেউ সুফল পেতে পারে, আবার কেউ নাও পেতে পারে, আবার কারুর উল্টে কুফলও হতে পারে। কে যে সুফল পাবে আর কে পাবেনা, সেটাও তো নির্দিষ্ট করে বলাও সম্ভব নয়। কখনও হিতে বিপরীত হতে পারে। যে রবীন্দ্রসঙ্গীত দু চক্ষে দেখতে পারেনা তাকে মন খারাপের সময়ে গান শোনাতে গেলে হয়ত তেড়ে সাউন্ড সিস্টেম-টা ভেঙ্গে দিতে পারে। যে মদ খায় না তাকে মদ খাইয়ে মন খারাপ ঠিক করতে গেলে হয়ত বমিটমি করে একাকার করবে। ফলত, এগুলো বৈজ্ঞানিক চিকিৎসাপদ্ধতি হতে পারেনা। 
     
    দ্বিতীয়ত, এগুলো দিয়ে ধর্ম বিজ্ঞান সব কিছু ঘেঁটে ঘ করে বিজ্ঞানগন্ধী তত্ত্ব বানাবার চেষ্টা করা এবং কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে বিপণন করাটা আরও হাস্যকর। শুধু হাস্যকর না, অপরাধমূলক। 
     
    ছেলে পরীক্ষায় ফেল করবার পরে ক্রুদ্ধ পিতা হয়ত পুত্র-রত্নের পেছনে ক্যাঁত করে একটা লাথি কষালেন, এবং তাতে বিপদ বুঝে পুত্র হয়ত পরের বছরেই ভালয় ভালয় পাশ করে গেল। এখন, সেটাকে পিতাঠাকুর যদি 'সুফল' বলে গণ্য করেন, সে ঠিকই আছে। কিন্তু তারপর কোনও মহাপ্রতিভাবান যদি তা থেকে 'পাশ্চাত্য-ক্যাঁত-পদাঘাত-থেরাপি' তত্ত্ব নির্মাণ করে গবেষণাপত্র লেখেন, এবং তার সুবাদে ক্লিনিক খুলে ফেল্টু-পুত্রদের আহ্বান করেন এবং সেশন প্রতি সতেরোশো ট্যাঁকা পারিশ্রমিক আদায় করতে থাকেন, তাহলে বোধহয় তার প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
     
    উচিত নয়, বলুন? 
  • জসল | 2607:fb90:3f60:7803:f1d8:62b:51a9:871 | ১৫ জুন ২০২৪ ২২:৩৭533237
  • হুইস্কির ব্যাপারটা একেবারে অব্যর্থ। ও নিয়ে কোন তর্ক আমি মানি না।
  • মত  | 165.225.8.117 | ১৫ জুন ২০২৪ ২২:৫২533238
  • অরিনের লেখা মন দিয়ে পড়ছি কারণ বিষয়টায় দীর্ঘদিনের ইন্টারেষ্ট - বিশেষতঃ বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখা। দেবাশীষবাবু ও আরো কারো কারো কাউন্টার বিষয়টা বুঝতে সাহায্যই করবে - যেহেতু নিজের তো সময় নেই ইনভেস্টিগেট করার - দুতরফেই। 
    ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা এপ্রসঙ্গে জানান জরুরী মনে করছি, যেহেতু মেডিটেশানের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই - এটা কয়েকবারই শুনলাম। বছর পনের আগে মনবিশেষজ্ঞের সাহায্য নিই, কিছু দীর্ঘকালীন মানসিক সমস্যা নিয়ে। পাঁচটি সেশানের পরে উনি জানান যে আমার প্যানিক অ্যাটাকের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। কিছু শর্ট টার্ম সমধান দেন, লং টার্ম সমাধানগুলির মধ্যে একটি ছিল মেডিটেসান।  
    আরো একটা ইন্টারেস্টিং অভিজ্ঞতা আছে। আমি বিগত পঁচিশ বছর ধরে টাইপ 2 ডায়াবেটিক। ফলতঃ, আমেরিকান মেডিকাল সিস্টেম কিভাবে এ সমস্যা অ্যাপ্রোচ করে - সেই অভিজ্ঞতার একটা ব্যক্তিগত জার্নি হয়েছে - এ দাবী করাই যায়।প্রথম দিকে ডাক্তাররা পুরোপুরি মেডিসিনভিত্তিক অ্যাপ্রোচ নিতেন। বেশ কিছু বছর পরে দেখলাম উনারা অল্টার্নেট অ্যাপ্রোচ - যেমতি খাবার- দাবার, শরীরচর্চা - এসবের কথা বলতে শুরু করলেন। একটু মজা লেগেছিল - কারণ অনেক বছর আগে, প্রথমদিকে, যখন খাবার সংক্রান্ত অ্যাপ্রোচের কথা বলতে যাই - সেসব উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বছর দশেক আগে ডাক্তারের কাছেই শুনলাম মেডিটেশানেও ব্লাড সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করবে। পুরো সময়টাতেই  A1C 6.0-7.0 য়ের মধ্যে ​​​​​​​ছিল, ​​​​​​​বার ​​​​​​​দুই ​​​​​​​তিন 7.3-7.4 হয়েছে। 
    এই প্রসঙ্গে বলে রাখতে চাই পুরো সময়টাতেই কোন ভারতীয় ব্যাকগ্রাউন্ডের ডাক্তারের অধীনে ছিলাম না। তবে যাঁদের অধীনে ছিলাম বা আছি - তাদের ওপর ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব সম্পর্কে জানা নেই - উনারা কিছু শেয়ার করেন নি! 
    এই দুটো অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল অন্ততঃ আমেরিকান মেডিকাল সিস্টেমে মেডিটেসান কিছু প্রভাব ফেলেছে।  
     
  • যুক্তিবাদী | 2405:8100:8000:5ca1::2f:78c | ১৫ জুন ২০২৪ ২৩:০৪533240
  • না, ডাক্তারিতে মেডিটেশনের কোন জায়গা নেই। কোন ডাক্তারই এমন বলতে পারেন না। বিশ্বাস না হলে প্রবীর ঘোষের বই পড়ে দেখুন। বিজ্ঞানের শেষকথা হিসেবে উনি সর্বজনমান্য।
  • dc | 2a02:26f7:d6c1:680d:0:ee62:8f3e:7c2e | ১৫ জুন ২০২৪ ২৩:১০533241
  • আমিও প্রায় আট বছর ধরে টাইপ টু ডায়বেটিক। আমাকে ডাক্তাররা প্রথম থেকেই ওষুধ, নিয়মিত ব্যায়াম, আর ডায়েট এর কথা বলেছিলেন। 
     
    মেডিটেশান করলে সুগার লেভেল কমে, এরকম কিছু আজ অবধি কোন ডাক্তারের কাছে শুনিনি। 
  • cognition | 93.125.114.187 | ১৫ জুন ২০২৪ ২৩:৩৭533242
  • একটা কথা বলি। দেখুন মেডিটেশন করে অনেকেই হয়ত উপকার পেয়েছেন। বা থেরাপিস্ট হয়ত মেডিটেশন সাজেস্ট করেছেন। তাতে অসুবিধের কিছু দেখি না। আমাদের দেশে অবশ্য সবকিছুতেই এত স্ক্যাম চলে যে মেডিটেশনেও চলবে এবং সেজন্য দেবাশীষ বাবুর বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। আর এই লেখার শিরোনামে স্নায়ুবিজ্ঞান আছে বলেই আমার আপত্তি। নিউরোসায়েন্স অত ডেভেলপ করেনি যে মেডিটেশনের গুনাগুন ব্যাখ্যা করা যাবে। যেমন হোমোসেক্সুয়ালিটি প্রাকৃতিক ঘটনা, কিন্তু বিবর্তনের আলোকে তার ব্যাখ্যা এখনও অপ্রতুল।
  • Debasis Bhattacharya | ১৬ জুন ২০২৪ ০০:০৭533247
  • অরিনবাবু,

    এবারে আপনার রেফারেন্স-গুলো নিয়ে বলি। আপনি গোটা চারেক দিয়েছেন, এক এক করে ধরি।
     
     
    এখানে যে প্রবন্ধটি আছে, সেটি বেরিয়েছে 'এক্সপ্লোর' নামক একটি জার্নাল-এ। জার্নাল-টি কিন্তু ঘোষিতভাবেই বিজ্ঞান-বহির্ভূত চিকিৎসার জার্নাল ('অল্টারনেটিভ মেডিসিন'), মূলস্রোতের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার জার্নাল নয়। এই পত্রিকাটি (এবং ওই ধরনের আরও পত্রিকা) সম্পর্কে কিছু কঠোর কথা এইখানে পাবেন --- 
    "Threats to science-based medicine: Big pharma pays a publisher to produce a fake journal"
    by  David Gorski on May 5, 2009
    (অন্তর্জাল ঠিকানা --- 
     
     
    এই 'পেপার'-টি বেরিয়েছে যে জার্নাল-এ, তার নাম হচ্ছে - "International Journal of Environmental Research and Public Health"। একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন, এই জার্নাল-টির কোনও 'ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর' নেই। নেই তার কারণ হচ্ছে, যা খুশি তাই প্রবন্ধ ছাপবার কারণে ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর ব্যবস্থা থেকে এ পত্রিকাকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ওই জার্নাল-এর যে বিশেষ লেখাটিকে আপনি রেফার করেছেন, সেখানে স্বাস্থ্যের ওপরে করুণা, আধ্যাত্মিক চেতনা --- এইসব নিয়েও খুব গুরুগম্ভীর আলোচনা আছে, শুধু ধ্যান না। আমার মনে হয়, এ নিয়ে আর বেশি কথা বলবার দরকার নেই। 
     
     
    আপনি বোধহয় খেয়াল করেননি যে, এটা আদৌ কোনও রিসার্চ পেপার নয়, এবং যেখানে বেরিয়েছে সেটাও আদৌ রিসার্চ জার্নাল নয়। এটা হচ্ছে বৃদ্ধদের চিকিৎসা সংক্রান্ত খবরাখবরের একটি সাইট, যেখানে ধ্যানকে মৃত্যুপথযাত্রী ক্যানসার রুগিদের উপশমের একটি পদ্ধতি ('প্যালিয়েটিভ কেয়ার') হিসেবে দাবি করে একটি খবর করা হয়েছে। 
    এখানে বলবার কথাটা এই যে, প্রথমত, প্যালিয়েটিভ কেয়ার-এর ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নিয়ে খুব বেশি কড়াকড়ি করা হয়না, রুগির বিশ্বাস এবং ইচ্ছে অনিচ্ছেকে অনেকখানি বড় করে দেখা হয় (তার ঠিক-বেঠিক নিয়ে বিচারের এখানে দরকার নেই)। 
    দ্বিতীয়ত, খবরটা ভাল করে পড়লেই দেখতে পেতেন সেখানে লেখা আছে, এই পদ্ধতিটিকে যে দুজন প্রচার ও চালু করবার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তাঁরা হচ্ছেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী। অর্থাৎ, তাঁদের উদ্দেশ্যটি খুব একটা বৈজ্ঞানিক নয়।
     
     
    এটাও রিসার্চ পেপার নয়। এটা হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একটি শিক্ষা সংক্রান্ত চর্চাকেন্দ্রের একটি বিশেষ কর্মসূচির বিজ্ঞপ্তি গোছের লেখা, যে কর্মসূচিতে শিক্ষাপ্রক্রিয়ার মধ্যে ধ্যান-গোছের কিছু পদ্ধতি কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে। এই পদ্ধতির কার্যকারিতার কোনও প্রমাণ দেবার চেষ্টা এ বিজ্ঞপ্তিতে দেখতে পেলাম না, এবং সবাই যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে এবং ভাল ফল পাচ্ছে, এমন দাবিও খুঁজে পেলাম না। আপনি যদি খুঁজে পেয়ে থাকেন, তো অনুগ্রহ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। 
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০২:২৬533260
  • সবাইকে ধন্যবাদ, লেখাটায় মন্তব্য করার জন্য। আমার লেখাটা এখনো পুরো লেখা হয়নি। এটা একটা exploration, এখানে আমি কোথাও দাবী করিনি যে ধ্যান এই কাজ করে, আমি খোলা মনে নিস্পৃহ বৈজ্ঞানিকের "চোখ" দিয়ে ব্যাপারটির পর্যালোচনা করছি মাত্র।
    এবার দেবাশিসবাবুকে, আপনি জানতে চাইছিলেন ধ্যানের ব্যবহারিক গুরুত্ব, সেই ব্যাপারটা তো হাইপোথিসিস বা থিওরি বিচারের বিষয় নয়, খবর জানতে চাইছিলেন। তাই কয়েকটা সূত্রের উল্লেখ করেছিলাম। একটি পত্রিকার ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর (মূলত সে পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলো কতটা জনপ্রিয় মানে কজন তাকে cite করে), তাই দিয়ে একটি প্রবন্ধের গুণমান বিচার কেউ করে না (আপনি করেন অবশ্য) । আর আরেকটা একটা সংবাদ মিডিয়া ।
    তো যাকগে, আমার লেখাটা আগে শেষ করি।
    কেউ নিউরোসায়েনসের ব্যাপারে ফতোয়া দিলেই। যে সে বিষয় ও ধ্যান নিয়ে আলোচনা করা চলবে না, সেইটা বিজ্ঞানে তো কেউ মানে না। অতেব, আরেকটু ধৈর্য ধরে লেখাটা পুরোটা পড়বার ইচ্ছে হলে পড়ুন। না হলে অনর্থক একগুঁয়েমি করে খুব একটা লাভ নেই।
  • reader | 149.7.35.42 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৩:২৩533261
  • ফতোয়া ত কেউ দিইছে বলে মনে হোলনা। কতকগুলো সঠিক ক্রিটিসিজম এসেচে। অরিনবাবুর জবাবে 'আমি বলছি ইহা বিজ্ঞান' জাতীয় একগুঁয়েমি ছাড়া কিছু পাওয়া গেলনা। মোশাই কি এপিডেমিওলোজির জর্নালে রিভিউয়ারদের এমনি রেস্পন্স দিয়ে থাকেন? আপনার ত একাডেমিক ট্রেনিং থাকা উচিত।
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৪:২৮533265
  • মত "বছর দশেক আগে ডাক্তারের কাছেই শুনলাম মেডিটেশানেও ব্লাড সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করবে। পুরো সময়টাতেই  A1C 6.0-7.0 য়ের মধ্যে ছিল, ​​​​​​​বার ​​​​​​​দুই ​​​​​​​তিন 7.3-7.4 হয়েছে। "
     
    আপনার ডাক্তার খুব ভুল কিছু বলেন নি  । হয়তো কিছুটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলেছিলেন । গত বছর একটি মেটা-এনালাইসিস এর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে 
     
    "A systematic review and meta-analysis approach was employed to review randomised controlled trials published in the English language between the inception of eight databases to July 2022. Eleven articles from 10 studies, with a combined sample size of 718 participants, were included in the systematic review, and nine studies were included in the meta-analysis. In the meta-analysis, outcomes at post-intervention and follow-up were compared between the MBSR intervention and control groups with an adjustment of the baseline values. The results showed that MBSR demonstrated effects at post-intervention and follow-up (in a period between one to 12 months with a mean length of 4.3 months) in reducing anxiety and depressive symptoms, and enhancing mindfulness, with large effect sizes. However, the effect of MBSR on reducing stress was observed at follow-up, but not at post-intervention. Effects of MBSR on HbA1C were not detected at post-intervention and follow-up. The findings suggest that MBSR appears to be an effective treatment for improving mental health conditions and mindfulness in people with diabetes. The measurement of cortisol is recommended to be used as a biological measure to evaluate the effectiveness of MBSR in diabetes patients in future research"
     
    এদের বক্তব্য থেকে একটা ব্যাপার বোঝা যাচ্ছে যে সরাসরি যদি চার মাসের দীর্ঘমেয়াদি Hba1c মাপা হয়, তাহলে  হয়তো প্রত্যক্ষ যোগাযোগ পাওয়া যাবে না, কিন্তু বেশ কয়েকটি মানসিক ব্যাপারে ধ্যান কাজে দেয় । তো এদের পরোক্ষ প্রতিক্রিয়া মাপজোক না করে বা আরো ভবিষ্যতে বড়  আকারের গবেষণা না করে বলা যাবে না ধ্যান ই ডায়াবেটিস এ কাজে দেয় , আবার এও বলা যাবে না ধ্যান ব্যাপারটার কোন গুরুত্ব নেই । 
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৫:০৫533268
  • @reader, আপনার লেখা আর রেসপনস পড়ে মনে হচ্ছে আপনি একটি অবস্থান ধরে নিয়েছেন, ঐতে অটল থাকতে চাইছেন। তাতে করে যারা আপনার মনের মত কথা লিখছেন, তাদের মতে মত দিচছেন, আর অন্যরকম কিছু পড়লে আপনার কনফারমেশন বায়াস হচ্ছে, ফলে মেনে নিতে না পেরে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন।
    এখন আপনি মূল প্রবন্ধটা যতদূর লেখা হয়েছে, পড়ে যদি বলেন কোথায় ভুল ভ্রান্তি, তাহলে আমার একটু বুঝতে সুবিধে হয়।
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৫:১৬533269
  • kk,আপনার পয়েন্ট টা এখন চোখে পড়ল।
    লেখাটাকে কয়েকটা পর্বে ভাগ করে দেব। আপাতত একটু লিখে নি, তারপর নিউরোসাইনসের ব্যাপারটা পরের একটা আলাদা পর্বে লিখব।
  • dc | 2401:4900:634c:1279:8da2:a1b1:e699:5fe8 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৭:২৯533273
  • "একটি পত্রিকার ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর (মূলত সে পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলো কতটা জনপ্রিয় মানে কজন তাকে cite করে), তাই দিয়ে একটি প্রবন্ধের গুণমান বিচার কেউ করে না (আপনি করেন অবশ্য) "
     
    অরিন্দমবাবুর এই উত্তরটা পড়ে একটু অবাক হয়ে গেলাম, বিশেষত দেবাশীষবাবুর লেখার প্রেক্ষিতে। একটা পেপারের রিসার্চ কোয়ালিটি বা রিগর বিচার করার নানা উপায় আছে, তার মধ্যে একটা হলো ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর। দেবাশীষবাবু বলতে চেয়েছেন যে একটা জার্নালের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর না থাকাটা খুব একটা ভালো ইঙ্গিত দেয় না। আমার তো সেটা ঠিকই মনে হলো, বিশেষত আজকাল পেইড পাবলিকেশানের যা অবস্থা, তাতে তো এরকম মনে হতেই পারে। 
     
    Effects of MBSR on HbA1C were not detected at post-intervention and follow-up.
     
    As presented in Figure 2, the pooled effect size for HbA1C (Hedges' g = −0.118, 95% CI [−1.345, 1.110], p = .851) indicated that MBSR did not have a significant effect on HbA1C. The heterogeneity test demonstrated substantial heterogeneity (I2 = 72.221, p = .027).
     
    অর্থাত এমবিএসআর পদ্ধতিতে সুগার লেভেলের সিগনিফিক্যান্ট এফেক্ট পাওয়া যায় নি, বা লো এফেক্ট সাইজ। 
  • পাঠক | 84.239.46.144 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৭:৩০533274
  • অরিনবাবু, গোঁড়াদের অত পাত্তা দেয়ার দরকার নেই। আপনি লিখে ফেলুন। জাতি জানতে চায়।
  • ar | 71.174.70.185 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৭:৫৭533276
  • @অরিন,
    আপনি লিখতে থাকুন। উৎসাহ নিয়ে পড়ছি। তবে TM program কিন্তু একসময় কার্ডিয়াক পেশেন্টদের খুব প্রিয় ছিল।
     
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৮:২০533277
  • পাঠক ও ar, আরো একবার, উৎসাহ পেলাম লেখাটা এগিয়ে নিয়ে যাবার, অসংখ্য ধন্যবাদ । ar, TM নিয়ে আপনার বক্তব্য যথাযথ  ,  এইটাও থাক , 
    "The prevalence of differential effectiveness among various meditation and relaxation techniques is not widely known, despite the results of hundreds of studies supporting marked differences.40 An overview of 10 metaanalyses covering 475 studies found that approaches based on long traditions outperformed the newer, clinically derived ones on most measures, even though the latter tend to be patterned after the former.40 Accumulated research now suggests that such variations in effectiveness are a major source of error in medical practice."
    কিন্তু এই প্রবন্ধে তো সব লেখা যাবে না, যার জন্য আপাতত শুধু একটা বিশেষ ধরণের ধ্যান নিয়ে আলোচনা করছি ।
     
    dc , "একটা পেপারের রিসার্চ কোয়ালিটি বা রিগর বিচার করার নানা উপায় আছে, তার মধ্যে একটা হলো ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর।"
     
    dc , ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর পেপারের হয় না, জার্নালের হয়  ("Impact factor (IF) is a measure of the number of times an average paper in a journal is cited, during a year. Clarivate Analytics releases the Journal Impact Factors annually as part of the Web of Science Journal Citation Reports®. Only journals listed in the Science Citation Index Expanded® (SCIE) and Social Sciences Citation Index® (SSCI) receive an Impact Factor",  দেখুন, https://scientific-publishing.webshop.elsevier.com/research-process/what-journal-impact-factor/ )
     
    একটি "পেপার" নানান রকম ভাবে বিচার করা যায়, কিন্তু স্রেফ একটা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে যার ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর কম বলে লেখাটাই মানে পেপারটাই বাজে কোয়ালিটির, সত্যিকারের বৈজ্ঞানিকরা ঐভাবে ভাবেন না, :-) , কাজেই দেবাশিস বাবু হয়তো ব্যাপারটা জানেন না, বা সমালোচনা করার সময় মনে ছিল না  । যে লেখাগুলো দেবাশিসবাবুকে পড়তে দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে তিনটি peer  reviewed , মানে অন্য ওই বিষয় দক্ষ বিশেষজ্ঞরা পড়ে  ছাপার অনুমতি দিয়েছিলেন, এবং সেগুলো লিটারেচার ডাটাবেসে ইন্ডেক্সেড হয়েছে আর তাছাড়া ওগুলো (মাত্র কয়েকটা)  দেবার উদেশ্য ছিল যে ধ্যান বিষয়টি নিয়ে রীতিমতন বৈজ্ঞানিক চর্চা হয়, ব্যাপারটা বুজরুকি বা অপবিজ্ঞান নয়, সেটা তিনি না বুঝতে চাইলে আমার  কিছু করার নেই ।
     
     
  • dc | 2401:4900:634c:1279:8da2:a1b1:e699:5fe8 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৮:৩৪533278
  • "ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর পেপারের হয় না, জার্নালের হয়"
     
    সেটা তো জানি :-) আমি বলতে চেয়েছি, যে জার্নালের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর নেই সেই জার্নালে পাবলিশড পেপার নিয়ে আমি একটু সাবধান থাকবো। আমার মনে হয় দেবাশীষবাবুও সেটাই বলতে চেয়েছেন।  
     
    "ধ্যান বিষয়টি নিয়ে রীতিমতন বৈজ্ঞানিক চর্চা হয়, ব্যাপারটা বুজরুকি বা অপবিজ্ঞান নয়"
     
    এ ব্যাপারে আমার কিছু সংশয় আছে। তবে আপনি লেখাটা শেষ করে নিন, তারপর আরও আলোচনা করা যাবে। 
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৮:৫৪533281
  • "আমি বলতে চেয়েছি, যে জার্নালের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর নেই সেই জার্নালে পাবলিশড পেপার নিয়ে আমি একটু সাবধান থাকবো। আমার মনে হয় দেবাশীষবাবুও সেটাই বলতে চেয়েছেন। "
     
    আচ্ছা ।
    খুঁজেপেতে দেখি দেবাশীষ বাবু কি বলতে চেয়েছেন," একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন, এই জার্নাল-টির কোনও 'ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর' নেই। নেই তার কারণ হচ্ছে, যা খুশি তাই প্রবন্ধ ছাপবার কারণে ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর ব্যবস্থা থেকে এ পত্রিকাকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ওই জার্নাল-এর যে বিশেষ লেখাটিকে আপনি রেফার করেছেন, সেখানে স্বাস্থ্যের ওপরে করুণা, আধ্যাত্মিক চেতনা --- এইসব নিয়েও খুব গুরুগম্ভীর আলোচনা আছে, শুধু ধ্যান না। আমার মনে হয়, এ নিয়ে আর বেশি কথা বলবার দরকার নেই। "
     
    এই হচ্ছে জার্নালটির প্রথম পাতা যেখানে জার্নালটি সম্বন্ধে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া আছে, https://www.mdpi.com/journal/ijerph
    সেখানে দেখা যাচ্ছে জার্নালটির citescore 7.3 এবং জার্নালটি pubmed ডাটাবেসে ইন্ডেক্সেড ।
    এখন স্পষ্টতই দেবাশিসবাবু citescore আর impact factor এই কথাগুলোর সঙ্গে হয়তো পরিচিত হতে পারেন, কিন্তু সেগুলো কি সে সম্বন্ধে কিছু জানেন না । ভদ্রতার খাতিরে আমি আর আগের পোস্টে এইসব লিখিনি, তা আপনিও যখন দেখছি ব্যাপারগুলো জানেন না, এইটা একটু দেখে নিন, 
     
    "The 2020 CiteScore metrics have just been released — but what’s it all about?
    The 2020 CiteScore metrics have just been released, and they’re being more widely used than ever. For researchers, librarians and authors, these metrics contribute to a more comprehensive, transparent and current view. They’re part of an “array of metrics” that aim to provide a more nuanced understanding of what impact means for research and journals.
    So why should this matter to you? If you’re a researcher, an author, a librarian or – on different occasions – each of the above, the increasing prevalence of CiteScore provides insights into the citation impact of nearly 26,000 titles. Here are some key reasons CiteScore is good news for the research community:
    1. It’s agnostic. CiteScore is a publisher-agnostic journal metric. Many publishers are displaying it, including Elsevier, Emerald, Frontiers, Hindawi, Inderscience, MDPI, SAGE, Taylor & Francis and Walter de Gruyter. The wide use of CiteScore makes it more useful as a tool for comparing journals, understanding their impact and making decisions accordingly.
    2. It’s robust. CiteScore’s robustness is reflected in its methodology, which we enhanced last year based on user feedback. Only peer-reviewed publication types (articles, reviews, conference papers, book chapters and data papers) will be included in both the citation numerator and publication denominator, making the comparison between journals more robust. Furthermore, publications in the four years up to and including the calculation year are now being included. This means that CiteScore can be calculated for journals with just a single year of publication, giving new journals – including many Open Access (OA). and China-focused journals – a first indication of their citation impact one year earlier.
    3. It’s fair. CiteScore excludes so-called Articles in Press (also known as early access articles) to ensure a level playing field for all active publications in Scopus. Only a limited number of large publishers deliver these data along with their final version articles. However, Articles in Press data is available in Scopus for individual articles and researchers, for example, via their Author Profiles.
    4. It complies with the responsible metric principles of the Leiden Manifesto and DORA. Since the last CiteScore release, Elsevier signed the Declaration on Research Assessment (DORA) and endorsed the Leiden Manifesto. As such, we’ve revised CiteScore to align with the principles reflected by these. For example:

    • Principle 10 of the Leiden Manifesto says that indicators must be scrutinized regularly and updated if necessary. CiteScore was launched in 2016, and by 2020, we had revised it based on expert and user feedback.

    • Principle 4 says that data collection and analytical processes should be open, transparent and simple; the CiteScore calculation approach has always been publicly available, with no methodological black boxes.

    • Principle 5 states that those evaluated must be allowed to verify data and analysis, and as such, the underlying data are freely available for verification purposes without a subscription to Scopus.

    • Principle 8 calls for the avoidance of misplaced concreteness and false precision. CiteScore was previously shown to two decimal places, but since only one decimal place is justified, this is how it is now reported.

    • Principle 9 calls for the recognition that metrics may have systemic effects and that a suite of indicators is always preferable; CiteScore appears as part of a set of several CiteScore Metrics which give further context and are also supplemented by two sophisticated journal-level citation indicators known as SNIP and SJR.
    5. It’s comprehensive: CiteScore is based on Scopus, the world’s broadest abstract and citation database, and is available for all serial titles, not just journals. More than 26,000 journals are included — 13,000 more than receive a Journal Impact Factor.
    6. It’s current: CiteScore Tracker is updated monthly. New titles will usually have CiteScore metrics the year after being published in Scopus.
    7. It’s transparent: The underlying data and methodology we use are freely available for verification purposes for you to interrogate, and indeed you can even calculate a journal’s CiteScore yourself. No Scopus subscription is required.
    8. It’s free: CiteScore metrics (and additional metrics such as SNIP and SJR) are freely available at scopus.com/sourcesopens in new tab/window. If you run a journal and it’s listed in Scopus and therefore has a CiteScore rating, the score can be easily displayed on your own webpages via an API or widget. For librarians, we have a comprehensive LibGuideopens in new tab/window."
     
     
    এখন আরো একটা ব্যাপার, আজকালকার দিনে citescore কে impact ফ্যাক্টর এর থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, এবং ৭.৫ এর ওপর citescore থাকলে সে জার্নাল মোটেও কিছু খারাপ জার্নাল নয়, এটা দেখুন, 
     
    একটা প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে এইসব উটকো ঝামেলায় পড়তে হবে জানলে লিখতাম না ।
    মন্তব্য করার সময়, বিশেষ করে সমালোচনা করার সময় বা আগবাড়িয়ে লোকের তরফদারী করার সময় একটু রিসার্চ করে নিতে পারেন, সুবিধে হবে ।
  • মত | 165.225.8.117 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৮:৫৫533282
  • "বছর দশেক আগে ডাক্তারের কাছেই শুনলাম মেডিটেশানেও ব্লাড সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করবে।"  এই বাক্যটা অবশ্যই ব্যাখা করে লেখা উচিত ছিল।
     
    কথাটা আসে মানসিক চাপ/ স্ট্রেস নিয়ে আলোচনা থেকে। বহু আগেও আমি স্ট্রেসের সাথে দৈনন্দিন ব্লাড সুগার লেভেলের ওঠা-পড়া নজর করে সে কথা ডাক্তারদের বলি, উনারা ইগনোর করেন। তখন ভেবেছিলাম, আমেরিকান মেডিকেল সিস্টেমে নিশ্চয় ধরে নেয়া হয় একজনের মানসিক চাপ তার শরীর-মনের গঠনের সাথে ডিরেক্ট ম্যাপিং, কখনো পাল্টাবে না, তাই ডাক্তারেরা সে নিয়ে কথাই বলতে চান না। কিন্তু আট-দশ বছর আগে, যখন A1C 7.5 য়ের কাছাকাছি, ডাক্তার নিজেই মানসিক চাপ কমাবার কথা বললেন। জানালাম, চাক্রী তো ছাড়তে পারব না। উনি বললেন, লাইফস্টাইল চেঞ্জ না করা গেলে মেডিটেসানের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে মানসিক চাপ কমাতে। তাতে A1C কমতে পারে.
     
    এই হল ব্যাপার। আমি অবশ্য সার্চ করে দেখি নি এ নিয়ে রিসার্চ পেপার বেরিয়েছে কি না। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় বলতে পারি যদি এগুলো প্রমাণ না করা গিয়ে থাকে, তবে খুব নিশ্চিতভাবেই রিসার্চ ডিজাইন নিয়ে চিন্তাভাবনা করার অবকাশ আছে।  তবে পশ্চিমি দেশগুলোয় সে জন্যে ফান্ডিং পাওয়া আদৌ সহজ হবে না। যদিও আমেরিকান আর্মি পর্যন্ত মেডিটেশান প্র্যাকটিস করে থাকে মনসংযোগ বাড়াবার জন্যে, সাধারণ ইমেজ হচ্ছে এসব প্রাচ্যদেশীয় ধর্মীয় ব্যাপার, এবং এর প্রভাব বাড়া মানেই ক্রিশ্চিয়ান কালচারকে চ্যালেঞ্জ করা! এবং অবশ্যই জনপ্রতিনিধিরাও তা মান্য করে।
     
    হাতে রইল পেনসিল। তারপরে ধ্যান করবেন কি করবেন না, সে আপনাকে পরীক্ষা করে দেখতে হয়।  অথচ তা সময়সাপেক্ষ। পৃথিবীর বেশীর ভাগ লোক তা না করেই সুখী হতে পেরেছে। সুতরাং ধ্যান কিছুতেই আহার নিদ্রা মৈথুন পয়সার মত আবশ্যক ব্যাপার হতে পারে না।  সে অবশ্য অসুধও কোন আবশ্যিক ব্যাপার নয়, দায়ে পড়লেই লোকে খায়! 
     
    আর একটা প্রসঙ্গ দেখলাম, কেউ বলেছেন - এসব জালিয়াতি কারন এর নাম করে লোকে পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। তা হলে এই রাশি রাশি ক্রিকেট ফুটবল দাবা ক্যাম্প , গানের স্কুল, ক্রিয়েটিভ রাইটিং শেখাবার কারখানা -  সেগুলো টাকা কামাবার ধান্ধা বলে গন্য হবে না কেন? আর, সেগুলো ব্যবসা গন্য হলেই কি ক্রিকেট ফুটবল দাবা গান বা  ক্রিয়েটিভ রাইটিং ব্যাপারগুলো জালিয়াতি  হয়ে যায় ? 
     
    যেটা বলতে চাইছি, ধ্যান একটি কঠিন পদ্ধতি। এর মধ্যে কিছু সত্য আছে যা নিশ্চিতভাবে বৈজ্ঞানিক সত্য, এবং এর সঙ্গে ট্রাডিশানাল ধর্মীয় ভাবনাকে জড়িয়ে ফেলা ভুল। কোন রকম ধর্মবিশ্বাস ছাড়াই, ধর্ম নিরপেক্ষভাবে ধ্যান করা সম্ভব। বলতে পারেন, এ তো কেবল বিশ্বাস থেকে বলছেন মশায়। ঠিকই, তবে বিশ্বাসটা এসেছে বহু বছরের অবসার্ভেসান থেকে। বিজ্ঞানের রাজনীতি সেটা কবে মানবে - তা অবশ্য ভবিষ্যতই বলবে।   
     
  • অরিন | ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:০১533283
  •  মত, "যেটা বলতে চাইছি, ধ্যান একটি কঠিন পদ্ধতি। এর মধ্যে কিছু সত্য আছে যা নিশ্চিতভাবে বৈজ্ঞানিক সত্য, এবং এর সঙ্গে ট্রাডিশানাল ধর্মীয় ভাবনাকে জড়িয়ে ফেলা ভুল। কোন রকম ধর্মবিশ্বাস ছাড়াই, ধর্ম নিরপেক্ষভাবে ধ্যান করা সম্ভব। বলতে পারেন, এ তো কেবল বিশ্বাস থেকে বলছেন মশায়। ঠিকই, তবে বিশ্বাসটা এসেছে বহু বছরের অবসার্ভেসান থেকে। "
     
    চমৎকার লিখেছেন!
    আবার বলতে হয়, আপনার ডাক্তারবাবু একেবারেই ঠিক কথা বলেছিলেন ।
  • nb | 2a06:1700:0:12::4 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:০২533284
  • লেখককে অনুরোধ: ট্রোলেরা অ্যাটেনশন চায়। দেবেন না। বিতর্কে ঢুকবেনই না। তাহলে আসল লেখাটা ভণ্ডুল হবে। তাতেই ট্রোলিংএর সাফল্য।
  • dc | 2401:4900:634c:1279:8da2:a1b1:e699:5fe8 | ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:০৩533285
  • অরিন্দমবাবু, সাইট্স্কোর ইত্যাদি মেট্রিকগুলো দেখলাম, e নিয়ে আর কিছু বলার নেই। 
     
    তবে "একটা প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে এইসব উটকো ঝামেলায় পড়তে হবে জানলে লিখতাম না" - ধ্যান এর মতো কিছুটা বিতর্কিত আর কিছুটা বিশ্বাসে মিলায় বস্তু টাইপের বিষয় নিয়ে লিখলে তো ক্রিটিসিজম হবেই। আর এখনও অবধি বেশ কিছু ক্রিটিসিজম যুক্তিসংগতও হয়েছে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন