এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  শিক্ষা

  • শিক্ষকদিবসের ইচ্ছে 

    যদুবাবু লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | শিক্ষা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৭৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • এই লেখাটা যখন লিখতে শুরু করেছিলাম, কলকাতা শহরের রাজপথে বহু বহু মানুষ নেমে পড়েছেন আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে, কোথাও পথনাটিকা হচ্ছে, কোথাও মোমবাতি-মিছিল, কোথাও মানব-বন্ধন। তাদের সবাইকেই আমার অজস্র শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা, এবং ঐক্যের অঙ্গীকার। গণ-আন্দোলন, গণ-জাগরণ যাই বলুন, তার একটা ভয়ের জায়গা দলীয় কু-রাজনীতির অনুপ্রবেশ, মঞ্চ বা স্লোগান কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা, শহরের সাধারণ মানুষ সেইসব চেষ্টাকেও যে রুখে দিতে পারছেন বা সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছোটো করতে চাই না, আপনাদের কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই সময়ে আশাবাদের মূল্য অপরিসীম।

    আজ জাতীয় শিক্ষক দিবস। আমি নিজে পেশায় একজন শিক্ষক-অধ্যাপক, উচ্চশিক্ষাকর্মী। সেই পেশায় অর্থ, প্রতিপত্তি, খ্যাতি, যশ সব-ই বেশ দুর্লভ, অন্ততঃ আমার অভিজ্ঞতায়। কেউ কেউ পেয়ে থাকলেও সিংহভাগ কর্মীই আলোর বৃত্তের বাইরেই কাটিয়ে দেন জীবন, আর সামগ্রিকভাবেই সম্মান বা সামাজিক প্রতিষ্ঠাও গত দুই-তিন দশক ধরে ক্রমশঃ নিম্নমুখী, শিক্ষাক্ষেত্রের বিভিন্ন দুর্নীতি ও বিষাক্তচক্রের কথাও প্রায় সবাই জানেন, এবং সেই ধ্বংসের দায়ভার কেন্দ্র-রাজ্য, সবার-ই। নিয়োগ দুর্নীতি কী সাংঘাতিক আমাদের সামান্য ধারণা আছে। সে ক্ষত সারবে না কোনোদিন। তার উপরেই, এই কিছুদিন আগেই নীট পরীক্ষা নিয়ে বীভৎস কেলেঙ্কারি হয়ে গেলো। যদিও সে এখন অতীত, রিয়ারভিউ মিররে অপসৃয়মাণ দৃশ্য। এইগুলো তাও খুব বড়ো দুর্নীতি – খবর হয়, চোখে পড়ে, অল্প লেখালিখি হয়, এর আড়ালে খুচরো দুর্নীতিও কম নয়। ভেতরে ভেতরে যতই ঝাঁঝরা করে দিক, সেইসব দুর্নীতির বিচার দূরস্থান, সবসময় যে সেগুলো দুর্নীতি – তাইই প্রতিষ্ঠা করা যায় না।

    এর-ই পাশাপাশি আরেক দৈত্য লাগামছাড়া বেসরকারিকরণ – ফলতঃ অকল্পনীয় অসাম্য, আর শিক্ষাকে ক্রমশঃ মানবাধিকার থেকে মুনাফাজাত পণ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া। গত ২০ বছর ধরে ফুলেফেঁপে এই দৈত্য গোলেম এখন আমাদের হাতের বাইরে। গতকাল প্রোফেসর অম্বর হাবিবের লেখায় পড়ছিলাম, এই বছরেই শুধু ২৪ লাখ ছাত্র পরীক্ষায় বসেছে ১ লাখ এমবিবিএস আসনের জন্য, যার আবার মাত্র অর্ধেক সরকারি, অর্থাৎ সাধারণের আয়ত্তে। ওদিকে ১১ লাখ ইউজিসি-নেট পরীক্ষায় রেজিস্টার করেছেন মাত্র চার হাজার ফেলোশিপ, আর চার হাজার লেকচারারশিপের সার্টিফিকেটের জন্য প্রতিযোগিতায়। অন্যদিকে জোর করেই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে কুয়েট, কমন ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন টেস্ট, তাতে শুধুই মাল্টিপল চয়েস কোশ্চেন অর্থাৎ এমসিকিউ-র জ্বলন্ত জঞ্জাল। সেই এমসিকিউতেও বিচার্য শুধুই গাদা মুখস্থবিদ্যা আর অপ্রাসঙ্গিক খুচরো তথ্য-উপাত্ত। এর-ও ফল সেই এক-ই। ‘পেটের মধ্যে শুকনো পুঁথির শুকনো পাতা খসখস গজগজ’। স্কুলশিক্ষাকে, বৃহত্তর শিক্ষাকে আরও একটু অপ্রাসঙ্গিকতার দিকে ঠেলে দিয়ে খুব সংকীর্ণ ঐ কম্পিটিশন-সাকসেস মার্কা কিছু ট্রেনিং-এর দিকে ঝুঁকে পড়া ছাড়া গতি নেই ছাত্রদের। প্রোফেসর হাবিব এক্কেবারে শেষে যথার্থই লিখেছেন, ‘coaching no longer supplements the regular education, but supplants it.’
     
    এসব পড়তে পড়তে ভয় হয়। মনে হয় আর কিছু না, এই আমার-ই মত আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে বড় হওয়া একজন ছাত্র আর তিরিশ বছর পরে জন্মালে তার পক্ষে তার পারিপার্শ্বিকের বাধা ঠেলে উচ্চশিক্ষার দিকে যাওয়াই দূরাগত স্বপ্নের মতই মনে হত। অত্যন্ত সংকোচ হলেও লিখতে বাধ্য যে এই মনে হওয়াটা মিথ্যে হলে, ভ্রান্ত হলে খুশি হব, কিন্তু আমি জানি এটাই সত্যি।
     
    এইসব ছাড়াও আছে শিক্ষার উপর রাজনৈতিক দুরভিসন্ধির প্রভাব। কয়েকদিন আগেই অন্তত দুটো খবরে আঁতকে উঠেছিলাম। প্রথমটা – পাঠ্যবই থেকে বিবর্তন ও অন্যান্য  উড়িয়ে দেওয়া, যার প্রতিবাদে প্রায় হাজার দুয়েক শিক্ষক-অধ্যাপক-গবেষক চিঠি লেখেন সরকারকে। অন্যটা ইতিহাস বদলে দেওয়ার অপচেষ্টা – বাবরি মসজিদের নাম বদলে লেখা হয়েছিল ‘তিন গম্বুজের কাঠামো’ - প্রতিবাদ করেছিলেন সুহাস পালশিকর আর যোগেন্দ্র যাদব। ফল কী হয়েছে, জানা নেই। আর কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির ফলে মাতৃভাষা শিক্ষার কী দুর্গতি হচ্ছে সে আর নাই বা বললাম। ধরে নিচ্ছি এইসবের ভিড়ে ঐটা তালিকায় আরও অনেক পরে লুকিয়ে পড়েছে, তার হয়ে আর সওয়াল করবে কেউ এমন আশা নেই।
     
    এবং স্বীকার করতে কষ্ট হলেও ব্যক্তিপর্যায়েও সেই দায়ের ভাগ একটু এসে পড়ে। সেইসব অভিযোগ সারাবছর করি। আজ করবো না। কারণ করবোই বা কাকে? আঙ্গুল তুলবো কোন আয়নার দিকে? কোথা থেকে সংস্কার শুরু করতে হবে, নিচ থেকে উপরে, না উপর থেকে নিচে? 'আমরা সবাই দোষী' কথাটা শুনতে মহৎ এবং বেশ আকর্ষণীয় লাগলেও আসলে একটি ঢপের চপ, এবং ক্ষতিকারক, কারণ ঐ যৌথ, সমবেত আর্তনাদের আড়ালে সত্যিকারের দোষীদের-ও কিছুটা, বেশ কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়। হ্যানা আরেন্ট বলেছিলেন, "Where all are guilty, nobody is." …

    সেই বিষবৃক্ষের ফল সর্বত্র। আইআইএসইআরের সেই আত্মঘাতী ছাত্রর ঘটনার সুবিচার আজও হয়নি। এবং সে একা নয়। সুবিচার হয়নি র‍্যাগিং-এর শিকার ছাত্রটির-ও। যদিও, সেইসবও পেছনে ফেলেই আমরা এগিয়ে গেছি। সবাই ভুলে গেছে এটা আমি বিশ্বাস করি না, তবে সবাই মিলেই হাল ছেড়ে দিয়েছি বললে বিন্দুমাত্র মিথ্যা বলা হয় না।
     
    অতএব, উত্তরণ আদৌ সম্ভব কি না, আমার জানা নেই। আর বানান করে না বললে যদি কেউ ভুল বোঝেন, এই সবকটা সমস্যাই আমি যে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কর্মী, অর্থাৎ এই প্রথম বিশ্বের পশ্চিমা দুনিয়াতেও ভয়ানক পরিমাণেই আছে। বেশি বই কম না। প্রদীপ বড়ো হলে তার নিচে অন্ধকার-ও কী বেশিই হয়? এও জানি না।
     
    যা লিখতে বসেছিলাম কিছুই লেখা হল না। যা লিখলাম সবটুকুই নৈরাশ্যের, আশঙ্কার। তবে, আশঙ্কার মেঘের মধ্যে দু-একটা আলোর ক্ষীণ রেখা যে দেখি না এমন না। আমার নিজের পরিচিত অধ্যাপক/শিক্ষকদের মধ্যেই অসামান্য বন্ধুবান্ধব আছেন, দেশে-বিদেশে দুই-ই। তারা সবাই সম্যক জানেন কী প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তারা লড়ে যাচ্ছেন, তবুও মাটি কামড়ে লড়ে যাচ্ছেন, ভালোবাসার জোরে। কী-ই না করেছেন তারা ছাত্রছাত্রীর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, তাদের একটু সামান্য উজ্জ্বল আগামীর জন্য। নিজের ব্যক্তিগত সুখস্বাচ্ছন্দ্য তুচ্ছ করা তেমন কিছুই না, তারা দুর্যোগ মেনে নিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেছেন, এবং কিছুতেই পিছু হটেন নি। সেসব গল্প পৃথিবীর কোনো রূপকথার থেকে কোনো অংশে কম না। তাদের দু-একজনকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। নাম টুকে জমা দেওয়ার মত ক্লাস মনিটর আমি নই, তবুও ভাবতে ভারী ভালো লাগে যে একজন পুলকবাবুকে, অথবা একজন সুনন্দকে, একজন পার্থদাকে, অথবা একজন ভ্রমরদিকে আমি চিনি। চিনি শুধু না, গর্ব করে ভাবি যে জীবনের একমাত্র অর্জন এই যে এরাও হয়তো আমাকে বন্ধু বলেই ভাবেন।
     
    তাই, এই শিক্ষক দিবসে কারুর প্রতিশ্রুতি অথবা অঙ্গীকার চাই না, সংস্কারের দশ দফা দাবিও চাই না, জনরোষ বা গণচেতনা এইসবের দুরাশা করি না, শুধু খুব স্বার্থপরের মত চাই এই সব ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।
     
     
    সূত্রঃ
    1. https://indianexpress.com/article/opinion/columns/evolution-teaches-children-that-change-is-an-opportunity-erasing-it-from-ncert-textbooks-is-huge-disservice-8573908/
    2. https://timesofindia.indiatimes.com/india/crime-crisis-in-education/articleshow/112999472.cms
    3. https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=24203
       

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৫৭537345
  • "তাই, এই শিক্ষক দিবসে কারুর প্রতিশ্রুতি অথবা অঙ্গীকার চাই না, সংস্কারের দশ দফা দাবিও চাই না, জনরোষ বা গণচেতনা এইসবের দুরাশা করি না, শুধু খুব স্বার্থপরের মত চাই এই সব ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।"
    - হোক
  • Guru | 2409:4060:2e49:112c:63ae:e0bf:12d0:6d65 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫৫537358
  • @যদুবাবু ,                    অনেক ধন্যবাদ l
  • kk | 172.58.244.82 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০৬537361
  • ভালো লাগলো। সমাজের এই দিকটা নিয়ে লেখার জন্য যদুবাবুকে ধন্যবাদ।
  • r2h | 134.238.164.191 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫০537405
  • খুবই ভালো লাগলো, যথারীতি, যদুবাবুর লেখা।

    এই লাইনটায় খুবই একমত - "'আমরা সবাই দোষী' কথাটা শুনতে মহৎ এবং বেশ আকর্ষণীয় লাগলেও আসলে একটি ঢপের চপ, এবং ক্ষতিকারক, কারণ ঐ যৌথ, সমবেত আর্তনাদের আড়ালে সত্যিকারের দোষীদের-ও কিছুটা, বেশ কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।"

    আর শেষের আশার কথাগুলিও।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:1459:5708:e731:6be8 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৯537409
  • এই লেখাটা আগে পড়িনি। যদুবাবুকে শিক্ষক দিবসের অনেক শুভেচ্ছা, আর আশা করি আরও অনেক ছাত্র পড়াবেন, অনেক গাধা পিটিয়ে ঘোড়া বানাবেন :-)
     
    অনেকদিন ধরে মিস্টার হল্যান্ডস ওপাস আমার খুব প্রিয় সিনেমা। এই ক্লিপটা আপনার জন্য 
     
  • যদুবাবু | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:২৩537410
  • ডিসিকে থ্যাঙ্ক ইউ। সিনেমাটা দেখা নেই। ক্লিপটা দারুণ। আজ-ই দেখবো। 
     
    আর কী বলি বলুন। আজকাল সারাক্ষণ-ই রেগে থাকি, বিরক্ত লাগে। মনে হয় উপরের দিকে আঙ্গুল তোলার সাথেই আয়নার সামনে দাঁড়ানোর, অর্থাৎ, একটু আত্মসমালোচনার-ও কোথাও যেন সামান্য প্রয়োজন ছিল। একটার বদলে আরেকটা নয়, এক-ই সাথে দুটো। কিছুই না, শুধু নিজেকে বারংবার প্রশ্ন করা আমি কি নিজের কাজটুকু ফাঁকি না দিয়ে করছি রোজ? রোজ ক্লাস নিচ্ছি, কামাই করছি না তো? ক্লাস নিলে মন দিয়ে পড়াচ্ছি? কাউকে বঞ্চিত করছি না, কারুর সাথে দুর্ব্যবহার, তাচ্ছিল্য করছি না? কোনো ছাত্রকে এমন নিষ্ঠুর ব্যাঙ্গ করছি না তো প্রকাশ্যে যাতে সে আরেকটু কুঁকড়ে যায় ভেতরে? 
     
    দুর্নীতির/ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাথে সাথেই এটাও করাই যায় মনে হয়। কিন্তু মনে হয় সেই জায়গায় আমরা ক্রমশঃ পিছিয়ে যাচ্ছি। এইসব লিখতে ভয় করে, সঙ্কোচ হয়, কারণ আগেও এই কথা বললে অভিযোগ শুনেছি আমি ব্যক্তিগত খামতির দিকে পয়েন্ট করে বৃহত্তর দুর্নীতির থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করছি। করিনি। 
     
    ঐ উপরে শেষ প্যারায় যাদের নাম লিখেছি তাদের মধ্যে একটাই 'সাধারণ বৈশিষ্ট্য' - এরা প্রায় প্রতি মূহুর্তেই ভাবেন আর একটু কী করলে ছাত্রদের ভালো হত এই যা সামান্য রসদ আছে তাই দিয়েই। 

    এই যেমন পুলকবাবু পুকুরের লাগোয়া জমিতে নিজের উদ্যোগে চাষ করিয়ে মরশুমি সবজি ফলান, পুকুরে মাছ চাষ করান মিড-ডে মিলে একটুকরো মাছ, একটু নতুন সবজি বাচ্চাদের দেওয়ার জন্য। একদিন দেখলাম স্কুলের মিড-ডে মিলের জমিতে এক প্রকাণ্ড ১০-১২ কেজি ওজনের মেটে-আলু খুঁড়ে বের করেছেন সবাই মিলে। লিখলেন, "এই প্রকাণ্ড কন্দ-গুপ্তধন আবিস্কার করে, কলম্বাসের চাইতে আমরা আজ যারপরনাই বেশি খুশি হয়েছি ... মিডডে মিলের পাতে এই মেটে-আলু মৎস্যসহযোগে একদিনের জন্যে হলেও,স্বমহিমায় ফিরবে এই প্রবল দুরাশায়!" 
     
    এর আগে ওঁর-ই উদ্যোগে উইংস অফ স্কুল চালু হয়েছিল, একটা প্রোজেক্টর-ওয়ালা টোটো যে স্কুলের পরে বাচ্চাদের বিভিন্ন বিষয়ের ছোটো ছোটো জিনিষ শেখাবে, একটু আগ্রহোদ্দীপক ভাবে, অঙ্ক বা জ্যোতির্বিজ্ঞান বা বটানি বা ইতিহাস। সেইসব বাচ্চাদের যাদের অধিকাংশ বাড়িতেই বয়স্ক অভিভাবকরা পরিযায়ী শ্রমিক, ফলে সন্ধ্যেবেলা 'পড়তে বোস' বলার কেউ নেই। তাদের আগ্রহ দেখার মত। নতুন জিনিষ শেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরকাল-ই অসীম। 

    সবাই পুলকবাবু হতে পারবেন না, হলেও হয়তো সিস্টেম তাকে পিষে দেবে বা সেও একদিন ওই সিস্টেমের-ই একটি চাকা হয়ে যাবে, কিন্তু সামান্য এপসাইলন পরিমাণেও নিজেকে একটু ভালোর দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলে তাও একটু আশা আছে। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:1459:5708:e731:6be8 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৭537411
  • মিস্টার হল্যান্ডস ওপাস অবশ্যই দেখে নিন, মনে রাখার মতো সিনেমা। 
     
    আপনার মনের কথা বুঝতে পারছি। আমার স্ত্রীও কিন্ডারগার্ডেনে পড়ায়, মাঝে মাঝেই ওর বাচ্চাদের নিয়ে কতো কি কথা বলে। আর আছে দুটো মহা পাজি ছেলেমেয়ে (ওদের দুয়েকটা গল্প এখানে লিখেছি), ওদেরও পড়ায়। অনেক সময়ে সন্ধেবেলা চা খাওয়ার সময় আমি আর বৌ গল্প করি, তখন এসব নিয়েও আলোচনা হয়। ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু করতে পারছে কিনা, এই চিন্তাটা বৌ এর মধ্যেও দেখি। 
     
    আমার নিজের অবশ্য এসব ঝামেলা নেই, আমি বহুকাল হলো ইস্কুল কলেজ পেরিয়ে এসেছি, তারপর আর পড়াশোনার ধারেকাছে যাইনি laugh​তবে শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করি।  
  • aranya | 2601:84:4600:5410:5083:1f4e:bc60:f78e | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৪১537417
  • যদুবাবু yes
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন