এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ফেসবুক থেকে কিছু পুরনো লেখা

    sosen
    অন্যান্য | ১৮ আগস্ট ২০১২ | ১৮০২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sosen | 233.231.50.143 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৪:৫৯569831
  • সত্যি অনুবাদ করা যাবে বলে আশা করি না। কিন্তু কর্লে , পার্লে পাঠাব।
  • sch | 132.160.114.140 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৫:১২569832
  • খুব ভালো অনুবাদ করলেও কিন্তু ওর মধ্যে যে আত্মমগ্নতাটা আছে -যে ডুবে থেকে নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়াটা আছে সেটা অন্য ভাষায় রূপান্তর করা কঠিন। তবে, দমুদি আর সোসেনের কাহিনী একসাথে বই হিসেবে যদি ইংরেজীতে বের হয় - দুজনেই কোটিপতি হবেন আমি একশো ভাগ নিশ্চিত।
  • Tim | 188.91.253.11 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৫:৩২569833
  • সোসেনকে অনেক অভিনন্দন এই লেখাটার জন্য। লড়াইটার থেকেও, লড়াইটার কথা বলার জন্য যে ক্ষতস্থানগুলো ফিরে ফিরে দেখতে হয় সেই কষ্টটা স্বীকার করার জন্য। আরো একটা কারণে, আর সেটাই আসল।
    একজন মানুষের একার লড়াই, কষ্টের দিনগুলো, অসহায়তা আর অপমান এগুলো আসলে এত দামী, এত যত্নের, এতটাই ব্যক্তিগত বলে সব সময় আমার মনে হয়েছে, যে শেয়ার করতে কুণ্ঠাবোধ করেছি। খালি মনে হয়েছে বৃহত্তর স্কেলে এনে ফেললে সেটা আর তত কিছু অসাধারণ বলে মনে হবেনা। অনেক সময় হয়ত বা অকারণ উন্নাসিকতা বা অভিমান এসে গ্রাস করেছে, যে ধুর লিখে কি হবে। চামড়া খুলে দেখানোর অস্বস্তির থেকেও এগুলো বড়ো কাঁটা।
    তো, সোসেনকে নিশ্চই সেসব যুদ্ধ নিজের সাথে করেটরেই এইটা লিখতে হয়েছিলো। সেইসব যবনিকার আড়ালের, নিজের সাথেই করা যুদ্ধগুলোর জন্য স্যালিউট।
  • siki | 132.177.68.248 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৫:৩৪569834
  • ঠিক। টিমের এই কথাগুলো আমার মনে হয়েছে, লেখাটা পড়ার সময়ে। এটুকু লিখতে আমার নিজেরই কুণ্ঠা লাগছিল।
  • মৌ | 24.99.138.33 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৬:১৮569835
  • এই লেখাটা আমার দারুন লেগেছে। কয়েকটা পার্ট অনেকবার করে পড়েছি। আমাদের স্বভাব নিজের জীবনকে গালি দেওয়া আমার কত দুঃখ আমার কত দুঃখ গান করা, আর অন্যদের জীবনের উপর নজর দেওয়া। পরবর্তী কথা, উপরে ওঠার কথা গুলি ফুটে আসলে আরও ভালো লাগবে।
  • de | 190.149.51.69 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ১৬:৫৮569836
  • লেখাটা পড়লাম -- টিমের কথার সাথে এক্কেবারে একমত -- নিজের সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করে ব্যক্তিগত ক্ষতের উন্মোচন, অসাধারণ মনের জোর না থাকলে সম্ভব হয় না -- কষ্ট, দুঃখ, লড়াই, ভাগ করতেও সবাই পারে না! সেজন্যই সোসেনের এই লেখা অসাধারণ!
  • raatri | 24.99.144.230 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ২০:২৭569837
  • টিমকে অক্ষরে অক্ষরে ক।
  • sosen | 111.63.204.163 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ২০:৪৯569838
  • আসলে, এটা নিশ্চয় একটা রিস্ক। আমার নিজস্ব ব্যথার কথায় কার বা কি এসে যায়? আর কেউ গুরুত্ব না দিলে, আমার মত করে না বুঝলে, আঘাত লাগার সম্ভাবনা-ও প্রচুর। আর তারপর , ওই বোঝাপড়া, সবাই বলল যা ।
    সেজন্য বোধহয় বেশ অনেকখানি রাস্তা পেরিয়ে আসার দরকার ছিল। যেখান থেকে নিজেকে, নিজের অন্ধকারকে নির্মোহ চোখে দেখা যায়। লিখতে শুরু করার আগে , ভেবেছিলাম, সেখানে পৌঁছেছি। লিখতে গিয়ে দেখি, বড় মায়া এখনো।
    তবে সে মায়াকে কাব্যে যদি একটুও অনুবাদ করতে পেরে থাকি, তাহলেই চলে। চলে যায়। গোপনতার মুক্তি কোনো না কোনো সময় দরকার কিনা! তারপর, সত্যি বলছি, দামী গহনা যেমন দামী, তেমনই থাকে।
  • | 24.97.61.156 | ০২ এপ্রিল ২০১৩ ২০:৫৯569839
  • সুষেণ,

    যদি গুরুতে নাও আসি, তুমি ভবিষ্যতে যেখানে যা লিখবে, আমাকে অবশ্য অবশ্য জানাবে। আমি সব পড়ব।

    আর হ্যাঁ লেখা হাতে নিলে অমনি বোঝা যায়। ;-)
  • ladnohc | 116.218.126.40 | ০৩ এপ্রিল ২০১৩ ০৮:১৮569841
  • আশায় থাকলুম ঃ)
  • সে | 203.108.233.65 | ০৪ এপ্রিল ২০১৩ ১২:৫০569842
  • এটা আগে দেখিনি।
    নিজের স্ট্রাগ্‌লের কথা কষ্টের কথা লেখা খুব শক্ত কাজ যেহেতু তাতে অনেক আত্মাভিমান জড়িয়ে থাকে।
    সুন্দর লেখা।
  • j | 230.227.106.153 | ০৪ এপ্রিল ২০১৩ ১৬:১২569843
  • সোসেন - আপনার সংগ্রাম সফল হয়েছে, এর চেয়ে ভাল কিই বা হতে পারে

    ভাল লাগল আপনার লেখা
  • AP | 24.139.222.34 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ১৭:৩৬569844
  • সোসেন,
    এই লেখা পড়ে শুধুই 'মুগ্ধ' হওয়া যায় না। অনেক রকম অনুভুতি মিলে-মিশে থকে এই রকম লেখার পদে পদে, সে সব কথাও অনেকেই লিখেছেন। সব কিছুর মধ্যেও তোমার সহযোদ্ধাদের ওপর তোমার কোমল অনুভুতি আর না হারানো বিশ্বাস দারুণ ভাবে অনুভব করলাম।
  • Binary | 208.169.6.50 | ০৮ এপ্রিল ২০১৩ ২২:৩০569845
  • আগে পড়িনি। হঠাৎ চোখে পরতে পড়ে ফেললাম। এক নিঃস্বাসে। পুরোটা। তারপর ? কিছু বলার নেই যে। গলার কাছে একমুঠো বাষ্প ছাড়া।
  • sosen | 125.241.22.223 | ০৯ মে ২০১৩ ০৮:৪০569846
  • হিংসেকাব্যি

    ১।

    অনেকেই লিখেছিলেন এ লেখা আর একটু টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু নিখাদ সত্যকথন হতে গেলে এক এক জায়গায় এসে কলম কেঁপে যায়, ঢাকতে থাকি চালের ফুটিফাটা, রুগ্ন পাঁজর, জামাকাপড়ের তাপ্পি । লড়াই আর তার পর একদিন জিতে যাওয়া? হায়, অমন একমাত্রিক রূপকথা ক'জনের থাকে? না গো বাবুমশাইরা , জিততে পারিনি আমি। শুধু পালিয়েছি। এক "আমি"র থেকে আর এক "আমি" তে লম্বা লম্বা লাফ দিয়ে পৌঁছতে চেয়েছি, পিছনটুকুকে একেবারেই পিছনে ফেলে। কিন্তু সে ছাড়ে কই? কচ্ছপের কামড় বসিয়ে সে আটকে থাকে নরম মাংসে। ঝাড়তে চাই, পারিনে। সকলে শিশুকালের আনন্দস্মৃতি কয় যখন, আমি ভেবলে যাই। কই তেমন স্মৃতি? পেছনে ফিরলে ধোঁয়া ধোঁয়া ব্লার এক ধুলোট পৃথিবী। আমার কি নেই স্বল্পে সন্তুষ্ট হওয়ার অপু-সুলভ কৃতি? এই ছেলেবেলা পুরোটা-ই কি তবে হিংসেকাব্যি?

    পঁচিশে বৈশাখ আজ। প্রত্যেকবার পঁচিশে বৈশাখ এলে কারোর মনে পড়ে পাড়ার ফাংশন। লালপাড়ের সাদা শাড়ি, বোধহয় বিকেলে গানের অনুষ্ঠান।

    আমার মনে পড়ে একটি-ই রবীন্দ্রজয়ন্তী , ১৯৯৮ সাল। আমি তখন কলেজে, বেথুন কলেজ। রবীন্দ্র-উত্সব আমার জীবনে তেমন কোনো মানে রাখে না। আমার পাড়ায় থোড়াই ফাংশন হয়! আমার লাইব্রেরি-ময় পৃথিবীতে তখন এসেছে একটি প্রেমের কিশলয়। মাঝে মাঝে ক্ষয়াটে পারা-খসা আয়নার সামনে সুন্দর হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে, আবার তেলতেলে মুখ, ততোধিক তৈলাক্ত মোটা বিনুনি, গ্রাম্য চেহারা দেখে হতাশ হয়ে পড়ি । তিনটে মোটে সালোয়ার কামিজ আমার। সেগুলিকেই পরতে হয়, কলেজে হোক কি কোনো উত্সবে। ট্যুশনি করি বটে, তবে বই পত্র তো নেই আমার। কলেজে এক মস্ত ভালো জিনিস বইপত্র কিনতে হয়না। কিন্তু দু:খের বিষয়, জেরক্স করতেই হয়। কত আর লিখব? তা ছাড়া স্লাইড কভার্স্লিপ হ্যান ত্যান। দু-একটা গল্পের বই কিনতে-ও সাধ যায়। এইসব করে আমার জামা-কাপড় কেনা হয়না আর। রাতে বাড়ি ফিরে ঘর্মাক্ত জামা কাচি, শুকই, পরদিন ভাঁজ করে শতচ্ছিন্ন তোষকের নিচে ঠেলে দিই। এত যত্নে-ও সেই সব জামায় ঘামের হলদে ছোপ ধরতে থাকে।

    আমার বাড়ি, সবাই জানে অনে এ এ ক দূর। কোন সে গন্ডগ্রাম। সেখানে কিনা কাউকে নিয়ে যাওয়া যায় না, ফিরবে কি করে বন্ধুরা। সবাইকে বলি, একদিন তোদের নিয়ে যাবো, বুঝলি? কেউ অত মাথা ঘামায় না, ভাগ্যিস। অথচ আমি বন্ধুদের বাড়ি যাই, কোন্নগর, সল্টলেক, শ্যামবাজার এমনকি আমার চেনা দমদমপার্ক। রিটার্ন ভিজিট এর কথা ভুলেও তুলি না।

    তো এর-ই মধ্যে বন্ধুরা শোরগোল তোলে। ভোরের পঁচিশে বৈশাখ, যা কিনা সে-ই নন্দন প্রাঙ্গণে হত, সে দেখতে যাওয়া হবে। কিন্তু অত সকালে? তা হোক গে। এক বন্ধুর বাড়ি থাকা স্থির হয়, দমদম পার্কে। তার জ্যেঠুর গাড়ি নিয়ে যাবে আমাদের। যারা কাছাকাছি আছে তারা বাড়ি থেকেই যাবে। আমি-ও দলে ভিড়ি। রাত্রে থাকা, গল্প গুজব, আর এতদিন টি ভি তে দেখতাম , এখন দেখতে পাব , গীতা ঘটককে? সত্যি? মনে কেমন অযথা পুলক লাগে। প্রেম থাকে বহুদূর, মাঝে মধ্যে দেখা হয় তার সাথে, গোছা গোছা চিঠি লেখা হয়। তাইতে তারিখ দিয়ে লিখি " যাবো রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান শুনতে। কলকাতায় থাকলে তুমি-ও যেতে পারতে। তা-হলে কি ভালো হত--"

    ভোর চারটের মধ্যে উঠে স্নান হয়ে যায়। তারপর জামাকাপড় পরা , চুল বাঁধা সব দশ মিনিটে শেষ আমার, সবার আগে।
    আমার সেই একই জামা দেখে অবাক তাকায় বন্ধুরা। তারা সাজগোজ শুরু করে, আর আমি-ও অবাক হই। ওমা, যাচ্ছি তো গান শুনতে, এরম তো ভাবিনি! সুন্দর সব শাড়ি বেরয়, তার নাম-ও জানিনে। কাকিমা সবাইকে শাড়ি পরান। চোখে লাইনার, তখন সদ্য আই-লাইনারের যুগ। কপালে টিপ। ঠোঁটে লিপস্টিক। ওমা, জ্যেঠু ফুল-ও এনে রেখেছেন ছোট মেয়েরা চুলে লাগবে বলে। আমায় শাড়ি পরতে না দেখে ভারী অবাক হন সেই ভারী ভালোমানুষ নি:সন্তান জ্যেঠু , কেবলি বলতে থাকেন আহা, ওকে একটা শাড়ি পরিয়ে দাও না। কাকিমার তাতে কোনই আপত্তি নেই, কিন্তু ওঁদের ব্লাউজ আমার গায়ে হবেনা বলেই বোঝা যায়। আমি ক্রমাগত মাটিতে মিশে যেতে থাকি। মনে পড়ে এই আসাটুকুর অনুমতি পেতে কত আর্জি করতে হয়েছে বাবা-মা র কাছে। বেরোবার আগে-ও রুক্ষ সুরে বাবা জানিয়েছেন কলেজে পড়াশুনোর বাইরে এসমস্ত তিনি মোটেই পছন্দ করেন না। আমাদের অবস্থায় এইসব শোভা পায় না মোটেই। মা একবার-ও বলেনি, আমার একখানা শাড়ি নিয়ে যা, পরবি। মনেই হয়নি তাদের, কোনদিন-ই মনে হবে না আর, দারিদ্র্য কেড়ে নিয়েছে তাদের অন্ত:স্থ করুণা, এসব বুঝতে পারিনা তখন। শুধু চোখের ভেতরের দেওয়াল বেয়ে জল ঝরতে থাকে। এমন কেন? এমন চোখে লাগে কেন তফাত? কেন এঁরা এমন আদর করেন আর কোথাও আদরের ঘড়া শূন্য, শুকনো? কেন আমার খুশি পরশ্রীকাতরতার নিচে ঢেকে যায়? কেন এই অপ্রসাধিত মুখ, হলদে ছোপ ধরা গোলাপী জামা, মোটা বেণী এত অপ্রতুল মনে হয় সহসা?

    চমত্কার সাজগোজ করা বন্ধুদের পাশে গাড়িতে বসি। হঠাত কেউ মন্তব্য-ও করে ফেলে এমা, সোনালী আবার সেই কলেজের জামাটাই পরলি। আজকে তো একটু সাজতে পারতিস!

    আহত গরম চোখ ঢাকতে ঢাকতে হাসি আমি, আহা তোদের মত শাড়ি পরে জবরজং হয়ে এই গরমে ঘামবার সাধ নেই আমার। দেখছিস তো কি গরম।
    অল্পবয়েসের কলকাকলিতে সবাই অবশ্য ভুলে যায় কিছুক্ষণে। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। বেশ সামনের দিকে বসতে পাই, গরম ও গানে ভুলে যাই এতক্ষণের মনোকষ্ট।

    শুধু ততদিন অবধি অশ্রুত শান্তনু রায় চৌধুরীর ভরাট কন্ঠে "সারাপথের ক্লান্তি আমার, সারাদিনের তৃষা/কেমন করে মেটাবো যে খুঁজে না পাই দিশা/এ আঁধার যে পূর্ণ তোমায় সেই কথা বলিও/মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিও " শুনতে শুনতে একটু ফুঁপিয়ে উঠি আমি। কেউ দেখে না।

    আমার রবীন্দ্র জয়ন্তী । এ-ই রকম এক তুচ্ছতার গল্প। উত্তরণের নয়।
    __________________________________________________________________________________________
  • siki | 132.177.190.174 | ০৯ মে ২০১৩ ০৯:০৩569847
  • আহা, কী গান লিখলে তুমি।

    হাতখানি ঐ বাড়িয়ে আনো, দাও গো আমার হাতে
    ধরব তারে, ভরব তারে, রাখব তারে সাথে
    একলা পথের চলা আমার

    করব রমণীয়।

    এসব লাইন মনে আসার পরে সারাটা দিন ওলোটপালট হয়ে যায়। নিজের অজান্তে ফুঁপিয়ে ওঠা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।
  • arindam | 24.139.193.79 | ০৯ মে ২০১৩ ১২:১২569848
  • বাজে। বাজে। সোজাসুজি বুকে গিয়ে।
    বিক্রমের - তোমায় নতুন করে...
    আর সোসেনের এই লেখা।অসম্ভব ভাল লেখা।
    অরিন্দম
  • Bhagidaar | 218.107.178.181 | ০৯ মে ২০১৩ ২০:০৩569849
  • টইপত্তরে করব টা কি ? তে লেখা আছে "হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। " তা কাঁদানোর দ্বায়িত্ব টা সোসেন একচেটিয়া করে ফেলেছে দেকছি!
  • aranya | 154.160.226.53 | ০৯ মে ২০১৩ ২২:২৬569850
  • উত্তরণের গল্প কিনা জানি না, তবে কালোত্তীর্ণ তো বটেই। আজ থেকে ১০০ বছর আগেও এই লেখা পড়লে পাঠক অনেক বন্ধুর মাঝে একলা হয়ে যাওয়া কলেজ পড়ুয়া মেয়েটার সাথে এম্প্যাথাইজ করত, তার জন্য কষ্ট পেত, ১০০ বছর পরেও পাবে।
    সার্থক লেখা।
  • sch | 111.63.175.166 | ১০ মে ২০১৩ ১৭:০৬569852
  • এই লেখাটা পড়লে ভারী লজ্জা লাগে... নিজের মন্দ সময়ের কথা আমরা তো কই এমন মাথা উঁচু করে বলতে পারি না... মাথা উঁচু হয় শুধু সুসময়ের কথা বলতে গেলে। কি অনায়াসে নির্বিকার বর্ণন - যেন ৩০০০ ফুট ওপর থেকে নিজের দিকে তাকিয়ে লেখা।
    এ লেখা অনেক মানুষের পড়া উচিত - বুস্ট - এনার্জির উৎসের মতো এ লেখাও লড়াইয়ের শক্তি যোগায়
  • raatri | 24.96.83.99 | ১১ মে ২০১৩ ১২:৩৯569853
  • এ লেখা পড়ে তো সকলেরই 'চোখের ভেতরের দেওয়াল বেয়ে' জল ঝরে।
  • sosen | 218.107.178.181 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০৩:২৬569854
  • ____________________________________________________________
    এক মস্ত পুকুর, তাকে হেদো বলে। তার গায়ে বসে ম্যাগাজিনের দোকান। ফুট ধরে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছনো যায় সে-ই সিধে বইপাড়া। মিশ্রিত এই কলেজে আমার অদ্ভুতুড়ে, বেলাইন বন্ধু জোটে সব। দার্জিলিং এর মেয়ে সুমতি লামা। তার লাল টুকটুকে গাল, সাদা রং আর তত নাক চাপা নয় মোটেই। উত্তর কলকাতার রাস্তায় তাকে ছোট্ট স্কার্ট আর হাতাছাড়া ব্লাউজ, হ্যা, তখনও টপ বলতে শিখিনি আমি, সেই সাথে পেন্সিল-হিল জুতো পরে ঘুরতে দেখে আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকি। জুলজি অনার্স সুমতির ফ্যান সারা কলেজ। মিস বেথুন, আরো কি কি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান পায় সে, আবার ভাঙ্গা হাস্কি স্বরে সুন্দর গান গায়। কি জাদুবলে তার সাথে কেমিস্ট্রি প্র্যাকটিকালের গ্রুপ হয় আমার। খুব ভাব হয়ে যায় তার সাথে। জানতে পারি তার কলকাতার হোস্টেল -ঘরে রয়েছে ছাব্বিশ জোড়া জুতো, আরো আছে বাড়িতে। এ-ও জানতে পারি সুমতি এক নাম না জানা সায়েব-বাবার কন্যা, তার মা জয়ন্তিয়া নার্স । অবলীলাক্রমে সেকথা জানাতে তার বিশেষ কষ্ট দেখিনা। বাবাকে না পাওয়ায় তার কোনো দু:খ আছে কিনা জিগ্গেস করায় সে বলে উই আর থ্রি সিস্টার্স, সবার বাবা আলাদা, কেউই কারো বাবাকে চিনিনা। বাট উই আর ভেরি হ্যাপী। মা নার্সিং ট্রেনিং নিয়েছেন আয়ার কাজ করতে করতে। বড় দিদি একটি চায়ের দোকান চালায়, তার বিয়ে হয়েছে, তিনটি সন্তান। মজ্লি ইস্কুলে পড়ায়, একটি ক্রিশ্চিয়ান ছেলেকে ভালবাসে। সুমতি ছোট। সকলেই পড়াশুনা শিখেছে সরকারী ইস্কুলে। শুনতে শুনতে মনশ্চক্ষে তার বাড়ি , আর লীলা মজুমদারের কাঠের শিলং-বাড়িটি যেন দেখতে পাই।
    তখনও আমি পাহাড় দেখিনি।
    বিহার থেকে এসেছিল শশী। লম্বা দোহারা শশীকে এক দুপুরে কলকাতার রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বাংলা সংখ্যা চেনাই আমি। ডাক্তারিতে চান্স পেয়ে বাড়ি ফিরে যায় শশী। আর আসেনি। তার একখানা চিঠি , কার্ড ও ছবি , বাড়ি ফিরে পাঠানো, এখনো রাখা আছে আমার কাছে।তার সাথে নাকি লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে পড়াশুনো করত।
  • | 24.97.185.231 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১০:৩১569855
  • তারপর?
  • Bhagidaar | 218.107.178.181 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১০:৪০569856
  • তারপর ডাইনিং টেবিলের চেয়ার বানানো হচ্ছে।
  • achintyarup | 103.186.23.86 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১৩:৫৩569857
  • চেয়ার বানানো আর কতক্ষণ চলবে?
  • Suhasini | 173.231.6.88 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১৪:৩৪569858
  • সোসেনের এই লেখাটা কেমন করে আগে পড়িনি কি জানি। আজ দু'বার পড়লাম শুরু থেকে - বড্ড ঝাপসা লাগে চারপাশ ....
  • ranjan roy | 24.96.108.82 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১৬:৪৫569859
  • সোনালী দুঃখ,
    লেখার জন্যে অপেক্ষায় আছি।
  • kd | 47.228.105.214 | ০২ আগস্ট ২০১৩ ২২:৫৬569860
  • কে যেন লিখলো সোসেনকে এ'বার জেতার গপ্পো লিখতে ! আমার কাছে তো এটাই জেতার গপ্পো ৷ পুরোটা পড়লুম এখন ৷ মাঝে মাঝেই পড়তে বেশ অসুবিধে হচ্ছিলো, অক্ষরগুলো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিলো |

    বড় গর্ব হচ্ছে - আমার সৌভাগ্য এমন একজন ফাইটার/উইনারকে আমি চিনি ৷
  • sosen | 218.107.178.181 | ০৩ আগস্ট ২০১৩ ১৮:৩১569861
  • কেমন রংবাহারি পুরনো কার্পেটমত হয়ে ওঠে জীবনটা ফিরে তাকালে। কোথাও সুতোর রং উঠে গেছে, কোথাও আবার কারুকাজ এত ঝকঝকে যে মনে হয় কাল-ই কেনা হলো। কোনো কোনো জায়গা আবার ছিঁড়ে গেছে ঘষা লেগে, ঢেকে রাখতে হয় তাকে সযত্নে। আর টানাটানি পড়লে যদি আরো ছিঁড়ে যায়!

    সকাল দশটার মধ্যে কলেজে ঢুকে পড়ি আমরা। কলেজ আসলে প্রায় স্কুল। ইতিহাসের গন্ধ বিল্ডিং -এর গায়ে। ১৮৭৯ সনে , এই কলেজের প্রথম ছাত্রী কাদম্বিনী বসু, ১৮৮৩ সনে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন চন্দ্রমুখী বোস। তাঁদের নামাঙ্কিত দুটি বিল্ডিং -এ বিজ্ঞানের ক্লাস হয়। আমাদের ডিপার্টমেন্ট উদ্ভিদবিদ্যা, তেতলায়। এটি বেথুন কলেজের প্রথম বিজ্ঞান বিভাগ, ১৯০৩ সনে শুরু হয়। জগদীশচন্দ্র বোসের বোন হেমপ্রভা ছিলেন এই বিভাগের প্রথম শিক্ষিকা। পুরনো ফরম্যালিন আর প্রচুর হারবেরিয়াম শিটের গন্ধ-ভরা তেতলার জগত। সকালে এসে নিচের সিঁড়িতে রোদ্দুরে বসে থাকি। একে একে বটানির বারটি গোনা গাঁথা মেয়ে এসে জোটে , সেই সঙ্গে দোতলার জুলজির ছাত্রীরাও। ক্লাস শুরুর আগে একদফা আড্ডা হয়ে যায়।
    আমার বটানি নিয়ে পড়ার কোনো কথা-ই ছিল না। চিরকাল ফিজিক্স নিয়েই পড়ব ভেবেছি। হায়ার সেকেন্ডারিতে মাঝারি গোছের রেজাল্ট করায় ভালো কলেজে প্রথম লিস্টে ফিজিক্স পাওয়া গেল না। মোটে একসেট টেক্সট বই, কোনো মাস্টার নেই, যেমন রেজাল্ট হওয়া উচিত তেমনি হলো। পেলাম কোথায়? বি এন সি, বিদ্যাসাগর মর্নিং আর এরকমই মধ্যমানের কয়টি কলেজে। তবে প্রেসি, বেথুন, স্কটিশ সর্বত্রই দ্বিতীয় লিস্টের উপরের দিকে নাম, সুতরাং পেয়ে যাব নিশ্চয়। প্রেসিতে প্রথম চান্সে পাই জিওলজি। ফিজিক্স ও জিওলজিতে এপ্লাই করেছিলাম। বেথুনে এক-ই দামে দুটি ফর্ম দিচ্ছিল, অঙ্ক নিয়ে লাভ নেই, তাই ফিজিক্স এর সাথে আমি একটি বটানির ফর্ম ভরে দিই। সেটিতে সবার উপরে নাম। লোকজন বলল, একটাতে ভর্তি হয়ে গেলে নাকি এক-ই কলেজে ট্রান্সফার করতে আর পয়সা লাগেনা। তাই বেথুনে ভর্তি হয়ে গেলাম বটানিতে। ফিজিক্স-এর দ্বিতীয় লিস্টে বেশ উপরে নাম, সুতরাং পেয়ে যাব, এমন-ই হিসেব।
    ওমা, ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে ক্লাস শুরু। আর প্রথম দিনেই একটা প্র্যাকটিকাল।
    অসিলেটোরিয়া দেখেছেন কেউ? সে এক নীলাভ সবুজ শৈবাল। মাইক্রোস্কোপের নিচে তারে এমনি দেখায়।

    আর মজার জিনিস হলো, এমনি করে সে নড়ে চড়ে বেড়ায়, জলের মধ্যে।

    প্রথম দিনেই হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো মাইক্রোস্কোপ আর পেট্রি ডিশে জ্যান্ত সবুজ অসিলেটোরিয়া। আর মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে সেই যে সবুজ প্রাণের সঙ্গে প্রেমে পড়লাম সেদিন, আর ছাড় রইলো না। সব কলেজেই ফিজিক্স নিয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া গেল, কিন্তু আমি পড়ে রইলাম বেথুনের তিনতলায়। বাবা ঠাট্টা করে বলতে লাগলো; যার নাই কোনো গতি, সে-ই পড়ে বোটানি। কিন্তু তখন আমায় আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে জলের নিচের সেই সবুজ শ্যাওলা।
  • jhumjhumi | 127.194.236.222 | ০৩ আগস্ট ২০১৩ ১৯:০২569863
  • ও সোসেন কি সব মনে করালে, কি সব দেখালে! আমিও যে তোমার দলেই। সেই সব অসিলেটোরিয়া,স্পাইজেলিয়া, আগাছার জগৎ ফেলে চলে এসেছি অনে-এ-এ-ক দূর। এত দূর থেকে তাদের ঝাপসা দেখায়। কদিন আগে দার্জিলিং গিয়ে বড় তাদের কথা মনে পড়ছিল, আজ আবার তুমি মনে করিয়ে দিলে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন