এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • /\ | 127.194.195.138 | ২৬ আগস্ট ২০১৪ ০০:৫৬644801
  • Ishan | 214.54.36.245 | ২৬ আগস্ট ২০১৪ ০১:০১644802
  • ওমনাথকে ধন্যযোগ। ছেলেটা যত বদই হোক, মনটা ভালো। :-)
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৬ আগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৩644803
  • নবারুণ-কে নিয়ে এই টইয়ে সব স্মৃতিচারণা কি মেইনলি সোমনাথ-ই পোস্ট করছে? যেই করুক, অনেক অনেক ধন্যবাদ। খুব ভাল লাগছে লেখাগুলো।
  • /\ | 127.194.196.217 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ০২:৩৬644804
  • রবিবার তাঁর ছেলে জানালেন, মবলগে নবেল অসম্পূর্ণ, শেষ কিস্তি লেখা হয়নি। সেটা ভাষাবন্ধন ছাপছে। দেশ ছাপছে কবিতা সমগ্র। কেউ যদি পেজমেকারের সফট কপি (STM) থেকে ইউনিকোডে কনভার্সনের কোনো উপায় জানেন, জানাবেন।
  • /\ | 127.194.196.217 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ০২:৫৭644805
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৩:১৩644806
  • http://laljiperdiary.com/2014/08/05/%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A3-%E0%A6%AD%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AB%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF/
    নবারুণ ভট্টাচার্য ফিচারিং ঋত্বিক কুমার ঘটক / ভূমিকা-গদ্য ও শ্রুতিলিখনঃ ইমরান ফিরদাউস

    যেকোন জন্ম বা মৃত্যু মানুষকে সক্রিয় করে তোলে। কোত্থেকে যেন অ্যাক্টিভিজমের জোশ নাজেল হয় শিরায় শিরায়। দিল-দরিয়ার ওপর দিয়া সিনায় সিনায় লাগে টান। একটা কসমিক ভালোবাসা তৈরি হয়। যেখানে আসলে সম্পর্কের লেপ্টালেপ্টি খুব বড় বিষয় হয়ে উঠে না। বা, এক কাপে চা পানের মত ঘনিষ্ঠতারো প্রয়োজন পড়ে না। শুধু জরুরী হয়ে উঠে সংগোপনে উদ্দিষ্ট বিষয় বা ব্যক্তির সাথে সংজ্ঞাপনের ইশারাটুকুন। নাইলে ধরেন, মানুষ মরে শ্মশানে/গোরস্তানে আর বিলাপ হয় কেন উঠানে!? একটা সিন্ডিক্যালিস্ট ফিলিংস তৈরি হয় মাথার ভেতরে। তো, নবারুণ ভট্টাচার্য বা ঋত্বিক কুমার ঘটক অথবা জহির রায়হান-কে সেই সিন্ডিকেটের একজন বলেই আমি বা আমরা মনে করি বা এক কথায় সময়ের প্রয়োজনে যাদের যুইতের কথা কইতে চোখের পলক পড়ে না তাদের সব্বাইকে।

    ২।০
    নবারুণ তার পাঠকদিগেরে ফ্যাতাড়ু চিনায় দিয়া নিজে করছেন ভবলীলা সাঙ্গ। ভাবলাম, কুচ পরোয়া নেহি… মন্ত্র তো একটা জানাই আছে ‘ক্যাট-ব্যাট-ওয়াটার-ডগ-ফিশ’- এই মন্ত্রেই হয়তো ফ্যাতাড়ু হয়ে উড়াল দিবো তাহার নিকটে। হুঁহ, সে আশায় গুড়েবালি। উলটো চাপা শোক নিয়া অফিসে বইসা গাজায় মৃতের টালি আপডেট করি। আর ভাবি, পাগলের সর্দারটা পগাড় পার দিয়া কতদূর গেলো?! আরো ভাবি, কি কইরা তার থাকা-না-থাকার শোক উদযাপন করা যায়… এলিজি লেখার ভার থেকে রেহাই নেওয়ার লাইগা তাই ইতি-উতি রসদ খুঁজি। মনে মনে পছন্দসই টেক্সট খুঁজি তর্জমা করার বাসনায়। তো, হাতড়াইতে হাতড়াইতে মাউসের কার্সরে আইসা ঠেকলো ঋত্বিকরে নিয়ে নবারুণের এই বোম্বাস্টিং কথামালা।

    ৩।০
    কোন আইডিয়া ছিল না কি শুনতে যাইতেছি, বাট বিস্ফোরক দ্রব্যের ঘ্রাণ বাড়ি মারতেছিলো ইন্দ্রিয়ে। টের পাচ্ছিলাম এই কথামালা শোনার পর কিছুই আর রবে না আগের মতন। কেননা, আমরা তো জেনে থাকবো- নবারুণ বা ঋত্বিকের কাছে মুড নিয়ে কোন চুদুরবুদুর চলে না!

    ৪।০
    বিষয়টা হইলো টাইম ট্রাভেলিং। মানে নবারুণ যখন ঋত্বিককে নিয়ে আলাপ করেন তখন সেটা আর ব্যক্তি ঋত্বিকের ঘেরাটোপে আটকে থাকে না। বরং ঋত্বিকের মধ্যে দিয়ে সেই সময়ের একটা খোয়াবনামার বয়ানে ঘনীভূত হয়। বা আরো বলা যায়, সামগ্রিকের মাঝে ঋত্বিকের অনন্যতাও পরিস্ফূটিত হয়। এক কথায়, ‘ঋত্বিক-বিচার’ রচনা করেন অবলীলায়। আইকোনোক্লাস্টের কালচার ভেঙ্গে রচনা করেন চিরায়ত মানুষের টুকরো আলোর স্মৃতি। বুঝিয়ে দেন- অ্যাক্টিভিস্ট মাত্রই শিল্পী নন আর শিল্পী হলেই কেউ অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে উঠে না। দুটো বিষয়কেই একই দেহ-মনে ধারণ করার, সিস্টেম-সর্বস্বতাকে বারংবার নাকোচ করে দেয়ার মত কোমরের জোর থাকতে হয়। আর যিনি এই ভাব অবধারণ করেন তিনি যে কোন উপায়ে, যে কোন শিল্প-মাধ্যমেই সমাজের শিখিয়ে দেওয়া র‍্যাশনালিটিকে প্রশ্ন করবেই করবে! এই মানুষ(গুলি) প্রতিনিয়ত উত্তরের মধ্যে দিয়ে প্রশ্নের যৌক্তিকতা বিধান করে থাকেননা পরন্তু প্রশ্নের ছড়ি দিয়ে উত্তরের জরুরত নির্মাণ করেন।

    নবারুণের কথামালায় এক প্রয়োজনীয় ক্রিটিকের সন্ধান পাওয়া যায়। যেথায় তিনি একাধারে ঋত্বিকের শক্তির কথা কইতেছেন, আরেকধারে ঋত্বিকের ব্যর্থতার হিসেব দিতেছেন। আর বুঝাইতেছেন, ‘ঋত্বিক’ নামের এক অনবদ্যতার গল্প; যে গল্পে সময় হয়ে উঠে এক অসুদাপায়ী শেরিফ আর শুভংকরের ফাঁকি ধরার দায়ে যে কোন সৎ শিল্পী মাত্রই প্লে করে আউট ল’র ক্যারেক্টার। এই আলাপের মধ্যে দিয়ে আরো অনেক কিছুর সাথে যে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে উঠে, তাহলো- আপাত শিক্ষিত মানুষের মোনাফেকির নকশামালা। বা, ক্ষমতা কাঠামোর মর্মমূল আঘাতে আঘাতে উপড়ে ফেলার অদম্য ইচ্ছা। এবং সবশেষে এটিই প্রতীয়মান হয়- লোকাল সিস্টেমে সহজ মানুষের কোন খানা নেই। কারণ, পরিবেশবাদীদের গায়েই সবসময় লেগেছে সত্যের মত বদমাশের তকমা।

    ৫।০
    বক্ষ্যমাণ কথামালা নিয়ে নবারুণ কবে, কোথায়, কেন হাজির হয়েছিলেন সেই ফিরিস্তি আমার জানা নেই (তবে জানার চেষ্টা ‘অন প্রসেসিং’ আছে)। যথাযথ সম্মানপ্রদর্শনপূর্বক- কথা থেকে লেখায় আমদানির এই প্রসেসটাকে আমি এথায় তর্জমা হিসেবে বিবেচনা করার স্পর্ধা দেখাইতে চাই। ভবিষ্যতে টীকা-টিপ্পনি আর স্বাস্থ্যবান ভূমিকাসহ পুনর্বার হাজির হওয়ার ইরাদা নিয়ে, আশু পাঠক-পাঠিকারে সেলাম জানাই।

    …[ ভূমিকা-গদ্য ইমরান ফিরদাউস ]

    নবারুণ ভট্টাচার্য ফিচারিং ঋত্বিক কুমার ঘটক

    নবারুণ ভট্টাচার্য

    হোয়াট ড্যু ইউ মিন বাই ফিল্ম?
    সত্যিই কি তুলসী চক্রবর্তী পরশ পাথরে কিছু করেছিলেন নাকি হ্যামলেটে আমরা যে স্মোকনোফস্কিকে দেখেছি সেটা কি খুব ভাল ছিল… কীরম যেন কনফিউজড হয়ে যাই! এই যে আমাদের দেশে এইভাবে একটা লুম্পেন কালচার তৈরি হয়ে গেছে, যেখানে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক টেলিভিশনে এই কথাও কবুল করেন যে উনি মেঘে ঢাকা তারার রিমেক করবেন! মানে অসভ্যতা, অভব্যতা যে পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে এই সময়ে…! সত্যি, উনি যে বললেন ঋত্বিক আবিষ্কার- এই আবিষ্কার যত বেশি করে করানো যায় ততই মঙ্গল! আমার একটা কথা মনে পড়ে যাচ্ছে- সেই অসামান্য সিকোয়েন্সটি তোলা হচ্ছে কোমল গান্ধারে যেখানে গিয়ে সেই বাফারের ট্রেনের ধাক্কাটা… সেই যে বাংলাদেশ বর্ডার… তো ঐখানে, আমি তখন খুব ছোট আর ঐ যে ট্রলিতে করে ক্যামেরা যাচ্ছে, ঐ ট্রলিতে আমি বসে আছি; তা লালগোলার কোন ফিল্মবেত্তা এসে হঠাৎ আমাকে বললো, ‘আচ্ছা খোকা শোন তুমি দেড়শো খোকার কাণ্ডতে ছিলে না?’ ঐ ধরেশ সিনেমা কোম্পানির সঙ্গেই সে সিনেমা করে বেড়ায়… আমি খুব স্মার্টলি উত্তর দিলাম- হ্যাঁ আমি ছিলাম! কথাটা কিন্তু খুব মিথ্যে নয়, কারণ আমার বন্ধু লোকনাথ দেড়শো খোকার একটি খোকা, আমরা একসঙ্গে পড়তাম অতএব সেই বন্ধুর গর্বে আমিও গর্বিত। যাইহোক, সেইখানে সেই লোকটিই ঋত্বিককে একটা কথা জিজ্ঞেস করেছিলো- ‘আচ্ছা এই ফিল্মে এমন কোন ক্যারেক্টার আছে যাকে নিয়ে আপনার ক্যামেরা এগোচ্ছে?!’ তো, ঋত্বিক বললো- কি বললে? তো, আবার বললো- ফিল্মে…? ঋত্বিক বললো, হোয়াট ড্যু ইউ মিন বাই ফিল্ম? এইটা একটা মারাত্মক প্রশ্ন কিন্তু!! ন্যাচারালি সে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি! ওর প্রশ্নের পালাতে পথ পাচ্ছে না লোকটি!!
    ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে
    কিন্তু হোয়াট ড্যু ইউ মিন বাই ফিল্ম? ফিল্ম বলতে আমরা কি বুঝি…? ফিল্ম কি…? ফিল্ম একটা স্টেটমেন্ট হতে পারে, ফিল্ম একটা দার্শনিক তাৎপর্য বহন করতে পারে, ফিল্ম একটা ট্রিটিজ হতে পারে, ফিল্ম একটা দাস ক্যাপিটাল হতে পারে… ফিল্ম অনেক কিছু হতে পারে। মুষ্টিমেয় চলচ্চিত্র পরিচালকই এই জায়গাটায় উত্তীর্ণ হন, সকলেই হন না! এবং সেখানে ঋত্বিক একজন, যেমন- তারকোভস্কি একজন, বার্গম্যান একজন, আকিরা কুরোশাওয়া একজন- যারা এই দর্শনের জায়গায় গিয়ে, ইতিহাসের জায়গায় গিয়ে অদ্ভুত একটা অবস্থান গ্রহণ করে- যেখানে সমস্ত শিল্পমাধ্যম গুলিয়ে যায়! তা, আমি এইটা নিয়ে একটা তত্ত্বে এসছি, ঋত্বিক ঘটক বা তার পাশাপাশি আমরা যাদের দেখতাম সেই বিজন ভট্টাচার্য, যতীন্দ্র মৈত্র, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, চিত্ত প্রসাদ, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য- এরা কারা? আজকে কোনো লোক এদের চেনে না! দু’দিন পর ঋত্বিককেও চিনবে না, সেটা ঠিক। কারণ, আমাকে যে নেমন্তন্নটা করা হয়েছিলো সেখানে বলা হয়েছে যে, বাঙ্গালির আধুনিকতা কোলন ঋত্বিক কুমার ঘটক। এখন, এই বাঙ্গালি যে রেটে আধুনিক হয়ে উঠেছে, তাতে তার কাছে ঋত্বিক ঘটক একটা উদ্বৃত্ত মানুষ! তা, আমি উদ্বৃত্ত মানুষটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম। আমি সোভিয়েত দূতস্থানের প্রচার বিভাগে চাকরি করতাম। পাশের ঘরে বসতেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। হেমাঙ্গ বিশ্বাস ছিলেন পিকিংপন্থি। মানে, মস্কোর হেডকোয়ার্টারে পিকিংপন্থি মানুষ- অতএব কেউ তার সাথে কথা বলতো না। আমি জন্ম থেকেই ওকে দেখে আসছি। তো, আমি গিয়ে কথা বলতাম, গল্প করতাম। আর ঋত্বিক প্রায়ই আসতেন পয়সার জন্য। একটু মদ খাওয়ার জন্য পয়সা দরকার। এলেই শিবদেবের কাছ থেকে কিছু, আমার কাছ থেকে কিছু, হেমাঙ্গদার কাছ থেকে কিছু নিয়ে বেরিয়ে যেতেন। খুব কম সময়ের জন্য আসতেন। এই মানুষটাকে কাছে দেখতে দেখতে একদিন হলো কি- এই যুক্তি-তক্কো-গপ্পোর ফেইজটাতে বা তার আগে ঋত্বিক ফুটপাতে থাকতো, রাস্তায় থাকতো। আমার বাড়ির উল্টোদিকে একটা বাড়ি ছিলম, তার রক ছিল, তার উপরে থাকতো। শুধু ঋত্বিক নয়, ঋত্বিকের মত আরো কিছু লোক যাদের পরিপূর্ণ উদ্বৃত্ত বলা যায়- দে ওয়্যার লুম্পেনস, তারাও থাকতো। ঋত্বিকও সেই লুম্পেনদের একজন। আমার মনে আছে- সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমি সিগ্রেট কিনতে গিয়েছি ঋত্বিক আমার কাছে পয়সা চেয়েছে… এক প্যাকেট চারমিনার কেনার পরে আমার কাছে আঠারো না আটাশ এরকম পয়সা আছে। তো, আমি বললাম এটা নেবে? ও বললো দে! আমি দিয়ে বললাম, এই পয়সায় কি হবে? ও বললো, চলে যাবে! ঋত্বিকের মৃত্যুর পর আমার বাবা একটা স্মরণ সভায় বলেছিলো, ‘ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে’। ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে- এই কথাটা যেন আমরা না ভুলি। কারণ, এই খুন নানাভাবে করা যায়! জাফর পানাহিকে যখন বলা হয় কুড়ি বছর তুমি ছবি করতে পারবে না, স্ক্রিপ্টও লিখতে পারবে না- এটা তাকে খুন করা। বিনায়ক সেন কে যখন বলা হয় তুমি ডাক্তারি করতে পারবে না, কিছুই করতে পারবে না- সেটাও তাকে খুন করা। এবং ঋত্বিক ছবি করার কি সুযোগ পেয়েছিলো তার সময়?! একটা স্ট্রাগ্লিং/ফাইটিং আর্টিস্ট বলতে যা বোঝায় ঋত্বিক পরিপূর্ণভাবে তাই ছিলো! আমি আপনাদের বলছি, সুবর্ণরেখার আউটডোর চাকুলিয়ায় হয়েছিলো। সেখানে রোজ রাত্তিরে সাড়ে নয়টায় কোলকাতা থেকে একটা ট্রেন এসে পৌঁছাতো। সাড়ে ন’টার আগে থেকে আমি ঋত্বিকের মধ্যে একটা অদ্ভুত টেনশন লক্ষ্য করতাম। টেনশনটা হচ্ছে ঐ ট্রেন এসে পৌঁছুবে কিনা! ট্রেনটা এলে তার থেকে কোন চেনা লোক নাববে কিনা! এবং সে ফিল্মের র’স্টক আনবে কিনা! সেইটা না আসলে শুটিং করা যাবে না! এসবের কারণে দিনের পর দিন শুটিং বন্ধ হয়ে গেছে, র’স্টক আসেনি। এইভাবে একটা মানুষকে কাজ করতে হয়েছে। ঋত্বিক যখন ছবি শ্যুট করতেন তখন তার মাথায় তো একটা অ্যাল্কেমি, একটা ক্যালকুলেশন সবই থাকতো…। কিন্তু, আরেকটা জিনিস করতেন- অনেক এক্সেস শ্যুট করতেন, ওগুলো সব এডিটিং টেবিলে ঠিক হবে। সুবর্ণরেখার সেই দুর্মূল্য বহু বহু ফুটেজ টালিগঞ্জে পড়ে পড়ে নষ্ট হয়েছে… আমাদের দেশে সত্যি কোন আর্কাইভ, সত্যি কিছু থাকলে (হয়তোবা সংরক্ষিত হতো)… এগুলো অমূল্য সম্পদ। যেমন, আইজেনস্টাইনের এইরকমের বহু কাজ তারা নষ্ট করেনি। সেগুলো নিয়ে পরে এডিট করে অনেক কিছু বেরিয়েছে। কিন্তু, ঋত্বিকের ভাগ্যে সেটা জোটেনি!! এই জন্য বললাম, ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে। ঋত্বিকের কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ছে- ঋত্বিক যাদের বাজনা শুনতো, খুব পছন্দ করতো তার মধ্যে একজন মোজার্ট। মোজার্টের একটা জীবনী পড়েছিলাম সেখানে আছে যে, মোজার্ট কোথাও একটা, তার অর্কেস্ট্রা টিম দিয়ে একটা সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন, একটা সিম্ফোনি কম্পোজিশন, সামনে লোকের প্রচন্ড ওভেশন… তারা চিৎকার করছে লং লিভ মোজার্ট! আর মোজার্ট কানে শুনছেন লং স্টার্ভ মোজার্ট! তুমি না খেতে পেয়ে মরো! এইটা আমাদের দেশে হয়েছে! একাধিক শিল্পীর ক্ষেত্রে হয়েছে! আমি যাদের কথা বললাম এদের প্রত্যেকের হয়েছে। যেমন, যতিরীন্দ্র মৈত্র- তিনি কি মাপের একজন শিল্পী এটা কেউ ভাবতে পারে না! তার কাছে যখন কোন অর্কেস্টা নেই, কোন বাদ্যবৃন্দ নেই, কিচ্ছু নেই- তিনি ফুটপাতের, বস্তির বাচ্চাদের নিয়ে একটা টিম বানালেন। সেখানে ইন্সট্রুমেন্ট কি- একটা পাউডারের কৌটার মধ্যে ইট ভরে সেইটা দিয়ে একটা ইফেক্ট, এভাবে অন্যান্য ইফেক্ট এবং সেটার নাম দিলেন কী- জগঝম্প! তা জগঝম্পের সঙ্গে ঋত্বিকের যে সম্পর্ক, এই লোকটার সঙ্গে বিজন ভট্টাচার্যের যে সম্পর্ক… যেমন ধরুন একটা ঘটনা বলি- সুবর্ণরেখার ফাইনাল স্ক্রিপ্ট লেখা হচ্ছে, পরদিন শুটিং হবে… হরপ্রসাদ মানে যে চরিত্র আমার বাবা করেছিলেন, উনি সেই ডায়লগগুলিকে আবার লিখছেন- তখন ওকে একজন জিজ্ঞেস করেছে এই ডায়লগগুলি তো কালকে লেখা হয়ে গেছে আবার কেনো করছেন! বললেন, থামো! এশিয়ার গ্রেটেস্ট আর্টিস্ট তাকে আমায় প্রজেক্ট করতে হবে না!! এই বোধটা !!! এগুলি কিন্তু সবই উদ্বৃত্ত মানুষদের নিয়ে কথা। তারা কি ছিল আর বাঙ্গালির জানার কোন উপায় নেই।

    ঋত্বিক হতক ওল্লগে
    ঋত্বিক সেই লোক যিনি ইংরেজি জানা ক্রিটিকদের কাল্টিভেট করতো না
    আমি একটা ছোট্ট কথা বলছি, আপনাদের মধ্যে যারা আমার হারবার্ট উপন্যাসটা পড়েছেন… তা সেই হারবার্টকে নকশালি বুদ্ধি-টুদ্ধি শিখিয়েছিলো বিনু বলে একজন। এবং সুবর্ণরেখার বিনু, ছোট বিনু, যে আমার ভাই, যে মারা যায় লেকের জলে ডুবে… সুবর্ণরেখার শেষ হচ্ছে মামার সঙ্গে সে যাচ্ছে আর বলছে আমরা নতুন বাড়িতে যাবো যেখানে প্রজাপতি আছে, গান হয়, সেখানে গেলে মাকে পাবো, বাবা আছে… এই নতুন বাড়িতে যাচ্ছিলো বিনু। এখানেই ছবিটা শেষ হয়। এবং এর পরবর্তী যে বিনু, আমি যাকে কনশাসলি হারবার্টে নিয়ে এসেছিলাম; সেই বিনু তখন বড় হয়েছে। এবার সে নতুন বাড়িটা নিজে বানাবার চেষ্টা করছে। এবং আজকেও এই চেষ্টাটা ফুরিয়ে যায়নি। আজকে আমার যে মাওবাদী বন্ধুরা জঙ্গলে বা জেলে রয়েছেন তারা ঐ নতুন বাড়িটার জন্যই ভাবছেন… আর কিছু না। এবং প্রত্যেক যুগে, সমস্ত সময়ে বিনুদের এটা অধিকার! বিনুরা এটা করবেই, সেটা ঠিক হোক কি ভুল হোক! এবং সেইটাকে ক্যামেরায় এবং কলমে ধরবার লোকও থাকবে। যেমন, সত্যি সত্যি অমূল্য বাবুদের দলের সঙ্গে ঋত্বিকের কনফ্রন্টেশনটা… তা একটা ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট, অসামান্য ডকুমেন্ট। পার্টলি আপনারা এই রকম ডকুমেন্ট পাবেন বিজন ভট্টাচার্যের চলো সাগরে নাটকে। ওখানে একটা ডায়লগ আছে যেইটা একচুয়ালি নকশালবাড়িতে হয়েছিলো হরে কৃষ্ণ কুমারের সঙ্গে ঐখানকার নেতৃবৃন্দের- জঙ্গল সাঁওতাল, চারু বাবু এদের আলোচনা। এই ডকুমেন্টশনের যে কাজটা ঋত্বিক করে গেছেন, এটার মূল্য অপরিসীম। সেটা আজকেও টপিক্যাল। ঐ যে বলছেন- তোমরা সফল ও নিষ্ফল; সেখানে তিনি মোটামুটি একটা প্র্যাকটিসিং সোশালিজমের ইতিহাস বলছেন। ঋত্বিক কিন্তু সবটা জানতেন। তিনি সুসলভ থিসিস পড়েছিলেন, তিনি চেগুয়েভারার অন গেরিলা ওয়্যারফেয়ার জানতেন। এগুলো জেনে এই জিনিসটাকে করা। এবং কতটা তার ডিটেইল সেন্স… অনন্যর একটা সিকোয়েন্স আছে ব্রেনগান নিয়ে উলটে উলটে যায়, একচুয়ালি দ্যাট ইজ দ্য ওয়ে দ্যাট গান ইজ টু বি ট্যাকলড! এবং অন্যন্যর সঙ্গে একটা ছেলে ছিল সে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ঐ বন্দুকটা নিয়েই লড়াই করেছিলো এবং দে ওয়্যার প্রোপারলি ট্রেইন্ড। এখানে সবটা আবেগের বিষয় নয়, একটা সায়েন্টিফিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ফটোগ্রাফির এই যে সিদ্ধি দেখছি, এই যে আশ্চর্যের জায়গা ওর সিনেমায়, এরও কিন্তু একটা গুরু-শিষ্য পরম্পরা আছে। ঋত্বিকের এই কাজের অনেকটাই কিন্তু শেখা বিমল রায়ের কাছে। যার মত একজন টেকনিশিয়ান তখনকার যুগে কেন, এখনো নেই। বিমল রায় কি মানের টেকনিশিয়ান তার একটা উদাহরণ দেই- বিমল রায় শুটিং করছেন মীনা কুমারীকে নিয়ে। এমন সময় পাশের স্টুডিও থেকে কে।আসিফ একটা নোট পাঠায়- বিমলদা একবার আসবে? উনি গেলেন আর সেটে বলে গেলেন থাকো আমি আসছি। ওখানে গিয়ে দেখেন সব্বনাশে ব্যাপার! মুঘলে আযমের শুটিং হচ্ছে– আয়নায় মধুবালাকে দেখা যাচ্ছে, সেই সিকোয়েন্সেটা… ঐটা শুট করার সময় ক্যামেরা বারবার চলে আসছে আয়নায়। তো, কে।আসিফ বলছে এখন আমি কি করে শুট করবো!? ঐখানে ক্যামেরায় ছিলেন আর ডি মাথুর। তো, বিমল রায় ক্যামেরাম্যানকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসাচ্ছেন কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। তখন উনি নিজের ফ্লোরে একটা নোট পাঠালেন শুটিং প্যাকআপ করে দাও, মীনাকে বাড়ি চলে যেতে বলো। তিনি ঐ ফ্লোরের দায়িত্ব নিয়ে নিলেন এবং ছয়-সাত ঘন্টা থেকে প্রব্লেমটা সলভ করেন। সেই ফিনিশড প্রোডাক্টটা আমরা দেখি এখন। সেই লোকের সঙ্গে কাজ করেছেন। এদের ট্রেনিং, এদের আউকাত, এদের ঘারানাসবগুলোই অন্যরকম। কারণ, ঋত্বিক সমন্ধে একটা ইমেজ বাজারে দেওয়া হয়, ঐ পলিটিক্যালি কারেক্ট বাঙ্গালিরা করে…! এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলি ঋত্বিক সেই লোক যিনি ইংরেজি জানা ক্রিটিকদের কাল্টিভেট করতো না! বেশি তালেবড় লোক তার কাছে গেলে লাথ মেরে বের করে দিতেন, সোজা কথা। এবং আমি বাকি ডিরেকটদের জানি তারা এই হাফ সাহেবদের কালিটিভেট করেছিলেন এবং তারা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন সাহেবদের বাজারে কল্কে না পেলে কিছু হবে না। ঋত্বিকের এসব মাথায় ছিলো না। একটা অ্যাওয়ার্ডও পায়নি, একটাও না! মানে কিচ্ছু পায়নি, কোন ফেস্টিভালে না… কিচ্ছু না! এবং আজকে সে সমস্ত ফেস্টিভালের বাইরে চলে গেছে, অন্য জায়গায় চলে গেছে। এবং এই যে, ফাইটিং স্পিরিট… ঠিক আছে ছবি করতে পারছে না, থিয়েটারের উপর ম্যাগাজিন করছে, নাম ছিল অভিনয় দর্পণ। সেটাও উইথ ইক্যুয়াল অনেস্টি। আমি নিজের চোখে দেখেছি। শেষে হলো প্রফেশনাল থিয়েটার করবো… শালা সিনেমা করতে দিবি না… যাহ থিয়েটারই করবো। এবং সেই প্রজেক্টও এগিয়েছিলো… সাথে ছিল তিনটা ছবি করা এবং প্রত্যেকটা বানচাল হয়ে যায়। ঐ মিসেস (ইন্দিরা)গান্ধী একটু স্পেশালি ফেভার করতেন বলে উনার কিছু কাজ-টাজ, তারপর ইমার্জেন্সি ফ্লাইটে করে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা-এগুলো হয়েছিলো। আদারওয়াইজ, কোন জায়গা থেকে কোন সহায়তা লোকটা পাননি। আমাদের সো-কল্ড ইন্ডাস্ট্রি, সো-কল্ড বিগ নেইমস কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এবং তার সময়ও তাকে কেউ বুঝতো না। ছবি তো ফ্লপ। ছবি যখন রিলিজ হতো, হলে কেউ নেই।

    ঋত্বিক ওয়াজ দ্য ওনলি ম্যান…
    বাঙ্গালি শুধু বোঝেনি তা নয়… ঋত্বিক ওয়াজ দ্য ওনলি ম্যান যার হাত থেকে কোন ডিরেকটর বের হয়নি। তার সঙ্গে যারা ছিলো তারা কোন কাজ করতে পারেনি। এইটা একটা পিকুইলিয়ার ঘটনা কিন্তু! লোকে গিয়ে শেখে অথচ অত বড় লোকের কাছে থেকেও কেউ শিখতে পারেনি। কারণ, তারা তার অরাতে এত বেশি আচ্ছন্ন যে শুধু মদ খাওয়াটা শিখে নিলো কিন্তু কাজের কাজটা শিখলো না। যার ফলে কিছুই হয়নি। এ্যাটলিস্ট মিডিয়োক্রিটও তৈরি হয়নি। আমি ঋত্বিকের কাজের কতগুলি ধারার সাথে পরিচিত যার মধ্যে একটা স্পট ইম্প্রোভাইজেশন। ঐযে অসামান্য বহুরুপী এয়ারপোর্টে যার সামনে সীতা গিয়ে পড়ে, এই বহুরূপীর কোন সিকোয়েন্স স্ক্রিপ্টে ছিল না। আমরা গিয়েছিলাম ওখানে একটা বাজারে, সেইখানে ঐ বহুরূপী ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। তখন ওকে দেখে ইম্প্রোভাইজ করে তুলে নিয়ে যায় এয়ারপোর্টে। নিয়ে গিয়ে শ্যুট করা হয়। এবং তখন আমি অবাক হয়ে গেছলাম ওরে! বাবা! ওত বড় এয়ারপোর্টে আমি ঘুরে বেড়ালাম কই প্লেনটা তো দেখি নি… কিন্তু ছবিতে প্লেনের একটা রেকেজ ছিল… সিনেমায় তো এটাই মজা কোথায় কিসের সাথে কি জুড়ে দেয় বোঝা যায় না! তবে, চাখলিয়ার যে এয়ারপোর্ট ওখানে ব্রিটিশ রয়েল এয়ারফোর্সের প্র্যাক্টিস করার জায়গা ছিল… তারা মেশিনগান মানে পোর্টেবল গান নিয়ে মহড়া দিতো। আমি ওখান থেকে মেশিনগানের অনেক বুলেট খুলে এনেছিলাম কিন্তু বুলেটগুলো মরচে পড়ে পড়ে খুলে খুলে নষ্ট হয়ে গেছে। এটা সুবর্ণরেখার শুটিংয়ের সময় দেখা যেত, সেখানে রয়্যাল এয়ারফোর্সের ইন্সিগ্নিয়া লাগানো ছিল। কিন্তু সবই নষ্ট হয়ে গেছে… এখন আর কিচ্ছু নেই।

    বাংলায় ঋত্বিকের কোন ঘারানা তৈরি হলো না কেন?
    এবং এটাও ঠিক যে বাংলায় তার কোন ঘারানা তৈরি হলো না কেন? অন্য জায়াগায় কিন্তু অন্ধ ভক্ত ফিল্মমেকার জুটলো, বিশেষত জন এব্রাহাম; কিন্তু বাংলায় কোন কিছু হলো না। কারণ, এই এত আধুনিক বাঙ্গালি উদ্বৃত্ত মানুষটাকে আর রাখার দরকার মনে করেনি!! কেননা, এই লোকটা খুব ঝামেলা। আপনার লক্ষ্য করবেন এই ঝামেলাবাজ লোকগুলোর হাতে আর বাঙ্গালি কুক্ষিগত হয়ে থাকতে চাইছে না! এখন তার ফ্লাইট এত বেশি, এখন তার বহুমুখী ইয়ে এত বেশি মানে তার সাহিত্যই বলুন, চলচ্চিত্রই বলুন সব খানেই ঐ যে- কে যেন বলছিলেন হরমোনাল ডিজঅর্ডার না কি যেন…! তো, যাই হোক মানে প্রব্লেম বলবো না… এগুলোর কোন সোশ্যাল রিলেভেন্স আছে কি না… মানে, এক পার্সেন্ট লোকের মধ্যে কে হোমোসেক্সুয়াল আর কে নয়, তার রাইট নিয়ে উচ্চবাচ্য হচ্ছে আর এদিকে ওয়ার্কারদের রাইট নিয়ে কোন কথা হবে না, কেউ কোন ফিল্ম করবে না। লাখের ওপর কারখানা বন্ধ তাই নিয়ে কোন ফিল্ম হবে না। চা-বাগানে হাজার হাজার মানুষ কাজ করে মরে গেলো সেসব নিয়ে কিচ্ছু হবে না! আর ননসেন্স, ইডিয়োটিক ইস্যুজ নিয়ে যত কথা… আসল কথা কি, একটা সোসাইটি যখন ডি-পলিটিসাইজড হয়ে যায় তখন এইসব হয়। যেমন, আজকে হচ্ছে ফলস থিয়েট্রিক্যাল, ফলস স্পেক্টাকলস ভঙ্গি; এইভাবে যখন রাজনীতিটা এগোয়, শিল্পীরাও এই গড্ডলিকায় ভিড়ে পরে পয়সা খেয়ে এবং না খেয়ে। তো, এই কারবারের মধ্যে ঋত্বিকের কথা আনা, এ্যাট অল আলোচনা করা সম্ভব কি!

    ঋত্বিকের রাজনীতি
    আমি ঋত্বিকের রাজনীতি নিয়ে দু’একটা কথা বলছি। মেঘে ঢাকা তারার দুই ছেলে একজন কন্ঠশিল্পী হবে, হয়ও, প্রতিষ্ঠিত হয়। আরেকজন ফুটবলার হবে, হতে পারে না… কারখানায় চাকরি নেয় এবং সেখানে তার অঙ্গহানি ঘটে। ঐ যে আমার বাবার একটা ডায়লগ আছে ‘যন্ত্র গ্রাস করতে পারে নাই’। ষাটের দশকে বা পঞ্চাশের দশকের পর থেকে আমাদের দেশে এই যে একটা নতুন দশা এলো… এবার চিন্তা করুন সুবর্ণরেখায় রবিরাম- যে লেখক হবে তাকে হতে হলো বাস ড্রাইভার। একটা বিরাট মধ্যবিত্তের জীবনে পরিবর্তন এসে গিয়েছিলো; অসংখ্য বাঙ্গালি ছেলে ওয়ার্কার হয়ে দুর্গাপুর চলে গিয়েছিলো। সেই পুরো পিকচারটা, সমস্ত কিছু ঋত্বিকের ছবিতে রয়েছে। ঋত্বিকের মার্কস-এঙ্গেলস প্রীতি, যে টা সে বলছে- ‘এটা কিন্তু ফেলনা নয়’!উনি একমাত্র ডিরেকটর যার প্রতিটি ফ্রেম পলিটিক্যাল। প্রত্যেকটা ফ্রেম বারুদে ভর্তি। সে যখন একটা অপমানিত মানুষকে দেখায়… সে এই বার্তাই আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়-মানুষের অপমানকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে!! এবং সাঙ্ঘাতিক দায়িত্ববোধ থেকে কাজগুলো করা। তার দায়িত্ববোধের চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে যুক্তি-তক্কো-গপ্পো। আমার মজাটা হচ্ছে, ছবিটা যখন তৈরি হয় আমি তখন কিচ্ছু বুঝতে পারিনি। বরং আমি ঋত্বিকের সঙ্গে একটা ফ্যানাটিক ঝগড়া করেছি। আমি বলেছি এনাফ ইজ এনাফ!! তুমি ক্যামেরার ফ্রেমে মদ ঢেলে দিবে আর যা ইচ্ছা তাই করবে… ইন ডিফেন্সে অভ ইউর অ্যালকোহলিজম- এটা আমি মানবো না! প্রচণ্ড ঝগড়া হয়েছিলো এবং তখনকার মত ঋত্বিক কিন্তুকন্সিডারড হিজ ডিফিট। সে বলছে- ‘না, আমি আর পারছি না’! ঐ কথাটাও মনে আছে, সেটা ক্যোওট করছে কিং লিয়ার থেকে ‘ডিনাওন্সড দ্য ওয়ার্ড’… আমি বললাম হ্যা… চুপ করে থাকো আর কিচ্ছু করতে হবে না। এবং তারপর আমি যতবার ছবিটা দেখেছি, তার আধুনিকতার দিকটি আমাকে পাগল করে দিয়েছে। কোথায় নিয়ে গেছে একটা ছবিকে… কোথায় চলে গেছে একেকটা ইমেজ… এবং তৎকালীন বাংলায় যা কিছু ঘটেছে পলিটিক্যাল, বিশ্বে যা কিছু ঘটেছে পলিটিক্যাল সমস্ত কিছু ঐ ছবিটাতে সারৎসার হয়ে ঢুকে গেছে। এবং ঋত্বিকের ফ্রেমের এপিক কোয়ালিটি… এটা আমাকে অসম্ভব মোটিভেইট করে। কোলকাতা শহরে রোজ অনেক মেয়ে নতুন করে বেশ্যা হয় তাদের কাছে তাদের দাদারা গিয়ে পৌঁছয়, প্রমত্ত অবস্থাতেই গিয়ে পৌঁছয় কিন্তু এটা ক্যামেরার ফ্রেমে অরকম একটা বোল্ড সিকোয়েন্সে দেখানো… এটা ঋত্বিক ছাড়া আর কারো পক্ষে করা সম্ভব ছিলো না। কারণ, গ্রেট আর্টিস্টরা খুব নিষ্ঠুর হয়। ঋত্বিকও নিষ্ঠুর। মারাত্মক নিষ্ঠুর। এবং তার নিষ্ঠুরতার চাবুক দিয়ে মেরে মেরে মেরে সে সম্বিৎ ফেরাবার চেষ্টা করেছে মানুষের! কতটা পেরেছে আমরা জানি না।

    মেকানিক্যাল মার্ক্সিজম দিয়ে ঋত্বিককে বোঝা যাবে না
    কিন্তু, আজকে আমার নিজের খুব ভালো লাগছে যে, এই ধরনের একটা আলোচনা সম্ভব হয়েছে। এতটা ভালোবাসা, এতটা রেস্পেক্ট নিয়ে ঋত্বিকের ব্যাপারটা ডিস্কাসড হচ্ছে। ঋত্বিকের জীবনদর্শন, ঋত্বিকের রাজনৈতিক আদর্শ প্লাস তার বহু বিশ্রুত ইয়ুং প্রীতি এইসবগুলি নিয়ে আরো বিশদ গবেষণা-আলোচনা করা দরকার। ঋত্বিকের দুটো বই ইনফ্যাক্ট আমার কাছে আছে, একটা হলো মডার্ন ম্যান ইন সার্চ অভ স্যোওল- কেউ গবেষণা করলে আমি দিতে পারি। ঐ বইটার পাতায় ঋত্বিকের কমেন্টস আছে। এবং আমার পরিচিত এক বন্ধুর কাছে আছে এরিখ নিউম্যানের দ্য গ্রেট মাদার। এবং সত্যি কথা বলতে কি ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখলে- এই অন্তর্জগতের যে রহস্য আর বহির্জগতের যে সমস্যা এদের মধ্যে কিন্তু ভয়ংকর বিরোধের কিছু নেই। একটা ইন্ডিভিজুয়ালকে বুঝতে গেলে তার প্রব্লেমসকে বুঝতে গেলে, সে কিভাবে তার রিয়ালিটির সঙ্গে লড়াই করছে সেটা বুঝতে গেলে, তার এক্সিজটেনশিয়াল ফ্রেমটাকে বুঝতে গেলে আমাদের ইয়ুংকে দরকার, ফ্রয়েডকে দরকার, অ্যাডলারকে দরকার- প্রত্যেককে দরকার। ইভেন আব্রাহাম ম্যাসলোকেও দরকার। ম্যাসলো যে সাতটা ক্যাটাগরি বলছেন অর্থাৎ সাতটা ক্রাইসিস আছে মানুষের… একটা শেল্টারের ক্রাইসিস, একটা সান্নিধ্যের ক্রাইসিস, একটা খাবারের ক্রাইসিস… এগুলো মিট আপ করতে প্রতিটি স্তরে মানুষের লড়াই চলে। কাজেই, এই যে ট্রেন্ডটা ঋত্বিক আমাদের চিনিয়ে দিলো, এটারও অপরিসীম মূল্য আছে। কারণ, এই মেকানিক্যাল মার্ক্সিজম দিয়ে (জীবন-বাস্তবতা) বোঝা যাবে না! ইটালিতে মার্ক্সবাদের প্রতিষ্ঠাতা যিনি গ্যাব্রিওলা, তিনি বলেছিলেন- দান্তের সময়ে গম কত দামে বিক্রি হতো আর সিল্কের কাপড়ের কি দাম ছিলো- এইগুলো জানলেই সেই সোসাইটিকে এক্সপ্লেইন করা যাবে না, দান্তেকে তো নয়ই! এই ভুল মার্ক্সবাদ আমাদের দেশের অনেক বারোটা বাজিয়েছে। যার ফলে, একটা সময় এই তথাকথিত মার্ক্সিস্ট ক্যাম্পে আমরা দেখেছি যেটাকে আজকে ভুল রাজনীতির জন্য এক্সপ্লোয়েট করা হচ্ছে, তা হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে শিল্পীদের বিরোধের প্রেসনোট। আর মজাটা ছিলো- শিল্পীরা অনেক অ্যাডভান্সড লুকিং, তারা এগিয়ে ভেবেছিলেন আর কমিউনিস্ট পার্টি ছিলো ব্যাকোয়ার্ড, কমিউনিস্ট পার্টি ছিলোঅজিফায়েড চিন্তাধারার বাহক; কাজেই তারা সেই শিল্পীকে বুঝতে পারেনি। এই একই অভিযোগ ঋত্বিকের বিরুদ্ধেও এসছে, উনি কিসব গ্রেট মাদার পড়েন, আমার বাবার সমন্ধে এসছে… উনিও তো মাদার-কাল্টে বিশ্বাসী…। এই মেকানিক্যাল মার্ক্সিজমে যেটাকে আমি ভালগার মার্ক্সিজমই বলি- এটা নিজেকে এনরিচ করতে পারেনি, এনরিচ করতে না পেরে দিনের পর দিন নতুন নতুন গাড্ডায় গিয়ে পড়েছে এবং প্রচুর ভুল ব্যাখ্যা এবং ইন্টারপ্রিটেশনের সুযোগ ঘটেছে।

    কালচার ইন্ডাস্ট্রির যে খেলা, মুনাফার যে খেলা, সেখানে ঋত্বিক চলে না
    আমি আর কিছু বলবো না… সাম্প্রতিক একটা নাটক দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে, সেখানে কতটা ঐতিহাসিক ফ্যাক্ট আছে এবং সেখানে যা যা সমস্যার কথা বলা হয়েছে সেগুলো কোন লেভেলের সমস্যা… এগুলো একটু ভাববার দরকার। অ্যাকচুয়ালি ঋত্বিকের সঙ্গে কি হয়েছিলো, হোয়াট সর্ট অভ ডিফারেন্স হি হ্যাড এবং সো ফার মাই নলেজ গোজ জর্জ বিশ্বাসের সঙ্গে এরকম ভয়ংকর কিছু টাসেল হয়েছিলো বলে আমার জানা নেই! এই ইতিহাসের অনেকটার সঙ্গেই আমি জড়িত খুব কাছ থেক জড়িত। আমার বাবাও একজন ভুক্তভোগী প্লাস আমি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে এসব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি, যেমন- সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বীরেন চট্টোপাধ্যায়, অরুণ মিত্র, বিষ্ণু দে… আমি কোথাও বাবা এসব পাইনি! এখন সব অদ্ভুত অদ্ভুত জিনিস উঠে আসছে এবং আমি দেখছি এগুলোকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অস্ত্র সমস্ত যদি প্রতিপক্ষের হাতে চলে যায়, আমরা কি নিয়ে লড়বো?! এটাও একটা সমস্যা। কাজেই ঋত্বিক চান যে আমরা তাকে সেফগার্ড করি, আমিও চাই আজকের ইয়ঙ ফিল্মমেকাররা এ্যাটলিস্ট একটা অটোগ্রাফ কাজ করুক যেখানে বলা যাবে যে, ঋত্বিক বেঁচে আছেন। সেরকম একটা অবস্থা আসবে কি কখনো, কখনো কি দেখতে পাবো? নাকি বাঙ্গালি আরো আধুনিক হতে থাকবে! এ একটা জটিল সংকটের সময়, সংকটটাকে আমি অস্বীকার করি না… ম্যাসিভ একটা মার্কেট, একটা কালচার ইন্ডাস্ট্রি আছে… কালচার ইন্ডাস্ট্রির যে খেলা, মুনাফার যে খেলা সেখানে ঋত্বিক চলে না। বরং বলা হয়, ঋত্বিকের ছবির কদর এখন হচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কি- যারা তাদের সময় অনেক এগিয়ে থাকে, তাদের লেখার কদর পরে হয় বা শিল্পকর্মের! যেমন, সেইদিন কাফকাকে কেউ বুঝতে পারেনি কিন্তু এখন দিন কে দিন কাফকার রেলিভেন্সি প্রত্যেকদিন বাড়ছে। এই নতুন ম্যানুস্ক্রিপ্টগুলো বেরোলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা বোঝা যাচ্ছে না। যেমন, আন্তোনিও গ্রামসি। তাকে কুড়ি বছরের জন্য এই ব্রেনটাকে কাজ করতে দেবো না বলে জেলে দেয়া হলো; আর তিনি টুকরা পেন্সিল আর কাগজেলিখে ফেললেন প্রিজনারস ডায়েরি! সেটার রেলেভেন্স ভয়ংকরভাবে বেড়ে যাচ্ছে দিন কে দিন… সমাজকে দেখার চোখগুলো পালটে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। এই যে চিন্তা-ভাবনার ক্ষেত্রে রদবদল, এই রদবদলের যে দর্শন সেখানে ঋত্বিক একদম প্রথম সারির সৈনিক হয়ে থাকবেন।

    অ্যাপারেন্টলি কিচ্ছু জানতোনা
    এবং আমি এই মানুষটাকে এত কাছ থেকে দেখেছি, তিনি আমাকে এত কিছু জানিয়েছেন, বুঝিয়েছেন, শিখিয়েছেন… যেমন ধরুন মিউজিক শোনা- এই লোকটা ভারতীর মার্গ সঙ্গীত থেকে শুরু করে ওয়েস্টার্ন ক্ল্যাসিক্যাল ইভেন জ্যাজ ইভেন বিং ক্রসবির গান- এ সমস্ত কিছুর উপরে এন্সাইক্লোপিডিক নলেজ থাকতো। সেই লোকটা আমাকে মদেস মুশোভস্কির মিউজিক শোনালো। লং প্লেয়িং রেকর্ডের উপর মদের গেলাশ রাখতো ফলে গোল গোল দাগ হয়ে যেত… একটা বাজিয়ে একদিন শোনালো নাইট অন দ্য বেয়ার মাউন্টেন। পরে যখন চাকরি-বাকরি করেছিতখন এগুলো সংগ্রহ করেছি। একবার বসুশ্রী কফি হাউসে ক্রিকেট নিয়ে কিছু কথা বলেছিলো… সেখানে তো বাঙ্গালির ক্রিকেট নিয়ে বিশাল আড্ডা… সব একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে, এগুলো জানেই না! ক্রিকেটের সবচাইতে বড় যে লেখক সি এল আর জেমস- ওয়েস্ট ইন্ডিজের, হি ওয়াজ প্রোটেস্টান্ট অ্যান্ড আ জায়ান্ট ইন্টেলেকচুয়াল। তার লেখারও হদিশ জানতেন ঋত্বিক। এই যে ব্যাপারটা… সত্যি কি জানতেন আর জানতেন না… আমি তাকে কন্ঠস্থ শেক্সপিয়ার বলতে শুনেছি কিং লিয়ার থেকে। আমি ঋত্বিককে স্টেজে আশ্চর্য আলোর কাজ করতে দেখেছি, কিছু না জেনে। তিনি আমার বাবার নাটক দেখতে গেছেন, সেই নাটকে আলোর কাজ করছেন তাপস সেন। ঋত্বিক গিয়ে তাপস সেনকে গলাধাক্কা দিয়ে বললো, বেরো এখান থেকে! আমি আলো করবো, যা শালা ভাগ! তাপস আর কি করবে… ইয়ে মদটদ খেয়ে এসেছে… কিন্তু তারপর ও যে কাজটা করলো অসাধারণ। জাস্ট একটা ডিমার আর একটা স্পট লাইট কমিয়ে বাড়িয়ে পুরো ডাইমেনশনটা পালটে দিলো! ঋত্বিক থিয়েটারেরও লোক, ছবি আঁকার লোক ছিলেন, স্কেচ করতে পারতেন, তিনি মিউজিকের লোক…। এইবার বলি, ঋত্বিকের ক্যামেরার কথা, ওঁর প্রত্যেকটা ছবিতে ক্যামেরাম্যানের নাম থাকতো কিন্তু বেশিরভাগ কাজ ঋত্বিকের নিজের করা। ক্যামেরায় যখন লুক থ্রু করছে, সেখান থেকে বলে দিচ্ছে রোল-ক্যামেরা-অ্যাকশন… চললো! একটা লোক সবকিছু করতে পারতো। আর এডিটিংটা তো রমেশ যোশীর সাথে বসে ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করতেন। যাই হোক, ঋত্বিক ঘটক কিরকম ছিলেন… তার বন্ধুবান্ধব অনেকে নেই দুই একজন যারা আছেন তারা কতটুকু বলবেন তাও জানি না। কিন্তু, আবার নতুন করে তথ্য যদি কিছু পাওয়া যায় সেগুলো যোগাড় করার এখন হাইটাইম! ঋত্বিকের সিনেমার মেকআপের কাজটা করতেন মূলত শক্তি সেন, শক্তি দা নেই, আমি নিজে দেখেছি ঋত্বিক নিজে বলে দিচ্ছেন এই শেডটা মার, ঐটা কর। মানে, এই লোকটা কি জানতো আর কি জানতো না সেইটাই একটা রহস্য। বাট, অ্যাপারেন্টলি কিচ্ছু জানতো না। সরোদ বাজাতে পারতো, বাঁশি বাজাতে পারতো। কিন্তু, কিচ্ছু নয়।

    আরে! শালা! ও গ্রামার বানাচ্ছে! ওর গ্রামারটাকে শেখ!
    আর বাঙ্গালি ক্রিটিকরা লেখলো- এনার একটু ডিসিপ্লিনের অভাব আছে! এনার সিনেমায় কোন গ্রামার নেই! আরে! শালা! ও গ্রামার বানাচ্ছে! ওর গ্রামারটাকে শেখ! চিরকাল এরা গোল গোল, নিটোল জিনিস মানে ঐ ক্যালেন্ডার ফটোগ্রাফি টাইপ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়ে গেলো!! খালি চিন্তা জিনিসটা কত নিটোল হবে! আরে, একটা বীভৎস ,ভাঙ্গাচোরা জিনিসকে নিটোল করা যায় না! দ্যাট ইজ নট দ্য নিউ এস্থেটিক! নিউ এস্থেটিক হলো মন্তাজ, সেটাও কিন্তু পলিটিক্যাল কারণেই ওয়ার্ক করেছে। ঐ যে সিকোয়েন্সটা- মা বলছে, ক্যামেরা উপরে ঘুরছে, সেখানে একটা জিনিস আছে, একটা বাচ্চা ছেলে দোলনায় দুলছে, এখানে বাচ্চা ছেলেটা হচ্ছে অনন্ত সময়ের মধ্যে একটা পেন্ডুলাম, সে কোথায় যাচ্ছে ডাইনে না বায়ে সে জানে না! কারণ, ঐ ছেলেটার এখন কেউ নেই… মা নেই, বাবা নেই, প্রেমিকা নেই, কেউ নেই! ওর লেখা নেই, কিচ্ছু নেই, টোটালি লস্ট! যেকোন সময় পেন্ডুলাম থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাবে, ও তখন ট্রাপিজের খেলোয়াড়! এই একটা সিকোয়েন্স তোলেন তিনি। আরেকটা সিকোয়েন্সে হরপ্রসাদকে যখন ঈশ্বর বলছে, তুমি আমাকে কোলকাতায় নিয়া যাবা? কোলকাতায় এখন মজা, সে যে কি বীভৎস মজা! তখন হরপ্রসাদ বলছে, নিয়ে যাবো… ওখান থেকে কাট করছে রেসের মাঠ, একটা ঘোড়া লাফ দিয়ে বের হচ্ছে, আর সীতার গলায় একটা পোকার হার…। চিন্তা করা যায় না! বিশ্ব সিনেমাতে নেই, কোথাও নেই এমন একটা সিকোয়েন্স! আমাদের যা বড় বড় নাম, যাদের নামে আকাডেমি, ইন্সটিটিউট হয়েছে তাদের কোন কাজে নেই, কিচ্ছু নেই! কিন্তু, এই লোকটার আছে! এই লোকটা বিশ্বসিনেমাতে রুথলেসলি অটোগ্রাফ করে গেছে, খোদাই করে দিয়ে গেছে! এবং আমাদের এটা গর্বের বিষয় তিনি আমাদেরই লোক, আমরা তাকে কাছে পেয়েছি দেখেছি।

    হারাবার কিছুই নেই শৃঙ্খল এবং পলিটিক্যালি কারেক্টনেস ছাড়া!!
    তার স্পিরিটটা খুব সহজ কিন্তু- মানুষের প্রতি বিশ্বস্ত হওয়া! গরিব মানুষের প্রতি অনেস্টি বজায় রাখা! বেশি বড়লোকের সঙ্গে মাখামাখি করার দরকার নেই- তাতে কখনো শিল্প হয় না, দালালি হয়! এগুলো হচ্ছে প্রত্যক্ষ শিক্ষা এবং পলিটিক্যালি অ্যালাইভ হওয়া। এবং আই স্ট্যান্ড ফর লেফট উইং আর্ট বাট নো ফারদার লেফট ইন দ্য আর্ট! এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কবুল করা এবং কবুল করতে করতে করতে করতে মরে যাওয়া একসময়! এইটাই স্বাভাবিক। এইটাই একটা শিল্পীর জীবন! এইখানেই সে বাঁচে। এবং শিল্পীরা পৃথিবীর কোন দেশে খুব একটা আনন্দে খেয়েছে আর থেকেছে এমনটা কেউ দেখাতে পারবে না! মদিলিয়ানির মত শিল্পী একটা ব্রেডরোল খাবার জন্য কাফেতে বসে সাদা কাপড়ে ছবি এঁকে দিতেন। সেই ছবিগুলি পরে কোটি ডলারে বিক্রি হয়েছে। এই মার্কেট তো রয়েছে চারদিকে…। তো, যাইহোক- আমাদের এই পলিটিক্যালি কারেক্ট ও কালচারালি কারেক্ট বাঙ্গালিরা নিপাত যাক!! তাদের আধুনিকতা নিপাত যাক!! আমরা যারা প্রিমিটিভ, পুরোনোপন্থি আমরা থাকবো! আমরাও বুঝি- এই হোমোসেক্সুয়ালিটি নিয়ে দেবেশ রায়ের দাদা দীনেশ রায় একটা গল্প লিখেছিলেন, অসামান্য গল্প, সেই গল্প আমরা প্রোমোট করেছিলাম… আমরা হোমোসেক্সুয়ালিটিকে প্রোমোট করিনি, আমরা প্রোমোট করেছিলাম একটা অসামান্য শিল্পকর্মকে- যার বিষয় হোমোসেক্সুয়ালিটি হতেই পারে!! আমরাও কিছু জানি না, বুঝি না এমন নয়! আমরা রামছাগল এরকম মনে করো না! আমরা ডেথ ইন ভেনিস দেখেছি। উই ক্যান টিচ ইউ হোয়াট ইজ হোমোসেক্সুয়ালিটি! এরা যেন আজকে আবিষ্কার করলো এমন ভাব! এগুলো অনেক প্রিমিটিভ ব্যাপার-স্যাপার! এসব হয়ে গেছে অনেক আগে! এগুলো আমরা জানি! কাজেই, হারাবার কিছুই নেই শৃঙ্খল এবং পলিটিক্যালি কারেক্টনেস ছাড়া!!

    থ্যাঙ্কিউ !!
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৩:৪০644807
  • এটা তো ওমুদা ওপরেই দিয়েছে না? সেই অডিওটা। থ্যাঙ্কু সেদা ওমুদা দুজনকেই।

    একটা খুচরো পোশ্নো। 'ফ্যাতাড়ুর বোম্বাচাক'-এই কি ফ্যাতাড়ু নিয়ে সব ছোটোগল্প আছে? 'ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক' কোথায় পাওয়া যাবে? ওটাও কি আরেকটা এরম সংকলন?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৩:৫৯644808
  • ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক অন্য বই। এতে ছটা ছোটোগল্প রয়েছে।

    অর্থাভাবে ফ্যাতাড়ু
    আই পি এল-এ ফ্যাতাড়ু
    বসন্ত উৎসবে ফ্যাতাড়ু
    সুশীল সমাজে ফ্যাতাড়ু
    টিভির গ্যানজামে ফ্যাতাড়ু
    ফ্যাতাড়ুর আর.ডি.এক্স
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:০১644809
  • 'ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক' ভাষাবন্ধন প্রকাশনী। মূল্য ৬০ টাকা।
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:০৬644811
  • ও। ওতে 'ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক' বলে কোনো গল্প নেই তাহলে? যেমন 'ফ্যাতাড়ুর বোম্বাচাক' বলে একটা গল্প আছে এতে।

    কুম্ভীপাক কথাটা তো পুরন্দরের পদ্যে আছে 'কবিসম্মেলনে ফ্যাতাড়ু'-তে, যেখানে পু-ভা র সাথে প্রথম দেখা হচ্ছে, সেই কার্জন পার্কে ইঁদুরের ছোলা খাওয়ানোর জায়গাটায়। আমি ওটাই আসলে কুম্ভীপাকের গল্প ভাবছিলাম।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:১৭644812
  • কার্জন পার্কে ইঁদুরের ছোলা খাওয়া? কবে?

    ডিএস তো কলার খোসা দিয়েছিলো প্রথমে, তারপরে ভাঙা বিস্কুট কিনে এনে দেয় যখন মদনদা ভয় দেখিয়েছিলো " ঘুম ভেঙে হাতড়ে দেখবে মেন পয়েন্ট মিসিং"।
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:২৭644813
  • হ্যাঁ হ্যাঁ ওটাই। ছোলা আছে তো এক জায়গায় -'টিকিওয়ালা এক ন্যাড়া ইঁদুরগুলোকে ভিজে ছোলা ছুঁড়ে দিচ্ছিল, নিজেও একটা-দুটো খাচ্ছিল।'

    আচ্ছা, এর আগের গল্পে যেখানে পু-ভা গাছে ঝুলে সুইসাইড করতে গেল, নিয়ে ঝপাৎ করে ডি এস মদনের লুডোর বোর্ডের ওপর পড়ল, ওখানে তো মনে হয় পু-ভা ওদের আগে থেকেই চেনা। পরের গল্পটায় পু-ভা র সাথে আলাপ হচ্ছে, এটা আগে পরে করেছে না?

    আরো একটা কথা - নবনী ধরের টিভি গেঁড়িয়ে বিশ্বকাপ দেখল। তারপর নবনীর মালের নেশা ছাড়ানোর গল্পটা থেকে নবনীর ওপর এত প্রসন্ন কেন এরা? নবনী তো বেশ হারামী। নাকি ভুলভাল গপ্পো লিখে বাংলা সাহিত্যের পিন্ডিপাত করছে বলে ওকে উস্কে দেয়া। উল্টে মল্লিনাথকে বাঁশ দিতে লেগেছে।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:৩৮644814
  • একী! নবনীদা কেন হারামি হবে?
    বসন্ত উৎসবে ফ্যাতাড়ুরা কি ক্যাচালটাই না করল নবনীদার প্রেস্টিজ বাঁচাতে।
    বাংলা সাহিত্যকে খুব ভালোবাসে ফ্যাতাড়ুরা। বজরা ঘোষকে মনে নেই? খানদানি খানকি - দুই খন্ডে অসমাপ্ত?
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:৫২644815
  • ও। ওগুলো তো পড়িনি এখনো, পাইনি। সবেমাত্র বোম্বাচাকের গুলো দিয়ে হাতেখড়ি সমাপ্ত হয়েছে। এবার একটু মুখ বদলাতে অন্যদিকে গেছি - 'পৃ-শে-কমিউনিস্ট'।

    না আসলে ভাবছিলাম নবনী অত বড়লোক, দশ তলার ওপর থাকে...অবশ্য বড়লোক হলেই ফ্যাতাড়ুর শত্রু এমন নয়, যতক্ষণ না গরীবের জি মারছে। তাই হয়ত টিভি ঝেড়েও ফেরৎ দিয়ে গেল, পরে এত হেল্প করল।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৪:৫৪644816
  • কেন? নবনীদা তো মোবাইল ও দিয়েছে ওদের। ভালো লোক।
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:০১644817
  • হ্যাঁ পরে দোস্তি বেশ জমেই গেল দেখলাম। তবে মোবাইল তো নিজের দরকারে যাতে ডাকলে পাওয়া যায় সেজন্যে, তাই না? 'মল্লি হয়ত ফের হারামিগিরি ফাঁদল, তখন কোথায় খুঁজে মরবে আমাদের?' এমনি এমনি নয়।
  • /\ | 212.79.203.43 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:১৮644818
  • কুম্ভীপাক এখন কিনিস না। এবছর দুটো অগ্রন্থিত ফ্যাতাড়ুর গল্প কুম্ভীপাকের পরের এডিশনে যোগ হবে। তারপর কিনিস। এখন বন্ধুবান্ধবের থেকে চেয়ে নিয়ে পড়। "সদা" আছে। "সেদা" অছে।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:২১644819
  • হুঁ।
    মিউচুয়াল ম্যান, ফোয়ারা, পাঁচুগোপাল, ফায়ার ম্যান, পারিজাত, বেবিK, এরা সব ঘুরে ঘুরে আসে।
    "কলকাতার শেষ স্বাভাবিক মানুষ" পড়েছো? "একটা লোক ও একটা কুকুর", "মহাযানের আয়না", "৪+১" কিংবা "ফোয়ারার জন্য দুশ্চিন্তা"?
    মাথা খারাপ করে দেওয়া লেখাপত্তর।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:২৯644820
  • বেবিK ব্যাপারে আগে এটুকু পড়ে নিলে ভালো হয়
    http://en.wikipedia.org/wiki/Baby_K
    তারপরে নয় পেট্রল খাওয়া।
  • Kaju | 131.242.160.210 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:৩২644822
  • ওমুদা, বেশ।

    সেদা যেগুলো বলল, তার মধ্যে '"৪+১" কিংবা "ফোয়ারার জন্য দুশ্চিন্তা" গল্প সমগ্রে আছে দেখলাম, অন্যগুলো নেই। আর যদি কিছু পিডিয়েফ থাকে দেবেন প্লিজ। দেখি কুড়িয়েবাড়িয়ে যতগুলো পড়া যায়। তারপর একেবারে না পেলে কিনে নেবো। নবারুণ সমগ্র তাড়াতাড়ি বেরোলে ভালো হত। সব একসাথে পেয়ে যেতাম।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ১৫:৩৮644823
  • আরেকটা গল্প "একটি যুগল" ,ওটা "প্রেম ও পাগল" বইটায়, তারপরে অন্ধ বেড়াল।
  • শ্রী সদা | 212.142.121.23 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ২১:১৬644824
  • একটা কমন রিপোজিটরি কেউ সাজেস্ট করো, আমার কাছে নবারুণ যা আছে সব তুলে দেব। এখন যে যা লিং দেয় এদিক ওদিক ছড়িয়ে থাকে। আমার গুগল ড্রাইভে কিছু আছে, হার্ড ডিস্কে কিছু।
    আমার ব্যক্তিগত মত, কাঙাল মালসাট বাদে বাকি ফ্যাতাড়ু সিরিজ মূলতঃ বাল। ঐ দিয়ে নবারুণ পড়া শুরু করলে - "উরিস্লা ছাপার অক্ষরে খিস্তি, বাঁড়া ... হেভী খিল্লির লেখা তো !" টাইপ ধারণা হয়ে যেতে পারে নবারুণ সম্পর্কে। নবারুণ পড়া শুরু করা উচিত ছোটোগল্প দিয়ে। মার্ডারারের ভাই, কড়াই, খোচড়, হালাল ঝান্ডা .... কাঁপিয়ে দেওয়া লেখা এক একটা।
  • b | 24.139.196.6 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ২২:৪৪644825
  • শ্রী সদার শেষ কথাটায় ক।
  • Tim | 12.133.41.32 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ২২:৫৫644826
  • আম্মো সদাকে ক দিলুম। অন্ধ বেড়াল, আগুনের মুখ এইসব আলাদা লেভেল। অ-ফ্যাতাড়ু গল্প সংকলনগুলোর দুপাতার এক একটা ছোটগল্প পড়ে হাঁ করে বসে থাকতে হয়।
    যদিও আমি ফ্যাতাড়ুকে প্রাপ্য গুরুত্ব দিই। তবু।
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ২৩:০৩644828
  • ভোগী হওয়ার প্রথাটা সত্যিই গ্রাম বাংলায় আছে বা ছিল কিনা জানতে ইচ্ছে করে
  • aranya | 154.160.226.53 | ২৭ আগস্ট ২০১৪ ২৩:০৩644827
  • আম্মো ক। মারাত্মক সব ছোট গল্প।
    উপন্যাস-গুলো-ও দারুণ। যুদ্ধপরিস্থিতি এখনও আমার ফেভারিট, ফলোড বাই হারবার্ট ইঃ
  • i | 134.170.227.255 | ২৮ আগস্ট ২০১৪ ১২:৪৯644829
  • একদিন ১৭ই অগাস্টের কপি খুঁজছিলেন। পেয়েছেন ?
    আমি কলকাতায় একজনের সন্ধান পেয়েছি, যাঁর কাছে ঐ কাগজটি আছে। রক্তকরবী অ্যাট ইয়াহু ডট কমে তে মেইল করে ঠিকানা জানালে , কুরিয়ার যোগে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি।
  • b | 135.20.82.164 | ২৮ আগস্ট ২০১৪ ১৩:০৯644830
  • অরণ্য ভোগীর কথা বলছিলেন না? আসামে শুনেছি এক্কালে ছিলো, মেইনলি কামাখ্যা মন্দিরে।

    এই হল একটা রেফ। ২০১২-তেও কামাখ্যা পাহাড়ের নিচে, বড় রাস্তার উপরে একজন নিখোঁজ ব্যাক্তির কাটামুন্ডু পাওয়া গেছিলো। তিনি ভোগী ছিলেন কিনা, জানি না অবশ্য।
    http://www.yoniversum.nl/dakini/bhogi.html
  • aranya | 154.160.130.16 | ২৮ আগস্ট ২০১৪ ২১:৩৬644831
  • থ্যাংকস বি, উপন্যাস-টার শেষেও আসামে ভোগী প্রথার উল্লেখ ছিল বটে
  • /\ | 212.79.203.43 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৬:২১644833
  • আগামী কাল ২রা সেপ্টেম্বর সন্ধ্যে ৬ টা থেকে আড়িয়দহ/ কামারহাটি নজরুল মঞ্চের একতলায় (সমাজ ভবন) নবারুণ ভট্টাচার্যের উপর স্মৃতিচারণ, আলোচনা "কথা ও পাল্টা কথা"।

    এই জায়গাটার নাম রথতলা। উত্তরপাড়া থেকে ঘাট পার হয়ে একটা অটো তে, বা দক্ষিনেশ্বর এ নেমে বাস এ (তিনটে স্টপেজ), ডানলপ থেকে, বেলঘড়িয়া থেকে যে কোনো ভাবে খুব সহজে পৌঁছনো যায়, বি টি রোডের উপরেই।

    রাত প্রায় ৯ টা অবধি চলবে। প্রথমে পাভেলের তোলা ভিডিও ডকুমেন্টরি দেখানো হবে, তারপর মূল আলোচনা। যে পারবেন চলে আসুন। একটু দেরি করে ঢুকলেও কোনো অসুবিধে নেই, মূল আলোচনা অংশ সেকেন্ড হাফ এ।

    সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, রবিশংকর বল, ভাষাবন্ধনের রাজীব চৌধুরি, সপ্তর্ষির সৌরভ, পাভেল ও আরো অনেকে থাকবেন। খুব ভালো একটা আলোচনা ও অনুষ্ঠান হবে আশা করছি। ডিটেল Somnath Das Gupta র ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করা আছে। যত বেশি সম্ভব কলকাতার লোকেদের জন্য আমন্ত্রণ রইল, যাকে পারবেন জানান, যতজনকে সম্ভব নিয়ে পৌঁছে যান। প্রবেশ অবাধ। আমি নিজে হয়তো ৭ টা নাগাদ ঢুকতে পারব। মিস করবেন না, কারণ খুব সম্ভবত কোনো রেকর্ডিং (অডিও বা হিডিও) হচ্ছে না। কোনো ইউটিউব লিংক পাওয়া যাবে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন