এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ইতিহাস  শনিবারবেলা

  • চেকিয়া এক

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ইতিহাস | ২০ জুলাই ২০২৪ | ৫৬৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ফ্রাঙ্কফুর্ট ভালড স্টাডিয়ন

    ৫ মার্চ ১৯৮০

    ফ্রাঙ্কফুর্ট ভালড স্টাডিয়নে এক সন্ধ্যা



    মাঠে তিল ধারণের স্থান হয়তো আছে মনুষ্য ধারণের জন্য নেই। আইনত্রাখত ফ্রাঙ্কফুর্ট বনাম জব্রোইয়ভকা ব্রনোর ইউ ই এফ এ কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। সহকর্মী শ্রীধরকে তার চিরাচরিত নিয়মনিষ্ঠা থেকে বিচ্যুত করে আগে ভাগে অফিস থেকে নিয়ে এসেছি – যেমন এককালে স্টেট ব্যাঙ্ক কেটে মোহন বাগানে মাঠে খেলা দেখতে গেছি।




    আইনত্রাখত ফ্রাঙ্কফুর্ট


    মোহনবাগান স্থাপনার দশ বছর বাদে ফ্রাঙ্কফুর্টের ফুসবাল ক্লুব ভিক্টোরিয়া ও কিকারস এই দুটি স্থানীয় দল মিলে আইনত্রাখত (সম্মিলনী /ইউনাইটেড ) ফ্রাঙ্কফুর্ট দল স্থাপনা করে। সে আমলে গোটা দেশে উত্তর দক্ষিণ আঞ্চলিক লিগের খেলা হতো – ধরে নিন বীরভূম বর্ধমান বাঁকুড়া মিলে একটা লিগ! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে যাবার ন বছর বাদে জার্মান ফুটবল টিম বিশ্বকাপ জেতে (বার্নের বিস্ময় – জার্মানি ৩-হাঙ্গেরি ২) কিন্তু সিনিয়র লিগ শুরু ১৯৬৩ সালে, যাকে আমরা বুন্দেসলিগা বলে চিনি এবং বায়ার্ন মিউনিক প্রায় প্রতি বছরে চ্যাম্পিয়ন হয়। একাধিকবার জার্মান কাপ (ডে এফ বে পোকাল) জিতলেও ইউরোপীয় মঞ্চে আইনত্রাখত তখন (১৯৮০) অবধি কোন ট্রফি জেতে নি। বিশ বছর আগে ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে রানার্স আপ হওয়াটা একমাত্র মাইলস্টোন। এবার তাদের টিম জবরদস্ত – আগের রাউনডে টপ ডাচ টিম রটারডামের ফাইনুরদকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে, অতএব উত্তেজনা তুঙ্গে।

    প্রতিপক্ষের নাম উচ্চারণ করতে দন্ত কৌমুদী বিধ্বস্ত হবার সম্ভাবনা। ইউরোপে ইতিমধ্যে আমার বছর দুয়েক কেটেছে। ইংল্যান্ড হল্যান্ড ফ্রান্স জার্মানির বাইরে পূর্ব ইউরোপের কিছু ফুটবল টিমের খবরাখবর রাখি যেমন ডিনামো কিভ, লোকোমোটিভ সোফিয়া, ডিনামো ড্রেসডেন, রেড স্টার বেলগ্রেড, স্টেউয়া বুখারেসট, স্পারতাক মস্কো। কিন্তু জব্রোইয়ভকা ব্রনের নাম শুনিনি।

    সে সময়ে ট্রেনে বা গাড়িতে শহর থেকে এয়ারপোর্ট যাবার পথে দেখা বনানী পরিবৃত ভালড স্টাডিয়নের সঙ্গে আজকের বহু অর্থে স্পন্সর করা ডয়েচে ব্যাঙ্ক পার্কের কোন তুলনা চলে না। সেখানে এবারে ইউরো ২৪ প্রতিযোগিতার কিছু খেলা হয়তো আপনারা দেখেছেন (জার্মানি- সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম -স্লোভাকিয়া ইত্যাদি)। সাতের আটের দশকে আমরা সিমেন্ট বাঁধানো গ্যালারিতে বসে বা দাঁড়িয়ে খেলা দেখতাম। দাদাকে একবার ফ্রাঙ্কফুর্ট বনাম লেভারকুসেনের লিগ ম্যাচ দেখাতে নিয়ে যাই- দাদা বলেন হ্যাঁরে, মোহনবাগানের কাঠের গ্যালারি এর চেয়ে আরামের।

    খেলা শুরুর অনেক আগেই হাজির হয়েছি – অ্যাটমসফিয়ারের স্বাদ গন্ধ নেওয়ার জন্য। আমার পাশে যিনি বসেছিলেন তাঁকে বাকি স্টেডিয়ামের উন্মত্ত জনতার অংশ বলে মনে হল না। জার্মানে প্রশ্ন করলে পরিষ্কার ইংরেজিতে জবাব দিলেন, নাম ফ্রান্তিসেক, শিক্ষক, এসেছেন ওই ব্রনো শহর থেকে। বার্লিন দেওয়াল ভাঙ্গা পড়তে তখনো প্রায় দশ বছর বাকি – চেক সীমান্ত পার হওয়া নিশ্চয় কঠিন ব্যাপার ছিল? সে কথা ঠিক জিজ্ঞেস করা গেলো না।

    যখন ইউরোপ এসেছি শীতল যুদ্ধ একেবারে তুঙ্গে। লাল নীল দুই পক্ষ কোন কারখানায় বসে কোন ছুরি শানাচ্ছেন বা কত বড়ো পেটো বাঁধছেন এ নিয়ে কানাকানি চলে, মানুষের ভয় ভীতি বাড়ে ; সত্যি মিথ্যে কেউ জানে না। কিন্তু এই কঠিন সময়েও ফুটবলের মাঠে ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক দেশের খেলা চলেছে বাধা বন্ধহীন।

    আলাপ জমে গেলো ফ্রান্তিসেকের সঙ্গে। টি টুয়েন্টি নামক দানবের দুরাচার শুরু হবার আগে টেস্ট ক্রিকেটের মাঠে গল্প বেশি জমতো - অনেকক্ষণ যাবত মাঠে কিছুই ঘটে না, স্যাকরার ঠুক ঠাক চলে ব্যাটে বলে। ফুটবলের মাঠে সেটা সম্ভব নয়। তবু খেলার আগে, মাঝে, হাফ টাইমে কিছু কথা। আমরা তাঁকে একাধিক বিয়ারে আপ্যায়িত করেছি, কিছুতেই দাম দিতে দেব না! ভারত ও পূর্ব ইউরোপের ভাইচারা যুগ যুগ স্থায়ী হোক। দুজন ভারতীয়ের সঙ্গে এই ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠে দেখা হবে তিনি ভাবতে পারেন নি! আমার ট্রিভিয়া লাইব্রেরির শ্রীবৃদ্ধির জন্য যত না প্রশ্ন, ভারত সম্বন্ধে তাঁর জ্ঞানস্পৃহা অনেক বেশি। ততক্ষণে তাঁর টিম আইনত্রাখত ফ্রাঙ্কফুর্টের হাতে বেশ ঝাড় খাচ্ছে, ৩-০ গোলে পিছিয়ে এবং তাঁর মনোযোগ বিভ্রান্ত। তাই প্রস্তাব দিলাম- তিনি যদি চান আমরা একত্র হেঁটে শহরে ফিরতে পারি, এক ঘণ্টার পথ। ট্রামে বেজায় ভিড় হবে। ফ্রান্তিসেক বললেন যদি আমরা তাঁকে ট্রেন স্টেশনের কাছাকাছি অবধি সঙ্গ দিতে পারি তাঁর খুব উপকার হয়, রাতের ট্রেন ধরবেন। সেটাই আমাদের লজিস্টিক, ফ্রাঙ্কফুর্ট হাউপটবানহফের সামনে আমরা বারো নম্বর ট্রাম ধরে বাড়ি ফিরব।

    ব্রনো ৪-১ গোলে হারল কিন্তু আমাদের একটি বন্ধু লাভ হলো। মার্চ মাসের সন্ধ্যে, সবে কারনেভাল শেষ, শীত বিদায় নিয়েছে। ভালড স্টাডিয়ন ছাড়িয়ে, রেসের মাঠ পেরিয়ে গাছে ঢাকা পথ দিয়ে আমরা তিনজন গল্প করতে করতে হাঁটলাম। আরও অনেকে চলেছেন, একটি সুখী জনতার মিছিল।




    জব্রোইয়ভকা ব্রনো



    জানতে চাইলাম এই যে আপনাদের টিমের যে কঠিন নাম, তার অর্থ কি?

    জব্রোইয়ভকা কথাটার মানে অস্ত্রাগ্রার ( আমাদের আর্সেনাল!)। আসলে এই নামের একটি কোম্পানি আছে যারা রাইফেল বন্দুক ইত্যাদি হাতিয়ার বানায়,,তাদের নামে দলের নাম।

    শহরের নাম BRNO! উচ্চারণ করেন কি করে?

    ফ্রান্তিসেক হাসলেন, “ চেক এবং স্লোভাক ভাষা ভাওয়েলের ব্যবহারে বিশেষ কার্পণ্য করে! আপনাদের চেনা কোন ভাষার মতন নয়। এই দেখুন ফরাসিরা সতেরোটা অক্ষর লিখে চারটে উচ্চারণ করে কিন্তু তারা স্বর ও ব্যঞ্জন বর্ণের সঙ্গে সদাচার করে থাকে। আমরা করি না। জেনে রাখুন ঘাড়ের চেক KRK এক মুঠো হলো čtvhrst বৃহস্পতিবার čtvrtek! উচ্চারণের চেষ্টা করবেন না!

    অনিবার্যভাবেই প্রশ্ন করলেন, আপনারা প্রাগ গেছেন?

    কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চায়? কিন্তু এই মউকা! একজন চেক নাগরিকের কাছে মনের যাবতীয় দুঃখের কথা উজাড় করে দেওয়া যাক।

    জানালাম সে চেষ্টা শ্রীধর করে নি। তবে আমি এই মাত্র ন মাস আগে কয়েকজন বন্ধু সহ আপনাদের সীমান্ত থেকে ফিরে এসেছি, ভিসা থাকা সত্ত্বেও ঢুকতে দেয় নি। প্রথম দিন বলেছে ঠিক সম্মতি দেওয়া যাবে কিনা তার খবর নেবেন প্রাগ থেকে, একদিন বাদে আসুন। আমরা কাছের গ্রাম ভালডসাসেনে রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালে আবার হাজিরা দিয়েছি। এবার আমাদের পরিষ্কার বলা হলো, আপনাদের ভিসা থাকলেও প্রবেশের অনুমতি নেই! শুনে ফ্রান্তিসেক বেশ অবাক হলেন, সীমান্ত চৌকির নাম জানতে চাইলেন -বললাম জার্মান এগার, চেক খেব। বললেন তিনিও সেই বর্ডার পেরিয়ে ফ্রাঙ্কফুর্টের ট্রেন ধরেছেন। কড়াকড়ি আছে সে দেশের লোকের আসা যাওয়ার ব্যাপারে কিন্তু ভিসা সমেত বিদেশিকে আটকাবে কেন? তিনি একটু বিভ্রান্ত হলেন।

    আর চেষ্টা করেন নি? পারলে একবার আসুন,প্রাগ আপনাদের খুব ভালো লাগবে।

    স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্টে আমাদের নির্ধারিত তিন বছর কাল প্রায় উত্তীর্ণ হতে চলেছে। আমাদের কি আর সে সুযোগ হবে? পশ্চিম ইউরোপটাই তখনো দেখা হয়ে ওঠে নি। ম্যাপ দেখি আর ভাবি দেশে ফিরে গিয়ে কি মুখ দেখাব? স্পেন পর্তুগাল আয়ারল্যান্ড ডেনমার্ক সুইডেন নরওয়ে ফিনল্যান্ড অবধি দেখি নি, হ্যাটা হয়ে যাব। প্রাগ তো অনেক দূরের নক্ষত্র।

    ‘এ দেশে পাওয়া যায় কিনা জানি না তবে একবার আমাদের দেশে এসে চেক বিয়ার টেস্ট করে দেখুন!’

    যুদ্ধোত্তর চেক জার্মান সম্পর্ক এবং সুদেতেনল্যান্ডের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলাম।

    ফ্রাঙ্কফুর্ট ট্রেন স্টেশনে প্রায় পৌঁছে গেছি এখান থেকে সিধে খেবের ট্রেন যায়। তখন রাত্তির দশটা বেজে গেছে। তবে ফ্রান্তিসেক বললেন বেশি রাতে ট্রেন আছে, ঘুমিয়ে চলে যাবেন, ছ ঘণ্টা লাগে।

    বিদায় নেবার সময়ে বললেন প্রাগ নামের ভেতরে প্রয়াগ শব্দ নিহিত আছে, যেখানে দুটি নদীর ধারা মিশে যায় - ভ্লাতাভা ও লাবেম (যাদের জার্মান নাম মলদাউ ও এলবে)।

    শুনে বিস্মিত এবং একই সঙ্গে উৎসাহিত হয়েছিলাম কিন্তু পরে অনেক খোঁজ খবর করেও এই মন্তব্যের সারবত্তা উদ্ধার করতে পারি নি।
    হাউপটবানহফের সামনে উষ্ণ করমর্দন করে শুভযাত্রা জানালাম। আর কোনদিন দেখা হবে না তাঁর সঙ্গে কিন্তু সন্ধ্যাটি মনে রয়ে যাবে।





    পরিশিষ্ট:

    এক


    মাঝে আশিসদা


    আগের বছর (১৯৭৯) চেকোস্লোভাকিয়ার দুয়োর থেকে ফেরত পাঠানোর কারণ জেনে উঠতে না পেরে বিশেষ ধন্দে ছিলাম। আমার চেহারা দেখে হয়তো অবাঞ্ছিত বিদেশি মনে হতে পারে কিন্তু আশিসদা, শ্রাবণী বউদি, আলো বউদি? যেতে নাহি দিব বললে কেন? এই মাগ্যি গণ্ডার বাজারে ওদের তো দুটো ডয়েচে মার্কের আমদানি হতো?

    কারণটা জানলাম কয়েকমাস বাদে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্টে একটি রিসেপশানে আলাপ হলো মহেন্দ্রর সঙ্গে, ফ্রাঙ্কফুর্টের ভারতীয় কনসুলেটে কমার্শিয়াল আতাশে। প্রায় আমাদের বয়েসি, খুব শিগগির আলাপ বন্ধুত্বে পরিণত হয়। তিনি অত্যন্ত অতিথি বৎসল এবং সজ্জন। ফ্রাঙ্কফুর্ট ট্রেন স্টেশন এবং মাইনের মাঝামাঝি ভারতীয় কনসুলেটের বাড়ির তিন তলায় তাঁর আস্তানায় ডিউটি ফ্রি মদ্য পান তখন আমাদের একটি বিশেষ আকর্ষণ – বলতেন সরি, বোতল উপহার দিতে পারি না, সরকারি মানা। তবে জো পিনা হ্যায়, য়হাঁ পিও! জি ভরকে পিও।

    চেক অভিজ্ঞতার পরে প্রায় এক বছর কেটে গেছে। একদিন দারুর ঝোঁকে বর্ডার থেকে ফেরত পাঠানোর গল্পটা শোনালাম।

    মহেন্দ্র এই হৃদয় ও পকেট বিদারক কাহিনি মন দিয়ে শুনলেন।*

    কবে? দিনটা মনে আছে?

    সেটা কি আর ভোলা যায়? জুনের ১৬/১৭, ১৯৭৯। তিনি টেবিলে রাখা একটা ডায়েরির পাতা উলটে কি দেখলেন। তারপর হাসলেন।

    - আপনাদের যাত্রা কে ভঙ্গ করেছেন জানেন? আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই! আজ্ঞে হ্যাঁ! দেশাইজি এসেছিলেন ইউরোপ সফরে। পোল্যান্ড রাশিয়া জার্মানি ঘুরে প্রাগে গেছিলেন ১৬-১৮ জুন। আপনারা গুটিকয় ভারতীয় ঠিক সেই সময় ব্যাভেরিয়ান সীমান্ত দিয়ে চেকোস্লোভাকিয়া প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন! স্বচ্ছন্দে অনুমান করতে পারি আপনারা প্রাগে পৌঁছে দেশাইজিকে লক্ষ্য করে মলোটভ ককটেল না হোক, ডিম বা টমেটো ছুঁড়তে পারেন এই আশঙ্কায় আপনাদের গতি রুদ্ধ করা হয়! কমিউনিস্ট ইউরোপে এমনটা আকছার ঘটে!

    আমাদের খোদ ডিপ্লোম্যাটিক মিশনের লোক যখন বলছেন তাহলে সত্যি কথা। এ রাগ পুষে রাখা ছাড়া আর কি উপায়? স্বয়ং প্রধান মন্ত্রী যখন বাধা।

    সেদিন ভাবতে পারি নি দু বছর বাদে এক চেক ভদ্রলোকের অধীনে কাজ করব, চেক বা চেখিয়া যাবো। তিন দশক বাদে দাঁড়াব ব্রনো শহরের চত্বরে। প্রিয়তম বান্ধব অরটউইনের সূত্রে সুদেতেনল্যান্ডের সঙ্গে গভীরভাবে পরিচিত হবো। বাণিজ্যিক কারণে চেকের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হবে, কনফারেন্সে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেবো! কারলসব্রুইকের (চার্লস ব্রিজ) ওপরে দাঁড়িয়ে দেখতে পাবো মলদাউ (ভ্লাতাভা ) নদীর সাতটি সেতু। কাফকার বাড়ি যাবো!

    রাশিয়া গিয়েছি, সোভিয়েত ইউনিয়ন যাওয়া হয় নি। তেমনই চেকোস্লোভাকিয়া আমার অদেখা থেকে গিয়েছে। পনেরো বছর বাদে উত্তরে ড্রেসডেন থেকে এলবে নদী পেরিয়ে যে দেশে প্রবেশ করেছি, তার নাম চেখিয়া, চেক রিপাবলিক। স্লোভাকিয়া ততদিনে এক আলাদা দেশ।

    দুই

    মোহনবাগানের বিকল্প নেই জানি তবু স্থানীয় টিম হিসেবে আইনত্রাখত ফ্রাঙ্কফুর্টের প্রতি ভালোবাসা জন্মে যায়। সে বছর (১৯৭৯-৮০ ) আইনত্রাখত কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রনোকে ৪-১ গোলে হারায়, সেমি ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিককে নিজের মাঠে ৫-০ গোলে এবং ফাইনালে বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম ইউরোপিয়ান ট্রফি বিজয়ী হয়। এর পরের সাফল্য আসে চার দশক বাদে, ২০২২ সালে যখন তারা ইউরোপীয় লিগ জেতে।

    *পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি প্রথম খণ্ডে পূর্ব জার্মানি পর্বে আমাদের চেকোস্লোভাকিয়া অভিযানের ব্যর্থতার বিশদ গল্প বলেছি।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২০ জুলাই ২০২৪ | ৫৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Prativa Sarker | ২০ জুলাই ২০২৪ ১১:৪০535024
  • আপনার ভ্রমণ ভাগ্যকে ঈর্ষা করব, না লেখার মুন্সিয়ানাকে, বুঝে উঠতে পারি না।
  • Kishore Ghosal | ২০ জুলাই ২০২৪ ১৩:৫২535032
  • আপনি নিশ্চয়ই meticulously diary লিখতেন, তা না হলে এত দেশ, এত মানুষের নাম-ধাম-পরিচয় মনে রাখলেন কী করে? অন্যথায় যদি এই সমস্ত আপনি স্মৃতি থেকে লিখে থাকেন - তাহলে বলব - আপনি শ্রুতিধরতম ব্যক্তি।
     
    যে ভাবেই চিন্তা করি - বিরলতম গুণ নিঃসন্দেহে। এর সঙ্গে মিশেছে স্বচ্ছন্দ লিখনশৈলী। 
     
    অনবদ্য। 
     
      
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ জুলাই ২০২৪ ১৪:১৯535034
  • অশেষ ধন্যবাদ কিশোর । কোনোদিন কিছু লিখব বলে নয় , খানিকটা কাজের জন্য দিন তারিখ লেখা আছে অজস্র ডায়েরিতে। তার সঙ্গে স্মৃতি তাল দিচ্ছে বলেই লেখা সম্ভব হচ্ছে। যদিও মায়ের  মৃত্যুর পরে চল্লিশ বছর বাংলা লিখি নি। 
  • Rouhin Banerjee | ২০ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৫535067
  • চেকে ঢুকতে না পারার সে গল্প পড়েছি। তার আগে পূর্ব জার্মানির অটোবান ছেড়ে হুট করে গলিতে ঢুকে পড়ার গল্পও। সে অভিজ্ঞতা যেন আমার নিজেরই। কে বলবে আপনি চল্লিশ বছর বাংলা লেখেননি!!
  • R.K | 122.199.19.182 | ২১ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৪535104
  • অসাধারন লেখার হাত আপনার ,অক্ষয় হোক 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন