এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  অন্যান্য  নেট-ঠেক-কড়চা

  • বিবিধার্থ সংগ্রহ ওরফে যা ইচ্ছে বিষয়ে হিজিবিজি বকবক 

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | নেট-ঠেক-কড়চা | ২২ জুলাই ২০২৪ | ৩৮৫ বার পঠিত
  • - বই পড়তে ভালবাসো তো বুঝলাম, কিন্তু কেন? 

    - ভালোবাসি, ভালোবাসি? ভালোবাসার আবার কারণ হয় নাকি? 

    - হয় বৈকি, দেখ ঐ অহৈতুকী প্রেম ট্রেম বোঝাতে এসো না। দুনিয়ায় অহৈতুকী বলে কিছু হয় না, তোমার বুদ্ধির সীমানায় কারণ ধরা পড়ছে না বলেই নেই, এমন তো হয় না। চেতনে অচেতনে কারণ আছেই। 

    - এত বকো না। বই তো ছোটবেলা থেকেই পড়তে শিখেছি। বই পড়লে মনে বিকাশ ঘটে টটে কিসব বলত না ছোটবেলায়। সেই থেকেই তো অভ্যাস। 

    - আচ্ছা। এই তো কারণ এল। তাহলে মনের বিকাশ ই কারণ। 

    - হ্যাঁ মনে আছে সেই তোমার আর আমার ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরির থেকে খুঁজে খুঁজে সৈয়দ মুজতবা আলীর বই বার করা ? তার আগে অবধি ইউরোপ বলতে শুধু আলেকজান্ডার ডুমা থেকে নুট হ্যামসুন এর উপন্যাসের অনুবাদ, আবছা চেনা ইউরোপ কেমন এক ঝটকায় জ্যান্ত হয়ে উথল আলী সাহেবের লেখাতে? বই ছাড়া কে চেনাত এই অচেনাকে? 

    - এই তো আরও কারণ বেরোচ্ছে। আর সাহিত্য গুণ ভালবাস না? শব্দের মজা, জাদুর খেলা, এক লহমায় তোমার চেনা চারপাশটা কে ভাষার দাপটে বদলে তোমাকে এক অন্য সময়ে অন্য পরিবেশে অন্য পরিস্থিতির দর্শক বানিয়ে দেওয়া এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তৈরি করে দেওয়ার ক্ষমতার স্বাদ নিতে ভাল লাগে না? 

    - আহা সে আর বলতে! আসলে কি জানো এই দুনিয়ায় মানুষ  কতরকম করে কতকিছু ভাবছে আর। সেটাকে কত বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করছে এটাই কেমন আশ্চর্য না? 

    - নিশ্চয় অবাক করা ব্যাপার! কিন্তু একটা কথা বল এই প্রকাশ কি শুধু লিখে করা যায়? আর কোন ভাবে হয় না? একটা ভাল ছবি একটা সুর একটা নাচের সিকোয়েন্স, একটা ভাল ফটোগ্রাফি, একটা সিনেমা, একটা নাটক এগুলোও কি ফর্ম of expression নয়? 

    - নিশ্চয় ফর্ম of expression। কিন্তু একথা কেন? 

    - দাঁড়াও বলছি, তার আগে বল এগুলোর মধ্যে দিয়ে মানুষের ভাবনার জগৎ কে ছোঁয়া যায় না? 

    - হ্যাঁ নিশ্চয় যায়, যদি তুমি ওই আর্ট ফর্ম টা বুঝতে শেখ।  সবারই একটা নিজস্ব ব্যাকরণ থাকে । সেইটা একবার বুঝে নিলেই হল। 

     - সে তো একশবার সত্যি। ব্যাকরণ তো বুঝতেই হবে। ভাষার ব্যাকরণ আমরা স্কুলেই শিখি বলে বই পড়ার ক্ষেত্রে সেই জানাটা নিয়ে আর আলাদা করে ভাবতে হয় না, এই যা। কিন্তু তাহলে বল, সেদিন পেরেন্ট টিচার মিটিং থেকে ফিরে মেয়ের উপর এমন মোবাইল ব্যবহার নিয়ে খড়গহস্ত হয়ে উঠলে কেন ? ঝগড়া ঝাঁটি চেঁচামেচি  কান্না কাটি মন কষা কষি এসব কেন হল? 

    - করব না? ওদের প্রিন্সিপাল ম্যাম কি বললেন জানো? ছেলে মেয়ে রা নাকি ছুটির দিনে সারাদিন শুধু মোবাইল নিয়ে বসে থাকে, আর শুধু মোবাইলে স্ক্রলিং করে যায়, কিছুতে এনগেজ অবধি করে না, আর খালি একে অপরকে মেসেজ করে hey dude, hey bro, what are you doing? এর বেশি কিছু আলোচনা নেই, কোন কিছু ভাবনা চিন্তাও নেই। ক্লাস নাইন টেন ইলেভেনের স্টুডেন্ট রা একটা নাকি সেন্টেন্স ঠিক করে লিখতে পারে না, একটা বানিয়ে বানিয়ে কিছু লেখার ক্ষমতা নেই, খালি just time pass করাই একমাত্র গোল। এই সব এইটুকু টুকু বাচ্চাদের থেকে সহ্য করা যায়? তুমি একটাও কথা বলবে না, ওই মেয়ের হাতে আমি আর মোবাইল দেব না। 

    - আচ্ছা মেয়ের কথা থাক। কিন্তু তুমিই বলতে না যে ছোটবেলায় যখন তোমার ঠাকুমার হয়ে চিঠি লিখে দিতে , তখন ঠাকুমা কেমন জনে জনে সবার নাম ধরে সে কেমন আছে জানতে চাইতেন আর নিজেদের বাড়ির সকলের সুস্থ থাকার খবর দিতেন। গোটা চিঠিতে আর কিছু লেখার থাকত না বলে তুমি বোর হয়ে গিয়ে সেই চিঠিতে " আজ এখানে আকাশ ঝকঝকে, কিন্তু রোদের তেজ নেই। মিঠে আলোয় চারদিক ভরে আছে।" এইসব জুড়ে দিতে আর সবাই সেগুলো পাগলামি ভেবে হাসাহাসি করত। 

    - হ্যাঁ বলেছি তো। এতো আমারই অভিজ্ঞতা। বেশ কয়েকবার এই সব নিয়ে আমার লেগপুলিং হওয়ার পরে আমি চিঠি লিখে দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ওই "তোমাদের ওই কালী গরুটা কেমন দুধ দিল" গোছের আলোচনা ছাড়া ওরা আর কিছু নিয়ে কথা বলতে শেখেনি।    কিন্তু সেকথা এখন কেন? 

    - না বলছিলাম কি যে ভেবে দেখেছ যে যারা সারা দিন ধরে hey dude, hey bro করে যায় তাদের সঙ্গে তোমার ঠাকুমার কতটা মিল ? ওরাও বলার মত কথা পায় না, উনিও পেতেন না। কিম্বা  অন্য কোন কথা বললে যাকে বলা তারা সেটা বুঝবে কিনা ভেবে পায় না। তুমিই বলতে যে তোমার বাড়িতে বাবা বা মায়ের যে বন্ধুরা আসতেন তারা বই নাটক ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতেন। তুমি তাদের দেখে প্রথম শিখেছিলে যে খাওয়া পরা ঘুমোন আর রমণের বাইরেও একটা জীবন হয়। আমি damn sure যে তোমার ঠাকুমা কোনদিন এই exposure টা পান নি। সেটা যে কারণেই হোক। তোমার কি মনে হয়? 

    - হুম ঠিকই বলেছ তুমি। ঠাকুমার কোন exposure ই ছিল না। নাহলে ঠাকুমা বেশ intelligent ছিলেন। 

    - দ্যাখো শুধু exposure পেলেই হয় না, ইনসেনটিভ ও লাগে। ওই যে তোমাকে নিয়ে বাড়িতে ঠাট্টা হত, শুধু যদি তুমি সেটাই পেতে, তোমাদের বাড়িতে আসা পারিবারিক বন্ধুদের থেকে উৎসাহ না পেতে, বাবা মা ও যদি তোমার বই পড়া বা লেখা নিয়ে নিত্য অশান্তি করতেন,  তাহলে কি আর তুমিও বই এর জগতে আসতে? 

    - না সে তো বটেই। তাহলে হয়ত আমিও কদিন পরে শুধু কুশল জানিয়েই চিঠি লেখাটাকে ই নিয়ম বলে জানতাম।
     
    - ভেবে দেখ তো এই বাচ্চারা সেই exposure এবং ইনসেনটিভ দুই ই পাচ্ছে কিনা? আমরা শুধু মোবাইল কেড়ে নিয়েই কি বাবা মা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি? তার সঙ্গে কতটা মীনিংফুল কাজে তাকে এনগেজড করার চেষ্টা করেছি ছোটবেলা থেকে? নিজেরা example হিসেবে তার সামনে কতটা মিনিংফুল কাজ করেছি?  ছ ত্তি রিশ বার শোলে বা বাহান্ন বার দাদার কীর্তি দেখাটা কী খুব meaningful কাজ?  তোমার নিজের যদি সন্ধ্যেবেলা শাস বহু সিরিয়াল দেখাটাই একমাত্র কাজ হয়, তোমার মেয়ের থেকে তুমি কি আশা কর তাহলে ? 

    - দেখ মেয়ের হয়ে সাফাই গেয়ো না। সারাদিন মোবাইল মুখে বসে আছে । কোনমতে স্কুলের পড়া টুকু করছে, তারপরই মোবাইল। আর আমি সিরিয়াল দেখি না মোটে। কাজেই আমাকে ফালতু জ্ঞান দিও না। নিজে যে গোটা বছর ধরে রাত জেগে জেগে ফুটবল খেলা দেখ, অথচ জীবনে কখনো ভুলেও একটা বলে লাথি মারতে দেখিনা, তার বেলা? খুব meaningful কাজ তাই না? 

    - আহা সবারই একটা entertainment লাগে তো।  আর তুমি সিরিয়াল দেখ না জানি। ওটা তোমাকে খ্যাপানোর জন্য বললাম। কিন্তু তোমার মেয়ে যে মোবাইল মুখে বসে থাকে, সে কি করে সারাদিন মোবাইল নিয়ে সেটা খোঁজ নিয়েছ? 

     - হ্যাঁ জানব না কেন ? সে অবশ্য আমার কপাল ভাল যে মেয়ে কোনদিন ব্লু হোয়েল ও খেলতে যায়নি বা ঢিসুম ঢিসুম শুট আউট করা গেমস ও খেলতে যায়নি। কিন্তু তাই বলে সারাদিন ওই রাজ্যের ডকুমেন্টারি দেখবে? দিন নেই রাত নেই কোথায় পেঙ্গুইন রে কোথায় লাদাখের মানুষ কেমন করে জীবন কাটায় রে তাই দেখে যাবে? আর কি সিনেমা দেখার নেশা হয়েছে! একটা ডিরেক্টর এর নাম করার জো নেই, তার আগা পাশ তোলা চৌদ্দ গুষ্টি র ইতিহাস বলে দিচ্ছে! এত নেশা কিসের! 

    - ক্ষতি কি ? তোমার বই পড়ার নেশা নিয়েও ছোটবেলায় শুনেছ না , যে দিনরাত বই মুখে বসে থাকতে নেই? শুনেছিলে সে কথা ? বরং যেটা ভাব যে যা করছে তাতে মনের বিকাশ হচ্ছে কি হচ্ছে না ? শুধুই কি তিনটে তথ্য শিখছে নাকি সেগুলো অন্তঃস্থ করে নিজের মত করে ভাবতে শিখছে? এইটা না করতে শিখলে কিন্তু হাজার টা বই পড়েও লাভ নেই। আর  সেটা যদি ঠিক ঠিক হয় তাহলে ক্ষতি কি? তোমার না হয় আমাকে নিয়ে রাগ আমি লক্ষবার শোলে দেখেছি বলে, ও তো আর সেটাও করছে না। সব ভাল ভাল সিনেমাই তো দেখে। 

    - হুম হ্যাঁ সেটা নিয়ে কিছু বলার নেই,  তবু ভয় করে জান তো। যদি কোন ট্র্যাপ এ পড়ে, যদি ভুলভাল সাইটে ঘোরাফেরা শুরু করে, আজ খেলছে না কাল যদি কোন উল্টো পাল্টা গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ে! কত রকমের ই না কান্ড হয় শুনি! গেমস খেলতে গিয়ে বাবা মার একাউন্ট থেকে লোকে টাকা অবধি চুরি করছে, সেসব হলে কি হবে? 

    - দেখ প্রত্যেকে নিজের নিজের লিমিট স্থির করে নিজের মূল্যবোধের ভিত্তিতে। বাবা মা হিসেবে ওই মূল্যবোধ টুকুই গড়ার চেষ্টা করতে পারি আমরা। তার বেশি কিছু পারি কি ? সেই সঙ্গে হালকা  নজর রাখা কার সঙ্গে মিশছে, কী ধরণের কথা আলোচনা হচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে, সেই বুঝে গাইডেন্স দেওয়া এই টুকুই পারি আমরা। তারপরে কি করবে সেই সিদ্ধান্ত তো ওর ই।  বাকীটা তো ধুকপুকানি নিয়েই বাঁচতে হবে। মেয়েকে তো ছাড়তেই হবে, তার ওঠা বসা চলা ফেরা যদি কন্ট্রোল করতে চাও সে কি পারবে নাকি? এর পর কি বলবে নাকি যে আঠেরো বছরের পরে মেয়ে কাকে ভোট দেবে সেটাও তুমি ঠিক করে দেবে? 

    - ধ্যাত তা কেন! কিন্তু হঠাৎ রবিবারের ভরা বিকেলে এত বউ এর সঙ্গে কথা বলার শখ হল কেন? এমনিতে তো ছুটির দিন মানেই তুমি নিজেও মোবাইলে মুখ গুঁজে থাকো!  বুঝতেই পারছি, মেয়ে দূত হিসেবে পাঠিয়েছে। কিন্তু ঘুষ টা কি দিল? 

    - আরে ঘুষ কেন হবে! ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এর সবসক্রিপশন এর পাসওয়ার্ড টা বেটা বদলেছে আর এখন বলছে, নিজের মোবাইল না পেলে আর নতুন পাসওয়ার্ড টা আমাকে দেবে না। আজ ছুটির দিন , আজ না পড়তে পেলে হয় ? দাও দাও প্লিজ ওর মোবাইল ওকে ফেরত দাও।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • অন্যান্য | ২২ জুলাই ২০২৪ | ৩৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাপাঙ্গুল | ২২ জুলাই ২০২৪ ১৪:১৯535160
  • শিক্ষা স্বাস্থ্য বেঁচে থাকার মত এবার সংবিধানে নতুন সংশোধনী আনতে হবে। যথেচ্ছ মোবাইল কেড়ে না নেবার অধিকার। 
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২২ জুলাই ২০২৪ ১৬:৫৩535162
  • এই মোবাইল কেড়ে নেওয়া আমার একেবারে না-পসন্দ! smiley
     
    লেখা ভালো লেগেছে। এই রকম, সংলাপ দিয়ে পুরো লেখা, আমার খুব লিখতে ইচ্ছে করে। আজকে এই লেখা দেখে তাই আনন্দ হল খুব।
     
     
  • স্বাতী রায় | ২২ জুলাই ২০২৪ ১৮:৪০535167
  • নাহ সংশোধনী কিছু আনতে লাগবে না। এরকম কোন দাবী ও নেই। তবে parenting অনেক রকমের হয় । এখানে তারই একটা ছাপ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা না বোঝাতে পারলে সেটা লেখার ব্যর্থতা। তবে বিভিন্ন ধরণের parenting এর ফলে বিভিন্ন ধরণের বাচ্চা তৈরি হয়। তাতেও কিছু আসে যায় না। কারণ নেট রেজাল্টে সবাই নিজের বৃত্তে নিজের মতন সুখে কালাতিপাত করে। খালি মানসিকতার তফাৎ হয়। যে যেটা পছন্দ করেন আর কি! 
  • পাপাঙ্গুল | ২৩ জুলাই ২০২৪ ০০:১০535173
  • না না সেটা বুঝতে পেরেছি , লেখাটা ব্যর্থ নয়। সংশোধনীটা রসিকতা ছিল।
  • শিবাংশু | ২৩ জুলাই ২০২৪ ১১:৫১535184
  • ভালো লাগলো, 
     
    ব্যক্তিগত ভাবে সময়ের এই পর্ব যদিও পেরিয়ে এসেছি অনেক দিন। মেয়েরাও  দীর্ঘদিন ধরে চাকুরিজীবী ও সংসারী। কিন্তু মায়ের সঙ্গে এই সব আলাপের পালা বোধ হয় এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। ভালোবাসা ও উদ্বেগের জায়গা বদল ক্ষণে ক্ষণে ঘটে যায়। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৩ জুলাই ২০২৪ ১৯:১৮535193
  • খুব ভালো লাগল লেখাটা। সত্যিই মোবাইলের নেশাটা এক তরফা দেখলে হবে না, কন্টেক্সট এ ফেলে দেখতে হবে। জোরাজুরি নয়, বোঝা দরকার।
  • রঞ্জন | 2001:999:58c:43ab:ac00:237e:6abe:651c | ২৩ জুলাই ২০২৪ ২১:৪২535202
  • বেশ লেগেছে।
    চমৎকার কথা চালাচালি।
    আজকের প্রেক্ষিতে নতুন প্রজন্মকে বোঝার চেষ্টা।
  • | ২৩ জুলাই ২০২৪ ২২:৫০535209
  • এটা আগে ফেবুতে পড়েছি মনে হচ্ছে। এটা কি ওই ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব দেয়ার  কথাপ্রসঙ্গে মনে হল? 
     বিভিন্ন সামাজিক অবস্থানের মানুষের ক্ষেত্রে মোবাইলের ব্যবহার উপযোগীতা ভিন্ন ভিন্ন হবেই। 
  • . | ২৪ জুলাই ২০২৪ ০১:০৬535215
  • আমি আমার বাচ্চাকে মোবাইল কিনে দিইনি বলে, ওর ক্লাস টিচার আমাকে বলেছিলেন যে, ও একমাত্র এই ইস্কুলে যার মোবাইল ফোন নেই।
    নেগেটিভ সেন্সেই বলেছিলেন। তখনও স্মার্ট ফোন আসেনি বাজারে। ইস্কুল লাইফের একদম শেষে ওকে মোবাইল দেওয়া হয়েছিল। সে অনেক বছর আগের কথা। বাচ্চাকে কখনও গেম কনসোল কিনে দিই নি।
    এসবে কিছু আটকায় না। এখন সে দুরন্ত গেমার। নানানরকমের গেম কিনে কিনে খেলে। লেটেস্ট গেমিং এর যন্ত্রপাতি কিনে একটা আলাদা ঘরই বানিয়েছে গেমিং এর জন্য। নিজস্ব সার্ভার আছে। আমি ওসব ভালো জানি না। তবে যার যেদিকে ঝোঁক, সে সেদিকে যাবেই। নিজের উপার্জনেই নিজের শখ মেটাচ্ছে, বয়সও হয়েছে যথেষ্ট।
    আমার নিজস্ব ধারণা, গেমিং জিনিসটা মন্দ কিছু নয়, মোবাইলও নয়, ট্যাবও নয়।
    ঘরে যদি শান্তি থাকে, বাচ্চা বিগড়োনোর চান্স কম।
    ঘরে অশান্তি থাকলে বাচ্চারা পালানোর পথ খোঁজে গেমিং, ইন্টারনেটের নানান ফাঁদে।
    যদিও জিনিসটা এতটা বাইনারি নয়।
    বাচ্চা যদি বাপমায়ের সংসারের নানান ব্যাপারে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারে, সেটা ভাল। দুঃখ, আনন্দ, আর্থিক সংকট, সুসংবাদ, কোনও ব্যাপারে ডিসিশন নেওয়া, অসুখ বিসুখের খবর, এসব লুকোতে নেই। সে যেন বাস্তবের জমিতে পা রাখতে শেখে। ছদ্ম জীবনের মধ্যে রাখলে মুশকিল হতে পারে। এমন ঘটনা অসংখ্য, যেখানে বাচ্চা নিজের সংসারের আর্থিক সংকটের কথা জানেই না, একটুকু কৃচ্ছসাধন করতে শেখায় নি বাপমা। সে ধরেই নিয়েছে যে সে প্রিন্স বা প্রিন্সেস। পরবর্তীতে কিশোর বয়স থেকে বেয়াড়া ধরণের হয়ে যেতে পারে। স্বার্থপর হতে পারে। 
    তখন আবদারের জিনিস না পেলে উগ্র আচরণ করে। বাপমাকে ভয়ে রাখে, চাপে রাখে, মানসিক সমস্যাও দেখা যায়। এরকম প্রচুর ঘটনা আমি আমার পরিচিত ও আত্মীয়দের মধ্যে দেখেছি। বাপমা সন্তানের অত্যাচারে ভয়ে অত্যিষ্ঠ, কিন্তু এই কালাপাহাড় তারা নিজেই বানিয়েছে।
  • . | ২৪ জুলাই ২০২৪ ০১:৪৮535220
  • আমাদের কিশোর বয়সে (১০ বছর বয়স থেকে কৈশোর শুরু ধরে নিচ্ছি, ১৬ থেকে যৌবন ধরা হতো সেকালে, এখন কীরকম হিসেব জানি না) টেলিভিশন দেখলে পড়াশুনোর ক্ষতি হয় মনে করতেন অভিভাবকেরা। কমিকস/কার্টুনের বই পড়াও ক্ষতিকারক মনে করা হতো।
    পরের প্রজন্মের জন্য টিভিতে কার্টুন দেখার নেশা মন্দ চোখে দেখা হতো। তারপরে এলো ছোটো ছোটো গেমিং ডিভাইস নিন্টেন্ডো, প্লে স্টেশন, ইত্যাদি। এখনও সেসবের জটিল ও বর্ধিত ভার্শান চলছে। নতুন নতুন গেম যখন লঞ্চ করে দুনিয়াব্যাপি, তখন গেমারদের জগতে কে আগে কিনবে সেই নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
    কেন বলছি এতসব।
    সবটাই আমাদের দেখার অ্যাঙ্গল। ইন্টারনেট কিংবা কমিকস থেকে বাচ্চারা প্রচুর জিনিস শিখছে, যা বই পড়ে এত দ্রুত হয়তো শিখতে পারত না।
    যেমন, যেবার সেই ভয়াবহ ৎসুনামি হলো ২৬ ডিসেম্বরে। ২০০৪ বা ২০০৫ হবে। টিভিতে খবর দেখে আমরা বড়োরা বুঝিনি। আমার মেয়ে লাফিয়ে উঠল খবর দেখে। জাপানি কমিকস পড়ে সে জানে ৎসুনামি কী জিনিস। ঝপ করে আমাদের বুঝিয়ে দিল ব্যাপারটা। কত জিনিস যে বাচ্চার কাছ থেকে শিখেছি সেই সময়ে, হিসেব নেই।
  • স্বাতী রায় | ২৬ জুলাই ২০২৪ ০২:০৬535368
  • @দ হ্যাঁ ওই ট্যাব দেওয়ার প্রসঙ্গেই মনে পড়ল এই পুরোন লেখাটার কথা। 
  • Suvasri Roy | ২৬ জুলাই ২০২৪ ১৩:০৮535381
  • খুব ভালো লাগল। অন্য একটা প্রেক্ষিত থেকে লেখা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে প্রতিক্রিয়া দিন