এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সরকারহীন বাংলাদেশের তৃতীয় দিন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম রাত! 

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৯ আগস্ট ২০২৪ | ৪৭১ বার পঠিত
  • শেরপুর এখন বেশ স্বাভাবিক। এবং আমাদের স্বভাবসুলভ ভাবেই আমরা যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে হালকা করে ফেলি। জীবন এখানে এমন যে কঠিন জীবনকে সহজ করে না নিলে জীবন যাপনই অসম্ভব। তাই বনায় সব হারিয়ে বাধের উপরে জীবন শুরু করা মানুষকেও যদি জিজ্ঞাস করা যায় কী অবস্থা? তিনিও মজা করে বলেন অবস্থা তো ডাইলে চাইলে খিচুরি! কেরোসিন! এখানেও তেমনই হচ্ছে। মানুষ শহরে আসছে। রিকশাওয়ালারা টুরিস্ট স্পটে যেমন অটো ড্রাইভার বলে এত গুলা স্পট ঘুরিয়ে দেখাব, এত টাকা, এখানেও তাই চলছে। বড় বড় আগুন, ধ্বংসলীলা গুলো দেখান হবে রিকাশায়, এত টাকা দিতে হবে! আমি হাসব না কী করব বুঝতেছিলাম না! মানুষ রিকাশা দিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছে, এই যে এইটা হচ্ছে মেয়রের বাড়ি, এইটা অমুকের রেস্টুরেন্ট, চালের মিল, এমপির বাড়ি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়ি, আর স্পেশাল আইটেম শেরপুর সদর থানা! 

    আজকেও বেশ কয়েকজনের প্রত্যক্ষ দর্শীর সাথে কথা বললাম। একজন হচ্ছে নিউ মার্কেটের দোকানদার। ও বলছে ভাই আমি এখানেই দাঁড়ান ছিলাম। দোকান রেখে কই যামু? সব হিড়িক দিয়ে আসল। রেস্টুরেন্টে খাইল। আগুন দিল। একটা মার্কেটের মতো জায়গায় শুধুই একটা রেস্টুরেন্ট থাকে না। রেস্টুরেন্টের নিচেই অনেক দোকান। এরা চিৎকার কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিভানোর চেষ্টা করেছে, যতক্ষণে নিভেছে ততক্ষণে শেষ। পরেরদিন এই জায়গায়ই আবার আগুন, এবার এই রেস্টুরেন্টেরই চাইনিজ অংশে। এইটার উপরে একটা কাপড়ের দোকান ছিল, প্রসাধনীর দোকান ছিল। এখানের আগুন তীব্র হয়ে জ্বলে। যে দোকানদারের কথা বললাম ওর দোকান এইটার পাশেই, আরেকটা বিল্ডিঙে। ও বলল ভাই আমি দেখতেছি আগুন আসছে, সবাই আমাকে বলছে দোকান থেকে কাপড় গুলো বের করে ফেল। আমি ভাই না করলাম, কইলাম থাক, আল্লার হাতে ছাইড়া দিছি। আরেক দোকানদার ওকে ধমক দিছে, বলছে তুমি নামাবা না আমরাই ভেঙ্গে মাল নামাব? ও তবু রাজি হয় নাই। ও একটা চেয়ারে হা করে বসে ছিল। আল্লাই ওকে বাচাইছে, আগুন ওর দোকানের দিকে আসে নাই, উপরের দিকে চলে গেছে। 
    ও আরেকটা কথা বলল, ভাই একটা চেহারাও চিনি না! কই থেকে কাদেরকে নিয়ে আসছিল কে জানে। কেউ চিনে না এদের। আমি শুনছিলাম গ্রাম থেকে, চর থেকে নিয়া আসছিল সবাইকে। এরা কী বুঝে আসছিল জানি না। তবে এইটার সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোন সম্পর্ক ছিল না এইটা পরিষ্কার। 

    আমার এক হিন্দু বন্ধু শহরের মধ্যেই থাকে। ও বলল ভাই মাথা জাস্ট খালি হয়ে গেছিল। কী করমু আমি? কালো রাতটার আগেই ও ওর কাছে একটা চার/ পাঁচ সুতি লোহার রড ছিল, ওইটার একটা মাথা চোখা করে নিয়ে আসছিল। ওর বাসায় ঢুকতে চিপা একটা গলি দিয়ে ঢুকতে হয়। ও ওই গলি সোজা সারারাত বসে ছিল ওই হাতে বানানো অস্ত্র নিয়ে। ওর কথা হল এই দিক দিয়ে আসলে এই রড ধরে দৌড় দিব, যে কয়জন আছে, গেঁথে ফেলব, এরপরে মরলে মরব! আমি হতবাক হয়ে শুনলাম ওর অভিজ্ঞতা। 

    আরেকজন আরেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা শেয়ার করল আমার সাথে। একদম ভিন্ন ধর্মই গল্প। পারিবারিক গণ্ডগোল অনেকদিন ধরে। গণ্ডগোল শুরু হল। তিনি বিএনপির ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করলেন। নিজে আওয়ামীলীগ করেন কিন্তু তবুও করলেন এই কাজ। যোগাযোগ করে বললেন উনার নিজের ভাইয়ের কথা। বললেন ওর বাসা লুট করতে হবে! বিএনপির পুলাপান সুযোগ খুঁজছে, জায়গা খুঁজছে কই গেলে টাকা পাওয়া যাবে, ধান্দা ভালো হবে। ওরা লুফে নিলো। ইনি এবার ভাইকে ফোন দিয়ে বলল টাকা দাও, না হলে তোমার বাড়ি শেষ! বড় ভাই টাকা দিতে চাইলেন না। একটু পরেই বাড়ি শেষ। প্রথমে লুট হল, এরপরে আগুন দিয়ে দেওয়া হল। এই লোক একই কাজ করলেন আরও কয়েকজনের সাথে। বিএনপির ছেলেরা তাকে মানতে লাগল কারণ তিনি ভালো ধান্দার খবর দিতে পারছেন! 

    জেলখানা ভাঙ্গার গল্প শুনলাম এক বিএনপি কর্মীর কাছ থেকে। ওরা শহরের দখল নিয়েই সিদ্ধান্ত নেয় জেলখানা ভাঙবে। সবাই মিছিল করে চলে গেছে। আর্মি ছিল সেখানে। এত মানুষ দেখে ওরা নিজেরাই গুলি করে তালা ভেঙ্গে দেয়, সবাই মুক্ত! একজনকে চিনি যে ভিতরে ছিল। ও বলল জেলারই ওদের জানায় দিছিল যে সরকার পতন হয়ে গেছে! ওরা ভিতরে থালা গ্লাস নিয়ে ফুর্তি শুরু করে দেয়। তবে জেলখানা থেকে যে রাজনৈতিক আসামিই বের হয়েছে তেমন না। বিভিন্ন মামলার আসামি ছিল। এর মধ্যে মাদকের আসামি ছিল প্রায় দুইশ জন। এরা সবাই বাহিরে চলে আসছে। একজনকে দেখলাম ওর উকিলের সাথে সেই ঝগড়া। কী কাহিনী? ও টাকা দিছিল জামিনের জন্য, এখন টাকা ফেরত চায়, কারণ ও তো বাহিরে চলে আসছে! উকিল বুঝায় আরে আমি টাকা নিয়ে কাজ করছি না? তোমার শুনানি দুইদিন পরেই, জামিন পাবা তখন, আমি এখন কই থেকে টাকা দিমু? কিন্তু নেশাখোরকে বুঝায় কে? ওর কথা হল আমি তো বাহিরে, তাইলে তুমি টাকা ফেরত দিবা না? আরেক নেশাখোর ওর মায়ের সাথে ঝগড়া শুরু করছে, কারণ ওর মা-ই ওকে পুলিশের হাতে তুলে দিছিল। এখন জেল ভেঙ্গে এসে ঝগড়া, তুমি আমাকে জেলে দিছিলা? এমন মা তুমি! বিচিত্র জীবন চলছে! 

    শেরপুরের কথা শেষ করার আগে এবার আমার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। শহরেই ছিলাম আজকে রাতে। দশটা সাড়ে দশটা বাজে। আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি। ১৫/২০টা মোটরসাইকেল, ধীর গতিতে টহল দিয়ে আসছে দেখলাম। প্রতি মোটরসাইকেলে দুই তিনজন করে। আস্তে আস্তে যাচ্ছে। আমি বুঝতেছি না এরা কারা। সর্বশেষ মোটরসাইকেল থেকে একজন আমার দিকে তাকিয়ে সালাম দিল, স্লামাইকুম, আমরা জামাত শিবির ভাই, আমরা আছি! এখন হাসি আসছে আমার ওর কথা বলার ধরন দেখে। কিন্তু তখন আমি স্ট্যাচু হয়ে গেছিলাম। আমি ভাবছি এইটা কী হয়ে গেল! এমন কাণ্ড এই জীবনে কোনদিন ঘটে নাই। আমরা জামাত শিবির ভাই, আমরা আছি ভাই! 

    শেরপুরের বাহিরে দুইটা বড় ঘটনা ঘটে গেছে। একটা আমি কোনমতেই মানতে পারছি না। ময়মনসিংহ শহরে একটা প্রাচীন জমিদার বাড়ি ছিল। যেটা এখন টিচার ট্রেনিং ইনিস্টিউট। এখানে ভেনাসের একটা মর্মর মূর্তি ছিল। জমিদার বাড়ির নাম হচ্ছে শশী লজ। এখানে সৌখিন রাজা শশীকান্ত ইতালি থেকে ভেনাসের এই মূর্তিটা বানিয়ে আনেন। এমন বাংলাদেশে দ্বিতীয় আছে কি না জানি না। এক কথায় অপূর্ব একটা ভাস্কর্য। ইদানীং প্রায়ই দেখতাম এই মূর্তি নিয়ে আপত্তি। অর্ধ নগ্ন এই ভাস্কর্য অনেকের না কি সমস্যা করে। এবার প্রথম সুযোযেই এইটা সহ আরও যা ছিল সব ভাঙ্গা শেষ। ছাত্র আন্দোলনের মাঝে কে যে কী করিয়ে নিয়েছে তার কোন হিসাব আছে? শুধু শশী লজের ভেনাস না, ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের সামনে দেবী থেমিসের ভাস্কর্য বসানো হয়েছিল। পরে এইটা নিয়েও আন্দোলন হয়। আন্দোলনের পরে থেমিসকে সামনে থেকে পিছনে আনেক্স ভবনের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দোলনের সোনার ছেলেরা এইটাকেও ভেঙ্গে ফেলছে। ভাস্কর্যের সাথে কাদের বিরোধ? খুব অসাম্প্রদায়িক মুক্তচিন্তার চেতনার আন্দোলন হয়েছে শুনতে শুনতে কান পচে গেছে আমার। অথচ এগুলার কথা কেউ তেমন করে বলছেই না। 

    আরেকটা বড় ঘটনা হচ্ছে গতকাল ইসিবি চত্বরে ডাকাতি হয়েছে। এইটা কেন বড় খবর তা বুঝতে হবে ইসিবি চত্বর কোথায়। ইসিবি চত্বর হচ্ছে মিরপুর থেকে ঢাকা সেনানিবাসের দিকে যাওয়ার পথে একটা জায়গা, সেনানিবাসের অংশই বলা চলে। এইখানে ডাকাতি! এই সাহস কই থেকে কে পাইল? আর্মি খবর পেয়ে সাথে সাথেই এসেছে। তুমুল গোলাগুলি হয়েছে। আর্মি সরাসরি গুলি চালিয়েছে। নিজেদের ঘরের কাছে এমন অপ্রত্যাশিত কাণ্ড কঠোর হাতে দমনের চেষ্টা করেছে। এইখানের মূল প্রশ্নটা হচ্ছে এমন একটা জায়গায় ডাকাতির চিন্তা করার সাহস! 

    আন্দোলন নিয়ে নানা তত্ত্ব বাজারে চলছে আমি নিজেও কিছু আজগুবি চিন্তা করে লিখেছি। তখন বসে বসে যা মনে আসছে লিখছি। আমি জানি তর্ক করলে, আলোচনা করলে তা হয়ত আর মূল থাকবে না। তবুও লেখছি শুধু ওই সময়ের চিন্তাটা ধরে রাখার জন্যই। আজকে একজন অদ্ভুত এক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শোনাল। কিছু তথ্যও দিল যা আমার জানার উপায় ছিল না, তাই আমি জানি না। 
    আমি শুরু থেকে একে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন বলতে চাই নাই। আমি শুরুতেই বলছি যে ইস্যুকে টেনে নিয়ে বড় আন্দোলন বানানো হচ্ছে সেটা তো কোন ইস্যুই না। এমন একটা ইস্যুকে যে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা সন্দেহজনক। এরপরে যখন বিশাল আকার ধারণ করল তখন আমার মনে হয়েছে এইটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা। এখানেই ওই ছেলে আমাকে থামায় দিল। বলল গোয়েন্দারা আগে থেকেই জানত। শেখ হাসিনা গোয়েন্দা তথ্যকে পাত্তা দেয়নি। ছাত্র আন্দোলন করে তাকে ফালান সম্ভব না, এইটা তার বিশ্বাস ছিল। পরিচিত লাগে? ঠিক বাপের মতো, বাংলার মানুষ কোনদিন আমাকে মারবে না! ও যে গোয়েন্দা সংস্থার কথা বলল তারা একেবারে উঁচু পর্যায়েরই। এবং গত বছর যে রাশিয়া একটা ইঙ্গিত দিছিল আমেরিকা একটা চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার ফেলে দেওয়ার। এইটা এবারও রাশিয়া জানিয়েছিল। যথারীতি শেখ হাসিনা শুনেন নাই। নিজের উপরে এত আত্মবিশ্বাস সম্ভবত আর কোন নেতার এই মুহূর্তে নাই! 

    ও আমাকে আরও কিছু কংক্রিট তথ্য দিল। ও যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। সেখানের খোঁজ নিয়েছে ও। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিভিন্ন ক্লাব থাকে, ডিবেট ক্লাব, রক্ত দান ক্লাব এমন সব ক্লাব গুলাতে কোটি টাকা ঢুকেছে এই সময়ে! আন্দোলন থামাবেন কী দিয়ে! শেষের দিকে এক নার্সিং কলেজের ছাত্রীদের কথা বলল যারাই নেমেছে সবাই দৈনিক এক হাজার করে পেয়েছে! এই টাকা ভূতে দিয়েছে? ও ওর সোর্স অনুযায়ী যা জেনেছে তার হিসাবে বলল ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট ছিল এই আন্দোলন। এমন বিশাল আয়োজন যে এর তুলনায় বাংলাদেশ কিছুই না। আওয়ামীলীগ তো নাইই। যাই করা হত এই আন্দোলন সফল হতই। হয়েই বসে ছিল। প্যারিস থেকে ইউ ইয়র্ক হয়ে ইউনুস ( ইউ ইয়র্ক থেকেই আসছে? আমি জানি না এইটা!) ঢাকায় আসারও কারণ এইটাই। ইউএসএ একটা দানে এই অঞ্চলে নিজের আধিপত্য নিয়ে নিলো। এইটার সত্যতা বুঝা যাবে সামনে। এদিকে মার্কিনিদের ঘুরাঘুরি বেড়ে গেলেই জানা যাবে অনেক কিছু। কিংবা আমাদের উপ সাগরে যদি জাহাজ ভাসে আমেরিকান তাহলেও বুঝা যাবে কিছুটা হলেও। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তো সব সময় নিজের পছন্দ অনুযায়ী হলেই বিশ্বাস যোগ্য মনে হয়। পছন্দ না হলেই গুজব মনে হয়। তবে এই ক্ষেত্রে বড় প্রমাণ হবে এই সরকারের সাথে ইউএস প্রশাসনের ব্যবহারেই। যে অর্থনৈতিক মন্দায় আমরা আছি, এ থেকে উদ্ধার পেতে হলে বড় রকমের সাহায্য লাগবে আমাদের, এখনই লাগবে। 

    আজকে ইউনুস সাহেব শপথ নিয়েছেন। উপদেষ্টাদের মধ্যে দুইজন ছাত্রকেও রাখছেন! রাষ্ট্র চালাবে এবার তারা! আন্দোলন করে ফেলছে আর দেশ চালাতে পারবে না? দেশ চালান এ আর এমন কী! উপদেষ্টাদের সবার নাম নিয়ে এখনও ঘাটাঘাটি করতে পারি নাই। তবে  কিছু নাম তো পরিচিতই। সালেহ আহমেদ দারুণ একজন লোক। তিনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। সৈয়দা রেজওয়ানাও দারুণ একজন মহিলা। বিগ্রেডিয়ার সাখাওয়াত আগে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তিনিও ভালোই। সবাই মোটামুটি ভালোই। আমার আপত্তি হচ্ছে এখন পর্যন্ত আসিফ নজরুল আর আদিলুরকে নিয়ে। আসিফ নজরুল তো পরিচিত মুখ এক সময় জাতীয় বেইমান ছিলেন। এখন খুব ভদ্রলোক! আর আদিলুর! আহ! এমন মানুষ রাষ্ট্র চালানোর ভার নিচ্ছে! একটা ভুয়া তালিকা বানিয়েছিল ২০১৩ সালে হেফাজতের মতিঝিলে গণহত্যা(!) নিয়ে! যেখানে বলা হচ্ছে একটা লাশও পরে নাই, সেখানে ছাগলেরা প্রচার করে গেল হাজার হাজার কোরানের পাখিকে হত্যা করেছে সরকার! পরে এই হাজার হাজার লাশ আর খুঁজে পাওয়া গেল না। আদিলুরের এনজিও একটা লিস্ট দিল না, হাজার হাজার না, ৬৩ জন মারা গেছে। তখন লিস্ট নিয়ে গবেষণা শুরু হল। দেখা গেল এক নাম দুইবার করে চারজনের! এরপরে পাওয়া যেতে থাকল ভুয়া নাম! ইনি হচ্ছেন সেই আদিলুর রহমান খান! 
    ছাত্ররা একটা লিয়াজো কমিটি করেছে। এরা সরকারের কাজ কাম দেখবে, মন্তব্য করবে, সমন্বয় করবে! সম্ভবত এইটাকেই সামনে দল হিসেবে আনবে। যেদিন থেকে দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এরা সেদিন থেকে বিএনপি জামাতের বর্তমান প্রেম চলে যাবে, এরা কী জিনিস তা দেখে শিউরে উঠবে তখন। কচিকাঁচা বাচ্চারা স্বপ্ন ভেঙ্গে হতাশ হয়ে যেতে পারে। ইউনুস যত দেরি করবে তত বিএনপি অস্থির হতে থাকবে। ছাত্ররা দাবি জানিয়েছে ৩ থেকে ৬ বছর যেন সরকার থাকে। বিএনপি ক্ষমতার এত কাছে এসে এই সব চুদুরবুদুর সহ্য করবে বলে মনে হয় না। এই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই পাগল প্রায় বিএনপি জামাতকে দমন করা। দেশে এখন আওয়ামীলীগের নাম নিশানা নাই। কিছু সুবিধাবাদী আছে, কিন্তু তারা সমস্যা না। এই পাগল কুত্তা হয়ে যাওয়াদের কীভাবে ঠাণ্ডা করবেন তিনি তা হচ্ছে প্রথম চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই ছাত্রদের হাত দিয়ে এমন একটা দল তৈরি করা যা সামনের নির্বাচনে জিততে পারে এমন একটা দল তৈরি করা। এইটা অসম্ভব একটা কাজ। বিএনপিকে এখন নতুন একটা দল হারিয়ে দিবে এইটা সম্ভব না। হারাতে হলে যা করতে হবে তা কী ইউনুস সাহেব করবেন? 

     আমি বসে আছি তিনি বঙ্গবন্ধুর জাদুঘর নিয়ে কী করেন তার জন্য। একই সাথে সামনে ১৫ আগস্ট আসছে, সেদিনের আচারনেও বুঝা যাবে তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না ব্যক্তিগত রেষারেষি, হিংসা নিয়ে তিনিও চলেন!  ৮৪ বছরের প্রধান উপদেষ্টার সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমি মনে প্রাণে চাই তিনি সব চ্যালেঞ্জ জয় করুক। বর্তমান সময়ে তিনিই একমাত্র আশা ভরসা। সব যেন নষ্টদের অধিকারে না যায় এই জন্য এখন তিনিই একমাত্র অস্ত্র। দেখা যাক কোথাকার পানি কোথায় গড়ায়! 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৯ আগস্ট ২০২৪ | ৪৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • NRO | 165.124.84.35 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৩:৩৪536068
  • Pro-Russian international blogger রা আপনার সন্দেহটাই সমর্থন করছে। তাই যদি সত্যি হয় তবে ভয়ের কিছু নেই বরং ভালোই। 
  • :|: | 174.251.163.212 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৪:১৪536070
  • আজকের আবাপে দেখলুম হাসিনা ফিরে আসছেন। 
  • Guru | 2409:4060:2ec1:75a9:258e:b0f8:387f:cc45 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৭:২১536071
  • শরীফ, প্রথম আলো বা ইউনুস সাহেব যে আম্রিকি এজেন্ডার শরিক তাতে কোনো সন্দেহই নেই কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে হাসিনা আপা সব জেনেও সেই আম্রিকাতেই নিজের ফ্যামিলি কেন সেটল করালেন? যে আমার গদি ফেলছে আমি তার ঘরেই বসত করতে কেন যাবো? জয় সাহেব আম্রিকাতে বসে বসে এখন ভারতীয় চ্যানেলগুলোতে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন এই বলে যে CIA নয় ISI দায়ী সরকারের পতনের পিছনে। হাসিনা এখন নিজে আম্রিকাতে এসাইলাম নেবার চেষ্টা কেন করতাছেন? সবচেয়ে বড় কথা যে হাসিনা নির্বাচনে কেন এতোটা ভেজাল করলেন? জামাত শিবির বিএনপি যদি আম্রিকি এজেন্ডাতে খেলেও তার জন্য তো হাসিনা আপা নিজেই দায়ী। রাজনীতি থেকে বিরোধীদের শেষ করতে গেলে তারা তো নিজেদের টিকিয়ে রাখতেই বিদেশী শক্তির সঙ্গে জুটে যাবে। বঙ্গবন্ধু স্বয়ং কি ভারতের কোলে গিয়ে বসেন নি?
  • আমেরিকা | 185.241.208.202 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৭:৩৫536072
  • দেশে দেশে তালিবান প্রমোট করার বিদেশনীতি আরো ৯/১১ ডেকে আনবে।
  • | 146.196.33.11 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৮:০৩536074
  • ইউনুস তো এই আন্দোলনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বপছেন।
  • | 146.196.33.11 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৮:০৫536075
  • *বলছেন
  • Guru | 2409:4060:2ec1:75a9:258e:b0f8:387f:cc45 | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৫১536076
  • https://www.indianpunchline.com/sheikh-hasina-was-a-time-tested-friend/
    হাসিনার অপসারণের পিছনে CIA এর হাতের ব্যাপারটা অনেকেই বলছে। ইউনুস সাহেব সত্যি CIA পুরোনো কানেকশন আছে।
  • upal mukhopadhyay | ০৯ আগস্ট ২০২৪ ১০:২৬536081
  • আপনি এখনো বঙ্গবন্ধু বলছেন, সব্বোনাশ। বলুন হলেও হতে পারে বঙ্গবন্ধু (গৌরকিশোর ঘোষের - গৌড়ানন্দ কবির স্টাইলে। উনি bolechilen হলেও হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাগ্নে)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন