সাড়ে পাঁচশ পৃষ্ঠার বই যখন শেষ হয়ে আসছে, মহারাজা যখন সমানে অসুস্থ হয়ে পরছেন তখন আমাদেরকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছিল এই লোকটা কী জিনিস ছিল। আমি সিনেমার হিসাব করছিলাম তখন, শুধু মনে হচ্ছিল না, এই অসুস্থতায় তিনি যাবেন না, এখনো তো আগন্তুক করা বাকি, এর আগে যাবেন কী করে? অসুস্থ অবস্থায় শেষ সিনেমা আগন্তুক তৈরি করলেন, উৎপল দত্ত তার জীবনের অন্যতম সেরা অভিনয় করলেন। আর শেষ সিনেমায় এসেও সত্যজিৎ দেখালেন তিনি কত বড় পরিচালক, কী দুর্দান্ত কাজই না করে গেছেন। আগন্তুক সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর, শেষ শট নেওয়ার পর তিনি বলে উঠেন, "যাঃ, আমার যা কিছু বলার ছিল সব ফুরিয়ে গেল, আমার আর কিছুই বলার নেই।" এই কথা শোনার পর বিজয়া রায়ের যেমন লেগেছিল, আমাদেরও তেমনি যেন লাগে। আমরা জানি তাই সত্য হয়েছিল। কিংবা বলা চলে উনার সময় ফুরিয়ে গেছিল, সত্যজিতের মত মানুষ কী কোনদিন ফুরিয়ে যায়? ... ...
বাঙালি সমালোচকরা কেবল চুল কাটার ধান্দায় থাকেন ! এরকম আলোচনা লিখতে পারেন না কেন ? ... ...
১৯৪৪ এর জুলাই মাসে গান্ধি জিন্নার সঙ্গে আলোচনায় বসবার প্রস্তাব দেন। আলোচনার ভিত্তি হবে রাজাগোপালাচারি-সূত্র ... ...
'মৃত্যু এবং সুযোগ- মানে মৃত্যু এবং জীবন'। "সময়ের স্তব"-এ পড়ছিলাম উরসুলা লে-গ্যিন কে। বলছিলেন তিনি- মৃত্যু এবং সুযোগ কী-ভাবে খেলা করে- মহাশূন্য ও গ্যালাক্সির মধ্যে। মৃত্যুর চেতনার মধ্যে স্পেকট্যাকল কখনও হয়ে ওঠে জীবন হারানোর একটা রিলে রেস। মন্থর সে দৃশ্য-গতি। পৃথিবীর এই কালান্তক সময়ে সমবেত দেখে যাওয়া এই লঙ মার্চের স্পেক্ট্যাকল অতএব আমাদের জন্য অবশ্যম্ভাবী হয়ে থাকল। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার কথা বলছি। দৃশ্যগুলি ভারত দেশের ও বাংলাদেশের। যেখানে সারা রাজপথে, নগরের রাস্তায়, হাইওয়ে জুড়ে কেবলই দৃশ্যের জন্ম হচ্ছে। খুব দ্রুতই কিছু দৃশ্যের জন্ম হচ্ছে।মাত্র চার ঘন্টার নোটিশে ভারতে লকডাউন করা হল। মাইগ্র্যান্ট শ্রমিকরা যথেষ্ঠ সময়ই পেলেন না, তার আগেই কাজ খোয়ালেন, আস্তানা খোয়ালেন ও পরিবহন হীন দেশে, ভুখা পেটে মাইল, মাইল হাঁটতে বাধ্য হলেন। একই চিত্র বাংলাদেশেও। আগাম সতর্কতা, পরিকল্পনা ছাড়াই লকডাউনে হঠাৎ চালু হয়ে গেল কারখানা।একটা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান লকডাউন-কে কার্ফিউ বলে। এই মারী’র কালে রাস্তায় মরতে থাকা মানুষ-কে ভাত দিলনা- কোটি কোটি টাকার অস্ত্র কিনল। আদ্যোপান্ত মিলিটারি নয়, বলুন বেলাগম জ্ঙ্গী প্যাকেজ।একে টেররিজম বলে। আমরা সাক্ষী থাকছি। মন্থর দিনাবলী, স্লো ক্যামেরা, এপিক্যাল প্লট, দার্শনিকের কথামালা এবং খন্ড স্পেক্টাক্যাল এর । ... ...
হরিদাস পাল নামক পাতাটি কি?এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। ... ...
না না ঝগড়াঝাঁটির কোনো দরকার নেই। একটু মন দিয়ে কথাক'টি শুনে, ভদ্রভাবে যা বলার বলে দিলেই হলো। তা নয়, ধুমকেতুর মতো ছুটে এসে ভাঁটার মতো চোখ ঘুরিয়ে, 'নিজের হয়নি তো, তাই এতো বড় বড় কথা', এসব বলার দরকার নেই। আমারও নিজের হয়নি, আপনারও না। নিজের হলে তখন যুক্তিবুদ্ধি খাটে না, মানুষ হয় পাগল নয় পাথর হয়ে যায়। সে অবস্থা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগে। অনেকের আবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো খুনের নেশা চড়ে ; তবে কেউ কেউ পারে অপরাধীকে ক্ষমা করে দিতে। আমাদের দেশেই আছে এমন উদাহরণ। ... ...
কোম্পানির খাস-নিয়ম, যেখানেই আস্তানা গাড়বে সেখানেই যাজক আর স্কুলমাস্টার থাকতে হবে। তাই কোম্পানির কলকাতায় আছেন রেভারেন্ড বাটলার আর রেভারেন্ড কেপ। কিন্তু কলকাতায় তখন গির্জা কোথায়? একটা ঠেকনা-দেওয়া আস্তানায় প্রভু যীশুর ভজন-পূজন চলছে। সেও আবার আদতে পর্তুগীজদের গির্জা। মুর্গিহাটার আওয়ার লেডি অব দ্য রোজারি। কোম্পানির এলাকায় ফ্রেঞ্চ বা পর্তুগীজ পাদ্রীদের ঢোকা মানা। আর্মেনিয়ান চার্চ আছে একটা। কলকাতার প্রথম চার্চ। কিন্তু প্রটেস্টান্ট ইংরেজ সাহেবরা সেখানে যান কি করে? এর আগে লোকজনের থেকে চাঁদা তুলে একখানা গীর্জা বানানো হয়েছিল বটে, আজকের রাইটার্স বিল্ডিং এর জায়গাতেই। পর পর দুটো বিপর্যয়, ১৭৩৭ সালের বিধ্বংসী ঝড় আর বন্যা আর ১৭৫৬ য় সিরাজ-উদ-দৌলার আক্রমণে সে গির্জা আর নেই। ... ...
অনেক কিছু স্মৃতি উঠে আসছে – ২০০০ সাল অবধি তেমন ভাবে ‘কবিতা’ নিয়ে চর্চা বা ভাবনা হয়ে ওঠে নি। ওই গোঁফ ওঠার বয়সে যা ছড়া/কবিতা লেখে সবাই তেমন কিছু ছাড়া। আর সব প্রচলিত বিখ্যাত কবির কবিতা পড়া – সেই সময় ছিল সমকালীন জয় গোস্বামী টাইপের ইত্যাদি। এমন এক সময়ে পরিচয় হয়ে যায় এক অদ্ভুত ওয়েবসাইটের সাথে – মনে রাখতে হবে তখনো ইন্টারনেট এমন প্রচলিত হয়ে ওঠে নি, ব্রড ব্যান্ড ইত্যাদি তো দূরের কথা – অর্কূট, ফেসবুক, ইউটিউব কিছুই নেই। এমন ভাবে নিরলস কবিতার সাধনা করে যাওয়ার সাইট বিরল। দুই বাংলার অনেক এখনকার চেনা এবং জনপ্রিয় কবি এই সাইটে হাত পাকিয়েছিলেন এখানে। ভাবছি তেমন কারো কারো দের দিয়েই কিছু লেখা যাক টুকটাক। ... ...
সমকামিতাকে কিভাবে ডারউইনীয় বিবর্তনের কাঠামোয় রাখা যায়? সমকামিতা কি বিশুদ্ধ প্রেমেরই একটা রূপ যেখানে সন্তানধারণের তাগিদের থেকে বৃহত্তর কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে? ... ...
রূপ-রস-বর্ণ-গন্ধ সহ যে সর্বব্যাপী অডিওভিস্যুয়াল এফেক্ট তৈরী হয় তাঁর লেখার ছত্রে ছত্রে, যেভাবে সন্ধ্যে নামে, বর্ষা আসে, ফুলের গর্ভাধান হয়, মাটির গন্ধ, ঘামের গন্ধ মিশে যায় মুলারি বাইয়ের রূপ বর্ণনায়, পৃথিবীর কোন ক্যামেরার ক্ষমতা আছে তাকে তুলে ধরে? ... ...
".... মানবাধিকার কর্মীরা যখন বারবার পুলিশি নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কিংবা পুলিশকে নিয়ম মেনে চলতে বলেন; তখন যাঁরা এই ভেবে নিশ্চুপ থাকেন যে- পুলিশ যাদের ওপর অত্যাচার করেছে তারা সব ঘৃণ্য অপরাধী; তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করেছেন। কোনদিন হয়তো দেখলেন আপনি নিজেই এরকম কোনও ঘটনার সম্মুখীন। যে কোনও অবস্থায়; পুলিশি নির্যাতনের বিরোধিতা করুন। জেনে রাখবেন; আইনত সেটাই সঠিক।" ... ...
আপনি কতটা প্রিভিলেজ? ২১ দিনের লকডাউনে কতটা অসুবিধে হবে আপনার? মিলিয়ে নিন এই লেখায়। ... ...
কবি বীতশোক ভট্টাচার্যের প্রয়াণ-দিবস আজ। কিছু স্মৃতি ও কিছু কবিতা নিয়ে এই লেখা। ... ...
“কেন?” প্রশ্ন করা মানেই হল এর পেছনে কী উদ্দেশ্য আছে তা জানতে চাওয়া। এই মহাবিশ্বের চলন গমনের পেছনে কোনও উদ্দেশ্য আছে ভাবার অন্তর্নিহিত অর্থ এই যে এই সৃষ্টি কারওর পরিকল্পনাপ্রসূত, অর্থাৎ এই সৃষ্টি পরিকল্পনা করার কেউ আছে। এই ভাবনা বিজ্ঞানের প্রমাণ তথা গণ্ডীর বাইরে। কোনও সৃষ্টিকর্তা (বা কর্ত্রী) আছেন কি নেই, এই প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানের আওতায় পড়ে না। বিজ্ঞানের আওতায় পড়ে “কীভাবে” প্রশ্নের উত্তর। শোওয়া থেকে হঠাৎ উঠলে যে অনেক সময় মাথা ঘোরে, তা কীভাবে হয়, তার পেছনে কী কী শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া আছে, তার বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া বিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। কিন্তু সেই বিবরণের পুরোটাই “হাউ”-এর উত্তর, “হোয়াই”-এর নয়। ... ...
করোনা ভাইরাস কী? আমাদের জীবনে এর প্রভাব কেমন? সরকার যা পদক্ষেপ নিচ্ছে তা কি মানা উচিত? ভবিষ্যত সমাজে এর প্রভাব কতখানি সুদূরপ্রসারী ... ...
আধুনিক তথ্যবিজ্ঞানে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের আবিষ্কৃত ফর্মুলা কিভাবে কাজে লাগছে, কিভাবে মেশিন লার্নিংয়ের একটি জরুরি ভিত্তিপ্রস্তর আসলে এই বাঙালী বিজ্ঞানীর অবদান, যা আমাদের দৈনন্দিন অনলাইন জীবনকে নিয়ত প্রভাবিত করছে, এই দিকটি তুলে ধরার জন্যই এই প্রবন্ধ। ... ...
পরশু, প্রায় কেউ জানতেন না, অবরোধ কেন, কী নিয়ে, কারা করছে। পরশু রাত থেকে প্রায় গোটা দেশ জানে এগুলো। কেন জানে, বলুন তো? কারণ সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়েছে। তারা টের পেয়েছে যে এ বড় সুখের সময় নয়। আচ্ছে দিন আসলে গল্প। ... ...
করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডি টেস্ট RT-PCR টেস্টের সম্পূরক। করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার সরাসরি পদ্ধতি হল Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction (RT-PCR) । এই পরীক্ষাটি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের কয়েকটি অংশকে চিহ্নিত করে সেটির উপস্থিতি নির্দিষ্ট করে। পদ্ধতিটি সহজ নয় এবং সেটিকে ব্যাপকহারে ব্যবহার করতে হলে দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। সেই তুলনায় অ্যান্টিবডি টেস্টটি সহজ। তবে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট তৈরি করতে হলেও উন্নত গবেষণাগারের প্রয়োজন। অন্যদিকে অ্যান্টিবডি টেস্টের ফলাফল সরাসরি সংক্রমণের ব্যাপারে উত্তর নাও দিতে পারে, বরং সংক্রমণ-উত্তর জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে পারে। ... ...
মৃত্যুর তিন দিন আগে, কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে এক রচনা, যাঁকে তাঁর শেষ উইল বলা হয়, যেখানে তিনি কংগ্রেসের বিলুপ্তি এবং পঞ্চায়েত ভিত্তিক শাসনকাঠামোর পক্ষে সওয়াল করেন, সেখানে তিনি দেশের সাত লক্ষ গ্রামের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বরাট আর্থিক বিকাশের কথা বলছেন। নির্মল বসু এই রচনার ফুটনোটে লেখেন- সাত লক্ষ গ্রাম ভারতে নেই, আছে ভারত পাকিস্তান মিলিয়ে। অর্থাৎ, গান্ধিজি দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় পাকিস্তানকেও বাদ দিচ্ছেন না। ... ...