জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২ আড্ডার অকুস্থলেই ঘটেছিল আর একটা মজার ঘটনা। তখন ফুটবলে এখনকার মত টাকার জোয়ার তেমনভাবে আসেনি। কালিদাস বিভিন্ন সময়ে অনেক খেপুড়ে খেলোয়াড়কে এনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলাত। সেদিন ছিল রবিবার। চায়ের দোকানে তখন ভরা আসর। হঠাৎ দেখা গেল এক যুবক দোকানের দিকে এগিয়ে আসছে। পরনে বিচিত্র এক প্যান্ট, যা হাঁটুর বিঘৎ খানেক নিচে গিয়ে থেমে গেছে। অনেকটা এখনকার থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টের মত। বয়স তিরিশের ... ...
গত শতকের সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়। দুঃস্বপ্নের বেশ কয়েকটা বছর পার হবার পর হানাহানি স্তিমিত হয়ে গেছে। বারুদের গন্ধ নিত্যদিন বাতাসকে আর ভারি করে না। সন্ধের পরেও তখন বাড়ির জানলাগুলো খোলা থাকে, অজানা আতঙ্কে আর বন্ধ করে দিতে হয় না। রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও সাধারণ মানুষের জীবন অনেকটাই চেনা পথে চলে এসেছে। স্কুল-কলেজ, ডেলি প্যাসেঞ্জারি, দোকান, বাজার, সামাজিক কাজকর্ম, দৈনন্দিন যাপনের সব কিছুই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কয়েক বছরে মনের কোনে জমে ওঠা ভয় আর সন্দেহকে দূরে সরিয়ে চায়ের দোকান আর রকের আড্ডাগুলোও ফিরে পেয়েছে তাদের পুরনো ছন্দ।সে সময় রহড়া বাজারের কাছে বুড়োদার চায়ের দোকান আর পাশেই হাঁড়ি পুকুর ঘাটে ... ...
এভাবে বহুদূর চলে যাওয়া যায়,সীমানাগুলো সব পেরিয়ে,দিগন্তের কাছাকাছি।কেন যাব জানি না,এতদূর যে এসেছি,এটাও তো হিসেব না করেই এসেছি,ভালো লেগেছে বলে,কিংবা আমার চারিদিক,(যেটা আছে আর কি!)ভালো লাগেনি বলে।এক কথায় পালিয়ে এসেছি আমি।তবে আমার খোঁজ পড়েনি এজন্য।পড়ে না।কারণ পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে ওরা জানে,আমি আবার ফিরে যাব।যদি এখন উধাও হয়ে যাওয়া যায়!খুব একটা খারাপ হবে না কিন্তু!কিন্তু আমার কোমরে অদৃশ্য শিকলে বাঁধা আছে -মায়া, মোহ, ভালোবাসা, দায়িত্ব, কর্তব্য.....এসব লোহা।চুম্বক আছে একখানা,আমার গন্ডির মধ্যে,বিভিন্ন জায়গায়,প্রয়োজনমতো চালু করে,তড়িৎচুম্বক তো!আমি ফিরতি পথ ধরি,কেউ সুইচ দিয়েছে চুম্বকে। ... ...
কন্যাশ্রী, লক্ষীর ভাণ্ডার, বার্ধক্য ভাতা ইত্যাদি স্কিমগুলোর বিরুদ্ধে আমরা কেন বলব? উন্নয়নের সুযোগ বেশির ভাগ লোকের কাছে যায় না। সেসব বড্ডজোর মধ্যবিত্ত অবধি পৌঁছয়। পেছিয়ে পড়া মানুষের পক্ষে কর্পোরেট উন্নয়ন থেকে চুঁইয়ে পড়া চাকরি বাকরিতে ঢোকা সম্ভব নয়। তাদের, সমাজের পেছিয়ে পড়া অংশের জন্য সরাসরি টাকা পৌঁছানোর সামাজিক সুরক্ষার স্কিমগুলো বিরাট ফলদায়ক। এগুলো তাদের ... ...
হাসতে মানা নেই ————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ————— আকাশ যে আজ বেজায় খুশী মলিন মেঘে ঢাকবেনা তাই তো হাসে অট্টহাসি বৃষ্টি হয়ে কাঁদবে না। প্রখর তাপে তপ্ত ধরা মাটি ফেটে চৌচির চলো সবাই খুঁজবে চলো কোথায় নদী ? নদীর
যখন তিনি শিশু ছিলেন, আমাদের বাড়িটা ছাড়া কিছু জানতেন না। দুই পিসির কাছেই খুব আদর পেয়েছেন তবে মামনপিসিকে বেশি দিন কাছে পাননি। আজকে তাঁর শৈশবের কয়েকটা ঘটনা বলব। সোহমের তখন বছর ছয়েক বয়স। তাঁর ঠাকুমার স্ট্রোক হওয়ার পর ডাক্তারের নির্দেশে সাতসকালে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে শিশুটির বাবা মা ঠাকুমাকে নিয়ে শ্যামবাজারে একটা নার্সিং হোমে ছুটেছিলেন। সোহমকে আমাদের বাড়ি রেখে যাওয়া হয়েছিল। ক্রমশ ভেঙে যাওয়া ঘুমের মধ্যে থেকে ব্যাপারটা আমি একটু একটু টের পাচ্ছিলাম তবে ঘুম থেকে তখনো উঠিনি। তারপরে সোহমের প্রচন্ড কান্নায় বিছানা ছাড়তে বাধ্য হ'লাম। কী ব্যাপার, এত কান্না কিসের? জানা গেল, আমাদের বাড়িতে আসার পরই তাঁর একটা দাঁত পড়ে গিয়েছিল। দাঁতটা তিনি ... ...
“Better to live one day as a tiger Than a thousand years as a sheep ”............................................................পাঁচ মাস কুকুরের মত এক দুর্গ থেকে আরেক দুর্গে পালিয়ে বেড়ালেন মারাঠা হিন্দু কুলতিলক দ্বিতীয় বাজীরাও। ত্রয়োদশ পেশোয়া এই আশায় ছিলেন যে সিন্ধিয়া অথবা হোলকার কিংবা ভোঁসলে রাজারা তাঁকে সাহায্য করতে আসবেন। কিন্তু কেউ এলোনা! ১৮০২ সালেই ... ...
রাত্রি একটু ভেবে নিয়ে বলল, ' তোদের বাড়িতে একদিন যেতে হবে রে সঞ্চারী। তোর দাদাভাইয়ের রিঅ্যাকশানটা ডায়রেক্টলি জেনে নিতে চাই। আমাদের জন্য প্রতিটি ফিডব্যাকই ইমপর্ট্যান্ট। নিখিল স্যার সেরকমই বলেন ... ' ----- ' ও ব্বাবা ... তোরা তো একেবারে ডেডিকেটেড সোলজার মনে হচ্ছে। দেখিস ... একটু ভেবেচিন্তে পা ফেলিস। জালে একবার জড়িয়ে গেলে কিন্তু আর বেরোতে পারবি না। আনবায়াসড জাজমেন্ট দিয়ে বিচার করা ... ...
এই কদিন যখনই হাত চলে যায় পেছনদিকে,প্যান্টের ভেতর, আমি পরিষ্কার একটা বাড়তি প্রবর্ধকের অস্তিত্ব বুঝতে পারি। প্রথম যেদিন আবিষ্কার করি,বেশ চমকে উঠেছিলাম। অনুভূতির যে ধারা বয়ে গিয়েছিল,তাতে ভয়ের অনুপাত ছিল সবচেয়ে বেশি। তারপর থেকে ধীরে ধীরে
- " আমাদের গুলোর হবেনি কিছু ..." লোকাল গাড়িতে চারজন মাস্টার গাদাগাদি করে স্কুলের পথে। একজনের নতুন রেডমি ফোন। ফাইভ জি। আনন্দ তে রেজাল্ট এর আনন্দের খবর মুহূর্তে মুহূর্তে। কোচবিহারের চারজন, বোলপুরের দু জন, পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনজন এখনো পর্যন্ত। পাশের হার নাকি আই পি এল এর স্কোর বোঝা দায়। তার মাঝেই ফুট কাটলো এক সহযাত্রী হেসে - " আপনাদের স্কুলে কিছু হয়নি " ? চার মাস্টারের মুখ চাওয়া ... ...
মুছে দিলাম লেখা
আজ থেকে বছর বারো আগে পার্ক স্ট্রিটে একটি ধর্ষণের অভিযোগ আসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্ত শেষ হবার আগেই বলেছিলেন 'সাজানো ঘটনা'। দলমত নির্বিশেষে বহু মানুষ সেই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তার মধ্যে এই অধমও ছিল। তারপর অবশ্য তদন্ত হয়, ধর্ষণ প্রমাণিত হয়, দোষীরা শাস্তি পায়।আজ থেকে ঘন্টা বারো আগে, রাজভবনে একটি শ্লীলতাহানির অভিযোগ আসে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতারাও অভিযোগ সরাসরি ... ...
অক্কা পাওয়া বাক্যবন্ধের সরল অর্থ মারা যাওয়া। সংসদ, ঢাকা বাংলা একাডেমি, জ্ঞানেন্দ্রমোহন ও হরিচরণ থেকে অক্কা ও অক্কা পাওয়া পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অভিধানকারেরা অক্কা শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করেই অক্কা পাওয়া বাগধারার উৎস খোঁজার চেষ্টা করেছেন। ফার্সি আকা মানে প্রভু, মালিক বা ঈশ্বর। সুতরাং ঈশ্বরপ্রাপ্তি অনুষঙ্গে মারা যাওয়া অর্থে অক্কা পাওয়া বাক্যবন্ধের জন্ম। আবার, তামিলে আক্কা মানে ভগিনী বা মাতা। লাতিন acca. মানেও মাতা। ফলে হরিচরণ ... ...
"স্যার আপনি কি বাতিল?" ক্লাস এইটের কোন এক ছাত্রের কাতর জিজ্ঞাসা তার প্রিয় মাষ্টারমশাইকে। মাস্টারমশাই এর উত্তর যাই হোক না কেন, এক বিরাট মানসিক ক্ষতি হয়ে গেল মনে হয় কচিকাঁচাদের। ক্ষতি হয়ে গেল সেই সব নিষ্কলুষ মনন এর, যাঁরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতো স্যার/ম্যাডাম মিথ্যে বলেন না বা স্যার/ম্যাডামরা সব জানেন। যাঁরা ঘটা করে সেই জুলাই মাস থেকে প্রস্তুতি নিত মহান শিক্ষক দিবসের, যাঁরা বড় হয়ে স্বপ্ন দেখতো শিক্ষক ... ...
\বাংলার শেষ জনপ্রিয় আবেগময় মহাকূলপ্রদীপ সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে এত কিছু লেখা হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে যে, তার মধ্যে আমার কিছু বলা মানায় না। আমি সিনেমা বিশেষজ্ঞা নই। সত্যজিৎ রায়ের কিছু সিনেমা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি, কিছু সিনেমা দু-একবার দেখেছে, বেশ কিছু সিনেমা দেখা বাকি আছে। পথের পাঁচালী ফ্রান্সে Best Human Document Award না পেলে লোকটার কি দুর্গতি হত বলা মুশকিল। অস্কার পুরস্কারটি তাকে সর্বকালের জাতে ... ...
চাকরীতে অবসরের পর রতনবাবুর সম্প্রতি ফিরলেন কলকাতায় একটি নতুন জায়গায়। চাকরি জীবন তার বেশি সময় প্রবাসেই অতিবাহিত হয়েছে। হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে মাছ সবজি কিনতে বেরিয়েছেন। রতনবাবু তার বাল্য বন্ধু বিষন্নবাবুকে দেখতে পেয়ে যারপরনাই খুশি। কিন্তু বিষন্নবাবু বড় বিষন্ন বদনে বাজারে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? রতনবাবু একটু এগিয়ে গিয়ে আস্তে ... ...
প্রত্যেক মানুষের একটি চলার শব্দ থাকে আর থাকে শরীরের গন্ধ চিন্তা ছাপায় প্রতি পদক্ষেপ হাসিতে মুখচন্দ্র। প্রতি ভাবনায় থাকে কত শত রঙ ভাবনায় থাকে
আমি আগে কোনোদিন পাকা রাস্তা দেখিনি, আজ যখন গ্রাম ছেড়ে এলাম, বর্ষার কাদায় আমার পা দুখানা হাঁটু পর্যন্ত বুট দিয়ে ঢাকা, রাস্তার ধারে লয়ানে পা ধুয়ে যখন রাস্তায় উঠলাম- মনে যে কি বিশাল স্বস্তি পেলাম সে বলে বোঝানোর নয়। আমি বুঝতে পারলাম আমি কত
আমার মৃত্যুর পরোয়ানা জারি হয়ে যাওয়ার পরেও, যখন আমি ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম প্রকাশ্য রাজপথে, ওদের কয়েকজন আমায় চিনতে পেরেছিল, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারেনি। কি করে এমন দুর্বল জাতির এত বড়ো বুকের পাটা হতে পারে! কিন্তু ওরা আমাদের ইতিহাস জানে না। ওরা তো ক্লাস ফাঁকি
কতকগুলো মজার ঘটনা বলি আজ। প্রত্যেকটা ঘটনাই প্রাত্যহিক জীবন থেকে পাওয়া। কিছু আমার দেখা, কিছু শোনা। আমার মামাতো দিদি পিউদের স্কুলে একটি মেয়ে পড়ত। তাকে বকলেই সে টিচারদের কোলে উঠে বসত। এবারের মজার ঘটনা সোহম সরকারের শৈশবের। তাকে আমি মাঝেমাঝে চকোলেট