ঢেউ --------------- পীযূষ কান্তি সরকার জীবনের আশা থমকে দাঁড়ালে সরিষা-দানায় বিপুলায়তন ঢেউ এসে যদি ভাঙে হতাশা-প্রাচীর হিসাবনিকাশের খাতা খোলা -- তখন কী আর মানায় !
অভয় পালের মেয়ে চৈতালির মামলার ব্যাপারে অলোকেন্দু মিত্রের চিঠির জবাব এখনও আসে নি ও তরফ থেকে। এর মধ্যে সাগর একদিন দেখা করেছিল অলোকেন্দুবাবুর সঙ্গে। বলল, 'বটতলা থানায় এফ আই আর জমা করে দিয়েছি ... ' ---- ' রিসিভড কপি নিয়েছেন তো ? ' ---- ' হ্যাঁ নিয়েছি ... ' ----- ' আচ্ছা ঠিক আছে। আপনাদের আর কিছু করার দরকার নেই ... ...
তীব্র গরম এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য ক্ষেত্রসমীক্ষাতে যেতে পারছিলাম না। এই সপ্তাহে আবার বেরোলাম। আসলে ডুয়ার্সের প্রকৃতি নিত্যনতুন সাজে পর্যটকদের জন্য প্রতীক্ষারত। পর্যটক, প্রকৃতিপ্রেমিক, বন্যপ্রাণী এবং পক্ষী বিশারদেরা ডুয়ার্সের বনে জঙ্গলে, সবুজ তেপান্তরে, নদী নির্ঝরে, চা বাগিচার সবুজ গালিচায় বেড়াতে আসেন। শুধুমাত্র অরণ্য বা পাহাড়ের হাতছানিতে নয়, পুরনো মন্দির, মসজিদ এবং মাজারের টানেও ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ১৫ কল্পনা শোভাবাজারের বাড়িতে আর ফেরেনি। এত সব কিছু জানার পর ওখানে আর ফেরা সম্ভব নয়। নিজেদের বাগবাজারের বাড়িতে যেতেও মন চাইছিল না। বাবার কার্যকলাপ সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। বাবা কেবল তার ভালবাসাকে চূর্ণ করেনি, চূর্ণ করে দিয়েছে তার জীবনটাকেও। মন সায় না দিলেও কিছুটা নিরুপায় হয়েই ফিরে এসেছিল মা বাবার আশ্রয়ে। কড়া নাড়তে হয়নি, বাইরের দরজা ভেজান ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব - ১৪ শ্বশুর বাড়ি থেকে কল্পনাদের বাড়ি মিনিট পনেরর হাঁটা পথ। কাছে হওয়ায় কল্পনা মাঝে মাঝেই বাগবাজারে বাপের বাড়ি যেত। কখনো দিনের দিনেই ফিরে আসত কখনো বা এক আধ দিন থেকে আসত। একাই যেত, সাথে জয়ন্ত কমই গেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন কখনো এ নিয়ে আপত্তি করেনি। বিয়ের মাস খানেক পর একবার কল্পনা বাপের বাড়িতে এসে দিন দুয়েক ছিল। তৃতীয় দিন সকাল সকাল শ্বশুরবাড়ি ফিরে এল। শ্বশুর আর দেওর তখন দোকানে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব - ১৩ আহেলির মায়ের মৃত্যুর আগে পরে কল্পনা ওদের বাড়িতে এসে বাড়ির মেয়ের মত অনেক সার্ভিস দিয়েছে। সেই সুবাদে আড়ষ্টতা অনেকটাই খসে গিয়ে নন্দর সাথে কল্পনার সম্পর্ক বেশ ঝরঝরে হয়ে গিয়েছিল। তবু নিজে প্রপোজ করা সাহসে কুলোয়নি। বোনকে মনের কথা জানিয়েছিল। আহেলি তার বান্ধবীকে জানিয়েছিল দাদার মনের কথা। কল্পনার কাছ থেকে ইতিবাচক উত্তর এসেছিল। এলাকার পর্যবেক্ষকদের ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ১২ দাদুর সাথে বেড়াতে যাওয়া আর মামার কাছে গল্প শোনা ছাড়াও বাগবাজারের বাড়িতে নয়নের আর একটা ভাল লাগার ব্যাপার ছিল, সেটি হল ফেরিওয়ালা। ফেরিওয়ালার হাঁক যে রহড়াতে শুনতে পেত না এমনটা নয়, কিন্তু সেখানে এত বৈচিত্র নেই। বেলা একটু বাড়ার সাথে সাথেই এদের রকমারি ডাক শুনতে পাওয়া যেত। শিলনোড়া এখন খুব কম বাড়িতেই ব্যবহার করা হয়। মিক্সার গ্রাইন্ডারকে কুর্নিশ করে এরা ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ১১ বাড়ির রেডিওটার ওপর নন্দার ভীষণ আকর্ষণ ছিল। ওতে হাত দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কাছেপিঠে কেউ না থাকলেই ডিঙি মেরে ওর নবগুলো বাঁয়ে ডাইনে ঘুরিয়ে দিত। দু একবার ধরা পড়ে মার কাছে বকুনিও খেয়েছে, তবু নন্দা সুযোগ পেলেই ওর চেষ্টা চালিয়ে গেছে। সেদিন নন্দা স্কুলে যায়নি। অবনি অফিসে বেরিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার পুজোয় অন্যদিনের থেকে একটু বেশি সময় লাগে তাই শান্তি তখনো ঠাকুরঘরে ... ...
উচ্চ বর্ণের লোকেরা নিচের তলার মানুষদের আটকানোর জন্য অনেক কায়দা করে এটা সুপ্রিম কোর্ট ও মনে করে। তাই এডমিশন টেস্টে ওরা গোল্লা পেলেও নিতে হয়। আমি একটা বিশ্ব বিদ্যালয়ের একটি বিভাগের প্রধান থাকার সময় জেনেছিলাম। MPhil এডমিশন টেস্টে উচ্চ বর্ণ নিম্ন বর্ণ সবাই ফেল করেছিল একবার। তখন শুধু SC ST দের নিতে হয়েছিল। তবে ইন্টারভিউ বা ভাইভা ... ...
নাটক: ভুলে যাই কেমনে ! ( স্কুল ফেরতা একদল ছাত্র। পিঠে ব্যাগ।পরনে বাহারি পোশাক। নিজেদের মধ্যে গল্প করতে করতে পথ চলছে তারা। খোলা মাঠের মাঝখান দিয়ে এক চিলতে পায়ে চলার পথ। সেই পথ ধরেই নিজেদের মধ্যে হুল্লোড় করতে করতে চলেছে তারা,মানে শ্রীরূপ, ঋষি , ঋষিরাজ আর সুমিত। ওদের মধ্যে ঋষিরাজ একটু পিছিয়ে ... ...
পঁচিশে বৈশাখ ————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ————— ফিরে এলো পঁচিশে বৈশাখ ফুরালো যে কত যুগ, তবু যেন শুনি আজ নতুনের ডাক রেখে গেছো কত গান কত কথা কত সুর দুঃখে সুখে অনুরাগে
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলার দুটো স্তর আছে। একটায় মানি ট্রেল দেখা হচ্ছে অন্যটায় ওএমআর শিটে দুর্নীতি দেখা হচ্ছে। প্রথমটায় ইডি আর দ্বিতীয়টায় সিবিআই। দ্বিতীয়টায় সিবিআই তাদের অযোগ্য তালিকা দিয়েছে আর সেটা আগেই হাইকোর্টে পেশ করেছে। তখন এসএসসি মানে রাজ্য সরকার এই তালিকার গ্রহণীয়তা নিয়ে তেনামেনা করছিল।পরে রাজনৈতিক ভাবে চাপ খেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে গ্রহণীয়তা স্বীকার করছে। এখন সিবিআই যে তালিকা ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ১০ নয়নের ছোটমামা আগ্রহী শ্রোতাদের কাছে ধীরে ধীরে মেলে ধরল কোলকাতার উন্নয়নে ব্যয় করা অর্থের উৎসের কাহিনী। -- তোমরা আশাকরি লর্ড ওয়েলেসলির নাম শুনেছ। আঠার শতকের একেবারে শেষ দিকে ওয়েলেসলি ভারতে বড়লাট হয়ে আসেন। বছর সাতেক ভারত অধীশ্বর হয়ে এই শহরে ছিলেন। এই শহরটা ছিল তখন ভারতের রাজধানী। তাঁর আমলেই কোলকাতাকে একটা রাজকীয় শহর করার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। ওয়েলেসলি ছিলেন দক্ষ প্রশাসক। তিনি বুঝেছিলেন যে শহরের ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৯ অল্প বিরতির পর চায়ের কাপে ছোট্ট চুমুক দিয়ে ছোট মামা আবার শোনাতে শুরু করল শহরের সেকালের কাহিনী। -- বর্গিরা ছিল দস্যুর দল। এই হানাদারেরা কাছেপিঠের কেউ নয়, আসত সেই মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে। যেখানে আসত সেখানকার সব কিছু লুট করে নিয়ে যেত। লোকেদের ওপর চরম অত্যাচার করত, কখনো কখনো প্রাণেও মেরে ফেলত। তবে ওই দস্যুরা ঘোড়ায় চড়ে আসত বলে গঙ্গা পার হয়ে এদিকে আসেনি। যা কিছু বদমায়েশি সব গঙ্গার পশ্চিম পারেই করেছে। কিন্তু তাই বলে তো চুপ করে বসে থাকা চলে ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৮ ২৪ পরগণা সেই সময় একটাই ছিল, উত্তর আর দক্ষিণে ভাগ হয়নি। শেয়ালদা দক্ষিণ লাইনে বারুইপুর তখনো শহরের তকমা পায়নি। অঞ্চলটা একটা বর্ধিষ্ণু গ্রাম ছিল। দিগ্বিজয় মিত্র ছিলেন ওই গ্রামের একজন প্রভাবশালী লোক। দিগ্বিজয় আলীপুর কোর্টে ওকালতি করতেন। ভাল পসার ছিল, ফলে পয়সাও প্রচুর ছিল। অনেকটা জমি জায়গা সমেত বেশ বড় বাড়ি ছিল। দিগ্বিজয়্বর এক ছেলে এক মেয়ে। রজতের মা বাণী বড়, ছেলে রণজয় ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৭ শ্রীমন্ত রহড়া সংঘের ফুটবল টিমের প্রথম একাদশে সুযোগ পেত না। খুব ঠেকায় না পড়লে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ওকে মাঠে নামাত না। ও ছিল বিশ পঁচিশ মিনিট খেলার প্লেয়ার। সেদিন ট্রেনের গোলযোগের জন্য রহড়া সংঘ টিমের দূরের যাদের বাড়ি, তারা কেউ আসতে পারেনি। শ্রীমন্তকে নিয়ে কোনমতে এগারো জন হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে টিম হলেও খেলা সমানে সমানে চলছিল। হাফ টাইম হতে তখন আর মিনিট পাঁচেক ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৬নয়নের বাড়ি সাঁতরা পাড়ায়। রজতদের চৌধুরী পাড়ার একেবারে গায়েই। নয়ন আর রজত বাল্যবন্ধু। ক্লাস ওয়ান থেকে মিশনে একসাথে পড়াশুনা করছে। একেবারে নিচু ক্লাসে শিবু স্যার ছিলেন ওদের হেডমাস্টার। সব ছাত্র ওনাকে খুব ভয় পেত। কোনরকম বেচাল দেখলেই হুংকার ছাড়তেন। বাণীর দৃঢ় বিশ্বাস শিবু স্যারের দাবড়ানিতেই ওর দামাল ছেলেটা পথে এসেছিল। মিশন পাড়ার গৌতমও ওদের ক্লাসেই পড়ত। গৌতম লেখাপড়ায় খুব ভাল ছিল। ও প্রতি বছর ওদের ক্লাসে ফার্স্ট হত। নয়ন লেখাপড়ায় খারাপ ছিল না। নম্র, ভদ্র আচরণ ছিল। দেখতে সুন্দর, স্বভাব সুন্দর, এমন ছেলেকে সকলেই ভালবাসবে। কিন্তু নয়ন ছিল মিচকে বদমায়েশ। তখন ওরা ক্লাস ফাইভে পড়ে। সেশন ... ...
সব যখন ছেড়ে গেল, শুধু আমি বসে রইলুম, আমার অবশিষ্ট শরীর আর মুক্তি উন্মুখ আত্মা নিয়ে, যে কটা কাক বসে ছিল, তারাও চলে গেল, আবার কালকে আসবে বলে গেল - যদি মরি! কিন্তু আমি আর একটু বাঁচতে চেষ্টা
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৫ রজতদের আদি বাড়ি মদনপুরে। ওখানেই ওদের কয়েক পুরুষের বাস। রজত যখন খুব ছোট তখন ওর বাবা বিকাশ পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে রহড়ায় চলে আসে। বিকাশ গুপ্ত তখন ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বাংলার অধ্যাপক। কিছুটা কর্মস্থলে যাতায়াতের সুবিধা আর অনেকটাই ছেলেকে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াবার বাসনায় রহড়ার মিশন পাড়ায় বাসা ভাড়া নেয়। কলেজের এক সহকর্মী রহড়ার নন্দন কাননে ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ৪ পাহারার প্রথম পর্বে পাড়াটা একবার প্রদক্ষিণ করে একদিন তেমাথার মোড়ে সকলে দাঁড়িয়ে আছে, হঠাৎ দেখা গেল বাজারের দিক থেকে একটা লোক ছুটে আসছে। ডিফেন্স পার্টির এতগুলো লোক, একজনকে আটকানোয় কোন রিস্ক নেই। বীর দর্পে এগিয়ে গিয়ে সকলে ওকে ঘিরে ধরল। ও তার মধ্যে থেকেও ফাঁক দিয়ে ... ...