ছোটোবেলায় দোলের সময় পাড়ায় চুটিয়ে রঙ খেলেছ মধু। কৈশর পেরোতে পাড়ায় বিশেষ কাউকে - যাকে কেবল দেখেই গেছে বছরভর - কাছে গিয়ে কথা বলার মুরোদ হয়নি - তাদের বাড়ি গিয়ে মাসীমার পায়ে আবীর ছোঁয়ানোর ছলে তার গালেও একটু লাগিয়ে দিয়েছে। বিজয়াতে দলবেঁধে প্ল্যান করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভক্তি প্রকাশের ছলে মিষ্টিমুখ করার সে কী সুখ। সে সব একটা সময় ছিল - সশরীরে, মুখোমুখি আনন্দ উল্লাস ভাগ করে ... ...
শুরুটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে দিয়েই করি। উনি একদা মন্তব্য করেছিলেন - " বাঙলা দেশে জন্মিয়াছে বলিয়াই যে সে বাঙালি তা নয়, বরং সে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়া চিত্তলোকে যাতায়াত করিতেছে বলিয়াই, তাহারা বাঙালী " ... বলার উদ্দেশ্য এই যে বাংলা ভাষা বাঙালি অনেকদিন আগেই উচ্ছন্নে পাঠিয়েছে এটা প্রমাণিত, বাকি যেটা রইলো তা হল বাঙালি সংস্কৃতি। এই বাঙালি সংস্কৃতি যা নিয়ে কিনা বাঙালি গর্ব করতো, যা নিয়ে বিদেশ থেকে স্বয়ং অস্কার দেবতা ... ...
1. সবে তো কলির শুরু। এলন মাস্কের অনুমান সত্য হলে এবং তা যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক মেসেজ ছড়ানোয় ব্যবহৃত হয় - তথাকথিত শিক্ষিত জৈবিক বুদ্ধিমত্তা - পদে পদে চকমা খাবে। 2. একা রামে রক্ষে নেই - সুগ্ৰীব দোসর। এই প্রবচন আমরা শুনেছি। তখন ফরোয়ার্ডেড পোষ্ট ভেরিফাই না করে বড় গ্ৰুপে রি-ফরোয়ার্ড করে দেওয়ার প্রবণতা গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়াবে - আমরা পদে পদে ... ...
নতুন করে বাঁচি ————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ————— বর্ষশেষের আবর্জনা উড়িয়ে দিয়ে উদ্দীপনায় ভরিয়ে নিয়ো এ মন তোমার নতুন আশায়-বলার আছে কতই কিছু নাই বা হলো বলা, তবু ফুটে উঠুক খুশীর কথা নতুন ভাষায়। পুরোনো সব মন্দ স্মৃতি ভুলে গিয়ে, নতুন গীতি
"আমাদের ছিল ধুলোকাদামাখা একখানা ছোট গ্রাম, আমাদের ছিল কালবৈশাখী আম, লিচু কালোজাম।" 'দুই বাংলা' ... ...
১৮তম লোকসভা নির্বাচনের আবহে বঙ্গ রাজনীতিমজিবুর রহমান, প্রধানশিক্ষক, কাবিলপুর হাইস্কুল দেশজুড়ে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের ডঙ্কা বেজে গেছে। লোকসভার আসন সংখ্যার নিরিখে উত্তর প্রদেশ (৮০) ও মহারাষ্ট্রের (৪৮) পর পশ্চিমবঙ্গ (৪২) ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য। তবে গণতন্ত্রের উৎসব উদযাপনের প্রশ্নে আমাদের 'সোনার বাংলা' সকল প্রদেশের শীর্ষে অবস্থান করতেই অভ্যস্ত। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই উৎসব শুরু হয়, শেষও হয় সবার ... ...
নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কিত কিছু ভাবনা মজিবুর রহমান, প্রধানশিক্ষক, কাবিলপুর হাইস্কুল সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার সংসদীয় শাসনব্যবস্থার প্রাণস্বরূপ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে লোকসভা, বিধানসভা ও পঞ্চায়েত বা পৌরসভা- এই তিনটি প্রধান ভোট।অর্থাৎ, দেশের প্রতিটি শহর ও গ্ৰামে প্রতি পাঁচ বছরে অন্তত তিনবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে এখন গণতন্ত্রের উৎসব বলা হচ্ছে। এদিক থেকে দেখলে লোকসভা নির্বাচন দেশের বৃহত্তম উৎসব। একইভাবে বিধানসভার ... ...
ছবি: রমিত চট্টোপাধ্যায়আজি নব বরষের শুভদিনে নব বরষে, নব হরষে, জাগিয়া উঠুক প্রাণ - এই আত্যন্তিক যাচনা নিয়েই নতুন বছরকে আহ্বান করে নেওয়া। চৈত্র শুক্লা প্রতিপদ তিথি থেকেই ভারতের নানান প্রান্তের মানুষ নতুন বছরকে সাদর আমন্ত্রণ জানানো শুরু করেছে। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের দাপটে একালে দেশীয় দিনপঞ্জিকাগুলো একরকম কোণঠাসা। তবুও এই একটা দিন নববর্ষ বরণের অজুহাতে ফেলে আসা সাবেকিয়ানাকে মান্যতা দেওয়া প্রায় হারিয়ে যেতে বসা সামাজিক সাংস্কৃতিক যাপনকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করা।সুবিশাল ভারতবর্ষের নানান প্রান্তের মানুষ কীভাবে তাঁদের নতুন বছরকে বরণ করে নেয় সেকথা জানতে আমাদের আগ্রহ থাকাটা খুব স্বাভাবিক। ভৌগোলিক দূরত্বের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আচার অনুষ্ঠানের নিয়ম রীতিতে বিস্তর পার্থক্য ... ...
ধরা যাক, নাম তার বিন্দিয়া তবে সে মোটেই ভারতীয় নয়। খাস সাদা সাহেব আমেরিকান বাবা ও ব্রিটিশ মায়ের সন্তান। সে নেহাৎ বেবীও নয় এখন। তার বাবা-মায়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের এপ্রিলে তার জন্ম। তার সৎ দাদা, বাবার আগের পক্ষের বড় ছেলে তার থেকে পনেরো বছরের বড়। বাবা, মা ও সৎ দাদার সঙ্গে সে ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার দক্ষিণ দিকের একটি রাজ্যে থাকে। তবে সম্ভবত এখন তার সৎ ... ...
একটা পোল উঠে গেছে পৃথিবীর তলপেট থেকে, তাতে গুঁড়ি মেরে নুড়িপাথর, তাতে বাঁকুড়ার বাওয়াল-বাউল, গান গায়, তরঙ্গ তোলে। উজ্জ্বল ও প্রোটিনক্লান্ত হয় সবিশেষ। দীর্ঘ পোলের প্রান্ত থেকে বিলিরুবিন আলো, নিচে আমরা, সংক্রান্তির ধান ও আমাদের কালবৈশাখীর মতো ভালো, এখানে সেখানে আছড়ে ফেলা যায়। হৈ হৈ উল্লাস ওঠে.. গড়াগড়ি খায়, রৌদ্র গন্ধ, আমাদের শরীর হলুদ হয়ে যায়। ঢেঁকির জনশ্রুত পুষ্টিগুণ শুধু ... ...
বেথুন কলেজের সামনে সেদিন বেলা দশটা নাগাদ দীনবন্ধুর সঙ্গে জন্মেজয়বাবুর দেখা হয়ে গেল। সেদিন রবিবার ছিল। দীনবন্ধু আজ কাটোয়ায় ফেরেনি। জন্মেজয়বাবু বললেন, ' তুমি নিতাইবাবুর শালার ছেলে না ? ' ----- ' আজ্ঞে হ্যাঁ ... ভাল আছেন তো ? ' ----- ' আমারে চিনেন তো ... ওই বাড়ির দোতলায় থাকি ... ' ----- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... ভালমতো চিনি। আমাকে ... ...
যে চিঠি পৌঁছবে না কোনওদিন, কোনও ঠিকানায়।এরপর একদিন আয়ুহীন পরিমাপে দূরত্ব বাড়িয়ে নেয় অবুঝ হৃদয়। নাছোড়বান্দা ভরসা আস্তে আস্তে লুকিয়ে পরে ওই পাহাড়ি ঝর্ণার নীচে, লোকগাথায়। মানুষের মতো মানুষ। প্রথম দুই মানুষের মধ্যে আলোকবর্ষ ফারাক। একটা নিস্তরঙ্গ জীবনের মধ্যে হঠাৎ সেদিন কতগুলো পাতা ঝরেছিল একটা, দুটো করে। তাতে প্রত্যেক স্তর কেঁপে ওঠে ভয়ে, ওরা লুকিয়ে পড়তে পারলে বাঁচে। ম্লান ... ...
আমাদের জীবন যাপনে দুই ধরণের জিনিস দরকার হয় – পণ্য ও পরিষেবা। প্রতিটি পণ্যের জন্য আমরা প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর (জল, স্থল, বাতাস) নির্ভরশীল। যেমন কাঠ, জ্বালানি বা ফসলের মতন সরাসরি ব্যবহার করার জিনিস আর নাহলে নানান খনিজ দ্রব্য যার থেকে তৈরী হয় আমাদের প্রয়োজনের জিনিস যেমন সিমেন্ট থেকে সেমিকন্ডাক্টর। প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার না করে কোনো পণ্য উৎপাদন সম্ভব নয়। পরিষেবার ... ...
প্রিয়তম .... তুমি লিখতে বিপ্রতীপ স্বরের গল্প। বিরোধ যেখানে বারুদগন্ধ চেনায়। আলো-আধাঁরির পাশে পাশে হেঁটে যাবে বাকরোধী অর্ধায়ু। ছায়াময়, আশ্রয় হয়ে ওঠার আগে যেখানে বত্রিশ সেতু পার হয়ে জলস্পর্শ করে।সব চেনা গল্পে বিপ্রতীপ স্থান। মোহন বাঁশি সুরে উপবাসী মুখে বিষ তুলে পরিযায়ী স্বর বাকরোধী। নিঃশব্দ তাই নীলকন্ঠ হয়েছে আজ? এ আবরণ খসে গেলে অর্ধায়ু, বারুদগন্ধে ভ্রষ্ট ... ...
বর্ষাসিক্ত সন্ধ্যা। রাস্তাঘাট ধুয়ে গেছে আবছা নিয়নের আলোয়। অঞ্জন-রিনা হাতে হাত ধরে বাড়ি ফিরছে। রিনার মন খারাপ। আজ রেইনি ডে-র জন্য ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। প্রিন্সিপাল দেননি। অঞ্জন আলতো করে তার হাতে হাত বুলিয়ে বলে, মন খারাপের কি আছে রে পাগলী, চিনিসই তো মানিক স্যার কে। রিনা আমতা আমতা করে, হ্যাঁ তাও...। কলেজ স্কোয়ারের মোড়ে এসে দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়। দুজনে একে ... ...
- তারপর? - তারপর হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা আবার বাঁশি ওঠালেন। আবার সারা রাস্তা ভরে উঠল তার সুরের মূর্ছনায়। বাঁশি বাজাতে বাজাতে তিনি পাহাড়ের দিকে এগিয়ে গেলেন। তার পেছন পেছন এবার চললে ইঁদুর নয়, গ্রামের সকল ছেলেমেয়েরা। অনি ঢোক গিলল। তারপর? - তারপর? তারপর কি হলো, কেউ জানে না। দুটো শিশু ফিরে এসেছিল। একজন অন্ধ, একজন বোবা। ফলে বাকিদের পরিণতি যে ঠিক কি হয়েছিল, জানা যায়নি ... ...
মা,তবু দেখো কী অসহ্য আলোয় বেঁচে আছি। গল্প বলতে বলতে যেখানে তুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে সেখান থেকে মনে না পড়া কথাগুলো বলতে শুরু করেছি আমরা। আমাদের অভাবগুলো আজ তোমার গল্পের মতো শোনায়। আবছা আলোয় আমাদের ব্যথাগুলো প্রলাপ হয়ে ওঠে। যেমনটা তুমি বলতে। বড়ো হয়ে মায়ের মতো হব। "ফিরব বললে ফেরা যায় নাকি..." জন্মদাগ বরাবর ... ...
উদাসীন থেকো না সাড়া দাও -মৃত্যু দাও আমায়, জরা দাও। দেওয়ালটা আজ ভগ্নপ্রায়। সহস্র বছর ধরে রোদ ঝড় বৃষ্টির তাড়নায় তার বুকে জমে উঠেছে দীর্ঘকায় একটি চিড়। দেওয়াল দাঁড়িয়ে থাকে নিঃশব্দ বিষন্নতায়। তার মনে পড়ে পুরনো দিনের কথা। যখন এই দেওয়ালকেই পাঁচিল করে গড়ে উঠেছিল সভ্যতা। সেই সভ্যতাও লুপ্ত হয়েছে বছর কতক হলো। দেওয়াল নির্বাক। স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচতে চায় সে। পারে না। এক কালে তার কোলে ... ...