এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে - ১১৯

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ১২ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৫ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • বেথুন কলেজের সামনে সেদিন বেলা দশটা নাগাদ দীনবন্ধুর সঙ্গে জন্মেজয়বাবুর দেখা হয়ে গেল। সেদিন রবিবার ছিল। দীনবন্ধু আজ কাটোয়ায় ফেরেনি।
    জন্মেজয়বাবু বললেন, ' তুমি নিতাইবাবুর শালার ছেলে না ? '
    ----- ' আজ্ঞে হ্যাঁ ... ভাল আছেন তো ? '
    ----- ' আমারে চিনেন তো ... ওই বাড়ির দোতলায় থাকি ... '
    ----- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... ভালমতো চিনি। আমাকে দয়া করে আপনি বলবেন না জেঠু ... ' দীনবন্ধু জানায়।
    ----- ' আচ্ছা আচ্ছা ... তাই হবে ... আমি আবার চট করে কাউকে তুমি বলতে পারিনা, বোঝলা না ... অসুবিধা হয় ... হ্যাঃ হ্যাঃ ... '
    ----- ' হুঁ ... ঠিক আছে। অসুবিধে নেই। তা, আপনি ভাল আছেন তো ... শরীর ঠিক আছে তো ... '
    ----- ' এই চলছে আর কি। এখনও থাইম্যা যায় নাই। ওপরওয়ালা যত দিন সালান ... মানুষের আর করার কি বা আসে ... তা আপনে ... কি বলে তুমি তো মেসে থাক নাকি ? '
    ----- ' হ্যাঁ ... শ্যামবাজারে। বাজারের ওপর ... '
    ----- ' অ ... তা ভাল। মেসবাড়িতে আমি কখনও থাকি নাই। কেমন লাগত্যাসে ওখানে ? বেশ মিলমিশ আসে তো সবার মইদ্যে ? '
    ----- ' হ্যাঁ তা আছে। সব মিলিয়ে বেশ ভালই লাগে। তবে সব ধরণের লোক আছে তো ... একটু মানিয়ে চলতে হয় বুঝলেন ? '
    ----- ' হ, মানায়ে চলার তো লাগবই। সংসারের মইদ্যেও তে মানায়ে চলতে হয়। এদিক ওদিক হইলেই মুশ্কিল হ্যাঃ হ্যাঃ ... '
    ----- ' আপনাকে একদিন নিয়ে যাব। দেখে আসবেন আমরা কেমনভাবে থাকি ... '
    ----- ' হ ... আচ্ছা ... হইব একদিন। চল বাড়ির দিকে যাইবা তো ... চল ... '
    দুজনে মিলে বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগল। বাড়ির কাছাকাছি আসতে গঙ্গার গলা শোনা গেল তার দোকানের ভিতর থেকে।
    ------ ' ও জ্যাঠামশাই ... কোথায় গিয়েছিলেন ? আসুন আসুন ... '
    জন্মেজয়বাবু বললেন, ' দাঁড়াও আসছি। চল দীনবন্ধু এখানে একটু বসবা নাকি ? গঙ্গাপদ বড় ভাল লোক।
    ----- ' হ্যাঁ ... তা বসলে হয় ... '
    দুজনে গঙ্গার দোকানের পাশে পাতা বেঞ্চে গিয়ে বসল। গঙ্গা যথারীতি দু গ্লাস চা আনাল।
    জন্মেজয়বাবু বললেন, ' এরে চিনো তো ? নিতাইবাবুর শালার ...ইয়ে ... '
    ----- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... জানি জানি। শ্যামবাজারে মেসে আছেন বোধহয়। নিতাইদা বলছিলেন সেদিন ... '
    ------ ' ও আচ্ছা ... হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ... ' দীনবন্ধু জানাল।
    গঙ্গাপদ এরপর খদ্দের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। এক খদ্দের বলল, ' হ্যারে গঙ্গা ... সাগর মন্ডল নাকি বিয়ে করেছে ? কিছু জানিস নাকি ? '
    গঙ্গা তেল মাপতে মাপতে বলল, ' না না ... আমি ওসব খবর রাখি না। আমার অত সময় নেই... '
    সেই খদ্দের অবশ্য তাতে দমল না। বলল, ' বিশ্বনাথরা দেখেছে পরশুদিন ... '
    ----- ' কি দেখেছে ? '
    ----- ' এক মহিলার সঙ্গে এখান দিয়ে যাচ্ছে হাতিবাগানের দিকে ... '
    ----- ' আরে ... কারো সঙ্গে যাওয়া মানেই কি সে তার বৌ নাকি ! ' তেলের বোতলের ছিপি ঘোরাতে ঘোরাতে গঙ্গাপদ বলল।
    ----- ' না, তা না ... কিন্তু হাবভাব দেখে বিশ্বনাথদের মনে হয়েছে ... যাকগে ... মুগের ডাল দে আধ সের ... '
    খদ্দেরের ভিড় একটু পাতলা হলে জন্মেজয়বাবু গঙ্গাপদকে জিজ্ঞাসা করলেন, ' আচ্ছা ... সাগর মন্ডলটা কে ? '
    দীনবন্ধুর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বললেন, ' চিনেন নাকি ? '
    দীনবন্ধু নেতিবাচকভাবে ঘাড় নাড়ল।
    গঙ্গাপদ বলল, ' সাগর মন্ডলের নাম শোনেননি ?
    এখানে সবাই চেনে ... এমনিতে গুন্ডা, তবে কেউ বিপদে পড়লে খুব সাহায্য করে। বদমাশরা খুব ভয় পায় ওকে। গুন্ডা হলেও অনেক ভক্ত আছে ওর। ওর দলবল আছে ভালরকম ... '
    ----- ' তাই নাকি ? আমাদের দ্যাশেও একজন ছিল এইরকম। শফিরুল মোল্লা ... কারও জাত ধর্ম দেখত না ... মানুষ বিপদে পড়লেই দলবল নিয়া ঝাঁপায়ে পড়ত। ভীষণ সাহসী সিল। পলিটিক্স একেবারেই বুঝত না। শয়তানদের যম সিল। অনেক লোক ঠিক একইভাবে শফিরুলকে ভগবান বা পয়গম্বর মানত। কিন্তু ... '
    গঙ্গা বলল, ' কিন্তু ... কি ? '
    ------ ' হ্যারে বাঁচতে দিল না ... খুন হয়্যা গেল... '
    ----- ' অ্যাঁ ... ওঃ ! ' গঙ্গা অস্ফুটে বলল।
    দীনবন্ধু বলল, ' ইশশ্ ... এরা এই ভাবেই মারা যায় ... '
    ---- ' কারা মারল ? ' গঙ্গা জিজ্ঞাসা না করে পারল না।
    জন্মেজয়বাবু চায়ের গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে গ্লাসটা নামিয়ে রাখলেন। তারপর বললেন, ' ভাল কথা জিগাইস... কারা মারল ! সেটা কি কোনদিন জানা যায় ? তা'ইলে তো কোন সমিস্যাই থাকত না। যাদের কাজ হাসিল করতে সমিস্যা হইতেসিল তারাই মারছে। সেই বেলায় ধর্ম বা জাতি বা পার্টি টার্টির কোন ভেদাভেদ নাই। মিলেমিশে সব একাকার ... স্বার্থে ঘা লাগলেই হইল ... '
    গঙ্গা একদৃষ্টে রাস্তার দিকে তাকিয়ে কি ভাবছিল।
    সে একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলল, ' হমম্ ... '।
    দীর্ঘশ্বাসটা কি ভেবে ফেলল কে জানে।
    প্রায় পনের মিনিট ধরে সাগর সম্পর্কিত নানা তথ্য আহরণের পর জন্মেজয়বাবু গঙ্গার দোকানের বেঞ্চি থেকে গা তুললেন।
    বললেন, ' চল ... দীনবন্ধু বাড়ির দিকে আগাই। বেলা বাড়ত্যাসে ... পূজা পাঠ বাকি ... '

    অঞ্জলির কিন্তু রাত্রির ওপর রাগ যায়নি। দীনবন্ধু কি ফেলনা ছেলে নাকি। অত নাক উঁচু কিসের ? নয় একটু বেশি লেখাপড়া করেছিস। তার জন্য এত গোমর... অতি দর্পে হতা লঙ্কা .... এক মাঘে শীত পালায় না ... দীনবন্ধুর মতো সোনার চাঁদ ছেলে আর পাবি ? উঁ... উঃ ... বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বীচি ... এইরকম নানা চিড়বিড়ে চিন্তা অঞ্জলির মাথার মধ্যে ঠোক্কর মারতে থাকে থেকে থেকে।
    অঞ্জলি কার কাছে যেন খবর পেয়েছে পরশুদিন বিকেলের দিকে রাত্রি নাকি কার সঙ্গে চাচার হোটেলে ঢুকেছিল। কি বিশ্রী কান্ড ... ছ্যা ছ্যা !
    আরও চোখ কপালে ওঠার মতো খবর হল যে, সেটা নাকি ওই গুন্ডা সাগর মন্ডল ছিল। খবরটা অঞ্জলি এখনও পুরোপুরি হজম করে উঠতে পারেনি।
    শিবুদার মেয়ের শেষ পর্যন্ত এমন অধঃপতন ... ছ্যাঃ ...।
    অঞ্জলি ঠিক করল তার মেয়ের ব্যাপার স্যাপার শিবুদার নজরে আনার দরকার। একজন জ্ঞাতি হিসেবে এটা তার অবশ্য পালনীয় কর্ত্তব্য বলে মনে করল অঞ্জলি। সে ঠিক করল, কাল সন্ধের দিকে ওদের বাড়িতে যাবে সে।

    কাবেরীর মন আজ খুশি খুশি। সুমনা আজ তার সঙ্গে যাবে নিখিল স্যারের কোচিং এ ভর্তি হতে। সে বাড়ির অনুমতি আদায় করতে পেরেছে। এর পিছনে অবশ্য তার বাবার অবদান আছে ষোল আনা। শেষ পর্যন্ত বাসন্তীদেবী বুঝতে পারলেন যে এই স্যারের কাছে পড়লে মেয়ের পরীক্ষায় ভাল ফল অবশ্যম্ভাবী। তার প্রতীক্ষা অবশ্য এখন গন্ধরাজ ফুল জোড়া ঘিরে। কবে আসবে সে সুমনার জুড়ি হয়ে।
    সে যাই হোক, কাবেরী সুমনাকে নিয়ে সন্ধেবেলায় যথাসময়ে পৌঁছল নিখিল ব্যানার্জীর কোচিং ক্লাসে। নিখিলবাবু ঘরে ঢোকার পর কাবেরী বলল, ' স্যার, এই যে আমার বন্ধু ... বেথুনে আমরা একই সঙ্গে ... '
    ------ ' ও আচ্ছা ... বস বস ... গার্জেনের পারমিশান নিয়ে এসেছ তো ? ছেলেমানুষ সব ... দিনকাল ভাল না। সাগর মন্ডল আর ক'জনকে গার্ড দেবে ? বড় কঠিন সময় ... বড় কঠিন সময় ... নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস ... '
    কাবেরী স্যারের এই ধরণের জটিল বাক্যবিন্যাসের সঙ্গে পরিচিত। সে চুপ করে রইল কিছু বুঝে বা না বুঝে। সুমনা তাকিয়ে রইল স্যারের মুখের দিকে। কিছু বোঝার চেষ্টা করতে লাগল।

    ( চলবে )

    ********************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ১২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১৩530521
  • চলুক
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন