দূরদর্শনের দিলীপ পাল, মন্দিরা পালেদের বাড়ি থেকে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর তাঁর পত্নী সুরাইয়া ইলিয়াস যাচ্ছেন বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের বাড়িতে। সময়টা নয়ের দশকের মাঝামাঝি। একটা মিনি বাসের সাওয়ারি হয়েছেন তাঁরা। তখনো 'খোয়াবনামা' বই আকারে প্রকাশিত হয় নি। বাংলাদেশের ছোটখাট কয়েকটি পত্র পত্রিকায় ইতিউতি বেরিয়েছে। যাঁদের বাংলাদেশের সঙ্গে খুব নিবিড় সংযোগ নেই, তাঁদের পক্ষে সেই লেখা পড়বার সুযোগ ঘটে নি। কারন, পশ্চিমবঙ্গ তো কোন ছাড়, বাংলাদেশের ও সেইসময়ের নামীদামী পত্রপত্রিকাগুলির তাঁকে ঘিরে খুব একটা আগ্রহ ছিল না। ইলিয়াস লেখার নেশাতে লিখে যেতেন। বাজার চলতি লেখক হওয়ার কোনো নেশাই তাঁর কোনো কালে ছিল না। আর রাজনৈতিক অবস্থান ও ছিল একটু অতি বামঝোঁক সম্পন্ন। ... ...
টমাস মুর এর বইটার বাংলা অনুবাদ উইকিপিডিয়াতে বলছে প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯৮১ সালে, প্রকাশক বাংলা একাডেমী। এরও আগে সোভিয়েত থেকে বা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ অনুবাদ প্রকাশ করেন নি?
ভারতবর্ষের কিছু মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব নিম্নস্থানীয় ধারণা পোষণ করেন। ওরা অনুপ্রবেশকারী, উইপোকার মত আমাদের দেশে ঢুকছে... ইত্যাদি সংলাপ সেই ধারণারই ফসল। যাঁরা এই ধরনের কথাবার্তা বলে থাকেন, আমার খুব সন্দেহ আছে তাদের বাংলদেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে।
রাত তখন প্রায় সাড়ে বারো'টা। শহর তখন ঘুমের চাদরে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। আর খিদিরপুর থেকে রামনগর যাওয়ার এই রাস্তাটা সকালেই চুপচাপ থাকে। আর এখন তো একেবারে নিস্তব্ধ। মাঝে মাঝে দু - একটা প্রাইভেট গাড়ি যদিও ভোঁক ভোঁক করে বেড়িয়ে যাচ্ছে। কিছুটা দূরে একটা বাঁক নিয়ে একটা বোলেরো গাড়ি দাঁড়িয়ে। গাড়ির ভেতর তিনটে ছেলে তখন মদ খেতে ব্যস্ত। চিপস সিগারেট আর মদের গন্ধে গাড়িটা একেবারে ভরে গেছে। গাড়ির কাঁচ তোলা, শীতকালের রাত। রাম দিয়ে নিজেদের শরীর গরম করতে করতে একজন টয়লেট করার জন্য বাইরে বেরোল। এই রাস্তাটা শহরের একটা বেনামী রাস্তা। খুব একটা মানুষজন ব্যবহার করেনা এটাকে। ... ...
তুমি যে কেন বারে বারে ...... / এত লাল গোলাপ দাও?
সকাল দশটা বাজলেই কলকাতা শহরটা যেন ছুটোছুটি শুরু করে। বিভিন্ন রকমের মানুষের ও গাড়ির আওয়াজ। অফিস আদালত যাওয়া মানুষের ব্যস্ততা। ধাবমান বাস-অটোকে ধরার জন্য বৃথা প্রচেষ্টা প্রতি ক্ষণে ক্ষণে ঘটছে। এমন সময় একজন কুম্ভ মেলার মত মানুষের ভিড় সরিয়ে ধাবমান অটোর উদ্দেশ্যে বলল - “অটো অটো আটো -ও -ও -ও ...।” ... ...
ঘরে আগুন লাগাবার যাবতীয় ষড়যন্ত্র করে, আগুন লাগার পর প্রতিবেশির সহানুভূতি কুড়োনোর কৌশল নিয়েছেন মমতা। রামকাহিনির নায়কের রাজনীতিকরণ কেন বাজপেয়ী জামানাতে সাড়ে ছয় বছর চুপ করে সহ্য করেছিলেন মমতা? তিনি যখন বাজপেয়ীর ক্যাবিনেটে শোভাবর্ধন করছিলেন, তখন আরএসএস-বিজেপি দশরথনন্দনকে তাঁদের রাজনৈতিক শ্লোগান করে গুজরাটে যখন মুসলমানের মুন্ড নিয়ে গেন্ডুয়া খেলেছিল, তখন কোথায় ছিল মমতার প্রতিবাদ? ... ...
নির্মল করো, মঙ্গল করো, মলিন মর্ম বাজেটে দিনের শেষে সরল প্রশ্ন, আমজনতা কী পেল? তবে, এই প্রশ্ন করার আগে, আমজনতার কাছে প্রশ্ন রাখতে হবে, সরকারের কাছে আসলে কী চায় তারা? সেই প্রত্যাশা কি বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পূরণ করতে পারলেন?গত এক বছর ধরে করোনা শিখিয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে কীভাবে যুঝে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয় আমজনতাকে। তার জন্য আলাদা কোনও চিত্রনাট্যের প্রয়োজন হয় না। লকডাউন পরবর্তী সময়ে কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে গিয়ে হেরে গিয়েছেন, আত্মবিশ্বাস খুইয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যার ইয়ত্তা নেই। ক্রোশের পর ক্রোশ হেঁটে পায়ের চেটো ফুটিফাটা হয়ে গিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। সাহায্য বলতে ... ...
অভিযোগ তারা সার, বীজ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি মারফত প্রচুর সাবসিডি পান? কর্পোরেট সংস্থা বিনা মূল্যে ব্যবসার জন্য জমি পায়। সরকার জল, বিদ্যুৎ, রাস্তা ইত্যাদির ব্যবস্থা করে।
"আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে, নইলে মোদের রাজার সনে মিলবো কী স্বত্বে?" নাচ থামিয়ে সবে কৈশোরে পা দেওয়া দেবলীনা তার মা'কে জিগ্যেস করে বসলো - "আমরা যদি সবাই রাজা হয়ে থাকি, তাহলে প্রজা বলতে কাকে বোঝানো হচ্ছে? তবে যে বলা হলো, ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস মহাসমারোহে উদযাপিত!" সত্যিই তো, এ তো সঠিক প্রশ্ন! প্রজা কে? রাজারই যখন কোনো অস্তিত্ব নেই! ... ...
সারা পৃথিবী জুড়েই চলছে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসার রমরমা। অবাক হচ্ছেন? অবাক হবার কিছু নেই। একেবারে ঠিকই বলছি। মানুষের জীবন বাঁচায় যে ওষুধ সামগ্রী, তার ব্যবসাতেই সবচেয়ে বেশি মুনাফা। তাই পৃথিবীর তাবড় মুনাফাখোরদের ওষুধ ব্যবসার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই বুঝতে পারবেন। একটু পিছিয়ে কয়েক বছর আগেই পাড়ার দোকানগুলো ওষুধের এমআরপিতে দাম নিত। ওষুধের দামের সঙ্গে লেখা থাকত এল.টি. অর্থাৎ লোকাল ট্যাক্স এক্সট্রা। মানে একটি ওষুধের এমআরপি দাম যদি একশো টাকা হয়, খুচরো বিক্রেতা আরো আট দশটাকা বেশি অনায়াসে নিতে পারত। এই অরাজক ব্যবস্থা যদিও কালক্রমে উঠে গেছে। এখন এমআরপিই যথেষ্ট। ... ...
ধাক্কা শীতের দুপুরে আমার দোতলার ছোট্ট বারান্দাটিতে, যতক্ষণ রোদটাকে ধরে রাখা যায় আর কি, গায়ে রোদ লাগিয়ে বসে থাকি আমার আরামকেদারাটায়। বই পড়ি, রাস্তা দেখি, বই বন্ধ করে কিছুক্ষন ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ করি। আবার রাস্তার দিকে তাকাই। আবার বইটা উঠিয়ে নিই। পড়তে পড়তে ঢুলি। যখন মোটা উলের আফগানি টুপিটা মাথায় দিয়ে ১৪১১ এর মৃগাঙ্ক বাবু হাঁটতে বের হন, তখন বুঝি যে সূর্য এবার ঢলতে আরম্ভ করবে। আজও বসে আছি বারান্দায় শরীরটাকে রোদে ডুবিয়ে। সাকির মস্ত মোটা বইটা হাতে। মিসেস জোয়ান চিন্তায় পড়েছেন, কি করে তাঁর অতিথির আগমনটাকে আটকানো যায়। সাকির ছোট ছোট গল্পগুলো ধীরে সুস্থে এগোতে থাকে। রসিয়ে রসিয়ে পড়া যায়। কোলের ... ...
মহাপৃথিবীর সৃষ্টির পথ প্রয়োজন, প্রয়োজন পথিকের সারাটা পথ জুড়ে
আবেগ প্রেরণা'কে ধরে ফেলে। প্রেরণা হতবুদ্ধি আজ। যা ভাবার বাইরে ছিল তাই ঘটে গেল। নিয়তি কাকে বলে? প্রেরণার মা আজ সকালেই ছাদে কাপড় মিলতে গিয়ে ছাদ প্যারাপাড বিহীন থাকায় আচমকা নীচে পড়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়।
হীরক রাজ্যে আগুন আছে / উদয়নের পাঠশালা। / লঙ্কাপুরিও জ্বলে ছিল / নিয়ে পাপের শলা।
সুনীলদা (গঙ্গোপাধ্যায়) লন্ডন এলে হ্যারোতে ভাস্করদার (অরণ্যের দিনরাত্রির শমিত ভঞ্জ) বাড়িতে আড্ডা বসত প্রায় রাত্রিব্যাপী। সেখানে আমার প্রবাসের শ্রেষ্ঠ সন্ধ্যাগুলি কেটেছে। একটা গল্প মনে পড়লো আজ। এটা সম্ভবত তারাপদ রায়ের সূত্রে ভাস্করদার শোনা (নি ইয়র্কে কৃত্তিবাসকে দেখতে যাবার পথে তারাপদ রায় আসতেন)।
উদয় রক্তিমতায় আরোপিত সমুদ্রতট। বালু-ঢেউয়ের টানাপোড়েন। তৃষা আর মিশা'র যুগলবন্দী সানাই সঙ্গীত। বিরহ থেকে আনন্দ লহরী।
মাঘের শীত / বাঘের গায়!