মা ভাবেন লোকে মেয়েকে তাঁর আদর করে লক্ষী বলে, সরস্বতী বলে না কেন? লক্ষীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ধন, শ্রী, সম্পদ এবং সবার ওপর ঘরকন্নার চাবিকাঠিটি। সুগৃহিণী হওয়ার আশীর্বাদ। লক্ষীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সঞ্চয়, ধানের ছড়া, খড়ের আঁটি, ঝাঁপিতে এক মুঠো চাল, সিঁদূর মাখানো একটি দুটি টাকা – অসময়ের ভরসা। লক্ষী হলেন নারায়ণের সহধর্মিণী, তাঁকে নিয়ে কত ব্রতকথা, কত পুরাণ, কত গল্প। মেয়েকে তো মানুষ করা হয় পরের ঘরে যাবার জন্য, অভাবের সংসারে উপবাসে থেকে পানের রসে ঠোঁট লাল করে অতিথি অভ্যর্থনা, ... ...
প্রয়াত শিক্ষকের সমাধির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন একজন হাতজোড় করে। দু চোখে বইছে অশ্রুধারা । ভিয়েনার এই বিশাল সমাধি ক্ষেত্রে একা বসে যিনি কাঁদছেন তাঁর নাম ইউসেবিও , ফুটবলের প্রবাদ পুরুষ । ১৯৬৬ সালে পরতুগালকে বিশ্ব কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে যাবেন । ইউসেবিও আজ কেবলমাত্র প্রণাম জানাতে আসেন নি। তিনি এসেছেন তাঁর প্রয়াত শিক্ষকের কাছে করুণা ভিক্ষা করতে । ভগ্ন কণ্ঠে তিনি অনুরোধ করছেন আমার প্রনম্য ফুটবল গুরু , ফিরিয়ে নাও তোমার অভিশাপ। আগামী কাল তোমার পুরনো দল বেনফিকা ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনাল খেলবে মিলানের বিরুদ্ধে । শাপ নয়, আশীর্বাদ কর যেন বেনফিকা এ খেলায় জেতে ।পরের দিন ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে বেনফিকা ১-০ গোলে হেরে গেল মিলানের কাছে । ১৯৬৫ ।বেলা গুটমান ক্ষমা করেন নি। তাঁর শাপে বেনফিকা কখনো ইউরোপিয়ান কাপ জিতবে না । ... ...
'তাই বলে কি প্রেম দেবে না... / একদিন বৈ নয়তো রোজ! / সারাবছর কলসীর কানা, / অন্তহীন বাসার খোঁজ!!
গণমাধ্যমই হল সমাজের এবং সংস্কৃতির মুখ।আমরা সাধারণভাবে মনে করি গণমাধ্যমের ছায়াই আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি। মার্শাল মাল্যুকয়হান তাঁর "understanding media" বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বলেছেন "Medium is the message"। আর এইখানেই বিশেষ করে মনে আসে নানারকম বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন এবং সিনেমার কথা।কিন্তু আমাদের সামাজিক প্রতিচ্ছবি শুধুমাত্র সিনেমা বা বিজ্ঞাপনেই নয় বরং নানা উপন্যাস, গ্রন্থ, কবিতা এককথায় সাহ্যিতেও ফুটিয়ে তোলা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় সাহিত্যে যেমন বেদ, উপনিষদ, পুরান বা মহাকাব্যে নারীর অবস্থান মোটেও কোনো উচ্চমার্গে নেয়।সীতার বনবাস অগ্নিপরীক্ষা, দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ আমাদের মনে করিয়ে দেয় নারীর অসম্মান ও লাঞ্ছনার কথা।সেই সময় সমাজের নিয়ন্ত্রক ছিলেন মুনি, ঋষি, রাজন্যবর্গ। আর তাঁদের বিধানই ছিল বেদবাক্য। ... ...
সূর্য তার চুম্বনে ভরিয়ে দেয় / লাল পলাশের মাঠ / দিকচক্রবাল অস্তমিতায় / আদর যার রক্তিমতায়
ফেব্রুয়ারিতে মানুষজন বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, প্রমিস ইত্যাদি বিমূর্ত ভাবনা উদযাপন করেন। আমাদের যাদের বয়েস মধ্য চল্লিশ বা তার আশেপাশে, একটি বা দুটি সন্তান আছে, এবং হ্যাঁ একজন বা দুই সন্তান অটিজিম স্পেকট্রামে আছেন তাদের কাছেও ফ্রেব্রুয়ারী হোক বা এপ্রিল বা বছরের যে কোন দিন এক লড়াই চলেই যায়। প্রত্যেক বাবা, মা বাচ্চাকে মানুষ করতে লড়াই করেন। একদম সঠিক কথা। আসলে আমাদের লড়াইয়ের সাথে থাকে --- বাচ্চাদের পথ একটু সুগম করা যায় এই চেষ্টা। যেখানে হয়তো আমাদের সন্তানদের ভালোবাসা, বন্ধুত্বের ধারণা বোঝাবার আর বোঝার জায়গা কিছুটা হলেও আলাদা। ... ...
আছে অনাবিল সুখ / নেই কোনো দুখ / হতাশা অমিল সেথা / যেথা খুশী সেথা যাও
রাতের শেষ ট্রেন ছিলো। স্টেশন খেকে ছাড়ার সময় দরজা অব্দি লোক বাদুর ঝোলা ঝুলছিলো। পাঁচটা স্টেশন পেরিয়ে এসে এখন ট্রেনটা প্রায় ফাঁকা। অফিস ফেরত লোকগুলোর চোখেমুখে ক্লান্তি আর বাড়ি ফেরার ক্লেশে ক্লিষ্ট। শেষ স্টেশনের আগের স্টেশনে আসার পর ১৩ নম্বর কম্পারমেন্টে একটা বস্তা উঠল। এটাই লাস্ট কম্পারমেন্ট। অন্যসময় হলে লোকজন হৈ হৈ করে উঠত, মালের বগিতে তোলো, এখানে কেন! এখন কেউ কিচ্ছু বলছে না। মোটে তো আর পনেরো মিনিটের পথ। ঝগড়া করার মত শক্তি বা ইচ্ছা কারুর ছিলো না।এ হচ্ছে রোজকার চিত্র। ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করে এরা রাজধানীতে চাকরি করতে যায়। রোজ সকাল আর সন্ধ্যায় ট্রেনে একটু জায়গা পাওয়ার জন্য ... ...
রাত্রি এসে / ঘুম ভাঙিয়ে দিল
[ সোশ্যাল মিডিয়া ভর্তি কোটস (quotes), সেদিন দেখলাম আট লাইনের একটি কবিতা, তিনটে বানান ভুল, নিচে হাইফেন দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর এক জায়গায় দেখলাম - ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত - নিচে হাইফেন দিয়ে সুভাষ চন্দ্র বসু - এই কোটর্চার বা উক্তিত্যাচার এ জর্জরিত হয়ে ...]------"কাজ না করিয়া অনেকে সময় নষ্ট করে সন্দেহ নাই; কিন্তু কাজ করিয়া যাহারা সময় নষ্ট করে তাহারা কাজও নষ্ট করে, সময়ও নষ্ট করে।তাহাদের পদভারে পৃথিবী কম্পান্বিত এবং তাহাদেরই সচেষ্টতার হাত হইতে অসহায় সংসারকে ... ...
আপনি কি দেশপ্রেমী? -- লিখেছেন শুভঙ্কর মজুমদারশুভঙ্কর মজুমদার আপনি দেশপ্রমী না পরমতসহিষ্ণু? পুরোটা পড়ুন
দুষ্টু সরস্বতী গেলেন কোথায়? স্কুল বছর ভর বন্ধ থাকার পরে সবে খুলছে। কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয় এখনই খুলছে না। মাধ্যমিক - উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পেছলো সেই জুন মাস পর্যন্ত। গৃহ শিক্ষকদের পৌষ মাস দীর্ঘায়িত হয়েছে। ছাত্রদের সরস্বতী পুজো নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো চিন্তা নেই। বাধ্যতামূলকভাবে স্কুল যেতে হচ্ছে না। বাড়ির পুজো অধিকাংশ বাড়িতে নিউ নর্মাল কারনে উঠে যেতে বসেছে। লেখাপড়ার দেবী কৈলাস ছেড়ে এই হাড় কাঁপানো শীতে পুজো মন্ডপে আসবেন কিনা, এখনও কনফার্ম নয়।যদিও কুমোরটুলি এই মুহূর্তে খুবই ব্যস্ত। পুজো এখন বাণিজ্য। পড়ুয়ারা রণে ভঙ্গ দিলেও, লেখাপড়ার সঙ্গে যাদের দীর্ঘদিনের আড়ি হয়ে গেছে, সেইসব নব কার্তিকরা হঠাৎ সরস্বতীর আরাধনায় মেতে উঠেছে। এখন আর বিলবই ছাপানোর দরকার ... ...
আমাদের ছিলো ছবির মতো শহর। তার উত্তর দক্ষিণ পূব পশ্চিম ব্যেপে সরল ও সমান্তরাল প্রশস্ত পিচরাস্তার সারি। উত্তরদক্ষিণের সাথে পূবপশ্চিমের রাস্তাগুলির ছেদন ছিলো সমকোণে। ঝাঁ চকচকে কালো পিচরাস্তার ধারে লাল মোরামের ওয়াকওয়ে আর তার পাশ দিয়ে ঘাসের সবুজ। ছিলো বীথিপথ আর টলটলে জলে ভরা অনেক কাকচক্ষু চতুষ্কোণ দিঘি।রাজ্যপাট না থাকলেও রাজা রানী ছিলেন। বিশাল রাজপ্রাসাদ ছিলো বাকিংহাম প্যালেসের রেপ্লিকা। পিলখানায় হাতি ছিলো, আস্তাবলে ঘোড়া আর কারশেডে রাজকীয় মোটরকার। পূর্বতন রাজসরকারের করণ, কাছারি স্কুল কলেজ আর রাজন্যবর্গের বাড়িগুলি ছিলো সাহেবি বাংলো ধাঁচের, লাল ইঁটের,পাকাছাতের।গেরস্তবাড়িগুলি ঝকঝকে লালটিনের একচালা বা দোচালা। সামনে ফ্লাওয়ার গার্ডেন, পিছনে কিচেন গার্ডেন।আমাদের জন্মের বছর পাঁচেক আগে এক পরিবর্তন ... ...