তোরে ছুঁলি অই আঁচে আমাতে কি পাল্টি হয়
এটা রাজনীতি। পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ক্যাচাল না। অথচ সেভাবে ভাবতে একটুও অভ্যস্ত নই আমরা। আমাদের সোজা কথা; কংগ্রেস আমার পরিবারের অমুককে মেরেছিলো, সুতরাং আমার ভোট সবসময় লালেই পড়বে। অথবা সিপিএম বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলো আমার তমুক আত্মীয়কে, অতএব তৃণমূল ছাড়া আমি আর কাউকে ভোট দেবো না। দরজায় আমেরিকা দাঁড়িয়ে থাকলেও এর অন্যথা হবে না। চাষির ছেলে চাষি হোক না হোক, সিপিএমের ছেলে তো সিপিএমই হবে। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেলো কমরেড অনিল বিশ্বাস একখানি বই লিখেছিলেন; "সমাজতন্ত্রই ভবিষ্যৎ" --- বলাবাহুল্য, নামটি বেশ সুন্দর। কিন্তু তারপর পরলোকগমনের প্রাকমুহূর্তে ফোঁস শব্দে দীর্ঘশ্বাস ফেলে লেখক "সব পেলে নষ্ট জীবন" বলে মারা গিয়েছিলেন ... ...
“বিজেপিকে একটিও ভোট নয়” বলবার অধিকার কি অ্যামেরিকাপ্রবাসী একজন ভারতীয়র আছে? এমন বললে কি ভারতের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলান হবে? রিহানা, গ্রেটার নাক গলানোর অধিকার থাকুক বা না থাকুক, প্রতিটি ভারতীয়-জন্মদ্ভুত নাগরিক-অনাগরিকদেরই সেই অধিকার আছে। এটা তাদের জন্মগত অধিকার। তাই “বিজেপি কে একটাও ভোট নয়” বলার সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে। তাই আবার বলি, বিজেপিকে একটিও ভোট দেবেন না। কেন দেবেনা? একটাই কারণ, না আসলে দুটো কারণ; সিএএ আর এনারসি। বাকি কারণগুলো তুচ্ছ যা সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করা যায়। বাজে বিল বানানো, বাজে বাজেট বানানো; এগুলো চিরন্তন রাজনীতি। পৃথিবীতে এমন কোন গণতন্ত্র নেই যেখানে সব বিল, সব বাজেট নিখুঁত। ... ...
ক্যাম্পাসে পা রাখতেই কেমন যেন মনের সব ভয়, দুশ্চিন্তা, মন কেমন করা ভাব, অস্থিরতা, পেট গুড়গুড় করা ইত্যাদি আরও যা কিছু নিয়ে ভোরে হল থেকে বেরিয়েছিল সবকিছু কেমন যেন এক নিমিষে দূর হয়ে গেলো। বরং খুশির একটা দমকা হাওয়া যেন পলকে মনকে ছুঁয়ে দিয়ে গেল। কী সুন্দর বসন্তের সাজ গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে, যা ভোরবেলায় তার নজর এড়িয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রস্তুতি যেন পূর্ণরূপে প্রকাশ পেয়েছে আজকের সাজে। বেশিরভাগটা শোলার আর কাগজের ফুলের সাজ হলেও অনেক জায়গাই সত্যিকারের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। আর এমনিতেও তাদের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান রকম ফুলের গাছ। \ ... ...
স্কুল-কলেজে থাকতেই খুব বেশিই সাধারণ টাইপের একজন ছাত্রী ছিলাম। স্কুলে থাকতে যাও বা টুকটাক গান বাজনা করতাম, বা সিনিয়র ব্যাচ হয়ে গেলে যেমন শেষ বছরের সব অনুষ্ঠানগুলো ক্লাস টেন এর মেয়েদেরকেই এরেঞ্জ করা লাগে, সেটুকুই করেছিলাম। অতটুকু অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়েই এলাম শহরের টপ কলেজে। এখানে এসে তো আরও সংকুচিত হয়ে গেলাম। কলেজের স্যারেরা কোনোদিন জানেনই নি যে আমি গান গাইতে পারি, দৌড়াতে পারি, ছবি আঁকতে পারি, উপস্থাপনা করতে পারি, রচনা লিখতে পারি। সব ছেড়ে দিয়েছিলাম। একমাত্র ফোকাস ছিল এডমিশন, ভালো রেজাল্ট। এর মধ্যে অবশ্য বেশ কিছু ঘটনা ঘটতে দেখেছি। কলেজে শহরের, অবশ্য শুধু শহরের বলছি কেন বিভাগেরও অনেক ভালো স্কুলের ... ...
আমি নিজে একটি ধার্মিক ও ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মেছি। ছোটবেলায় রীতিমত মেনেছি সবকিছু। সব সেভাবেই চলছিল, শুধু কখনো কখনো আর্থ-সামাজিক কারণে অনেক প্রশ্ন মাথায় আসতো। বেশ মনে আছে, ফাইভের বিজ্ঞান বইতে পড়েছিলাম, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দূষিত পুকুরে সিন্নি টাইপের প্রসাদ বানানোয় অনেক লোক অসুস্থ হয়ে যায়, বিশেষ করে গ্রামের দিকে এরকম প্রচলন রয়েছে। স্নানজল, প্রসাদ খেয়ে মানুষ কেন অসুস্থ হবে? এই ব্যাপারটা তখন মনে এসেছিল, যে যদি ঈশ্বর মানুষের ভালোর জন্যই, তাহলে মানুষের ক্ষতি কেন হলো তারই প্রসাদে? কেন পুজো দিয়ে আসার পথে দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণ যায়? কেন বলি হয়? যদি সব প্রাণীই ঈশ্বরের সৃষ্টি, তারই সন্তান, তাহলে নিজের সন্তানকে কেন ... ...
রবীন্দ্রজয়ন্তী আর ২১শে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করাটা বোধহয় এক নয়। হ্যাঁ দুটোই পাড়ায় পাড়ায় হতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ২১শে ফেব্রুয়ারি আমরা ভাষা শহীদদের স্মরণে তাদের সম্মান দিয়ে থাকি। সেই জন্য বোধহয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিভাবকত্বে ভাষাপ্রেমী লোকজনেরা প্রায় তিন দশক আগে, ভাষা উদ্যান যেটি আপানাদের কাছে কার্জন পার্ক নামে খ্যাত, সেইখানে একটি ভাষা শহীদ স্মারক তৈরি করেছিলেন। ... ...
একুশ এসেছে অথচ শহীদ মিনার যাইনি - এমন কখনও ভাবতেও পারতাম না। কিন্তু এখন তাই হয় - যাই না।
২১শে ফেব্রুয়ারী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ফেসবুকে বড়সড় হ্যাজ নামাব... এঃ! দেখেছ? ফের 'হ্যাজ নামাব'!! আজকের দিনেও? ছিঃ! শেম অন মি... হ্যাঁ, যতই চেষ্টা করি, আমাদের আবেগ-টাবেগ সব এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজিতেই প্রথমে আসে। দরকারে- অদরকারে বাঙালী এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজীতেই গ্ল্যামার খোঁজে। কিন্তু, তাতে দোষের কী? ছেলেপুলেরা হিন্দিতে কথা বলুক, ইংরেজিতে ভাবনাচিন্তা করুক, ফরাসী কায়দায় হাঁচুক-কাশুক, অসুবিধে কী? ভাষাই তো। একটার জায়গায় পাঁচটা শিখলেই-বা ক্ষতি কী? ক্ষতি নেই। কিন্তু, বাংলাটা পড়তে পারাটা যে বড্ড জরুরী। বাংলা সাহিত্যের মত ধনী সাহিত্য খুব কম ভাষায় আছে। আমি নিজে চেষ্টা করে চলি, বাচ্চাদের বাংলা গল্প-উপন্যাস-নাটক পড়ে শোনাতে। সপ্তাহে একটা ক্লাস অফ করেও ওদের দিয়ে কবিতা পড়াতে, নাটক করাতে। ... ...
আজকে যাকে আমরা সচরাচর ভাষা দিবস বলে অভিহিত করি আসলে তার নাম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ---- ১৯৯৯ সালে ইউনাইটেড নেশন এই দিনটাকে এই নামে চিহ্নিত করেছেন। এখানে একটু বলে নেওয়া দরকার, ভাষা আন্দোলন বলতে আমরা সাধারণত বাংলা দেশের ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকেই বুঝি। কিন্তু ভাষা নিয়ে আরো আন্দোলন হয়েছে আমাদের দেশেই। আসামের বরাক উপত্যকায় আসামিয়া কে সরকারি ভাষা হিসেবে চালু করার বিরুদ্ধে বাংলা ভাষীদের আন্দোলন হয়েছে। ১৯৬১ সালের ১৯মে সেখানে পুলিশের গুলিতে ১১জন শহিদ হন। ত্রিপুরায় সেখানকার ভূমিপুত্রদের মাতৃভাষা ককবরক কে স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৭৫ সালে ভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ধনঞ্জয় ত্রিপুরা নামের এক ত্রিপুরার নাগরিক। পুরুলিয়া জেলাকে বিহারের ... ...
কম্যুনিটি ইন্টারপ্রেটিং --- এক অন্য ধরণের ভাষাচর্চার অভিজ্ঞতা কোনো ভাষা ভালো ভাবে ব্যবহার করতে পারা মানে কি কেবলই সেই ভাষায় সুললিত ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারা? অনেকের তেমনই ধারণা। কিন্তু ভাষার পরিচয় শুধু মাত্র সাহিত্যে নয়; তার পরিচয় সাধারণ জীবন যাপনের অংশ হিসেবে দৈনন্দিন ব্যবহারে। শহুরে বাংলা অল্পবিস্তর ইংরেজী মিশ্রিত এবং বিশুদ্ধতাবাদীদের ভ্রূকুটি ও বিদ্রূপ সত্বেও এটাই এখন বাস্তব। মজাটা হয় তখন যখন আপনি পুন্ডরীকাক্ষ পুরকায়স্থ ওরফে গৌরহরির মতো পুরোপুরি বাংলায় কথা বলতে বাধ্য। ধন্যবাদের প্রত্যুত্তরে আমরা বাংলায় কি বলি? ... ...
খেলার জগতে এক এক দেশের আপন জাতীয় দল হয় বলে জেনে এসেছি। দেশের মধ্যে আবার প্রতি রাজ্যের ফুটবল বা ক্রিকেট দল সন্তোষ ট্রফি অথবা রনজি ট্রফিতে খেলে । আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জিতলে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয় জাতীয় সঙ্গীত বাজে। রনজি ট্রফি জিতলে ইডেনে বাংলার পতাকা উঠবে না কারণ আমাদের রাজ্যের কোন পতাকা নেই।কোন রাজ্য সঙ্গীত নেই। ... ...
ফিরে এসেছি, না না গুরুচন্ডা৯তে নয়, দেশে। এসে দেখি শহরটাই শুধুমাত্র নয়, বন্ধুবান্ধব এর চিন্তাভাবনা বদলে গেছে। প্রিয় বন্ধুরা আমাকে বয়কট করেছে, প্রচার চালাচ্ছে, আমি নাকি একটা রাজনৈতিক দলে নাম লিখিয়েছি। মানে জার্সি বদলেছি। কারণ আমি এখন দেবদেবী নিয়ে বেশি লেখালেখি করি তাই, আচ্ছা কোন দেবদেবী কিভাবে কোন রাজনৈতিক দলের বাপের সম্পত্তি হয়ে গেল? দেবদেবীর কথা লিখি কারণ লোকাল দেবদেবীর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের অনেক ইতিহাস। ... ...
আঠারো বছর বাদে রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল। বিতর্কের মুখোমুখি হতে হবে জেনেও বলি, আঙ্গেলিকা মেরকেল একজন সৎ কমিউনিস্ট! হামবুর্গে জন্ম। বাবা-মা পূর্ব জার্মানি চলে যান। দীক্ষা কমিউনিজমে। সেই সাধাসিধে জীবন যাত্রা বজায় রেখেছেন। পূর্ব জার্মানির অবস্থা খুব ভালো ছিল না। বার্লিন দেয়াল পতনের পরে তাঁর প্রথম মন্তব্য ছিল আশা করছি এবার বাড়ির কাঁচের জানলা গুলো ঠিক হবে। বড়ো ঠাণ্ডা হাওয়া ঢোকে এই প্রাচীন জানলা দিয়ে। ... ...