অশোকতরু মুখোপাধ্যায় হুইলচেয়ারে ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। তার ছায়াসঙ্গী হল বিনোদ। বিনোদবিহারি জাতে বিহারি। সে-ই অশোকতরুবাবুর অন্ধের যষ্ঠি। রান্নাবান্না, বাজারহাট থেকে শুরু করে অশোকতরুবাবুর যাবতীয় পরিচর্যা সবই করে সে। কাজের একজন মাসি আছে অবশ্য। বাসন মাজা, ঘর মোছা, জামাকাপড় কাচার জন্য।অশোকতরুবাবু রুরকি আই আই টি -র অধ্যাপক ছিলেন মেটালার্জি বিভাগে। ষাট বছরে রিটায়ারমেন্ট। তার পরে বছর তিনেক এক্সটেনশান। কিন্তু স্বাভাবিক মেয়াদই তিনি শেষ করতে পারেননি। ... ...
ওরে পৌষ পার্বণ মোর ঘরের অঙ্গন রমনীর হাতের আলাপন।।
জমকালো উৎসব বাড়ি কীভাবে ঢুকেছে এক বেমানান ফেরারী জোকার। তাকে ঘিরে বাড়ছে ভিড় স্খলিত গুঞ্জন
অনুগল্প - ১ সবার উপরে মানুষ সত্যসজল অফিস যাওয়ার সময় বলে যায় তাপসীকে, যদি সম্ভব হয় একবার ব্যাংকে যেতে আজ। ব্যাংকের ম্যানেজার ত্রিদিব মুখার্জীর সাথে দেখা করতে। সজল একটা ফিক্সড ডিপোজিটের জন্য আবেদন পত্র জমা দিয়েছে, তাপসীকে সই করতে হবে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সামনে। তাপসীর কাজ আর শেষ হয় না সংসারের। সেই সকালে উঠে তাড়াহুড়ো করে সজলের জন্য কিছু রান্না করে অফিসে পাঠানো, বড় মেয়ে বুলি'র জন্য কিছু জলখাবার। ... ...
সাবধান গৃহী সাবধান, দু'বছর কেটে গেলো এ চোর বহুরূপী; বাছাবাছি শুরু হলো!
[প্রথম পর্ব - ১৭/১১/২০২১, দ্বিতীয় পর্ব ১৯/১২/২০২১ এবং তৃতীয় পর্ব ০৭/০১/২০২২ তারিখে প্রকাশিত] হামিদভাই ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা চলে গেলেন, কিন্তু একটা খোঁচা রয়ে গেল আমার মনে। এমন তো হবার কথা ছিল না। আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বালাইয়ের মুখের দিকে তাকালাম। বালাই এতক্ষণ কোন কথা না বলে চুপ করে শুনছিল, এখন ঘাড় কাত করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “কথাটা মন্দ বলেনি কিন্তু - রাজধানীর লোকেদের পেটে আর মুখে আনকথা”, তার চোখেমুখে ফিচেল হাসি, ... ...
[প্রথম পর্ব - ১৭/১১/২০২১ এবং দ্বিতীয় পর্ব - ১৯/১২/২০২১ তারিখে প্রকাশিত] “তা বাবুর কোথা থেকে আসা হচ্ছে? কলকাতা থেকে বুঝি?” “আজ্ঞে হ্যাঁ”। “কলকাতার কোথায় বটে?” আমি বললাম। “অ। আমি অবিশ্যি কলকাতার তেমন কিসুই চিনি না। এমনি জিগ্যেস করলাম। দুবার মাত্র কলকাতায় গেছি, পেথমবার ময়দানে । আরেকবার আলিপুরে। আলিপুরে পুলিশদের টেনিং দেওয়ার ইস্কুল আছে না? চেনেন?” ... ...
এক একটা এমন সময় আসে যখন মনে হয় গোটা পৃথিবীতে একমাত্র নিজেই একা নিজের স্বপ্নকে বিশ্বাস করি! সে বড়ো সুখের সময়, সে বড়োই দুখের সময়।
এ এক অদ্ভুত সময়। এ এক হননকাল। পৃথিবীতে কালান্তক করোনার আক্রমণের বাইরেও ঘটে চলেছে একটানা প্রাণঘাতী হননযজ্ঞ। না, ভাইরাস না। ভাইরাস মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু এখানে যার কথা বলা হচ্ছে, তা রীতিমতো আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষেরই নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক ভাবে নিত্যদিন ধ্বংস করা হচ্ছে, জল, জঙ্গল আবাসভূমি। এ এক অদ্ভুত সময়, যখন সাড়ম্বরে ধ্বংসসাধনের নাম দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন, বন্যাকে চিরস্থায়ী করার নাম হয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ, উচ্ছেদকে বলা হচ্ছে নগরায়ন, আর কর্পোরেট শকুনের নাম বেদান্ত। ... ...
দিনের আলোতেও দেখি সূর্যটা বড়ো ম্রিয়মান / ভরা পূর্ণিমায় দেখি কুয়াশায় ঘোরলাগা রাতের আকাশ
আর আমার রূপকথায় একটু নারীশক্তির প্রকাশ আছে। রাজা, রাজপুত্তুরেরা আর নায়ক নন, ভুল ভ্রান্তি ভরা সাধারণ মানুষ। রানিরা আর রাজকন্যেরা দুর্বল নন, অসহায় নন, তাঁরাই সক্ষম । বিপন্ন হলে উদ্ধারের ব্যবস্থা নিজেরাই করতে পারেন। নিঃসন্দেহে তাঁরাই নায়ক। তাঁরা নিজেরা শত্রুজয় করেন, কিন্তু বাহুবলে নয় বুদ্ধিবলে। রাজ্য উদ্ধার করেন, সুবুদ্ধির বলে। নারী-পুরুষের সামাজিক অসাম্য ঘোচাতে,নারীর আত্মনির্ভরতার প্রতি সম্মান জাগাতে এই দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি। ... ...
বড় বড় বইয়ের ঘ্যামা ঘ্যামা ব্যাপার, যেমন গড়ন তেমনই দাম। গুরুচণ্ডা৯ নিয়ে এসেছে চটি বই, যা একাধারে সস্তা ও পুষ্টিকর।
আঁকড়ে রেখেছে তোমাকে কারা, মাৎসর্য, মোহ, মদ, লোভ, ক্রোধ, কাম, হেঁটমুণ্ড ঊর্ধপদ শূন্য পরিণাম, বিন্দু থেকে জন্মগ্রহণ, সিন্ধু খুঁজে মরা, মাটির গহন ক্রোড়ে অন্তে উপচে পড়া, যা কিছু বাঁধন যাপন, ভেল্কিবাজি সার, আগেও সুড়ঙ্গ ছিল, শেষেও আঁধার।। এ বিরাট দুনিয়া দুইপায়ে হেঁটে চলে, ১.ক্ষমতা ২.যৌনতা। আমরা স্বীকার করি বা না করি এই দুই পায়ের উপরেই ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সৃষ্টি থেকে এতদূর এগিয়ে আসার সম্পূর্ণ ইতিহাস। যুগে যুগে দেশে দেশে ঘুরে ফিরে আসে এরই বিবিধ রূপ বিবিধ বিবর্তনজনিত আঙ্গিকে। ... ...
"পিপীলীকাগুলি যখন উচ্ছ্বসিত হইয়া ও আবেগে অসম্বৃত হইয়া ডানা মেলিয়া দেয় এবং প্রজ্বলিত হুতাশনে পড়িয়া "বি"দগ্ধ হইতে থাকে, তখন পিপীলীকাদের ভগবান কী করিয়া থাকেন ?"ধরা যাক আজ আমার যদি আর্লিংটন রোডের কুয়াশায় হেঁটে বেড়ানো একজন গার্লফ্রেন্ড থাকত, তাহলেও কি রবীন্দ্রনাথকে দিন দিন এরকম অর্থহীন মনে হত ? মনে হয়, হত না Iকম্বল বা ব্ল্যাঙ্কেট ধুতে গেলে দুজন লাগে ৷বিয়ে করার পক্ষে এটা একটা বড় যুক্তি , শীতকাল এলেই মনে পড়ে ৷আজ স্বপ্নে দেখলাম দীপাকে । ... ...
#বিচকে_২ পরদিন সকালে বাজারে বেছে বেছে চারাপোনা গামলায় তুলছিলেন তপনজ্যোতি দত্ত ।একশো ষাট টাকা কেজি। এর কম দামে খাওয়ার যোগ্য মাছ বাজারে পাওয়া গেল না। বাড়িতে তিনটে লোক। তপন-কনিকা দম্পতি ছাড়া তপনবাবুর এক ভাগ্নে তাদের সঙ্গেই থাকে। হাসনাবাদের ওদিকে বাড়ি। কলকাতায় সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ইংরীজিতে অনার্স পড়ে। মামার খুব ভক্ত এবং মামীর খুব প্রিয়পাত্র। কনিকার মতে ‘খুব করিতকর্মা ছেলে। মামার মতো লগবগে নয়।’ ... ...
#চাএরদোকান = #পর্ব৩ #মরমেতোমারআগুনজ্বালাও পাশাপাশি বিভিন্ন কর্ম সংস্থান এর সাথে যুক্ত লোকজন (পুরুষ) বসে আছে, হঠাৎ একজন মধ্যবয়স্ক পাশের ব্যক্তির #বুদ্ধি কম বোঝাতে যে উদাহরণ দিলেন সেটাই আসলে মূল আলোচ্য বিষয়
বাঁশি কখনোই আপন হয়নি সেই ভোরবেলা থেকেতবুও আশেপাশে কারও হাতে দেখলেইভাবের ঘরে অভাব হতো না;এক নাছোড়বান্দা বিকার দখলে নিতো তীব্রভাবে! 'মিলে সুর মেরা তুমহারা...পেয়ে বসেছিল এক অন্তঃসারশূন্য বিশ্বাস! তারপরে একসময়ে হস্তান্তর হলো বাঁশি প্রবল চাপের কাছে নতিস্বীকার!বেশ ভালো কথা; কিন্তু বাঁশি থাকলো না বেশি সময়!সে এক হেনস্থার কাব্য:সুরের থেকে অ-সুর হলো বেশিদর্শনের থেকে প্রর্দশনী!যাদের বেশি চিনি বলে দাবি করতাম-তারা অচেনা হয়ে গেল হঠাৎই! ধার করা বাঁশি হারিয়ে গেল; পরিচিতরা বিশ্বাস ভঙ্গ করলোআমি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলামআর হেনস্থা দুয়ারে এসে হাজির হলো! বললাম না,বাঁশি কখোনোই আপন হয়নি,আজও না!! ... ...
ছেলেটা কালোকোলো বেঁটেখাটো। ওর বয়সের অন্য ছেলেদের তুলনায় মাথায় বেশ নীচু । ওর মা সন্ধ্যার মতে ছেলে বারো বছরে পড়েছে। লোকজন বলে, বড় হলে মারাদোনার হাইটেরই হবে। তার বেশি বাড়বে বলে মনে হয় না। সে যাই হোক, রায় পাড়ার মাঠের চারিধারে দাঁড়িয়ে যারা ম্যাচটা দেখছিল তারা ওর ড্রিবলিং দেখে থ হয়ে গেল। তপন দত্তের ষাট বছর বয়েস হল। সারা জীবন মাঠে ময়দানে ঘুরে ঘুরে জীবন কাটল বা বলা যায় হেলায় নষ্ট হল। ... ...
বড় একা হয়ে যাচ্ছি দিন দিন, / এই ক্লান্ত পৌষ রাতের মাঠচরা / দানা-কুড়োনো ভীতু ইঁদুরের মতো / জ্যোৎস্না রাতে ঠুকরে বেড়াই বেদনা / কত হিমক্লীন্ন ব্যথা, পুরোনো হৃদয়ক্ষত।