এই তমসাচ্ছন্ন তামাশাকালে আমার মতো আত্মকেন্দ্রিকের (এখনো অবধি) কিছু এসে যায় না। ক্রনিক আমাশার মতো মাঝেমধ্যেই ঘুরেফিরে আসা তামাশা দেখে আমি তাই একান্তে বসে পাল্লা দিয়ে করে যাই এন্তার মস্করা, নইলে নিয়ত এসব দেখে শুনে রাতে ঘুমানো দায় ... ...
ভোটের মরশুমে দেখে যাও শুধু জনতার দরবারে নেতা নেত্রীদের চাপানউতোর আর প্রতিশ্রুতির প্লাবন। এমন রঙিন তামাশা অতীতে বাবুদের নাচমহলে বাঈজীর ঘাঘড়া ঘুরিয়ে খ্যামটা নাচনকেও হার মানায়। জনতন্ত্রের এমন আন্ত্রিকে আক্রান্ত অবস্থা দেখে ভারাক্রান্ত হয় মন। বলে নাকি Politics is the last resort of scoundrels. এসব দেখেশুনে আমার তিক্ত মনের শুশ্রূষায় Humour is the panacea in despair. ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … ঈশুর হাত ধরে টেনে বসায় সুমন। "আচ্ছা বাবা, ঘাট হয়েছে। এই হচ্ছে ফেমিনিস্টদের নিয়ে মুশকিল। এতো সিরিয়াস কেন তোরা? রসিকতাও বুঝিস না। তুম চলে যায়োগে তো ইয়ে পুনম ভি অমাওস মে বদল যায়েগী" - নাটকীয় ঢঙে চাঁদের দিকে হাত তুলে দেখায় সুমন। আগামীকাল পূর্ণিমা। তখন তার ঔজ্জ্বল্য চোখ ধাঁধানো। কটমট করে তাকায় ঈশু সুমনের দিকে। কিন্তু সেই দৃষ্টিতে আপাত উষ্মার আড়ালে কি প্রহেলিকাময় সূক্ষ্ম প্রশ্রয়ও লুকিয়ে আছে কুহেলিকার মতো? নাকি তা নিছকই সুমনের বিভ্রম! সুমনের নাটুকেপনা দেখে তুলি আর চুনি খিল খিল করে হাসছে। এবার হেসে ফেলে ঈশুও। সেই দূর্লভ ঐশ্বর্যময় হাসি! কালাহারিতে ইলশেগুঁড়ি! এমন কিছু মাধূর্যের চকিত ঝলক দেখার আশাতেই তো সুমন এসব চ্যাংড়ামি করে ... ...
দেওয়ালে প্লাস্টিক ইমালশন, তাতে ঝুলছে দূর্বোধ্য ছবি, নিয়মিত ডাস্টিং করা ঝাঁ চকচকে আসবাব, ওয়াল ক্যাবিনেটের মাঝে ৫৬ ইঞ্চি এলইডি টিভি, দুপাশে দাঁড়িয়ে লম্বকর্ণ জিরাফকন্ঠী বাঁকুড়ার বিখ্যাত ঘোড়া .... এমন মিউজিয়াম সদৃশ বাড়িতে থাকতে আমার দমবন্ধ লাগে। এমন বাড়ির ফুলকাটা ফলস্ সিলিংয়ে মাকড়সাও পেটে ডিম নিয়ে চারদিকে আটপায়ে দৌড়ে মরে ভাগ্যকে গাল পেড়ে - কেন যে মরতে ঢুকেছিলাম এ বাড়িতে! এখন নেক্সট জালটা কোথায় পাতি রে বাবা! প্রতি হপ্তায় তো ভ্যাকুয়াম ক্লীনার দিয়ে আপদ চাকরটা শোঁক শোঁক করে টেনে নেয় সব জাল। এদিকে লালা তো শুকিয়ে কাঠ! ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … মানবমনের জটিলতার তল পাওয়া অসম্ভব। যে দেশে ঢাকঢাক গুড়গুড় বেশি সেখানে অনেক কিছু প্রকাশ্যে আসে না। পাশ্চাত্ত্য পরিমন্ডল খোলা-মেলা। সংস্কার কম। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসুতায় অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা বেশি। মনোবৈজ্ঞানিক সার্ভেতে তাই অনেকে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়। লিপিবদ্ধ হয় কেস স্টাডি। তৈরী হয় ডাটা বেস। ফলে জানা গেছে অজাচার সম্পর্ক বা incestuous relationship এর কিছু সম্ভাবনার কথা ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … সুমন একটা সিগারেট ধরায়। চিন্তার গোঁড়ায় একটু ধোঁয়া দিতে হবে। মনযোগী শ্রোতার উৎসাহের হাওয়ায় ঘুড়ির সুতো তো ছেড়ে যাচ্ছে, গোটাতে পারবে তো? না হলে জট পাকিয়ে একশা হবে। এরপর তো আরো স্পর্শকাতর দিকে যাবে আলোচনা। ওরা নিতে পারবে তো? তবে ভরসা এটাই, এখনো অবধি ওরা শুনেছে নির্দ্বিধায়, কোনোরকম অস্বস্তি প্রকাশ না করে। তাই এমন খোলামেলা আলোচনা সম্ভব হচ্ছে ... ...
আজ ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবস। এই উপলক্ষে ডিজিটাল গ্ৰুপে কিছু সুশীল জনগণের নানা ভাবগম্ভীর বার্তা আসছে। আমার স্বভাবে জনৈক শ্রীগুরু বর্ণিত “খেলো টাইপস” রম্যরসের আধিক্য। ফলে নিজেকে আমি ঐ সমাজে ব্রাত্য মনে করি। তাই এই উপলক্ষে একটা “লঘু টাইপস” উপাখ্যান পেশ করছি। এটা প্রায় ৮৮ হাজার শব্দের এক দীর্ঘ স্মৃতিচারণমূলক আখ্যানের অংশ। যদি কখনো সেটা এখানে পোষ্ট করি - এই অংশটির পূনরাবৃত্তি হবে ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … সুমন বলে, পাঠ্যবিষয়ের বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে আমার আগ্ৰহ আছে কিন্তু তা নিয়ে বিশদে যথেষ্ট পড়াশোনা করার সামর্থ্য, সময় আমার নেই। কিছু বই পড়ে, সিনেমা দেখে, ঋদ্ধজনের কথা শুনে, নানা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বা আত্মবিশ্লেষণ করে কিছু বিষয়ে নানা বিক্ষিপ্ত ভাবনা ক্রমশ একটা আকার পায়। যখন কোনো বিষয়ে কিছু বলতে যাই সেই দানা বাঁধা ভাবনাই কথায় প্রকাশ পায়। তখন কোথায় কী পড়েছি, দেখেছি, শুনেছি মনে থাকে না। আমি যা ভাবছি সেটাই যে সঠিক তেমন দাবিও আমার নেই। সেই প্রসঙ্গে অন্য দৃষ্টিকোন থেকে কেউ কিছু বললে, তা মুক্তমনে ভাবার চেষ্টা করি। যুক্তিগ্ৰাহ্য মনে হলে তাও মনে থেকে যায়। এভাবেই মানুষের ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হয় বলে মনে হয় ... ...
বিখ্যাত গবেষক ডক্টর অনিরুদ্ধ বাসু উপলব্ধি করেন ভুলো মনের হয়ে গেলেও বাবার স্বাভাবিক বুদ্ধি এখনো বেশ প্রখর। ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … নানা বিক্ষিপ্ত চিন্তা এভাবেই সুসংহত ভাবনায় রূপান্তরিত হয়। না হলে চর্চার অভাবে ফিকে হয়ে যায়। অধিকাংশ মানুষ অকারণে অপমানিত হওয়ার ঘটনা সহজে ভুলতে পারে না, মনের মধ্যে জমা থাকে ঋণাত্মক অভিজ্ঞতার স্মৃতি। ক্ষেত্রবিশেষে তা উপরিতলে ভেসে ওঠে। তবে তা উপেক্ষা করতে পারা সেই ঋণাত্মক মানবিক প্রবণতার ওপর শুভবুদ্ধির জয়। এটা ধণাত্মক উত্তরণ। এ জিনিস আয়ত্ত করা সহজসাধ্য নয়। গভীর উপলব্ধি ও আত্মসংযমের ব্যাপার। তবে কখনো উপেক্ষা বা ক্ষমার আপাত মোড়কের অন্তরালে থাকতে পারে অক্ষমতা, কাপুরুষতা.. ... ...
এই চূড়ান্ত ব্যক্তি স্বাধীনতার দেশে কে কোন পোশাক পরবে , বিশেষ করে মহিলারা, তা মিটিং ডেকে ঘোষণা করতে পারি না, বোর্ডে লিখে দেওয়া অকল্পনীয় । তুল কালাম ঘটতে কতক্ষণ । দৈনিক সান পত্রিকায় বেনামে লেখা হবে , “ লন্ডনের ব্যাঙ্কে স্বৈর শাসন , ভারতীয় মূলের অফিসার দ্বারা নারী মর্যাদার অপমান “। আমার চাকরি নিয়ে টানাটানি । অতএব অত্যন্ত ট্যাকটফুলি আমার তৎকালীন সেক্রেটারি , বারমিংহামের মারিয়া লালিকে কে বললাম, তুমি এটা একটু হাওয়ায় ভাসিয়ে দাও দিকি। আমি বলেছি কেউ যেন জিনস অথবা ট্রেনার জুতো পরে না আসে । মেয়েদের পোশাক সংযত , আর ছেলেদের ক্ষেত্রে টাই বাদে সুট পরলেই সেটা ইনফরমাল হয়ে গেলো অথবা কম্বিনেশান – রঙ মিলিয়ে জ্যাকেট ও ট্রাউজার। টি শার্ট আউট অফ কোয়েসচেন , পুরো হাতা শার্ট কিন্তু টেকনিকলার জামা বাদ । কালো বাদামি যাই হোক না কেন, পরতে হবে বন্ধ জুতো । ... ...
যুদ্ধের পরে এই চোদ্দ বছরের অনিশ্চিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট এবং বামপন্থী দলগুলি অরাজকতা সৃষ্টি করার ফলে দেশের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে উঠেছে । গণতন্ত্রের যুগে ব্যক্তিগত ধন সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব নয় , এখন প্রয়োজন সবল নেতৃত্ব ও নতুন চিন্তা। সেটা আমি খুঁজে পেয়েছি জাতীয়তাবাদ এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক শক্তির ভেতরে । সামনের লড়াইটা বাম বনাম দক্ষিণের সম্মুখ সংগ্রাম । আমরা চাই ক্ষমতা দখল করে প্রতিপক্ষকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করতে কিন্তু এই লড়াই ততদিন স্থগিত রাখতে হবে যতদিন না আমরা একচ্ছত্র ক্ষমতা আয়ত্ত না করছি। মনে রাখবেন বামপন্থীদের হাতে আপনাদের ধন সম্পদ জমি জিরেত কল কারখানা কিছুই সুরক্ষিত নয় , একবার সোভিয়েত রাশিয়ার দিকে চেয়ে দেখুন! অর্থনীতি বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যা কিছু বরণীয় তা সম্ভব হয়েছে কোন দলীয় রাজনীতি নয় , একক ব্যক্তিত্বের ভাবনা ও চিন্তায় , নির্বাধ শক্তি ও ক্ষমতার বলে। সভাগৃহে তখনও আসীন গুম্ফ শোভিত ডক্টর হায়ালমার শাখট , যিনি পরে আবার রাইখসবাঙ্কের প্রেসিডেন্ট এবং ইকনমি মন্ত্রী হবেন । তিনি এতক্ষণ কোন কথা বলেন নি । হিটলার এবং গোয়েরিং বিদায় নিলে তিনি মুখ খুললেন “ এই ভোট যুদ্ধ জিততে গেলে , পার্টির হিসেব অনুযায়ী আমাদের অন্তত তিরিশ লক্ষ রাইখসমার্ক দরকার ( আজকের হিসেবে দু কোটি ইউরো অথবা একশ আশি কোটি টাকা) । এবার আসুন ক্যাশ কাউনটারে !” বাঘের পিঠে সওয়ার যখন হয়েছেন তখন নেমে পড়ার প্রশ্ন ওঠে না। ক্রেডিট কার্ড অনেক দূরে , চেক বই কেউ সঙ্গে আনেন নি । কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করার অধিকার তাঁদের ছিল – তাঁরা বিশাল প্রতিষ্ঠানের মালিক বা শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত । একের পর এক শিল্পপতি ডক্টর শাখটের চাঁদার খাতায় সই করলেন ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … এখন জোৎস্না উজ্জ্বল। তিনজন গভীর অভিনিবেশে তাকিয়ে আছে সুমনের দিকে। সুমন বলে চলে, "আদিমানবের আদিতেও ছিল কয়েক কোটি বছরের ক্রমবিবর্তনের ধারা। ফলে পশুসমাজের নানান প্রবৃত্তিগত বৈশিষ্ট্য আদিমানবের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছিল। বহু কোটি বছরের সঞ্চিত প্রবৃত্তিগত বৈশিষ্ট্য বা instictive characteristics মাত্র এক কোটি বছরের বিবর্তনের ফলে বিশেষ পরিবর্তিত হওয়া সম্ভব নয়। ফলে পশুসূলভ নানা প্রবৃত্তিগত বৈশিষ্ট্য বিবর্তিত মানুষের মধ্যেও সুপ্ত ভাবে রয়ে গেল.. ... ...
দুঃসময়ে ছোট্ট স্ফূলিঙ্গও জোগায় অবান্তর রচনা লেখার প্রয়াসে আত্মমগ্নতায় ডুবে থাকার দাওয়াই। লেখার উপাদান সংগ্ৰহকালে জানা যায় নানা চমকপ্রদ বা আনন্দময় তথ্য। পলায়নবাদীরা এভাবে এড়িয়ে থাকতে চায় বিষাক্ত বর্তমানের অভিঘাত। ... ...
যাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তাঁদের আমাদের মতো এমন সৌখিন চিন্তা ভাবনা করার ফুসরত নাই। শেষ মুহূর্তে কেনাকাটার হিড়িক লাগে কেন জানি। কিছু মানুষই আছে যারা কোন অজ্ঞাত কারণে সারা মাস কেনাকাটার আশপাশ দিয়েও যেতে রাজি না। প্রথম থেকেই নিয়ত পাকা যে তিনি যাবেন চান রাতেই! কেউ কেউ তো এমনও বলে যে চান রাত ছাড়া শপিং করে মজাই পাওয়া যায় না। কেউ চান রাত ছাড়া আবার ইদ শপিং হয় না কি? এমন প্রশ্নও করে। তো এই খদ্দেরদের জন্য চান রাতে চলে ভোর পর্যন্ত জমজমাট কেনাকাটা। রাত একটা দুইটা তিনটা যেন সন্ধ্যা রাত! ঢাকায় কোন দিন ইদ করা হয়নি। কিন্তু বন্ধুদের অনেকের কাছেই শুনেছি যে ঢাকায় চান রাতের জৌলুসের সাথে কোন কিছুর তুলনাই হয় না। দেড় দুই কোটি মানুষ চান রাতের আগে ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে। ঢাকা হাঁফ ছেড়ে গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা বের হচ্ছে তারা চলে ফিরে, দেখে শুনে, কিনে না কিনে আলাদা সুখ পাচ্ছে। ঢাকার জ্যাম ঘাম গরম যে দেখছে সে চান রাতে না থাকলেও অনুমান করতে পারে যে কতটা হালকা লাগছে সবার এই দিন! ... ...
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক গ্রন্থ "ভারত -- শেষ ধ্বংসের সন্ধিক্ষণে" (অভিযান পাবলিশার্স, মার্চ ২০২৪)'এর একটি সমালোচনা। ... ...
আশির দশকে যাদবপুরের কয়েকটি ছাত্রছাত্রী শুশুনিয়া পাহাড়ে গেছে শৈলারোহণ অভ্যাস করতে - সেই ভিত্তিতে এই আখ্যান … ঈশু বলে, "দ্যাখ জেঠু, এসব কথা বলতে কিন্তু আমারও খারাপ লাগছে যেমন লাগছে তোর শুনতে। কিন্তু এসব তো বাস্তব সত্য। হয়তো ভবিষ্যত সমাজে এমন অসাম্য, অবিচার থাকবে না। তখন আমাদের মতো কেউ এমন আলোচনা করবে কেবল অতীত বিচ্যূতি পর্যালোচনার জন্য। তবে আমার জীবদ্দশায় তেমন দিন আমি দেখে যেতে পারবো বলে মনে হয় না.. ... ...
জার্মানির ভাবী পরিত্রাতার দুর্বার জয়রথ ছুটে চলে সারা দেশে । মন্ত্রমুগ্ধ জনতা সভায় হাজির হয় তাঁর দুটো কথা শোনার জন্য – তিনি বারবার বলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি জার্মানিকে ফিরিয়ে দেবেন তার গর্ব, ষাট লক্ষ বেকার মানুষকে দেবেন কাজের সুযোগ , দেশ গড়বেন নতুন করে । যুদ্ধে পরাজিত অপমানিত জার্মান জাতিকে দেবেন সামরিক সক্ষমতা । তারা আবার মাথা তুলে জগতসভায় দাঁড়াবে। জনতা তাঁর মুখনিঃসৃত প্রতিটি শব্দকে আঁকড়ে ধরে । তাদের নিজস্ব ভাবনা চিন্তা লুপ্ত হয়েছে । নেতা একবার থামেন । জনতা দাবি করে আরও কিছু বলুন, আগে কহ আর । লক্ষ কি ? এক বিপক্ষ এবং সকল প্রতিরোধকে নির্মূলে বিনাশ করা দুই ভাইমারে তৈরি সাংবিধানিক বেড়াজাল চূর্ণ করা তিন এমন এক দেশ গঠন করা যা হবে হাজার বছর স্থায়ী তৃতীয় সাম্রাজ্য ( থার্ড রাইখ ) ... ...
আসবে তুমি ইস্ট কোস্টে - একটু আগে জানিয়ে - তখন আমি জর্জিয়া, মেইন, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা যেখানেই থাকি। খামোখা পশ্চিম উপকূলে একদা বান্ধবীর কাছে কদিনের জন্য গিয়ে কী করবে? অতীত সুরের সাথে বর্তমান ছন্দ মিলবে না। তাল কেটে মন খারাপ হবে। মনে রেখো It is not wise to travel down the memory lane. Take it easy. Take care, Lindsey" ... ...
দক্ষিণ দিক থেকে উদিত হলেন এক অস্ট্রিয়ান নাগরিক , যুদ্ধে কর্পোরাল হয়েছিলেন , দ্বিতীয় শ্রেণির আয়রন ক্রস ঝোলানো থাকে গলায় । মিউনিকের পাবে তাঁর বক্তিমে শুনতে ভিড় জমে যায় ( হোফব্রয় হাউসের তিনতলায় সেই হলটি দেখতে পাবেন ) ; তাঁর মতে জার্মানি একটা জেতা গেমে হেরেছে কারণ সৈন্য বাহিনীর পিছন থেকে ছুরি মারা হয় । তার জন্য দায়ী কমিউনিস্ট , ইহুদি ও কিছু চক্রান্তকারী বিদেশি । ৯ নভেম্বর ১৯২৩ শখানেক লোক যোগাড় করে ব্যাভেরিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের ব্যর্থ অভ্যুথানের পরে গ্রেপ্তার হলেন সেই নেতা , আডলফ হিটলার । সশস্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল ১৯২৩ সালে কিন্তু কোন অজানা কারণে তাঁর রেহাই হল নয় মাস বাদে । ২৭শে জানুয়ারি ১৯৩১ ডুসেলডরফের হর্ম্য মণ্ডিত ইন্দুস্ত্রি ক্লুবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ফ্রিতস থুসেন সমবেত ধনপতিদের উদ্দেশ্যে বললেন, আমাদের দেশের ভাবি পরিত্রাতার সঙ্গে আপনাদের আলাপ করিয়ে দিই -ইনি আডলফ হিটলার । লম্বা বক্তৃতা দেবার অভ্যেসটি ত্যাগ করে হিটলার মাত্র দশ মিনিট বললেন ... ...