এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ফেসবুক থেকে কিছু পুরনো লেখা

    sosen
    অন্যান্য | ১৮ আগস্ট ২০১২ | ১৮২১৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sosen | 111.62.102.126 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ২৩:১৯569773
  • অর্ধসমাপ্ত এবং অর্ধপ্রকাশিত একটা লেখা। ছিল ফেসবুকের পাতায়, এখানে রেখে গেলাম।
    ___________________________________________________________

    সবাই যখন ঘুমোয়, তখন স্বপ্নেরা জেগে থাকে. যা হতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি, যা না চেয়েও হঠাৎ হাতে এসে পড়েছে রাজৈশ্বর্যের মত, যা একদিন ছিল পরম আকাঙ্খিত আর আজ শুধু বিরক্তির উৎস...সেই সব অজানা মনকন্দর যেখানে আমিও আজ পা বাড়াতে ভয় পাই..স্বপ্নরা কেমন অনায়াসে পৌঁছয় সেখানে. তুলে নিয়ে আসে অজানা মণিমুক্তো,এক পশলা বৃষ্টি, শৈশবের দুধ-গন্ধ আবছায়া।

    কথোপকথনের এই টালমাটাল ভিড়ে স্বপ্নরাই হয়তো এখনো সত্যি কথা বলে.

    এই লেখা আমার স্মৃতিচারণ নয়. তাই এই লেখা chronological নয়. এই লেখায় মিথ্যে সত্যি মিশে থাকবে চালের মধ্যে সেই কাঁকর গুলোর মত, যাদের বেছে ফেলার দৃষ্টি আর আমার নেই. এই স্বপ্ন আমার, এই স্বপ্ন আরো মানুষদেরও, যাদের সাথে আমি ভাগ করি আমার বেঁচে থাকা, প্রত্যেক মুহূর্তে. তারাও কখনো আসবে এই সত্য মিথ্যের ভিড়ে নিজেকে মিশিয়ে দিতে...অন্তত আশা করবো আমি.।

    সত্যদার স্কুলভ্যান,ঈর্ষা আর ছেলেবেলা

    আমার স্কুল. আমি জানি আমার স্কুল আর নেই।

    সবাই রে রে করে উঠতে পারে. দিব্যি খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুলটা কে তুই "নেই" করে দিলি?

    কিন্তু সত্যি. আমার কাছে স্কুল মানে লাল-সাদা ইউনিফর্ম,আর লাল বাস,সবুজ বাস. নীল বাস ও কিছুদিন দেখেছি. কোনটাই আর নেই।
    আমার কাছে স্কুল মানে হরিকাকুর বাস। বাড়ি ফিরতি পথে ফাঁকা ধুধু সল্টলেকের মধ্যে ভেসে ওঠা জাহাজ বাড়ি। স্কুল মানে চরম নোংরা বাথরুম, তাই সারাদিন বাথরুমে না যাওয়ার কষ্ট, যেটা আমার বিভিন্ন স্বপ্নে এখনো ফিরে আসে। স্কুল মানে কদাচিত কখনো সত্যদার ভ্যানে চড়া।

    কোনটাই আর নেই. সত্যদা কি আছে, তৃণা?

    ছোট্ট সেই ভ্যান টায় যাওয়া কেন আমার কাছে চরম বিলাসিতা ছিল, তার উত্তর আমি জানিনা. আমি ঈর্ষার চোখে তাকিয়ে থাকতাম ভ্যান এ বসা তৃণা,পিউ,রিনি দের দিকে...যদি কেউ একজন না যায় তো সত্যদা আমাকে নিয়ে যাবেন।

    ঈর্ষা আমার বাল্যসঙ্গী. হস্টেল এর মেয়েদের ঈর্ষা হত...কেন? কে জানে বাবা...কিন্তু বড্ড ভালো লাগতো ওদের ট্রাঙ্ক ভরা ঐশ্বর্য, কত রকম খাতা, আর সব ওদের. খাতা আমার কাছে বড় লোভনীয়, সাদা সাদা লম্বা খাতা, রুল টানা বাংলা খাতা...আমার পাশে কোনো একসময় বসতো পাপিয়া সুর,তার কাছে একটা মানিব্যাগ ও ছিলো...তাতে টাকা পয়সা থাকতো. আমার সম্বল মাঝে মধ্যে আট আনা কি চার আনা...তাতে একটা আইসক্রিম মেলে. ভাবতাম বড় হলে আমার ও মানিব্যাগ থাকবে, আইসক্রিম আর খাতা কিনবো যত খুশি। আর কালির পেন।

    এখন আমার মানিব্যাগ আছে। তাকে পার্স বলে। অনেক খাতা আছে আমার, সব সাদা। আমি লিখিনা। আমি যা লিখি তা ছিঁড়ে ফেলি। অপূর্ণতা সেদিন ও ছিল, আজ ও আছে; স্বপ্ন কিভাবে তবে পূর্ণ হয়? কিভাবে আমি টিক অফ করবো আমার চাওয়া পাওয়ার লিস্ট?

    তৃণার কথা বলা পুতুল. সেটা কি এখনো আছে? সারা ছোটবেলা ধরে ওরকম একটা পুতুলের স্বপ্ন ছিল আমার। এখন ও আছে ...কিন্তু সেই ছোট ছোট হাতদুটো আর নেই যে ! তাই আমি আর কিনবনা কোনদিন ওরকম একটা পুতুল...কোনদিন আমার মেয়েকেও দেবনা হয়তো কিনে...মনে হয় ওরকম একটা পুতুল কিনলেই গুঁড়িয়ে যাবে আমার স্বপ্নটা...

    টুসি. সারা দুপুর ধরে আমাদের সেই অজস্র বিয়ের কার্ড নিয়ে খেলা. কেন আমি কখনও জমাতে পারিনি অতো কার্ড? প্রত্যেকবার কার্ড এলেই গুছিয়ে রাখতাম আর হারিয়ে ফেলতাম. টুসি কিন্তু হারাতো না. টুসি, তুই কি এই লেখা পড়ছিস? তোর মনে আছে আমাদের পিওন পিওন খেলা?

    কত কি যে চাইতাম. নিজের কাছে নিজের মনে আমি চেয়েছি এক লাইব্রেরী বই, রিপোর্ট কার্ড এ লেখা 1st শব্দ টা, শাশ্বতী র মতো গানের গলা, একটা স্কুল স্পোর্টসে ফার্স্ট হতে. কোনদিন ই পারি নি. স্বপ্ন গুলো তেতো হয়নি. স্বপ্ন গুলো নিয়ে কোনো অবুঝ বাবা মা আমাকে তাড়া করে নি আজকের বাচ্চাগুলোর মতো. কোনো ইঁদুরদৌড় তার রশি নিয়ে আমার সামনে দাড়ায় নি কখনো. কিন্তু কে আছে যে বুকে হাত দিয়ে বলবে তার ছিলনা এই রকম নিষিদ্ধ,বুকের ভিতরে চেপে রাখা চাওয়া? কার জীবনে ছিলনা এই তুলনা...যাকে আর একটু বাড়িয়ে তুললে পরশ্রীকাতরতা বলা চলে অনায়াসে? আর কি কোনো দিন ও আমার রিপোর্ট কার্ড এ প্রথম শব্দ টা লেখা হবে?

    জানিনা কেউ স্বীকার করবে কিনা. আমি স্বীকার করি, অকপটে। আমি চিনি আমার ক্ষুদ্রতা, আর হয়ত আমার জোরকেও, দুটো যে সমার্থক নয় তাই বা কে বললে?

    ভাবি...এই থেকেই হয়তো জন্মায় ক্ষুণ্ন, অবুঝ এক মা কিংবা বাবা ...যে জানে না কোথা থেকে তার জীবনে আসে সন্তানের প্রতি এত প্রত্যাশা...কেন সে চায় তার ছেলে বা মেয়ে সর্বসেরা হোক, সব কিছুতেই। সে যে আদৌ চেনেনা তার নিজের অপ্রাপ্তির উৎস।

    __________________________________________________________________________________________________________________________


    আগুন নিয়ে খেলতে গিয়ে পুড়েছে ঘর

    এখন শুধুই কুঁচকে ওঠা মাংস,কালো দেওয়াল?

    তা তো নয়

    ধূপের রাশি, পুড়েছে সব সুগন্ধ সঞ্চয়

    আমার স্পর্শে এখন ভরে তোদের ফ্ল্যাটের কোণ

    আমি তো নেই,এখন নেই আর কোথাও

    আমার কথা হারিয়ে ফেলার ভয়...

    নিজের কথা লেখা কঠিন নয় তত, যত না তাদের কথা লেখা, যাদের বাদ দিয়ে গল্প গড়ে ওঠে না। আর নিজেকে নিরাবরণ করতে গিয়ে যদি তাদের আবরণ টেনে নিই, তা তো ঠিক নয়। তাই বলেছি সত্য মিথ্যের মিশেল আমার এই হেঁশেলে। আমি তো তসলিমা নই। এখনো আমার অধিকাংশ বেঁচে থাকাই চাদরের আড়ালে, এখনো আমার সাহস দুঃসাহসের পথে পা বাড়াতে ইতঃস্তত করে। দরজায় গিয়ে ফিরে আসে বারংবার। এই আব্রু হঠাতে হয়তো কিছু সময় লাগবে....তার আগে অবধি এ শুধু আমার ই কথা....

    কিন্তু আমাকেই বা কে চেনে? জানিনা নিজেকে খুলে ধরার পর কৌতূহলী দৃষ্টি আমার সইবে কী না।তবু, শুরু যখন করেছি.....এক এক পা করে এগোনর চেষ্টা করতেই হবে তো। সেই চেষ্টায় রইল আমার দ্বিতীয় কিস্তি।

    আমি ও অক্ষর

    খুব খুব ছোটবেলায় অক্ষরের সাথে প্রেম শুরু আমার। অফিস থেকে ফিরে বাবা পড়ে শোনাত সুকুমার রায়, উপেন্দ্রকিশোর, কখনো নিজের খেয়ালে জীবনানন্দ, সমর সেন,বিষ্ণু দে। মুখস্থ হয়ে যেত সব। কচি গলায় আপাত-অর্থহীন সেই সব শব্দগুচ্ছের ঝংকার তুলে বাড়ি-ময় ঘুরে বেড়াত একটি শিশু, সকলে হাসতেন। যুক্তাক্ষর দিয়েই শুরু আমার পড়াশুনা, লিখতে পারিনা, কিন্তু পড়তে পারি, পাঁচ বছর বয়সে গড়গড় করে পড়ি এমনকি বঙ্কিমচন্দ্র,জীবনানন্দ । জীবনের নান্দীমুখে সেই যে একবার কবিতার হাত ধরিয়ে দিল বাবা, বাকি জীবন কী আর তার হাত থেকে ছাড় আছে আমার? কবিতা আমায় কী দিয়েছে তার হিসেব সারা জীবন ধরে ই মেলাতে হবে,সে আমার ক্লান্ত মাথা রাখবার বালিশ, আমার অরগ্যাজমের মুহূর্ত, আমার অনাগত সন্তান, সব, সব। কিন্তু সেই শিশুকালে কবিতা, আর তার সঙ্গে সঙ্গে ফাউ এর মত আসা আলমারী ভর্তি “বড়দের” বই আমায় ভয়ানক চাপে ফেলে দিত। পড়তে তো হবেই...ছাড়া কী যায়, “এই বন্দী আমার প্রাণনাথ” কিংবা আনন্দমঠের সেই “সমরে চলিনু আমি হামে না ফিরাও রে”...প্রসঙ্গত ছোটদের বই বাড়িতে বেশি ছিল ও না। ফলস্বরূপ ক্লাস ওয়ান বা টু তে, যখন নিজে নিজে খেতেও শিখিনি, তখন আমার মনোজগত অধিকার করে রয়েছেন প্রফুল্ল,আয়েষা, শান্তি, কিরণময়ী, এবং বোঝা না-বোঝার মাঝে অজস্র গল্পের/কবিতার স্রোত। আর মুখস্থ হয়ে গেছে কৃত্তিবাসী রামায়ণ, কাশীদাসী মহাভারতের কিছুটা, স্কুল বাসে ফেরার সময় নিজের মনে বিড়বিড় করি সেই সব। উঁচু ক্লাসের দিদিদের কাছে খোরাক আমি, মাঝে মাঝেই তারা বাসে ফেরার সময় ফরমায়েশ করে “এই একটু বল দেখি তোর ওই ছড়া গুলো”। আমিও বলতে থাকি...একেবারেই না বুঝে যে কেন এরা হেসে গড়িয়ে পড়ছে, এবং বাস থেকে নেমে গলির মুখ থেকে বাড়ি হাঁটতে হাঁটতে আমি ও হাসি...এই ভেবে যে এরা কিছুই জানে না! রামের বনবাসে যাওয়ায় কত দুঃখ হয়েছিল আমার, কৌশল্যা “মুর্চ্ছিত” হয়ে পড়ছেন... ওই জায়গাটা বলতে বলতে আমার চোখে তো একটু জল ও আসে...তারপর ধর গিয়ে তাড়কাবধ, পাশের রঙিন ছবি টা কী ভয়ংকর, ওটা হাত দিয়ে চেপে রেখে পড়তে হয় আমায়, তাকে মারা কী সহজ কাজ! আমার কাছে সেটা হল থ্রিলার...এদের হাসি পায় কিসে? নাঃ একেবারেই অবোধ।

    এদিকে বাড়িতে মা বই এর আলমারী তে চাবি লাগিয়ে দেয়। কারণ আমি এখন শংকর এর রূপতাপস নামিয়ে ফেলেছি, এবং স্বর্গ মর্ত্য পাতাল। এবং আমার স্কুল কাম পাড়াতুতো বন্ধু মিষ্টু ওরফে অনিন্দিতার মা, আর আমার কাকিমা, যিনি কিনা আমার স্কুলেই পড়ান, দুজনেই মা কে সাবধান করেছেন....এই কী এসব বই পড়ার বয়স? মেয়ের মাথাটি যে অসাবধানে খেয়ে ফেলছিল তা বুঝে মা ও সাবধান হয়েছে।

    আমি ছটফট করি। আমি আলমারির চাবি চিনি না, যত চাবি পাই তা দিয়ে চেয়ারে উঠে আলমারী খোলার চেষ্টা করি। আমার সব আনন্দমেলা পড়া হয়ে গেছে। আমার পাশের বাড়িতে অমিতের কাছ থেকে চেয়ে আনা শুকতারা পড়া হয়ে গেছে। আমার শরীরের মধ্যে অজানা শূন্যতা পাক দিতে থাকে, কারণ মা বলেছে ওসব বই বড় হলে পড়বে। বড় হওয়া? সে তো অনির্দিষ্ট কাল। এদিকে রূপতাপস এ ভাস্কর দীনবন্ধুর সামনে যে মডেল দাড়িয়ে ছিল সে যে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। আমি না গেলে কী তার মুক্তি আছে? সমস্ত অস্তিত্ব শরীরের একদম ভিতরে কোনও এক বিন্দুর দিকে কেন্দ্রাতিগ বেগে ঢুকে যেতে চায়, এই আশ্চর্য অসহায়তা সে শিশু র কাছে নতুন।

    অনেক অনেকদিন পর, যখন পৃথিবীর অন্যান্য রহস্যের সাথে চেনাশুনো হয়ে গেছে, তখন এক রাতে আমার মনে পড়েছিল সেই অদ্ভুত যন্ত্রনার কথা,আর আবিষ্কার করেছিলাম, ঠিক যেভাবে এই রাতে নিতান্ত জৈবিক ইচ্ছায় কোনও এক স্পর্শের জন্য কাঁপছে আমার শরীর, ঠিক সেই ভাবেই হলদে হয়ে ওঠা বই এর পাতায় কতকগুলো কালো হরফের তৃষ্ণায় ছটফট করেছিল সেই সাত আট বছরের শিশু। অক্ষর, সে ছিল আমার জীবনের প্রথম পুরুষ। আর সেই আটকে রাখা সময় ছিল আমার রতিহীন রাত্রি।

    _______________________________________________________________________________________________

    বাবার পাশে শুয়ে কবিতা শুনতে শুনতে কান্না আসে আমার। হু হু কান্না, বাবার পেটে মাথা গুঁজে।

    বাবা অবাক। তাড়াতাড়ি উঠে বসে জিগগেস করে, কী রে, কী হল....

    বাবার কাছে জমিয়ে রাখা সব অভিমান বেরিয়ে আসে আমার, নালিশ আর কান্না।

    ________________________________________________________________________________________________

    তারপর একদিন আমার আলমারী র চাবি খুলে যায়। বাবার হস্তক্ষেপে। বড় হয়ে শুনেছিলাম, বাবা মা, কয়েকজন অন্য বন্ধুবান্ধবের সাথে আলোচনা করে ঠিক করেছিল যে যখন মেয়ে বই পড়ছে, তাকে পড়তে দেওয়াই হোক। শুধু তাই নয়, বাবা আমাকে নিয়ে গেল লোকাল লাইব্রেরী তে। ছোটদের বই পড়ার কার্ড করে দিল। আর আমার আনন্দ ও প্রশ্নের উত্‍স হয়ে উঠল আমার অক্ষরের জগত। আমি ফেলুদা পড়ে বাবার কাছে প্রশ্নের ভাণ্ডার খুলে বসি, হর্ষবর্ধন আর গোবর্ধনের গল্প পড়ে নিজের মনে হেসে লুটোপুটি খাই, আবার এক ই সাথে দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ পড়ে রেগে রেগে উঠি, কোথাও কোথাও কনফিউজড হয়ে যাই, কেন সাহেবেরা মেয়েদের ধরে নিয়ে যায়, জন-অরণ্যে কণা বা অন্যান্য দেহব্যবসায়িনীরা আসলে ঠিক কী করে? কেন সোমনাথের প্রয়োজন হয় ওদের? বোধের জগতে যে আলোড়ন চলতে থাকে তার উত্তর খোঁজার ও সময় নেই আমার,কারণ সামনে আরও বই, আর পড়তে থাকলেই উত্তর পেয়ে যাব এরকম বিশ্বাস। মাঝে মাঝে বড়দের কথার মাঝে বই থেকে পড়া এমন সব কথা বলে বসি যে লোকে অকালপক্ক বলে, আর সবাই মিলে আমার বাবাকে দোষ দেয়, ছোট্ট মেয়েকে ওই সব হাবিজাবি পড়ানোর জন্য। আমার তাতে কী? বেচারা বাবা।

    আমার বন্ধুসংখ্যা বেশ কম। আমি পড়াশুনোয় খুবই ইনকনসিসটেন্ট , এই অংকে ভীষণ ভাল করলাম, তো ইংরেজিতে খুব খারাপ। পরের উইকলি পরীক্ষায় ঠিক উল্টো। মিষ্টু মা কে এসে বলে “জানো কাকিমা, সোনা পরীক্ষার মধ্যে না লিখে জানলার বাইরে তাকিয়ে থাকে।” মা আমার ঝুঁটি ধরতে যায়, আমি পালাই। সত্যি কথাই, কিন্তু মাঝে মাঝেই পরীক্ষার মধ্যে কিছু মনে পড়ে না ছাই। আর জানলার বাইরে কাগজ ফুলের গাছ গুলো কী সুন্দর...ঠিক যেন ইভান তুরগেনেভ এর বই তে রাশিয়া র সামার।

    তাছাড়া আঙুলে গুণি, এই সপ্তাহে আনন্দমেলা বেরবে। আর বিকেলে লাইব্রেরী গিয়ে কী কী বই নিতে হবে? আমি লাইব্রেরী র দিদিদের বিরক্ত করে মারি ভিতরে ঢুকে নিজে হাতে বই নেওয়ার জন্য, আর এক সময় ওঁরা হাল ছেড়ে দেন। আমি ভিতরে ঢুকে বসে থাকি, যতক্ষণ না মা বাইরে থেকে চেঁচামেচি করে। পুরোনো বই গুলোর কী সুন্দর হলুদ পাতা। বাড়ি গিয়ে কী হবে?

    এই সময়ে, ক্লাস টু তে পড়তে আমি একদিন লিখে ফেলি আমার প্রথম কবিতা...তাপসী।এর পরের অনেক লেখা, অনেক ছিন্নতার গল্প আমার মনেও নেই, কিন্তু এই কবিতার নাম আমার মনে আছে। এ যেন আমার প্রথম ফিরিয়ে দেওয়া স্পর্শ,আর প্রথম ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ দুই ই ।

    অক্ষর, এতদিন তোমার রুক্ষ হাত, ফাটা ঠোঁটের আদরে তুমি শুধু দিগভ্রান্ত করেছ এক বালিকা কে। চোখের উপর মুঠো মুঠো ছুড়ে দিয়েছ তোমার নানা রঙের আবির, আর অন্ধ করেছ আমায়। কী ভেবেছিলে, আমি সবসময় অবরুদ্ধ হয়ে থাকবো তোমার ম্যাজিক কুঠুরি তে? কোনদিন ফিরিয়ে দিতে পারব না তোমার ওই দম বন্ধ করা আলিঙ্গন? না, আমি পেরেছি। তোমায় মুঠি বন্ধ করে হাতের তালুতে নিয়ে আসতে পেরেছি আমি, নিয়ন্ত্রণের যুদ্ধে এইবার আমিও তোমার সামনে দাঁড়ালাম। দেখা যাক কত গেম তুমি দিতে পারো আমায়! দেখি কে জেতে শেষ অবধি।



    ____________________________________________________________________________________________

    কেমন করে বড় হয় শিশুরা?

    সেদিন Delhi Belly দেখছিলাম। অনেকদিন পর রাশিয়ান ডল দেখলাম। জানিনা ওগুলো এখন আর পাওয়া যায় কী না। আমাদের ছোটবেলায় যেত। একটা পুতুল খুললে আর একটা, আর সেটাকে খুললে আর একটা.....বেশ একটা ক্রমান্বয়িক জটিলতা, আর সারপ্রাইজ ছিল ব্যাপারটায়। আমার সব থেকে ভাল লাগতো একদম ভিতরের পুতুলটা। সবচেয়ে ছোট্ট, আর যেন সবচেয়ে ভালনারেবল(বাংলা খুঁজে পেলাম না)। ওটাকে ঢেকে রাখার জন্য, সুরক্ষিত রাখার জন্য ই যেন বাকি পুতুল গুলো তৈরি হয়েছে, নতুবা ওদের কোনও প্রযোজন ছিল না।

    আমার কেমন যেন মনে হয় আমরা ও সেই ভাবেই বড় হই। এক এক স্তর বয়সের পরত জমে মিহিন শিশুমনের গায়ে, আরক্ষার বর্মের মত...আমার টিন-এজ, আমার কলেজি ওস্তাদী,আমার কাজের জগত্‍, পৃথিবী যত সুরক্ষার পাপড়ি ঝরিয়ে ঝরিয়ে আমায় ছুড়ে দিচ্ছে এক উত্তাল তরঙ্গের মাঠ থেকে আর এক ব্রেকার এ, ততই আমি গুটিয়ে যাচ্ছি, আর নিজেকে ভরে ফেলছি একের পর এক কৌটোয়...আমার চামড়ার রঙ বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে, প্রয়োজনের রঙ ও, আমি হাতিবাগানের ফুটপাথ ছেড়ে ঢুকে পড়ছি সাউথ সিটি মল এ...আমার পোশাকের লেবেল ক্রমে ভীষণ জরুরী হয়ে উঠছে, বাইরের দিকে থাকলেই ভাল হয়....আমি দেঁতো হাসির মুখোশ পরে বাড়ি থেকে বেরোই, আর পরে থাকি সারা দিন, কারণ সবাইকে খুশি রাখা দরকার.....এইসব ই কী আসলে কবচ নয়? এই সবই কী আসলে সেই করুন মিথ্যের অংশ নয়, যে আসলে ওসব আমি নয় , কিন্তু আমায় যে দলে ভিড়তেই হয়, আমায় গড্ডলিকার স্রোতে নিজেকে ভাসাতে হয়...কারণ দলহীন হয়ে থাকার জোর আমার নেই, আমাকে বাঁচাতে হয় ভীষণ ভীষণ স্পর্শকাতর এক শিশুকে দুহাতের অঞ্জলিতে,কোনও উদ্ধত কথা-তরবারির আঘাতে হঠাত্‍ না হারিয়ে ফেলি তাকে, সে না থাকলে আমি যে কিছুই নই। যখন নিতান্ত কাছের মানুষেরা ও বোঝেনা তাকে, হঠাত্‍ যখন কোনও কঠোর শব্দ, রুক্ষ ব্যবহার, খুঁজে পায় আমার এই বর্মের দেওয়াল এ চিড়,আর সোজা গিয়ে বেঁধে তার নরম শিশু-চামড়ায়, তখন আমাকেই যে তাকে কোলে নিতে হয়, তার শুশ্রূষা যে আর কেউ করবে না! সেই মুহূর্ত গুলোতে, যখন সব কান্নাই দেওয়ালে মাথা ঠোকা, সব নিজের জন অচেনা, সব অক্ষর, সব আঙুলে দোষারোপ,তখন মেমরিজ ইন মার্চ এ ঋতুপর্ণ র মত নিজের কাঁধে নিজেকেই হাত রাখতে হয়...নিজেকেই যে হয়ে উঠতে হয় নিজের মা। আমার ভিতরের ছোট্ট রাশিয়ান ডল টাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাই কৌটো গুলো খুব, খুব জরুরী।

    __________________________________________________________________________________________

    ৪।
    আগেই বলেছি এই লেখা chronological নয়, এবং সে অর্থে আমার আত্মকথাও নয়। তাই প্রসংগের চাহিদায় একটু এগিয়ে যাচ্ছি....সাল হিসেব করলে ঊননব্বই নব্বই এর আশেপাশে।

    আমি নাটক করতাম। স্কুল, পাড়ায়, একটু বড় আসরেও।

    পাড়ার নাটক দিয়েই বোধহয় আমার অভিনয় করা শুরু। আমাদের পাড়ায়, দাসভিলায় প্রচুর ফাংশন হতো। আর তাতে ছোটদের একটা, বড়দের একটা নাটক তো হতই। বার্ষিক উত্সবে এই নাটক গুলো খুব ইমপর্ট্যান্ট, বেশ একটা প্রতিযোগিতামূলক ব্যাপার ছিল। রোজ স্কুল থেকে ফিরে আমরা রিহার্সাল এর জন্য দৌড়তাম। বিভিন্ন সাইজের ছেলেমেয়ে...অবশ্য ছেলেগুলো একেবারেই এসব এ ঘাড় পাততো না, বেশির ভাগ ই মেয়ে। সদ্য কিশোরী, কৈশোরের দোরগোড়ায় দাড়ানো,অথবা কৈশোর পার হব হব সেই সব নাটুকে মেয়েদের দলে আমি ছিলাম এক হঠাত্‍ আবিষ্কার। আবিষ্কার নিজের কাছে, যে ছোটবেলার সেই কল্পরাজ্যে ঘুরতে ঘুরতে কখন আমি ঠোঁটে তুলে নিয়েছি তাদের কথা বলার ধরন, তাদের ঘাড় ঘুরিয়ে তাকানো, তাদের ভাল মন্দ ম্যানারিজম। সোজা কথায়...হঠাত্‍ আমি বুঝতে পারলাম, যে আমি অভিনয় করতে পারি, শুধু পারি নয়, বেশ ভালই পারি। আর ভালওবাসি, নিজেকে ভুলে একটা অন্য আমি হয়ে উঠতে।

    এই স্মৃতি আমার প্রথম নাটক নিয়ে-মনোজ মিত্রের “ আমি মদন বলছি”। আমার পার্ট ছিল একটা ছোট চরিত্র। আমি রিহার্সাল এ নিয়মিত সময় পৌঁছে যেতাম, আর বইটা কে করে ফেললাম মুখস্থ। আমাদের পাড়া তুতো ডাইরেক্টর এর নাম ধরা যাক “র” বাবু। জানিনা তিনি এখনো বেঁচে আছেন কিনা, এবং স্ব-বিক্রমে বাচচাদের নাটক শেখাচ্ছেন কী না। তাই নাম লেখা থেকে বিরত হতে হল। এই “র” বাবুর উচ্চতা ছিল চার ফুট কিছু ইঞ্চি,বয়স ৩৫-80। আমাদের মধ্যে যারা একটু লম্বা তারা ওনাকে মাথায় ছাড়িয়ে যেত। এই “র” বাবুর প্রধান দুর্বলতা বোধ হয় ছিল ছোট ছোট মেয়েরা। অভিনয় উনি ভালই শেখাতেন, খুব ই ভাল, কিন্তু তার সাথে সাথে চলত অন্যরকম কাজ, যেগুলো বোঝার বয়স ক্লাস টু-থ্রি তে পড়া মেয়েদের হয়না।আমার ও হয় নি, ততদিন।

    এই নাটক এ প্রধান চরিত্র ছিল মদন। সেই রোল টা ছিল সোমাদির, একটি বেশ বড় বছর পনের বয়েসের মেয়ের। সে খুব সম্ভবত তখন মাধ্যমিক দেবে। ফলে অর্ধেক দিন ই সে রিহার্সাল এ আসতো না। অন্যদের কাজ চলে কী করে? বিশেষ করে জুলিদি(তৃণা,কোন জুলিদি বুঝতে পারছিস), যার রোল মন্ত্রীর, সে ভারী রেগে যাচ্ছিল। তার রিহার্সাল ঠিকঠাক হয়েই ওঠে না।তখন প্রক্সি দিতে আমার আবির্ভাব, যেহেতু গোটা বইটা আমার কণ্ঠস্থ এবং দু-চার দিন পর সোমা বেচারী কে তার প্রধান চরিত্র থেকে বাদ ই দিয়ে দেওয়া হল। সে চলে এল আমার জায়গায় আর আমি তার।

    এখন মনে হ্য় সোমা বুঝি ইচ্ছে করেই রিহার্সাল এ আসতো না। প্রায় সব সিন বোঝাতে গিয়েই “র”বাবু আমাদের জড়িয়ে ধরতেন। উচ্চতা টা ছিল সুবিধাজনক, ফলে আমি, মিঠুন, রুমা, কৃষ্ণা, এই রকম চার পাঁচটি মেয়ে তাঁর সুনজরে পড়লাম। আমরা, বা আমাদের অপরিণত শরীর। তার সাথে সাথে আমাদের অপরিণত মন। প্রথম প্রথম কিছুদিন অবাক হয়ে ভাবলাম, এই লোকটা এভাবে কেন গায়ে হাত দেয়। সেই বালিকাবুদ্ধিতেও বুঝতে পারছিলাম যে ব্যাপারটা ঠিক নয়, সুবিধার নয়। কিন্তু কাকে কী বলব জানিনা। রিহার্সালের সময় যথাসাধ্য বেঁকেচুরে শরীরটাকে ওঁর হাত থেকে দূরে সরিয়ে রাখাই আমাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়াল। নাটক করব কী?

    এই রকম দু একজন কাকু-জেঠু-অনাত্মীয় বোধ হয় সবার জীবনে থাকেন। এই রকম পুরুষ দিয়েই অনেকের জীবনে যৌনতার দীক্ষা, যার সাথে মিশে থাকে ঘৃণা আর অসহায়তা। আর একটু বড় হলে আমরা মেয়েরা শিখে ফেলি এই রকম পুরুষদের উড়িয়ে দিতে, প্রতি-আক্রমণ দিয়ে, প্রতিবাদ দিয়ে। কিন্তু শিশুর গলায় তত জোর কই?

    প্রায় ই “র” বাবু আমাদের ডেকে নিতেন নিজের ছোট্ট বাড়িতে, বিশেষ “মনোযোগে” পার্ট শেখাতে। এইরকম ই একদিন আমি ওঁর হাত আঁচড়ে দিয়ে পালিয়ে আসি। বিশেষ “মনোযোগ” আর সহ্য করতে না পেরে। বাড়ি এসে রাগে আর কান্নায় কাঁপতে থাকা সেই লাল মুখের শিশুটিকে আমি এখনো দেখতে পাই। তার সঙ্গে আমার এখন আর তত যোগ নেই, কিন্তু চরম অসহায়তার মুহূর্তগুলোতে, হাঁটু তে মুখ গুঁজে কম্পমান সেই শিশুটিকে দেখে বড় মায়া হয়।

    পরের দিন নাটকের রিহার্সালে আমি গিয়েছিলাম। নাটক এর তখন আর দিন পাঁচেক বাকি। সেই সময় আমাকে সরিয়ে আর কাউকে নেওয়া সম্ভব ছিল না।নাটক হয়, আর খুব ভালই হয়। শেষ সিনের পর মঞ্চ থেকে নেমে প্রচুর হাততালি র মধ্যে “র” বাবু যখন আমাকে আর একবার জড়িয়ে ধরেন, সেই জড়িয়ে ধরায় কিন্তু আর কোনও গ্লানি আমি খুঁজে পাই নি।

    আজ, তিরিশ বছরে দাঁড়িয়ে আমার উপলব্ধি বলে, ঘটনাটা আমার কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছে। কিন্তু রয়ে গেছে সেই কম্পমান শিশুটি,সেই সবচেয়ে ভিতরের দুর্বল আর প্রতিরোধহীন রাশিয়ান ডল। যখনই বাসে,ট্রেনে, অচেনা হাতের আক্রমণে বিরক্ত হয়েছি, হতচকিত হয়েছি, যখনই এই তৃতীয় পৃথিবীর অজস্র বাধানিষেধের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়ে হয়ে জন্মাবার কৈফিয়ত দিতে হয়েছে, দিতে হয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মে সব হিসেবনিকেশের বাইরে পা বাড়াবার মাশুল, তখনই একলা অভ্যন্তরে তাকিয়ে দেখতে পেয়েছি সেই দু হাঁটুতে মুখ গুঁজে থাকা নিরুদ্ধ অস্তিত্ব কে। সে আমার দ্বিতীয় সত্তা হয়ে উঠেছে ধীরে ধীরে, গোপন, লুক্কায়িত। এই পৃথিবীতে অতি অল্প লোকই দেখেছে তার মুখ। তিরিশ বছরের রক্ষাকবচের আড়ালে, সেই অস্তিত্বই তো আমি।

    _____________________________________________________________________________________________
  • 4z | 109.227.143.99 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০০:৩১569884
  • খালি একটাই বাজে বকলি। তুই আবার কবে পড়শোনায় ইনকন্সিস্টেন্ট ছিলি?? ওটা তো জানতাম আমার ডিপার্টমেন্ট। যাক, চালিয়ে যা।
  • sch | 125.242.144.124 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০১:১৩569995
  • প্রত্যকের ছোট থেকে বড়ো হয়ে ওঠা - বড়ো থেকে বুড়ো হয়ে যাওয়া কতগুলো টুকরো টুকরো গল্প। প্রতিটা গল্প unique
    আপনি ভাগ্যবান সোসেন - এই টুকরোগুলোকে গাঁথতে পারার ক্ষমতা আছে আপনার
  • nina | 78.34.167.250 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০১:৩৫570100
  • মেয়েকথার এক নিঁখুত প্রতিবেদন----চুপকথায় জানাই মুগ্ধতা!
  • sosen | 125.184.62.122 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৬:৫৬570111
  • 4z , আমিও ছিলাম-সব ক্রেডিট একলা নিতে নেই, ভাগ করে নিতে হয়!
    Sch , নিনাদি, পড়ার জন্য থেঙ্কু! :)
  • a x | 118.195.223.142 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৭:১৪570122
  • ভালো লাগল। লেখার স্টাইল, ফ্লো, শব্দ, সবই।
  • pipi | 183.161.6.201 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৭:৫৯570133
  • ভারী অদ্ভুত তো! সোসেনের লেখা পড়তে পড়তে আমি অন্য একটা পুঁচকিকে দেখতে পেলাম পরিষ্কার! একদম এই এই এইরকম যেমনটি সোসেন লিখেছে। এহ আজ সবাই খালি মন খারাপ করিয়ে দিচ্ছে, ওপাশে দমদি এপাশে সোসেন।
  • | 60.82.180.165 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৯:০৯570144
  • বাঃ!
  • aka | 85.76.118.96 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০৯:১৭570155
  • সোসেনের লেখা ভালো লাগল।
  • kk | 117.3.243.18 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ১৮:৫৭569774
  • খুব ভালো লাগলো।
  • Blank | 69.93.196.44 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ১৯:০৯569785
  • ভাল্লেগেছে
  • maximin | 69.93.245.126 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ১৯:১৩569796
  • ভালো লাগল সোসেন, খুবই ভালো লাগল।
  • sosen | 111.62.86.141 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ১৯:১৫569807
  • সবার ভাললাগা দেখে আমারো ভালো লাগলো-:-)
  • kumu | 24.98.102.169 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২১:৪৬569818
  • খুব আন্তরিক।
  • রোকেয়া | 213.110.246.230 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২১:৪৭569829
  • ভাল্লাগলো| না, ঠিক ভাল্লাগা না, চুপ করে থাকলাম পড়ার পর|
  • san | 24.96.60.69 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২১:৪৮569840
  • ভালো লাগছে । আরো লেখো।
  • 4z | 209.7.156.135 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২২:০২569851
  • শাশ্বতীর মত দৌড়নো আর চৈতির মত রেজাল্ট মনে হয় আমাদের সবার স্বপ্ন ছিল। ইস্কুলের দিনগুলোকে এভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য তোর একটা খাওয়া পাওনা হল। যা যা রান্না করতে পারিস রেঁধে খেয়ে নিস :)
  • sosen | 125.241.97.202 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২২:০৮569862
  • সেই শাশ্বতী এখন শুধু ছানাদের পিছনে দৌড়ায়। গান ও ছেড়ে দিয়েছে।
    হতভাগা- শাশুড়ির কাছ থেকে চাট্টি রান্না শিখতে পারিসনা?
  • 4z | 109.227.143.99 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ২২:১৮569873
  • :)
    শিখতে পারব না কেন? কিন্তু শিখলেই তো আবার রাঁধতে হবে। অত খাটতে পারব না বাপু।
  • siki | 96.98.43.85 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০১:০৮569885
  • চুপ করে রইলাম। কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।
  • sosen | 125.242.253.120 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০৮:৪২569896
  • আমার লেখার কি ভালো রেসপন্স বলতো! সবাই নীপা হয়ে যাচ্ছে।
    জোকস এপার্ট- সবাইকে থেঙ্কু। পরের কিস্তি লেখার চেষ্টায় আছি।
  • Abhyu | 107.81.70.229 | ২০ আগস্ট ২০১২ ০৮:৪৯569907
  • এতক্ষণে পড়লাম। সুন্দর।
  • | 24.99.73.4 | ২০ আগস্ট ২০১২ ২০:৪৮569918
  • সোসেনের লেখার স্টাইলটা ভারী ভাল তো। এইটা চলুক না আরও।
  • ব্যাং | 132.172.193.128 | ২০ আগস্ট ২০১২ ২০:৫৯569929
  • সোসেন,
    পড়ছি কিন্তু। পরের কিস্তির অপেক্ষায় আছি।
  • sosen | 111.62.107.233 | ২০ আগস্ট ২০১২ ২১:২১569940
  • হবে। সময় লাগছে। ল্যাদ খাচ্ছি । তাছাড়া ওই যে সব খুলে চামড়া দেখানোর অস্বস্তি। ও কাটে না।
    সবাইকে এত্ত ধন্যবাদ।
  • nina | 78.34.167.250 | ২১ আগস্ট ২০১২ ০৩:৪৬569951
  • অস্বস্তির কিচ্ছু নেই সোসেন---সব্বার নিজের নিজের আকাশ জোড়া লেখা তাকিয়ে থাকে---
    সবাই কি লিখতে পারে?
    যে পারে , সেই পারে---
    অপেক্ষায় রইলাম--
  • Swati | 76.135.100.194 | ২১ আগস্ট ২০১২ ০৪:৪৪569962
  • খুব ভাল লাগছে পড়তে, ভারি স্বচ্ছন্দ অনায়াস লেখার ভঙ্গী। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
  • i | 147.157.8.253 | ২১ আগস্ট ২০১২ ০৫:২০569973
  • সবার ভালো লাগায় গর্ব হোলো ; অনেকদিন থেকে বলে আসছি এখানে লিখতে..
  • sosen | 125.184.102.160 | ২১ আগস্ট ২০১২ ১১:২৬569984
  • ছোটাইদি,
    :) আর কিছুই বললাম না- তোমাকে আর থেঙ্কু বলি কি করে!
    নিনাদি,স্বাতী-
    চেষ্টা করছি- :)
  • mila | 134.155.204.47 | ১০ অক্টোবর ২০১২ ১২:০৫569996
  • লেখা তা খুব ভালো লাগলো, গল্পের বইয়ের জগত টা আমারো অমনি ছিল
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন