এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চিকিত্‌সার হাল্‌হকিকত কলকাতায়

    I
    অন্যান্য | ০৯ জুলাই ২০০৮ | ৭৫৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | 59.93.242.82 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২০:১১399194
  • না:, টইয়ের অবস্থা গুরুচরণ। পাশে বাংলা আসে না, গাদাগাদা পোকা :((

    যাগ্গে! নিন, একখানা প্যান্ডোরার বাক্সো খুলে দিলাম।
  • I | 59.93.242.82 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২০:৪৪399305
  • লিখতে চেয়েছিলাম "" চিকিৎসার হাল-হকিকৎ : কলকাতায়''। সে মরুক গে। শালগ্রাম শিলার শোয়া আর বসা!
    কিছু পাট্টিকুলার পয়েন্ট ধরে কথা বলা যায়। যেমন-
    ১। ডাক্তারদের নিয়ে সমস্যা:
    -টাকার লোভ।
    -অভদ্র ব্যবহার; ঠিকঠাক কমিউনিকেট করেন না। রোগীকে যথেষ্ট সময় দেন না।
    -যথেষ্ট স্কিলড নন।
    -অতিরিক্ত ইনভেস্টিগেশন করান। কাটমানি?

    ২। নার্সিং হোম:
    -গলা কাটা
    -অনেক ক্ষেত্রেই ওয়েল-ইকুইপড নয়।

    ৩। সরকারী হাসপাতাল:
    -পরিকাঠামো নেই
    -ওভার-বার্ডেন্ড; সঠিক রেফার‌্যাল নীতি মানা হয় না।
    -টাকা নয়-ছয় হয়
    -ইউনিয়নবাজি; কর্মসংস্কৃতি জাস্ট নেই।

    ৪। সংবাদমাধ্যম:
    -মাঝেমধ্যেই বেশ বাড়াবাড়ি করে

    ৫। রোগীর আত্মীয়স্বজন:
    -বেশী অসহিষ্ণু। অবিশ্বাসী।
    -যখন-তখন আইন নিজেদের হাতে তুলে নেন।

    এই সবগুলোরই পক্ষে ও বিপক্ষে নানাকথা বলার আছে। এছাড়াও আরো অজস্র দেখবার কোণ থাকতে পারে। আপনারা যদি বলেন, আম্মো দু-চার কথা বলতে পারি।

    আর লক্ষণীয়, আমি কোলকাতাতেই খড়ির দাগ টেনেছি। কেননা, জেলার-প্রত্যন্ত গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আমার সরাসরি অভিজ্ঞতার অভাব আছে। তবে অনুমান করতে পারি, শুনেছি বিস্তর। আপনারা চাইলে দাগ টেনে বড় করে নিতে পারেন।
  • d | 121.245.128.132 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২৩:০৫399416
  • এই থ্রেডটা বেশ "আ ব্যয়েল মুঝে মার' হয়েছে। :))

    ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার দিকে যাচ্ছি না আপাতত, কারণ তাতে এত তিক্ত সব অভিজ্ঞতা উঠে আসবে যে খামোখা রাতের ঘুমটা যাবে।

    ১। টাকার লোভ মানে কি চাহিদা? টাকার চাহিদা তো সকলেরই আছে, খালি ডাক্তারদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কিন্তু মুশকিল হল তাঁদের চাহিদা মেটাবার পরও তাঁরা উপযুক্ত সার্ভিস ফিরিয়ে দেন না। তিনি যখন তাঁর সার্ভিসের একটা মূল্য ধার্য্য করেছেন, তখন সেই মূল্য চুকিয়ে দিলে সেই সার্ভিস দিতে তিনি বাধ্য। কিন্তু কজন সেটা দেন?
    এইবারে এইযে ঠিকঠাক সার্ভিস তিনি দেন না, এর জন্য আমাদের রাজ্যে কিছু স্টেপ নেওয়া যায় না। লীগ্যাল প্রসেস এতই দীর্ঘসুত্র যে কজন সেই পথে যেতে পারেন? অথব গেলেও ধৈর্য্য ধরে শেষ অবধি ডাক্তরকে বাধ্য করতে পারেন ক্ষতিপূরণ দিতে?
    ২। অভদ্র ব্যবহার: এটাও সমাজের সর্বস্তরে বিদ্যমান। আমরা জাঠদের রুডনেস নিয়ে বলি, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যে কোন লোকের কাছেই কোন কাজ নিয়ে গেলে একরকম অভদ্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ভাগ্যক্রমে সেই ব্যক্তি ভাল ব্যবহার করলে প্রায় ধন্য হয়ে যাবার অবস্থা। কিন্তু এই সর্বব্যপী অভদ্রতার মধ্যেও রাজনীতিজীবি আর পুলিশ এর পরেই ডাক্তাররা আসবেন। শুধু একবার জিগ্যেস করে দেখুন "কী হয়েছে?' বা "ভয়ের কিছু?" ব্যাস! আপনি যে এই জগতের সবচেয়ে মূর্খ আর নগণ্য জীব তা ২ মিনিটের মধ্যে বুঝে যাবেন।
    কিসের এই ঔদ্ধত্য?? অসুখটা যখন আমার, বা আমার কোন কাছের লোকের তখন সেটা আমাকে বুঝিয়ে বলার দায়িত্ব তাঁর। আমি না বুঝলে তিনি বুঝিয়ে দেবেন।
    অথচ কিকরে ডাক্তারদের দিয়ে এই বেসিক কাজটা করানো যায় জানিনা। প্রতিবাদ করে লাভ হয় না, আরও অভদ্র ব্যবহার জোটে।
  • shyamal | 64.47.121.98 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২৩:১৫399498
  • ১) সার্ভিস না পেলে সে ডাক্তারের কাছে আর যাবেননা।
    ২) অভদ্র ব্যবহার কি সবাই করেন? আমি পাইনি।

    এবার যদি ১ ওর ২ এর ক্ষেত্রে সরকারী ডাক্তার বা হাসপাতাল বলেন, তবে ঠিক। তা আপনি বাজার দর না দিয়ে তার অনেক কম খরচ করে ডাক্তার দেখাচ্ছেন, তার ওপর আবার ভাল সার্ভিস আর ব্যবহার চান? আপনার বেসিক ভুল হল আপনি আয়ের একটা বড় অংশ চিকিৎসা ও ইন্সিওরেন্সের জন্য না রেখে অন্য কাজে লাগিয়েছেন। তার ফল কি আমি ভুগব? [ এই প্যারা শুধু সরকারী চিকিৎসার ব্যাপারে ]
  • d | 121.245.128.132 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২৩:২৭399509
  • ওহোহোহো শ্যামলের কথা ভুলে গেছিলাম। ডি: দিতে ভুলে গেছিলাম।

    (বেশ বড় বড় করে)
    ডি: যাহা বলিয়াছি এবং ভবিষ্যতেও যাহা বলিব, তাহার ব্যতিক্রমও কিছু আছেন। উহা "সব ডাক্তার' (সব এর ওপরে বোল্ড আন্ডারলাইন) এর জন্য প্রযোজ্য নহে।

    আর শ্যামল,

    সরকারী হাসপাতাল নিয়ে এখনও আমি কিছু বলিনি।
  • umesh | 62.254.196.200 | ০৯ জুলাই ২০০৮ ২৩:৩০399520
  • কলকাতার তুলনায় মুম্বাই এর ডাক্তার রা অনেক বেশি ভদ্র এবং প্রোফেশনাল।
    কলকাতার নার্স দের তুলনায় মুম্বাই এর নার্স রা অনেক বেশি কেয়ারী এবং মুখের ভাষা অনেক অনেক বেশি ভদ্র।
  • Blank | 170.153.62.251 | ১০ জুলাই ২০০৮ ০০:১০399531
  • সরকারী হাসপাতাল গুলো চালানোর পয়সা আসে কোথা থেকে? ট্যাক্স থেকে আসে না ?
  • shyamal | 64.47.121.98 | ১০ জুলাই ২০০৮ ০০:২৬399542
  • ঠিক, ট্যাক্স থেকে আসে। তবে ডাক্তার, হাসপাতালরা ভদ্র নয় কেন? আমার নিকটাত্মীয় এক কাপল দুজনে সরকারী ডাক্তার। গ্রামেও গেছে আগে। তাদের কাছে শুনেছি যে রোগী এত বেশী আর ডাক্তার/নার্স এত কম যে তাদের পক্ষে সব সময়ে মেজাজ ঠিক রাখা বা উপযুক্ত ভাবে রোগী দেখা সম্ভব হয়না। দিনে হয়তো কয়েকশো রোগী দেখতে হয়। রোগী প্রতি দুমিনিটের বেশী দেওয়া যায়না। আরে তাদের অসুখ বিসুখ করলে তারা প্রাইভেট হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে যায়। সরকারী হাসপাতালে যায়না।

    এর কারণ কি? দেশ এখনও গরীব। আর প্রাথমিক স্বাস্থ্য আর শিক্ষার খাতে অনেক কম টাকা ঢালা হয়।
  • arjo | 24.214.28.245 | ১০ জুলাই ২০০৮ ০৩:৩৪399553
  • খুব খারাপ অভিজ্ঞতা।

    আমার এক বোনের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগে পেটে অসম্ভব ব্যথা হয়, সাথে জ্বর। প্রথমে হাউস ফিজিসিয়ান, তারপর আর একটু বেটার, হতে হতে কলকাতার নামি নার্সিং হোম। ইতিমধ্যে টাইফয়েড থেকে শুরু করে আর যা যা টেস্ট সম্ভব হয়ে গেছে। পরীক্ষার আর মাস দেড়েক বাকি। বেশ কিছুদিন নাড়াচাড়া করার পরে, আরও কিছু টেস্ট করার পর নার্সিং হোমের ডাক্তার রায় দিলেন কিচ্ছু নেই, টেনশনে এমন হচ্ছে। এমনকি বোনকে বকাবকিও করলেন বেশ খানিক। এদিকে বোনের খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, বমি হচ্ছে, পেটে অসম্ভব ব্যথা। তারপর দিন দুয়েক পরে বল্লেন হতে পারে ব্লাড ক্যান্সার। এদিকে ডাক্তার কিন্তু আমার বা বাড়ির লোকের সাথে খুব বেশি কথা বলছেন না। ডাক্তারের সাথে দেখা করার জন্য আপনাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ওনার অফিসের সামনে। বাড়ি যাওয়ার সময় ঐ অফিস থেকে লিফট পর্যন্ত্য যেটুকু সময় ও সুযোগ পাওয়া যায়। মূলত ডাক্তার যা বল্লেন, খুব কিছু নেই টেন্‌শন থেকেই হচ্ছে, তবে ব্লাডটাও ভালো করে দেখে নিতে হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে আর সমস্ত রকম টেস্ট হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায়, ব্যাঙ্গালুরুতে আমার আর এক দাদার সাথে কথা হল। ঠিক হল বোনকে নিয়ে যাওয়া হবে ব্যাঙ্গালুরুতে।

    সেদিনই বোনকে নিয়ে বাড়ি চলে গেলাম। একদিন বাদে যাওয়া হল ব্যাঙ্গালুরু। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা মণিপাল হসপিটাল। সেদিন রাতে ডিটেক্টেড হল গলব্লাডারে স্টোন। পরের দিন অপারেশন হল। দিন দশেক বাদে সুস্থ বোন বাড়ি ফিরে এল। সেই বছরটা গোল্লায় গেল। অনেক টাকা এক্সট্রা খরচ হল।

    কেন এমন হয়েছে জানা নেই। হতে পারে ডাক্তার এবং নার্সিং হোমটি রদ্দি। কিন্তু বোধগম্য হয় নি গলব্লাডারের মতন অসুখ যা সামান্য কিছু টেস্টেই ধরা যায়, কেন সেটা ধরা পড়ল না। এই ঘটনা থেকে কিছুই প্রমাণ অপ্রমাণ হয় না। যাস্ট শেয়ার করলাম।
  • shyamal | 67.60.254.15 | ১০ জুলাই ২০০৮ ০৬:৩৮399195
  • ভারতে বিশেষত: কলকাতায় লোকে সব ক্ষেত্রে অ্যাড হক ভাবে কাজ করে। কোন মেথডোলজি বা প্রসেস ব্যবহার করেনা। আর যারা করে তারা প্রসেসের উন্নতির কথা ভাবেনা। একশো বছর আগে ইংরেজ যে প্রসেস দিয়ে গেছিল, তাই ফলো করে।
    নয় তো ডায়াগনোজ করার নির্দিষ্ট স্টেপ থাকত যা কলকাতা, মনিপাল, নীলরতন, বেথ ইজরায়েল, বেল ভিউ সর্বত্র এক হত। কাজেই তার মধ্যে অবজেক্টিভলি রোগীর অসুখ বেরিয়ে আসত। সর্বত্র একই ফল হত।
  • Santanu | 82.112.6.2 | ১০ জুলাই ২০০৮ ১০:১২399206
  • ডাক্তার এটা ভালো টই খুলেছে, ধন্যযোগ ডাক্তার।
    তবে শুধু খুলে দিয়ে আর পয়েন্ট দিয়ে ছেড়ে দিলে হবে না - নিজে একটু লেখো। কোনো সমালোচনা নয়, আমাদের কি করা উচিত এই রোগ নিয়ে, রুগী নিয়ে, ডাক্তারদের নিয়ে, নার্সিংহোম নিয়ে সমস্যায় পরলে।
    বলতে চাইছি যেমন এই গলব্লাডারে স্টোনের মতো মামুলি রোগের জন্য ব্লাড ক্যনসার থেকে ব্যঙ্গালোর সব ঘোরা হয়ে গেল। আর কিছু করা যায় কি না?
    আর আমার মনে হয় সরকারী হাসপাতাল টাকে এই আলোচনার বাইরে রাখতে পারলে ভালো হয়, কারণ তাহলেই ঘুরে ফিরে সেই সিপিএম, ইউনিয়ান, বাজার দর, বন্ধের অধিকার, বহুজাতিক কোম্পানি, ইত্যাদি চলে আসবে।
    ফাইনালি ব্যক্তিগত Experience একদম ব্যক্তি টু ব্যক্তি, ডাক্তার টু ডাক্তার বদলায়। আমার শ্বশুরের Heart Specialist কে বলতে বাধ্য হয়েছিলাম, "দুর মশায়, পয়সা নিচ্ছেন, বলবেন নাই বা ক্যনো", আবার বাবার ডাক্তার দৌড়ে বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, "৪০,০০০ এর সস্তার স্টেন টা কিনুন, ১২০,০০০ র টা কিনবেন না, আপনার বাবা কে এক বছর বাঁচিয়ে রাখতে পারি, তখন দেখব" আর আমার ডায়াবেটিস এর ডাক্তারের কাছে গেলে তো মনে হয় ক্লাস করতে গেছি। তাই ব্যক্তিগত Experience দিয়ে কিছুই প্রমাণ করা যাবে বলে মনে হয় না।

    না হে ডাক্তার, তুমিই বলো, একটু শুনি।
  • Arijit | 61.95.144.123 | ১০ জুলাই ২০০৮ ১০:১৬399217
  • ইন্দো তো এনএইচএস দেখেছিস - সেই রেসপেক্টে লিখতে পারিস। আম্রিকার সিস্টেমের সাথে তুলনা আদৌ প্রাসঙ্গিক হবে না।
  • r | 125.18.17.16 | ১০ জুলাই ২০০৮ ১২:৪৫399228
  • ভালো অভিজ্ঞতার কথাও বলি, তবে দিল্লির অভিজ্ঞতা। আমার শ্বশুরমশাই ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যান। কিন্তু সেটা প্রথম ধরা পড়েছিল ইউরিনে রক্তপাত এবং কোমরে প্রচন্ড ব্যথা থেকে। যে ইউরোলজিস্ট ইউরিনের চিকিৎসা শুরু করেন, তিনি অ্যাপোলোর একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক। প্রথমেই যেটা ভালো লাগে তা হল তার ব্যবহার- একজন ভদ্রলোক আর একজন চেনা ভদ্রলোকের সাথে ঠিক যেভাবে কথা বলে। "আমি ডাক্তার, কাজেই আমি সব জানি, তুমি চুপ করে থাকো"- এই ব্যাপারটাই নেই। কোনো খবর দেবার থাকলে উনি নিজেই ফোন করে আমাদের খবর দিতেন। পরবর্তীকালে ভদ্রলোক আমাদের ফ্ল্যাটে নিজে এসে নিজের হাতে ক্যাথিটার লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন ছিল রবিবার- এইদিন দিল্লির যাবতীয় ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। ভদ্রলোক অন্য কোনো নার্সিং হোমে যাচ্ছিলেন। আমাদের বললেন তিনি নিজে ঐ নার্সিং হোম থেকে ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে আমাদের বাড়িতে দিয়ে যাবেন। এইরকম সাহায্য আমাদের কাছে সত্যিই অভাবনীয় ছিল। এরপর ব্যথার চিকিৎসার জন্য যে অস্থি-চিকিৎসকের কাছে যাই তাঁর খ্যাতি ভারতজোড়া- তেন্ডুলকরের চিকিৎসা করে থাকেন। সেই বয়স্ক ভদ্রলোক প্রথমদিনেই প্রায় আধঘন্টা আমাদের সাথে কথা বলেন। এক্স-রে থেকেই ধরা পড়েছিল যে এই রোগ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে, অতএব ওনার নিজের কিছু করার নেই। তাও উনি আধঘন্টা কথা বলেছিলেন চিকিৎসার খরচ, আমাদের বাড়ির অবস্থা, বাড়িতে কে কে আছে, কাজেকর্মে সাহায্য করার লোক আছে কি না, কিভাবে কম খরচে চিকিৎসা করানো যেতে পারে, উনি নিজে কিভাবে সাহায্য করতে পারেন- ইত্যাদি নিয়ে ঝাড়া আধঘন্টা। তখন কিন্তু তাঁর চেম্বারের পীক টাইম। এরপরে একদিন খুব জরুরী দরকারে বাড়িতে একজন ডাক্তার ডাক্তার প্রয়োজন পড়ে। আমার স্ত্রী, শ্বশুর আর দেড় বছরের বাচ্চা ছাড়া বাড়িতে কেউ নেই। আজকাল কোনো ডাক্তারই বাড়ির কলে যেতে চান না, সেখানে এত বড় ডাক্তার! কিন্তু তখন আর কোনো উপায় নেই। বৃদ্ধ ভদ্রলোক সাথেসাথে মে মাসের গরমে লোডশেডিঙের মধ্যে নিজে বাড়ি চিনে পৌঁছে যান। এরপরে ওনার কল ফির কথা জিজ্ঞাসা করলে ভদ্রলোক হেসে ফেলেন। বলেন- মা, সে কি আর তুমি এখনি দিতে পারবে? তবে জিজ্ঞাসা করেছই যখন, তখন পাঁচশটা টাকা দিয়ে দিও।
  • udayan | 125.17.8.196 | ১০ জুলাই ২০০৮ ১৪:৩৬399239
  • কালকে উডল্যান্ড কেমোথেরাপি কেস সবাই
    পড়েছেন?
  • P | 78.16.206.81 | ১০ জুলাই ২০০৮ ১৫:৩৮399250
  • আই কে সেলাম ঠুকে গেলুম এ টই খোলার জন্যে।

    এরপর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের হাল হকিকৎ,আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। -

    আমার এক আত্মীয় পি এস সি পরীক্ষা পাশ করে জয়েন করলেন বাঁকুড়ার এক মফ:স্বলের হাসপাতালে ডেন্টাল মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে। তার ইন্টারভিউ এর গপ্পো আমি ডিটেল এ শুনেছি , খুব ইম্প্রেসিভ। ইন্টারভিউয়াররা বারবার এইটাই শ্যুওর হতে চেয়েছিলেন যে ছেলেটি গ্রামের ডাক্তার হিসেবে মিসফিট কি না। তা আমার আত্মীয় নিজে গ্রামের ছেলে প্লাস মাস্টার্স এ পাওয়ার আগে কিছুদিন সরকারী হাসপাতালে চাকরি করাটা তার কাছে প্রায় স্বপ্নের মতন। যা হোক চাকরি সে পেল। তার বয়েস তখন ২৪ , প্রথম চাকরী কাজেই উৎসাহের অন্ত নাই। আর বাঁকুড়া জেলার সে চঙ্কÄরে সরকারী হাসপাতালে ডেন্টাল পদ ফাঁকা ছিলা প্রায় বছর সাতেক। যা হোক প্রথমদিন হাসপাতাল দেখে সে নিজেও খুব ইম্প্রেস্‌ড।বহুবছর তালাবন্ধ ডেন্টাল ডিপার্টমেন্টে দেখে বহু লক্ষ টাকার চেয়ার আর যন্ত্রপাতি ধুলোমাখা পড়ে আছে অব্যবহার্য। ডেন্টাল ডিপার্টমেন্টের জন্যে ডেডিকেটেড নার্স আছেন যদিও সেসময় দুজনেই জেনের‌্যাল আউটডোর এ ডিউটি করতেন।
    যা হোক আত্মীয় জয়েন করেই উদ্যোগী হলেন ডেন্টাল ডিপার্টমেন্টটি খুলিয়ে পরিষ্কার করানোয়।হাসপাতালের বস বি এম ও এইচ ওনাকে ডেকে বললেন তার দরকার নেই , উনি যেন কয়েকহপ্তা জেনের‌্যাল আউটডোর ডিউটি দেন।ওখানেই নাকি ভীড় বেশি, ডেন্টালে তো রোগীই নেই। যা হোক আত্মীয় প্রথম কয়েকদিন জ্বর-সর্দির চিকিৎসা করার পরে আবার ডেন্টাল ডিপার্টমেন্ট খোলার কথা তুলতেই বি এম ও এইচ বললেন তার দরকার নেই। খামোকা আর একটা ডিপার্টমেন্ট ম্যানেজ করাটা নাকি ওনার পক্ষে ফালতু চাপ বই নয়। আর এমনিতেও গত সাত বছরে নাকি দাঁতের রোগীদের চিকিৎসা জেনের‌্যাল আউটডোরেই হয়েছে , দাঁতের রোগী বেশি হয় না। সরকারী খরচায় কেনা বহুলক্ষ টাকার যন্ত্র ধুলো খাচ্চে তাতেও ওনার সেরকম মাথাব্যাথা নেই।আত্মীয় এই ব্যাপারটি ডিস্টৃক্ট মেডিক্যাল অফিসারের কাছে এস্ক্যালেট ও করে এবং কোনো লাভ হয় না। অবশেষে কয়েকমাস এমনি চলার পরে সে ডেন্টাল ডিপার্টমেন্ট খুলতে সক্ষম হয় , সে আর এক গপ্প।ঐ মফ:স্বলের এক প্রভাবশালী নেতার ইচ্ছে ছিল ডেন্টাল ডিপার্টমেন্ট খোলা হোক এবং অ্যাপারেন্টলি তিনি এ ব্যাপারে উপরমহল থেকে চাপের সৃষ্টি করেছিলেন ডি এম ও এইচ এবং বি এম ও এইচের ওপর।
    তারও কিছুমাস পরে আমি একদিন বিষ্ণুপুর বেড়াতে যাবার পথে ঐ হাসপাতালে কয়েকমিনিট দাঁড়িয়ে যাই। তিন কামরার একতলা ডেন্টাল ডিপার্টমেন্ট , প্রায় চল্লিশফুট লম্বা করিডোরের বেঞ্চে সারসার রোগী। চরম ব্যস্ত আত্মীয় সেদিন আয়-বোস টুকু ছাড়া আর কোনো কথা বলতে সময় পান নি। শুধু বলেছিলেন "কি রকম ভীড় দেখছিস , আজকাল রোজ ই প্রায় ষাট-সত্তর জন রোগী হয় অনেকলোক ই আসে বহু দুরের সব গ্রাম থেকে আমাকে রোজই ডিপার্টমেন্ট বন্ধের সময় পিছিয়ে দিতে হয়।"
  • I | 59.93.241.30 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২১:২৭399261
  • খানিকটা স্বীকারোক্তি, খানিকটা শয়তানের ওকালতি। শুরু করি?

    আমার মনে হয় সরকারী হাসপাতালকে এই আলোচনার বাইরে রাখাটাই ভালো। তার কারণ, আমরা যারা গুরু ব্যবহার করি, তারা সাধারণভাবে সরকারী হাসপাতাল ব্যবহার করিনা। কিংবা সরকারী চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে প্রত্যক্ষত: যুক্ত নই (আমার ধারণা ভুল হতে পারে, হলে খুশী হব)। মূলত: মধ্য-উচ্চমধ্য মানুষজন, যাঁরা অসুখে পড়লে বেসরকারী ডাক্তার-হাসপাতাল-নার্সিংহোমের শরণাপন্ন হই। গ্রামের মানুষজনের জন্য, শহরের নিম্নবিত্ত মানুষদের জন্য আমাদের উদ্বেগ আছে, কিন্তু আমরা তাঁদের খুব ভালো চিনিনা, তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করিনা।
    আর একটা কারণ, একই সঙ্গে সরকারী-বেসরকারী চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে কথা বলতে গেলে গুলিয়ে যেতে পারে। শান্তনুদার কথামত অনেক কিছু চলে আসতে পারে। তার চেয়ে বরং , one at a time। গণ্ডী বাড়ানোর কথা বলেছিলাম, ছোট হয়ে গেল উল্টে। এত কথা বলার আছে, কথার পিঠে এত কথা আসতে পারে।
  • d | 121.245.186.112 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২১:৫১399272
  • হুঁ হুঁ সরকারী হাসপাতাল বাদ থাক। আমিও ঐ একই নির্বোধ ভ্যাড়র ভ্যাড়র আর শুনতে পারছি না। বোরস্য বোর, তস্য বোর হয়ে গেছি। এখানে অলরেডী একবার হয়ে গেছে।

    তুই শুরু কর।
  • Blank | 170.153.62.251 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২১:৫৩399283
  • কিন্তু সরকারি হাসপাতাল মাঝে মাঝেই কাজে লাগে বেশ। একদম বাদ দিও না এই ব্যপারটা।
  • Blank | 170.153.62.251 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২১:৫৫399294
  • মাঝে মাঝেই মনে হয় ডাক্তার রা ভয়ানক লাকি। ৯০% রোগী রাই শান্ত শিষ্ট হয়, মাত্র ১০% রোগীরা হয়তো একটু ঠেঙিয়ে দেয়।
  • I | 59.93.241.30 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২২:০০399306
  • কলকাতা শহরে ডাক্তাররা সাধারণভাবে বেশী অভদ্র(ভারতের অন্য মেট্রোপলিসের তুলনায়, বিশেষত: দক্ষিণ), একথা আমি অনেকের কাছে শুনেছি। এবং বিশ্বাস না করবার কোনো কারণ দেখতে পাইনি। আমি নিজের চোখেই এত অভদ্র ব্যবহার দেখেছি। এবং এই অভদ্রতা আজকের নয়, বহুকাল ধরেই এব্যাপার চলে আসছে। আগেকার দিনের ডাক্তাররা মোটামুটি ভাবে ধমক-ধামককে চিকিৎসাব্যবস্থার অঙ্গ বলেই ধরে নিতেন, রোগীরাও মুখ বুজে মেনেই নিত। হয়তো তখন ধমকের সঙ্গে প্রীতি-টিতিও ছিল, ক্রুদ্ধ ও স্নেহশীল পিতার ভূমিকা ছিল। হয়তো।
    এই অভদ্রতা কোত্থেকে আসে? বাঙ্গালীর জাতিগত অভদ্রতা? হতে পারে। রাস্তাঘাটে-ট্রেনে-বাসে আমরা ব্যতিক্রমহীনভাবে অভদ্র , এবং দিন যত গড়াচ্ছে, আমরা তত রেগে যাচ্ছি, মুখ-খারাপ করছি।
    শ্যামল কাজের চাপের কথা বলেছেন। খুব ঠিক কথা। আমার মনে আছে ইন্টার্নশিপের দিনগুলিতে সত্যি আমাকে প্রায় দেড়-দুমিনিটে এক-একজন রোগীর কেসহিস্ট্রি নেওয়া, রোগীদেখা ও ওষুধ লেখা শেষ করতে হত। চাপের জন্য মানুষ ধৈর্য হারাতেই পারে। এবং দুর্ব্যবহার এমন এক জিনিষ , যা একবার শিখে ফেললে তার মোহ কাটানো মুশকিল। যখন দেখা যায় বদমেজাজ দেখালেও মানুষ মাথা নীচু করে থাকে। বেশ গা-গরম হয়ে ওঠে। সদ্য ইন্টার্ণ ছেলে/মেয়েটি তার দাদা-দিদিদের দেখে খারাপ ব্যবহারে বেশ পোক্ত হয়ে ওঠে। অন্যে পরে কা কথা, আমি নিজেও কি করিনি?

    চাপ আরো নানারকম আছে, সেকথায় পরে আসব। কিন্তু কথা হচ্ছে, এসবই কি জব হ্যাজার্ড নয়? আমি আর্মিতে চাকরি করি, গুলি-গোলার মধ্যে দিন কাটাই, যৌনতাহীন দিন কাটাই বলে কি আমি অধিকার পেয়ে গেলাম বারে ঢুকে নিরস্ত্র সিভিলিয়ানকে পিটিয়ে পাট করে তার প্রেমিকাকে মলেস্ট করবার? ডাক্তারী পাশ করার পরে কি আমি হিপোক্রেটিক ওথ নামক ছাতার মাথা(হিপোক্রিটিক ওথ নামেই যা ডাক্তারদের মধ্যে বহুল-প্রচলিত) পড়ে স্টেথো ধরিনা? না:, ধরিনা। আমরা জানিই না, ভদ্র ব্যবহার আমাদের পেশার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সম্ভবত:, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা জানিনা, আমাদের মাস্টারমশাইরা জানতেন না, খুব সম্ভব তাঁদের মাস্টারমশাইরাও জানতেন না। তাঁদের দেখেই তো আমরা শিখেছি।
    বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, এই ট্রেন্ডটা বরং পাল্টাচ্ছে। অবশ্য বেসরকারী ক্ষেত্রেই পাল্টাচ্ছে, সরকারী হাসপাতালে সম্ভবত: না। অল্পবয়সী ডাক্তারা এই শহরে এখন আগের চেয়ে বেশী ভদ্র। তার একটা বড় কারণ প্রতিযোগিতা। একটা কারণ হতে পারে প্রথম বিশ্বের দেশের অভিজ্ঞতা।
  • I | 59.93.241.30 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২২:০৯399317
  • সত্যি কথা এই যে, আগেকার ডাক্তাররা আদৌ কমিউনিকেট করতেন না। এখন আগের থেকে বেশী সংখ্যায় ডাক্তারবাবুরা করেন। NHS-এর সামান্য অভিজ্ঞতায় আমি জানি যে ডাক্তারা লেম্যানস্য লেম্যানকে খটোমটো ডাক্তারী ভাষা বাদ দিয়ে রোগের ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলেন। অন্তত: চেষ্টা করেন। আমরা করিনা। বিলেতফেরত ডাক্তাররাও করেন না। কিন্তু এটা অবশ্যই , অতি অবশ্যই ডাক্তারের কাজের অঙ্গ।
    তবে এই ব্যাপারটাও আগের থেকে বেড়েছে।
    (কমিউনিকেশনের ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য একটু শয়তানের ওকালতি করার ছিল; কিন্তু থাক। সেসব আমি শেষের জন্য জমিয়ে রেখেছি।)
  • I | 59.93.241.30 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২২:১৩399328
  • MRCPতে দুটো সবথেকে বড় আর ইম্পর্ট্যান্ট স্টেশনের একটা হল কাউন্সেলিং, তাতে ফেল হলে গোটা পরীক্ষা পাশ করতে বেশ ব্যথা আছে। আমাদের ডাক্তারী পরীক্ষায়, পরীক্ষা দূরে থাক, গোটা কারিকুলামে এসবের কোনো নামগন্ধ নেই।
  • shyamal | 64.47.121.98 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২২:১৪399339
  • আমার ডাক্তার নিয়ে অভিজ্ঞতা বিরাট নয়। আমাদের পরিবার যে সমস্ত ডাক্তার দেখিয়েছে, আমার বাবাকে একবার নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল, এছাড়া অন্য নানা ক্ষেত্রেও আত্মীয়স্বজনরা যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কারুর মুখেই অভদ্র ডাক্তারের কমপ্লেন পাইনি। অনেক ক্ষেত্রে মনে হয়েছে ডাক্তার হয়তো কাট মানি পাওয়ার জন্য অজস্র টেস্ট করতে বলছে, কিন্তু অভদ্রতা দেখিনি। বরং উল্টোটাই দেখেছি।
    আমার বৌ কমপ্লেন করেছে এক নামকরা এন্ডোক্রিনোলজিস্ট কলকাতায় ওকে দুমিনিট দেখে,শুনে ওষুধ দিয়েছে।
    একজনই ডাক্তার ছিলেন রাগী। আমাদের পুরোনো পাড়ায় হোমিওপ্যাথ। কোনো স্কুলের হেডমাস্টারী থেকে অবসর নিয়ে ডাক্তারী শুরু করেছিলেন। অসম্ভব পসার। আমি নিজে শুনেছি এক মহিলাকে বলছেন, খাওয়ান আরো হরলিকস। ওতো হবেই। জানেন হরলিকসে কি থাকে? স্রেফ কাঠের গুঁড়ো।
  • I | 59.93.255.50 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২৩:০৫399350
  • এই অতিরিক্ত ইনভেস্টিগেশন-প্রবণতার তিনটি মুখ্য কারণ। একটা কারণ অবশ্যই কাটমানি । কিন্তু আর একটা বড় কারণ সেফ খেলতে চাওয়া। কনজিউমার ফোরাম-মামলা-মোকদ্দমা এসে যাওয়ায় এখন আর ডাক্তাররা কোনো রিস্ক নিতে চান না। একটুও বিপদের গন্ধ পেলেই সো-ও-জা ইনভেস্টিগেশন করিয়ে নেন। আগেকার দিন হলে হয়তো ক্লিনিক্যাল অ্যাকুমেন-এর ওপরেই নির্ভর করতেন।

    তৃতীয়ত:, সত্যিই অ্যালোপ্যাথি প্রতিদিন আরো বেশী বেশী করে ল্যাবনির্ভর হয়ে পড়ছে। গোটা বিশ্বেই। কাজেই ঠিকঠাক চিকিৎসা করতে হলে ল্যাব ছাড়া গতি নেই। আজ থেকে একশো বছর আগে নাড়ি দেখে ম্যালেরিয়া-টাইফয়েড ডায়াগনোজ করা হত। আজ আর সে লাক্সারি অ্যাফোর্ড করতে পারবেন ?

    কাটমানির কথায় মনে এল। হ্যা, অনেক ডাক্তারই কাটমানি নেন। অনেকে নেনও না। আবার যাঁরা নেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু কাটমানির লোভে বাড়তি ইনভেস্টিগেশন করান না। আবার কাটমানি না নিলে যে ইনভেস্টিগেশনের দাম কমে যাবে, তা কিন্তু এক্কেবারে নয়। কারণটা এই খোলাবাজারের দিনে সহজেই অনুমেয়। কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ডাক্তারের সুপারিশ থাকলে কাটমানি বাদ দিয়ে সস্তায় ইনভেস্টিগেশন করিয়ে দেয় বটে ল্যাবগুলো, কিন্তু ঢালাও বন্দোবস্ত হিসেবে এটা তারা অ্যালাউ করবে না।
  • I | 59.93.255.50 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২৩:০৭399361
  • ও:, আরো একটা কারণ আছে। নার্সিং হোম/হাসপাতালগুলির চাপ। আরো বেশী ব্যবসা দাও, নইলে পাততাড়ি গোটাও।

  • shyamal | 64.47.121.98 | ১০ জুলাই ২০০৮ ২৩:৩১399372
  • কলকাতায় থাকতে আমাদের একজন ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান ছিলেন। অল্প জ্বর জারি হলে, ব্যথা বেদনা, কাটা ছড়ায় ওনার কাছে যেতাম। তা কারো ফ্লু হলেই মোট খরচ হত পাঁচশো টাকা। ওনার ভিজিট ৫০ আর বাকি ওষুধ। ওনার নিজের ফার্মেসীর পাশে ছোট একটি ঘরে রোগী দেখতেন।
    জানিনা ফ্লুর জন্য সাড়ে চারশো টাকার অ্যান্টিবায়োটিক দরকার কিনা।
  • arjo | 24.214.28.245 | ১১ জুলাই ২০০৮ ০৮:০৪399383
  • শান্তনু দা, আসলে ব্যক্তিগত ভালো অভিজ্ঞতা সিস্টেম সম্বন্ধে কিছু বলে না। কিন্তু খারাপ অভিজ্ঞতা এবং যখন সেটা খুব একটা এক্সেপশন কিছু না তখন সেটা যে চান্স কজ নয় এটা বলা যায়।

    তবে কি সবই খারাপ অভিজ্ঞতা? না, ইন্দ্রনীল দার রেফারেন্সেই আমার মাকে নিয়ে যাঁর কাছে গিয়েছিলাম তিনি অত্যন্ত ভদ্র এবং খুব ভালো ডাক্তার।

    তবে পেশেণ্ট হিসেবে যে অসুবিধাগুলো হয়

    ১। কোথায় যাব - প্রথমেই অসুখের লক্ষণ দেখে আপনাকে ঠিক করতে হবে কোথায় যাবেন। মানে কোন ধরণের ডাক্তারের কাছে যাবেন, এমডি? না গ্যাস্ট্রোএ®¾ট্রালজিস্ট? না অন্য কেউ। যদি হাউস ফিজিশিয়ান ভালো হন কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু একটু মফ:স্বলের দিকেই খুব একটা বিশ্বাস রাখা যায় না। যেহেতু আপনার আপনজন তাই রিস্ক মিনিমাইজেশনের জন্য আপানাকেই প্রোঅ্যাকটিভ মেজার নিতে হয়। ১৯৮৬ সালে আমার দাদুর সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছিল। আমাদের রেফার করা হয়েছিল কল্যাণীতে গান্ধি হসপিটালে - যেখানে হার্ট ছাড়া আর কিছুর চিকিৎসা হয় না। মে মাসের গরমে অলরেডি অসুস্থ রুগিকে নিয়ে কল্যাণী থেকে কলকাতায় আসতে আসতে আর একবার অ্যাটাক হয়। যাক, যা বলছিলাম, আপনি একজন এমডির কাছে প্রাইমারিলি যেতেই পারেন কিন্তু সময় নষ্ট হতে পারে।

    ২। কে ভালো - এবারে আপনাকে ঠিক করতে হবে কোন ডাক্তার ভালো। কিভাবে খবর পাবেন? নির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই। বন্ধুদের জিগ্যেস করুন, ফিডব্যাক নিন, আপনার বাড়ির কাছাকাছি কিনা দেখুন। খুব কঠিন অপটিমাইজেশন প্রবলেম। এবারে মফ:স্বলে বা গ্রামে থাকলে অপ্টিমাইজেশন প্রবলেমে আর একটা প্যারামিটার যুক্ত হল।

    ৩। সঠিক ডায়গনসিস তো - ডায়গনসিস হওয়ার পর, একটু কম্পলিকেটেড কেসেই আপনাকে সেকন্ড অপিনিয়ন নিতেই হবে।

    ৪। সঠিক পদ্ধতি তো - ডায়গনসিস ঠিক ঠাক হল তো, এবারে চিকিৎসা পদ্ধতি। আপনাকে সেকেন্ড কিম্বা থার্ড বা ফোর্থ অপিনিয়ন নিতে হবে। এবারে যখনই আপনাকে মোর দ্যান ওয়ান অপিনিয়ন নিতে হচ্ছে তখনই উপরের ২ নং অপটিমাইজেশন প্রবলেম সলভ করতে হচ্ছে।

    এর পরে আসে ডাক্তার বা নার্সদের খারাপ ব্যবহার ইত্যাদি। আসলে হসপিটাল ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে তারফলে আপনি একটা হসপিটালে গিয়ে হাজির হলেন এবং তারাই সমস্ত দায়িত্ব নিল এমন হয় না। পেশেন্ট পার্টিকে রিস্ক মিনিমাইজেশনের জন্য অত্যন্ত ইনফরম্‌ড হতে হয়। প্রাইভেট নার্সিং হোম গুলো খুব বেশি এক্সপেন্সিভ, সব সময়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। বোম্বে, ব্যাঙ্গালোরে প্রাইভেট হসপিটাল আছে যেগুলো ঠিক অতটা এক্সপেনসিভ নয়।

    মফ:স্বলে থাকলে অবস্থা খুব খারাপ। ভালো ডাক্তাররা কেউ বসেন না, কারণ টাকা নেই। ভালো নার্সিং হোম নেই, কারণ লাভ হয় না। সরকারী হসপিটাল ব্যবহারের অযোগ্য। একটা উদাহরণ, আমার বাড়ি কলকাতা থেকে ৩৫ কিমি। আজ ২০ বছরে এই অবস্থার কোনো উন্নতি হয় নি। কোনো এমার্জেন্সি রোগে জ্যাম যানজট এড়িয়ে কলকাতায় আসতে আসতেই অবস্থা খারাপ। এখনো কলকাতাই আমাদের সব।
  • santanu | 82.112.6.2 | ১১ জুলাই ২০০৮ ০৯:৫৮399394
  • আর্য্য, আমি ব্যাক্তিগত অভিগ্‌গ্‌তা (কি করে লেখে?) বলতে সিস্টেম নয়, স্রিফ ডাক্তারদের ব্যবহারের কথা মীন করেছিলাম। আমারই দুজনের সাথে ভালো এক্‌জনের সাথে খারাপ। তোমার, এক ডাক্তারের সাথে কথা বলার জন্য অফিসের সামনে ওয়েট করতে হতো আর একজন কতো ভালো - ব্যস এইটুকু।

    বাকি সিস্টেম এর জন্য, তোমার লাস্ট ৪ টে পয়েন্টের জন্য তো ডাক্তার এই টই টা খুলেছে - দেখি আস্তে আস্তে জানব, আমাদের ও কি করা উচিত to get the best out of this system
  • shyamal | 67.60.254.15 | ১১ জুলাই ২০০৮ ১০:১২399405
  • অভিজ্ঞতা = abhij`Nataa

    আরেকটা রিসেন্টলি শিখেছি :
    অ্যাকশন = ayAkashan
  • S | 202.140.54.29 | ১১ জুলাই ২০০৮ ১১:৪৫399417
  • সরকারি হাসপাতাল বাদ দিও না, দিল্লিতে সরকারি হাসপাতাল বেসরকারির থেকে অনেক বেশি এফিশিয়েন্ট। উদাহরণ, রামমনোহর লোহিয়া, এইম্‌স, জি বি পন্থ ইত্যাদি। পাগলের মত ভিড় হয় সে সব জায়গায়, আমরা যারা কথায় কথায় তিনশো পাঁচশো টাকা ভিজিট ধরিয়ে দিতে পারি ফস্‌ করে, তারাই কেবল ঐ সব "ন্যাস্টি' ভিড়ে না গিয়ে বেশি দামি বেসরকারি হাসপাতালে যাই টাই, এবং প্রতারিত হই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। কে না জানে, দিল্লি ঠগের জায়গা। দিল্লির ডাক্তাররাও তার ব্যতিক্রম নন। ক্রিটিকাল চ্যালেঞ্জিং কেস হলে লোকে এখনও গঙ্গারাম হাসপাতাল বা অ্যাপোলোতে না গিয়ে জি বি পন্থে যায়, বা এইম্‌সে যায়।

    ব্যবহার খারাপ? কলকাতার লোকজন দিল্লির লোকজনের থেকে অনেক ভদ্র, এটা তো মানতে অসুবিধা নেই! আমার দাঁতের অপারেশন যিনি করিয়েছিলেন কলকাতায়, শেখর চক্রবর্তী, খুব নাম করা ডেন্টাল সার্জেন, আদ্যোপান্ত অসম্ভব ভালো ব্যবহার করেছিলেন, এক্‌সেপ্ট প্রথম দিন। সেদিন উনি আমার বাবাকেও অপমান করেছিলেন। চলে আসতেই পারতাম প্রথম দিনেই, কিন্তু আমাদেরই দায় ছিল, আমি যে পেশেন্ট। এইখানেই আমরা ডাক্তারদের কাছে অসহায়।

    নয়ডার কৈলাশ হাসপাতালে পাশাপাশি চেম্বারে বসেন দুই গাইনি, একজন ভুল চিকিৎসা করে স্বর্ণালীকে প্রায় পঙ্গু করে দিয়েছিলেন, তারপরেও তার কী মুখের জোর। ইতর মহিলা একখানা। কৈলাশের ডিরেক্টরের বউ। পাশেই বসেন সুজাতা ভাট। অসম্ভব ভদ্র মহিলা। প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যেও উনি ফোন করে, মেল করে রেগুলার যোগাযোগ রাখতেন। স্বর্ণালীর প্রেগন্যান্সি টাইমটা উনিই ডিল করেছিলেন। আমি কোথাও কোনও ভালো ওয়েবসাইটের সন্ধান পেলে উনি আমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে টুকে টুকে রাখতেন। প্রায় মায়ের স্নেহে উনি স্বর্ণালীকে দেখেছিলেন পুরো সময়টা।

    দিল্লিতে সবাই অ্যাকচুয়েলি খারাপ নয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন