এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আধুনিক কবিতা আর আম জনতা

    shyamal
    অন্যান্য | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ | ১৮১৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • b | 117.193.32.82 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:১০421826
  • রুদ্ররুক্ষের পথ আর নির্জন পবনপদবীর তলে কঠিন পর্বতের মত অভ্রংলিহ আমার শরীরের পুরুষকে পেতে দি'। এপাড়ে মনসা ওপারে ছিন্নকন্দ পলিত তৃণের আসন, ধবল ধূলার গন্ধ, সত্যাগ্রহীর মন্ত্রের মত শীতল নিরুৎসুক শূন্যতার বোধি, অলস রোদ্দুরের দীপন প্রাগৈতিহসিক হিংস্র ক্রোধের আয়ুধে আমায় বিদ্ধ করে,ক্ষার করে আমার সংগীত প্রসন্ন শরীরের বিভা। তবু তার শরীরের অনঙ্গার অন্ধকারের প্রতীপকে শাণিত নখরে বিদ্ধ করব বলে কঠিন হই। বিপ্রতীপে রুক্ষরুচি পর্বত, নিপাখি নির্পতগ আকাশ, কঠোর-ক্লান্ত শিলাশৈলের ভিতর থেকে কুটিলক্রোধ হর্য্যক্ষ হয়ে ধ্রুব। তখন আমি ঘনভার অন্ধকারের পিঠ তীক্ষ্ণ নখে বিদ্ধ করব বলে উদ্যত হই।

  • b | 117.193.32.82 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:১৬421827
  • আমি তার ভালবাসার শব গ্রহণ করলাম এক অক্ষম জরদ্‌গব পাহাড়ের নিচে। গ্রহণ করলাম ভয়। চিন্নপক্ষ গগনভেরীর বিপুল ডানার ভয়, তিতিরের করুণ স্বর, তেচালা ধনেশ বাজ পাখির মর্মন্তুত মৃত্যুর প্রত্যক্ষকে। গ্রহণ করলাম আর গ্রহণ করলাম রুদ্র কিরণময় আকাশের পানীয় সর্বদেহে।ভূমির উপর শ্মশানের দহনান্ত দারুর মত ফণিমনসা, উন্নত তৃণের অধবল-ধবল শরীর আর আমি যার ভালবাসার শব গ্রহণ করলাম, তাকে স্পর্শ করতে ভয়।
  • b | 117.193.32.82 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:২০421828
  • (বাকিটা কাল লিখলে চলবে? বানান ভুল হচ্ছে বড্ড! অন্য কেউ লিখেও দিতে পারেন। মোটামুটি হাফ বাকি)
  • a x | 143.111.22.23 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:২৩421829
  • কাল লিখলেও চলবে। কিন্তু এতটা কি আপনি মন থেকে লিখলেন? একেবারে হাঁ করে দিলেন!
  • b | 117.193.32.82 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:২৬421830
  • ( একবার ভাবলাম পিঠ চাপড়ানিটা নিয়ে নি, ফোকটে পাওয়া গেল যখন)।

    কি যে বলেন! টুকলি ফাই।
  • a x | 143.111.22.23 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০০:৩৮421831
  • তাও হাঁ কিছুক্ষণ হয়েই ছিল। এরম ভূতের রাজার বরের মত চাইলেই পাওয়া যায়, যে কবিতাই চাও, হাঁ তো এমনিতেই।
  • Somnath | 117.194.199.38 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:০০421832
  • পচনের কোমল বিন্দুগুলির পর যবের মতো শ্বেত লঙ্কাফলের মতো কৃশ আর পরাগের মতো হরিদ্রার কুঁচি কীট চলে চলে ঘুরছে। স্তনের পর, চোখের পর, যোনির পর। আর রেশমের মতো নরম তনুরুহে বৃত সুঠাম যোনিমন্ডল কোনো শ্রাবনকৃষকের পায়ের মতো। নাভি-পচনের গন্ধে মথিত হল তৃতীয় ইন্দ্রিয়ের পবন আর যে তার জীবিত শরীরের শাখায় আমার ভালোবাসার ব্রাহ্মী, তাকে ভেবে ভেবে অনস্বর অতনুর ব্রাত্য হই। তারপর বিদেহ স্বরের গুণ্ঠনে লুকিয়ে ছায়ার মতো সরে সরে আসে গগনভেদী পাখির বিচ্ছিন্ন পালক, বাজের মৃত চোখ, ঠোঁট, নখ, তৃণ। ভাবি, সে কখনো ভালোবেসে আমার ছিলো, স্বর্ণনিভ শরীরের শাখায় সুখ বেঁধে? তার আশ্চর্য স্তন চুম্বন করেছি অরণ্যপ্রসাধিত দুর্মর ক্ষুধার মুখে। ধ্বংস করেছি শীতল পরিচ্ছন্ন বোধের আকন্দজ্ঞান বাহুমূলের গন্ধে, নাভির গন্ধে, অধর গহ্বরের গন্ধে। লুব্ধ প্রাক্‌-শীত শঙ্খচূড়ের মতো বুকের যে প্রান্তে প্রাণ জ্বলে, তাপময় নদীতীরের ঊরুযুগে স্থাপিত হয়ে সে রৌদ্রের অনুভবে মায়া বসেছে। তাকে প্রেম বলেছি। তাই সে যখন দুর্লভ সুখে গলে গলে শূন্য, অধর-গহ্বরে মূষিকের মাটি, মৃন্ময় তমস্বীনী উদ্ভাসিত প্রভাতের মতো করোটিকীর্ণ, তখন আবার তাকে খুঁজি, যাকে প্রেম বলেছি। অমৃত মানে অনশ্বর। অনশ্বরকে খুঁজি। কঠিন একখানা হাতে হঠাৎ শবের স্তম্ভিত হৃদয় ধরি। আর সেই সর্বশুক্ল কঙ্কালের ঘর দুরন্ত স্পন্দনে দপ্‌ দপ্‌ জ্বলে ওঠে। ভয়ের মেঘ স্বেদ হয়ে ঝরে। ভিন্ন করতে ভুলে যাই আমার সর্বস্ব। গুণ্ঠনের চিক ভেঙে, ভোর হয় গগনভেরী পাখিদের তিতিরের শ্রুতির দুয়ারে বাজে সুবর্ণরেখার জন্ম। তাকে প্রেম বলি।
  • Somnath | 117.194.199.38 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:০৯421833
  • সারারাত কবিতাটা অর্ধেক হয়ে পড়ে থাকবে আর তার মধ্যের ফাঁক বোজাতে লোকে বাজে গল্প করবে, এটা ঠিক নিতে পারলাম না।

    ডিডি কথিত বুদ্ধদেব বসুর লেখাটাও টুকব ভাবছিলাম তারপর দেখি, "কবিতার দুর্বোধ্যতা' র পরে আবার 'কবিতার পাঠক" "প্রকৃতির কবি' 'নবযৌবনের কবিতা', "কবি ও তার সমাজ'এই সব একের পর এক লেখা। যা বেশিটাই যেন শ্যামলবাবুর জন্যেই লেখা।

    তো বইটাই রেফার করে দিই। ইচ্ছে হলে পড়বেন।

    'বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা'
    সংকলন - ১
    সংকলক মীনাক্ষী দত্ত
    প্রতিভাস - ২০০৮
    ৩০০ টাকা

  • a x | 143.111.22.23 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:১১421834
  • :-) থ্যান্‌কু, সোমনাথ। b'র লেখা অংশটাতে কি ঐরকম করেই ব্রেক আছে? মানে ছাপা কবিতাটা কি টানা লেখা না প্যারাগ্রাফ ব্রেক আছে কোন?
  • Somnath | 117.194.192.97 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:২০421836
  • b র এক একটা পোস্ট এক একটা প্যারা। যেমন আমারটা গোটাটাই একটা প্যারা।
  • tatin | 130.39.149.146 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:২৩421837
  • নবকল্লোল গোলা বই ছিলো তো: অরওয়েলের নাটকটার নারায়ণ সান্যাল ভার্সন 'এক, দুই তিন.....' নবকল্লোলে বেরিয়েছিলো।

    তাছাড়া বিকিনি পরা মুনমুন সেন-এর ছবি, মাধুরীর ব্রেস্ট ইম্‌প্‌লান্ট ইত্যাদি নিয়েও সুন্দর লেখা থাকতো- চিত্রহার যুগে প্রায় একমাত্র ভরসা ছিলো নবকল্লোল ও আনন্দলোক
  • tatin | 130.39.149.146 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:২৭421838
  • ১১-১২'র কবিতার কথা বলা হচ্ছে অথচ চন্ডীদাসের পূর্বরাগের কথা কেউ বলছেনা :(

    মঙ্গলাচরণের জননী-যন্ত্রনা বলে একটা কবিতা সহায়ক পাঠে ছিলো, সেইটেও দিব্য লাগতো।

    আর, বুদ্ধদেব বসুর কোনও একটা ভাটের কবিতা পড়ানো হতো, পান্ডুলিপি নাম বোধ হয়।
  • tkn | 122.163.77.32 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:২৮421839
  • প্রসাদ বলে আর একটা বইও বেরোতো তো। তবে তাতে মেনলি টলিউড রাজত্ব করত
  • tatin | 130.39.149.146 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:৩৮421840
  • ওহো চন্ডীদাস নইয়ে খিল্লি হয়ে গেছে দেখলাম, যাক গে।

    বিটিডব্লু শৌভ, গোল গোল গল্প পড়ার মধ্যে ইনফিরিয়রিটির কী হলো? সারাদিনের ঝাঁটজ্বলার মধ্যে চাট্টি মধুর রসের আস্বাদ পেতে যদি গল্প-ছবি পড়তেই যাই সেটা গোল গোল হওয়াই বান্‌ছনীয়।

    এবার প্রশ্নটা হলো শিল্পী গোলগল্পের মধুর রসের মধ্যে অনন্তের সন্ধান দিতে পারছেন কি না!
  • shyamal | 24.117.233.39 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:৪০421841
  • মোটামুটি পোস্টারদের অধিকাংশের মতকে এইভাবে সামারাইজ করা যায় :
    ১) আধুনিক কবিতা যে মেইনস্ট্রীম বাঙালী পড়েনা, অথচ তারা আধুনিক গল্প, সিনেমা, উপন্যাসে উৎসাহী তার কারণ এরা নিতান্তই অর্বাচীন ও মধ্যমেধার পাবলিক।
    ২) আধুনিক কবিতার মানে বোঝার দরকার নেই। যদিও কবিতার আদিকাল থেকে গত একশো বছর আগে অবধি যা কবিতা লেখা হয়েছে , প্রায় সবই সহজভাবে বোঝা যায়।
    ৩) দেশ একটি নবকল্লোল জাতীয় নীচুমানের পত্রিকা
    ৪) আধুনিক কবিতার যদি অর্থ না বোঝা যায় তবে তা লেখকের অক্ষমতা নয়, পাঠকের।

    লেখক যদি নিজের পয়সায় বা কোন প্রকাশক ধরে কবিতার বই বের করেন, কারো কিছু বলার নেই। কিন্তু কোনক্রমেই কয়েক কোটি বাঙালী সাহিত্য পাঠককে কানে ধরে সেই বই কেনানো বা পড়ানো যাবেনা।
    PS: একজন বলেছিলেন সুনীলের লেখার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। ঠিকই সেটা একা এবং কয়েকজন, প্রথম আলো, নীললোহিতের কয়েকটা উপন্যাস, অর্জুন এসবের জন্য। সুনীলের কোন কবিতা পড়িনি।
  • tatin | 130.39.149.146 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:৫৫421842
  • আচ্ছা আমরা শুধু কবিতা নিয়ে এই ফর্মুলেশন নামাচ্ছি কেন? যেকোনও ধরণের নির্মাণের ক্ষেত্রেই তো এইরূপ সূত্রায়ণ পে্‌র্‌যাজ্য : চিত্রকলা, জুতোর ফ্যাশন, পদার্থবিদ্যা, গণিত।

    ধরুন, আদিতে সাধারণ মানুষ শুধু পাটিগণিত করতো, তারপর ইউক্লীডীয় জ্যামিতি, শ্রীধরাচার্য-র দ্বিঘাত সমীকরণের রুট প্রভৃতি করলো।অ। করতে করতে একসময়ে লিনিয়ার এলজেব্রা, ফাংশনাল এনালিসিস, আরও এমন সব চাপের জায়গায় চলে গেল যে অংক আর অংক থাকলো না, পুরো কিছু পাই অনুমানে-র কেস হয়ে উঠলো।
    কবিতাতেও হয়তো সেরকমটা হয়েছে
  • pinaki | 131.151.102.250 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০২:১৪421843
  • একজ্যাক্টলি। এখন প্রতিটা ক্ষেত্রেই যেকোনও কিছুকে ঠিকভাবে বুঝতে সেই বিষয়ের একটা বেসিক নলেজ লাগে। কিন্তু সমস্যা হল অঙ্ক, ফিজিক্সকে কেউ এন্টারটেইনমেন্ট মনে করে না, যেটা সাহিত্য, শিল্পকলা, সিনেমা, ইত্যাদিকে মনে করা হয়। অর্থাৎ ধরে নেওয়া হয় যে এগুলো মানুষকে বিনোদন দেওয়া এবং নিজের অবসর সময়ে বিনোদন পাওয়া - এই দুই উদ্দেশ্যেই তৈরী। বাস্তবে দেখা যাবে এই বিনোদনের মাধ্যম্‌গুলোর প্রতিটারই একটা অংশ আছে যার বিনোদন দেওয়া (যত বেশী সংখ্যক মানুষকে) এবং সেখান থেকে ব্যাবসা করা উদ্দেশ্য। যেমন স্বপন সাহা, কুমার শানু। ঠিক তেমনই আর একটা অংশ আছে যেটায় নিজের বিনোদন এবং কেবল সমঝদার লোকের অ্যাপ্রিশিয়েশনটা বড় কথা। ব্যাবসা হতেও পারে, নাও হতে পারে। যেমন ক্ল্যাসিকাল মিউজিক। কিন্তু বিনোদনের অন্য মাধ্যমগুলোর তুলনায় আধুনিক কবিতা প্রায় পুরোটাই দ্বিতীয় ক্যাটেগরিটায় পড়বে। যেটা কবিতার স্বাতন্ত্র্য। চিত্রকলাও কিছুতা এই একই গোত্রের। কিন্তু গান, বা সিনেমায়, বা সাহিত্যের মধ্যে গল্প - এইগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে আনন্দ দেওয়ার দিকটা অনেক সময়েই ডমিনেত করতে দেখা যায়।

    কিন্তু সব মাধ্যমকে একই রকম হতে হবে তারই বা মাথার দিব্যি কে দিয়েছে?
  • pinaki | 131.151.102.250 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০২:১৫421844
  • *ডমিনেট
  • tatin | 130.39.149.146 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০২:২২421845
  • আচ্ছা অংক বাদ দিয়ে ফ্যাশন ডিসাইন-কে ধরো
  • anon | 202.3.217.125 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৮:২৯421847
  • দু, আমি ওখানকার লোক নই তবে এমনি বেড়াতে গেছি।

    তেকোনা, :-) যখন দেখি ওসব না দিলেও মোটামুটি চলে যাচ্ছে তখন বাদ দিই আর ভাঙাপ্রেমের ওই লেখাটা নিয়ে আরো কিছু বলার ছিল পরে আরেকদিন হবে খ'ন।

    শ্যামলদা, শিল্প সাহিত্যের মধ্যে বিমূর্ততার বা পরাবাস্তবতার আড়ালে রয়ে যাওয়া শব্দের বা বাক্যের বা ছবির আসল মানেটা বুঝে ওঠা অনেক সময় বেশ কঠিন হয়ে পড়ে যখন কোনো শিল্পী এমন কোনো রূপকের বা উপমার বা চিত্রকল্পের মধ্যে দিয়ে তার মনের ভাবটা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন যেটা পাঠকের বা দর্শকের নিজের জানাশোনার মধ্যে এর আগে কেউ করেননি আর এই নতুন ভাবে মনের ভাবনাগুলোকে ফোটানোর ইচ্ছেটা মানে পাঠককে বা দর্শককে নতুন কিছু পড়ানো বা দেখানো বা তাকে নতুন ভাবে কোনো ব্যাপারে ভাবতে বাধ্য করানোর চেষ্টাটুকু বোধায় সব শিল্পীদের মধ্যেই থাকে অবশ্য কারুর মধ্যে কম কারুর মধ্যে বেশী যেমন জীবনানন্দের লেখার মধ্যে সে'রকম অজস্র নমুনা ছড়ানো রয়েছে যার মধ্যে উপমাগুলো বোঝা খানিকটা সহজ যদিও সবগুলো নয় যেমন বনলতার ঘন কালো চুলের মোহময়তার বর্ণনায় "অন্ধকার বিদিশার নিশা' বা মুখের সৌন্দর্যের বর্ণনায় "শ্রাবস্তীর কারুকার্য' বা হেমন্তকালে নি:শব্দে সন্ধ্যা ঘনানোর বর্ণনায় "দিনের শেষে শিশিরের শব্দ' এ'সবগুলো কিছুটা সহজে বোঝা যায় আবার কিছু উপমা বোঝা হয়তো সেই তুলনায় কঠিন যেমন চোখের বর্ণনায় "পাখির নীড়' মানে নিশ্চিন্তে শান্তিতে বিশ্রামের একটা আশ্রয়ের জায়গা যার দিকে বাস্তবে বা কল্পনায় তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে দেহমনের সব ক্লান্তি যেন চলে যায় যেটার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন এই কথা ব'লে যে "আমারে দুদন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন' আর সেই শান্তির আশ্বাস যেন ওই দুটো চোখের চাউনির ভাষাতে জমে রয়েছে।
    রূপকের বেলাতেও সেই সহজ আর কঠিন দু'রকম রয়েছে, তার মধ্যে সহজ আছে যেমন "আমি' দিয়ে বোঝানো হয়েছে পুরুষের চিরন্তন সত্বাকে যা সমস্ত ক্লান্তি আর দিশেহারা অবস্থার শেষে নারীর ভালোবাসার মধ্যে আশ্রয় চায় অথবা "চিল' বলতে শুধু এই পাখিটাকেই নয় বরং বোঝানো হয়েছে সমস্ত প্রাণীকে যারা বাঁচার জন্যে রোজ সারাদিন ধ'রে খেটে চলে ও দিনশেষে ক্লান্তি মিটাতে বাসায় ফিরে বিশ্রামের মধ্যে দিয়ে রাত কাটায় তবে এগুলো কিছুটা সহজ কিন্তু এর চেয়ে একটু জটিল রূপকও আছে যেমন "ডানায় রৌদ্রের গন্ধ' বলতে বোঝানো হয়েছে সারাদিন ধ'রে কাজের খাটুনিতে শরীরে জমা ক্লান্তির রেশ অথবা "পান্ডুলিপি' শব্দটা দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আমাদের রোজকার জীবনের অফুরান গল্পের চলা শুধু ওই বাঁচার জন্যে প্রতিদিনের লড়াইয়ের সত্যি কথাটুকু দিয়েই শেষ হয়না কারণ সেটা ছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে সেই কখনও শেষ না'হওয়া গল্পের মধ্যে যেমন রোজ সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে যখন মনে হয় এতো খাটুনি আর সইছে না সমস্ত শরীর যেন ভেঙে পড়তে চাইছে তখন মনের সাথীর খোঁজ করা আর তার সাহচর্য ও ভালোবাসার মধ্যে শান্তি পাবার আশা ভরসার কথা দিয়ে জীবনের খাতায় সেই সত্যি গল্পের খসড়া লেখাটা এগিয়ে চলে আর এছাড়া আছে "জোনাকির রঙ' যা দিয়ে সেই ভালোবাসার দেয়ানেয়ার স্বপ্ন ইচ্ছে অনিচ্ছে এ'সবকিছুর ভাঙাগড়ার নানান বদল হতে থাকা রঙগুলোকে বোঝানো হয়েছে।
    চিত্রকল্পের ব্যাপারেও সেই সহজ কঠিন দু'রকম আছে যেমন এটা বোঝা সহজ যে রোজগারের ও ভালোবাসার খোঁজে অনেক জায়গায় ব্যাকুল হয়ে দিশেহারার মতো ঘুরে বেড়ানোকে বোঝাতে গিয়ে বলা হয়েছে "সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি' আর এর থেকে একটু জটিল নমুনা রয়েছে ওর সাথেই যেমন "হাজার বছর ধ'রে আমি পথ হাঁটিতেছি' কিংবা "বিম্বিসার অশোকের ধুসর জগতে সেখানে ছিলাম আমি' এই দুটো এক্সপ্রেশনে একদিকে যেমন "আমি' শব্দটার রূপকের মানে কি হতে পারে তার ইঙ্গিত রয়েছে অন্য দিকে বোঝানো হয়েছে যে সেই "আমি'টা আগেও ছিল এখনও আছে কারণ সেটা চিরন্তন মানবসত্বা যা মানুষের ইতিহাসের শুরু থেকে আজ অব্দি যেন স্থান কালের সব বাধা পেরিয়ে শাশ্বত ভালোবাসার খোঁজ ক'রে চলেছে।
  • Sudipta | 122.169.145.167 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১০:১৯421848
  • সামান্য প্রসঙ্গান্তর (অগ্রিম দু:খপ্রকাশসহ),
    পিনাকী, সুমন (-দা , যদি সম্বোধন নিয়ে হ্যাপা না থাকে :) ),
    আমি ২০০০ মা:, টাকি; সুদীপ্তবাবু মারা গেছেন জানো বোধ হয়, অরুণবাবু-ও রিটায়ার করেছেন, আমরা বেরনোর পরে। আমাকে মেল করলে বাকি কথা বলব; sudipta.bhattacharya83 জিমেল এ।
  • Samik | 219.64.11.35 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১১:৩২421849
  • শ্যামলদার লেখায় একটু অভিমানের ছোঁয়া পেলাম। আমার কথাটুকু বলি।

    কবিতার কখনও মানেবই হয় না। কবিতা একটা অনুভূতির জিনিস, ওটাকে ঠিক শব্দ লিখে মানে বের করে বোঝানো যায় না। গানের সুরের কি মানে হয়? সে শুধু কানে শুনে শরীর দুলিয়ে অনুভব করার জিনিস। কবিতাও অনেকটা সেই রকম। কেবল অনুভূতিটা আলাদা। সবার যেমন গানের কান হয় না, তালজ্ঞান হয় না, তেমনি সবার কবিতা অনুভব করার সেন্স হয় না। এতে কোনও মধ্যমেধা উচ্চমেধার ব্যাপার নেই, প্রান্তিক মেনস্ট্রীম ব্যাপার নেই। এ যার আছে তার আছে, যার নেই, তার নেই।
  • anon | 202.3.217.125 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১২:০০421850
  • শ্যামলদা, আগের পোস্টে বলা হয়নি যে অনেক শিল্পীর লেখা বা আঁকা মতো'ই জীবনানন্দের অনেক কবিতাতেও খুব ভালো দুটো তুলনামূলক রূপকের ব্যবহার রয়েছে সে'দুটো হলো দিনের রোদ ও রাত্রির অন্ধকার যেখানে একদিকে যেমন দিনের রোদের চড়া রঙ দিয়ে বোঝানো হয় খাওয়া থাকা পরার উপায় করতে রোজের কাজের বা লেনদেনের ব্যস্ততা খাটুনি ঘাম এ'সব কিছুর বাস্তব সত্যিটাকে আর অন্যদিকে তেমনি রাত্রির অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে বোঝানো হয় দিনশেষে ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রামের সময় একটু শান্তির ও ভালোবাসার আশায় আরেকটা মানুষের দেহমনকে কাছে পাবার ভাবনাটাকে যা হয়তো কখনও বাস্তবে সত্যি হয় আর কখনও শুধু কল্পনা ইচ্ছে স্বপ্ন এ'সব হয়েই থেকে যায় গল্পের মতো।
  • tatin | 70.177.57.163 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১২:০২421851
  • এইটা কী কইলেন শমীক, কবিতা তো আসলে কিছু শব্দ-ই, শব্দ লিখে তার মানে বোঝানো যাবেনা কেন?
  • d | 144.160.5.25 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১২:৩৩421852
  • আনন যখন স্প্যানিশে লেখেন, তখন নির্ঘাৎ তাঁর নাম হয় কার্লোস ফুয়েন্তেস। এক একটি বাক্য আসলে এক একটি অনুচ্ছেদ। :))
  • kanti | 125.20.11.34 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:১৬421853
  • শমীককে দুশ বার সমর্থন কোরে শ্যামল বাবুর কাছে একটি প্রশ্ন। আপনি কি উচ্চাংগ সংগীত বোঝেন?আমি বুঝিনা।বোঝার চেষ্টাও কোরি না।ও আমার হবার নয়।মাঝে মাঝে গুরুর পাতায় অনেকে গানের ব্যাকরন ইত্যাদি নিয়ে ভারি ভারি আলোচনা করে।তার সুধী বোদ্ধাও আছেন। আমি কিস্‌সু বুঝি না। তার জন্য কোন লাজ লজ্জাও নেই।তাইলে খামকা ঢাল -তরোয়াল নিয়ে ও ভাবে কবিতা বুঝতে খেপে উঠলেন কেন?
  • Samik | 219.64.11.35 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:২৬421854
  • আমি খেলা বুঝি না। দাবা-ফুটবল কিরকেট-লুডো-কুস্তি-ওয়েটলিফটিং-পোলভল্ট-কিতকিত কোনও খেলায় আমার কোনও ইন্টারেস্ট নেই। কে ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন, কবে পরের অলিম্পিক, গ্র্যান্ডমাস্টারের কী নাম, কোনওদিন জানার চেষ্টা করি নি। কেউ খেলার সুতো খুললে তাতে আমি একটাও পোস্ট দিই না। তো কী?
  • sinfaut | 203.91.193.7 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:৪৬421855
  • না না কবিতা বুঝতে তো খেপে ওঠেননি। আধুনিক কবিতা যে বোঝা যায় না সেটা অন্যদের বোঝানোর জন্য খেপে উঠলেও উঠতে পারেন।
  • d | 117.195.34.237 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:৫২421856
  • আরে শ্যামল তো বুঝতে চান না। বলেই দিয়েছেন তো। উনি বলতে চাইছেন যে ওঁর না-বোঝাটা একটা ফেনোমেনন বিশেষ।

    কিন্তু নবকল্লোল কী মাপকাঠিতে খারাপ সেটা উনি বললেন না।
  • Arpan | 216.52.215.232 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:৫৮421858
  • কিন্তু, কিন্তু, শমীক এইটা কী কইলা? তুমি নাকি পাড়ার কেলাবে গোলকিপিং শিখতা! না বুইঝ্যা ক্যামনে শিখতা?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন