এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • নতুন বিষয় : নতুন বিষয় : নতুন বিষয়

    notun bishoy
    অন্যান্য | ১৩ জুলাই ২০১১ | ১৬৩৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | 132.167.4.33 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২১:৫৫477194
  • কাক্কেশ্বর মাউস বাগিয়ে বসে আঁক কষে। "বায়নোমিয়াল না লিনাক্ষ?' এই সমস্যায় পরে।একবার দ্যাখে টুকলিপিটিং সাড়ে আড়াই পা উঠেছে আর অনত্র হিসেবে পৌনে দেড় পা নেমেছে।

    কাবলি ছোলার গাছে ফড় ফড়িয়ে ওঠে গাঁট্পাখীরা, রিসাং নদীর বাদামী জলে চিকমিকিয়ে ওঠে ফুল্লরা মাসের চকমকি মাছেরা। শিস দেয় নন্দীরা।

    মিস পিটিঙের ল্যাজ থেকে ঝরে পরে সোহাগী আতর আর ঝিলমিলানো নকুলদানা। সারা আকাশকে ম্যাজেন্টা রঙে রাঙিয়ে জিব কাটে সুয্যি ঠাকুর, "আজ না মাসের পয়লা?"

    ভাঁড়ারে ছিলো না আমসত্ত। তবু ডুগডুগিকে ভোলে না দোয়াতদানী। মুড ইজ পার্পল।
  • Yan | 161.141.84.239 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:২৭477195
  • "সুজ্জি ঠাকুর আজ উত্তরে রওনা দেবেন, পুজো দেবো না?" গম্ভীর মুখে বলে পাখিওয়ালাদের ছেলে মুমন, তার হাত থেকে ফট ফট করতে করতে উড়ে যায় সবুজ, লাল, সাদা, কালো, হলুদ পাখিরা, ম্যাজেন্টা আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে যায় হরেক হরেক রঙ।
    লাজুক সুজ্জি ঠাকুর ক্যালেন্ডারের পাতা ছুঁয়ে চুপটি করে দাঁড়ান।
  • | 24.97.150.215 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৩৮477196
  • মায়াবনের ভিতরে লুকিয়ে চুপিয়ে দাঁড়িয়ে ভবদুলাল একখান ধুলোটে তুলোট কাগজ বের করে সাবধানে লেখে

    " অদ্য ব্যয় হইল
    ১) ময়ুরক্ন্ঠী ল্যাজ - ১টি
    ২। সোহাগী আতর - ১ শিশি
    ৩। নকুলদানা - .......
    ৪। পাখি - ৫টি"
  • kc | 188.61.96.29 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৫৪477197
  • ঘ্যাট ঘ্যাট ঘ্যাটাং শব্দে ঘুম চটকে যায় ভবদুলালের। নতুন লোহাটা লেদে বসিয়ে টুলে বসতেই চোখ টেনে এসেছিল। কারেন্ট চলে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। গেল এই পিসটা। আবার নতুন মাল চড়াতে হবে। আর এটা? থাকুক, ছোটোখাটো স্টাড বানিয়ে নেবে কোনও ছুটকো অর্ডার এলে।

    ভিতর বাড়ি থেকে আওয়াজ আসে, বাজারটা ঘুরে এস। আজকে মেয়ে জামাই আসবে খেয়াল আছে? ফুলকপি আর মুরগীর মাংস আনলেই চলবে। বেশী আদিখ্যেতা করার দরকার নেই। তাড়াতাড়ি পিকুর হাতেই বাজার পাঠিয়ে দিও। আমার হাত জোড়া আছে আজ।

    পিকু, ভবদুলালের ছেলে, চলল বাপের সাথে। সেভেনে পড়ে, যেতে যেতে বলে "বাবা আমায় যে বলেছিলে রবিবার করে মাছ ধরতে নিয়ে যাবে?" এইরোব্বারওতো হলনা!!!

    ভবদুলালের চোখে তখন হঠাৎ আটকে গেছে মুদির দোকানে রাখা নকুলদানার বয়ামে..........

    নকুলদানা, নকুলদানা, ....... কোথায় যেন দেখেছি!!!!
  • | 24.97.150.215 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ ২৩:৫৯477198
  • দমকা হাওয়া ছুঁয়ে যায় ভবদুলালের কানের লতি। জামায় রেখে যায় সোনালি, বেগুণী, আকাশী, গোলাপি কটি রোঁয়া। টুকলিপিটিংএর ল্যাজ থেকে খসে পড়া।
  • kc | 188.61.96.29 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০০:১৩477199
  • ভবদুলালের দিকে তাকিয়ে থাকে পিকু।

    মনে মনে বলে, "হাঁ করা ছেলের কথা পড়েছি, হাঁ করা বাবাও হয় তাহলে!!!"

    বাবার থেকে পিকু দৃষ্টি চলে যায় বাজারের গায়ে লেগে থাকা ল্যাম্পপোস্টে লটকান 'দাবাং' এর পোস্টারে। সলমান খানের নীচের চোয়ালটা একটু ঝুলে আছেনা?

    সলমান খানও তাইলে হাঁ করা? আমার বাবার মতন ঠিক।

    ওদিকে নটা বাজার ভুঁ পড়েছে। ভুঁউউউউউ ........
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০২:৪১477200
  • হ্রদের উপর দিয়ে উড়তে উড়তে নিশিতার হাত থেকে খুলে পড়ে যায় সেই আংটিটা, যেই আংটিতে বিষ। টুপ করে জলে পড়ে আংটি, জলবৃত্তের পর জলবৃত্ত ছড়িয়ে যেতে থাকে।
    জলের ভিতর উজ্জ্বল রত্নওয়ালা আংটি ঝিলিক দিতে দিতে ডুবছে আর সেদিকে দ্রুত সাঁতরে আসছে রুইমোতি। ভাবছে, কী জিনিস এটা? খাবো কি খাবো না?
  • i | 147.157.8.253 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৬:৫৯477201
  • তো, কহানিরা বয়ে চলতে থাকে -সমান্তরাল। কখনও প্যাঁচ লাগে, গোত্তা খায়-এর কিৎসা ওর কহানিতে জড়ায়, আবার অনাবিল হ্যাঁচকায় একলা লাট খায় গল্প।

    তো, এইরকম হয়। যখন ভবদুলাল ছেলের সঙ্গে মাছের বাজারে ছিল, কোথাও তখন টুকলিপিটিং বিষণ্ণ ছিল-তার ল্যাজের রোঁয়া খসছিল-ডাবর আমলা কাজ করছিল না, কোথাও আবার দীঘিতে ঘাই দিচ্ছিল প্রাচীন মৎস।

    তো, ভোঁ বাজল নটার। টুকলিপিটিং ল্যাজ মুড়ে থাবা চাটল , ফেস পাউডারের পাফ হাতড়ালো, হাতে এলো লিপস্টিক-বেগুণী।রুইমোতি টুপ করে গিলে নিল আংটি, জোয়ানের আরক একঢোক। আর ভবদুলাল পকেট হাতড়ে বের করল তুলোট কাগজের লিস্টি-প্যাঁচ খুলে অন্যরকম এখন-
    " অদ্য ব্যয় হইল
    ১) ফুলকপি বাবদ-....
    ২) কইমাছ বাবদ-...."

    সামনে মাংসের দোকান । পাঁঠাদের ধড় ঝুলছে। মাটিতে মুন্ডু টুন্ডু,খুর, ল্যাজ এবং রক্ত। পিকুর চোখে হাত চাপা দিল ভবদুলাল।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৭:২৪477202
  • দেখতে দেখতে মাসপয়লা এসে গেছে, কোথাও শীতের বাতাসে লেগে গেছে বাসন্তী টান। কোথাও আম্রমঞ্জরী চোখ মেলছে ধীরে ধীরে। আবার কোথাও তুষার ঝরছে তুষার ঝরছে ঝরছেই। হাওয়ায় কনকনে লঙ্কার কামড়। কোথাও আবার সবই এর বিপরীত, সেখানে গ্রীষ্ম চলে যাই যাই করছে আর শরৎ আসি আসি আসি করছে।

    কালপুরুষ হেঁটে যায় এসবের মধ্য দিয়ে, কিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। তার ম্যাজেন্টা মেঘ জুড়ে শুধুই সুনীপার বিদায়বেলার তুষারমাখা মুখ, একথোকা গোলাপের পাশে।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৭:৩১477204
  • ওদিকে ভরা বৃষ্টির শব্দে মল্লার শুনতে শুনতে বনী তোলা উনুন ধরায় ঘরের এককোণে, সাবধানে, যেন জল পড়ে উনুন না ভিজে যায়, আগুন না নিভে যায়। উনুনে কড়া চাপিয়ে খানিকটা তেল দেয়। আস্তে আস্তে তেল এসে যায়। তখন সেই গরম তেলে সে ফালি ফালি বেগুন ভেজে তুলতে তুলতে ভাবে, বেগুনভাজা তো হলো, এবার দেখি খিচুড়ীর কোনো উপায় হয় নাকি! আজ এই দিয়েই চালিয়ে নিতে হবে।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৭:৪৫477205
  • ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কাকভেজা হয়ে আসে বর্গীদের ছেলে লাটাই, বনীর বন্ধ দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে বলে, "বনী, অ বনী, এই দ্যাখো, কতগুলো কইমাছ পেয়ে গেলাম রাস্তায়, পুকুর থেকে উঠে কানকোয় হাঁটছিল। ভালো করে ভাজো তো দেখি।"
  • i | 147.157.8.253 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৭:৫৫477206
  • আর মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এবার সে নিচু হয়, পিকুর কানের কাছে মুখ নেয়, আউড়ে চলে- সোনা আমার, ধন আমার, বাপ আমার-ঐ শোন বাপ ময়ূরপঙ্খী বাতাস, ঐ শুঁকে নে আসনপিঁড়ি চাঁদ, ঐ দ্যাখ কোমল গান্ধার- 'মধুং দুধুং পায়সং' রে বাপ-মধুং দুধুং পায়সং-রক্ত কই-নাই তো? খুর ল্যাজ নাই নাই-ছাগলছানা চরে বেড়ায়-খেলবি বাপ? সব দেব তোকে-কি চাস বল সোনা-চোখ খুলিস না বাপ-চোখ বুজে থাক-ও সোনা ও যাদু ও ধন-চোখ বুজে থাক।
    পিকু পিটপিট করল চোখ। ভবদুলাল হাতের চেটোয় স্পষ্ট অনুভব করল আত্মজর চোখের পাতা, চোখের মণি,ভ্রুর রোমরাজি , হাল্কা ঘাম। হাত সরালো না ভবদুলাল। ভবদুলালের পাঞ্জার তলায় চোখ রেখে পিকু বলল- আমি দাবাং দেখব বাবা, দাবাং টু-চিপকালো সাঁইয়া ফেভিকল সে-
  • aka | 85.76.118.96 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৮:১৮477207
  • ভবদুলালের মনে পড়ে হাঁড়িকাঠ, মনে পড়ে আর্তনাদ, পেশির আস্ফালন আর লাল রঙ, সমবেত ভক্তের উল্লাস আর প্রথমবার তার কারণে কান্না। সেবারই প্রথম পুবালিকে দেখে ভবদুলালের মনের কোণে আনচান, উষ্ণতার আবেশ, সেবারই ভবদুলালের প্রথম পা কৈশোরে, পা ফেলেছিল পিউবার্টি, শুনেছিল এক দুজে কি লিয়ের গপ্পো। পিকুর গলা উপচে শোনা যায় বাসের হর্ন, দোকানি জিজ্ঞেস করে মেটে লাগবে নাকি?
  • ব্যাং | 132.167.103.194 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৮:৩১477208
  • উড়তে উড়তে নিশিতার চোখ ভারি হয়ে আসে, ডানা যেন পাথর, তবু নিশিতা উড়তে চায়। থামলেই যে আকাশভরা সেই মুখ! সেই মুখের চোখদুটোয় আলোর ঝিলিক, মুখটা হাসলে গালে টোল পড়ে, চুলগুলোর যেন রেশমনরম। তবু নিশিতা আর চায় না সে মুখ দেখতে। সে আর কিছুতেই এলোমেলো করে দেবে না নরম চুলগুলো। কিছুতেই চেপে ধরবে না তার নাক। নিশিতা শুধু উড়বে। উড়বে আর উড়বে। হাজার ইচ্ছেতেও তাকাবে না সেই নরম মুখটার দিকে। উড়ে উড়ে নিশিতা দেখতে চায় এ আকাশের শেষ কোথায়! আকাশের পরে কী আছে? যেখানে সেই মুখটা নেই, সেখানে তবে কী আছে?
  • i | 147.157.8.253 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৮:৪০477209
  • কিচ্ছু নেই কিচ্ছু নেই কিচ্ছু নেই। সব ফাঁকা সব মিথ্যে সব ঘোর ফাঁকি। ছাই মাটি জল। সেই সব।সেই সত্যি।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৯:০৬477210
  • আকাশের ওপারে আকাশ, তারও ওপারে একটা মস্ত চোখ চেয়ে আছে নিষ্পলক, সেই চোখে বিশাল এক কালো গোল মণি। সেই কালো গোলের মধ্যে ঠিক মধ্যিখানে আরো ঘোর মধ্যরাত্রিকালো আরেক মণি। নিশিতা উড়তে উড়তে শাঁ করে ঢুকে গেল সেই মধ্যমণির অন্ধকারে।

    অন্ধকার পার হয়ে আছে কি সেই আলোর আলো? তমসার পারে সেই অমৃতজ্যোতি? এই ব্যবহৃত জীর্ণ জগৎ যেখানে নতুন যৌবন পেয়ে জেগে ওঠে? ছিন্ন ডানা যেখানে নতুন করে গজিয়ে ওঠে অবারিত করুণাধারায় ধুয়ে ধুয়ে ধুয়ে?
  • | 214.130.244.200 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৯:৫২477211
  • আহা। নিশি আর ইন্দ্রানী র যুগল বন্দী। আমি শুধু পড়ি।
  • | 214.130.244.200 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৯:৫৩477212
  • /ধ্যাত। ইন্দ্রানী দি
  • dd | 132.167.27.252 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১১:৫৫477213
  • করুণাধারায় ধুয়ে ধুয়ে বিকলিত হয়ে আসে যুদ্ধবৈকল্য পিড়ীত আত্মা।দ্যুতিমান নিশিতা অতঃপর অযাচিত পাখা মেলে কৈশোরপ্রভাতে। সেখানে বিষাদমেঘে আকাশ গর্ভিনীঅবসাদে স্তোকনম্রা। সির সিরে মৃত্যুশীতল হাওয়ার দমকায় কেঁপে ওঠে পীতননীর মতন উষা আলোক।জীবনকুয়াসায় আচ্ছন্ন এক নিভৃত প্রত্যুষ।

    তার পাপোষ ভরে ওঠে ঈষৎ ঝাল আলুরদমে। উপছে পরে পিকদানি। প্লাস্টিকের জলে খেলা করে নাইলনের মাছেরা। ব্যাং অস্ফুটে উচ্চারণ করে বীজমন্ত্র। "বিশেষ্য হি যৎ লিংগম, বিভক্তি বচনে চ যে"।
  • | 214.130.244.200 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১২:০১477215
  • ইয়ে, এই ব্যাঙ কি আমাদের ব্যাঙ?
  • dd | 132.167.27.252 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১২:১৭477216
  • বহতাজীবনের এক দুরপাথুড়ে জমির সলাজকোনে সেই যে স্মৃতির জংধরা কুয়ো, তার শ্যাওলামেদুর ঢেউহীনজলের সেই ব্যাং। ওগো, তার গহীনচোখে যে মেঘ্প্রতীতির ছায়া।

    ধ্যাৎ। আমাদের ব্যাং তো উনিশ তলায় থাকে। তার গায়ে ডোরাকাটা দাগ। "প্রাননাথ" বলে ডাক দিলে পুরো পাড়া কেঁপে যায়।

    গুলিয়ে দিলেই হোলো ?
  • Ekak | 69.99.230.125 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১২:২১477217
  • তানি সর্বানি ঈযত্যনি বিশেষণ পদেষ্যপি :) ( বানানের পুরো গুলুগুলু হয়ে যাই আমি বাংলা টাইপ করতে গেলে :()
  • Yan | 161.141.84.239 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৩:৩৮477218
  • তামার কুলোর মধ্যে ছড়ানো বিশেষ্য বিশেষণ সর্বনাম অব্যয় আর ক্রিয়া। এর থেকে সাবধানে বেছে অব্যয়কে তুলে নেয় লামেহা। তারপরে রওনা দেয় সবুজ জমি বালি জমি পাথুরে জমি পার হয়ে নীল পর্বতের দিকে। অব্যয়গুলি তার ঝোলায় কোলাহল করে। আঁ আঁ আহ আহ ঈশ কিংবা সুতরাং এবং ইত্যাদিরা নানারকম সুরে গান ও কথা চালাতে থাকে। ক্লান্ত লামেহা ঝোলা নামিয়ে শুয়ে পড়ে পান্থপাদপের ছায়ায়।
    ঘুমের ভিতরে তার গভীর আকাশ জুড়ে গোলাপী রং গাঢ় হয়ে ওঠে, তারপরে চারপাপড়ি ফুলের চারখানি পাপড়ির মতন খুলে যায় সেই গোলাপী, চারটি তুলোপরীর মতন চারদিকে উড়ে যায় শ্রী হ্রী স্বাহা ও স্বধা, উড়ে যায় খোলা আকাশ দিয়ে, সেই আকাশ তখন এক্কেবারে ইন্দ্রচ্ছন্দার মতন ঘন নীল।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০২:১৯477219
  • আসলে ইন্দ্রচ্ছন্দা না, ঘুমচোখে চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসে লামেহা, ওটা হবে ইন্দ্রনীলমণির মত। তারপরেই তার চোখ খুলে যায়, দ্যাখে, যাহ, সব স্বপ্ন! আকাশে জ্বলন্ত সূর্য, চারিদিক দুপুরবেলার ঘুমেলা নির্জনতায় ঘেরা। পান্থপাদপের ছায়াটি একটুখানি বড় হয়েছে আর একটুখানি পুবে হেলেছে।

    কিংবা-আ, সু-উ-উতরাং, থেকে এ এ এ, দিয়ে এ এ এ আহ, উহ, ছোঃ অথবা-আ আ ঈশ টাপ্পুর টুপ্পুর ক্রিং ক্রিং টুপটাপ ঝমঝম ঝুপঝুপ কড়কড়াৎ ঝিক ঝিক---এইসব আওয়াজ আসছে ক্রমাগত। প্রথমে সদ্য স্বপ্ন থেকে জাগা লামেহা বুঝতে পারে না কোথা থেকে এইসব আসে, তারপরে ঝোলাটার দিকে চোখ যায়, ঝোলাটা নড়ছে একটু একটু। অব্যয়দের কথা মনে পড়ে যায় ওর। সস্নেহে চাপড় মারে ঝোলায়, বলে, "ঘুমো ঘুমো ঘুমো তোরা।"

    তারপরে পুবে সরে ছায়ার তলায় গুটিসুটি মেরে লামেহা শুয়ে পড়ে আবার, চোখ জড়িয়ে আসে ঘুমের আঠায়।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৩:৫৬477220
  • রোদের তেজ কমে এলে তার ঘুমও আস্তে আস্তে ছানাকাটা মেঘের মতন পাতলা হয়ে আসে, তারপরে পালিয়ে যায়। উঠে বসে লামেহা। পান্থপাদপের জলে তৃষ্ণানিবারণ করে আঁজলার বাকী জলটুকু মুখচোখে ঝাপ্টা দিয়ে সে ঝোলা নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। ঝোলাভরা ঘুমন্ত অব্যয়দের নিয়ে সে আবার চলা শুরু করে নীল পর্বতের দিকে।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০০:২৩477221
  • চলতে চলতে কুড়িয়ে পাওয়া একটা মেঘ সে তুলে রাখে তার ভোরবেলাকার ফুলের সাঝিতে, সেই যে বেতে বোনা যে ফুলের সাঝি সারাবছর ধরে ভোরবেলা ভরে উঠতো টগরে কাঞ্চনে গুলঞ্চে রক্তজবায় স্থলপদ্মে শিউলিতে নয়নতারায় অপরাজিতায় করবীতে? সব ফুল সবসময় পাওয়া যেত না, তবে নয়নতারা থাকতো সারাবছর।
  • i | 147.157.8.253 | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৫:২৪477222
  • নয়নতারা থাকতো সারাবছর। ওর কোথাও যাওয়ার ছিল না। সম্বৎসর ওকে দেখা যেত ছাদে, কিম্বা জানলায়, অথবা বাগানে, কখ্নও মুদীখানায়, সকালে কলেজ যেত, বিকেলে ট্যুইশন। ওকে সাইকেল নিয়ে ফলো করত বিদ্যার পিসতুতো ভাই। জনি ডেপ।
  • Yan | 161.141.84.239 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৮:৫৭477223
  • ক্রমে ক্রমে ভীড় বাড়তে থাকলো, নতুন নতুন বাড়ী হয়ে খোলা জায়্গা সব ভরে যেতে লাগলো, শেষে বাগানগুলোতেও হাত পড়লো। নয়নতারাকে তখন আর জানালায় দেখা গেল না, বাগানে তো না ই, কারণ তাদের বাগানটি বিক্রি হয়ে গিয়ে সেখানে উঠেছে বহুতল।
    জনি ডেপ এখন আর সাইকেল চালায় না, সে থাকেও না আর নয়নতারার পাড়ায়। বড় চাকরি নিয়ে সে অনেক দূরে, সাগরের এপার ওপার করে বেড়ায় নানা কাজের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে। কালেভদ্রে বাড়ী আসে, ঐ যে মোড়ের মাথায় দোতলা বাড়ীটা, ওটাই জনিদের। ঐ বাড়ীতে এখন জনির প্রৌঢ় বাবামা আর এক বৃদ্ধা পিসিমা থাকেন।
    নয়নতারাদের বাড়ীটা আগের মতই এখনো, একতলা,ছাদে ওঠার সিঁড়ি আছে, চিলেকোঠার লাগোয়া ঠাকুরঘর। থাকবে না অবশ্য বেশীদিন। প্রোমোটাররা প্রায়ই আসা যাওয়া করছে। হয়তো এবাড়ীও ভেঙে বহুতল হবে, দামের সঙ্গে সঙ্গে নয়নতারারা পেয়ে যাবে একটা ভালো ফ্ল্যাটও।
  • i | 147.157.8.253 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৯:১৩477224
  • জনিদের দোতলার বারান্দায় খুব রোদ আসে সকালে। সকাল সাতটা নাগাদ এক ফালি রোদ এসে পড়ে তুলসী গাছের টবে। তারপর মানিপ্ল্যান্টে, লংকাগাছে। আল্টিমেটলি সকালের মেলে দেওয়া ভেজা কাপড়ে। দিব্যি শুকোয়। দুপুরের মধ্যে খটখটে। শুকনো তোয়ালেতে নাক চেপে ধরলে রোদ্দুরের গন্ধ আসে। বারান্দার মেঝেতে রেলিংএর ছায়া পড়ে; সরলরৈখিক ছায়া বেঁকে টেরে যেতে থাকে তারপর অদৃশ্য । তারমানে বিকেল হয়েছে। ফুচকাওলা আসবে। তারপরে আইসক্রিমের গাড়ি। কমলা সবুজ কাঠি। তারপরে গলির আলোগুলো জ্বলবে। মশারা ঝাঁক বাঁধবে তার তলায়। পিসিমা সধ্যে দেবে হয়তো।
  • i | 147.157.8.253 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৯:১৩477226
  • সন্ধে দেবে হয়তো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন