এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কুস্বাস্থ্য

    pi
    অন্যান্য | ০২ নভেম্বর ২০১১ | ৯৫৫৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • maximin | 59.93.242.97 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ১৯:৫৮504742
  • ইউএসের হাসপাতালে একটু এদিক থেকে ওদিক হলে নালিশ হয়, ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। ডাক্তার ও হাসপাতাল দুই পক্ষই সাবধানে কাজ করে। আমাদের দেশে এমনটা হবে বুঝি? বিশ্বাস হয়না।
  • pi | 72.83.90.203 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ১৯:৫৯504743
  • না:, কিচ্ছু হয়না, কেউ কিছু করছে না, সেটা ঠিক না।

    সরকারের এই প্রোগ্রামটাই দিব্বি ভালো। আর এটা আনার জন্য নানা মহল থেকে বহুদিন ধরে চাপ ও তৈরি করা হয়েছে।

    http://mohfw.nic.in/NRHM.htm

    এটার বেশ কিছু ভাল ফল ও এসেচে। অনে্‌ক রাজ্যেই।

    এবার প:বংগে এটার প্রগ্রেস নিয়ে ... ওয়েল .... :)

    তবে সরকার মানেও তো কিছু লোক ই , তাই না ?

    এদেশের সরকারের মাধ্যমেও সব কিছু হয়ে যায় , এমন না। যা দাবী দাওয়া ওঠে , তার ৫% হয় , এটা এদেরই দেওয়া হিসেব। কিন্তু এত বেশি দাবী দাওয়া ওঠে, যে তার ৫% ও অনেক।
  • pi | 72.83.90.203 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:০০504744
  • কল্পতরুদা, এটা নিয়ে একটু বলুন না। মাঠে মারা গ্যালো ক্যানো ? এটা কি আবার শুরু করার কথা ভাবা যেতে পারে ?

    আমি ওপরে যে advocay র লিংকটা দিলাম , দেখো।
    এরকম ই বা ক্যানো কিছু করা যায়না ?
  • maximin | 59.93.242.97 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:০৩504745
  • সবাইকে -- আকার দেওয়া ৩ নম্বর লিঙ্কে (হেলথগ্রেড) ক্লিক করে কর্মবীর চক্রবর্তীর নাম বসান তো দেখি?
  • pi | 72.83.90.203 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:০৭504746
  • আমিও এককালে এঁকে দেখাতুম। আমার এংকে নিয়ে গ্রেডিং করার ইচ্ছা আছে :)
  • pi | 72.83.90.203 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:০৮504747
  • ইনি তো কলকাতার ডাক্তার। আকাদার লিংকে কীকরে পাওয়া যাবে ?
  • Update | 168.26.215.13 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:২০504749
  • Name:maximinMail:Country:

    IPAddress:59.93.242.97Date:02Nov2011 -- 08:03PM

    সবাইকে -- আকার দেওয়া ৩ নম্বর লিঙ্কে (হেলথগ্রেড) ক্লিক করে কর্মবীর চক্রবর্তীর নাম বসান তো দেখি?

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:piMail:Country:

    IPAddress:72.83.90.203Date:02Nov2011 -- 08:07PM

    আমিও এককালে এঁকে দেখাতুম। আমার এংকে নিয়ে গ্রেডিং করার ইচ্ছা আছে :)

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:piMail:Country:

    IPAddress:72.83.90.203Date:02Nov2011 -- 08:08PM

    ইনি তো কলকাতার ডাক্তার। আকাদার লিংকে কীকরে পাওয়া যাবে ?

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:maximinMail:Country:

    IPAddress:59.93.242.97Date:02Nov2011 -- 08:10PM

    আমি ক্লিক করলে দেখছি পাতায় লেখা আছে গাইডিং আমেরিকানস -- ফাইন্ড ডকটরস ইন ক্যালকাটা। এর সহজ মানে হওয়া উচিত আমেরিকাবাসি কলকাতায় এসেছেন এবং ডাক্তার খুঁজছেন।

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:akaMail:Country:

    IPAddress:168.26.215.13Date:02Nov2011 -- 08:14PM

    ওটা প্রোগ্রামের গ্লিচ, আইপি থেকে শহর খুঁজেছে কিন্তু ইউএসের বাইরে হলে তাকে বাদ দেয় নি। গুড টেস্টিং। :)

    অ্যাবাউট আস পড়লে বুঝবেন এটা শুধুই আমেরিকার জন্য।

  • Update | 168.26.215.13 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২০:২০504748
  • Name:maximinMail:Country:

    IPAddress:59.93.242.97Date:02Nov2011 -- 08:03PM

    সবাইকে -- আকার দেওয়া ৩ নম্বর লিঙ্কে (হেলথগ্রেড) ক্লিক করে কর্মবীর চক্রবর্তীর নাম বসান তো দেখি?

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:piMail:Country:

    IPAddress:72.83.90.203Date:02Nov2011 -- 08:07PM

    আমিও এককালে এঁকে দেখাতুম। আমার এংকে নিয়ে গ্রেডিং করার ইচ্ছা আছে :)

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:piMail:Country:

    IPAddress:72.83.90.203Date:02Nov2011 -- 08:08PM

    ইনি তো কলকাতার ডাক্তার। আকাদার লিংকে কীকরে পাওয়া যাবে ?

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:maximinMail:Country:

    IPAddress:59.93.242.97Date:02Nov2011 -- 08:10PM

    আমি ক্লিক করলে দেখছি পাতায় লেখা আছে গাইডিং আমেরিকানস -- ফাইন্ড ডকটরস ইন ক্যালকাটা। এর সহজ মানে হওয়া উচিত আমেরিকাবাসি কলকাতায় এসেছেন এবং ডাক্তার খুঁজছেন।

    --------------------------------------------------------------------------------

    Name:akaMail:Country:

    IPAddress:168.26.215.13Date:02Nov2011 -- 08:14PM

    ওটা প্রোগ্রামের গ্লিচ, আইপি থেকে শহর খুঁজেছে কিন্তু ইউএসের বাইরে হলে তাকে বাদ দেয় নি। গুড টেস্টিং। :)

    অ্যাবাউট আস পড়লে বুঝবেন এটা শুধুই আমেরিকার জন্য।

  • maximin | 59.93.242.97 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২১:০৮504750
  • হ্যাঁ ওটা আমার শহর থেকেই বলছে বটে। কথা হল এই সাইটে আমেরিকার ডাক্তারদের রেটিংগুলো comparable নয়। কারণ একজন ডাক্তার পাঁচতারা রেটিং পেয়েছেন ১১ জনের মতানুসারে, আরেকজন শুধু একজনের মতানুসারে।
  • aka | 168.26.215.13 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২৩:২০504752
  • অ্যাবসলিউট রেটিং তো সম্ভব নয়, কোন খবর না পাওয়ার থেকে বেটার।

    পাই, এই ডাক্তারদের ডেটাবেস তৈরি ওয়ান টাইম অ্যাক্টিভিটি নয়। একমাত্র সরকারের তরফে যদি এটা মেইন্টেইন করা হয় তাহলেই লিস্টি আপডেটেড হতে পারে। মানে ধরা যাক ডাক্তার A এখন হাসপাতাল X এ বসেন কিন্তু আজ থেকে দুই মাস পরেই তিনি হাসপাতাল Y তে যেতে পারেন। একটা প্রসেস থাকা উচিত যাতে এটা ক্রমাগত আপডেটেড হয়। সেটা সম্ভব যদি সরকার প্রসেস করে যে এনি চেঞ্জ ইনফর্ম করতে হবে। তাহলে ডেটাবেসের সেটাই হবে সোর্স। তারপরে ডাক্তারদের কোয়ালিফিকেশন ইত্যাদি এখানে ডেটাবেস আছে সেখান থেকে আসে। সেটাও করতে হবে। ওয়েবসাইট একটা খোলাই যেতে পারে কিন্তু গ্রাউণ্ড ওয়ার্ক গুলো না করা গেলে সেই ওয়েব সাইটের ডেটার গ্রহণযোগ্যতা কম হবে। আর এই গ্রাউণ্ড ওয়ার্ক গুলো করতে হলে সরকারের সাহায্য ছাড়া কি করে সম্ভব জানি না।
  • pinaki | 122.174.56.216 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২৩:৩৫504753
  • ছেন্নাই এর অ্যাপোলোতে দেখাতে গিয়ে চমকে চোদ্দো হয়ে গেলাম। ইকীরে ভাই!! যেদিকে তাকাই শুধু বাঙালী। আমার তো চোখের দেখায় মনে হল ৮০% বাঙালী পেশেন্ট। মানে বাংলাদেশ ইত্যাদি মিলিয়ে।

    আর একটা ইম্পর্ট্যান্ট খবর শুনলাম তামিলনাড়ু আর অন্ধ্রের স্বাস্থ্য নিয়ে। এদুটো রাজ্যে নাকি ১০৪ আর ১০৮ - দুটো নম্বর সিস্টেম আছে। সরকারি। ৯১১ এর মত। একটা অ্যাম্বুলেন্স আর একটা পুলিশ/দমকল ইত্যাদি জাতীয়। সেগুলো নাকি প্রত্যন্ত গ্রামেও আধ ঘন্টার মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স জাতীয় পরিষেবা পাঠাতে সক্ষম। শহরের মধ্যে নাকি ৫ থেকে ১০ মিনিট। আমাকে যে বললো সে খুব কনফিডেন্তলি বললো। আর একটু ক্রস চেক করতে হবে। আমাকে যে এই ইনফোটা দিল তার মতে নাকি এই পরিষেবার কারণে এখানে প্রসবকালীন মৃত্যু অনেক কমে গেছে।
  • pi | 66.78.217.138 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২৩:৫৩504754
  • প্রতি রাজ্যে মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট তৈরির একটা নির্দেশ আগের National Rural Health Mission এ দেওয়া হয়েছিল। প:বঙ্গে তার সংখ্যা = ০ ( লাস্ট যা ডাটা আছে)
  • pi | 66.78.217.138 | ০২ নভেম্বর ২০১১ ২৩:৫৫504755
  • হ্যাঁ, , অ্যাম্বুলেন্সের খবরটা ঠিক।
  • bb | 117.195.168.30 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০০:০৩504756
  • ১০৮ অন্ধ্রের একটা সার্ভিস যা সত্যমের রাজুর মস্তিস্ক-প্রসুত। এটা শুরু করেছিলেন রাজু HMRI নামে একটি সংস্থা দিয়ে। এটি ৯১১ দ্বারা প্রভাবিত কিন্তু সম্পুর্ন ভারতীয় মতে তৈরী। এর উদ্দেশ্য ছিল দুটি - প্রথমত এক এমার্জেন্সী সার্ভিস যা শহর এবং প্রতন্ত গ্রামেও সহজ লভ্য হবে এবং দুই গ্রামের লোকের কাছে specialist দের চিকিৎসার সুবিধা পৌঁছে দেওয়া।
    সত্যমের পর এটি হস্তান্তরিত হয় GVK দের কাছে। এটি প্রথমে PPP মডেলে শুরু হলেও বর্তমানে সরকারের কাছ দেখে থেকে সাহায্য পায়।
  • pi | 66.78.217.138 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০০:২২504757
  • পিনাকীদা, তামিলনাড়ুর বাকি ব্যাপারগুলো নিয়ে জিগেশ করেছিলে ?
  • maximin | 59.93.242.97 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০০:৪৮504758
  • aka-র ১১.২০ কে ক-প্লাস।
  • aka | 168.26.215.13 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০০:৫১504759
  • প:ব:য়ে ঐ সিস্টেম চালু করতে গেলে প্রতি পাড়ায় একটা করে দমকল খুলতে হবে। কারণ এক পাড়া থেকে অন্য পাড়া যেতে আধ ঘন্টার বেশি লাগে। রাস্তা দাদা রাস্তা ঠিক করুন নইলে কোন সভ্যতাই এগোবে না। সব শেষে এসে ঠেকে রাস্তায় ইংরিজিতে ইনফ্রাস্ট্রাকচারে।
  • Nina | 12.149.39.84 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০১:৫৪504760
  • আসলে কুস্বাস্থ্য প:ব:এর !
    সবসময় শোনা যায় সেন্টার থেকে কিছু দেয়না, গুচ্ছের মাড়োয়ারি বিহারি ভীড় করেছে--ইত্যাদি প্রভৃতি । কেউ কোনও দোষের রেসপন্সিবিলিটি নেয়না---যাই হচ্ছে অন্যের দোষ---
    ভালবাসি কলকাতা---প:ব: কিন্তু ঠোক্কর খেতে খেতে ক্লান্ত!

    চিকিৎসা--বিভীষিকা--যদি না ডাক্তার মহলে চেনাশোনা থাকে।
    আমার বাবা 1988 ভর্তী ছিলেন বিড়লার হার্টের যে হসপিটাল--নামটা মনে পড়ছেনা। দেখছিলেন ডাক্তার কিশোর নন্দী।
    আমরা মুগ্‌ধ--কি ভাল হাসপাতাল--সেবা, কেয়ার সবকিছু--

    ক্যাচটা ছিল---- বাবা সেখানে ভর্তী হয়েই বলেছিলেন--এইবার বুড়ো হাসপাতালে ঢুকেছে , ব্যাস আর বেরোবেনা---আমার বন্ধুদের খবর দে--শেষ দেখা করে নিই---বাবার বয়স যদিও তখন 83 কিন্তু তেমন কোনো সাংঘাতিক অসুখ ছিলনা---নি:শ্বাসের কষ্ট হওয়াতে আমার দাদারা জোর করে চেক আপ করাতে দিয়েছিল।
    বন্ধু বলতে তখন যতীন চক্রবর্তী, ত্রিদিব চৌধুরি, অশোক সেন ও আরও কিছু বড় মহারথীরা এসেছিলেন----সেখানে বাবা সত্যি ই আর ফেরেননি--ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে সব শেষ---কিন্তু হাসপাতাল--ডাক্তার নার্স অ্যাটেনডেন্ট --সব্বাই জামাই আদরে রেখেছিল---ঐ যে রথী-মহারথীরা আসতেন!!

    আর ২০০৯ যখন মা হাসপাতালে --তখন পুরো ব্যাপারটা বিভীষিকা।
    কি বাজে ব্যবহার যে মানুষ করে অনর্থক --বিশ্বাস করা যায়না!!

    শুধু হাসপাতাল নয়---পাটনার বাস তুলে মাকে কলকাতায় সেটল করতে আমি বাবার নাম ভুলে গেছিলাম---
    ব্যাঙ্কে----সমস্ত কিছু তে সাহায্য পেয়েছিলাম ননবেঙ্গলীদের কাছ থেকে --
    মা একটা পেন্সন পেতেন--বাবা কোনও যুগে MLA ছিলেন তার---
    মা যখন হাসপাতালে, তখন সেই প্রাপ্য টাকা তুলতে গিয়ে যা ব্যবহার পেয়েছিলাম সেই ব্যাঙ্কের কিছু বাঙালী কর্মীদের কাছে---লিটারেলি কেঁদেছিলাম ভ্যাঁ করে!

    মা মারা যাওয়াতে আমি ব্যাঙ্কে গিয়ে সেটা বন্ধ করার অ্যাপ্লিকেশন করছি--- বাঙ্গালী কর্মী অত্যন্ত অভদ্র ব্যাভহার করেছিলেন----সেই NRI বিদ্বেষ--আমাকে একগোছা কাগজ দিয়ে বল্লেন যান কপি করে আনুন---
    জিগালাম কোথায় কাছাকাছি জায়গা যদি একটু বলেন--
    খেঁকিয়ে উঠলেন আপনাদের আমেরিকার মতন সুবিধে পাবেনানা--খুঁজে নিন--:-(
    সে ব্যাঙ্কে তখন একটি ছেলেমানুষ অফিসার এসেছেন--ইউ পির--বেরিয়ে বল্লেন
    কি ব্যাপার?
    সব শুনে বল্লেন
    আপনি আমার ঘরে বসুন---তিনি সমস্ত ব্যবস্থা করে দিলেন--

    কলকাতার ফ্ল্যাটে ইলেকট্রিক বিল যাতে ব্যাঙ্কের থ্রু হয় সেই চেষ্টা---প্রপার চ্যানেলে করতে গিয়েছিলাম--শেষে হতাশ হয়ে ---চেনাশোনা থ্রু দিয়ে সেটা বাড়ী বসেই হল----প্রতিটি অ্যাপলিকেশন বাড়ী এসে সাইন করিয়ে নিয়ে গেল--অথচ আমি তার আগে সোজা রাস্তায় করতে গিয়ে কি অপদস্থ!! বাপরে!

    সত্যি বলছি---নিন্দে নয়--পদে পদে এত অসুবিধে য় পড়েছি---অবাক লাগে--এটাই তো নিজেদের জায়গা!! তবে?
    বোর করবনা---কেউ রাগ করবেননা--বাঙালী ভালবাসতে ভুলে গেছে একে অপরকে--
    তবু কলকাতায় নেমে প্রথম নি:শ্বাসটা নিলেই--মুখ ও বুক আনন্দে ভরে যায়!!প্রতিবার!

    এইরে টই ঘুরে গেল---সরি সরি!!!!
  • achintyarup | 59.93.244.219 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৪:৫৬504762
  • এই খানিক আগে, রাদ্দুটোয় গিয়েছিলাম এস এস কে এম-এর ইমার্জেন্সি বিভাগে। সহকর্মী মোটরসাইকেলশুদ্ধু উল্টে পড়েছিল, তাকে নিয়ে। আঘাত মারাত্মক ছিল না, এদিক ওদিক ছড়ে গিয়েছিল, হাড়-টাড় ভেঙ্গে থাকলেও বোঝা যায়নি। ডাক্তাররা বোঝার চেষ্টাও করেননি। আমরা পত্রকার বলে পরিচয় দিইনি, দিলে হয়ত অন্যরকম হত, জানি না। তিনজন ডাক্তার ছিলেন ইমার্জেন্সীতে, একজন বয়স্ক, আর দুটি কমবয়সী ছেলেমেয়ে। ছেলেটি অন্য দুজনকে কিন্নওর-কৈলাস বেড়াতে যাওয়ার ছবির অ্যালবাম দেখাচ্ছিল। আমাকে বলল, যান, একটা টিকিট করিয়ে নিয়ে আসুন। একটি মেয়ে ছিল সঙ্গে, তাকে বলল, আপনি এখানে থাকুন। টিকিট করিয়ে আনতে আনতে নার্সের সহকারী একটি ছেলে, মনে হল তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, এসে কাটাছড়াগুলোয় একটা মলম লাগিয়ে দিল। টিকিট আনার পর নার্স বেরিয়ে এসে টেট ভ্যাক ইঞ্জেকশন দিলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, পুরো সময়টা ডাক্তার তিনজন তাঁদের খাঁচায় বসে পাহাড়ের ছবি দেখে গেলেন, একবার বেরিয়ে এসে রোগীর গায়ে হাত পর্যন্ত ছোঁয়ালেন না। ছবি দেখতে দেখতে ব্যথা কমার ট্যাবলেট লিখে দিলেন, রোগীর সঙ্গে কথা বলে বোঝারও চেষ্টা করলেন না ঠিক কোন জায়গায় লেগেছে, এক্স রে দরকার কিনা। সেই মুহূর্তে অত কিছু মনে হয়নি, পরে বেরিয়ে এসে ভাবতে ভাবতে আশ্চর্য হলুম।
  • abastab | 61.95.189.252 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৭:৪৬504763
  • আমার একটা প্রশ্ন ছিল, এই ডিউটি ডক্টররা কত মাইনে পান কেউ জানেন কি? এছাড়া নার্স বা অন্যান্য কর্মচারীরা কত পান তাও জানার ইচ্ছে রইল।
  • bb | 115.184.3.95 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৭:৫৭504764
  • নিনা বা অচিন্তকে ক। এটাই আমাদের আসল রূপ।আমি ২ বছর কোলকাতায় চাকরী করেছি , আর প্রত্যক্ষ করেছি কোন জিনিষ কেন হবে না তার কত কারণ বাঙালী দিতে জানে।
    কর্মসংস্কৃতি আমাদের মজ্জায় নেই, আমরা সবজান্তা আর অন্যের কি করা উচিত সে সম্বন্ধে জানি, কিন্তু নিজের কর্তব্য সম্বন্ধে উদাসীন।
    অচিন্তের উদাহরণটাই নিয়ে দেখুন, এদের কোন রাজনৈতিক রঙের কথা না ভেবে দেখলে বোঝা যায় এরা কত উদাসীন, অথচ এরা আমাদেরই আত্মীয়। আমাদের মূল্যবোধের মধ্যেই ফারাক আছে।
    শিবাংশুদার কথার সুত্রে বলি এখানে সরকারী কর্মচারীরা কাজ করেন এবং ভাল ব্যবহার করেন। এটা আমাদের বাংলায় ভাবা যায়না। দু:খজনক হলেও এটাই সত্যি।
  • aka | 75.76.118.96 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৮:৪২504765
  • অথচ এই বালের জায়গাকে বালের জায়গা বললে বাসব বাবুর গায়ে লাগে। সত্যই অমায়িক আপনি।
  • aka | 75.76.118.96 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৮:৪৪504766
  • ও না ভুলে গিয়েছিলাম আসলে আম্রিগায় বসে প:ব:কে বাল বলা যাবে না ভারতে কোন জায়গা হলে ঠিক আছে। সরি।
  • abastab | 61.95.189.252 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৯:১৮504768
  • ডাক্তারদের মাইনে সংক্রান্ত কিছু তথ্য :--
    বিভিন্ন ডাক্তারী পেশার সঙ্গে জড়িত লোকজনের আয় http://www.payscale.com/research/IN/Industry=Hospital/SalaryMD, DM না থাকলে মনে হয় মাসে ৩০,০০০ ।
    (Physician / Doctor, General Practice, median salary Rs 366251.00 .) MBBS এর পরে ১০-১২ বছর পার হয়ে গেলেও তাই। খালি বয়স বাড়লেই এ পেশায় মাইনে তেমন বাড়ে না। আর MD/MBBS seat ratio বেশ কম তাই বেশির ভাগ ডাক্তার MBBS হিসেবেই থেকে যান।

    সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের মাইনে http://www.payscale.com/research/IN/Country=India/Salary ডাক্তারের দেড়গুণের থেকেও বেশি। ( Sr. Software Engineer / Developer / Programmer median salary Rs 545361.)

    হাসপাতালে গিয়ে যাদের সাথে মোলাকাত হয় তারা মনে হয় হতাশ আর সেই কারণেই রুগীর প্রতি নজর কম দেন। যেখানে বেশি সংখ্যক লোক এই সামাজিক অসাম্য মানতে চাইবেন না তাদের হতাশা বেশি হবে এবং তা কাজে প্রতিফলিত হবে। তবে ডাক্তারেরা এই হতাশা রুগীর ওপরে না দেখিয়ে মাঠে নামলে ভালো, তবে সেটি সহজ কর্ম নয়।
  • ppn | 112.133.206.18 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৯:৩৩504769
  • ১। "সফো'-রা বাজারে আসার আগে "নন-সফো'-দের জনসেবা কি দারুণ ছিল?

    ২। এই সমস্যা দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে হয় না কেন?
  • bb | 115.241.121.166 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৯:৩৬504770
  • আর্য্য আপনি ব্যক্তিগত ভাবে একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তাই আপনার মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছি না। আপনি ভাল থাকুন, প্রিয়জন তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন তার পর আপনার সঙ্গে কথা বলা যাবে।
  • siki | 123.242.248.130 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ০৯:৪৮504771
  • কে জানে, কেমন জায়গা কলকাতা! তবে চান্স ফ্যাক্টরটা যে বাংলার চিকিৎসাক্ষেত্রে বড্ড বেশি, তা প্রতিপদে বোঝা যায়।

    বাংলা তথা কলকাতার চিকিৎসার অভিজ্ঞতা আমার ঐখানেই শেষ, এবার আরেকটা গল্প শোনাই, আমার নিজের গল্প। দিল্লি এনসিআরের গল্প। বাজে ব্যবহার = সরকারি কর্মচারি, এই ব্যাপারটা অতিসরলীকরণ, অন্তত আমি যে কটা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র দেখেছি এখানে, ব্যবহার বাজে লাগে নি।

    বেশিদিন আগেকার কথা নয়, ২০০৭। অক্টোবরের শেষ নাগাদ ঠাণ্ডা লাগে। খুশ খুশ কাশি শুরু হয়। কাশি আর থামে না। তখন ছিলাম আইবিএমে। ডেইলি পঞ্চাশ পঞ্চাশ একশো কিলোমিটার মোটরসাইকেলে যাই আর আসি। ভেবেছিলাম পলুইশনের জন্য হচ্ছে হয় তো। মুখে মাস্ক, অল্প করে কাফ সিরাপ, শেষমেশ ডাক্তার, সব হল। কাশি থামল না।

    ২০০৭-এর শেষাশেষি আমার প্রজেক্ট শেষ হল, বেঞ্চে এলাম। সামনে কোনও প্রজেক্ট নেই, আইবিএম চাপ দিচ্ছে পুণে রিলোকেট করো, কলকাতা রিলোকেট করো। আমি কারুর কথা না শুনে বেঞ্চিতেই বসে রইলাম। হাতে কিছু পয়সা জমেছে, বাড়ি রিনোভেশনের কাজ শুরু করালাম। টানা আড়াই মাস ধরে একদল মিস্তিরি আমার বাড়িতে প্লাস্টারিং, পেইন্টিং, কার্পেϾট্র ইত্যাদির কাজ শুরু করল। কাজ চলতেই থাকল, আর আমি বাড়িতে বসে, ওদের বিড়ির ধোঁয়া, কাঠের গুঁড়ো ইত্যাদি হজম করতে লাগলাম।

    কাজ শেষ হল মার্চ নাগাদ, এপ্রিলের শেষে আইবিএম ছেড়ে গুরগাঁওয়ের আরেকটা কোম্পানি, জয়েন করেই দেড় মাসের জন্য ডেনমার্ক। ওখানকার সবুজ পলুইশনবিহীন আবহাওয়া দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। ভাবলাম, এই ভালো হল, আমার হাওয়া বদল হল, এখানে নিশ্চয়ই সেরে যাবো।

    ততদিনে আমার ওজন কমতে শুরু করেছে, দু একবার ডাক্তার দেখানোও হয়েছে, কিন্তু কাফ সিরাপ আর অ্যান্টিবায়োটিকের বাইরে কেউ কিছু দেন নি।

    ডেনমার্কে এসেও কাশি থামল না। কফ জমছে, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে খানিকক্ষণ অন্তর অন্তর বুকের কাছে শ্বাসের সঙ্গে ঘরঘর আওয়াজ হচ্ছে, হয়েই চলেছে। ওখানে ডাক্তার দেখালাম। সায়েবরা বেজায় ভদ্র হয়, সরাসরি বলে না প্রবলেম কী। চেস্ট এক্সরে ব্লাড স্যাম্পল ইত্যাদি নিয়ে আমাকে বিনীতভাবে জিজ্ঞেস করল আমাদের ফ্যামিলিতে কোনও টিবির হিস্টোরি আছে কিনা। আমিও তখন এইসব ব্যাপারে একেবারে অজ্ঞ ছিলাম, এই লাইনে ভাবার প্রয়োজনও বোধ করি নি। ডেনিশ ডাক্তার কিছু ওষুধ দিলেন, পেনিসিলিন সমেত। তাই খেয়ে কদিন কাশি কমল, ওষুধ শেষ হতেই আবার যে কে সেই।

    দেড় মাস বাদে ফেরার পরে সবাই লক্ষ্য করল, আমি ভিজিবলি রোগা হয়ে গেছি। আমি নিজেও বুঝতে পারছি, আঠাশ কোমরের প্যান্ট ঢিলে হচ্ছে, ঘড়ির ব্যান্ডের শেষ ফুটোয় কাঁটা ঢুকিয়েও হাতে ঘড়ি ঢলঢল করছে, যাচ্ছেতাই অবস্থা।

    নয়ডায় কৈলাশ হাসপাতাল বেশ নামকরা। আমাদের মেয়ে ওখানেই জন্মেছিল। সেখানে কার্ডিওলজিস্টকে দেখালাম। তিনি সিরিজ টেস্ট করতে দিলেন। স্পুফ টেস্ট, আরও কী কী সব যেন ছিল। চেস্ট এক্সরে হল, সব হল। উনিই প্রথম আমার টেম্পারেচার দেখে বললেন, আমার ননস্টপ ফিভার চলছে, এদিকে আমি কিছু বুঝতে পারছি না।

    শক্তি ধীরে ধীরে কমছে। গুরগাঁও রোজ যেতে হয়, সে তো অনেক দূর, আমি পাড়ার মার্কেট থেকে ঘুরে এলেই মনে হয় বিশ্বপর্যটন করে ফিরেছি, এত্তো টায়ার্ড লাগে। দিনরাত ফাঁক পেলেই ঘুমিয়ে পড়ি, ঘুম আর কাটে না। জেগে উঠলেই কাশি আর কফ। কফ বেরনো আর শেষ হয় না, কাশিও থামে না।

    ডাক্তার বললেন, না, কাফ সিরাপে হচ্ছে না, একটা ইসিজি করাও, দেখি কী বোঝা যায়। কী মনে হল, আমি আর ইসিজি করালাম না, ডাক্তারকে ত্যাগ দিলাম। পাড়ায় হোমিওপ্যাথ ডাক্তার ছিলেন, তাঁর কাছে যাওয়া আসা শুরু করলাম। উনিও প্রথমে কাশির ওষুধ শুরু করলেন। সারল না। তখন ২০০৮-এর সেপ্টেম্বর মাস হয়ে গেছে। অক্টোবর নভেম্বর পেরিয়েও যখন হোমিওপ্যাথ ওষুধে কাজ হল না, তখন উনি বললেন, আমি কয়েকটা টেস্ট লিখে দিচ্ছি, একটু করিয়ে আনো।

    করালাম। ব্লাডের কিছু টেস্ট আর বান্টু টেস্ট ছিল তার মধ্যে। পরদিন রিপোর্ট দেখেই হোমিও ডাক্তার বললেন, তোমার টিবি হয়েছে। ঘাবড়াবার কিছু নেই, আরামসে সেরে যাবে, কিন্তু এ জিনিস হোমিওতে সারে না, তুমি চেস্ট স্পেশালিস্ট দেখাও। তোমার লং টার্মের ওষুধ লাগবে, এবং সেটা অ্যালোপ্যাথিই লাগবে।

    তখনও অবধি টিবি নিয়ে আমার ধারণা শূন্য। বাংলা ছবি দেখে দেখে কেবল জানি, অপুষ্টির থেকে টিবি হয়, আর এর ওষুধ হচ্ছে খুব করে খাওয়া দাওয়া আর ওষুধ বিষুধ।

    কৈলাস হাসপাতালেই যাওয়া ঠিক করলাম। বাড়ি থেকে চোদ্দ কিলোমিটার দূর, কিন্তু তখন ঐ ডিসটেন্স যেতে গেলেও গায়ে জ্বর আসত।

    কাগজপত্র নিয়ে বেরোতে যাবো, কাশির দমক এল, বাথরুমে গিয়ে কফ পরিষ্কার করতে গিয়ে গলা দিয়ে বেরিয়ে এল গাদাগুচ্ছের রক্ত। আর সে ব্লিডিং থামে না। সাদা বেসিন লালে লাল হয়ে গেল, আমি কেশে চলেছি আর রক্ত বেরিয়ে চলেছে।

    সেদিনই প্রথম ব্লিডিং। কোনওরকমে নিজেকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুলাম। গেঁড়ির অবস্থা তখন খারাপ হয়ে গেছে। আমার অর্ধেক সেন্স নেই। চোখের সামনে আক্ষরিক সর্ষেফুল দেখছি। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। খালি মনে হচ্ছে, আমি মরে গেলে এদের কী হবে।

    আমার ইমিডিয়েট প্রতিবেশি তামিল। সেই ভদ্রলোক খুব সাহায্য করলেন। খুব অভয় টভয় দিলেন, একেবারে চিন্তার কিছু নেই, এ ঠিক হয়ে যাবে। বাড়ির ঠিক পাশেই যশোদা কার্ডিয়াক রিসার্চ সেন্টার অ্যান্ড মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল। সেখানে হেঁটে যাবারও ক্ষমতা নেই, উনিই গাড়িতে করে নিয়ে গেলেন।

    হিস্ট্রি শুনেই প্রায় দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল আমাদের। এখানে এনেছেন কেন? ... কোথায় যাবো তা হলে? কিছুই তো জানি না এর চিকিৎসা কোথায় হয়! যশোদা বলল, যেখানে খুশি নিয়ে যান, খোঁজ করুন, পেশেন্টকে এখান থেকে নিয়ে যান, এখানে আইসোলেশন ওয়ার্ড নেই, এখানে এইসব পেশেন্ট রাখা যাবে না।

    বেরিয়ে এলাম। আমাকে দুদিক থেকে ধরে ধরে হাঁটাচ্ছে তখন দুজন। আমি সেমি সেন্সলেস। গাড়িতে বসলাম। কৈলাস হাসপাতাল নয়ডা। বিশাল বড় নামকরা হাসপাতাল, ওখানে নিশ্চয়ই আইসোলেশন ওয়ার্ড থাকবে।

    প্রথমে এমার্জেন্সি। ডিউটি ডক্টর বললেন, সিএমও এসে না বলা পর্যন্ত আমরা কিছুই করতে পারব না এই ধরণের পেশেন্টকে। অনেক বলেকয়ে আমাকে অ্যাডমিট করানো গেল, সিএমও আসবেন সন্ধ্যেবেলায়, তিনি দেখে চিকিৎসার ডিটেল বাতলাবেন।

    তখন আমাদের কোনও চেনাশোনা ছিল না কোথাও। এইমস দেখি নি, আরেমেল দেখি নি, সফদরজং দেখি নি। কোনও ভালো হাসপাতালের কাউকে চিনি না কেউ।

    যশোদার এমার্জেন্সিতে একটা স্ট্রং ওষুধ দিয়েছিল, সেটা খেয়ে কাশি কমে গেছিল। সারা দুপুর কৈলাশের বেডে শুয়ে রইলাম। সন্ধ্যেবেলা সিএমও এসেই আবার চিল চিৎকার, এই পেশেন্টকে হাসপাতালে ঢুকতে কেন দেওয়া হয়েছে? এক্ষুনি ডিসচার্জ করিয়ে দিন, আমাদের এখানে টিবির চিকিৎসা করানো হয় না। আমাদের আইসোলেশন ওয়ার্ড নেই।

    গেঁড়ি আবার জিজ্ঞেস করল, কোথায় নিয়ে যাবো সেটা তো বলে দিন।

    সিএমও বললেন, মেহরৌলিতে টিবি ইনস্টিট্যুট আছে, আরো কোথাও কোথাও আছে, নিচে রিসেপশন থেকে জেনে নিন, আর ওকে এক্ষুনি নিয়ে যান।

    কৈলাশ থেকে বিতাড়িত হলাম, অবশ্য তাড়াবার আগে একদিনের ফুল চার্জ ওরা কেটে নিতে ভোলে নি। হাজর খানেকের মত গচ্চা দিয়ে, ব্যাক টু বাড়ি, অত রাতে মেহরৌলি কে যাবে? কেউ কিছু চেনে না।

    রাতে ঐ তামিল ভদ্রলোক কোথা থেকে খোঁজ নিয়ে জানালেন, কিংসওয়ে ক্যাম্পের কাছে একটা টিবি হসপিটাল আছে। কাল সকালে যাওয়া যাবে সেখানে।

    রাত ভালোয় ভালোয় কাটল। সকাল হতেই দৌড়লাম সেখানে। আমি ঐ স্ট্রং ওষুধ খেয়েই যাচ্ছি আর ঝিমিয়ে যাচ্ছি, যাতে আর ব্লিডিং না হয়। লাস্ট ব্লিডিং হয়েছিল গতকাল কৈলাশ থেকে বেরোবার সময়ে।

    সেই টিবি হাসপাতালে গিয়ে দেখি ভয়ংকর অবস্থা। পোড়ো বাড়ির মত কেস, চাদ্দিকে বড় বড় টিবি সচেতনতামূলক হোর্ডিং, থুতু, পায়খানা ইত্যাদিতে ভর্তি একটা কম্পাউন্ড। জানলায় পাল্লা নেই। টিনের খাটে তোষক নেই। ... প্রসঙ্গত তখন ডিসেম্বর মাস, টেম্পারেচার চার পাঁচের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে।

    ডাক্তার কখন আসবে কেউ জানে না। ঘন্টা দুই বসে থাকা হল। তামিল ভদ্রলোক সর্বক্ষণ আমাদের সঙ্গে। এদিক ওদিক ফোন করার চেষ্টা করছেন।

    দুঘণ্টা বাদে উনি বললেন, গাজিয়াবাদে এক কার্ডিওলজিস্ট আছেন, আমার বন্ধুর মায়ের ওখানে চিকিৎসা হয়েছিল, খুব ছোট জায়গা কিন্তু চিকিৎসা ভালো করায় বলে শুনেছি, একবার ওখানে চেষ্টা করা যাক। এখানে কিছু হবে বলে মনে হয় না।

    ফেরত আসা হল, গাজিয়াবাদের ইন্টিরিয়রে রাজনগর বলে একটা জায়গা, সেখানে একটা দোতলা বাড়িকে নার্সিং হোমে কনভার্ট করা হয়েছে। চালান ডক্টর নীরব ত্যাগি নামে এক ভদ্রলোক এবং তাঁর লোকজন।

    কীভাবে কোন রাস্তা দিয়ে গাড়ি এল, কীভাবে ঢুকলাম, কিছু আর এখন মনে নেই, আধা সেন্সলেস ছিলাম, ভয়ে আর ওষুধের ঘোরে। ঢোকার পরে ডাক্তার সাথে সাথে দেখে প্রথমেই আমার মুখ থেকে মাস্কটা হটালেন। "এটা কীজন্য পরে আছো? তোমার কী হয়েছে দোস্ত? কিস্যু হয় নি, ছোটোখাটো অসুখ করেছে, কদিন আমাদের মেহমান হয়ে থাকো, সব ঠিক হয়ে যাবে।'

    উনি গেঁড়িকে বললেন, প্রায় লাস্ট স্টেজ হয়ে গেছিল। মাস তিনেক আগেও ধরা পড়লে শুধু ওষুধ দিয়ে সারানো যেত, কিন্তু এখন হসপিটালাইজ করতেই হবে। তবে চিন্তা করবেন না, আমার হাতে যখন পড়েছে, সেরে ও যাবেই।

    শুধু ঐটুকুনি কনফিডেন্স আমাদের বিশাল শক্তি জোগালো। বাড়ি থেকে অনেকদূর, গাজিয়াবাদের ইন্টিরিয়র, ছোট ফেসিলিটি, আমাদের বাড়ি থেকে আসতে হলে কিছুটা অটো, কিছুটা বাস, কিছুটা রিক্সা করে আসতে হয়। এদিকে হাসপাতালে খাওয়া দাওয়ার কোনও ফেসিলিটি নেই। জাস্ট চিকিৎসা হয়। খাবার পেশেন্টের বাড়ির লোককে ব্যবস্থা করে দিতে হয়।

    বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ গাড়ি চালাতে জানে না। বাচ্চাকে সারাদিন রেখে আসা হয়েছে প্রতিবেশির বাড়িতে। গেঁড়িকে ফিরতেই হবে। ফিরে গিয়ে আবার খাবার নিয়ে আসা সম্ভব নয়, বাস বন্ধ হয়ে যাবে ততক্ষণে। অতএব, ডাক্তার ত্যাগিই আবার সহায় হলেন, কোই বাত নহি ম্যাডাম, আজ রাত কে লিয়ে মেহমান কো খানা হম হি খিলায়েঙ্গে, কল সে আপ কি বারি।

    রাতে খিচুরি খেলাম। স্যালাইন চড়ানো হল সেদিন বিকেলে, খোলা হয়েছিল আটদিন বাদে। টানা আটদিন আমি বিছানায় শুয়ে, আধা বেহুঁশ অবস্থায়। কেবল ইঞ্জেকশনগুলো পুশ করার সময়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে হত, বড় ভয়ংকর ভয়ংকর ইঞ্জেকশন পড়েছে ঐ আটদিন ধরে। ডাক্তার আসতেন দিনে দু বার। দোস্ত-দোস্ত করে কথা বলতেন, আর সমানে বোঝাতেন, টেনশন করার কিছু নেই, আমার হাসপাতাল স্পেশালি টিবিরই চিকিৎসা করে, এখানে যত পেশেন্ট দেখছো, প্রায় সবাই টিবি পেশেন্ট, তবু আমাদের কারুর কিছু হয়েছে? আমাদের কাউকে মুখ ঢাকতে হয়েছে মাস্ক দিয়ে? কোনও আইসোলেশন ওয়ার্ডের দরকার হয়েছে? কিস্যু লাগে না, জাস্ট ওষুধে সারে টিবি, আর ভালো খাওয়া দাওয়ায় সারে।

    আটদিন বাদে যখন বেরোলাম, আমি একেবারে ফিট। কেবল দুর্বল। বাঁ হাত ফুলে ঢোল, স্যালাইন নিয়ে নিয়ে। আরো ছদিন মত বাড়িতে রেস্ট নিয়ে অফিস জয়েন করলাম।

    তারপর প্রায় নমাস ওষুধ চলেছিল। সেকেন্ড ওপিনিয়ন হিসেবে ঠেক করে সফদরজং হাসপাতালে দেখিয়ে এসেছিলাম, তিনিও বললেন, আমি কমপ্লিটলি কিওর্ড।

    আমি রেগুলার ব্লাড ডোনার। দু বছরের ব্যান ছিল এই অসুখের পর। এই বছরই প্রথম ব্লাড দিয়েছি আবার, রিপোর্ট একেবারে নর্মাল এসেছে।

    মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখে নিয়েছিলাম। ঐ ছোট্ট মত নার্সিং হোম আর ঐ ডাক্তার সেদিন না থাকলে হয় তো আজ আর এখানে বসে লিখতে পারতাম না।

    যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম, তখন আমার ওজন হয়েছিল পঁয়তাল্লিশ কেজি। নমাসের মাথায় যখন ডাক্তার বললেন কোর্স কমপ্লিট, তখন আমি পঞ্চান্ন কেজি।

    তো, এই হল আমার গপ্পো। :) সরকারি ব্যাপার স্যাপার ছিল না, কিন্তু বাজে ব্যবহার ছিল প্রভূত। তথাকথিত শিক্ষিত ডাক্তারদের দল যে ব্যবহার করেছিলেন নয়ডা গাজিয়াবাদের বড় বড় হাসপাতালে বসে, চিকিৎসাশাস্ত্র সম্বন্ধে একেবারে অজ্ঞ আমাদের প্রতিবেশিরা তার থেকে অনেক বেশি সাহায্য করেছিলেন, কিছু না বুঝে। রোজ হাসপাতালে যেতেন ফল ইত্যাদি নিয়ে, কোনওদিন গেঁড়ি যেতে না পারলে দিনের বা রাতের খাবার ওঁরাই পৌঁছে দিয়ে আসতেন। যা করেছিলেন তাঁরা, অতি নিকট আত্মীয় তা করে না।
  • lcm | 69.236.160.8 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ১০:০৩504773
  • ওহ! সিকি-র পোস্টটা... ভয়াবহ!
    সিকির তামিল প্রতিবেশীর প্রতি শ্রদ্ধা...
  • lcm | 69.236.160.8 | ০৩ নভেম্বর ২০১১ ১০:৫৮504774
  • প্রায় সাতাশ/আঠাশ বছর আগে একবার এক প্রতিবেশীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য তাদের বাড়ির কয়েকজনের সঙ্গে আমিও গেছিলাম। ভদ্রলোকের অবস্থা ভাল ছিল না - শারীরিক এবং আর্থিক - দুদিক দিয়েই। প্রথমে বাঙ্গুর হাসপাতাল - টালিগঞ্জ ট্রামডিপোর কাছে। সেখানে একজন ডাক্তার দেখলেন - রেফার করলেন নিউরোসার্জারি - ঐ ডাক্তার ভদ্রলোকের ব্যবহার ভাল ছিল - মাছের বাজারের মতন অবস্থা - সবাই একেবারে হুমড়ি খেয়ে ঢুকে পড়ছে ওনার ঘরে - উনি কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে সব সামলাচ্ছিলেন।

    সেখান থেকে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হল বাঙ্গুর ইন্সটিটিউট অফ্‌ নিউরোলজি - পিজি-র কাছে। রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপ, সেন্সলেস। মাটিতে শুইয়ে রাখা হয়েছে। ডাক্তারের খোঁজে অফিসে উঁকিঝুঁকি, একজন ডাক্তার পাশ দিয়ে হেঁটে দেখতে দেখতে চলে গেলেন, কিছুক্ষণ পরে ঐ ডাক্তার আবার... এবার একটু থামলেন, (আমাদের মধ্যে আশার আলো) - এখানে রোগীকে কে রেখেছে মেঝেতে? - বলে খিঁচিয়ে উঠলেন আমাদের উদ্দেশ্যে। রুগীর ছেলে (আমাদের সিনিয়র বন্ধু) ডাক্তার দেখতে পেয়ে কাকুতি মিনতি করলেন ওর বাবাকে একটু দেখবার জন্যে, সাথে আমরাও কয়েকজন, ওনাকে বলা হল যে বাঙ্গুর থেকে একজন রেফার করেছেন ইমিডিয়েট অ্যাডমিশনের জন্যে। ছেলেটি ডাক্তারের পায়ে পড়ল, একবার দেখুন, না দেখলে বাবা মারা যাবে। ডাক্তার এতে একেবারে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠলেন - এ কি, এরকম ভাবে ... আপনারা এখানে ঢুকলেন কি করে। আর বাইরের দারোয়ানটা ফালতু। আপনারা অফিসে দেখুন বেড আছে কি না- এই বলে ডাক্তার হাঁটা লাগালেন। পেছন পেছন ছেলেটি। এবং, এর মধ্যেই প্রতিবেশী রুগী মারা গেলেন, মেঝেতে শুয়েই।

    এই ঘটনায় আমি দুজন ডাক্তার দেখি - একজন সমস্ত রুগীকে একা সামলাচ্ছেন (একটু ভাল আন্তরিক ব্যবহার যে ডাক্তারদের, সবাই তার কাছেই যেতে চায়)। আর একজনের প্রায় সামনেই রুগী মারা গেলেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন