এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • অনেক সাহসে সর্ষে

    de
    অন্যান্য | ২০ জুন ২০১২ | ১০৭৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 130.62.162.150 | ২৩ জুন ২০১২ ০০:০২559141
  • শালিমারের মুঘল গার্ডেন জাহাঙ্গীরের তৈরী ১৬১২ সালে। এটা নাকি সবচেয়ে রোম্যান্টিক গার্ডেন, মুঘল বাদশারা বেগমদের নিয়ে বিহারে আসতেন। প্রাকৃতিক দৃশ্যের কথা ভাবলে এটাই আমারো সবচেয়ে সুন্দর লেগেছে। এখানে ঢোকবার মুখে আকাশের মুখ ভার হয়ে এলো (৬৩ থেকে ৭১ নম্বর ছবি)। তিনটে পার্ট এই বাগানের, একদম বাইরে দেওয়ান-ই-আম, তার পরে দেওয়ান-ই-খাস আর তারপরে বেগমদের মহল। সুন্দর ঝর্নার জল স্টেপে স্টেপে নেমে আসছে (৮২)। এখানেও অনেক স্কুলের ছেলেমেয়েরা পিকনিক করতে এসেছে। ৮২ নম্বর ছবিটা লোকজন ছাড়া তুলবো ভেবে ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে রইলাম। সবচেয়ে গোল বাঁধলো হানিমুন কাপলদের নিয়ে। নানারকম কোলে-কাঁখে, ফটো সেশন আর শেষই হয় না! ইদিকে পেটের ভিতরে ডন-বৈঠক চলছে। অগত্যা ছবি তুলে খাবারের সন্ধানে।

    পরোটা-শাহী পনির-ক্ষীর এইসব দিয়ে লাঞ্চ তড়িঘড়ি করে সাড়া হলো। শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তখত-ই-সুলাইমান পাহাড়। তার ওপরে চড়বো এখন আমরা, ২৫০ BC র শঙ্করাচার্য্য মন্দির দেখতে। সাড়ে তিনটের পরে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তাই তাড়াহুড়ো। এই মন্দিরের চূড়াটা শহরের প্রয় সবখান থেকে দেখা যায়। খানিকটা ওপরে তুলে গাড়ি ছেড়ে দেয়, তারপরে খানা-তল্লাসি, ছেলে আর মেয়েদের আলাদা আলাদা। ক্যামেরা, মোবাইল ইত্যাদী যাবতীয় জিনিস গাড়িতেই ছেড়ে আসতে হবে, চামড়ার কোন জিনিস পড়ে মন্দিরে ঢোকা চলবে না। প্রয় পাঁচশো সিঁড়ি খাড়াই উঠতে গিয়ে জিভ বেরিয়ে যায় আর কি! তবে ওপরে উঠে প্যানোর‌্যামিক ভিউ অসাধারণ! মন্দিরের অনুষঙ্গিক ফুল-মালার দোকান, দক্ষিণা, পূজারী ইত্যাদী কোন ঝামেলাই নেই। দিব্বি চুপচাপ শান্ত পরিবেশ।

    উঠতে উঠতেই দু-চার ফোঁটা গায়ে পড়তে লেগেছিলো, মন্দিরে দর্শন করে গাছতলায় একটা গোল-ছউনির তলায় দাঁড়িয়ে একটু হাঁপাচ্ছি, এমন সময় হৈ হৈ রৈ রৈ করে ভৈরব হরষে ঝমঝমিয়ে এসে গেলো, সেই সঙ্গে ঝড় আর তুমুল বজ্রপাত। চারিপাশের লোক-জন হুড়পাড় করে ওমনি ছাউনির তলায় – পাহাড়ের অতো ওপর থেকে শহরের ওপরে বিদ্যুৎ- ঝলকের নেমে আসা -- সে এক দেখবার মতো দৃশ্য। খানিক পরে ছাউনির ওপরে টকাস-টকাস করে গোল গোল শিলা-বৃষ্টি হতে লাগলো। চারপাশ থেকে ঠান্ডা জলের ছিটে এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে প্রায়। ঠান্ডায় বেশ কাঁপুনি দিচ্ছে, কোট গাড়িতেই রেখে এসেছি সবাই। কিন্তু চারপাশের প্রাকৃতিক আবহে ঠান্ডার কথাটা মনেই থাকছে না – অতো ওপর থেকে নীচের শহরটাতে শিলা-বৃষ্টি হয়ে দেখা আর বিশেষতঃ বজ্রপাত, জন্মজন্মান্তরের মতো মেমোরিতে সেভ করে রাখার দৃশ্য!

    বৃষ্টি একটু ধরলে ধীরে-ধীরে নেমে আসি। একদম হিলটপে তো ক্যমেরা নিয়ে ওঠা যায় না। নামার সময় সেলিম-ভাই এক যায়গায় গাড়ী দাঁড় করালো – সেখান থেকে ডাল-লেক আর সিটির প্যানোর‌্যামিক ভিউ নেওয়া হলো (৭৪-৭৯)। নীচে নেমে এসে দেখলাম ডাল লেকের ধারে স্থানীয় তরুণদের গজল্লা চলছে (৮০)। পিছনে একটা হাউস-বোটের নাম – ফাজিল!

    আর একপ্রস্থ চা খাওয়ার পর একটু শপিংয়ে বেরনো হলো। শ্রীনগর কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে যাওয়া হলো। কার্পেট, শাল, স্টোল, কিছু কাঠের কাজ এইসব কিনে টিনে খুশী হয়ে ফিরে আসি। সেলিম-ভাই পৌঁছে দিলো হোটেলে। হাত-মুখ ধুয়ে ডিনার। চিকেন বিরিয়ানী আর মাশরুম কারী। খুব ঝাল কিন্তু ভালোই খেতে। খেয়েদেয়ে পেট ভরে ল্যাপটপে ফটো দেখতে দেখতেই চোখ জুড়ে আসে।
  • Nina | 22.149.39.84 | ২৩ জুন ২০১২ ০০:২৬559143
  • দেবু
    একটা জিনিষ খুব কানে খট করে লেগেছিল--ওখানে ঘোড়াবালারা--এগুলো সোনমার্গ গুলমার্গে--জিজ্ঞেস করত
    আপলোগ হিন্দুস্থান সে আয়ে হ্যায়?
    দেবু ওখানে শালের ফ্যাক্ট্রি দেখলি?? ওখানকার বিখ্যাত কারিগরি
    কানি-শাল দেখলি? মেরুন কালো এই দু রঙের প্রচন্ড দাম আর সদার কম। তিনটে শাল আনাবার পর নাকি কারিগর অন্ধ হয়ে যায় প্রায়---রিসেন্টলি কনির দাম দেখলাম--কালোটার সওয়া লাখ টাকা!!
  • de | 130.62.182.164 | ২৩ জুন ২০১২ ১১:০৫559144
  • নীনাদি,

    এখনো তাই বলে-- হিন্দুস্তানের পর্য্যটকদের ওপর ওদের অর্থনীতি নির্ভরশীল, কিন্তু হিন্দুস্তানী সেনা,পুলিশ আর নেতা ওদের মোটে পছন্দ নয় ঃ)) --

    কানি শাল দেখেছিলাম, দাম শুনেই তো হাত পা এলিয়ে যায় --

    আগের দিনের লিং টা কে ডাইরেক্ট করে একটু টেস্ট করি --

    https://picasaweb.google.com/karmakar.debjani/Kashmirday3?authuser=0&authkey=Gv1sRgCJmb2OGBufKLKg&feat=directlink
  • de | 130.62.182.164 | ২৩ জুন ২০১২ ১১:১৪559145
  • আপলোড হচ্ছে কিন্তু "অসমর্থ" দেকাচ্চে -- এ যে মামুর কি খেলা ! ঃ))

    কিকি, থ্যাংকু! ঃ))
  • jhumjhumi | 127.194.239.207 | ২৩ জুন ২০১২ ১২:৪৪559146
  • দারুণ, আমিও মনে মনে কাশ্মীর ভ্রমণ করছি। লেখা চলুক।
  • Rit | 213.110.243.21 | ২৩ জুন ২০১২ ১৮:২১559147
  • দারুন। এখানেও আমার পরিচিত ১০-১২ জন প্রফ কাশ্মীর ঘুরে এলেন গত এক মাসে। শিগ্গিরি যেতে হবে।
  • পাই | 82.83.84.10 | ২৩ জুন ২০১২ ১৯:২৩559148
  • দেদি, হিন্দুস্থানী সাধারণ লোকজন নিয়ে কী মত ? কেবল পর্যটক, খদ্দের বলে ছাড় ? আর পাকিস্তান নিয়ে ? ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে ?
  • de | 130.62.165.67 | ২৩ জুন ২০১২ ২০:৩২559149
  • ঝুমঝুমি আর ঋত,

    অনেক ধন্যবাদ ঃ))।

    যদি শ্রীনগরের সাথে লে যাওয়ারও প্ল্যান থাকে, তাহলে বেস্ট সময় বোধহয় জুলাই-টু-সেপ্টেম্বর। লে তে তখন কিছু পাতা থাকে গাছপালাতে, অক্সিজেন ট্রাবল সব থেকে কম হয় ওইসময়। আমরা যখন গেছি তখন সব ন্যাড়া! শ্রীনগরে আপেল হওয়ারও ওটাই টাইম। আর সেপ্টেম্বরে ঠিক একমাস জাফরানের ফুলে চারিদিক ভরে যায়। সেও এক দেখার মত জিনিস।

    পাই,

    দেখেশুনে আর কথা বলে যা মনে হয়েছে, মোড়ে মোড়ে সেনার পিছনে সো-কলড প্রতিরক্ষা খাতে যে পয়সা ঢালা হয় তার কিছু পরিমাণ যদি ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উন্নতিতেও আসতো, তাহলে হয়তো কিছুটা ক্ষোভ প্রশমণ হতো। আমি পরে ঘুরে বেরাতে গিয়েও দেখেছি, কিছু ছবি দেবো আর লেখারও ইচ্ছে আছে-- সাধারণ মানুষ অতি নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে বাস করে। স্থানীয় নেতাদেরও অনেকখানি দায়িত্ব আছে -- দুঃখের বিষয়, আখের গোছানো আর উস্কানি দেওয়া ছাড়া আর কোন কিছুই তারা করেন না। এর পুরোটাই অবশ্য আমার ব্যক্তিগত মতামত।

    ধর্ম ইস্যুটাই একটু সেন্সিটিভ ওখানে -- আবেগ বেশী কাজ করে, যুক্তি ততো নয়, ধর্ম আর রাজনীতি দুটো সেটের ইন্টারসেকশন খুব বেশী -- ঃ)) কোনটা কখন কাকে চালাচ্ছে তার মধ্যেকার ডার্টি গেম গুলো সবসময় জেনারাল পাবলিকের বোধগম্য থাকে না।
  • de | 130.62.165.67 | ২৩ জুন ২০১২ ২০:৫৫559151
  • আগের দিনই সেলিম ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছিলো, গুলমার্গ নিয়ে। বেসিক্যালি আমাদের সাবধান করে দিয়েছিলো। ওর মতে প্রথমে সোনমার্গ যাওয়া উচিত, পর্য্যটনের মুডটা খিঁচড়ে যায় না তাহলে। গুলমার্গ এখানকার সবচেয়ে ওঁচা জায়গা -- বড্ড বেশী পনিওয়ালা, গাইড আর তাদের কাছ থেকে তোলা আদায় করা গুন্ডা জাতীয় লোকে ভর্তী। কিন্তু আমাদের হোটেলের ম্যানেজার আগেই আমাদের ট্যুর অ্যারেঞ্জ করে রেখেছেন -- সে শিডিউলে তিনি নড়চড় করতে একটু অরাজী হচ্ছিলেন, উপরন্তু সেলিম-ভাই কেও পাওয়া গেলো না, ওনাকে অন্য জায়গায় ডিউটিতে পাঠানো হলো।

    এখানে বলে রাখি, ফ্লাইটে লে যাবো শুনে প্রায় প্রত্যেক স্থানীয় লোক হা হুতাশ করছিলেন -- ওনাদের মতে শ্রীনগর টু লে বাই রোড যাওয়া একটা লাইফটাইম এক্সপিরিয়েন্স! আমরা শুনে টুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলাম!

    শ্রীনগরের খাওয়া দাওয়ায় একটা জেনারাল কমেন্ট হলো -- একটু অপরিচ্ছন্নতার ছাপ আছে চতুর্দিকে, বিশেষতঃ বাইরে নন-ভেজ খাওয়ার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা ভালো!

    পরের দিন ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পরা গেলো গুলমার্গের পথে। আজ আমাদের সারথী আরেক মুন্নাভাই!
  • de | 130.62.165.67 | ২৩ জুন ২০১২ ২১:৫৪559152
  • গুলমার্গ হিমালয়ের পীর-পঞ্জল রেঞ্জে পড়ে। হিলটপ, যেটাকে খিলেনমার্গ বলে, সেটা প্রায় তেরো হাজার ফিট উঁচুতে। শ্রীনগর থেকে প্রয় ৫২-৫৩ কিলোমিটার গাড়ীতে যেতে হয়। সেদিন আবার সকাল থেকেই টিপ-টিপ বৃষ্টি, সাথে কুয়াশা। শ্রীনগরে, স্থানীয়দের মতে “আসমান কা কোই ভরোসা নেহি হ্যায়!” যাওয়ার পথে পড়লো লালবাগ চৌক বা লালবাজার, শ্রীনগরের “চৌরঙ্গী বা গান্ধীমূর্তির পাদদেশ”, যাবতীয় বিক্ষোভ আর পাথর ছোঁড়াছুঁড়ির পীঠস্থান। চারপাশে দেখলাম, এমনকি ফ্লাইওভারের ওপরেও, বেশ যত্ন নিয়ে দুপাশের ফুটে থান ইঁটের টুকরো, পাথরের টুকরো ইত্যাদী সাজানোই আছে , শুধু উস্কানির অপেক্ষা!

    গুলমার্গের পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে আছে টাঙ্গমার্গ পুলিশ চৌকি। সেখানে আমাদের গাড়ী থেকে নামালো মুন্নাভাই, ওর বক্তব্য পাহাড়ে বরফের ওপরে আমাদের ভালো শীতের পোশাক সব খারাপ হয়ে যাবে, এখানের ভাড়া করা পোশাক অবশ্যই নেওয়া উচিত। সুকান্ত আর মেয়ে সোজা বলে দিলো ওরা পোশাক পাল্টাবে না, দেখলাম ড্রাইভারের মুখ গম্ভীর হয়ে গেলো – বোঝা গেলো ওর পার্সেন্টেজটা মাঠে মারা যাবে! অগত্যা আমি বল্লাম ঠিকাছে দেখা যাক, দেখেই আসি নাহয় একবার!। এটা অবশ্য একটা ভুল ডিসিশন ছিলো।

    জামাকাপড় যেখানে ভাড়া দেওয়া হয়, একটা ছোট ঘুপচি মতো ঘর, পুরো অন্ধকার, এককোনে একটা কালি-পড়া লন্ঠন, আর তার পাশে উনুনে কয়েকটা লোক হাত-পা সেঁকছে – বেশ জমিয়ে দেওয়া ঠান্ডা সেদিন। আমি ঢুকতেই এক বুড়োদাদু কোথা থেকে একটা প্রচন্ড গন্ধ-আলা কোট নিয়ে এসে হাত-পা টেনে টেনে পরিয়ে দিলো। কোনে একটা কাঠের বেঞ্চ ছিলো, ধমক মেরে বল্লো “ওখানে বসো”- ছোটবেলা থেকেই ধমক শুনলে ভয় খেয়ে যাই, দূর্বলচিত্ত বাঙালী – বসার সঙ্গে সঙ্গে দাদু আমার জুতো খুলে ফটাফট উলের মোজা পড়িয়ে দিলো – আমি প্রতিবাদ করার টাইমই পেলাম না। মিনমিন করে বলার চেষ্টা করেছিলাম – পায়ে হাত দেবেন না (বয়স্ক মানুষ) কিন্তু তার আগে কাজ সারা – ঝড়ের গতিতে।

    তো সেই নোংরা ঢোলা কোট পড়ে গাড়িতে ফিরে আসতেই দুই মূর্তির সে কি হা-হা-হি-হি! মেয়ে বল্লো “মা, তুমি এক্ষুনি এটা খোলো, নাহলে তোমার পাশে বসে যাবো না, তোমার গা থেকে রামপাঁঠার গন্ধ বেরোচ্ছে, আমার বমি পাচ্ছে”। গন্ধের চোটে আমারও ততক্ষণে খারাপ অবস্থা। অগত্যা কোট খুলে সোজা গাড়ীর ডিকিতে চালান! আসলে ওই বৃষ্টি হিলটপে যাওয়ার পরে তুষারপাতে পরিণত হয়, সেই অবস্থায় ওখানে স্কি করার কোন সিনই নেই! তাই জামাকাপড়ও নোংরা হয় না। আগস্ট-সেপ্টেম্বর ভালো সময় লিখলাম না – সেই সময় এখানে বৃষ্টিও হয় না।
  • Nina | 78.34.167.250 | ২৩ জুন ২০১২ ২২:০০559153
  • দেবু
    আমরা কুলু মানালি ট্রিপে লে গিয়েছিলাম--অবশ্যই বাই রোড---সত্যি অদ্ভুত অ্যাডভেনচারাস----এখন বসে ভাবতে খুব রোমাঞ্চকর---তখন মাঝে মাঝে খুব ভয় করছিল--কিন্তু সত্যি এ জীবনের এক অমূল্য অভিজ্ঞতা!
    গুলমার্গ! সোনমার্গ! খিলানমার্গ!
    স্বর্গ হমিনস্ত হমিনস্ত হমিনস্ত!
    আমার জীবনে কাশ্মীরের মতন সুন্দর জায়গা আমি আর দেখিনি---লোকজনেরাও আমার চোখে কেমন যেন দেবশিশুর মতন লেগেছিল---সারল্য দেখার মতন।
    বাবার একটা কথা মনে পড়ছে --বলতেন দেশভাগের সবচেয়ে ভুল ডিসিশন কাশ্মীর রাখা এবং বঙ্গভঙ্গ।
    নেহেরু নাকি বলেছিলেন কাশ্মীর ছাড়া হবে ওভার মাই ডেডবডি---অন্য নেতারা নাকি তাই চেয়েছিলেন---এতদিন পর ঠিক মনে নেই সব কথা কিন্তু এটা মনে আছে পুরোনো মানুষদের কাছে এটা বহু শুনেছি!
    দাবার ঘুঁটির মতন সাধারণ মনুষগুলি কাশ্মীরের বলি হয়েছে --স্বর্গ নরকে বদলে গেছে----
    সরি সরি --কোঅথায় চলে যাচ্ছি--
    চল এবার গুলমার্গ যাই তোর সঙ্গে ঃ)
  • প্পন | 132.252.231.8 | ২৩ জুন ২০১২ ২২:১৬559154
  • চমৎকার হচ্ছে সর্ষে টই - দে কে জানিয়ে গেলাম।
  • de | 130.62.165.67 | ২৩ জুন ২০১২ ২৩:৪০559155
  • নীনাদি,

    'দেশভাগের সবচেয়ে ভুল ডিসিশন কাশ্মীর রাখা এবং বঙ্গভঙ্গ'

    এর থেকে সত্যি কথা হয়তো কমই আছে! সে আমরা মানতে চাই আর না চাই -- তবে কিনা কাশ্মীর মানে তো শুধু শ্রীনগর আর তার চারিপাশ নয়, জম্মু আছে, লে-লাডাখ আছে, সে জায়গাগুলি আবার একেবারেই অন্যরকম! সর্ব অর্থেই! কোন বিতর্কে না গিয়েই মনে হয় -- পারস্পরিক অবিশ্বাসের এই পরিবেশকে বোধহয় একটু চেষ্টা আর সদিচ্ছা দিয়েই বদলানো যায়! অন্ততঃ এখন সব মানুষই একটা স্থিতিশীল পরিবেশ চাইছেন বলেই মনে হয়!

    প্পন,

    অনেক ধন্যবাদ, সময় করে পড়ছো বলে! ঃ))
  • সিকি | 132.177.205.17 | ২৩ জুন ২০১২ ২৩:৫০559156
  • ই কী রে ভাই! পুউরো আমার টইটা হাইজ্যাক করে নিল! আমি তা হলে লিখব কী? আরে আমিও যে এলটিসি, আমিও যে শ্রীনগর আর ডালগেটের হাউসবোট, আর তারপরে আমিও যে লে'ড অফ!

    এম্নি কল্লে খেলব না কিন্তু বলে দিচ্ছি। সেই আন্দামানটা তো পুরো গুপি করে দিলে আজ লিখছি কাল লিখছি করে। যাস্‌সেতাই অ্যাকেবারে!

    চালাও পানসি।
  • aishik | 132.179.44.101 | ২৪ জুন ২০১২ ০০:১৩559157
  • কাশ্মীর যেতে পারব কিনা জানি না, কিন্তু দিদির দয়াতে মানস-ভ্রমণ টা হয়ে যাছে:) আরো লেখা আরো ফটো চায়
  • পাই | 82.83.84.10 | ২৪ জুন ২০১২ ০১:৩৪559158
  • দে দি, হুম। যা অবস্থা, হিন্দুস্থান নিয়ে ভাল কথা আশাও করা উচিত না। পাকিস্তান নিয়ে সাধারণ মানুষ কী ভাবেন, বলেন জানার ইচ্ছা ছিল।
    লেখার মাঝে মাঝে ওখানকার মানুষজনের কথা এমনি আরো আরো লেখো। ভাল লাগছে পড়তে।
  • Nina | 78.34.167.250 | ২৪ জুন ২০১২ ০২:৩৬559159
  • আমাদের এক্বন্ধু বলছিল, তারা রিসেন্টলি ঘুরে এল কাশ্মীর---এখন নাকি ওখানকার লোকেরা--মানে সাধারণ লোকেরা আজাদ কাশ্মীর চায় হিন্দুস্থান কি পাকিস্তান কারুরই ভাগে নয়--তোর কি এমন কিছু মনে হল?
    এই বন্ধুরা কাশ্মীরি পন্ডিত--বাড়ী জম্মুতে কিন্তু সব ছেড়ে চলে এসেছে বহুদিন হল।

    আর ওদের "কাবা" --বেশ গরম গরম চায়ের মতন --খেলি?

    ছবিগুলো খুব সুন্দর---তোর মেয়ে ভারি সুন্দরঃ)
  • de | 130.62.171.18 | ২৪ জুন ২০১২ ১২:১০559160
  • সিকি,

    সরি, আমি জানতাম না তুমিও লাডাখ-শ্রীনগর গেছো আর লেখার প্ল্যান করেছো -- তাই লিখে ফেল্লাম ঃ)), তবে শুধুই বেড়ানো হলে হয়তো লিখতাম না, আরো কিছু অ্যাডিশনাল মেমোরি থাকার জন্যই লিখছি। ঘটনা বা দুর্ঘটনা চক্রে এবারের বেড়ানোটা আমার একেবারেই অন্যরকম।

    ঐশিক,

    অনেক ধন্যবাদ, বেড়ানোর প্ল্যানটা এবার করেই ফেলো, যথেষ্ট মোটিভেশান এই গুরুতেই মজুত! ঃ))
  • de | 130.62.171.18 | ২৪ জুন ২০১২ ১২:১৫559162
  • নীনাদি,

    আজাদ কাশ্মীরের চাইতেও সাধারণ মানুষ দিনান্তের পাওনাটুকু নিয়েই বেশী মাথা ঘামায় -- অন্ততঃ আমার তাই মনে হলো।

    শাহী কাবা খেয়েছি, ডাব্বা কিনেও নিয়ে এসেছি।

    পাই,

    পাকিস্তানে যোগ দিলে অবস্থা যে আরো খারাপ হবে তাতে কারো বিশেষ সন্দেহ নেই-- রোজকার প্রবলেম নিয়েই মানুষ বেশী বিব্রত-- এখন পরিস্থিতিটা এটাই!
  • de | 130.62.171.18 | ২৪ জুন ২০১২ ১২:৫৩559163
  • গুলমার্গের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এখানকার গন্ডোলা রাইড, বেসিক্যালি রোপওয়ে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে এশিয়ার সবথেকে বড় এবং হাইয়েস্ট রোপওয়ে রাইড। একটা ফ্রেঞ্চ কোম্পানির সাথে কোল্যাবোরেশনে ৮৮ সালথেকে শুরু হয় এই প্রোজেক্ট। প্রথমে প্ল্যানিং ছিলো কাংদুর বা আফারওয়াত অব্দি টানা চলবে এই রোপওয়ে, কিন্তু গুলমার্গে প্রকৃতিদেবী খুবই বিরূপ থাকার কারণে খিলেনমার্গের আগে এখনো এগোয়নি।

    টাংমার্গ থেকেই মুন্নাভাই বলে দিলো, গুলমার্গে নেমে বাঁদিকে গেলেই গন্ডোলা। আমরা তখন সেটা শুধু শুনেই গেছি, মরমে পশেনি তখনো! ভেবেছি অন্য সবজায়গায় যেমন ড্রাইভারেরা পুরোপুরিই গাইড করে, ওখানে পোঁছবার পরে তেমনি জেনে নেবো।

    প্রসঙ্গত বলে রাখি, কাশ্মীরি ছেলে আর মেয়েদের পোশাকটা একই -- নীচে যা হোক পরে, ওপরে একটা ঢোলা ফেরান/ফারান চাপিয়ে নেয়। এটা অনেকটা দাড়িদাদুর জোব্বা গোছের -- গরম কাপড়ের তৈরী। এর নীচে ঢোলা পাজামাও পরে অনেকে। মেয়েদের ক্ষেত্রে ফারানের ওপরে সুন্দর এমব্রয়ডারিও করা থাকে। এছাড়া আর কোন শীতবস্ত্র -- সোয়েটার বা শালটাল পড়তে দেখিনি। মাথায় একটা ফেট্টি টাইপ জড়ানো থাকে। ঐ ঠান্ডায় কি করে এই পোশাকে চলে, সেটা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় প্রশ্ন করলাম মুন্নাভাইকে। এছাড়াও সবারই ফারানের মধ্যিখানটা অস্বাভাবিক ভাবে উঁচু হয়ে থাকতে দেখছিলাম। মুন্নাভাই তখন দেখালো, ফারানের মধ্যে থাকে একটা হ্যান্ডেল আলা বেতের টুকরী -- তার মধ্যেটা একটা পোড়ামাটির আস্তরণ যার মধ্যে রাখা আছে জ্বলতে থাকা লাল কাঠকয়লা -- সেটাই দুহাত দিয়ে বুকের কাছে ধরা থাকে। শীত থেকে বাঁচবার এটাই উপায় সাধারণ মানুষের। পরের দিন এই ফারান আর কাংড়ির (বেতের টুকড়ী) ছবি তুলেচিলাম। পনিওয়ালা ইত্যাদীর বেশীর ভাগেরই ফারান দেখে জীবনে তাতে জল-সাবানের স্পর্শ লেগেছে বলে মনে হয় না!
    গুলমার্গ পৌঁছনোর সাথে সাথে ঢোলা ফারান পড়া একদল এসে গাড়ি ঘিরে ধরলো। তারপরেই আরম্ভ হলো পনির জন্য জোড়াজুড়ি/দরাদরি। পনিগুলোকে দেখেই এতো নোংরা লাগছিলো, বৃষ্টির জলে ভিজে-টিজে একশা! পাশের পাথরে যেভাবে পা হড়কে হড়কে চলছিলো -- বেশ কয়েকজনকে পড়ে যেতে দেখেছি পনি থেকে। কাশ্মীরে বেড়াতে আসার আগে আমার বাবাও বারবার করে সাবধান করেছিলেন -- অমরনাথ যাওয়ার সময় ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে বাবা চোট পেয়েছিলেন কোমরে। এইসব মাথায় থাকায় পনিতে উঠবো না ঠিক করাই ছিলো।
  • শ্রাবণী | 69.94.98.139 | ২৪ জুন ২০১২ ১৩:১২559164
  • আমি বেশ অনেক ছোটোতে কাশ্মীর গেছিলাম, এই কাংড়ি ব্যাপারটা নিয়ে অনেক কৌতূহল ছিল মনে আছে, কী করে রাখে, পুড়ে যেতেও পারে.....তখন একজন কাকু বলেছিল মনে আছে গরীবদের যাদের পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র নেই তাদেরই এই উপায় এবং এ জন্যে ওখানে কোনো একটা অসুখও খুব বেশী, ঠিক মনে নেই অসুখটা কী, কিছু একটা ক্যানসার বোধহয়.....

    আর কাশ্মীর নিয়ে আলোচনায়, লোকেদের ভোট তারা কোন দিকে থাকতে চায় ইত্যাদি, একবার গুরুতে বলেছিলাম (শাল/কার্পেট ওয়ালা, বিভিন্ন দোকানের লোক ও আরও কিছু লোকের সঙ্গে কখনোসখনো আলাপে যা মনে হয়েছে).....যে ওখানে সাধারণ অবস্থার উন্নতি, কাজের সুযোগ, পড়াশোনা, নানা ভাবে উন্নয়ন ইত্যাদি সবার আগে প্রয়োজন, সাধারণ লোকের শাঁখের করাতে বেহাল অবস্থা আর সেটা সমস্যাকে আরো জটিল করেছে....অবশ্যই এসবের কোনো মানে হয়না,দেশের অনেক প্রান্তেরই এরকম অবস্থা.....
  • de | 130.62.171.18 | ২৪ জুন ২০১২ ১৩:২২559165
  • গন্ডোলার ডিরেকশন জিজ্ঞেস করলাম -- কেউ দেখাচ্ছে না, আমাদের ড্রাইভারও দিব্বি বলে দিলো "পাতা নেহী"। অন্যদিকে ফিরে দাঁড়িয়ে রইলো, যেন চিনতেই পারছে না! তখন সেই টাংমার্গের বাঁদিকে যাওয়ার ডিরেকশন স্মরণে এলো। চারপাশের টিপ-টিপ বৃষ্টি আর কুয়াশার মাঝে হাঁটতে শুরু করলাম।

    চারপাশের পনিওয়ালা আর গাইড টাইপের দাদাগিরি ফলানোর যেসব লোক ঘিরে ছিলো আমাদের, তারাও অমনি বলতে লাগলো "আজ গন্ডোলা বন্ধ হ্যায়, বারিষ কে লিয়ে"। আমরাও অমনি বুঝে গেলাম ঠিক দিকেই এগোচ্ছি। প্রায় দু-তিন কিলোমিটার চড়াই-উতরাই হেঁটে একজায়্গায় দেখা গেলো প্রচুর লোকের ভিড় আর লাইন। উপরে লেখা "গুলমার্গ গন্ডোলা "-- কিন্তু দুটো বিশাল লাইন, কোনটা টিকিট কাটার আর কোনটা গন্ডোলায় ঢোকার, সেটা বোঝবার উপায় নেই -- লাইনের লোকজনকে জিগাতে তারা বল্লো তারাও জানেনা, গ্রুপের লোকেরা ভাগাভাগি করে দুটো লাইনেই দাঁড়িয়ে আছে। অগত্যা মেয়েকে নিয়ে আমি দাঁড়ালাম এক লাইনে, সুকান্ত অন্য লাইনটার প্রথমে দেখতে গেলো।

    ভাগ্যক্রমে অন্য লাইনটাই ছিলো টিকিটের লাইন। কিন্তু সেও আর এগোয় না। পাশে একটু দূরে অন্য একটা কাউন্টারের থেকেও টিকিট হাতে লোকজন বেরোতে দেখা গেলো, সংখ্যায় খুবই অল্প। বুদ্ধি করে জিজ্ঞেস করতেই জানা গেলো ওখানে ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করা যাচ্ছে -- ক্যাশের লাইনের থেকে ওখানে বেশী জলদি কাটা যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে টিকিট কাটা হলো সেখান থেকে। এই টিকিট অবশ্য অনলাইনেও কাটা যায়, কিন্তু মাঝে মাঝেই খারাপ ওয়েদারের জন্য গন্ডোলা বন্ধ হয়ে যায়। তখন আরেকটা হ্যাপা! তাই এখানে এসে কাটাই ভালো। তবে গন্ডোলা খুঁজে পাওয়া, টিকিট কাটা, লাইনে দাঁড়ানো, ভিতরে ঢোকা -- এই পুরো প্রসিডিওরে কেউ কোন ব্যাপারে তথ্য দিয়ে হেল্প করবে না। পুলিশ গুলো অব্দি শুনতেই পাচ্ছে না এমন একটা মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আমাদের গন্ডোলা রাইডটা পুরোপুরিই লাক ফেভার করেছিলো বলে হয়েছিলো।

    সেদিন সত্যিই গন্ডোলা বন্ধ হয়ে গেছিলো, আমরা ঢোকার আধাঘন্টা খানেক আগে আবার শুরু হয়েছিলো। কারণটা ওমর আবদুল্লা, সদ্য বিবাহিতা পত্নীকে (দ্বিতীয়) নিয়ে তিনি ঘুরতে এসেছিলেন এখানে, আর ফের চালু হয়ে গেছিলো গন্ডোলা। তবে আমাদের পর আর মাত্র আরেকটা ফ্যামিলিকেই ঢুকতে দিলো। চারপাশে কুয়াশা তখন বেশ ঘন হয়ে উঠেছে। আবার বন্ধ হয়ে গেলো গন্ডোলা রাইড।

    প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশার মধ্যে কোনমতে ওঠা গেলো গন্ডোলায়। এক একটা কেবল-কার ঘুরে যেতে থাকে আর সেই চলমান অবস্থাতেই টপাস করে উঠে পড়তে হয়।
  • de | 130.62.178.128 | ২৪ জুন ২০১২ ১৬:০০559166
  • শ্রাবণী,

    ছোট ছোট বাচ্চাদেরও ওখানে ফারান আর কাংড়ি এর ভারসাতেই ঘুরতে দেখেছি। তোমার ছোটবেলা থেকে এতোটা সময়েও এটার কেন কোন পরিবর্তন হয় নি, সেটা অবশ্যই ভাবায়!

    ফারান কে অনেককে দেখলাম রাফান ও বলছে -- কোনটা সঠিক কে জানে!
  • de | 130.62.178.128 | ২৪ জুন ২০১২ ১৬:০২559167
  • *ভরসা

    অসংখ্য বানাম্ভুল আছে -- ঃ(((
  • de | 130.62.178.128 | ২৪ জুন ২০১২ ১৬:৫৩559168
  • গন্ডোলা রাইড শুরু হলো, বাইরে যা কুয়াশা তাতে ঝাপসা কাঁচের মধ্য দিয়ে ছবি তোলার মানে হয় না! প্রথম প্রথম চারিপাশে খাড়াই পাহাড়, কোথাও খরস্রোতা ঝরনা অঝোরে বয়ে চলেছে, লোক্যাল ছেলেরা ছাগল-ভেড়ার পাল নিয়ে চলেছে, এইসব দেখা যায়। কিন্তু ধীরে ধীরে শাদা ঘন কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে গেলো। প্রচন্ড খাড়া উঠছে এটা বোঝা যাচ্ছিলো, শুধু তিনটে কেবল সামনে মিটার দুয়েক দেখা যাচ্ছে বাকি সব শাদা। মেয়েকে বললাম, "দেখ আমাদের জীবনটাও এরকমই, সামনের ওই একটুখানিই প্রেডিক্টেবল -- বাকীটা এমনি কুয়াশায় ঢাকা" -- এমনিতে হয়তো মনেও থাকত না নিজের দান করা এই দার্শনিক জ্ঞানামৃত, কিন্তু পরের দিকে এই কথাটা এমনি খেটে গেছিলো যে মেয়ে এখনো এই কথাটা মনে করায়!

    তবে ওপরে ওঠার সময়ে মাঝে মাঝেই কোন কারণে কিছু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে যাচ্ছে কেবল কার। তখন কয়েক হাজার ফিট উপরে বেশ ভয়-ভয়ই করতে থাকে। প্রত্যেক বার টাওয়ারের জয়েন্টে একটা জার্কিং হয়, তখনও একই রকম অনুভূতি।

    উপরে উঠে দেখা গেলো বেশ ভালোই তুষারপাত শুরু হয়েছে। এই অব্দি পৌঁছতে প্রায় একটা বেজেছে-- এতোক্ষণের ঠান্ডায় হাত পা হিম, একটু গরম কিছু না খেলে আর চলছে না। ওপরে বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো একটা রেস্তোঁরা, সেখানে গিয়ে বসা হলো। টোম্যাটো স্যুপ আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়ে খাওয়া হলো। রেস্তোরার ভিতরের দিকে এককোনে একটা বড় সামোভার, সবাই হাত পা সেঁকছে চারিপাশে ঘিরে। ওয়েটার এসে বল্লো, একটু আগে সি এম এসে এখানে বসে খেয়ে গেলেন। আরেকটু আগে এলেই দেখতে পেতেন।

    খাওয়া-দাওয়া সেড়ে রেস্তোঁরার সিড়ি বেয়ে নামতে নামতেই বরফের ঝড় মতো বইতে লাগলো। একটু ধাতস্থ হলে খিলেনমার্গ, সেভেন পয়েন্ট স্প্রিং এইসবের দিকে এগোতে থাকি। অত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেও পনিওয়ালা, স্কি করানোর লোক এমনকি ফেরিওয়ালার কোন কমতি নেই। প্রায় জোরাজুরি চলতেই থাকে। সামহাউ পর্য্যটকদের উপরে এমনভাবে এরা ডিপেন্ডেন্ট যে অত্যন্ত মরিয়াভাবে সঙ্গে সেঁটে থাকে। সেটা খানিকটা বিরক্তিকর কিন্তু কতোখানি অভাবী হলে এই আবহাওয়ায়ও এইভাবে রোজগারের চেষ্টা করা যায়, সেটাও একটা ভাববার কথা বইকি!
  • I | 24.99.99.78 | ২৪ জুন ২০১২ ২১:৪১559169
  • দে,
    ভারী ভালো হচ্ছে লেখা। ছবিও সুন্দর। বত্রিশ বছরের পুরনো স্মৃতি ফেরত এলো!
    কাংরি থেকে স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার হয়। তার নামই "কাংরি ক্যান্সার''।
  • Nina | 78.34.167.250 | ২৪ জুন ২০১২ ২৩:৫৬559170
  • দেবু
    চমৎকার লিখছিস---
    ঐ কাংড়িতে একটা লোহার শিক গরম করে ওরা একটা মাংস রাঁধে আখনি-মাঁস--তাতে সেটা ছেঁকা দেয়--এক অদ্ভুত ভাল ফ্লেভার হয়।
    যাকগে বল বল তাপ্পর তোদের নেক্সট অ্যাডভেনচার-ভ্রমণ-বেত্তান্ত!
  • ঐশিক | 213.200.33.67 | ২৫ জুন ২০১২ ০৯:৫৪559171
  • তাপ্পর?
  • de | 213.197.30.2 | ২৫ জুন ২০১২ ১০:৪০559173
  • বড়াই,

    আপনাদের সব্বার ভালো লাগছে জেনে আমারও লিখতে খুব ভালো লাগছে! বত্রিশ বছর আগে আপনি কাশ্মীর গেছিলেন? এবার একবার ঘুরে এসে একটা কম্প্যারেটিভ সর্ষে লিখুন ঃ))

    নীনাদি,

    কত রকমের রান্না যে তুমি জানো! একটা দেশ-বিদেশের খাবারের টই খুলে লেখো না এইসব!

    ঐশিক,

    শিগ্গিরি লিখছি!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন