এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শহর থেকে শহরে

    bozo
    অন্যান্য | ০১ এপ্রিল ২০০৬ | ১৭২১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • bozo | 129.7.154.74 | ০১ এপ্রিল ২০০৬ ২৩:৫২563769
  • শহর মানে যে সিটি হবে তার কোনো মানে নেই। যেহেতু গ্রাম সমন্ধে আমার কোনো প্রতক্ষ্য experience নেই তাই শহর নাম দেওয়াই ঠিক করলাম। শহর মানে এখানে একটা জয়গা। গ্রাম, মফস্বল, নগরী, জনপদ সবকিছু হতে পারে।
    মোদ্দা কথা হল আজকাল আমরা সবাই চরে চরে খাই। এক শহরে বেশী দিন থাকি না। এই ধরুন আমি। আজ অবধি কোনো শহরে ১০ বছরের বেশী থাকি নি। চার খানা শহরে থেকেছি। আবার এমন কিছু শহর আছে সেখানে আমার বাড়ী না থাকলেও, কাজের জন্য বা কোনো ভাবে এত বার গেছি যে সেই শহরের সব অলি-গলি না চিনলেও অনেকটা চিনি।
    সেই অর্থে আমার কোনো নিজের শহর নেই। আবার অনেক গুলো আমার শহর রয়েছে।
    কারো এমন মনে হয়? কারো মনে হয় দুম করে কেউ যদি জিগ্গেস করে 'আপনি কোথায় থাকেন?' তবে এই ভাবে উত্তর দিতে পছন্দ করেন যে 'এখন এই শহরে আছি'। নিজের ও জানা নেই কবে বন্দরের কাল হবে শেষ, ছেড়ে যেতে হবে সেই শহর, পাড়ি দিতে হবে শহরান্তরে। 'Journey of an uprooted nomad'.

    যাদের মনে হয় চটপট লিখু, সেই শহরের গল্প, কি ভালো লেগেছিল, কি ভালো লাগে নি। কিভাবে সেই শহরে আপনার কিছুটা আমি রয়ে গেছে। আর লিখুন সেই সব শহরের কথা যেখানে আপনি একদিন থাকার স্বপ্ন দেখেন।
  • b | 86.129.79.239 | ০২ এপ্রিল ২০০৬ ০৫:৪৭563880
  • বোজো নিশ্চয় -ই বাঁশী ওয়ালা। কারণ লোভ দেখাতে জানেন।

    উত্তর ও পূর্ব বঙ্গ অর্থে মফস্বল যারে কয় সেরকম কোনো জায়গায় থাকিনি। অথচ গ্রাম বা বড় শহরেও থাকিনি। দক্ষিন বঙ্গ অর্থে যা গঞ্জ তাতেও কখন থাকিনি।

    রাঢ় অর্থে টৌন যারে কয় তাতেও না, স্বাধীনতা উত্তর সময়ের যা শিল্পাঞ্চল যা তাতেও না।

    যেখানে ছিলাম সেটা একটা ইনিভার্সিটি, মানসিক উপনিবেশ , দাড়ি কবির শিক্ষাদর্শের স্বপ্নভঙ্গ ও গ্রামে ঘেরা বাজার এর সংকর মত। শিকড় খোজার বা হারানোর রাজপথে তাই জায়গা না পাওয়া সঙ্কেÄও, পুরোনো ঘৃণিত পাব্লিক সেক্টর শিক্ষার সুযোগ নেওয়া ছাপোষা হবার আন্তরিক সাধনায় তাই একটা জায়গা খোজার চেষ্টা করেছি।

    পেয়েছি। বউ এর ঠোটে আর সন্তানের মুখে। ভুগোলে নয়।

    আর কোনো কোনো গল্প কথায়। তাদের নাম মাকোন্দো বা রাসবিহারী অথবা ব্রিক লেন বা পিটার্সবুর্গ, পারী, ডাবলিন। কখনো কখনো গ্রীনিচ ভিলেজ বা সোয়েটো। ঐ বই থেকে বই এ।
  • b | 86.129.79.239 | ০২ এপ্রিল ২০০৬ ০৫:৫৫563991
  • টৌন , টা উন অর্থে।
  • Tina | 205.188.116.71 | ০৩ এপ্রিল ২০০৬ ১০:৪১564057
  • মুশকিল হলো এরকম একটা লোভনীয় বিষয় নিয়ে লিখতে বসলে আমার বেহিসাবী হাত আর মন কয়েক দিস্তা নামিয়ে দিতে পারে। আর আমার নিজের তো কোন শহর আপনার এই কথা মনে এলেই মনে হয় "জীবনপুরের পথিক রে ভাই কোনো দেশেই সাকিন নাই কোথাও আমার মনের খবর পেলাম না"
  • Samik | 221.134.238.121 | ০৩ এপ্রিল ২০০৬ ২২:৩০564068
  • ছুটছে আমার ম্যাটাডোর
    দিল্লি কিংবা বম্বে রোড
    আবার গাইতে হবে গান
    কল্যাণী, নয় বর্ধমান
    কুড়িয়ে বেড়াই সুখ্যাতি
    একলা আমি ব্যাণ্ডপার্টি
    আমার মন
    করে কেবল কেমন কেমন
    ঘর
    চেনা হয় নি আমার ঘর, জানা হয় নি আমার ঘর
    জানা হয় নি মনের মানুষটাকে।

    বাবার বদলির চাকরি ছিল। সারা প:ব: চষা। সমতল ছেড়ে যখন পাহাড়ের কোলে পোস্টিং হল, সেই আলিপুর দুয়ারে আমার জন্ম। নাকি কাঠের বাড়িতে থাকতাম, নেপালি আয়া ছিল, আমাকে কমলালেবুর রস করে খাওয়াত।

    আলিপুর দুয়ারের কোনও স্মৃতি নেই। অনেক অনেক পরে, জলপাইগুড়ি যখন গেলাম ইঞ্জিনীয়ারিং পড়তে, খুঁজতে গেছিলাম একদিন, সেই কাঠের বাড়ি। মিটার গেজের লাইনওলা আলিপুর দুয়ার জংশনের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটা পিডব্লিউডি-র কোয়ার্টার-অফিসও দেখতে পেলাম। এসটিডি বুথ থেকে মা-কে ফোন করলাম, চব্বিশ বছর আগেকার স্মৃতি হাতড়ে মা কিছুই বলতে পারল না, কেবল বলল, ওমুক ডাক্তার, হোমিওপ্যাথি করতেন, ঐ রাস্তাতেই তাদের ওষুধের দোকান ছিল।

    একটা ওষুধের দোকান দেখলাম, দেখে মনে হল, অনেক দিনের পুরনো, জিগ্যেস করলাম, তারা চিনতে পারল, জানাল, সেই ডাক্তার তো দশ বছর হল দমদমে বাড়ি কিনে চলে গেছে।

    ব্যস, ছোটবেলার স্মৃতি আর খুঁজে পাওয়া হল না।

    পরের এপিসোডে গুশ্‌করা।
  • bozo | 129.7.203.134 | ০৪ এপ্রিল ২০০৬ ০২:৫৮564079
  • (১)
    শমীক, গুসকরার গল্প শুনব।
    আমার অভিঞ্জতা অন্য রকম। তোমার মতই উত্তর বঙ্গের মফস্বলে আমি থেকেছি, কিম্বা এখনো থাকি। ছোটো শহরের ভাল-মন্দ সব দেখেছি।
    কলকাতা খুব ভালো যে চিনি তা নয়। তবু কিছুটা চিনি। তবে আদ্যন্ত কলকাতায় যারা থাকে তাদের তুলনায় কিছুই চেনা নয়। আর চেনা কেবল দক্ষিন দিকটা। উত্তর পুরো গোলোকধাঁধা। উত্তরপ্রদেশে থেকেছি বেশ কিছুদিন। যেহেতু বেড়ে ওঠার সময় তাই সেই শহরের অলি গলি, নিষিদ্ধ আমোদের স্থান গুলো চেনা। তেমনি ভাবে চেনা খাপছাড়া দিল্লী। গভীর রাতের কনট প্লেস বা পড়ন্ত বিকালে জামা মসজিদের পিছনে গলি কিম্বা ভোরের নাগরিক ব্যস্ততার টিমারপুর চেনা। কিন্তু আবার সেই খন্ড চিত্র। এমনি করেই আমি চিনি বল্টিমোরের ইনার হার্বার বা মাউন্ট ভার্নন ডিস্ট্রিক্ট। কিন্তু সেই চেনা কোনোটাই পুরো নয়।
  • bozo | 129.7.203.134 | ০৪ এপ্রিল ২০০৬ ০২:৫৯564090
  • (২)
    টেক্সাসের এই শহর টাকেই বা কত টা চিনি? ছয় ছয় খানা ফ্রী ওয়ের কাটাকুটি তে জানি কোথায় খুঁজে পেতে হবে লোভনীয় চাইনীজ খানা, কোথায় বা বিশুদ্ধ ভিয়েতমানীজ। ঝড়ের মুখে শহর থেকেছি, বিকালের গালফ অফ মেক্সিকোর উন্মাদ হাওয়া দেখেছি, রোডিওর জৌলুষ দেখেছি। তাও এই শহরের অনেক কিছুই চিনি না, অনেক অজানা অংশ রয়ে গেছে।
    এই ভাবে পেড়িয়ে চলি শহরের পর শহর। কাউকে পুরোটা না জেনে, কোথাও আমার পুরোটা না রেখে। কোনো শহর দাবী করতে পারবে না যে 'এই শহর জানে আমার প্রথম সবকিছু।' আমি এগিয়ে চলি। পিছে জমতে থাকে স্মৃতির শ্যাওলা।
    ***********************
    বাবা ঘেনচু, লেখা কাটতে হচ্ছে, কিছুতেই পুরো টা একসাথে গেল না।-:(

  • m | 24.166.170.155 | ০৪ এপ্রিল ২০০৬ ০৯:৪৯564101
  • নীল আকাশের দিকে তাকালে কখনো কখনো মনে হয়,মেঘেদের সঙ্গে ভেসে যাই,পাহাড়,নদী,সমুদ্র ,জনপদ পেরিয়ে চলে যাই,বারান্দার এককোনে বোগেনভেলিয়ার ঝাড়,অগুন্তি গোলাপি ফুলে ভরে আছে,স্পষ্ট দেখি,আম গাছের ফাঁকে বাবুইএর বাসা,বাইরের বাগানে পড়ে থাকা একখানা চেয়ার,দেখি শীতের রোদে তাতে বাবা বসে আছে।এ শহরে আমার বাস ছিলো একদিন,আমার বাড়ি।চলতে ফিরতে ভেসে আসে পুরোনো কোনো চেনা গন্ধ,ফুলের,রান্নার, বইয়ের, দুটো বাড়ির মাঝখানের পাঁচিলে বসে আছে সাদা বেড়াল দিব্যি দেখি,টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ,বাজারের ঘিঞ্জি রাস্তা,মানুষের মুখ,কোনো এক বিশেষ বিকেল, দুপুরের রোদে পড়ে থাকা সরীসৃপের মত একটা রাস্তা,একলা, ঝিম ধরে থাকা পুকুরের নিথর কালো জল,গাছের ছায়ার ঝুপসি হয়ে আছে চারপাশ।এখানে আছি ভাবলে,বহু দূরে থেকেও ভারি ভালো লাগে,ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা এসে ছুঁয়ে দিয়ে যায়, শহর টি কে বুকের মধ্যে লালন করি,এ শহরের আর কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই।

    এখন একটা ছোট্ট শহরে থাকি,ছবির মত ,রাস্তা,উঁচু নীচু,অজস্র ফুলে ঢেকে থাকা বসন্তের দিন,হেমন্তের পাতাঝরা বিকেল,বরফের ভীড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একলা পাইন- এ শহর আমার নয়,তবু চেনা রাস্তা ধরে যেতে যেতে জানি এর পরে আসবে স্টোল পার্ক-বাঁহাতে বড়ো একটা লেক,ছুটোছুটি করে খেলছে বাচ্চা রা,একদিন ছেড়ে যাবো ভাবলে,মন কেমন করে,এখানে আমার কোনো শিকড় নেই, অথচ এ শহর ও শেকড় চারিয়ে দিচ্ছে মনের মধ্যে,অন্য কোথাও চলে গেলে ফিরে আসবে বিকেলের রোজানা স্কোয়্যার,স্ট্রোলার ঠেলে হাঁটছি আমি আর সু,মন কেমন করা হাওয়ার ফিরেআসছি বাড়ির পাশের ট্রেল থেকে, অ্যান নেমে আসছে, স্যুপের বাটি হাতে, পাইন কোন পাড়তে বড় বড় লাফ দিচ্ছে তিন্নি, এ সব রয়ে যাবে।শহর,তার গাছপালা,ইঁট-কাঠ -পাথর, মানুষ-আমি যখন যে শহরে যাবো,সেই শহর আর কখনো আমার সঙ্গ ছাড়বে না।
  • Samik | 221.134.238.20 | ০৪ এপ্রিল ২০০৬ ২১:৫৩564112
  • গুশ্‌করার গল্প

    গল্প তেমন কিছু নেই। জন্মের পর প্রথম স্মৃতি বলতে গুশ্‌করার সেই পিডব্লিউডির কোয়ার্টার। বিশা-আ-ল এলাকা জুড়ে কম্পাউন্ড। অফিসটা বোধ হয় অন্য কোথাও ছিল, স্কুটারে করে বাবা রোজ কোথাও যেত।

    কম্পাউন্ডের এক প্রান্তে আমাদের কোয়ার্টার, আর বাকি এলাকাটা জুড়ে শয়ে শয়ে কেবল, পিচের ড্রাম। আর রাস্তা প্লেন করার রোলার। আমার বেড়ে ওঠার অনেকখানি জুড়ে ঐ পিচের গন্ধ আর রোলারের তেলকালি। রোলারের লোহার চাকা বেয়ে ওপরে উঠে বসে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে মুখে ভোঁ ভোঁ আওয়াজ করা আর তেলকালি মাখা আমার খেলা ছিল অনেকদিন।

    কারেন্ট থাকত না প্রায়ই। মনে আছে টিমটিম করে একটা ঘরে টিউবলাইট জ্বলত, আর বাকি জায়গায় চল্লিশ ওয়াটের বাল্‌ব, নয়তো হ্যারিকেন বা মোমবাতি। লম্বা লম্বা ছায়া দেওয়ালে। উঠোনের এককোণে কয়লা ডাঁই করা থাকত, মা অবসর সময়ে ভাঙত কয়লা, গুল দিত উঠোনে, আর ঘুঁটে মাসি আসত ঘুঁটে বেচতে, মা জিগ্যেস করত, অ মাসি, ঘুঁটে ক'পণ?

    মাঝে মাঝে বাসনওয়ালি, বাসন ক'কাপড়? সেই ছোটবেলায় ইউনিট-পরিচিতি। ঘুঁটের ইউনিট পণ, বাসনের হল গে কাপড়। আমি খুব জড়ভরত টাইপের বাচ্চা ছিলাম, বসিয়ে দিলে বসে থাকতাম। আমাকে বাইরের চাতালে বসিয়ে মা ঘরের কাজ সারত, দিদি তার বন্ধুদের সাথে খেলে বেড়াত, আর দূরে দেখতাম পিচের ড্রামের আড়াল থেকে অন্য পিচের ড্রামের পেছনে পালিয়ে যাচ্ছে খটাশ।

    কম্পাউন্ডের বাইরের জগৎ সম্বন্ধে জাস্ট কোনও স্মৃতি নেই, কেবল স্কুটারে মায়ের কোলে চেপে মাঝে মাঝে যেতাম মিঠু পিসিমণি, পাপিয়া পিসিমণির বাড়ি। গুচ্ছ নেকি মাল ছিল দুটো, মিঠু পিসিমণিকে ব্যাপক দেখতে ছিল, ছবি আছে এখনও, আর তার মেয়ে টুকটুকি ছিল আমার সেই বয়েসের গার্লফ্রেন্ড। অর্কুটে টুকটুকি আর আমার ছবি আছে। দেখো।

    গুশ্‌করায় ছিলাম দেড় বছর। আমার বয়েস তখন দেড় বছর থেকে অড়াই বছর।

    এই গুশ্‌করায় অনেক দিন পরে পাকেচক্রে গিয়ে পড়তে হয়েছিল। গুশ্‌করা স্টেশনে।

    আমি তখন ইনফোসিসে, ২০০২-এর ডিসেম্বর। স্বর্ণালী দিল্লিতে মিনিস্ট্রি অফ পাওয়ারে চাকরি পেয়েছে, আমি ওকে জয়েন করিয়ে, হস্টেল ঠিক করে, ফিরছি পূর্বা এক্সপ্রেসে। সন্ধ্যের মধ্যে হাওড়া পৌঁছে যাবো, রাতে জগন্নাথ এক্সপ্রেসে ভূবনেশ্বর যাত্রা।

    পূর্বা যেহেতু ব্যান্ডেল দিয়ে যায় না, তাই বর্ধমানে নেমে আমি মেন লাইনের লোকাল ধরে ব্যান্ডেল হয়ে যাবো, এই রকমই ঠিক ছিল। বর্ধমানে পূর্বা পৌঁছনো মাত্র ঘোষণা, রামপুরহাট ফাস্ট প্যাসেঞ্জার এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে।

    তাড়াতাড়ি প্ল্যাটফর্ম চেঞ্জ করে ঠেলেঠুলে উঠে তো পড়লাম, ট্রেন চলার পরে লোকজনের কথাবার্তায় ঠাহর হল এটা হাওড়া থেকে আসছে। যাবে রামপুরহাট।

    আমার তো মাথায় হাত। কিছু করার নেই তখন। নামতে পেলাম গিয়ে সেই গুশ্‌করা স্টেশনে। একঘন্টা সুটকেস হাতে জনহীন প্ল্যাটফর্মে মশার কামড় খাবার পরে কিভাবে একটা স্লো প্যাসেঞ্জারে করে ব্যান্ডেল হয়ে হাওড়া পৌঁছলাম, আর জগন্নাথ ছাড়ার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে ট্রেনে উঠতে পারলাম, সে অন্য গল্প।

    এই টুকুই। পরের এপিসোডে বর্ধমান।
  • bz | 129.7.152.174 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ০০:২৭563770
  • (১)
    শহরের আলোচনায় আসি। আমি এখন যে শহরে থাকি (গত চার বছর ধরেই আছি), সেটা আমার অপছন্দের শহরের তালিকায় অন্যতম উপরে। অথচ এই বিশাল শহরের অনেকটাই আমি চিনি। সব কটা ফ্রী ওয়ের কাটাকুটি খেলা আমার কাছে পরিষ্কার। এই শহরে আমার কাছের কিছু বন্ধু আছে, কিছু খুঁজে পাওয়া স্পট আছে, কিছু অসাধারন মুহুর্ত পেরিয়ে আসা আছে।
  • bz | 129.7.152.174 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ০০:২৮563781
  • (২)
    তবু প্রথম সুজোগেই হয়ত এই শহর আমি ছেড়ে দেব। এই চিন্তা আমার মধ্যে বদ্ধমূল ছিল, গত ২-৩ বছর ধরে। এবছরের শুরু তে খুব ঘুরছিলাম। প্রথম চার মাসে, একটানা দুই সপ্তাহের বেশী এই শহরে থাকতে পারি নি। শেষ বার যখন ফিরে এলাম, গাড়ী টা US 59 এ উঠলো, কেমন যেন মনে হল বাড়ী ফিরে এলাম। হয়তো আরে ১-২ বছরের মধ্যে এই শহর-ও ছাড়তে হবে, কিন্তু বেশ বুঝতে পারছি এই শহর-ও আমার অনেক টা নিয়ে নিচ্ছে। দিন দিন যেন নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি।
    ****************************
    দেখেছো মামী তোমার মত আমিও ভাবি।-:)

  • dam | 61.246.75.117 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ০৯:৩১563792
  • আমার বছর পাঁচেক বয়স পর্যন্ত ছিলাম কটকে। অধিকাংশ সময় বাবা থাকতেন না বাড়ী। কোথায় কোথায় সব ট্যুর করে বেড়াতেন। ট্যুর শব্দটাকে ভারী অপছন্দ করতাম। বাড়ীর খুব কাছে ছিল কাটজুড়ি নদী। বিকেল বেলা পরমেশ দাদা খেলতে নিয়ে যেত সেখানে। বেশ খানিক দূরে ছিল মহানদী। বাড়ীতে কেউ এলে সেখানে একটা পিকনিক মত হত। কাটজুড়ি নদীতে চরা-ই বেশী। আমার কিরম ধারণা হয়ে গেছিল নদীর থেকে পুকুরে বেশী জল থাকে। কেউ এসে চলে যেত সময় কটক স্টেশানে যাওয়া হত আর সব্বাই চলেটলে গেলে, ট্রেন ছেড়ে দেবার পর ফিশফ্রাই খেয়ে ফেরা হত। মা'র কাছে শুনি ওখানে ক্যালকাটা সুইটসের মিষ্টি নাকি খুব ভাল ছিল, আমার মনে নেই।

    বাড়ীতে কেউ এলেই বেড়াতে যাওয়া হত পুরী। ট্রেনে খুব অল্প সময় লাগত। বোধহয় ২-৩ ঘন্টা। আমরা সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরতাম, লাল টুকটুকে লাঠি আর খাজাগজা কিনে। অনেক ঝিনুক কুড়িয়ে।

    কটকের রাস্তাঘাট কেমন ছিল? কিচ্ছু মনে নেই। খালি মনে আছে কোথায়ও যেতে গেলে সাইকেল রিকশা করে যেতাম----- মা আর বাবা আর আমি বাবার দুই পায়ের ফাঁকে দাঁড়িয়ে।

    আমরা থাকতাম দোতলায়। নীচীর তলায় উমাপিসিরা। উমাপিসির দাদা ভীষণ রাগী। সবসময় চোখ লাল হয়ে থাকত। বাড়ীর পিছনে নুন্নি, সুন্নি দের ছোট ছোট বাড়ী। ওদের ওখানে খেলতে গিয়ে সন্ধ্যের আগে বাড়ী না ফিরলে মা কোনের ঘরে বন্ধ করে রাখত। ঘর অন্ধকার করে দিত। একবার রেগে গিয়ে ঘর থেকে জানালা দিয়ে মা'র লক্ষ্মী, গোপাল, কালীঠাকুরের ছবি, তামার ঘটি, বাবার বইপত্র এক এক করে ফেলে দিয়েছিলাম আর নুন্নি কে ডেকে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। ওরা ভয়ের চোটে ছোঁয় নি পর্যন্ত, মা'কে এসে বলে গিয়েছিল। আর কোনদিন ওখানে বন্ধ থাকতে হয় নি, বরঙ সবাই মিলে কলকাতা চলে আসা হয়েছিল।
  • r | 202.144.91.204 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৪:২৮563803
  • কলকাতা শহরের প্রথম স্মৃতি যে বাসার তা ছিল সোনাগাছির ঠিক পিছনে মানিকতলা লেনে। এক কামরার বাসাবাড়ির বাড়িওয়ালা উত্তর কলকাতার স্টিরিওটাইপ সমস্ত খচরামির আকর ছিলেন। বড়ো হয়ে শুনেছি, মা স্নান করতে গেলে বাড়ীওয়ালার স্ত্রী দরজার ফুটো দিয়ে খেয়াল রাখতেন জল কতটা খরচ হচ্ছে। বেলফুলের মালা, সন্ধ্যায় জেগে ওঠা সোনাগাছি এবং তার বেশ্যা দঙ্গলের কোনো স্মৃতি নেই। শুধু মনে আছে আমাদের বাসার উলটোদিকের রকে প্রায়ই অজ্ঞান মাতাল পড়ে থাকত। বাবার হাত ধরে প্রথম ইস্কুলে যাওয়া বাড়ির পাশেই। কলকাতার প্রাচীনতম স্কুল আদি মহাকালী পাঠশালা। স্কুলে যাওয়ার পথে পড়ত ডোমতলা। সেইখানে বাঁশ আর বেতশিল্পের জহুরীরা বাস করেন। মাঝে মাঝে বিশালাকার ড্রাগন, গন্ডার রাস্তায় পড়ে থাকত। ভয়ে সেই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইতাম না। ভয় ছিল সর্বত্র। তখনও মিনার্ভায় উৎপল দত্ত অভিনয় করেন। মা বাবা "লেনিন কোথায়" দেখাতে নিয়ে গেলেন। ভয়ে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে পড়েছিলা। তাতেও কি আর গুলিগোলার শব্দ কানে ঢোকা বন্ধ করা যায়! ভয় কাটাবার জন্য বন্ধুও ছিল না। একলা ঘরে নিজের খেলনা নিয়েই অষ্টপ্রহর কাটত। মানিকতলা লেনে ফুটবল ক্রিকেটের মাঠ কোথায়? তবে পাশে ছিল রবীন্দ্র কানন। উলটোদিকে নতুন বাজার, পাশে ছাতুবাবুদের বাড়ি। একটু এগোলেই জোড়াসাঁকো। তাই আবছা মনে পড়ে রবীন্দ্র কাননে সাধন গুহ-পলি গুহর শ্যামা, পঁচিশে বৈশাখ সকালে জোড়াসাঁকো। স্পষ্ট মনে পড়ে নতুন বাজারে ভুর করে রাখা সোনারং কাঁসার বাসনপত্র, ছাতুবাবুর চড়কের মেলা থেকে কেনা ঘাড়ে স্প্রিং লাগানো মাটির সাপ। তখন প্রতিনিয়ত নকুড়ের কড়াপাক আর কপিলাশ্রমের সরবৎ। কিন্তু মাহাত্ম্য বুঝতাম কই? মামাবড়ি যেতাম এসপ্ল্যানেড থেকে টংটঙে ট্রামে করে মোমিনপুর। মোমিনপুরের রাস্তায় গরমের সন্ধ্যায় তখনো বেলফুলের মালা হেঁকে যেত। পিছনে ছিল একটা বিরাট নিমগাছ আর পাঁচুবাবুদের তিনতলা বাড়ি। সত্তরের দশকে তখনও আমার মামারা গৃহ এবং চাকরিচ্যুত। একটা বড়ো হিন্ডোলিয়ামের থালায় সব ভাইবোনের জন্য ভাত মেখে একই থালা বড়োমামী কিংবা মেজোমামী খাইয়ে দিত। এলাকাছাড়া যুবকদের আড্ডা বসত এসপ্ল্যানেডের অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি কর্মচারীদের জন্য বানিয়ে দেওয়া এক সিগারেট-চানাচুর-কোল্ড ড্রিংক্সের গুমটিতে। ছোটোমামার সাথে সেইখানে যাওয়ার আকর্ষণ ছিল কোকো কোলা আর ফ্যান্টা। এর কিছুদিন বাদেই এদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে। তখনও রেস কোর্সের মাঠের পাশ দিয়ে ট্রাম যাওয়ার সময় থ হয়ে যেতাম। তখনও স্মৃতির নির্মম অত্যাচার শুরু হয় নি।
  • vikram | 134.226.1.136 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৪:৫৭563814
  • সুপার্ব।

    বিক্রম
  • b | 194.202.143.5 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৫:০৭563825
  • প্রচন্ড ভালো লাগছে এই টই টা। সবাই গুছিয়ে লেখ দেখি। ওহ বহুত ভালো লাগছে।
  • Arijit | 128.240.229.6 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৫:৩২563836
  • কলকাতা শহরতলী - মাঝে কয়েক বছরের জন্যে শিবপুর, দিল্লী, হেলসিঙ্কি, কলোরাডো স্প্রিঙস, সিলভার স্প্রিঙ-গেথার্সবার্গ হয়ে নিউক্যাসল আপন টাইন - এই আমার পথ এখনো। পুরো বৃত্ত তৈরী হবে যেদিন আবার সেই কলকাতা শহরতলীতে ফিরে যাবো।

    যখন ছোট ছিলাম, তখন সেটা কলকাতা ছিলো না, পূর্ব পুটিয়ারী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা। আবছা আবছা মনে পড়ে আশেপাশে নিজেদের বাড়িটা নিয়ে সাকুল্যে তিনটে বাড়ি - বাপিদের আর বুয়াইদের (এই দুজন আমার সেই বয়সের বন্ধু) - আর ধু ধু মাঠ, বাড়ি সামনে বাঁশবাগান, সেখানে সন্ধ্যে হলেই শেয়াল ডাকতো। সবচেয়ে কাছের বাসরাস্তা হেঁটে মিনিট কুড়ি। লোডশেডিং হলে একতলা বাড়িতে লন্ঠনের আলোয় বাবা, মা, ঠাকুমা, দিদি আর আমি বসে থাকতুম। প্রচুর পুকুর ছিলো, লক্ষ্মীপিসীরা একটু দূরে থাকতো, আমি দিনের বেলাটা প্রায়সই ওখানে থাকতুম, কারণ দাদু তখন পুরোপুরি বিছানায়, ঠাকুমা অসুস্থ, মা ঘর সামলে, দাদুকে সামলে আর আমাকে দেখে উঠতে পারতো না - লক্ষ্মীপিসী তাই আমাকে নিয়ে যেত। এই লক্ষ্মীপিসীই আমাকে সাঁতার শিখিয়েছিলো - তখন দু বছর বয়স মোটে...আর যেদিন দাদু মারা গেলো, সেদিন আমাকে কোলে নিয়ে সাহাপাড়ার দিকে ঘুরতে চলে গিয়েছিলো, আমি বাড়ি ফিরে কেঁদেছিলাম - "দাদুকে কোথায় নিয়ে গেলো?"

    সত্তরের দশকের অনেক গল্প শুনি - আবছা মনে আছে বাঁশবাগানের ওপারে দুম দুম আওয়াজ, আর একটু পরেই রক্ত মেখে এক জনের টলতে টলতে বাঁশবাগান থেকে বেরিয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়া। একদিন পুলিশ এসেছিলো বাড়িতে, সার্চ করতে - জবরদস্তি লফট থেকে প্যাকিং বাক্স নামিয়ে খুলে ফেলেছিলো, আর চড়াই পাখির বাসাগুলো ভেঙে সারা ঘরে ছড়িয়ে গেছিলো...বাচ্চা চড়াইগুলোর চিঁচিঁ, আর বড়গুলোর সারা ঘরে উড়ে বেড়ানো...পুলিশ অবিশ্যি ক্ষমা-টমা চেয়ে সেই ঘর পরিষ্কার করে দিয়ে যায়...

    এখানেই চব্বিশ বছর - কুড়ি মিনিট হেঁটে বাসরাস্তায় পৌঁছে বাস ধরে ইস্কুলে যাওয়া, পরে সাইকেলে যাদবপুর...বাড়ি একতলা থেকে দোতলা হয়, আশেপাশের সব মাঠ নতুন নতুন বাড়িতে ভর্তি হয়ে যায়, নিশ্চুপ নি:ঝুম অরবিন্দ পার্ক অনেকটা নেতাজীনগরের চেহারা নিয়ে নেয়, পুকুরগুলো আর নেই, বাঁশবাগানও নেই, নতুন নতুন লোক - এখন সকলকে চিনিও না - সেই লক্ষ্মীপিসী, বাপি, বুয়াইদের সঙ্গে যোগাযোগও আর নেই - ব্যস্ত হাউজিং এস্টেটের মতন অবস্থা যেখানে পাশের বাড়ির লোককেও অনেকে চেনে না - দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে কলকাতা হয়ে যায়, পিন কোড ৭০০০৯৩।

    বাসরাস্তাটা শুধু সেখানেই রয়ে গেছে।
  • r | 202.144.91.204 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৫:৪১563847
  • তখনও দক্ষিণ কলকাতা নাগালে আসে নি। দক্ষিণ বলতে এসপ্ল্যানেড থেকে ট্রামে ময়দান-রেড রোড ধরে আলিপুর-খিদিরপুর-মোমিনপুর। মাঝে মাঝে আলিপুর চিড়িয়াখানা, ন্যাশনাল লাইব্রেরির সবুজ মাঠ। ভবানীপুর-যাদবপুর-টালিগঞ্জ-বেহালা চিনতে আরও এক দশক যাবে। মোমিনপুরের বাড়ির তলার চৌবাচ্চায় নলে গঙ্গার জল আসত। একদম নোনতা জল। উপরের ঘরে মায়ের নির্দন্ত কেশহীনা বাল্যবিধবা বুড়ি পিসি থাকতেন। আমরা ডাকতাম বুড়োআম্মা। বুড়োআম্মার ঘরে সচিত্র গীতগোবিন্দ ছিল। মোমিনপুরের বাড়িতে আমার দুপুরের সঙ্গী। দশাবতারের দশটা ছবি প্রতি দুপুরে দেখেও ক্লান্ত হতাম না। আরও একটু বড়ো হলে বালিগঞ্জ চিনেছিলাম। আপাত শান্তিকল্যাণ এলে বড়োমামারা প্রিয়া সিনেমার পাশে মোতিলাল নেহরু রোডে সবুজ লনওয়ালা বাড়িতে উঠে গেল। ছোটোমামার বিয়ের সময় প্রিয়া সিনেমাতে সত্যজিৎ রায়ের রেট্রোস্পেকটিভ চলছে। নাইট শোতে সবাই মিলে দেখতে গেলাম "অপুর সংসার"। বাড়ির পাশের দরজা প্রিয়া সিনেমার। অতএব বাতে কাতর মোটামত দিদাও লুঙ্গিপরা ছোটোমামার হাত ধরে ধরে সিনেমা হলে। সেইবারের দেখার একমাত্র স্মৃতি পাইকপাড়ার রেললাইনে শুয়োরের কাটা পড়া। বৌভাত হয়েছিল অহীন্দ্র মঞ্চের পাশে চেতলা বাজারের মধ্যে একটা বাড়িতে। খেতে বসে দেখি লোকে খাওয়া ছেড়ে উঠে যাচ্ছে। নীচের তলায় কোলাপসিব্‌ল গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতের নাগরিক চেতলার বিশাল গুন্ডাদল হামলা করেছে তাদেরও পুরো ভোজ খাওয়াতে হবে বলে। কেন জানি না স্পষ্ট মনে আছে ঠিক সন্দেশ খেতে শুরু করার আগে আমিও ভয়ে ভয়ে উঠে পড়ি। তবে পরের দিন প্রচুর বাসি শাম্মী কাবাব খেয়েছিলাম। মোতিলাল নেহরু রোডের সব থেকে নামকরা বাসিন্দা ছিলেন মৃণাল সেন। কিন্তু দেখি নি। মামাতো দাদার হাত ধরে পাশের গলিতে রেশন তুলতে যাওয়ার কথা মনে পড়ে। এখন কি আমাদের পরিবারেরা রেশন তুলতে যায়?
  • b | 194.202.143.5 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৬:১৬563858
  • এই ছেলেটার হাতে যাদু আছে। লিখে যাও র।
  • r | 202.144.91.204 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৬:২০563869
  • উত্তর কলকাতার সব বাড়িতে তখনও ডি সি পাখা। বলের মতো গোল পাখা বিশাল ডান্ডার থেকে আহিস্তা আহিস্তা ঘোরে। উপরে তাকালে কড়িকাঠ দেখা যায়। উত্তর কলকাতায় থাকার সুবাদে হিন্দু-হেয়ারের নাম জানতাম। বাড়িওয়ালার ছেলে দুদুন হিন্দু স্কুলে পড়ত আর তার ঠাকুমা পাঁপড়ের তরকারি বানাতেন। তখনও আমাদের বাড়িতে ঠাকুরের বাসা নেই। আমার ঠাকুমা বিডন স্ট্রিটের ফুটপাথ থেকে কিনে দিলেন কাঁচে বাঁধানো একটি লক্ষ্মী এবং একটি সরস্বতীর ছবি। তখন থেকে সেই দুজনেই রয়েছেন। সংখ্যা বাড়েও নি, কমেও নি। আর একটা লক্ষ্মীর পাঁচালি ছিল যা আমার পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে পড়ত। বহুদিন "মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস" পড়ি নি। দুর্গাপূজা দেখতে যেতাম সিমলা ব্যয়াম সমিতিতে। পরে কালীঘাটের ঠাকুর দেখতে গিয়ে যখন দেখলাম পিছনের স্ক্রীনে সাদা সাদা মেঘ ভেসে যাচ্ছে, বিস্ময়ের হতবাক। বিডন স্ট্রিট অঞ্চলে বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন ড: নারায়ণ রায়। তাঁর ডিসপেন্সারিতে ওষুধ তৈরি করে দেওয়া হত। শিশিতে লাল লাল ওষুধ, গায়ে সাদা কাগজে ওষুধের মাপ কেটে সেঁটে দেওয়া। জেঠু তখন "চাকভাঙা মধু" প্রযোজনা করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে। কিন্তু আমাকে দেখতে নিয়ে যাওয়া হয় নি কারণ ভয়ে মুখ গুঁজে কাঁদব। শেষে যুব উৎসবে রঞ্জি স্টেডিয়ামে সারা রাতের অনুষ্ঠানে "চাকভাঙা মধু" হল। কিন্তু সেখানেও সেই একই ব্যাপার। আমার স্মৃতিতে রইল পরোটা, আমের আচার আর ভোরের ফাঁকা বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ড। এইখানে থাকার সময়ই স্মৃতিতে থাকা প্রথম উপহার পাওয়া বই- ছোটোদের জন্য কমিউনিস্ট ইশ্‌তেহার। এখন আর কেউ এইরকম উপহার পায় না মনে হয়। কিন্তু তখন খুব স্বাভাবিক ছিল। প্রথম পাতায় স্টেনসিলে আঁকা মুঠো করা হাত, হাতের থেকে ছেঁড়া শিকল ঝুলছে। নীচে লেখা- সর্বহারাদের শৃঙ্খল ছাড়া কিছুই হারাবার নেই। এটাও তখনকার কলকাতা। যখন ব্রিগেডে মিটিং হওয়ার আগে পার্টির ছেলেরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে হাতেগড়া রুটি সংগ্রহ করত। মাও বানাতেন। এখন বোধ হয় পুরী-সবজি দেয়, না?
  • Arijit | 128.240.229.6 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৬:২৮563881
  • কি জানি কি দেয়, অনেককাল যাই নি। শেষবার যখন গেছিলুম তখন ব্যাগের মধ্যে প্লাস্টিকের প্যাকেটে পাঁউরুটি-জ্যাম ছিলো - কয়েকজনের ব্যাগে কলা বা ডিম - সেই ভাগ করে খাওয়া, বড়জোর ঝালমুড়ি, আর ভাঁড়ে চা।

    কম্যুনিস্ট ইশতেহার উপহার দেবার দিন পেরিয়ে গেছে, এখন খুব কম করে দিতে পারো হ্যারি পটার। পেনসিল ও সর্বকর্মা বা ইস্পাতও এখন কেউ দেয় না।
  • vikram | 134.226.1.136 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৭:০১563892
  • শালা রঙ্গন, লিখে জারে লিখে জা।

    বিক্রম

  • tan | 131.95.121.251 | ০৫ এপ্রিল ২০০৬ ১৯:৪৯563903
  • রঙ্গন কি বোনের বিয়া দিলা নাকি ভিকির লগে?:-)))))
    তোমারে হালা কয় দেখি হ্যায়!!!!

  • dri | 66.81.122.221 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১১:১৮563914
  • ওহ্‌! এই থ্রেডটা কিন্তু জব্বর হচ্ছে। একদিকে লেখার জন্য হাত নিশপিশ করছে। কিন্তু এই টপিকের প্রতি সুবিচার করতে যত বড় লেখা লিখতে হবে তত বড় লিখতে আলসেমি ও লাগছে। আপনারা, যাদের স্ট্যামিনা বেশি তাঁরা কিন্তু চালিয়ে যান।
  • r | 202.144.91.204 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১১:৩৬563925
  • এর পর থেকেই আস্তে আস্তে উত্তরের শহরতলির দিকে সরতে থাকা। শিয়ালদা থেকে মেন লাইনে দম্‌দম্‌ স্টেশন পেরোলে বাঁদিকে থ্রি বি বাসস্ট্যান্ড আর ডানদিকে দত্তনগর মানসিক হাসপাতাল। চিরকাল ট্রেনে যাওয়ার সময় ট্রেনটা ঠিক ওখানে হল্ট করত আর আমি দেখার চেষ্টা করতাম হাসপাতালের সামনের সুন্দর সাদা বাড়িটায় কোনো পাগল দেখা যায় কি না। এই এলাকার লৌকিক নাম আটাপাড়া। আটাপাড়ার ধুলোমাখা রাস্তা রেললাইন বরাবর উত্তরে চলে গিয়েছে। এখন যেখানে মেট্রো রেলের শেড এবং আরও সব রেলের ঘরবাড়ি, সেই জায়গার নাম বেদিয়াপাড়া। তখন বেদিয়াপাড়া কলকাতার নাগালে থাকা পুরোদস্তুর গ্রাম। প্রথম বাসের দেখা পাওয়া যেত প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে থ্রি বি বাসস্ট্যান্ডে। গোটা দশ মিনিট হাঁটলে রিক্সা ধরা যায়। আমাদের খোলামেলা বারান্দাশুদ্ধু একতলা বাড়িটার সামনে ছিল ধু ধু ধানক্ষেত, পাশে মাঠ আর মাঠ যা সোজা গিয়ে রেললাইনে মিশে গিয়েছে, আর পিছনে একটা গাছগাছালিতে ঘেরা ডোবা। সেই সময় আমার প্রিয় বই "পথের পাঁচালী"। মিত্র ঘোষের লালচে মলাটে বাঁধানো বিভূতি রচনাবলী। সারাদিন বাড়িতে বসে বসে দেখি মাঠের অন্যপারে সাদা সবুজ ট্রেনগুলো হু হু করে মাঠ পেরোচ্ছে। সকালবেলা বারান্দার ধারে বসে যখন মুখ ধুতাম, মাটিতে ছোট্টো ছোট্টো হলুদ গায়ে কালো বুটি হেলেসাপ ঘুরত। মাঠ ঘাটে ঘুরতে গিয়ে মোটাসোটা লম্বা ভয়ধরানো দাঁড়াশ সাপও দেখতাম প্রচুর। তবে সবই নির্বিষ। বারোটা হাঁস ছিল। কালি, ধলি ইত্যাদি ইত্যাদি। পাশের ঘরে গোপালবাবুরা থাকতেন। তাদেরও বারোটা হাঁস। তবে এদের মধ্যে মিস বেদিয়াপাড়া ছিল গোপালবাবুদের পেঁচিসুন্দরী। একদিন সন্ধ্যাবেলা সেই পেঁচিসুন্দরী বুনো শেয়ালের দ্বারা আক্রান্ত হল। অনেক যত্নঅত্তির পরেও যখন বাঁচানো গেল না তাকে কেটে ফেলে ভোজ হল। পেঁচিসুন্দরীকে দেখতে যত ভালো লাগত, খেতেও ততটাই ভালো লেগেছিল। সন্ধে হলেই মাকে জলকাদা ভেঙে চৈ চৈ ডেকে ডেকে হাঁসগুলোকে তাদের ঘরে নিয়ে আসতে হত। কোথায় বাজার দোকান ছিল মনেই নেই। স্মৃতিতে শুধু রয়ে গেছে মাঠ, ধানক্ষেত আর পুকুর। পিছনের পুকুরের কিনারার জলে কিল্‌বিল করত খুদে খুদে ব্যাঙাচি। বালতি ভরে নিয়ে আসা সেই খুদে ব্যাঙাচিওয়ালা জলও সংসারের বিভিন্ন কাজে লাগত। একটা খেলা ছিল একটা একক ব্যাঙাচিকে হাতে ধরা। কিছুতেই পারতাম না। তবে খেলার জিনিষ ছিল প্রচুর। ধুলো কাদা মাটি ঢ্যলা কাঠ কাঠি দিয়ে ঘর ঘর খেলা। এমন কি মিছি মিছি রান্নার সময় পুকুর থেকে সত্যি সত্যি খুদে খুদে মাছও ধরে ফেলা যেত। সমস্যা ছিল ওখান থেকে পড়াশুনো চালানো।
  • dd | 59.93.79.6 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৫:৫২563936
  • সন ১৯৬১। মালদা তখন নামেই শহর। কুল্লে একটা বড় রাস্তা। আমের রাজধানী। কিন্তু শহরের মধ্যে বিশাল বৃন্দাবনী আম গাছের ফল কেউ খেতো না, বেজায় টক। রাস্তায় রাস্তায় বাড়ীতে বাড়ীতে আম গাছ। বেশীর ভাগই ফজলী। বিরাট সাইজ, খেতে অখাদ্য।

    স্কুলে সবাই হেঁটেই যায়। সাইকেলও এক বিলাসিতা। স্কুলে ঘড়ি কেউ পরতো না। গোটা চারেক ট্যাক্সী ছিলো শহরে। হর্নের আওয়াজ শুনলেই পাড়ার বাচ্চারা বলতে পারতো এটা কোন গাড়ীটা।
    বড় বড় পাথরের গুলি দিয়ে খেলতাম। আর ছিলো দেশলাইএর খাপ দিয়ে একধরনের খেলা। কাবাডি চলতো। কোনো কারনে হকি খুব জনপ্রিয় ছিলো। গ্রীষ্মকালে মহনন্দা নদীতে জল থাকতো সামান্যই।সেখানেই হুটোপুটি ।

    কলকাতা থেকে যেতে হলে ট্রেনে নামতে হতো গংগার ধারে। প্রায় দুই মাইল বালুর চরের উপর হেঁটে ইস্টীমারে। জলযাত্রা হতো প্রায় ঘন্টা দুয়েকের। তারপর আবার ট্রেন। শুনছি ফরাক্কার ব্রীজ তৈরী হলে নাকি কলকাতা থেকে সাত আট ঘন্টায় চলে আসা যাবে মালদায়। দুর। ওসব বিশ্বাস করতাম না।

    পু: রঙ্গন ছেলেটা এম্নি পাজী যে ওর লেখার পর আর কিছু লিখতে ইচ্ছা করে না।
  • dd | 59.93.79.6 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৬:৪৫563947
  • ৬২'তে কুচবিহারে। সাগর দিঘীর চারধারে একবার হাঁটলেই এক মাইলের উপর হাঁটা হয়ে যায়। তার এক কোনে ববার কোয়ার্টার। বাগানে ঝোপ ঝাড় জঙ্গল।প্রায়ই শুনতাম সাপের মুখে পরে পাখী বিড়াল বেজীর ভয়ার্ত চিৎকার। জোঁক আর সাপ সারাক্ষনের সংগী। বৃষ্টি শুরু হলে চলতো একটানা পনেরো ষোলো দিন। কিন্তু জল জমতো না কোথাও।

    শহরের পাশেই তোর্ষা নদী ফুলে ফেঁপে হাজারটা অজগরের মতন পাকসাট খেতে খেতে ছুটতো পাগোলপারা। তার রাগের গর্জন শোনা যেতো মাইল খানেক দুর থেকেই। ভরা নদীর দিকে তাকালেও মাথা ঘুড়ে যেতো। আমারা নি:সংশয়ে বলতাম "খুব কারেন্ট মারছে"। সারা বরষা দেখতাম নদীর বুকে ভেসে যাছে খড়ের চাল, বাড়ীর ভাংগা অংশ। গরু আর কুকুরের গলিত শব। কখনো মানুষও।

    সাগর দিঘীর পাশের নালায় টলটলে জলে দেখতাম সাপ গুঁড়ি মেরে আছে। ক্রমাগতো খপ খপ করে খেয়ে যাচ্ছে ছোটো মাছেদের। মহিষচোখ নামে একধরনের বড় জোঁক থাকতো - প্রায় ছয় ইঞ্চি লম্বা। চিনে জোঁক বড় ভয় পেতাম। হামেশাই হাতে পায়ে লেগে থাকতো - প্রায়ই টের পেতাম একটা সিরসিরে ব্যাথা।

    আর ভুত ছিলো প্রচুর। কিন্তু সেকথা তো এখেনে বলাচলবে না।
  • vikram | 134.226.1.136 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৬:৪৮563958
  • ভূত চাই ভূত চাই ভূতের গল্প শুনবো ভুতের গল্প শুনবো।

    বিক্রম

  • dd | 59.93.79.6 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৭:০৪563969
  • ভুতের গপ্পো শুনবে তো ভুতের পাতায় যাও না বাছা, এ পাড়ায় শুদু নস্টালজিয়া।

    তখনো মাঝে মাঝে বাঘ আসতো কুচবিহারে। রাত্রি বেলা ফেউএর ভয়ার্ত দিশাহারা চিৎকারে টের পেতাম । বর্ষা কালের ভরা নদীতে আসতো নদীর শুশুকেরা। কত মাইল উজান ঠেলে আসতো। কুমীরের গল্পও শুনেছি - কিন্তু তখন সেটা অনেক বিরল হয়ে এসেছে।

    বাঘের মতন ডোরাকাটা রাস্তার কুকুর আর কলকাতায় দেখা যায় না। উত্তরবংগ থেকে বর্দ্ধমান পর্য্যন্ত সেই বঘ্র মতন কুকুর দেখে এসেছি। পিওর ব্রেড নেড়ী কুত্তা।
  • vikram | 134.226.1.136 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৭:০৭563980
  • ফেউ লোকটা একজাক্টলি কি?

    বিক্রম

  • dd | 59.93.79.6 | ০৬ এপ্রিল ২০০৬ ১৭:৩৭563992
  • ফেউ চেনো না আর বিলেতে পড়াশুনা কচ্চো ? ঘোড়ার ডিম শেখায় তোমার ইশ্‌কুলে।

    ফেউ হছে শ্যাল। বাঘের গন্ধ পেলে ভয় পেয়ে শেয়াল একধরনের বিকৃত গলায় "ফেউ ফেউ" করে চেঁচাতে থাকে। জনশ্রুতি এতই ভয় পায় যে শেয়াল পালাতে চেষ্টা করে না, আতংকে এক যায়গায় স্থানুবৎ থাকে । সেই বিভৎস আর্তনাদের মতন চিৎকারে পাড়া গঁআর লোকেরা সজাগ হতো। কুকুরে কিন্তু আগ বাড়িয়ে চেঁচিয়ে সাবধান করতে পারতো না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন