এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শহর থেকে শহরে

    bozo
    অন্যান্য | ০১ এপ্রিল ২০০৬ | ১৭১৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • saa | 82.43.105.230 | ২৫ মে ২০০৭ ২১:৩৭564114
  • কেজিপির রেস্তোরাঁ গুলো? ভেজিস তারপরে যেন আরো কতো কি? আর নেতাজী তে সিনেমা দেখা একমেবাদ্বিতীয়ম এন্টারটেনমেন্ট। টেক মার্কেটের আগুনদর বস্তু সকল আর আগুনবালা এস এনাইটস!
  • ranjan roy | 122.168.76.28 | ৩১ মে ২০০৭ ২৩:৩৫564115
  • কোলকাতার দক্ষিণে গড়ে ওঠা এক উপনগরী--নাকতলার গল্পো।
    --------------------------------------------------------------
    (১)
    মাঠ আর মাঠ! মাঠের পাশে গজিয়ে ওঠা গোটাকয় বাড়ি-যেন পাঁচমাথা এক করে গুজগুজ-ফুসফুস করছে। বাড়িগুলোয় দরমার বেড়া, টিনের চাল বা টালিতে ছাওয়া ছাদ।
    আর আছে পুকুর,-প্রত্যেক পাড়াতে একটি করে। কোনকোনটা একেবারে পানাডোবা-অন্তত: গরমের সময়। তবে কয়েকটি বেশ গভীর কালো দীঘি।
    এই হল নাকতলা; ষাটের দশকে কোলকাতার বাড়ের সময় যাদবপুর-টালিগঞ্জের মাঝের ফাঁকটায় গজিয়ে ওঠা এক উপনিবেশ।
    অধিকাংশ বাড়িই জবরদখল জমির ওপর গড়ে ওঠা কলোনি। দেশভাগের সময় আগুনের আঁচে ঝলসে যাওয়া, সীমান্ত পেরিয়ে বোঁচকাবুঁচকি নিয়ে কোন রকমে পালিয়ে আসা মানুষের বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা।
    ছাই আর পোড়াকাঠ সরিয়ে আবার স্বপ্নের চারাগাছ পোঁতা।
    বেশির ভাগ বাড়ির চেহারাতেই ছাপটা স্পষ্ট,-- নুয়ে পড়েও আবার মাথাতোলার চেষ্টায় ঘাড়ের পেশি ও শিরায় টান ধরা ভাব।
    বাড়ির চালে লাউকুমড়োর লতা, ঝিঙ্গেফুল। উঠোনে ছাগল বাঁধা।
    বয়স্করা পুরোনো দিনের খন্ডহর, কথায় কথায় রাজাউজির মারা আর পূববাংলায় ছেড়েআসা জমিদারির ফিরিস্তি দেওয়া।
    কেউ কেউ ব্যতিক্রমী, গাম্ভীর্যে অটল পুরোনো রাজপ্রাসাদ।
    ছেলেছোকরারা বাড়ির দরমার গুলোর মতন-- হাফপ্যান্ট বা হাতেকাচা ফুলপ্যান্টে অপটু হাতে করা রিফু। শরীরে বাড় আছে কিন্তু চেহারায় কান্তিহীন চোয়াড়েপনা। বেঁচে আছে বাড়ির ওএছনের বাঁশঝাড়ের মতন- একেবাড়ে যমের অরুচি।
    আর মেয়েরা?-- উঠোনে মাচায় তোলা কুমড়োর ডগা বা পুঁইয়ের ডাঁটার মতন বাড়ন্ত। মাচার তলায় আগাছা আর শ্যাওলা। তবু কখন যেন মাচার ওপর উঁকি মারছে আধ ফোঁটা হলুদ্‌ফুল।
    আর আছেন বাড়ির মহিলারা। বাড়ির কোণায় শক্তশেকড় চারিয়ে ব্দাঁড়িয়ে থাকা সর্বংসহা নিমগাছ। কেউ বা টগরফুলের দোমড়ানো বেঁটেখাটো
    পোড়খাওয়া শক্ত ডাল।
    ( তিনভাগে হয়ে যাবে।)
  • Bratin Das | 199.67.138.42 | ০১ জুন ২০০৭ ০০:৪৮564116
  • bozo লেখা বরাবরের মতো ই দুরন্ত ।

    Raatsss আপ নার লেখ খুব ভালো লাগল । আপ নি ISI খেকে কবে পাস করেছেন? আমি ও ISI থেকে ।

    `' খুব ভালো লেখা ।
  • dd | 202.122.20.242 | ০১ জুন ২০০৭ ২২:১১564117
  • আরে রঞ্জন

    আপনি ৬৭'র হা: সে: আর তাপ্পর মৌলানার ইকনোমিক্স ? আমি তো ৬৯'এর হা: সে: আর একটু খানি সেইন্ট জেভিয়ার্সে নাক ঘষে তাপ্পর ঐ মৌলানতেই ইকো । সুদীপ বলে কাউকে মনে পরে ? ক্যাংঠা,কেলটে,বাঁটলু,এক নম্বর বাত্তেল্লাবাজ ?

    আর নাকতলায় আপনের ছেলেবেলা আর আপনি ফুটবলপ্রমী? তাইলে তো আমার মাসীর বাড়ীর কাঁচ নিঘ্‌ঘাৎ ভেঙেছেন। গ্যাস ডিপোর কাছে ,তাপস সেনের বাড়ীর পাশেই ফুটবল মাঠ। তার পাশেই আমার মাসীর বাড়ী। নাকতলার সব বাচ্চাই ঐ বাড়ীতে উৎপাত করেছে।
  • bozo | 129.6.123.128 | ০২ জুন ২০০৭ ০০:২০564118
  • রঞ্জন দার লেখা পড়ে একটা ছবি-ই ভেসে আসে। 'মেঘে ঢাকা তারা'।

  • RATssss | 75.51.71.7 | ০২ জুন ২০০৭ ১৩:০৪564119
  • ব্রতীন ভায়া, ধন্যযোগ।
    ISI এর তো বেশ কয়েকজনায় এখানে আছেন :-)
    আমি ৯৬ পাস আউট।

    পুনে সম্পর্কে একটা তথ্য বাদ পরে গেছে।
    ভারতীয় রাগসঙ্গীতের পীঠস্থান - পুনে ফেস্টিভ্যাল, সাবাই-গন্ধর্ব মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ছাড়াও প্রতিমাসে কেউ না কেউ কোন না কোন মনে রাখার মত কিছু উপহার দিয়ে যান... মনের রসদ খুঁজতে তাই কষ্ট হবার কথা নয়...
  • m.s | 202.78.233.221 | ০২ জুন ২০০৭ ১৫:৩৯564120
  • মনপথিকের নিশ্চুপ'গতি অস্তিত্বের খোঁজে,
    শহরপথে, বাঁচার লড়াইয়ে; প্রচেষ্টা আপ্রাণ...
    অবচেতনে তবুও চলে, ...দিনযাপনের মাঝে,
    একদিনের ছেড়ে-আসা শহরস্মৃতির সন্ধান

  • Bratin Das | 172.162.17.163 | ০৩ জুন ২০০৭ ০৯:৫৭564121
  • RATssss আমি ৯৯ এ র MTech ISI র আর কে কে আছে/আছেন এখানে ?

    bozo আপ নি Texas র কোথায় আছেন? আমি Irving এ।
  • d | 122.162.105.201 | ০৩ জুন ২০০৭ ১০:০১564122
  • আজ্ঞে ব্রতীনবাবু, ভাটিয়া৯তে এইসব পারসোনাল ইনফোগুলো দেওয়া নেওয়া করলে হত না? এই থ্রেডটা "শহর থেকে শহরে'র গল্পর জন্যই থাক না।
  • Bratin Das | 172.131.146.248 | ০৩ জুন ২০০৭ ২১:৫১563771
  • d আমি খুব sorry । আসলে আমি এখানে এক দম নতূন। তাই সবার সাথে পরিচিত হবার চেষ্টা কর ছিলাম । আমার অন্য কোনো অভিপ্রায় ছিল না। anyway i am really sorry
  • d | 122.162.103.145 | ০৩ জুন ২০০৭ ২১:৫৮563772
  • আরে না না অত দু:খিত হচ্ছেন কেন? ভাটিয়া৯ তে ক্লিক করে চলে আসুন, সব্বার সাথে পরিচয় হয়ে যাবে।
  • d | 122.162.105.54 | ১২ জুন ২০০৭ ১৮:২৯563773
  • এই যে রঞ্জনদা, খুঁজে দিলাম।
  • kallol | 192.77.110.18 | ১৩ জুন ২০০৭ ১৬:৫২563774
  • আমি কাজে কিছুকাল বারামতীতে ছিলাম। প্রতি রোববার নিয়ম করে পুণায় যেতাম - এমনি ঘুরতে। ঘুরতে ঘুরতে ওখানকার ম্যাক্স মূলার ভবনে ঢুকে পড়েছিলাম। ওদের একটা jazz club আছে। অসাধারন collection। মাঝেমাঝেই নানান অনুষ্ঠান হয়। যারা পুণায় অছো jazz ভলোবসো তারা যেতে পারো। যারা পুণায় অছো jazz ভলোবসো না, বা jazz নিয়ে মাথা ব্যথা নেই তারা অবশ্যই যেও, jazz ভালবেসে ফেলবে।
  • d | 122.162.106.47 | ০১ জুলাই ২০০৭ ১৫:৩০563775
  • দিল্লী শহরটা বেড়াতে যত ভাল, থাকতে যে ততটাই খারাপ এই বিষয়ে আমার অধিকাংশ বন্ধুই একমত। তবু এই দিল্লী,গুরগাঁও অঞ্চলে নয় নয় করে হয়ে গেল প্রায় বছর পাঁচ। প্রথম সুযোগেই ছেড়ে যাব, সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, তবুও কিছু মায়া, কিছু স্মৃতি থেকেই যাবে, টুকিটাকি উঁকিও দেবে। তেমনি একটা স্মৃতি হঠাৎ উঁকি দিল।

    ২০০৫ সাল -- চাকরী বদলেছি -- সদ্য গুরগাঁওতে শিফট করেই মোবাইকের ধাক্কা খেয়ে পায়ের হাড়ে চিড়, হাতের লিগামেন্ট ছিন্ন ---- সাইকেল রিকশা চেপে অফিস যাওয়া --- এক হাত এক পা নিয়ে রিকশায় ওঠা যে কি কঠিন, তা সেই প্রথম জানা গেল --- নতুন প্রোজেক্ট --- সবচেয়ে বড় কথা নতুন প্ল্যাটফর্ম। ক্লায়েন্টের রিচমন্ড অফিসে কাজ হত অনেক বছর আগে থেকেই। নতুন অফশোরিং মডেলের ফলে ঠিক হয়েছে গুরগাঁও থেকে মেইনটেন্যান্সের কাজ হবে। দুজন এসেছে রিচমন্ড থেকে KTর জন্য। গোপাল আর পল ম্যান্সিনি। গোপাল থেকে যাবে। পল ফেরত যাবে। গোপাল টেকি -- পল ডোমেইন এক্সপার্ট। দু সপ্তাহের KT শেষ। পল বলল ও কিছু জিনিষপত্র কিনতে চায় ওর বৌয়ের জন্য আর মেয়ের জন্য। সাজেস্ট করলাম কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ এর দোকানে যেতে। ঠিক হল আমি আর গোপাল ওকে নিয়ে যাব এক শনিবার। ওদের দুজনের জন্য একটা সাদা মার্সিডিজ বরাদ্দ ছিল, সেটা চেপেই যাওয়া গেল। বেচারা পল -- ঐ মে মাসের গরমে---তায় আবার দিল্লীর গরমে ওর নাজেহাল অবস্থা। যাইহোক, কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজের দোকানে গিয়ে পলের বিস্ময়ের সীমা নেই। যাই দেখে তাই ওর কিনতে ইচ্ছে করে। সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে কেনাকাটি করল। ততক্ষণে আমাদের পেয়েছে বেজায় খিদে। ওখান থেকে বেরিয়ে গোপাল নিয়ে গেল রাস্তাটা পেরিয়ে সর্বানা ভবনে। এখানকার তামিল থালি, বিভিন্ন মিষ্টি খুব বিখ্যাত।

    দোতলায় উঠে দেখা গেল কোন টেবিল খালি নেই। এদের বৈশিষ্ট্য হল টেবিল খালি না থাকলে এরা কতজন জেনে নিয়ে কোন একটা টেবিলে অন্যদের সাথে বসিয়ে দেয়। এইটে নাকি তামিলনাড়ুর গ্রামের বৈশিষ্ট্য। যে কেউ যে কারো সাথে বসে খেতে পারে, পরিবার বা বন্ধু হবার কোন পূর্বশর্ত নেই। যাই হোক আমাদের ৩ জনকে নিয়ে, একটি টেবিলে এক ভদ্রলোক একা খাচ্ছিলেন, তাঁর সাথে বসিয়ে দেওয়া হল। পল দেখলাম ব্যপারটায় বেশ অস্বস্তি বোধ করছে। ভদ্রলোককে দেখেই গোপাল ফিসফিস করে আমাকে বলল "I think he is also a Mallu." এখানে উল্লেখযোগ্য, গোপাল নিজেও নিজেকে "মাল্লু" বলেই পরিচয় দেয়। তো, আমরা আলাপ করলাম। এইবারে পল যেই বলেছে আমি পি জে ম্যান্সিনি, সেই ভদ্রলোক বললেন, আমি পি জে অ্যান্থনি। পল খুব মজা পেয়ে বলল আমার "পি জে' হল "পল জনসন'। উনিও সোল্লাসে চীৎকার করে জানালেন ওনার "পি জে' ও হল "পল জনসন' এতেই পলের অস্বস্তিটা একেবারে কেটে গেল।

    জানা গেল ভদ্রলোক New York Times এর দিল্লী ব্যুরোর অফিসের ম্যানেজার। করেস্পন্ডেন্ট নন, অফিসটা দেখাশোনা করেন। আমাদের দেখাতে চাইলেন। আমরাও একপায়ে খাড়া। কনট প্লেসের ঐ অংশটায় পরপর সব এয়ারলাইন্সের অফিস। লুফথান্সার অফিসের গায়ের সরু গলিটা দিয়ে ঢুকে ৩-৪ টে বাড়ীর পরের বাড়ীর দোতলায় NY Times এর অফিস। এখন তো সংবাদপত্র সব ডিটিপিতে কম্পোজড হয়। উনি দেখালেন ওঁদের ওখানে ৫০-৬০ বছরের পুরানো সব ব্লক সংরক্ষণ করা রয়েছে। শিহরিত হয়ে দেখলাম নেহেরুর প্রধানমন্ত্রী হবার খবরের ব্লক -- নেহেরুর মারা যাবার খবরের ব্লক -- রাজীব গান্ধীর অবিচুয়ারী। অদ্ভুত লাগছিল।

    আজ দু'বছর বাদে আবার মনে পড়ে গেল -- সেই রোদ্দুরে পোড়া দিনটা --- পলের টকটকে লাল মুখ, জায়গায় জায়গায় চামড়া ফেটে উঠে যাচ্ছে --- মিস্টার অ্যান্থনির খোলা গলায় হাসি ----- পলের বিস্ময় --- আমাদেরও ----। পথে পথে কত যে এমন বন্ধু ছড়িয়ে থাকেন -- আর কিভাবে যে আলাপ হয়ে যায়!
  • Tim | 71.67.115.14 | ০১ জুলাই ২০০৭ ২৩:৩৪563776
  • দেখতে দেখতে দুটো বছর হুস করে কেটে গেল বোলিংগ্রীনে। বোলিংগ্রীন, ওহায়োর এক অখ্যাত ছোট্ট শহর। ইউনিভার্সিটি কেন্দ্রিক ছিমছাম এই শহরের দুটো জিনিস উল্লেখযোগ্য। এক, হাড়কাঁপানো শীত; আর দুই, লেক ইরি থেকে বয়ে আসা পাগলা হাওয়া। যা শীতের ঠকঠকানি ১০ গুণ বাড়িয়ে দেয়, গ্রীষ্মের বিকেলে বিনে পয়সার এসির কাজ করে। নামের সাথে সাযুজ্য রেখেই বোলিংগ্রীন সবুজ। মাথার ওপর খোলা নীল আকাশ, পায়ের নিচে ঘন সবুজ ঘাস আর প্রচুর গাছ নিয়ে স্কাইস্ক্র্যাপারহীন আমাদের বোলিংগ্রীন। ছাত্রছাত্রী বাদে যেখানে মাত্র ২-৩ হাজার মানুষের বাস। তাই ছুটিছাটায় ঝিম মেরে পড়ে থাকে এই শহর, উইকএন্ডের ডাউনটাউন গীর্জার মত নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
    এমন রঙীন গাছের পাতা হয়, দেখেছিলাম শুধু সিনেমায়; সমাধিস্থান এত সুন্দর হতে পারে, সে শুধু বইতে পড়েছিলাম। চাঁদ সূর্য যে গোল, আর তাদের কক্ষপথও, তাও এখানে এসেই জেনেছি। মাথার ওপর উল্টোন গামলার দিকে তাকিয়ে মাঝে মাঝে ঘাড় ব্যাথা হয়ে যায়, কিন্তু দেখার পিপাসা মেটে না।
    এবং বরফ। শীতলতম দিনের উষ্ণতা মাইনাস তিরিশ সেন্টিগ্রেড। যেসব পোষাক পড়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়, অনায়াসে এভারেস্ট অভিযানে যেতে পারেন তা নিয়ে। অক্টোবর থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত একরকম বরফে ঢাকাই থাকে এই শহর। ঠান্ডায় পিছলে পিছলে শহরের পথে চলা বেশ মজার, জীবনের পথের কথা মনে করায় তা। অনেক শেখাল বোলিংগ্রীন। তাই ছেড়ে যাওয়ার আগে লিখে গেলাম প্রিয় শহরের হৃৎস্পন্দন।
    ---------
  • Blank | 59.93.214.57 | ০১ ডিসেম্বর ২০০৭ ১৮:৫৫563777
  • কালীঘাটে চাঁদ রাজা কালীকা পুজিয়া।
    চুড়াঘাট বাহিয়া যায় জয়ধ্বনি দিয়া।।
    ধনস্থান এড়াইল বর কুতুহলে।
    বাহিল বারুইপুর মহা কোলাহলে।।
    --- (মনসা বিজয়, বিপ্রুদাস পিপলাই, ১৪৯৫)

    সেই কত যুগ আগে 'মনসা বিজয়' কাব্যে প্রথম বার পাওয়া গেছিল, বারুইপুরের নাম। 'বারুইপুর', আমার নিজের জায়গা, ছোট্ট বেলার চেনা গন্ধ গুলো ছরিয়ে আছে যার আনাচে কানাচে। যখন যেমন সময় পাবো, এখানে এসে লিখে যাবো বারুইপুরের কথা। রেফারেন্স দিতে পারবো না হয়তো বেশী, কারন বেশী টাই শোনা ইস্কুলের স্যারেদের কাছ থেকে, আর কিছু খবর জমা হয়ে আছে আমাদের আঞ্চলিক সংগ্রহ শালার শো কেসে। যেখান থেকে যা যা পাবো, লিখে যাবো সব..

  • Blank | 59.93.210.162 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২০:৪৭563778
  • কোথা থেকে শুরু করবো, কি ভাবে শুরু করবো জানি না। এক গাদা ঘটনা, এক গাদা গল্প, যেগুলোর সময় কাল ঠিক পর পর সাজানো নয়। বারুই পুর বললেই যেমন মনে আসে বঙ্কিম চন্দ্রের গল্প, তেমনি মনে আসে গঙ্গা দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্রী চৈতন্যের নৌকা। কখনো দেখতে পাই বিশাল জায়গা জুড়ে ভাঙা চোরা চৌধুরি বাড়ি, আবার কোথাও প্রতাপাদিত্যের ভিটে। কে কার আগে, কে কার পরে, সেই হিসেব বড্ড গুলোয়।
    আচ্ছা বারুইপুরে ঢোকার আগে বরং এই পুরো নিম্ন বঙ্গের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নি, তাতে আমারো লিখতে সুবিধে হবে, আর পরে দরকার হলে কিছু রেফারেন্স টানতে পারবো, এছারা পুরো এই নিম্ন বঙ্গের আবছা ছবিও একটা পাওয়া যাবে।
  • Blank | 59.93.210.162 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:১০563779
  • নিম্ন বঙ্গের ইতিহাস নিয়ে আজ অব্দি নাড়া চাড়া হয়েছে সবচেয়ে কম। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই অঞ্চলের ইতিহাস ছিল পুরো অন্ধকারে। কলকাতার আশুতোষ মিউজিয়ামের চেষ্টায়, বসিরহাটের কাছা কাছি চন্দ্রকেতু গড় গ্রামে যখন প্রথম খুঁজে পাওয়া গেল পুরনো নগর আর বন্দরের ধ্বংসাবশেষ, তখন প্রথম উৎসাহীদের চোখ পরে এই দিকে।
    চন্দ্রকেতু গড় গ্রামটার পুব দিক দিয়ে এখনো বিদ্যাধরী নদী বইছে। সময়ের কোপে পরে, সেই নদীর আগেকার রুপ আর নেই। তবে ঐতিহাসিকদের মতে চন্দ্রকেতু গড়ে খুঁজে পাওয়া বন্দর নগরের ধ্বংসাবশেষ আসলে বিদ্যাধরী তীরের বিখ্যাত বন্দর 'গঙ্গে'। এই গঙ্গে বন্দর ছিল গঙ্গাবিড়ই রাজ্যের রাজধানী। গ্রীস, রোম, ইজিপ্ট থেকে পন্য ভর্তি জাহাজ আসতো এই পথে, চলতো বানিজ্যিক লেনদেন।
    মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা ছারাও, টলেমীর লগবুকে ছিল এই রাজ্যের কথা। বহু যুগ অব্দি জানা যায়নি যে এই গঙ্গারিড রাজ্য আসলে ছিল কোথায়? পরে বিংশ শতকের প্রথম দিকে, এই অঞ্চলে কিছু মৌর্য্য আমলের মুদ্রা পাওয়া যায়, তখন থেকে ঐতিহাসিক দের খোঁজ শুরু হয় এই অঞ্চল জুড়ে। শেষ অব্দি ষাটের দশকে প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় এই বিশাল নগরের ধ্বংসাবশেষ।
    যাইহোক, সমুদ্র উপকুল থেকে শুরু করে নিম্নবঙ্গের এই বিশাল এলাকাই হয়তো ছিল সেই সময়ের গঙ্গারিডই রাজ্য। বারুইপুরের আশে পাশে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে এক সমৃদ্ধ জনপদের অজস্র প্রমান।
  • Blank | 59.93.210.162 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:২৩563780
  • আমাদের বাড়ি থেকে কুলপী রোড ধরে খান দু-তিন কিলোমিটার সাইকেল চালালেই পাবে সীতাকুন্ডু বলে একটা জায়গা। পাশেই আছে আটঘরা। প্রচুর পেয়ারা বাগান আছে এই অঞ্চল জুড়ে। এই দুই জায়গার মাঝা মাঝি অঞ্চলের মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছিল মৌর্য যুগের তাম্র মুদ্রা, শুঙ্গ এবং কুষান যুগের পোড়া মাটির মুর্তি, শীল মোহর, এমনকি রোমান মৃৎপাত্রও।
    আটঘরায় পাওয়া যায় গোলকার ছাঁচে ঢালা তাম্র মুদ্রা, আর পাওয়া যায় কিছু শীল মোহর, যেগুলোর সাথে চন্দ্রকেতু গড়ে পাওয়া শীলমোহরের আশ্চর্য মিল রয়েছে। এছারা এখানেই পুরনো একটি পুকুরের মাটি কাটার সময় পাওয়া যায় ছোট বড় অনেক বিষ্ণু মুর্ত্তি।
    এই সব থেকেই ঐতিহাসিক গন সিদ্ধান্তে আসেন যে মৌর্য এবং মৌর্য পুর্ববর্তী সময়ে এই অঞ্চলে ছিল একটি সমৃদ্ধ জনপদ।
    তবে আশ্চর্য জনক ভাবে এই অঞ্চলে গুপ্ত যুগের কোনো কিছু পাওয়া যায় নি। ফের পাওয়া যায় পাল এবং সেন যুগের তৈযশ পত্রাদি। ডা: নীহার রঞ্জন রায়ের মতে (বাংলার নদনদী), ত্রয়োদশ শতকের পর থেকে, কোনো এক কারনে এই অঞ্চল পরিত্যাক্ত হয় পুরো পুরি।
  • Arpan | 193.134.170.35 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:২৯563782
  • গঙ্গারিডি না গঙ্গাহৃদি? পরেরটা হলে মানেটা জোরদার হয়। :-)
  • Blank | 59.93.210.162 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:৩০563783
  • আশুতোষ মিউজিয়ামের বর্তমান অধক্ষ্যের মতে, এই আটঘরা ছিল এক কালের একটি বড় শহর। টলেমী যে শহরকে Asthagoura বলে চিহ্নিত করেছিলেন অন্তর্গাঙ্গেয় অঞ্চলে, সেই শহরই বর্তমানের আটঘরা ('আটঘরা ইতিহাসের নতুন ইশারা, 'স্বাধীনতা' ১৯/৫/৫৭, আশুতোষ মিউজিয়াম)।
    কি অদ্ভুত লাগে ভাবতে... এক কালে সাইকেল চালিয়ে যে জায়গা গুলো দিয়ে ঘুরতাম, পাকা পেয়ারা পারতাম ঢিল মেরে মেরে, তার মাটির তলায় লুকিয়ে আছে কত যুগ আগের এক বিশাল নগর... গ্রীক, রোমের থেকে আসা বনিক রা, স্থানীয় বাসিন্দারা, বিশাল বিশাল জাহাজ, সব মিলিয়ে লোকে লোকারন্য হয়ে থাকতো এই পুরো জায়গাটা। আজ আর কিছুই নেই, পাল্টে গেছে ইতিহাসের ধারা ...
  • Blank | 59.93.210.162 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:৩২563784
  • ১) গ্রীক রা দিয়েছিল এই নাম Gangaridai, আমাদের সুন্দরবন আঞ্চলিক সংগ্রহ শালায় বাংলা তে লেখা আছে গঙ্গারিডই।
    ২) আমার বানান নিয়ে কেউ কিছু বললে আমি স্যানের কাছে তার নামে সুপুরী দেবো, আমি আগেই বলেছি :-D
  • Shuchismita | 12.1.219.253 | ০৩ ডিসেম্বর ২০০৭ ২২:৩৫563785
  • Blank, খুব ভালো লাগছে পড়তে। চালিয়ে যাও। আমিও হয়তো কখনো সুযোগ পেলে লিখবো বৈদ্যবাটির কথা। শ্রীচৈতন্যের পদধুলিধন্য গঙ্গাতীরের প্রাচীন সমৃদ্ধ জনপদ। সেখানেই বেড়ে ওঠা। অথচ কত কম জানি তার ইতিহাস। তোমার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আমিও একটু খুঁজে দেখি নিজের ভিটেমাটির ইতিহাস। তুমি থেমো না। পরের কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম।
  • P | 78.16.62.75 | ০৪ ডিসেম্বর ২০০৭ ০০:৫৪563786
  • বা: ব্ল্যাংকি, এইটা তো সাংঘাতিক ভালো হচ্চে।
  • Blank | 59.93.207.92 | ০৪ ডিসেম্বর ২০০৭ ২১:১৪563787
  • কেটে গেছে অনেক গুলো বছর, বিদ্যাধরী নদী তখন অনেকটাই শুকিয়ে গেছে, দক্ষিন বঙ্গের মধ্যে দিয়ে তখন বয়ে চলেছে আদি গঙ্গা...প্রাচীন সভ্যতার চাপা পরে গেছে মাটির নিচে, ওপরে নতুন মানুষদের আনাগোনা। পুরনো জায়গা গুলোর নাম ও তখন বদলে গেছে অনেক, নতুন নতুন জনপদ তৈরী হচ্ছে আদি গঙ্গার তীরে। এই সময়ে প্রথম পাওয়া যায় 'বারুইপুর' নাম টা।
    বিপ্রদাস পিপলাই এর মনসাবিজয় কাব্যে, আদিগঙ্গা বেয়ে সওদাগরে সিংহল যাত্রার বর্ননা, সেখানেই আবার শোনা গেলো বারুইপুরের নাম (১৪৯৫ খৃ:),
    "কালীঘাটে চাঁদ রাজা কালীকা পুজিয়া।
    চুড়াঘাট বাহিয়া যায় জয়ধ্বনি দিয়া।।
    ধনস্থান এড়াইল বড় কুতুহলে।
    বাহিল বারুইপুর মহা কোলাহলে।।
    হুলিয়ার গাঙ্গ বাহি চলিত ত্বরিত।
    ছত্র ভোগে গিয়া রাজা চাপায় বুহিত।।"
    কিন্তু বারুইপুর নামের পত্তন তো বিপ্রদাস করেন নি, তাহলে কবে থেকে আদিগঙ্গার তীরে একটা জনপদ বারুইপুর নাম পেলো? সেই সময় এই পুরো অঞ্চল ছিল মেদনমল্ল পরগনার ভিতরে। কেউ কেউ বলেন উড়িষ্যার রাজা মেদীনিমল্ল রায়ের নামে এই পরগনার নাম হয় মেদনমল্ল। রাজা মেদীনিমল্ল ছিলেন পরাক্রমশালী রাজা, উড়িষ্যা পেরিয়ে মেদিনীপুর, আবার এদিকে ক্যানিং অব্দি ছিল ওনার রাজঙ্কÄ। হয়তো ওনার হাতেই তৈরী হয়েছিল এই মেদিনীমল্ল পরগনা, যেখানে ছিল আমার বারুইপুর।
  • Blank | 59.93.242.154 | ০৪ ডিসেম্বর ২০০৭ ২২:১৭563788
  • এবার একটু ঘেঁটে দেখা যাক যে বারুইপুর নামের উৎপত্তি হলো কি ভাবে। সবচেয়ে প্রচলিত মত টা হলো পান চাষী ব বারুইদের থেকে এই এলাকার নাম হয়েছে বারুইপুর। আগে এই অঞ্চলের চারদিকে ছিল পানের বরোজ। যখন ছোট ছিলাম, তখন দেখতাম, ছোট ছোট কঞ্চি দিয়ে মাঠ ঘিরে ফেলে ওপরে ছাউনি বানিয়ে, ভিতরে পান চাষ হচ্ছে। রোদ পরলে পান গাছের পাতা সাদা টে হয়ে যাবে, তাই মাঠের ওপর ছাউনি বানিয়ে চাষ হয় পানের। আর পানের বোরোজের ভেতর ঢুকলেই তাড়া করবে সবাই, কাচা জামা কাপড় না পরে নাকি ঢুকতে নেই ভিতরে। যাই হোক, এই বারুই দের থেকেই হয়তো এসেছে বারুইপুর নাম।
    তবে অন্য মত বলে যে বারা ঠাকুরের নাম থেকে এই এলাকা পেয়েছে বারুইপুর নাম। বারা ঠাকুর স্থানীয় দেবতা। এখানে পৌষ সংক্রান্তি তে পুজো হয় এই ঠাকুরের। বড় কোনো গাছের তলায়, বা পুকুরের ধারে খোলা আকাশের নিচে বসানো হয় ঠাকুর। ঠাকুরের মুর্তি বলতে একটা ছোট ঘট উল্টো করে বসানো, তার ওপর পান পাতার মতন করে একটা মুকুট লাগানো থাকে। সাদা রঙ করা থাকে ঘটে, আর চোখ মুখ আঁকা থাকে তার ওপর। সাধারনত একসাথে দুটো মুর্তি বসিয়ে পুজো করা হয়। পুজোর পর কিন্তু বিসর্জন হয় না, ঐ খানেই পরে থাকে ঠাকুর। সারা বছর ঝড় বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতে একসময় ভেঙে যায় ঘট গুলো। ছোট বেলায় গাছের তলায় পরে থাকা এই মাথা সর্বস্ব ঠাকুরের মুর্তি দেখে খুব ভয় পেতুম। একটা অদ্ভুত ধারনা ছিল যে ঐ গুলো ই মনে হয় নিশির মুর্তি (সেই যে নিশির ডাক বলে যাকে)। পরের দিকে, একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর, এই মুর্তি গুলো মাঠ থেকে তুলে আনতুম, তার ওপর কত দাড়ি গোঁফ আঁকতুম রঙ দিয়ে আর রঙীন চক দিয়ে।
    এই অঞ্চলের বাইরে কিন্তু এই ঠাকুরের পুজো খুব একটা দেখা যায় না। আমি তো কখনো দেখিনি। অনেকেই বলেন যে এই বারা ঠাকুর থেকে এসেছে 'বারাইপুর' নাম, আর প্রচুর স্থানীয় মানুষ 'বারুইপুরের' বদলে 'বারাইপুর' বলে থাকেন এখনো।
  • Blank | 59.93.242.154 | ০৪ ডিসেম্বর ২০০৭ ২২:৪২563789
  • বারুইপুর ছারিয়ে একটু বরং আশে পাষের দিকে চোখ বোলানো যাক। কুলপী রোড ধরে গড়িয়ার দিকে চলো, বারুইপুর পেরিয়ে একটু এগোলেই পাবে পুরন্দর পুর, গোবিন্দপুর, কোদালিয়া (মাহীনগর)। এর পরে আসে সোনারপুর।
    সেই সময়ে বাংলায় চলছে নবাবী আমল। এই এলাকা তখন জঙ্গলে ভর্তি, এই সব দিকে তখনো জন বসতি নেই। সেই জঙ্গল কেটে কোদালিয়ার দিকে প্রথম আসেন মহীপতি বসু, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের পুর্বপুরুষ। তাঁর নামের ঐ অঞ্চলের নাম হয় মাহীনগর। তাঁর ই পৌত্র, গোপীনাথ বসু ছিলেন নবাব হুসেন শাহের রজস্ব সচিব আর নৌ সেনাধ্যক্ষ। নবাব তাঁর কাজে প্রচন্ড খুশী হয়ে তাঁকে দিলেন 'পুরন্দর খাঁ' উপাধি। সেই পুরন্দর খাঁর নামেই তৈরী হয় পুরন্দরপুর। গোপীনাথের ছোট ভাই নবাবের কাছ থেকে 'বল্লভ খাঁ মল্লিক' উপাধি পান। মল্লিকপুর নাম টা আসে এঁর কাছ থেকে। গোপীনাথের আর এক ভাই গোবিন্দ বসুর নামে হয় গোবিন্দ পুর। গোবিন্দ বসুর বাগান বাড়ি আর বিশাল ফুলের বাগান ছিল যেখানে, সেই জায়গার নাম মালঞ্চ। মালঞ্চের পটুয়া পাড়া ঠাকুর তৈরীর জন্য বিখ্যাত আজ ও।
  • S | 122.162.81.250 | ০৪ ডিসেম্বর ২০০৭ ২৩:৫০563790
  • বারা ঠাকুরের বিবরণ পড়ে আমার সেই কাস্ট অ্যাওয়ের বাস্কেটবলটা মনে পড়ে গেল। :-)
  • Blank | 59.93.200.203 | ০৫ ডিসেম্বর ২০০৭ ২৩:৪৮563791
  • বারুইপুরের উত্তর দিকে না হয় মাহীনগরের বোসেরা এসে রাজঙ্কÄ শুরু করলো, কিন্তু দক্ষিন দিকের কি হাল? এক কাজ করা যাক, দক্ষিনে চম্পাহাটির দিকে একটু এগোনো যাক। ট্রেনে গেলে এটা ক্যানিং লাইনে পরবে, কিন্তু বারুইপুর থেকে সাইকেল নিয়ে গেলে আধ ঘন্টা মতন লাগবে। চম্পাহাটি বিখ্যাত বাজির জান্য, আতসবাজি। কাল পুজোর সময় আমরা দল বেঁধে এখানে যেতাম, চকোলেট বোম আর আলু বোম কিনতে। এই চম্পাহাটি র দিকেই রয়েছে প্রতাপনগর। ছোট্ট একটা গ্রাম, কিন্তু এই গ্রাম টা আজ ও স্মৃতি বহন করছে বারোভুঁইয়ার এক ভুঁইয়া, যশোরের প্রতাপাদিত্যের।
    শ্রীহরির ছেলে প্রতাপ জাতে ছিল কায়স্থ। শ্রীহরি ছিলেন দাউদ খানের কর্মচারী। দাউদের মৃত্যুর পর শ্রীহরির ছেলে প্রতাপ দাউদের কোষাগার দখল করে। তারপর যশোর খুলনা থেকে শুরু করে দক্ষিন বঙ্গের একটা বিশাল অংশে নিজের রাজঙ্কÄ স্থাপন করে প্রতাপ। 'মহারাজা' উপাধি নিয়ে সিংহাসনে বসে রাজা প্রতাপাদিত্য। সিংহাসনে বসার পরেরি প্রতাপ সবার আগে নজর দেয় রনসজ্জায়। এক বিশাল সৈন্যবাহিনী ছিল প্রতাপের, আর ছিল নৌ বাহিনী। এই ধপধপি অঞ্চলে তখন বাস করতো হিন্দু ডোম জাতি অথবা ধর্মান্তরিত হওয়া মুসলমন রা। এরা দলে দলে যোগ দিয়েছিল প্রতাপের বাহিনী তে। প্রচন্ড সাহসী আর বীর ছিল এরা। লোকের মুখে মুখে ফিরতো এদের কথা।
    পায়ের ওপর পা তুলে, বাবু হয়ে বসে, আগডুম বাগডুম তো এখনো বাচ্ছারা খেলে; এই আগডুম বাগডুম এসেছিল প্রতাপের ডোম সৈন্য বাহিনী থেকে। প্রথম দুটো লাইন ছিল প্রতাপের সৈন্য সজ্জা,
    'আগে ডোম, বাঁয়ে ডোম, ঘোড়ার ডোম সাজে/ঢোল মেগর ঘাগর বাজে'।
    আজ ও এই অঞ্চলে যত ঢালী, পাইক বা সেপাই উপাধির লোক দেখা যায়, তাঁরা সব আসলে প্রতাপের সেই দুর্ধর্ষ সৈন্য বাহিনীর উত্তর পুরুষ।
  • shyamal | 24.119.108.242 | ০৬ ডিসেম্বর ২০০৭ ১০:২৮563793
  • সুনীল , শংকরের লেখা পড়ে অনেকেই আমেরিকার রাজ্য নিউ জার্সিকে চিনে গেছেন। এখানে এডিসন শহরে অনেকদিন ছিলাম। মাত্র এক লাখ লোকের বাস। কিন্তু তার মধ্যে বিরাট অংশ ভারতীয়। এডিসন আর পাশের ছোট্ট শহর ইসেলিনে অজস্র ভারতীয় দোকানপাট। মশলা, রুটি, লাউ, পুঁইডাঁটা, পটল থেকে শুরু করে হিন্দি ডিভিডি, সোনার ও হিরের গয়নার দোকান, রেস্টুরান্ট, মিস্টির দোকান সবই আছে। এডিসনে অনেক বড় এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে গেলে মনে হবে ভারতে চলে এসেছি। এসব কমপ্লেক্সে ৮০% ভারতীয়। মহিলারা সালোয়ার কামিজ পরে বাচ্চা সমেত হাঁটতে বেরিয়েছেন। বয়স্ক বাবা মা -- যাঁরা দেশ থেকে বেড়াতে এসেছেন -- তাঁরা পার্কে আড্ডা দিচ্ছেন।
    ঠমাস এডিসনের ল্যাবরেটরী ছিল এই শহরের মেনলো পার্কে। সেই থেকেই শহরের নাম। গরমকালে ভালো ই গরম পড়ে। আবার শীতে দারুন শীত। সকালে ১০ ফারেনহাইটের ও কম থাকে অনেক সময়ে। একবার আমাকে আড়াই ফুট বরফ বেলচা দিয়ে সরাতে হয়েছে। তবে বরফ পড়লে প্রচুর স্নো প্লাউ নামক ট্রাক এসে রাস্তা থেকে সেই বরফ সরিয়ে দেয়। তবুও এক ফুটের বেশী পড়লে স্কুল, কলেজ, অফিস ছুটি হয়ে যায়। দেশের রেনি ডের মত।
    এডিসন থেকে নিউ ইয়র্ক শহর মাত্র চল্লিশ মাইল। বহু লোক ট্রেনে নিউ ইয়র্কে চাকরি করতে যায়। অন্য দিকে বিশ্ববিখ্যাত প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি মাইল কুড়ি দূরে। এখানে আইনস্টাইন বহুদিন অধ্যাপনা করেছেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন