এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শহর থেকে শহরে

    bozo
    অন্যান্য | ০১ এপ্রিল ২০০৬ | ১৭১৩৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dam | 61.246.149.241 | ০৮ এপ্রিল ২০০৬ ২১:১২564081
  • আজ এই তুমুল গরমে মনে পড়ছে নিউপোর্টের কথা। ভা---রী সুন্দর জায়গা। হার্টফোর্ড থেকে দু আড়াই ঘন্টাতেই পৌঁছে যাওয়া যায়। সেই যে সেই মে মাসে দিনটায় আমরা গেছিলাম--- ওদের ভাষায় তখন বসন্তকাল। তা হাওয়া আর রোদ সত্যি ভারী টলটলে ঝলমলে ছিল। গাড়ি থেকে নামতেই যে হাওয়া বয়ে যায় ভারতীয় হাড়ে তারে শীত বলেই চেনে। কোনোদিকে না তাকিয়ে ডাঙ্কিন ডোনাটস থেকে বেশ বড়সড় কফি নিয়ে তবে চেনাচিনি শুরু সেই শহরের সাথে। সমুদ্রের ধারে ধারে কবে কোনকালে মস্ত মস্ত বড়লোকেরা ম্যানসান বানিয়েছিল। এখন সেইসবকে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে দেখার জন্য। আর সমুদ্রের তটরেখা থেকেই সামান্য উঁচুতে ঐ ম্যানসানের উচ্চতায় বানানো আছে চমৎ পায়ে হাঁটার রাস্তা।

    ইস্টার্ন বীচে গিয়ে পা ভেজান---ঠিক ৫ মিনিট---- পায়ের পাতা ঠান্ডায় অবশ হয়ে আসে। চলতে থাকি ক্লিফ ওয়াক ধরে। রাগল্‌স অ্যাভিনিউ, বেইলি'স বীচ। সমুদ্রের হু হু হাওয়া আর অদ্ভুত নীল রং মনে করায় বহু বহু আগে বা-মায়ের সাথে যাওয়া গোপালপুরের কথা। গোপালপুর এক ঝাপসা স্মৃতি। ঐ হাওয়া, সমুদ্রে গর্জন , যা তখন ভয় ধরিয়েছিল, ছাড়া আর কিছুই মনে পড়ে না। আর তাই মনে হয় এ নিশ্চয়ই সেই গোপালপুর। সে জায়গাও এমনই ছিল। আমি দেখছি--- আর বাবা মা দেখতে পেল না--- তা আবার হয় নাকি? নিশ্চয় দেখেছিল।

    পাশ দিয়ে বেঁটে সাইকেল চালিয়ে চলে যায় এক দশাসই বৃদ্ধ। "হাই" বলতেও ভোলে না। যে ম্যানসানগুলো দেখতে দেওয়া হয় না, না জানি সেখানে কি রহস্য আছে। কে বা কারা থাকত, হয়ত তাদের কেউ এখনও বেঁচে আছেন। আর তাহলে কি করে নিতান্ত ব্যক্তিগত সেইসব স্মৃতির টুকরো এমন হাটের মাঝে ধরে দেন তাঁরা!

    ক্লিফ ওয়াক ছাড়া অন্য রাস্তাগুলো মস্ত মস্ত গাছের ছায়ায় ঢাকা। রাস্তাঘাটে লোকজন বিশেষ নেই। হাক্লান্ত হয়ে ঢোকা হল "পরানা চায়ে" নামক দোকানে। অবোধ অ্যামেরিকান বালক দুই গ্লাস চা কে কিভাবে ৩ গ্লাসে ভাগ করে দিতে হবে, তার চেষ্টায় গলদঘর্ম। শেষে ৪ গ্লাস চা দিয়ে রেহাই চায়, যার প্রতিটিই তিন চতুর্থাংশ পূর্ন।

    ঠান্ডা ঠান্ডা সেই দিনটা আজ চৈত্র মাসের গুরগাঁও তে স্মৃতির আলতো হাত বুলিয়ে গেল।
  • Diptayan | 202.54.54.58 | ২০ এপ্রিল ২০০৬ ১৯:৩৭564082
  • শহর মানে কি? ইঁট-কাঠ-পাথরে গড়া একটা স্ট্রাকচার,ধোঁয়া-ধুলো-এক্সজস্টে ঢেকে যাওয়া বাতাস,চূন-সুরকির-খোয়া ফেলা গলি,রিক্সার হর্ণ,ট্রামের ঘন্টি,লেভেল ক্রশিং এর ধারে বসে থাকা শাকের আঁটি,লেবু আর শশা,একটা চেনা গন্ধ,আলো অন্ধকার।প্রত্যেক শহরের একটা নিজস্ব আলো থাকে নিজের মতো করে গায়ে লেপটে থাকে,তিন দিন পরে থাকা পাঞ্জাবীর মতো।তুমি সেই শহর ছেড়ে যেখানেই যাও,তোমাকে সেই শহর ছেড়ে যায় না।প্যাঁচালো গলি,হঠাৎ এসে হারিয়ে যাওয়া বড় রাস্তা,একটা বুড়ো লোক খুঁড়িয়ে,খুঁড়িয়ে হেঁটে গেল মোড়টা পেরিয়ে।একটা রকে বসলো একটু থমকে,আবার চলবে কিনা ভাবে।শহর থেকে বেরিয়ে গেছে ধমনীর মতো রাস্তা,মিশে গেছে দুপাশের মাঠ-বন-নদীর ধারে।সেখানে ঘন বটের ছয়া,ঝুরি নেমেছে তাকে ঘিরে,খেলা করে ছেলেরা,ছুট্টে গিয়ে পুকুরে ঝাঁপ।মন্দিরের দেউলে সন্ধ্যায় ঘন্টা বাজে,উঠোনে কুয়োতলায় পেছল হয়েছে।

    আমাদের এই শহর-এই কলকাতা-কোনদিন পুরনো হবে না।যেদিক দিয়েই দেখো,নিত্যনতূন ছবি।ফুলে-ফেঁপে উঠছে,ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে।কিরকম ? ছোটবেলায় যখন মা-বাবা র সাথে শীতের দুপুরে 'ঝিলমিল' বেড়াতে যেতুম তখন সল্টলেক তাকে অনেক দূরের মনে হত।S 14 এ চেপে করুণাময়ীর মোড়,তারপর রিক্সা নিতে হত।'ঝিলমিল' এর পেছনে দেখা যেত অনন্ত মাছের ভেড়ি।জল চ্‌চক্‌ করছে রোদ পড়ে।তারপর যখন সেক্টর ফাইভে চাকরী করতে এলুম তখন সেই মাছের ভেড়িগুলো আর নেই।সেখানে জল বুজিয়ে মাঠ করা হয়েছে।আসন্ন তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের কার্টেন-রেজার।আর এখন !!আকাশ দেখা যায় না,যেখানে সেখানে কঙ্ক্রীটের জঙ্গল বরং রাজারহাট ভালো।অনেকটা ফাঁকা রাস্তা,চওড়া,অচেনা শহরে বেড়াতে গেছি মনে হয়।জোরে গাড়ি চললে ধুলোতে কিছু দেখা যায় না,বড় রাস্তার ধার দিয়ে লরি চলেছে,আর ক'দিন পরেই এখানে তৈরী হবে বসতবাড়ি,আপিশ,শপিং মল।লোকে কাজ করবে,থাকবে,বাজার করবে,আর আস্তে আস্তে এই জায়গাটাও হয়ে যাবে শহর,আমার শহর।তখন আলোটাও পাল্টে যায়,অন্যরকম লাগে সব কিছু,তার মধ্যেই চলেই স্মৃতিকে খুঁজে চলা,তুলনা করে চলা।
  • Paramita | 143.127.3.10 | ২১ এপ্রিল ২০০৬ ২৩:৩৬564083
  • এই মেঘমেদুর থ্রেড পড়ে একটা প্রশ্ন : শহর থেকে অন্য শহরে যাবার অনেক দিন পরে পুরোনো শহরে ফিরে গিয়ে কেউ নদী-মাঠ-গাছ-রেস্তোরা-রক-রিক্সাস্ট্যাণ্ড - যার যা পছন্দের জায়গা ছিল, সেখানে হারানো সময় খুঁজতে গেছেন? আমি তো মায়াঞ্জন ধেবড়ে যাওয়ার ভয়ে চেনা পাড়ায় পা বাড়াই না!
  • bozo | 129.7.152.96 | ২৭ এপ্রিল ২০০৬ ২০:০৯564084
  • (১)
    আমাদের সময়ে শহর টা শুঁয়োপোকা ছিল। তখন-ও সে ডানা মেলে ওড়ে নি। আমারা-ও চিনতাম না রিচার্ড বাখ কে। জানতাম না শুঁয়োপোকার কাছে যা মৃত্যু, তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রজাপতির জন্ম।
    যদিও জানি না সেই জন্ম রহস্যে কোনো জিন ঘটিত দুর্ঘটনা হয় কি না। শুঁয়োপোকা ক্রমে প্রজাপতি হয়, সৃষ্টির আনন্দে সেই প্রজাপতি কখনো ড্রাগন হয়ে ওঠে কি না। কখনো বা ওঠে। মনের নিস্তরঙ্গ কোনে পড়ে থাকে সেই ফেলে আসা ধূসর ছবি।
    আমাদের জন্ম সন্ধিক্ষনে। কথা রেখে বা না রেখে, রক্ত ঝরিয়ে বা রাজনীতির পাশায়, সংগ্রামী মানুষের মুক্তিবদ্ধ হাতে অথবা বন্দুকের নলে ক্ষমতার পালাবদল হয়ে গেছে। বাড়ীর রং এর সাথে রাজনৈতিক চেতনার রং মিশে গেছে। সে এক পালা বদলের সময়। কিন্তু সে মনে হয় বিশ্বাস ভঙ্গের সময়-ও বটে। সাধারন মধ্যবিত্ত মানসিকতার কেন্দ্রচ্যুত হবার সময়। চোখের সামনে একটা আদর্শ ভেঙ্গে যাবার দৃশ্য, বদল আনতে গিয়ে কেউ অ্যালবামে ঠাঁই নিলেন, কেউ নিলেন দূর প্রবাসে। আর সামগ্রিক ভাবে বদলাতে গিয়ে আমাদের আগের প্রজন্ম-ই যেন নিজেরাই বদলে যেতে শুরু করলেন। আমরা এলাম সেই 'শূণ্যতার-ই বুকের পরে'।
    আমাদের শহর তখন শান্ত। কাছে পীঠে, অলিতে গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আজকের ইতিহাস, সেদিনের ঘোর বাস্তব। অদূরে অখ্যাত জনপদ, বিপ্লবের প্রসূতিঘর। রাস্তায় ভীত মানুষ। তারমধ্যে আমরা, আমাদের ছোটো শহর, আমাদের দুই নদী, আমাদের ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধ আর বর্ধিষ্ণু আত্মকেন্দ্রিকতা। আমারা যেমন পাল্টাতে শুরু করলাম, তেমনি আমাদের শহর।
    'বাবু' সমর সেন লিখেছিলেন 'We live in the age of decadence'. ততদিনে আমরা পেরিয়ে এসেছি বার্ট্রান্ড রাসেলের জগৎ। সেই রাসেল সাহেবের 'Outshine our neighbors' আর survival of fittest' থিওরিও ক্লিশে হয়ে গেছে। বদলের যুগে চারিদিকে যা দেখা গেল তা কেবল 'struggle for existence'। এই খানে দাঁড়িয়ে এই চোখে দিয়ে দেখা যাক সেই শহর টাকে, যেখানে জীবনের শেষ্ঠ ১০ টা বছর, জীবনের প্রথম দশ টা বছর পরে আছে।
  • bozo | 129.7.152.96 | ২৭ এপ্রিল ২০০৬ ২০:৩৮564085
  • (২)
    শহরের নিস্তরঙ্গ জীবনে এক মাত্র তরঙ্গ ছিল কারেন্ট। কারেন্ট বলতে বুঝতাম তিন খানা জিনিষ। এক লম্বা লম্বা কাঠের থাম্বা, যাতে তার লাগানো রয়েছে, সেখান দিয়ে কারেন্ট যায়। দ্বিতীয় কারেন্ট নুন, তার তৃতীয় কারেন্ট, জলের স্রোত। ভালভাবে ইংরাজী শেখার আগেই কারেন্ট শব্দ টা শিখেছি। ঘরের থেকে আধ কিলোমিটার দূরে ছোটো নদী। বড় নদী দুই কিলোমিটার দূরে। শহরে স্বল্পস্থায়ী সহনীয় গ্রীষ্ম, তেমন-ই স্বল্পস্থায়ী কিন্তু তীব্র শীত। এর দুই এর মাঝে হাত বাড়িয়ে সাত মাসের বর্ষা। বর্ষা আসে, বর্ষা যায়। শহরের নিকাশী ব্যবস্থা বলতে কিছু-ই নেই। সেদিন-ও ছিল না, মনে হয় আজো নেই। সবাই চায় নিজের ঘরের সামনে জল না দাঁড়ালেই হল। নিজের জল অন্যের ঘরের দিকে গড়িয়ে দেয়। শেষ মেষ সব ঘরের সামনেই জল, গোড়ালি, হাঁটু, কোমর।
    জল আমাদের প্রিয়। জলে পা দিলেই বুঝে যাই কোথাকার জল। সবচেয়ে গরম আর ঘোলা নালার জল। নালার জলে আমাদের কিছু হয় না। ঘেঁটে ঘেঁটে অভ্যস্ত। ক্রিকেট বল, আমাদের ভাষায় টেনিস বা রবার ডিউস (বেঁচে থাক Duke কোম্পানী) নালা ঘেঁটে উদ্ধার করতে দক্ষ আমরা। তারচেয়ে একটু পরিষ্কার ও সামান্য ঠান্ডা করলা নদীর জল। ঘরের পাশের নদী। আর পায়ের পাতায় যখন শির শির করে ঠান্ডা জল যায় বিলক্ষন বুঝি এ তিস্তার জল। সেই কারেন্ট মানেই সামগ্রিক ভয়, জনে জনে বলে বেড়ানো আজ তিস্তার কারেন্ট এসেছে। তিস্তার কারেন্ট এলে চোখ চলে যায় ঘরের অনেক উঁচুতে একটা দাগের দিকে। জেঠু দেখান ১৯৬৮ বন্যায় জল নেমে যাবার পর এত অবধি পলি ছিল। মনে মনে শিহরন জাগে আবার যদি বন্যা নয়। আমাদের শহরের বন্যা বিলাস। অগস্ট থেকে অক্টোবরের শেষ অবদি বন্যা আসার মোক্ষম সময়। তখন জল খেয়ে খেয়ে নদীর আর জল বহন করার ক্ষমতা নেই। কিন্তু আকাশে মেঘের চলচলের কোনো অভাব নেই। রাস্তায় ঘাটে, দোকান পাটে আলোচনা বন্যা। ৬৮ তে ঠিক কি হয়েছিল। এবার কেন হবে না। রাতে নিয়ম করে আকাশ দেখে শুই। ঈশান কোন লাল মানেই জোর বৃষ্টি হবে।বৃষ্টি মানেই ইস্কুল ছুটি।
    শহরের এক বৃহৎ সংখ্যক লোক চরে থাকেন। তাদের আমরা বলি চরুয়া। বৃষ্টি হলেই তারা সংসার ও পালিত পশু সহ আমাদের স্কুলে হাজির হন। স্কুল তখন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ। আমি বাংলা স্কুলে যাই, তাই আমার খালি ছুটি। দাদাদের সাহেবী স্কুলের ছুটী নেই, সকাল বেলায় বাস এসে ওদের নিয়ে যায়। তখন ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে চরম উল্লাস বোধ করি, পরক্ষনেই মনে হয় সারাদিন আমি একা।
    আমাদের এমনিতে গ্রীষ্মের ছুটী নেই। ছুটী হয় ঘন ঘোর বর্ষায়। নামে সামার ভ্যাকেশন হলেও আসলে বর্ষার ছুটী। গ্রামের দিকে তো সরাসরি বলে রোঁয়া গাড়ার ছুটী।
    সময়ের মত বর্ষাও ভেদাভেদ ঘুচিয়ে দেয়। এক টানা অবিশ্রান্ত বর্ষনে সকল কে দিশেহারা করে দেয়। অনেক পরে দেবেশ বাবুর গদ্য আর শক্তি চট্টোর পদ্য পড়ে অনে হয়েছিল, ধুস্‌ সব-ই কল্পনা বিলাস। বর্ষা কে নিয়ে, মেঘ নিয়ে, রাক্ষুসী নদী কে নিয়ে কোনো সাহিত্যে হতেই পারে না। খালি মনে হয় ফরিদপুরের সেই কিশোর-ই ঠিক কথা বলেছিলেন-'নদী তুমি দূরেই থেকো, কাছে এসো না'।
  • bozo | 129.7.152.96 | ২৭ এপ্রিল ২০০৬ ২১:০৭564086
  • (৩)
    শহর থেকে নদীর দূরত্ব দেখা ছিল প্রধান কাজ। বর্ষায় এলেই লোকে চলে যেত তিস্তার স্পারে। জল কতটা উঠল, পার কত টা ভাঙ্গল। জুবিলী পার্ক টা থাকবে, না ডুবেই যাবে। বিকেলে আপিস-আদালত ফেরতা বাবু জল দেখে এলেন। সংসার সেরে অলস দুপুরে গিন্নী রা দেখে এসেছেন তিস্তার জল। আমাদের তো মন হলেই হল, সাইকেল নিয়ে সোজা স্পারে। বছর বছর জল দেখতে গিয়ে কেউ মারা যেত। কেউ ঘূর্ণী তে পড়ে তলিয়ে যেত, কেউ বা পিছলে গিয়ে স্পারের পাথরে ধাক্কা খেয়ে। তখন শহর ছিল ছোটো, প্রতি টা মৃত্যু আমাদের নাড়া দিত, অবসাদ গ্রাস করত, সবাই প্রায় সবাইকে চিনতাম, শহর ব্যাপী শোক হত। খবরের কাগজের হারিয়ে যাওয়া পাতায় আজো প্রতি বছর এক-দুই খান মৃত্যুর খবর দেখি। আজকাল মনে হয় না শোক-সন্তপ্ত পরিবার বাদে কাউকে তেমন নাড়া দেয়। শহরের লোকেরা কি আর সবাই তেমন ভাবে সবাইকে চেনে?
    আরো গর্ব হত আমরা যখন মাঝে মাঝে রংধামালী যেতাম জল দেখতে। তিস্তার আরো বিশদ খবর এনে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতাম। বন্ধুরা আগে থেকে বলে রাখত আগামী বার যখন যাবি তিস্তার জল দেখতে, আগে থেকে বলে রাখিস, আমরাও যাব। রংধামালী তে দেখা যেত তিস্তার ভাঙ্গন। গতবছর যেখানে দাঁড়িয়ে জল দেখেছিলাম পরের বছর সেটা ইন্দ্রজালে ভ্যানিশ হয়ে যেত। দূরে দেখতাম তিস্তা প্রোজেক্টের কাজ। বড় রা বুক ভরা আশ্বাস নিয়ে ঘুরতেন তিস্তা ব্যারেজ এর কাজ যেদিন শেষ হবে সেদিন কোনো ভয় থাকবে না। ব্যারেজের কাজ অনেক দিন-ই শেষ হয়েছে। খোঁজ নেওয়া হয় নি ভয় রয়ে গেছে না কি চলে গেছে।
    বর্ষায় শহরের বাহুল্য ছিল টেলিফোন। তখন তিন ঘরের টেলিফোন নাম্বার। কাল বেকেলাইটের সেট। রিসিভার এত ভারী যে কাউকে মাথায় জোরে মারলে মরে যাবে। ডায়ালিং এর কোনো প্রশ্নই ছিল না। ফোন তুলে সোজা অপারেটর। নাম্বার জানার দরকার-ও নেই। অমুক কাকুকে দিন বললে অপারেটর নিজেই নাম ও পদবী জেনে নিয়ে প্লাগ গুঁজে দিতেন। ডাক্তার বাবুদের নাম্বার ছিল তাদের মুখস্থ। কে সি দাশের মিষ্টির দোকানে ডায়াল ফেসিলিটি সহ একটা সুন্দর লাল ফোন ছিল। আমি অনেক দিন ধরে সেই রকম ফোনের জন্য বায়না করতাম। বাড়ীর কাল ফোনটা অতি বিচ্ছিরি লাগত। শেষে একদিন দোকানে আমায় ঐ লাল ফোন থেকে বাড়ীতে ফোন করতে দেওয়া হয়েছিল বোঝানোর জন্যে যে ঐ নম্বর গুলো ঘুরিয়ে কিছুই হয় না। ওখানেও কোনো কাকু বা কাকিমা কে বলতে হয় কানেকশন দেবার জন্য। ফোনের আরো মজা ছিল উড়ো কল। আমাদের পিছনের বাড়ীর পানু দা হন্ত দন্ত হয়ে এসে বলত জরুরী ফোন আছে। তারপরে ফোন তুলে জিগ্গেস করত আপনার দোকানে নাটবল্টু আছে? সেটা দেখে আমরাও শিখেছিলাম। আরো শিখেছিলাম পাড়া থেকে গালাগালি। বাড়ী তে প্রয়োগের সুজোগের অভাবে টেলিফোন তুলে অপারেটর দের বলে দিতাম। অতি সহজেই ধরা পড়েছিলাম। তখন বাজাজ বাল্বের অ্যাড আসত 'ম্যাঁয় যব ছোটা বাচ্চা থা/ বহুত শরারৎ্‌ করতা থা/ মেরী চোরী পাকড়ি যাতি/ যব রোশন হোতা বাজাজ'। এই ভাবে আমাদের-ও সব চুরী ধরা পড়ে যেত।
  • d | 61.246.76.168 | ০১ জানুয়ারি ২০০৭ ২০:২৫564087
  • এই থ্রেডটায় বহুদিন কেউ লেখেনি। শহর থেকে শহরের গল্প ফুরিয়ে গেল নাকি?
  • Du | 67.111.229.98 | ০৩ জানুয়ারি ২০০৭ ০০:৪৪564088
  • দারুন ! পলকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সেই লিচুর ছায়া , কলাওয়ালার সেই 'মাইজী , ইয়ে তো মক্‌খন হ্যয় মক্‌খন', মিশনের লাইব্রেরীতে পড়া 'তুষাররানী ও সাত বামন',বিকেলে সেই বিরাট বড় বিলের ধারে ঢিল ছুড়তে যাওয়া , মিশনারী হাসপাতালের ভয় ভয় লাশঘর , পাল্লা দিয়ে লজ্জাবতীর চোখ বোজানো সবই মনে পড়ে গেল।
  • Suhasini | 203.123.181.130 | ০৩ জানুয়ারি ২০০৭ ১২:৪৩564089
  • Du,

    "তুষাররানী", নাকি তুষারমালা?
  • Du | 67.111.229.98 | ০৩ জানুয়ারি ২০০৭ ২২:০০564092
  • গুলিয়ে ফেলেছি :-) তুষারমালাই তো।
  • RATssss | 195.68.73.197 | ০৩ জানুয়ারি ২০০৭ ২২:০০564091
  • জীবনের প্রথম ২৫ বছর ধরে একটাই গ্রাম্য শহর.. শহর বলা ভুল, শহরতলী... রহড়া - খড়দা। বড়মা নাকি গোলাপী রঙের আমাকে আর মা'কে বলরাম হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছিল। তখন নাকী বোঝাই যায়নি আমি এতটা দুনিয়া ছাড়া শয়তান হব। তবু বড় হয়ে আজ ৫ বছর রহড়া যাওয়াই হয়নি।
    স্টেশন রোড কে কেন লোকে বড়রাস্তা বলে, আজও জানি না। পাঁচ সাত বছরে একবার করে পীচ হয়, আর তখন সবাই মিলে সাঁ সাঁ করে সাইকেল চালানো। আমার দখলে ছিল জ্যাঠার প্রথম কলকাতায় এসে কেনা সেকেন্ড হ্যান্ড ফিলিপস সাইকেল। মধ্যের তিনকোনা কালো খাঁচাটা ছাড়া বাকী আর সবই পাল্টানো হয়ে গেছে তার। একমাত্র আমি চালালেই তার চেন পড়ে যেত না। ভবনাথের মেয়েদের দঙ্গল দেখলে সাইকেলের ভাঁজ মারা বেড়ে যেত। প্যান্টের পায়ের কাছে কী করে যেন ছিঁড়ে যেত খালি। মন্টুদা বলতো, শয়তানির ছেঁড়া, সারাতো না। টেলারিংএর একটাই দোকান ছিল তখন, মন্টুদার দোকান। বাবার সঙ্গে আমিও ডাকতাম মন্টুদা। (আজ তার ছেলে দোকান চালায়, তাকেও সকলে কেন যে মন্টুদা-ই ডাকে কে জানে)। রহড়ায় একটা বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হল ছিল, শ্রীমা। অনেকদিন পরে সেটা খুলেছিল আবার, দিদি আর দিদির বন্ধু বনানীদির সঙ্গে গিয়ে লালু ভুলু দেখেছিলাম। আমার থেকে দিদিই অনেক বেশী কেঁদেছিল। সে সিনেমা হল বার ৩-৪ বন্ধ খোলা হয়ে এখন নাকি ফ্ল্যাট বাড়ী হয়ে গেছে।
    দিদি-র ছিলাম আকি চলনদার। দিদির আরেক বন্ধু বীথীদির বাড়ী যাওয়া ছিল খুব মজার। অন্তুদের সঙ্গে দক্ষিনপল্লীর মাঠে ক্রিকেট খেলার হাত্‌ছানি তো ছিলই। যাবার পথে একটা বড় নর্দমা লাফ দিয়ে পার হতে হত। কে জানে কেন ঐ লাফটা ছিল ভারী মজার।
    আর ছিল জহরদার ছিল মুদিখানা। হরিসাহার দোকান কিন্তু অতি সহজেই জহরদার দোকান হয়ে গেল। তবে সে বিশাল ভুড়িওয়ালা জহরদা হঠাৎ করে পাতলা রোগা কি করে হয়েছিল, তা আজও রহস্যময়।
    তপাদার ছিল ইলেকট্রিকের দোকান। গীতা ইলেকটিরিক এন্ড সাউন্ড সার্ভিস। পিকনিকের সময় মাইক ভাড়া নেবার দোকান। তপাদার কুচুটে ভাই বাপী কে দলে নেওয়া হত মাইক ফ্রী করতে, তারপরে ভ্যান রিক্সার সামনে মাইক বেঁধে, তারস্বরে বাজাতে বাজাতে নীলগঞ্জ।
    শুটি বাবুর ছিল হরিসভা। তপাদার মাইক বেঁধে তাদের হরি-সংকীর্তন হত ঠিক আমার পরীক্ষার আগে। যতো বাবা-জ্যাঠাকে বোঝাই, এত মাইক বাজলে পড়ায় মন বসে না, তাই রেজাল্ট অত খারাপ হয়, তবু তারা মানে না। যেদিন মাধ্যমিক শেষ হল, তপাদার মাইক ভাড়া করে ছাদে ফুল ভল্যুমে। পাশের বাড়ীর ঝর্নাদির উচ্চমাধ্যমিক কদিন পরেই, তার বাবা মাইক বাজানো বন্ধ করতে বলতে আসামাত্র ক্যাবলা মুখে উত্তর "বাবা বলেছে, মনদিয়ে পড়লে বাইরের শব্দ কানে ঢোকে না। আপনি ঝর্নাদিকে মনদিয়ে পড়তে বলুন' - রাত্রিবেলার প্রবল ক্যালানি বাবার কানে আমার জ্ঞান দানের সংবাদ পৌছনো মাত্র।
    বাবার ছিল বই-এর ব্যবসা। সবাই বলতো আমার নাকি চাকরির বাজারে কোনো চিন্তা নেই, বাবার দোকান আছে। তাই হয়তো জেদ চেপে গেছিল, বাবার দোকানে কোনোদিন দোকানদারি করবো না। তবে সেই দোকানের কাউন্টার থেকে কলেজস্ট্রিট চেনা -- পরের শহর কলিকাতা।
    রহড়ার রামকেষ্টো মেশিনে পড়তাম। রমেন বাবুর ছাত্র ছিলাম বলে জিজি খাতা দেখলে নম্বর কম পেতাম। কেষ্টার মেশিনের অন্য গল্প। তবে, কালীপুজোর রাতে NRD র বারান্দায় চকলেট বোম ছোঁড়া মহান কাজ দায়িত্ব নিয়ে পালন করতাম।
    বাবার সিজন টাইমে ছিল খুব কাজ। মা আর আমি যেতাম সন্ধেবেলা বাজার করতে। আজও মনে আছে, ১৮ টাকা কেজি পাঁঠার মাংস। ১২ - ১৪ টাকায় মাছের কিলো। ফেরার পথে ফুলকপির চপ বা অজন্তা সুইট্‌স্‌এর বাদশাভোগ দুজনে মিলে খেতে খেতে বাড়ী ফেরা।
    মা খালি বস্ত্রবিপনিতে গিয়ে শাড়ি দেখতো। কিনতো না। কাকুগুলো কিনতে বলতোও না। মাঝে মধ্যে রাস্তা থেকে ডাক দিতো, বৌদি নতুন শড়ি এসেছে। শ্রীনিকেতন বড় দোকান, তারা মা'কে শাড়ি দেখাতো না। কাকুদের একবার জিগিয়েছিলাম - তোমরা কেন দেখাও? কিছু বলেনি, শুধু হেসেছিল।
    চিত্রাঙ্গদার লোকটা নাকি খুব আর্ট মেরে ছবি তুলতে পারত।
    তা শিক্ষিত বেকার হয়ে টাই নিয়ে গেছিলাম তার কাছে পাসপোর্ট ছবি তুলতে, মন্দ তোলেনি। তবে তার পরে একটা কোমর অবদি ভালো ছবি তুলে দিতে বলেছিলুম। সে ব্যাটা আমার চপ্পল পড়া টাই ঝোলানো একখান কমিক ছবি তুলে দিলে। তবে চিত্রাঙ্গদার মেয়ে এতো কেন দেখতে সুন্দর হয়েছিল, তা আজও জানা হল না।
    গোপালদার দোকান-ই তখন ছিল আমাদের মিউজিক ওয়ার্ল্ড বা ক্রসওয়ার্ড। প্রচুর গান শোন আর মাঝেমধ্যে কেনো ক্যাসেট। শুনে ফেরত দেওয়াও চলতো। পাসেই ছিল মাসির দোকানের লেবু চা আর লাল সুতোর মনি বিড়ি। সত্যদার না চলা দোকানে চলতো খচরামির প্ল্যান। খুব মন খারাপ হলে ছিল একটু দুরে গঙ্গার পার। রাসমনির ঘাটে নৌকো আসতো জোয়ারে। নাথুপাল ঘাটের শ্মশানে ধোঁয়া দেখলেই একবার উঁকি মারা চাই, চেনা পরলে ফ্রিতে চা - কচুরি। কখনো সখনো দিন দশেক পরের ধোঁকার ডালনা।
    শেষবার যখন গিয়েছিলাম, বাড়ীর পেছনের বড় মাঠটার এককনাও আর অবশিষ্ট ছিল না। অভেদানন্দ চ্যারিটেবল ইউনিটের শিশুউৎসব ২-৩ মাঠ পরিবর্তন করে এখন গভ: কলোনির পুটকি মাঠে।
    তবে ফুলের মেলা হয়ে গেছে CPMএর উৎসব। আর বইমেলা কং-এর। শিশু উৎসব চাঁদার অভাবে তাই ধোঁকে।

  • shrabani | 220.227.146.21 | ০৪ জানুয়ারি ২০০৭ ১২:১৩564093
  • ছোট্ট শান্ত শহর রুরকী, আমার স্কুল জীবনের উঙ্কÄল দিনগুলোর সাক্ষী। অবশ্য যবে থেকে উত্তরাঞ্চল হয়েছে, সে আর শান্ত নেইকো মোটে। তবু সে এখনো আমার অন্যতম ভালোবাসার শহর।
    লাল টুকটুকে ছিল আমার প্রিয় সাইকেল টা আর পাশে সবুজ রথে প্রিয় বন্ধু অর্চনা, সারা শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে চক্কর দিতাম দুজনে ছুটির দুপুরগুলোতে।সেই দিন ছিল স্বপ্নের দিন।
    ছবির মত ক্যাম্পাস তিনটে, সব খানেই ছিল বন্ধুদের কারো না কারোর বাস, অতএব আমাদের আনাগোনা। এছাড়া ছিল সিভিল লাইন্স। পুরোনো শহর ও ছিল একটা যেখানে সপ্তাহান্তে হাট বসত সস্তা তরিতরকারী, মাছ তবে তা ছিল ঘিঞ্জি ও সেখানে যেতে গেলে হরিদ্বার রোড পার করতে হত যেখানে হরদম বাস আর লরীর ভীড় তাই আমাদের পুরোনো শহরে একা একা যাওয়া মানা ছিল।
    আমাদের ক্যাম্পাস ছিল ছবির মতন, পুরোনো বাড়িগুলো আমলের বৃটিশ হার্টমেন্ট, নতুনরাও ঐ ধরনে বানানো। ফুলে ফলে ভরা বাগান ঘেরা, শান্তির নীড়। কালো পিচের রাস্তা কখনো সরু, কখনো বা চওড়া, দুধারে প্রাচীন মহীরুহর (সেই Thomso-র আমলের হবে)ডালপালা শিকড়ের সমাবেশে ছায়াঘন।
    শহরের মাঝ বরাবর ধীরে বহে সেই বিখ্যাত ক্যানাল বা নহর যাকে কেন্দ্র করে উনবিংশ শতাব্দীতে শুরু হয় ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজ, গোড়াপত্তন হয় রুরকীর।
    বারো মাসে সতেরো পার্বন কিছু না কিছু লেগেই থাকত আর ছোটো জায়গা বলে অতি অকিঞ্চিৎকর অনুষ্ঠানও উৎসবের আকার নিত। স্কুলের ফেটে শুধু ছাত্রছাত্রীরা আর তাদের বাবা মারা নয় পুরো শহর আসত অতিথি হয়ে, একই জিনিষ হত ইউনিভার্সিটীর অনুষ্ঠানে। শুধু আর্মিতে তখনই কড়াকড়ি একটু বেশী ছিল আর এখনতো তা প্রায় অগম্য হয়ে উঠেছে।
    সারাবছর অপেক্ষায় থাকতাম শীতে ক্লাস পিকনিকের। বড় ক্লাসে বায়োলজীর ল্যাব থেকে নিয়ে যাওয়া হত হার্বেরিয়াম সংগ্রহে দেরাদুনের রাস্তায় FRI র আশেপাশের পাহাড়ীতে। সেও পিকনিকেরই মত।
    মাঝে সাঝে সরধনার চার্চ বা দিল্লীর ট্রেড ফেয়ারের ট্রিপ ও হত কোনো কারনে সিস্টারের মেজাজ শরীফ থাকলে। দল বেঁধে হারিয়ে যাওয়ার দিন ছিল সেই নানা রঙের দিনগুলি।
    সিভিল লাইন্সে প্রিয় ঠেক ছিল সবেধন নীলমনি ইংরাজী বইয়ের দোকান আর গোলগাপ্পার স্টল।
    না কিনলেও বইয়ের নতুন স্টক চেক করা একটি অবশ্য কর্তব্য ছিল। দোকানের সামনের দিকে ছিল পড়ার বই ও অন্যান্য জ্ঞানের বইপত্র।ছোট্‌ত দরজা দিয়ে পেছনের কুঠরিতে ছিল আমাদের পছন্দের বই। এমন ভাবে হানা দিতাম, মনে হত দোকান বুঝি আমাদেরই। আঙ্কল বা ভাইয়া যেই থাকুক মুখে তাদের প্রশ্রয়ের হাসি। ওখানেই মিটিং করে ঠিক হত পরবর্তী জন্মদিন কার আর তাকে কি বই দেওয়া হবে! যে বই দেওয়া হবে সেটা তো সব হাত ঘুরবে তাই সবার সম্মতি ছিল একান্ত জরুরী!

    ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্রিল ছিল রুরকীতে ফুলের মরশুম। সারা রুরকী ভরে যেত (এখনও যায়) সাজানো, বন্য নানারকম ফুলের সুগন্ধে। সাথে ছিল আমের মউলের পাগল করা গন্ধ। ভোমরারা প্রায় মাতালের মত রাত দিন গুনগুন করে এ ফুলে ওফুলে ঘুরে বেড়াত আর সেই মাতলামির ছোঁয়া এক সুন্দর ভালোলাগা হয়ে ছেয়ে যেত বাসিন্দাদের মনে।
    আজও তাই ছুটে যাই চির ভালোলাগার এই শহরে বসন্ত দিনে অন্তত দুদিনের জন্য হলেও।
    আর এই সময়টাই ছিল ফাইন্যাল পরীক্ষার সময়, বছরের সবচেয়ে কঠিন কাজটাই করতে হত এই অপুর্ব সময়ে। তবু খারাপ লাগত না। সবার তাড়া ছিল ভালোয় ভালোয় পরীক্ষাটা শেষ করে প্রকৃতির উৎসবে মেতে যেতে। পরীক্ষার শেষ দিনে দুপুরে বাড়ি ফিরে নাকে মুখে কিছু গুঁজেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম। ক্যাম্পাসের শেষে একটু খালি ঘাস বিছনো জমি একটু উঁচুতে। সেখান থেখে দুরে মুসৌরীর পাহাড়ের চুড়ো, মার্চেও অল্প বরফ লেগে আছে। সেখানে বসে মুঙ্গফলীর খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে আমাদের আকাশপাতাল গল্প, যতক্ষন না সুর্য অস্ত যায় ততক্ষন। তারপর ঘরে ফিরে না পড়া গল্পের বই হাতে বিছানায়। আহা! লম্বা পরীক্ষাটা সদ্য দিয়ে উঠল, আজ আর ওকে কেউ কিছু বোলোনা!

  • r | 61.95.167.91 | ০৪ জানুয়ারি ২০০৭ ১৪:৫৪564094
  • র‌্যাট...., ভুল হলেও হতে পারে, তুমি কি সমীরদার পুত্র?
  • i | 202.128.112.253 | ০৪ জানুয়ারি ২০০৭ ১৮:৪২564095
  • তুষারকণা আর সাত বামন...
  • Du | 67.111.229.98 | ০৪ জানুয়ারি ২০০৭ ২১:৩৫564096
  • জিভ কাটার smiley টা লাগবে :-)), তবে বুঝতেই পারছো আমি একেবারে hopeless case নিজের নামটাই পুরো মনে নেই;-) ।
  • RATssss | 195.68.73.197 | ০৫ জানুয়ারি ২০০৭ ০২:২১564097
  • না রাঙ্গা ভাই,
    সমীরদার বিবেকানন্দ বুক হাউস তো ছিল ভবনাথের উল্টোদিকে, প্রচুর বই পরেছি সমীরদার দোকানের বাইরের বেঞ্চে বসে, সঙ্গে ভবনাথের মেয়ে দেখা ফ্রী।

    বাবার দোকান ছিল কলেজস্ট্রীটে। ছোট্ট দোকান ছিল ট্রাম রাস্তার পারে। প্রাথমিকের বই ছাপত বাবা। মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে প্রতি বছর এক দু মাস দোকানে গিয়ে বাবা কে সাহায্য করতে হত। ট্রাম রাস্তার ফাঁক দিয়ে কলকাতার সঙ্গে সখ্যতা শুরু। টুং টাং শব্দ তুলে টানা রিক্সাওয়ালার ছুটে যাওয়া! ঠ্যাং ঠ্যাং করে কেন যে ট্রাম ঘন্টা বাজায়? ঐ ঘর-ঘর প্রচণ্ড শব্দ করে পাড়া কাঁপিয়ে যাবার সময় ঘন্টা মারার গুরুত্ব টা কোথায় কে জানে?
    শেয়ালদা থেকে হেঁটে কলেজস্ট্রীট, দুপুর বেলা সময় কাটাতে কলেজ স্কোয়ার নয়তো কফি হাউস, বইপাড়ায় দাদা দিদি কাকুর সংখ্যাটা দিনে দিনে বাড়তে লাগল আর বাড়ল হৃদয়ের যোগাযোগ। ধীরেন দাদুর কাছে শুরু হল ছবি আঁকার গোড়ার পাঠ, সত্য কাকুর দোকানে গল্পের বই, আরো কত কত টুকরো স্মৃতি। সোমনাথ ধরে নিয়ে গেছিল নান্দীকারে। (এই সোমনাথ পরে মানবী নামে বিখ্যাত হয় - প্রথম বাঙ্গালী sex change করে ছেলে থেকে মেয়ে হবার গৌরবে)মাস ৬ চেষ্টার পরে গৌতমদা জবাব দিলে, আমার দ্বারা নান্দীকারের লেভেলের নাটকে ম্যাচ করানো সম্ভব নয়। অবশ্য অনেকের সঙ্গে পরিচয় হল, দেবশঙ্কর, স্যারের (রূদ্রপ্রসাদ) ক্লাস, ঝুলন, স্বাতীলেখাদি... অনেক কিছু শিখলাম, কিছু না হোক, নাটক দেখার রোগটা ভালো করে ধরে গেল। শ্যামবাজার থেকে একাডেমী সব-ই নিজের এলাকা।

    দেখতে দেখতে কলেজও শেষ হয়ে গেল। ২ বারের চেষ্টায় সুযোগ মিলল ISI তে। তখন বরাহনগর, কাঁচের মন্দির, দক্ষিনেশ্বর হয়ে গেল ঠিকানা। ISI-এর বটগাছের তলায় কারো একটা বাঁধা গান গাইতাম সবাই মিলে,
    In our native villege, there was a banyan tree
    We used to sit under it.
    We used to sit under, with a cow and some wonder
    We are in love under it.


    ২ বছরের মেয়াদ ফুরাল, চাকরী শুরু। কলকাতা প্রেম তবু রয়েই গেল, এবার বিভিন্ন বার - এই যা
  • RATssss | 195.68.73.197 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৭ ১৫:২৯564098
  • অনেকদিন বাদে একটা শহর বেড়িয়ে এলুম। ব্রুসেল্‌স। পুরোনো নতুন সব মুর্তিওয়ালা বাড়ি-র সামনে ছবি তোলা। খাজার খাজা তস্য খাজা - ম্যানিকিন পীস -এর হিসুর ছবি ... আর অটোমিয়ামের লিফট চরা। খাওয়া দাওয়া টা অসা... বিশেষত: sea food
    প্যারি থেকে গেছিলাম বলে দুটো ব্যাপার প্রভূত আনন্দ দিয়েছে।
    ১। সাধারন লোকে ইংরাজীটা বেশ ভালো-ই বলে.... লোকেরে জিগিয়ে হতাশ হতে হয় না।
    ২। খাবার দোকানের মেনু কার্ডে ছবি সহ খাদ্যের ডিটেল

    জনগনের গ্যানের জন্য - মাত্র 4 ইউরোর ডেলী টিকিটে ২ জনের সারাদিন ট্রেন বাস ট্রামে যতখুশী, যেখানে খুশী। -- না কাটলেও কেউ দেখার নেই (উইকএন্ড স্পেশাল)
  • pipi | 141.80.168.31 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৭ ১৫:৪৮564099
  • ব্রাসেলস একটি খাজা শহর। আমার মতে। ওর চে এমনকি লুক্সেমবুর্গ সিটিও ভাল।
  • S | 61.95.167.91 | ১৫ জানুয়ারি ২০০৭ ১৭:৫২564100
  • কলকাতা শহরে পোমো কবির আধিক্য, এঁরা প্রায়শই ট্রামের ঘন্টি শুনতে পান না, উদা: জীবনানন্দ দাশ। অনেক অন্যমনস্ক লোকও থাকেন, যাঁরা অন্যমনস্ক হবার সময়ে প্রধানত ট্রামলাইনের মাঝখান দিয়েই হাঁটেন। উদা: পরিণীতা সিনেমায় বিদ্যা বালন। এই ধরণের লোকেদের যদিও ঘন্টি বাজিয়েও সতর্ক করা যায় না, তবু ট্রাম কোম্পানি, কেবলমাত্র নিজেদের ক্লিন রাখার উদ্দেশ্যেই ট্রামে ঘন্টি বাজান। এই ঘন্টির জন্যই খুব বেশি লোক আজ পর্যন্ত ট্রামে চাপা পড়ে মরেন নি। উদা: আমি।
  • d | 122.162.104.146 | ২১ মে ২০০৭ ২১:০৩564102
  • র‌্যাটস্‌স্‌স্‌স,

    এখানে পুনে শহরটার আঁখো দেখি হাল একটু লিখে দিও তো। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহর বলে, আর শুনেছি খুব সেফ শহর, চুরি ডাকাতি ছিনতাই নেই --- আমার বেশ জানার ইচ্ছে আছে।
  • d | 122.162.104.146 | ২১ মে ২০০৭ ২১:০৭564103
  • নোরা জোন্সকে আমার হেব্বি লাগে। "কাম অ্যাওয়ে উইথ মি' .... আহাহা।
  • RATssss | 75.51.75.129 | ২৩ মে ২০০৭ ১৩:৪০564104
  • প্রাচ্যের অক্সফোর্ড পুনে। বেশ কটি নাম করা স্কুল কলেজ। আর সবার উপরে Symbiosis। বোম্বের মতন ব্যাস্ততা নেই, হিউমিডিটির চাপ নেই, সন্ধ্যে হলেই মৃদুমন্দ বাতাস... রাত্রে একটা হালকা চাদর... শীত কালে দিনের বেলা বেশ গরম হলেও রাতে বেশ ভাল ঠাণ্ডা। ২০০২ তে প্রথম যখন গিয়ে পরেছিলাম পুনে তে... পরিষ্কার চকচকে রাস্তাঘাট দেখে বোমকে গেছিলাম... ২০০৫-এর রেকর্ড বর্ষনে তার এমন বেহাল হল যে আজও সারল না।
    বদ্‌নাম গুলো আগে করে নি - প্রচণ্ড খরুচে জায়গা। অটো ওয়ালা গুলো ডাকাত আর বাসের ড্রাইভার গুলো জমিদার... তাই ২ বা ৪ চাকা বিনা পুনে তে থাকা যায় না। মুলা ও মুথা নামের দুটো মশার বংশ বৃদ্ধিকারি নদীর পুনেতে সঙ্গম। ঘোর বর্ষায় তার কী রূপ। আর্ধেক দিন হোলকার ব্রীজ বন্ধ। এই বুঝি ভেসে গেল। মারাঠিদের শিবাজী প্রীতি-র কোন শেষ নেই ... চাকরি ক্ষেত্রে মারাঠি টানাটানি বা ঘাটি প্রবলেম হয় অনেকসময়
    এগুলো বাদ দিলে পুনের সব কিছু সুনাম... রাত বিরেতে অতি সাহসী জামা কাপড় পরা ক্যাট্‌খুকিদের Zion এ নেচে কুঁদে বেসামাল হয়ে বাড়ি ফিরতে অসুবিধা নেই। ছোটখাট চুরি ডাকাতি হয় না। কাজের বাই-রাও অত্যন্ত বিশ্বাসী ... নিশ্চিন্তে বাড়ির চাবি তাদের হাতে দিয়ে রাখা যায়।
    যাদের কথায় কথায় মন খারাপ হয় তাদের জন্য হরেক রকম মন ভাল করার জায়গা খুব কাছাকাছির মধ্যে।
    খরগপাশলা লেক (পুনের জল জোগান দেয়) - তার সঙ্গে সন্ধের পর থেকে মাঝরাত পর্যন্ত প্রায় আঁধারি তে শুধু বসে বসে স্বপ্ন দেখা।
    মুনলাইট হাইকিং-এ মাঝরাতে হেঁটে সীঙ্গগর ফোর্ট... উপরে পৌছে মনের আনন্দে টক দই যতখুশি
    মাঝশহরে পাতালেশ্বর গুহা মন্দিরে ১০ মিনিট চুপ করে বসে থাকলেই মন শান্ত। মেডিটেশনের মাধ্যম হিসাবে ওঁ মন্ত্র জপতে পারলে তো কথাই নেই। প্রান দিয়ে উপভোগ করা যায়।
    শনিওয়ার ওয়ারা (saniwar wada) তে লাইট&সাউণ্ডে মারাঠা বিজয় গীতি - একবার দেখা যায়।
    মারাঠি ভাষায় অনেক কথা প্রাচীন বাংলার সঙ্গে মেলে... যদিও নাটক দেখতে ভাষা জানতে হয় না ... যে কোন রঙ্গমন্দিরে রাত ৯ টায় ঢুকে পরলেই হল।
    আর যেকোন টাইম-আউটের জন্য তো আছেই - আইনক্স, ই-স্কোয়ার, অ্যাডল্যাব।
    পার্কস্ট্রীটের খাওয়াদাওয়া - ঢোলেপাটিল রোড আর চাঁদনি চক আছে তো!
    গরিয়াহাটের শপিং চাই? -- আছে লক্ষ্মীরোড। নিউ-মার্কেট-এস্‌প্লানেড চাই?-- আছে এম.জি.রোড ও ডেক্কান। এছাড়াও আছে গণ্ডা গণ্ডা এইয়া বড় বড় শপিং জাংশান পুরো পুনে জুড়ে।
    সপ্তাহান্তে একটু দুরে -- মহাবালেশ্বর - শিরডি - গোয়া (এক এক উইকএণ্ড আলাদা আলাদা বীচে হলে মন্দ কী - সঙ্গে ফেনী ও চিংড়ী ভাজা) - বর্ষাকালে লোনাবলা, খাণ্ডালা মন্দ নয়। ঔরঙ্গাবাদ মাত্র ৫-৬ ঘন্টা বাসে -- অজন্তা - ইলোরা কখনো পুরানো হয় না।
    প্রচুর বাঙ্গালী... গোটা পুনেতে ৩৬ টা দুর্গা পুজো - ছোটো বড়ো মিলিয়ে। কালী মন্দির কে কেন্দ্র করে সবকটা বাঙ্গালী পার্বন... মায় বিপদ্‌তারিনী পুজা, নীলের পুজা... রবীন্দ্র নজরুল সন্ধ্যা পর্যন্ত... যোগাযোগ করলেই হল, দলে ভিড়তে কোন অসুবিধা হবে না।
    প্রায় সমস্ত ভাল ভাল মাছ পাওয়া যায় - খারকী বাজার, শিবাজী মার্কেটে।
    গরমকালে আঙ্গুর খুব সস্তা --- ১০ - ১৫ টাকা কিলোতেও পাওয়া যায়। তবে দরদাম করে কিনবেন।
    আখের রস খেতে যারা বেজায় পছন্দ করেন তাদের জন্য এম.জি.রোডের পিরামিডের সামনে এইসান ধাবকাই গ্লাস - মাত্তর চারটাকা।
    কলকাতার থেকে ৪-৫ গুন দামে ১০ গুন ভাল চিকেন রোল - ঢোলে পাটিল রোডে কপিলাজ-এ।
    ভাল ফুচকা - আউন্ধে ওজোনের সামনে
    কোনোদিন ভুলতে না পারা সীতাফল (আতা) মিল্কশেক - কনওয়াট প্লেসের পাশে ফুট্‌পাতের জুস-শপে (রাত ৮টার আগে ও ১০টার পরে না পাবার সম্ভাবনা)
    আর যা না দেখলে পুনে দেখা শেষ হয় না ---- ন্যাশানাল ডিফেন্স একাডেমী। পরিচিত কাউকে না পেলে ঢোকা যায় না... আর না ঢুকলে বোঝা যায় না আমাদের দেশের রক্ষাকারীরা কিভাবে শিক্ষিত হয়। কোথায় আমাদের কলেজ জীবন আর কোথায় NDA
    গোটা ১০-১২বিই কলেজ ধরে যাবার মতো পুনে বিশ্ববিদ্যালয় কম যায় কিসে!!!
  • `' | 10.153.103.97, 10.150.50.89, 10.150.50.89, 203.91.207.30 | ২৪ মে ২০০৭ ১৫:০৭564105
  • সার দিয়ে ৪টে ঘর মিলে একটা ইস্কুল টাইপের ভাড়াবাড়ি, আশপাশে কচুবন, ছোটো দুটো পুকুর আর প্রচুর গাছ। গাছের ছায়ায় ঝিমঝিমে অন্ধকার একটা শীতলতা লেগে থাকতো সবসময়। দাদা ওর মধ্যেই সাঁতার শিখেছিলো, আমার হয়ে ওঠেনি। তার আগেই নতুন বাড়িতে চলে এসেছিলাম আমরা। মা সক্কালবেলা ঘর মুছে দেবার পর মেঝেতে সূর্য দেখতে পেতাম মনে আছে। আর মাটি খেতাম প্রচুর হারে, জান্‌লার নিচ থেকে ধসিয়ে দেবার বন্দোবস্ত পাকা করে ফেলেছিলাম প্রায়। সারির একদম শেষ ঘরটা ছিলো পুরোনো [ বাক্স, তোরঙ্গ, দোলনা, বেতের ঝুড়ি, ফ্লাস্ক ] ও আরো নানাবিধ সাংসারিক (অ)প্রয়োজনীয়তার সময়ের দৌড়ে হেরে যাওয়ার উত্তম ইতিহাসঘর। তবে ওটিকে ভামের ঘর বলে চিনতাম আমরা। অবশ্য হনুমান ও ওখানে ভাঙ্গা শার্সিতে প্রসাধন সারতো মাঝেমাঝেই। আর বাকি যা স্মৃতি তা কিছু অগৌরবের। যেমন, রাতে ঝড়ের আওয়াজে দারুন ঘেবড়ে যাওয়া ও তদানুসঙ্গিক ভূত। কিম্বা সভ্যতার অধিকারবলে আমি যে জামাকাপড়ের সঙ্গত দাবিদার, সে সবে পাত্তা না দিয়ে বাবা আমাকে এক(জানিনা একাধিক কিনা) সন্ধেবেলা কোলে করে নিয়ে চলে গেলো বাজার থেকে মিষ্টি আনতে। এখনো ভাবলে গা জ্বলে।

    আমাদের যখন নতুন বাড়ি তৈরী প্রায় শেষের দিকে, একদিন রিক্‌শা করে গিয়ে ফাঁকা ঘর গুলোতে খুব একপাক নেচে নিয়েছিলাম মনে আছে। মেঝে, দেওয়াল সব এতো মসৃণ ছিলো...
  • `' | 10.153.103.97, 10.150.50.89, 10.150.50.89, 203.91.207.30 | ২৪ মে ২০০৭ ১৬:৩৩564106
  • রোজ বিকেলে নিয়ম করে রিক্সা চড়ে গঙ্গা ধারে যেতাম তিন ভাই-বোনে। আমাদের ওখানে গঙ্গা প্রায় ৭৫০ মিটার চওড়া, একদিন স্বপ্ন দেখেছিলাম গঙ্গার উপর দিয়ে লরি, ট্যাক্সি সব ভেসেভেসে চলেছে। চট করে কলকাতা যাওয়ার উপায় খুঁজে পেয়ে বোকা'র মত ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। আবার যেকেসেই- লোকাল টেরেন।

    রিক্সা করে ফিরতি পথে, বাবা'র চেম্বারে টেবলের উপর আমি তবলা বাজাতাম। এখন গালবাদ্য, পাছাবাদ্য ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয় হলেও সেইযুগে তবলায় বসে তবলা বাজানোর মতো অনন্য ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে বাবা ২-৩ বছর পর আমাকে তবলা শেখার প্ররচনা দিয়ে থাকে, এবং ভুল করে। কারন বাকি সব কিছুর মতো ওটিও আমি শিখে উঠতে পারিনি। অবিশ্যি দোষ ওর একার না, আমি তখন নিয়মিত আলি আকবর খান বা বিলালের খামা'র (বিলায়েৎ খাঁ, আমার ভাষায়) সাথে টেবলায় সঙ্গত করতাম। এরকম কীর্তিতে সাধারনত বাবা-মায়েরা উচ্চপ্রত্যাশা করে ফেলেন।

    বাকি স্মৃতি বলতে ইশ্‌কুল, যেখানে আমি কেজি থেকে ফোর পর্যন্ত পড়েছি, সেখানে:

    ১। এক শু. নাম্নী মহিলা'র প্রতি অনামি আকর্ষন ও ২ ক্লাস এ উঠে এক বেঞ্চে বসতে না দেওয়া (না না, আমি কিছ্‌ছু করিনি)জনিত ক্ষোভ ও দু:খ। কেস এতদূর গড়িয়েছিল যে আমার বাড়িতে ঘোষণা: আমি শু. র মতো মেয়ে ছাড়া বিয়ে করবো না। যাগ্গে....
    ২। ইশ্‌কুলের ঠিক পিছনে একটা ঘাসে মোড়া খুব ছোট্টো মাঠ, যেখানে আরামসে ডিগবাজি খাওয়া যেত।
    ৩। ৩ ক্লাসে প্রেম নামক এক অবাঙমানসগোচর চিজ(আত্মা/পদার্থ) নিয়ে প্রখর বিশ্লেষণ ও সন্দিগ্‌ধচিত্তে যেকোনো সময় ক্লাসের যেকোনো ছাত্র/ছাত্রী-র মধ্যে এর প্রকোপ অনুসন্ধান। কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে যাওয়ায় হাল্কা কেলানি।
    ৪। এক টিফিন বেলায় শাশ্বতা আমাকে নিয়ে আপিস রুমে গিয়ে পেনে কালি ভরতে গিয়ে দোয়াত উল্টে মেঝেয় ফেলল, জানিনা কেন অনেক স্মৃতির মধ্যে এখনো এটা আমার কাছে একটা খুব আরামদায়ক
    স্মৃতি।
  • `' | 10.153.103.97, 10.150.50.89, 10.150.50.89, 203.91.207.30 | ২৪ মে ২০০৭ ১৭:৩২564107
  • আমাদের বাড়ি ছিলো কিছুটা উন্নাসিক গোত্রের: উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত, রায়/ঘটক/সেন ছাড়া হজম হতো না, তাই যখন কলকাতায় পড়তে এলাম গোপন উল্লাস হলো আশপাশে এতো সিনেমা হল দেখে, কষে যাছছেতাই দেখা যাবে। কিন্তু ঐ উন্নাসিকতা বোধহয় আমার মধ্যেও চারিয়ে গেছিলো, হলি-বলি তে বিশেষ সুবিধে হয়নি। তবে হস্টেল এ কিছুদিনের মধ্যেই জমে ক্ষীর- শক্তি বিড়ি বিনয় তাস নেরুদা গাঁজা(পরিমাণমতো) আমরাও কবি আর.সি (আন্দাজমতো)রাতের পার্ক স্ট্রিট এলুয়ার হুটহাট ব্যান্ডেল চার্চ হোলুব সদন ভাট ডিসি পুরন্দর... ওফ্‌ফ পূর্ণ নাগরিক। তবে দৌড় বলতে মধ্য কলকাতা থেকে সদন অব্দি হেঁটে। বনধ ও বৃষ্টি একসাথে হলে আমি ব্যাটম্যান সদৃশ ভাব নিয়ে একা রাজপথে হেঁটে বেড়াতাম।
  • a x | 192.35.79.70 | ২৪ মে ২০০৭ ২০:২৫564108
  • এই সুতোর লেখাগুলো খুব সুন্দর হচ্ছে, চলত থাকুক।
  • saa | 82.43.105.230 | ২৪ মে ২০০৭ ২২:২৩564109
  • সবার লেখা খুব ই সুন্দর আরো সব্বাই লিখুক
  • `' | 10.153.103.97, 10.150.50.89, 10.150.50.89, 203.91.207.30 | ২৫ মে ২০০৭ ১২:০৭564110
  • শুনেছি কলকাতার রাস্তায়- ড্রেনে জীবনের ফল্গুধারা বয়ে চলে, আমি কোনোদিন স্টেশন-পার্শ্ববর্তী "মায়া ক্লিনিক"এ কাজ করিনি তাই ঠিক বলতে পারবনা।

    আমার কলকাতার স্মৃতি বন্ধুদের সাথে আমার ব্যক্তিগত ইতিহাস, স্থানমাহাত্ম্য কতটা জানিনা। তবে একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো আমার হবু-বউ কে খুঁজে পাওয়া। :)

    কেজিপি দারুন পছন্দের জায়গা, একটা কমলা সাইকল চেপে গোল চৌকো যেমন খুশি ঘুরে বেড়াও, রাত ১ টায় আলু পরটা বা ডিমের পোচ খাও, কিম্বা ফ্লাড লাইটের আলোয় প্রাগৈতিহাসিক ষাঁড়ের ঘাস খাওয়া দেখে কিমাকার ডাইনামো ইত্যাদি... বেশ জাঙ্গলিক আরামে কাটানো গেছিল ওখানে। এখনো ফেরার কথায় যদি বুকে লাগে টান তো সে এখানেই।
  • `' | 10.153.103.97, 10.150.50.89, 10.150.50.89, 203.91.207.30 | ২৫ মে ২০০৭ ১৩:৩৪564111
  • হায়দ্রাবাদ উঁচুনিচু জায়গা, কলকাতাপেক্ষা পরিস্কার। মাধাপুর যাওয়ার জন্য পাঞ্জাগুট্টা কিম্বা মাসাব ট্যান্‌ক, ২ টো রাস্তাই বেশ খোলামেলা জায়গা দিয়ে গেছে। কে.বি.আর ন্যাশনাল পার্ক দুই ধার দিয়ে ২ টো রাস্তা যায়, কে.বি.আর বেশ ভাল, তবে ন্যাশনাল পার্ক নামটা যথেষ্ঠ বাড়াবাড়ি। এখানে ভালো বই বা গান-বাজনা-র দোকান নেই তেমন। সেই ক্রসওয়ার্ড, মুজ্যিকওয়ার্ল্ড। বর্ষাকালে শীতকালের থেকে বেশি ঠান্ডা পড়ে, দারুন ভালো বর্ষা এখানে।

    দেখি কতদিন থাকা হয়।
    ......................
  • shrabani | 190.190.70.214, 124.30.233.18 | ২৫ মে ২০০৭ ১৭:২৯564113
  • দিল্লীর কাছে স্যাটেলাইট সিটী, আসার আগে এভাবেই পরিচয় পেয়েছিলাম এই শহরের। প্রাথমিক আনন্দ আর উৎসাহ (কারন যে জায়গাটা থেকে আসছিলাম এখানে সেটাকে কিছুতেই শহর বলা চলেনা, চারিদিকে আদিবাসী গ্রামের ফাঁকে ফাঁকে কিছু টাউনশিপ, মরুদ্যানের মত। দুরে ট্রান্সপোর্ট নগর কিন্তু তাও কিছু বিশাল নয়, গাড়ীতে পাঁচ মিনিটেই তার এলাকা শেষ হয়ে যেত।) একটু থমকালে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হল, আসলে জায়গাটা কেমন! অফিস উঠে এখানে এসেছে তাও বেশী বছর হয়নি, অনেকেই দিল্লী থেকে যাতায়াত করে এবং তারা কেউই এই শহরকে বাসযোগ্য মনে করছেনা তখনও। আমার আসার আগে আমার কত্তাকে আসতে হয়েছিল। তার কাছে শুনলাম যে রাত্রে পায়ে হেঁটে বেরনো একেবারে মানা, চোর ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্য ! এখানকার জল এমনই ভালো যে সব কাপড়জামার বর্ণবৈষম্য ঘুচিয়ে সবাইকে হলুদ করে দেয়! যাকে বাংলায় বলে হার্ড ওয়াটার তাই, খাওয়ার জন্য বিসলেরী কিনতে হয়। চারিদিক ফাঁকা, অবশ্য অনেক নতুন নতুন বাড়ী অফিস বিল্ডিং আসছে আর সে কারনে সর্বত্রই ধুলায় ধূসর। বাড়ীভাড়া ও কম, কারন যাতায়াতের অসুবিধা, দিল্লীর দুরত্ব, সুরক্ষা এসব কারনে লোকে এখানে থাকতে চায়না।
    তবে এরই মাঝে জানলাম যে এই শহর কে লোকে ভবিষ্যতের শহর এবং ইনভেষ্টমেন্টের স্বর্গ মনে করছে। যারা এখানে পোস্টেড তারা প্রায় প্রত্যেকেই কোথাও না কোথাও বাড়ী বা ফ্ল্যাট বুক করেছে। আসব আসছি করতে করতে বছর খানেক গেল, যখন এলাম তখন অনেক কিছুই বদলে গেছে দেখলাম। বাসস্থান হল কম্পানীর টাউনশিপ সুরক্ষার চিন্তা ছিল বলে বাইরে থাকা সমীচীন মনে করলাম না। দোকানপাট অজস্র চারধারে, সেক্টর আঠেরো জমজমাট। এদিক সেদিক করে বেশ কয়েকটি শপিং মলের নির্মানকার্য প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগের মতো সব জিনিষের জন্য দিল্লী ছুটতে হয় না। ফাঁকা জায়গা গুলো দেখিয়ে দেখিয়ে কত্তা শোনাত কোথায় কি আসবে নয়ডার মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী। আস্তে আস্তে চেনা পরিচিত বন্ধুবান্ধবদেরও অনেকের ঠিকানা হল এই শহর। অফিসের অনেকেই আগে যারা দিল্লী থেকে আসত আর সন্ধে হতে না হতেই দৌড়ে বাস ধরত ঠিকানা বদলে নিজেদের বাড়ীতে উঠে এল। শুধু বাড়ীভাড়া আর আগের মত রইলনা আর বাড়ী বা ফ্ল্যাটের দাম ও আজ প্রায় মধ্যবিত্তদের নাগাল থেকে প্রায় বেড়িয়ে গেছে। আগে হাপুড় রোডে উঠলে আশেপাশে খোলা মাঠ দেখা যেত এখন ইন্দ্রপুরম জমজমাট। যখন নিজেদের আস্তানা তৈরী হচ্ছিল তখন ফ্লেক্সের ধারে পাশে রাস্তায় গোনাগুনতি গাড়ী দেখা যেত, এখন সকাল বিকেল অফিসের সময় ট্র্যাফিক চিন্তার বিষয় হয়। মাঝখানে মুলায়ম মায়াবতীর রেষারেষিতে গতি পরিবর্তন হলেও এ শহরের বিকাশ এখনও অব্যাহত। মেট্রো প্রায় দুয়ারদ্বারে, পরিবহন অনেক উন্নত হয়েছে। আগে স্টেট বাস আড্ডা বলে একটি ভাঙ্গা দেয়াল বেষ্টিত ফাঁকা জমি পড়েছিল, দিনান্তে যেখান থেকে দুটি দুর পালার বাস ছাড়ত। এখন সেখান থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাঞঅলের বড় বড় শহরে বাস যাচ্ছে, মায় এসি বাস পর্যন্ত। র‌্যাডিসন এসে প্রথম ফাইভস্টার হোটেল খুলেছে, আগে যারা কাজেকম্মে এসে থাকার জন্য দিল্লী ফিরতে বাধ্য হত তাদের জন্য এখন হোটেল গেস্টহাউসের তালিকা বেড়েই চলেছে। নয়ডা ডিপি এস আর অন্যান্য বেশ কয়েকটি ভালো স্কুল এখন NCR এর মধ্যে অগ্রগন্য। এচাড়া Amity, JSS ইত্যাদি কলেজ, ইউনিভার্সিটিও ফেলে দেবার মত নয়।
    এসব সঙ্কেÄও শহরটার কেমন একটা মধ্যবিত্ত মধ্যবিত্ত ব্যাপার রয়ে গেছে যার জন্য আমাদের মত পাতি লোকেদের টানে। আট্টা মার্কেটের ঝাঁ চকচকে দোকানবাজারের উল্টোদিকেই রাস্তার ওপারে প্রায় কলকাতার ফুটপাথের বাজারের মত সস্তার দোকানপাট। প্রতি বাঁকে কলকাতা রোলের দোকান। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন জায়গায় হাট বসে, সেসব হাটে প্রায় আলপিন থেকে হাতী সব জিনিসই পাওয়া যায়। টাটকা সবজি কেনা আর পরিচিতদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাত গল্প দুইই চলে নিজেদের এলাকার হাটবারে। মাছের সম্ভার নিয়ে বসে বিক্রেতারা একাধিক সেক্টরে, কোনোদিন এক জায়গায় পছন্দের মাছ না পেলে অন্য জায়গায় গিয়ে খোঁজ নিলেই হয়। ইলিশ চিংড়ী পাবদা এসব তো সারা বছরই পাওয়া যায়। বেশী দরকার হলে, কোনো বিশেষ ধরনের মাছ চাইলে মাছওয়ালার মোবাইলে বেলা এগারোটা নাগাদ ফোন করলেই (তখন ওরা গাজীপুরের মন্ডীতে থাকে) বিকেলে বাড়ীতে এসে দিয়ে যায়। বাঙ্গালী মিষ্টির দোকানে মিষ্টি কেনার সাথে সাথে আরো অনেক কিছু দেখা যায়। কালীবাড়ীর দুর্গাপুজা ইদানীং দিল্লী কেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া একষট্টীর সাই মন্দিরে গিয়ে খালি বসলেই মনের শুদ্ধিকরন হয়ে যায় আপনা আপনিই।
    আস্তে আস্তে বোধহয় শিরায় উপশিরায় ছড়িয়ে যাচ্ছে এ শহর। বড় আপন মনে হয়, যেমন ভালোবাসার জনেদের ভালোবাসি দোষত্রূটী সমেত সম্পুর্ন ভাবে সেরকমই এ শহর খারাপ ভালো সব মিলিয়েই ভালোবাসার হয়ে উঠেছে। তাই ধুলো প্রদূষন, খারাপ পানীয় জল, আইন না মানা ট্র্যাফিক, সুরক্ষার অভাব ইত্যাদি ছাপিয়ে ওঠে চওড়া রাস্তা, রাস্তার দুধারের সবুজ, আর পরিচিত মানুষজনের সান্নিধ্য। কখনো শহরের হাড়কাঁপানো শীতে বারান্দার দুপুরের রোদ্দুর, বা গ্রীষ্মের দাবদাহের সন্ধ্যার লু অথবা বর্ষার মেঘলা ভোরের আকাশ, কিংবা শরতের নীলে সাদা ভেলায় ভাসা মেঘ সবাই হেসে খেলে ভালোবসায় জড়িয়ে রাখে। বলে ভালো থাকো ভালোবেসে। এসব ছেড়ে কোনোদিন চলে যাব ভাবতেই পারিনা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন