এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • চাগ্রীর গপ্পো

    সে
    নাটক | ১৩ নভেম্বর ২০১৪ | ২০৮৫৪ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নী_পা | 53.252.140.179 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:২৪652507
  • ধন্যবাদ 'সে' । আবার শুরু করার জন্য ...
    আশা করি এখন স্বাস্থ্য ঠিকঠাক আছে

    ভাল থাাকুন ।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:৩১652508
  • ক্রমশঃ সভা ভেঙে যায়।
    সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে। যে যার মতো বাড়ীর পথ ধরি। ক্যাপ্টেন সাহাব তাঁর দুই কন্যাকে রিকশায় তুলে দেন, তারা লোহারপুলের দিকে চলে যায়। কমান্ডার সাহাব, ক্যাপ্টেন সাহাব ও আমি, আমরা তিনজনে বন্ডেল রোডের দিকে হাঁটতে থাকি কথা বলতে বলতে। উদ্দেশ্য, বালীগঞ্জ ফাঁড়ি অবধি পৌঁছে আলাদা হয়ে যাবো। আজকের এই অনুষ্ঠানে আমিই ছিলাম একমাত্র বিধর্মী। হয়ত সকলে তা জানে না। কিন্তু এদের আলাপ আলোচনা শুনে সর্বক্ষণ মনে হচ্ছিলো, এরা কেমন যেন নিজেদের স্বতন্ত্র, আলাদা মনে করে। যেটা হয়ত এই অনুষ্ঠানে না এলে এভাবে বোঝা যেত না। ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হওয়ার জন্যেই হয়ত। সংখ্যালঘু হওয়া কাকে বলে, সেই অনুভূতি ছোটোবেলা থেকে কখনো বুঝিনি, পরে বুঝেছি, বিদেশে থাকবার সময়। বিদেশী হিসেবে, অন্যভাষী হয়ে সংখ্যালঘু হবার অনুভূতি। কতকটা নিরাপত্তাহীনতা, কতকটা অজানা ভয়। কিন্তু এঁরা তো বিদেশী নন। ভারতবর্ষ যতটা আমার দেশ, ঠিক ততটাই এঁদেরও। হয়ত ভাষা আলাদা ঐ অঞ্চলে, তবু এঁরা যেন কোথায় একটা আপন-পর ভেদাভেদ অনুভব করছেন। জিগ্যেস করলে সদুত্তর পাবো না জানি, তবু জিগ্যেস করেই ফেলি। আমার কথা হেসে উড়িয়ে দেন এঁরা দুজন।
    ইন্‌সিকিওরিটি? ও ইয়েস! আপনি সঙ্গে থাকলে, খু উ ব ইনসিকিওর্ড ফিল করি।
    এই বলে হাসতে শুরু করেন ক্যাপ্টেন সাহাব।
    ফ্লার্ট করছেন?
    এবার অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন ক্যাপ্টেন।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:৫৫652509
  • প্রথম দুটো দিন সকালে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে গেছি কাজে। ছাত্রছাত্রীরা আগে থেকেই উপস্থিত। এদের মধ্যে তিনজন অবৈতনিক। তাদের মধ্যে দুজন বাঙালী মেয়ে। আর আছে ক্যাপ্টেন সাহাবের দুই কন্যা, সেই দুই কিশোর, ও এক যুবক। যুবকটিকে সকলে রোশন বলে ডাকে। সেটা তার ভালো নাম না ডাকনাম, জানি না। রোলকলের বালাই নেই। কম্পিউটার থাকে যে ঘরটায়, সেখানে এরা জড়ো হয়ে বসে। আমি এদের গোড়া থেকে থিয়োরী পড়াই। প্রশ্নোত্তর চলে। মুশকিল হচ্ছে যে, আমি উর্দু জানি না। এরা সকলেই প্রায় উর্দু জানে, অথচ ইংরিজিতে খুবই কাঁচা। তাই একবার ইংরিজিতে কিছুটা বোঝালাম, ফের একটু বাংলায়, তারপরে ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে। আরেকটা সমস্যাও আছে। সেটা আগে যেসব জায়গায় পড়িয়েছি সেখানে হয় নি। এরা বড্ড বেশি বিনয়ী। বুঝতে না পারলেও কিছু বলে না। চুপ করে থাকে। বিশেষ করে মেয়েগুলো। প্রথমদিকে এটা খেয়াল করিনি। কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম, তখন কাছে গিয়ে গিয়ে দেখতাম, খাতায় কী লিখছে। বুঝে লিখছে, নাকি না বুঝেই টুকে নিচ্ছে নোট্‌স্‌। টিচারকে ভয় পায়, মনে করে বুঝতে না পারাটা যেন ছাত্রীরই দোষ। অসম্ভব লজ্জা। মাথা নুয়ে পড়া লজ্জা। ক্লাসের শেষে এদের আমি ছাড়ি না, জনে জনে কাছে গিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করি। কথা বলাই। ধীরে ধীরে সত্যিই লজ্জা কেটে যায় মেয়েগুলোর। কিছুটা। পুরোটা নয়। বেশিক্ষণ পড়ানো ও যায় না। ওদের বাড়ী থেকে তলব আসে। ক্যাপ্টেন সাহাবের মেয়েরা চলে যায়। ওদের মা অসুস্থ, হার্টের রোগ। মেয়েরাই বাড়ী গিয়ে ঘরের কাজ করবে।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:৪০652510
  • ক্লাস আমি একা নিই না। মুক্তার আহমেদ ও ক্লাস নেন। সেসময়ে আমি পেছনে বসে বা দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রছাত্রীদের তদারক করি, তাদের কোনো অসুবিধে হচ্ছে কিনা, সকলে বুঝতে পারছে কিনা, এই সমস্ত। মুক্তার আহমেদ শেখান ডস্‌। সোয়া চার ইঞ্চির ফ্লপি ডিস্ক আছে একতাড়া। সেগুলোর অধিকাংশই খারাপ হয়ে গিয়েছে। উনি অনুমান করেন ভ্যাপসা গরমে ডিস্কগুলো খারাপ হয়ে গেছে। তবুও গোটা কতক ডিস্ক পড়া যায়। সাতশো কুড়ি কিলোবাইট জায়গা তাতে। ডস্‌ প্রম্প্‌টের কম্যাণ্ড শেখানো চলে তাতে।
    এই শেখানোর ব্যাপারে একটা জিনিস আছে। যারা অবৈতনিক ছাত্র, তাদের উনি আমল দেন না। তারা পেছনে ভয়ে ভয়ে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকে। যারা টাকা খরচ করে পড়তে এসেছে, তারা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে যতক্ষণ খুশি। রোশন বলে ছেলেটিও টাকা দেয় নি, কিন্তু সে এখানে কাজকর্মে সাহায্য করে। ক্লাসের শেষে সে কম্পিউটার করায়ত্ব করতে লেগে যায়।
    মুক্তার আহমেদকে বলেছিলাম, যারা অবৈতনিক তাদেরও হ্যান্ড্‌স্‌ অন্‌ এর সুযোগ দিন না।
    উনি নাকচ করে দেন আমার প্রস্তাব। ওরা ফ্রি তে পড়তে এসেছে, ফালতু ওদের পেছনে টাইম বরবাদ করে কোনো ফ্যায়দা নেই। যারা মোটা ফীস্‌ দিয়ে পড়ছে তারা খুশ্‌ থাকলে, আরো স্টুডেন্ট্‌স্‌ আসবে প্যায়সা দিয়ে পড়তে। দিস্‌ ইজ্‌ নট্‌ অ্যা চ্যারিটেবল্‌ অর্গ্যানাইজেশন। কারেক্ট?
    আমি কথা বাড়াই না। শুধু অবৈতনিক ছাত্রদের প্রতি মায়া বেড়ে যায়, পক্ষপাত বেড়ে যায়। যেদিন বড়োলোক ছাত্ররা অ্যাবসেন্ট থাকে বা তাড়াতাড়ি চলে যায়, আমি ওদের কম্পিউটার ব্যবহার করতে দিই।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:২৪652511
  • সোয়া পাঁচ* ইঞ্চির ফ্লপি ডিস্ক
  • সে | 188.83.87.102 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:৫১652512
  • মিঃ হাসান বেশিদিন ডাঙায় থাকবেন না। ব্যবসা চালু হয়ে গেল, এখন ওঁকে পাড়ি জমাতে হবে সাগরে। সেখানেই বেশি রোজগার, সেখানে লোকসান হয় না। আমরা অসমবয়স্ক দুজন মানুষ, কিন্তু বন্ধুর মতো গল্প করি। মিঃ হাসান শোনার তাঁর সাগরজীবনের বিভিন্ন গল্প। সেসব গল্প এখানে রেলেভেন্ট নয়। সপ্তাহে দিন তিনেক ক্লাস। বাকি দিনগুলোয় আমায় প্রায় কিছুই করবার থাকে না, শুধু বসে থাকা ছাড়া। কমান্ডার সাহাব তো রোজ রোজ ঢুঁ মারেন না এই ট্রেনিং ইন্স্‌টিটিউটে। হয়ত এক কি দুবার এসে অল্প দেখে গেলেন, কেমন চলছে সব।
    সেদিন ক্লাস নেই, তবু আসতে তো হবেই। মুক্তার আহমেদ একটা কম্পিটারে ফক্স্‌ প্রো দিয়ে কীসব কাজ কর্ম করছেন, ব্যবসার কাজ। এন্টালীর দিকে একটা হোটেলের জন্যে সফ্‌ট্‌ওয়ার বানানো হচ্ছে। একটু পরেই উপস্থিত হলেন ক্যাপ্টেন সাহাব। এয়ারফোর্স থেকে রিটায়ার হবার পরে মনে হয় না আর বিশেষ কিছু কাজকর্ম করেন বলে। সব সময় খোশ মেজাজ, আর ঠাট্টা ইয়ার্কি নিয়ে মেতে আছেন। ক্যাপ্টেন ও কমাণ্ডার মিলে ঠিক যেন দুই কিশোর বন্ধু। নীচু গলায় কীসব শলাপরামর্শ হোলো দুজনের। তারপরে হাসিহাসি মুখে ঘোষনা করলেন, যে আজ সিনেমা দেখতে যাওয়া হবে।
    সিনেমা?
    ধীরে বোলিয়ে, মুক্তার সুন্‌ লেগা।
    এবার আমার অবাক হবার পালা। মুক্তার শুনলে কী এমন হাতিঘোড়া সমস্যা? সে কি আমাদের বস্‌ নাকি? মিঃ হাসান হচ্ছেন মালিক, এবং ক্যাপ্টেন হচ্ছেন তাঁর বন্ধু, এবং এই কোম্পানীর চাকুরে বা মালিক কোনোটাই নন। এঁরা সিনেমায় গেলে মুক্তারকে লুকোতে হবে কেন? অবশ্য এসব প্রশ্ন আমার মনেই রইল। প্রকাশ্যে জিগ্যেস করা হোলো না।
    ওঁরা আমাকেও সিনেমায় যাবার আমন্ত্রণ জানালেন, আমি তা হাসিমুখে গ্রহণ করলাম। কিন্তু পুরো ব্যাপারটাই হবে মুক্তারের অগোচরে। আমায় প্রথমে বেরিয়ে যেতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে মোড় পেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে। তারপরে এই বন্ধুযুগল এসে আমায় মীট করবেন। ষাটোর্ধ এই কিশোরযুগলের প্রস্তাবে আমার হাসি চেপে রাখা কঠিন হয়ে যায়। তবু এই মজার খেলায় যোগ দিই।
    নুন শো শুরু হতে দেরি আছে। ঠিক করতে হবে কোন হলে যাওয়া হবে। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে কাছাকাছির মধ্যে ভালো হল হচ্ছে প্রিয়া। দেশপ্রিয় পার্ক। কী বই চলছে ওখানে?
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:১৩652513
  • ট্যাক্সি থেকে নামি আমরা তিনজনে হলের দিকে এগোই। এই দুই মূর্তি মনে হয় দীর্ঘকাল হলে গিয়ে সিনেমা দেখেনি। প্রিয়ায় চলছে ভিরাসৎ। অনিল কাপুরের ছবিটার দিকে তাকিয়ে দেখে মিঃ হাসান কী একটা ভেবে বলেন, হু ইজ হী? রাকেশ রোশন?
    এবার হাসি চেপে রাখা মুশকিল হয়ে যায়।
    কতদিন আগে লাস্ট সিনেমা দেখেছেন আপনি?
    লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে যায় ওঁর। আমতা আমতা করে বলেন, ক্যানট রিমেম্বার নাও। মে বী নাইন্টিন এইট্টি অর এইট্টি টু।
    ক্যাপ্টেন কিন্তু সিনেমা সম্পর্কে কিছুটা ওয়াকিবহাল। ফটাফট অনিল কাপুরের নাম বলে ফেলেন, যদিও টাবু, পুজা বাত্রা, এদের কারোকেই চেনেন না। টিকিট পাওয়া যায়।
    শো শুরু হয়ে গেলে মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি দুই বন্ধু হাঁ করে দেখছেন সিনেমা।
    ইন্টারভ্যালে মুখ খোলেন কমান্ডার সাহাব।
    হিন্দি ফিল্ম কোথায় পৌঁছে গেছে!
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩১652514
  • এরপরে মুক্তার আহমেদ ও আমি, আমরা দুজনেই সামলাবো ট্রেনিং সেন্টার। ছাত্রসংখ্যা কেন জানি আর বাড়লো না। ফ্রিতে পড়তে আসবারও সময় নেই কারো, নাকি অন্য কোনো কারণ? বুঝতে পারি না। ছাত্রসংখ্যা না বাড়লে এই ব্যবসা চলবে কেমন করে? আমাদের নিজেদের বেতন আছে, সব মিলিয়ে সেসমস্ত খরচও তুলতে হবে। অন্য কোনো কাজ থাকলেও আমি করে দিতে প্রস্তুত। পায়ের তলায় মাটি দরকার। এই প্রয়োজন শুধু তো নিজের জন্যে নয়। আরো অনেক কিছু জড়িয়ে আছে। সকাল আটটায় বেরোই রোজ, চারটে কি সাড়ে চারটে অবধি থাকি ওখানে। কাজ যেটুকু থাকে সেটা পড়ানোর কাজ। তার বাইরে কোনো কাজ নেই। ফক্স প্রো জানি না, হোটেলের সফ্ট্‌ওয়ার যেটা বানাচ্ছেন মুক্তার আহমেদ, সেটা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নেই। এ কি সেই অ্যাড্‌হিয়ার অ্যাড্‌ভার্টাইজিং এর সেই সফ্ট্‌ওয়ারটার মতো কিছু? যেটায় বাসবী রোজ ডেটা এন্ট্রি করত? মনে হয় এগুলো খুব চলছে বাজারে। কিন্তু কীকরে এগুলো তৈরী করে তাতো জানি না। মুক্তার আহমেদ যদি কিছুটা দেখিয়েও দিতেন, আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে জিনিসটা শিখে নিতে পারতাম, কাজ এগিয়ে দিতেও সাহায্য করতাম, কিন্তু কেউ কাউকে কিছু শেখাতে চায় না। এ নতুন নয়, গোড়া থেকেই দেখছি। যতই করিবে দান তত যাবে বেড়ে - কী বেড়ে যাবে? প্রতিযোগিতা। জৈষ্ঠ্যের এক অসহ্য গরম দুপুরে আমি নীরবতা ভেঙে সরাসরি কথাটা পাড়ি মিঃ আহমেদের কাছে। উনি মনোযোগ দিয়ে কাজ করছিলেন অন্য ঘরটায়। আমি এই কাজে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করি। চুপচাপ বসে থাকি রোজ, উনি যদি দেখিয়ে দেন, তবে ওঁর প্রোজেক্টগুলোয় সাহায্য করতে পারব।
    আমার প্রস্তাবে উনি কিছুক্ষণ হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন আমার মুখের দিকে। যেন অন্য কিছু ভাবছেন। তারপরে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বলেন, হ্যাঁ দরকার হলে নিশ্চয়ই বলব। শুধু এই কাজ নয়, কম্পিউটারের আরো কাজও তো আছে। বলব।
    আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। প্রায় নাচতে নাচতে পাশের ঘরে ফিরে আসি। সেখানে আছে রোশন। সে তখন কম্পিউটারে পাতলা পাতলা ফ্লপি ঢুকিয়ে ঢুকিয়ে ডস্‌ প্র্যাক্টিস করছে। আমায় দেখে বলে, ম্যাডাম আজ কৌন সা তেয়োহার হ্যায়?
    আজ? জানি না।
    আজ হিন্দুদের কোন পরব আছে?
    কই জানি না তো। কোনো পুজো?
    পুজো না। দামাদ তেয়োহার?
    ও! জামাই ষষ্ঠি হতে পারে।
    হাঁ, জামাই ষষ্ঠি।
    রোশন হেসে হেসে বলে, আপনি জানেন না কিন্তু আমি জানি।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৩৮652515
  • সেদিন রোশনের সঙ্গে অনেক গল্প হয়। ও যদিও আমার ছাত্র এবং কোলিগও বটে, যদিও বয়েসে অনেক ছোটো, তবুও ও হুড়হুড় করে বলে চলে নিজের কথা। একটি বান্ধবী হয়েছে, কিন্তু মেয়েটা বাঙালী। তার ওপরে হিন্দু। খুবই ভয়ঙ্কর ব্যাপার এটা। মেয়েটার বাড়ীর লোক জেনে গেলে কী যে হবে তা কেউ জানে না। এসব কথা বলতে বলতে ছেলেটা মুষড়ে পরে, যদিও মুখে একটা হাসি ধরে রাখে।
    দুটো আড়াইটে নাগাদ মুক্তার আহমেদ বাইরের কাজে বেরিয়ে যান। বেরোনোর আগে একটু কথা হয়। যাচ্ছেন এন্টালী এলাকার সেই হোটেলে।
    কোন হোটেল বলুন তো?
    উনি নামটা বলেন।
    ওটাতো আনন্দ পালিতের কাছে, তাই না? দেখেছি মনে হয় কখনো।
    হ্যাঁ ওদিকে দুটো বড়োবড়ো কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার আছে, লাকোটিয়া আর এল্‌মীট।
    মনে পড়ে গেছে! সেই লিমিট! মুখে বলিনা অবশ্য।
    এল্‌মীট মানে এল্‌এম্‌আইআইটি ?
    ইয়েস। ওখানে নাপ্‌তা চৌধরী আছে। ভেরী লার্নেড ফেলো।
    এইটুকু শুনে আমি চুপ হয়ে যাই। মিঃ আহমেদ বেরিয়ে যান।
    ওঃ! এতদিনে উদ্‌ঘাটিত হয় এন অক্ষরের রহস্য।

    রোশন বলে, দিদি আপনি যাবেন আজ আমাদের পাড়ায়?
    আজ?
    হাঁ। এখন তো কিছু কাজ নেই। চলুন। রেশমীর সঙ্গে আপনাকে আলাপ করাবো।
    রেশমী কে? ওহ্‌ বুঝেছি। তোর গার্লফ্রেন্ড তো?
    চলুন দিদি, আমার সাইকেল আছে, আপনাকে হাঁটতে হবে না।
    আমি অবশ্য হেঁটেই যাই, রোশনও সাইকেল হাতে করে হেঁটে চলে। অনেকটা দূর। তোপসিয়ার ভেতর দিয়ে দিয়ে হেঁটে হেঁটে চার নম্বর ব্রীজের কাছটায় বস্তি মতন এলাকা। এখানটায় কিছু কিছু হিন্দু বসতিও শুরু হয়ে গেছে। ঘিঞ্জি এলাকা। বস্তি যেরকম হয়। তেমনই একটা গলিতে এসে ও একটু ইতস্তত করে। সম্ভবতঃ এই এলাকার লোক জানে না যে রেশমীর সঙ্গে ওর ভাব। রাস্তার কলে জল আসেনি, কিন্তু বালতি রাখা আছে কয়েকটা পরপর। সেটাই অদৃশ্য লাইন জল তোলার। কাঠফাটা গরমের কারণেই হয়ত রাস্তায় লোকজন কম, কিংবা এখনো ঘুমিয়ে আছে পাড়াটা, কলে জল এলেই হয়ত তারপরে জেগে উঠবে।
    মেয়েটির বাড়ী কোথায় জানি না। হয়ত এই গলিতেই। হঠাৎ সেই গলির ভেতর থেকেই কোনখান থেকে যেন দেয়াল ফুঁড়ে একটা মেয়ে বেরিয়ে আসে। নীল সালোয়ার কামিজ পরা। সে আমাদের দিকে দেখেনা। অথচ রোশন যেন মনে হয় তার পেছন পেছনই হাঁটে। সঙ্গে আমিও। মেয়েটা একবার মাত্র পেছন ফিরে দেখেছিলো, তারপরে সোজা হেঁটে সেই গলি পেরিয়ে বড়ো রাস্তায় এসে আরো কতটা হেঁটে ফুটপাথে একটা গাছের নীচে দাঁড়ায়। আমরাও পৌঁছই সেখানে।
    তারপরে রেশমীর সঙ্গে আমার আলাপ করায় রোশন। মেয়েটা হাসে। তারপরে চলে যাবার জন্যে ছটফটায়। তার তাড়া আছে। ক্লাস টেন। টিউশনে যেতে হবে।
    রোশন বলে, তোমার ঘরে গিয়ে বলো আমি আসছি একটু পরে।
    মেয়েটা কৌতুহলী চোখে হেসেই যাচ্ছে।
    আরেঃ, সিরিয়াসলি যাচ্ছি। আজ আমার দাওয়াত আছে না? জামাই ষষ্ঠি।
    অল্প থমকে যায় যেন মেয়েটা। কিন্তু দমে না। রোশনের দিকে তাকিয়ে হাসিচোখেই বলে, বদ্‌তামিজ!
    উফ্‌! এই স্টাইল বর্ণনা করা যায় না।
    মেয়েটা ওটুকু বলেই পিছন ফিরে চলে যাচ্ছে ফের ঐ গলিটার দিকে। দমকা গরম হাওয়ায় উড়ছে তার দুপাট্টা, কামিজ। সে আর ফিরে তাকায় না এদিকে।
    বেশ কিছুক্ষণ ওখানে দাঁড়িয়ে থাকি আমরা। তারপরে রোশন আমায় এগিয়ে দিয়ে যায়। অনেকটা পথ এলোমেলো রাস্তা পার হয়ে একেবারে পার্ক সার্কাস অবদি। এই পুরো পথটা আমরা সেরকম কোনো কথা বলিনা। কংগ্রেস এক্‌জিবিশান রোড অবধি আমায় এগিয়ে দিয়ে রোশন ফিরে যায়।
    বাড়ী ফিরবার পথে বারবার মনে পড়ে যায় রেশমীর ঐ ভঙ্গীটা। এই দৃশ্যের কোনো এনকোর হয় না। হতে পারে না।
  • ranjan roy | 24.96.97.209 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:৩৯652518
  • একটু আগে কংগ্রেস একজিবিশন রোড দিয়ে যা্চ্ছিলাম।
    ওই দৃশ্যটা মনে করার চেষ্টা করলাম, আর ৪ নম্বর পুলের এলাকাটা, বস্তিগুলো।

    যাকগে, আপনার লেখা চলুক!
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৪৮652519
  • (রঞ্জনদা, ঐ রাস্তায় কংগ্রেস এক্‌জিবিশান রোডেই "কোলকাতা থেকে গ্রাম" বলে একটা কাগজ এর অফিস ছিলো, হয়ত এখনো আছে। সে নিয়েও চাগ্রীর গপ্পো হয়- হঠাৎই মনে পড়ে গেল)
  • ayan | 213.219.201.58 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:২০652521
  • সে, দুর্দান্ত লেখা
  • ayan | 213.219.201.58 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:২০652520
  • সে, দুর্দান্ত লেখা
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:২০652522
  • একটা ঘোরের মতো অবস্থা। এই একটু আগে যে একটা জায়গায় ঘুরে এলাম, শুকনো কলতলা, বালতির লাইন পেরিয়ে তুঁতে নীল সালোয়ার কামিজ পরা মেয়েটির পেছন পেছন ধুলোভরা ফুটপাথের ওপর দাঁড়িয়ে সেই দুএকটা কথা, সে সব যেন অলৌকিক কিছু, মানে এত যে হৈচৈ হচ্ছে এখন গড়িয়াহাট রোডের ওপরে, মিনিবাসগুলোর রেস, অটোর লাইন, সাঁইসাঁই করে ছুটে যাচ্ছে গাড়ী, মানুষের চেঁচামেচি, এগুলো ঠিক কানে ঢুকেও যেন ঢুকছে না। জিশান রেস্টুরেন্টের দিকটা থেকে গোলাপজল দেওয়া মোগলাই খাবারের গন্ধ আর যেদিকে দাঁড়িয়ে রয়েছি সেখানে ভাজা বিস্কুটের সারিসারি প্যাকেট, তারও একটা মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ, পোড়া ডিজেলের সঙ্গে মিলে মিশে মাথাটা কেমন যেন ঘুরিয়ে দিচ্ছে। ইচ্ছে করে কোথাও একটা বসে একটু দম নিয়ে নিই। আগুনের হলকার মতো গরম বাতাস, এক আঁজলা জল দিয়ে বেশ করে মাথা মুখ ভিজিয়ে নিতে পারলে বেশ হোতো। রাস্তা পেরিয়ে পার্কসার্কাস মার্কেটের দিকটায় গেলেই জলের কল পেয়ে যাবো, চিন্তা নেই।
    অন্য়্দিনতো তোপসিয়া দিয়ে গলিপথে হেঁটে ঘরে ফিরি, আজ একটু ঘুরপথ হয়ে গেল। এখন দূরত্ব বেশি হলেও বাস নেওয়া যাবে না, বড্ড ভীড়। অটোর জন্যেও রেষারেষি করা লাইন। কোনো তাড়া তো নেই, সবকিছু দেখতে দেখতে ঠিক হেঁটে মেরে দেবোখন।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:২১652523
  • অন্যদিন তো *
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:৪২652524
  • হেঁটে হেঁটেও একসময় পৌঁছে যাই গন্তব্যে। এত যে চেষ্টা করে করে দেরী করতে চাই, কিন্তু সময় আমার সঙ্গে অদ্ভুত খেলা খেলে চলে। নিষ্ঠুরভাবে ক্রমাগত টেনে টেনে বাড়িয়ে নেয় নিজেকে। দেরি করতে চাইলেও যথেষ্ট দেরি হয় না, এমন অদ্ভুত নিয়ম তার। যে শিশুটি দরজা খুলে দিয়ে আমার ঢুকবার পথ করে দেয়, তার ওপর থেকে বাড়ীর ভেতর থেকে নির্দেশ আসে - ওকে এখন ঘুরে আসতে বলো।
    শিশুটি এতই ছোটো যে বুঝতে পারে না আমি এসব শুনতে পাচ্ছি। সে সঙ্গে সঙ্গে পুনরাবৃত্তি করে।
    - এখন ঘুরে এসো।
    - এখন বাড়ীতে মেয়ে জামাই আসবে, রান্নাবান্না হচ্ছে তাদের জন্যে, এখন এখানে থাকতে হবে না।
    - রান্না হচ্ছে, ঘুরে এসো, পরে এসো (সে পুনরাবৃত্তি করে চলে)
    - এখনো রান্না শেষ হয়নি, অনেক কাজ আমার, এখন ঝামেলা না করে ঘন্টা তিনচার পরে আসতে বলো। খাবারের গন্ধে গন্ধে এসে গেছে।
    - ঘন্টা তিনচার পরে এসো। রান্না এখনো শেষ হয় নি...

    আমি নেমে যাচ্ছি সিঁড়ি দিয়ে। সবে সাড়ে পাঁচটা বেজেছে হয়ত। নটা দশটার আগে কিছুতেই ফেরা যাবে না। আজ সবকিছুই বড্ড অলৌকিক। মনে পড়ে যায়, সেদিন কম্যাণ্ডার সাহাবের সঙ্গে গল্প করছিলাম অনেক। তিনিও বলছিলেন, আমিও বলছিলাম - সবই জীবনের গল্প। তখন কথায় কথায় একবার বলেছিলেন, ব্লাড ইজ্‌ থিনার দ্যান ওয়াটার।
    এক্কেবারে ঠিক। এই উপমাটা মনে রাখলে, ঘন্টা তিনচার আরামসে ঘুরে আসা যায়।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:২০652525
  • এখন যেহেতু উৎসবসন্ধ্যা, ভুলেও কারো বাড়ী যাওয়া চলবে না। অবশ্য চেনাশোনা কে ই বা আছে যাবার মতো। তবু প্রিকশান। তিন থেকে চারঘন্টা হেঁটে হেঁটে ঘুরবার দম এখন নেই, আবার কোথাও বসবারও উপায় রাখেনি শহর। একা একটা মেয়েকে বসে থাকতে দেখলে উত্যক্ত করে জ্বালিয়ে মারবে। সবচেয়ে সহজ ও সস্তার উপায় হলো বাসে করে অনেকটা দূর অবধি যাওয়া, ফের ফিরে আসা। কিন্তু উদ্দেশ্যবিহীন নয়। পুরো পথটায় রাস্তার ধারের গাছগুলো গুণে নেবো, এবং তাদের মধ্যে কটা নিমগাছ, তা ও। অবশ্য আরও চিন্তা মাথায় ঘুরবে। গাছ গোনা, নিমগাছ, তার মধ্যে কটা ঘোড়ানিম, এসবের বাইরে মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে মুক্তির উপায়। ইমোশানাল হয়ে লাভ নেই। সন্ধ্যের দিকটায় আরেকটা চাকরি খুঁজে নিলে কেমন হয়? এটা খুব একটা বাজে সলিউশান নয়। টাকাও আসবে, আবার সময়ও আমায় টেক্কা দিতে পারবে না। কী মূর্খ আমি, কেবল দিনের চাকরির পেছনেই ছুটেছি, সূর্যাস্তের পরেও তো চাকরি থাকতে পারে। মানুষ কি পাখী নাকি?
  • কল্লোল | 125.185.157.36 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৮:০৬652526
  • স্তব্দ হয়ে পড়ি।
  • Nina | 83.193.157.237 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৮:১৫652527
  • সের সিগনেচার লেখা---
  • সে | 188.83.87.102 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৬:৪১652529
  • এই চিন্তাটা মাথায় ঘুরঘুর করতেই থাকে। বাসে বসে থেকেই রাস্তায় বিজ্ঞাপনগুলো পড়ি, আর কী আশ্চর্য, চোখে পড়ে যায় একটা যুৎসই কাজের খোঁজ। পড়ানোর কাজ। সন্ধেবেলার দিকে। যদি পাওয়া যায়, তাহলে সন্ধেবেলার ঝামেলা থেকে বাঁচা যাবে।
    এমনিতে সপ্তাহে দুয়েকটা সন্ধেয় বাচ্চাদের একটা অস্থায়ী ক্লাবে যাই। সেখানেও তক্কে তক্কে থাকি চাকরির খোঁজ যদি পাওয়া যায়। আরেকটা জিনিস হচ্ছে মানুষ দেখার স্কোপ।
    সেদিন গিয়েছি সেখানে। ছোট্টো ছোট্টো বাচ্চারা নানান রকম এক্‌স্ট্রা কারিকুলর অ্যাক্টিভিটি করছে। তাদের গার্জেনরা (সবাই মেয়ে) বসে রয়েছে একটু তফাতে একটা বিরাট তক্তপোশের ওপরে। ঘাড় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বাচ্চদের কার্যকলাপ দেখার ফাঁকে ফাঁকে চলছে নীচুস্বরে আড্ডা। একজন আমায় দেখে বলল, তোমায় কদিন যেন দেখলাম ঐ নিউ বালিগঞ্জ পেরিয়ে আরো ভেতরে হনহনিয়ে হেঁটে যাও কোথাও। কোথায় যাও?
    তোপসিয়ায়।
    তোপসিয়ায়? কেন?
    চাকরি করি ওখানে।
    অত ভেতরে? ওদিকটায় তো মহামেডানদের এলাকা।
    হ্যাঁ।
    বাব্বা! ভয় করে না?
    আমাদের এটুকু সংলাপের মধ্যেই, বাকি মা, মাসি, পিসি, কাকির দল নিজেদের আড্ডা গল্প থামিয়ে কেমন চুপ হয়ে গেছে। কয়েকটা অস্ফুট প্রশ্ন ভেসে আসে।
    ওমা!
    তাই নাকি?
    কী কাজ করো ওখানে?
    এদিকে কোনো কাজ পাও নি?
    আমার বেশ মজা লাগে এই মন্তব্যগুলো শুনে। ইচ্ছে করেই বলিনা, কী কাজ করি।
    ওরা খুব চেষ্টা করে আমার পেট থেকে কথা বের করবার, কিন্তু আমি কথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আসল উত্তরটা চেপে যাই। কয়েকজন উঁকি মেরে আমার মুখখানাও ভালো করে দেখে যায়। আরো অনেক প্রশ্নবান আসছে।
    যাদের ওখনে কাজ করো তারা কি মুসলিম?
    হ্যাঁ।
    ওখানে কিছু খেও না কখনো।
    খেয়েছি তো।
    ওরা খাবারের মধ্যে লুকিয়ে ঠিক গোরুর মাংস খাইয়ে দেবে। এই এইটুকু (দুই আঙুল চেপে কত কম পরিমান সেটা দেখিয়ে) হয়েলেও খাবারের মধ্যে মিশিয়ে দেবে। খুব সাবধান।
    আরো উৎসাহী সাবধানী শুভানুধ্যায়ীরাও যোগ দেয়।
    সাবধানের মার নেই।
    কী দরকার ওসব দিকে যাবার? এদিকে খুঁজলে কি কাজ পাওয়া যায় না?

    এরই মধ্যে একটি সদ্য যুবতী মা হৈচৈ লাগিয়ে দেয়, মাথার টিপ খুলে পড়ে গেছে। তক্তপোশের ওপরে তখন টিপ খুঁজতে লেগে গিয়েছে সকলে। কতবড়ো টিপ? কীরকম টিপ? কী রঙের?
    মেয়েটা বলে, সুয়েডের টিপ, সবুজ রঙের, একদম নতুন।
    অ্যাই সবুজ কীকরে হবে রে? লাল নয় তো? তুই তো লাল শাড়ী পরে আছিস।
    হ্যাঁ, লালের সঙ্গে সবুজই তো।
    এম্যা, সে আবার কেরম ম্যাচিং?
    ম্যাচিং নয় তো, কন্‌ট্রাস্ট্‌।
    মুখ টিপে হাসে মেয়েটা।
  • de | 24.139.119.173 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:১৮652530
  • লিখুন, আরো!
  • সে | 188.83.87.102 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:৩৩652531
  • খুব দ্রুত কিছু ঘটনা ঘটে যায়। মিঃ হাসান চলে যান সাগরে। এই সাগরে যাবার ব্যাপারটা খুব অজানা জিনিস আমার কাছে। জাহাজে করে কোন দেশে যেতে হয়? নাকি অনেক অনেক দেশে? পরে জানতে পারি, যে এবার যেতে হবে খুব অল্প দূরত্বে, কিন্তু বারবার একই পথে, দূরত্বটা পোর্ট ব্লেয়ার থেকে সিঙ্গাপুরের অনুরূপ শর্ট ডিট্যান্স। সেপথে জাহাজের মেরামতি চলে ক্রমাগত। এগুলো একটাও যাত্রীবাহী জাহাজ নয়, সবই বয়ে নিয়ে যায় ভারী ভারী কন্টেনার।
    মিঃ হাসানের সাগরযাত্রার আগে আগেই সেই দুটি কিশোর পড়তে আসা বন্ধ করে দিলো। তাদের রেজাল্ট বেরিয়েছে। পাশ করে গেছে। ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটিতে ভর্তি হয়েছে দুটিতে। ফলে সকালে তারা ক্লাস করতে পারবে না। আর সন্ধ্যেয়? উঁহু, তখনো সম্ভব নয়। কলেজের পড়ার শেষে তখন তাদের কোচিং ক্লাসে যেতে হবে, বাড়ীতে প্রাইভেট টিউটর আসবেন পড়াতে, সময় হবে না।
    অর্থাগমের সম্ভাবনা কমে গেল। আবার ক্যাপ্টেন সাহাব ও ফী দেবো দেবো করে এখনো জমা করেননি তাঁর দুই মেয়ের জন্যে। তাঁকে তাগাদা দেওয়াও যাচ্ছে না, ভয়ে ও সম্ভ্রমে ক্যাপ্টেন সাহাবের সামনে মিঃ আহমেদ সর্বদাই নত। মোটকথা টাকা তেমন জমা পড়েনি বাক্সে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:৩৫652532
  • এই যে ছাত্রসংখ্যা কমে গেল, এতে মুক্তার আহমেদও প্র্যাক্টিকাল ক্লাস /হ্যান্ড্‌স্‌ অন্‌ ট্রেনিং বন্ধ করে দিলেন। হয় ঐসময়ে ঐ কম্পিউটারেই অন্য কোনো দরকারি কাজ করছেন, নয় অন্যঘরে বসে আছেন, দরজা হালকা করে ভেজানো। গিয়ে কথা বলতে ইচ্ছেই হয় না। কীরকম একটা থমথমে পরিবেশ, খুলে কথা বলা নেই, যেন অসহযোগ চলছে। চলুক। এদিকে ছাত্র আসা খুব কমে গিয়েছে। দুজন, কি তিনজন আসে, তাও রোশনকে গুনলে। একমাসের একটু বেশিই কেটে গেছে এইখানে কিন্তু মাইনে দেবার নাম নেই, চাইতেও লজ্জা করে। মিঃ আহমেদ কি জানেন আমার বেতন কত? মিঃ হাসান কি সব ডিটেল আলোচনা করে গেছেন মিঃ আহমেদের সঙ্গে? এসব ব্যাপার তো ঠিক রোশনের সঙ্গে আলোচনা করবার নয়। মিঃ আহমেদের যদি এখন টাকা পয়সার টানাটানি থাকে তো সেটা আমায় ডেকে খুলে বললেই তো হয়, এরকম লুকোচুরি খেলা, এরকম অসহযোগের মানে কি? ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়া, যে আমায় আর দরকার নেই? এত আভাস ইঙ্গিত সিগ্‌ন্যাল ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝবার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। এর আগেও অনেক চাকরি করা হয়েছে, ঠকেছিও কম নয়, কিন্তু মুখে কোনো কথা না বলে মনের ভাষা পড়ে নেবার কোনো দরকার নেই। না পোষালে আর আসব না। কিন্তু যোগাযোগ করতে হবে মিঃ হাসানের সঙ্গে। তিনি তো আবার জাহাজে, পরবরতী চার কি পাঁচ মাসের জন্যে - সঠিক জানিও না। ওঁকে খবর দেওয়া দরকার। কিন্তু কীকরে খবর দেবো? জাহাজে কি চিঠি পাঠানো যায়? বা ফোন করা যায়? ঠিকানা বা ফোন নম্বরও তো জানি না। চাকরিটা ছাড়তে হলে মিঃ হাসানকে জানিয়ে ছাড়তে হবে। মুক্তার আহমেদকে জানালে, সে খবরটা কতটা অপরিবর্তিত অবস্থায় যথাস্থানে পৌঁছবে সে ব্যাপারে কোনো ভরসা পাচ্ছি না। ভাবি রোশনকে জিগ্যেস করে দেখি, যদি সে কোনো ফোন নম্বর বা পোস্টাল অ্যাড্রেস জানে।
    ঠিক এইসময়ে, একটা প্রকাণ্ড ডট্‌ ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার হাতে নিয়ে এসে উপস্থিত হন মিঃ আহমেদ। কোথায় যেন বেরিয়েছিলেন, খেয়ালই করিনি। উনি একা নন, সঙ্গে রিক্সাওয়ালাও এসেছে সেই ভারী বস্তুটা বয়ে নিয়ে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:০১652533
  • টানা দুঘন্টা ধরে অনেক চেষ্টা চরিত্র করে সেই ভাঙা প্রিন্টার কম্পিউটারের সঙ্গে জোড়া গেল। তারপরে দেখা যাচ্ছে তার রিবনে কালি নেই। এই দু ঘন্টা সময় মিঃ আহমেদ কোনো কথা বলেন না। অথ্চ বোঝা যায় মেজাজ খুবই খারাপ। আমি দুয়েকবার আগবাড়িয়ে একটু সাহায্য করতে যাচ্ছিলাম, পারতাম কিনা জানি না, কিন্তু তাতেও কোনো রেসপন্স পেলাম না ওঁর দিক থেকে। এখন কালি ফুরিয়ে যাওয়া রিবন দিয়ে তো প্রিন্ট নেওয়া সম্ভব নয়। অথচ সেটাই যেন মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোশন ও আমি পেছনে দাঁড়িয়ে দেখছি সেই নিষ্ফল প্রচেষ্টা। আমরা দুজনেই জানি ও প্রিন্টার ভেঙে ফেললেও এক লাইনও লেখা বেরোবে না, তবু মুক্তার আহমেদের থামবার কোনো লক্ষন নেই। কিশোর ভৃত্য বিকেলের চা হাতে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে দরজার বাইরে। এই সুযোগে আমিই প্রথম কথা বললাম, (নীরবতা ভাঙলাম বলাটা ঠিক হবে না, কারণ এতক্ষণ প্রিন্টার সরব হচ্ছিলো একটু একটু) - দেখুন রিবন না পাল্টালে মনে হয়, প্রিন্ট আউট নেওয়া যাবে না।
    একথা শুনে মিঃ আহমেদ চুপ করে থাকেন কিছুক্ষণ, তারপরে ধীরে ধীরে কিছু কথা বলেন ইংরিজিতে। হয়ত রাগের মাথায় গ্রামারে ও বাক্য গঠনে কিছু ভুল হয়ে গিয়েছে, কিন্তু মোদ্দা অর্থটা হলো, যে একজন ভালো ড্রাইভার একটা ভাঙা গাড়ীও নিপুণভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
    এই কথাটা বলবার সময় বোঝা যাচ্ছিলো উনি খুবই উত্তেজিত, হয়ত রেগেও আছেন, যদিও কার ওপরে সেটা পরিষ্কার নয়।
    চায়ের কাপ নিয়ে উনি অন্যঘরে চলে যান। আমি রোশনকে জিগ্যেস করি, মিঃ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের কী উপায় এখন?
    রোশন জানে না। তবে উপায় একটা আছে নিশ্চয়, ওঁর পরিবারের লোকেরা সেটা জানবে।
    কোথায় থাকে ওঁর ফ্যামিলি?
    রাজাবাজারে।
    সেটা জানি, কিন্তু এগ্‌জ্যাক্ট অ্যাড্রেস?
    রোশন, বলতে পারে না। তবু মোটামুটি জায়গাটা জানে।
    ব্যস্‌ ওতেই হবে। আমি মনঃস্থির করে ফেলি। হাসিমুখে মিঃ আহমেদকে "বাই" বলে বেরিয়ে যাই।
  • AS | 160.107.215.212 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:৩৮652534
  • পড়ছি
  • সে | 188.83.87.102 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:৫৬652535
  • এক পশলা বৃষ্টির পরে গরম বিন্দুমাত্র কমেনি, কিন্তু খানাখন্দময় রাস্তায় প্রচুর কাদা। কুছ পরোয়া নেহি। এই রাস্তায় আর আমি আসছি না। মিঃ হাসানের স্ত্রীকে আমার চাকরি ছেড়ে দেবার খবরটা দিয়ে দিলেই নিশ্চিন্তি। চাই কি একটা রেজিগ্‌নেশান লেটার ও লিখে রেখে আসবো দরকার পড়লে। রাজাবাজারের মোড়ে নেমে পশ্চিমদিকে কেশব চন্দ্র সেন স্ট্রীট ধরে হাঁটা দিই। রোশন এইরকম ডিরেক্শনই দিয়েছিলো। কিছুদূর হেঁটে একটা গঙ্গার জলের চৌবাচ্চা, সেটা পেরিয়ে মিষ্টির দোকান, বাঁ হাতে গলি - একজনকে তাও জিগ্যেস করি।
    ওরেব্বাবা, এক ডাকেই লোকে এঁকে চেনে। একজন বলে দেন, এই গলি বরাবর সিধা যাবেন, পিশাবখানার ডাইনে আর একটা গলি পাবেন, ঐখানেই আছে দোতল্লা বাড়ী।
    ছবির মতো ডিরেক্‌শান। এতটুকু ভুল হয় না। দোতলা বাড়ীটার একতলায় জঞ্জালভরা একটা ঘর। পাশে সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলায়। দোতলায় পৌঁছে লাল সিমেন্টের সরু বারান্দা, সবুজ রঙের কাঠের দরজা খোলা। সেই দরজায় কড়া নাড়ব কিনা ভাবছি, তার আগেই হৈ হৈ করে উপস্থিত দুই শিশু। কমান্ডার সাহেবের দুই পুত্র কন্যা। তারা আমায় এই অন্ধকারেও দিব্যি চিনে ফেলেছে। আনন্দে চেঁচামেচি লাগিয়ে দেয়, জুতো খুলতেই কন্যাটি আমার জুতো নিয়ে উধাও হয়ে যায়, যাতে নিজের ইচ্ছেয় এলেও, চলে যেতে না পারি। পুত্র আমার হাত ধরে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে যায়, তাদের মা হল্লা শুনে ঘর থেকে উঁকি দিতেই তাঁর পুত্র ঘোষণা করে মূল বক্তব্য। আমাকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেয়, আমি তোমার মেয়েকে বিয়ে করব।
  • Nina | 83.193.157.237 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৫652536
  • পড়ছি-----
  • সে | 188.83.87.102 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৫652537
  • পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে আয়ত্বের বাইরে। এসেছি চাকরিতে রিজাইন করতে, কিন্তু সঙ্গে করে মিষ্টি টিষ্টি কিছু নিয়ে আসা উচিৎ ছিলো মনে হয়। শত হলেও প্রথম আসছি এদের বাড়ী, দুটো বাচ্চা রয়েছে। ছোটো ছেলেটি অবশ্য সরাসরি প্রশ্ন করল, মিষ্টি আনোনি?
    লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়।
    কমাণ্ডার সাহাবের গিন্নিকে দেখে মনে হয় খুবই রুগ্ন। তিনি আমায় হাতে ধরে বাড়ীর ভেতরে নিয়ে যান। পুত্রকে মৃদু বকুনি দিয়ে বলেন, আন্টিকো পরিশান মৎ করো।
    তারপরে নিজেই রান্নাঘরে গিয়ে অতিথি সৎকারের আয়োজন করতে থাকেন। আমার আপত্তি কোনোভাবেই গ্রাহ্য হয় না সেই জুরিস্‌ডিক্‌শানে। বাচ্চাদুটোর কড়া প্রহরায় বন্দি হয়ে যাই ঘরের মধ্যে, তারা আমায় বেরোতে দেবে না ই, জুতোর পরে এবার ব্যাগটাও নিয়ে কোথায় যেন লুকিয়ে ফেলেছে।
    একটু পরেই দুতিন রকমের ফল ও বেশ কয়েকটা নাম না জানা মিষ্টির ও কয়েকটা চেনা খাবারের সঙ্গে গৃহকর্ত্রীর পুনরাবির্ভাব হয়। খাবার সকলের জন্যেই। বাচ্চাদুটো ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে খায় এবং তাদের মা হাতে করে করে খাবার তুলে আমার মুখে তুলে দিতে থাকেন। এরকম আতিথেয়তা আমি জন্মে দেখিনি। আপত্তি করলেও শুনবার লোক নেই। ভদ্রমহিলা বাংলা প্রায় বোঝেননি না, বলতে একেবারেই পারেন না। মেয়েটি আমাদের মধ্যে দোভাষীর কাজ করে। সে এক অসম্ভব অবস্থা। খাওয়া পর্ব শেষ হলো, কুশল বিনিময় হলো, এবার আসল কথাটা পাড়তে হবে। কী করে পাড়ি? ছেলে তো ঘরের কোণে বসে ছবি আঁকছে, না কি একটা করছে যেন। ছ বছরের মেয়েটিকে বলি, আমি তোমার বাবার কোম্পানীতে যে কাজটা করছিলাম...
    সে তৎক্ষণাৎ তার মাকে সেটা ঊর্দুতে অনুবাদ করতে থাকে। তার মা দেখি এসমস্ত কাজকর্ম ব্যবসাপত্রের বিন্দুবিসর্গ কিছুই জানেন না। হাঁ করে শোনেন, কিছুই বোঝেন না মনে হয়। তারপরে বলেন যে, আমি তো এসব কিছু জানিনা, ওদের বাবা ফিরলে তাকে বলবেন। আমি এই বাচ্চাদুটোকে নিয়েই সারাক্ষণ নাজেহাল হচ্ছি। এক কাজ করুন, আমার মেয়েকে বুঝিয়ে বলে যান।
    বাচ্চা মেয়েটা গম্ভীরভাবে আমার বক্তব্য শুনে যতটা পারে বুঝে নেয়।
    আবার আসব, এই প্রতিশ্রুতি দেবার পরেই জুতো ও ব্যাগ ফেরৎ পাই।
    ছেলেটি ছুটে আসে একটা ভাঁজ করা কাগজ হাতে করে। খাতার পাতা থেকে ছেঁড়া কাগজ। সেটাকে আবার সেলোটেপ দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। এই চিঠি আমায় পৌঁছে দিতে হবে তার বাগদত্তার কাছে। যেন না খুলি সেটা, বারবার করে বলে দেয়।
    খুব অদ্ভুতভাবে এই চাকরিটার মেয়াদ ও শেষ হয়ে গেল। পয়সাকড়ি মার যাবে বলে মনে হয় না অবশ্য। এরা ভদ্রলোক। তবে আবার নতুন করে কাজ খুঁজতে হবে, সেটাই এখন আরেক চিন্তা।
    বাড়ী ফিরে এসে প্রাপকের হাতে চিঠি দিই। লাভ লেটার বলে কথা। সে চিঠিটা খুলতে গিয়ে কিছুটা ছিঁড়েও ফেলে। তারপরে হাসতে হাসতে ছুটে এসে আমায় দেখায় সেটা।
    প্যাস্টেল দিয়ে আঁকা পাহাড় সূর্য আকাশ পাখি কুঁড়েঘর গাছ। একপাশে স্কেচ পেন দিয়ে নড়বড়ে অক্ষরে লেখা - "তুই রোজ আলিফ লয়লা দেকবি"
    হ্যাঁ ঐটুকুই। আলিফ লয়লা নয়, ওটা আলিফ লায়লা হবে, পত্রলেখক আকার লিখতে ভুলে গিয়েছে।
    এটা মনে হচ্ছে কোনো টিভি সিরিয়ালের নাম।
  • সে | 188.83.87.102 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৬652538
  • এই চাগ্রীর পর্ব এখানেই শেষ। বিরতির পরে নতুন গপ্পো আসছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৭652540
  • পেয়েছি


    একটা কথা আরো একবার মনে করিয়ে দিই, যে এই গল্পগুলো কিন্তু সময়ের ক্রমানুসারে নয়। এক্কেবারেই নয়। সেইজন্যে, কোনটার পরে কোনটা খুঁজতে গেলে সব গুলিয়েও যেতে পারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন