এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • চাগ্রীর গপ্পো

    সে
    নাটক | ১৩ নভেম্বর ২০১৪ | ২০৮৫২ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কর | 111.210.255.232 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:২৩652574
  • দারুণ!!!! তারপর??? এখানেই যবনিকা নয় তো????
  • সে | 188.83.87.102 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৯:২৫652575
  • ডিসেম্বর শুরু হয়ে যায়। আমি কিন্তু একটি দিনের জন্যেও কামাই করি না কাজে। সাতটায় আসি সাতটায় ফিরি। শনিবার অফিস খোলা থাকতে পারে, কিন্তু আসাটা বাধ্যতামূলক নয়, তবু আসতে বাধ্য করা হয় আমাকে। সবই আনন্দর নির্দেশ। এমনকি রবিবারেও আসতে বলে আমায়। আরো কম্পিউটার বাক্স থেকে বের করে করে ইন্স্‌টল করতে হবে। বাধা দিতে পারি না। আঁকার ক্লাসে যাওয়া তো প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। এখনতো ইস্কুল ছুটি হোস্টেল বন্ধ, রবিবারের সকালটা যদি আঁকার ক্লাসে যাওয়া যেত, যদি আড্ডা দিতে পারতাম সেই চেনা দলটার সঙ্গে, লকাউট, নকশাল, নিভাশশী, কেশকালাতেল, বুটিক, জলপুলিশ - এদের সঙ্গে।
    বুটিকের কথা বলিনি হয়তো আগে। তিনিও ঐ গার্জেনদের একজন। মধ্য চল্লিশের ভদ্রলোক। কোনো মহিলার সালোয়ার কামিজ বা শাড়ী দেখলেই ধাঁ করে বলে দিতে পারেন সেটা বুটিকের থেকে কেনা , না সাধারণ দোকান থেকে। শাড়ী তেমন ভালো করে হয়তো বলে উঠতে পারেন না, কিন্তু সালোয়ার কামিজের ব্যাপারে এক্স্‌পার্ট। এমনকি কোন বুটিক থেকে কেনা সেটাও অনেকসময়ে বলে দেন, এমন অবজার্ভেশন। তাই এঁকে আড়ালে বুটিক বলে ডাকা হয়।
    এদেরতো অফিসে আসতে কোনো ঝামেলা নেই। শনিবারেও অফিসের গাড়ি পায় মনে হয়। তারপরে সারাটা দিন হ্যা হ্যা হো হো। সবাই যদিও আসে না। পিওনদের মধ্যে হয়ত একজন এলো। হয় দীপক নয় অজয়দা। আশিসদা শনিবারের আসার পার্টি নয়। চলবে ঘনঘন চা। তারপরে টেস্টি কর্ণার থেকে খাবার আসবে। গল্প, আড্ডা, পোলিটিক্স নিয়ে ভ্যাজোর ভ্যাজোর, তৃণমূল কংগ্রেস বলে নাকি একটা পার্টি হয়েছে, এইসব। বিকেল হয়ে গেলে দীপক রেগে যেতে থাকে, তার বাড়ী যাবার তাড়া। আমিও ভাবি কেটে পড়ব না কি? কিন্তু ভয় করে, চায়ের জল ফোটে, দীপককে জিগ্যেস করি, চলে যাবো? কি বলিস? চলে যাই এদিকের দরজা দিয়ে? কেউ টের পাবে না, কী বলিস?
    দীপক রেগে থাকে, দাঁত কিড়মিড় করে।
    ভালো লাগে না, জানেনতো দিদি। বহুৎ খারাপ লাগে। যতক্ষণ না আনন্দ স্যার যাচ্ছেন, আমাকে থাকতে হবে।
    কেন?
    ঐ দেখুন (সে দেখায় এক প্বিরাট প্লাস্টিকের জেরিক্যান), দেখতে পেয়েছেন?
    হ্যাঁ এটাতো প্রায়ই দেখি এই ঘরে।
    কত সাইজ বলুন তো? আটারো লিটার। তার মানে তো আটারো কিলো তাই না?
    সেটা নির্ভর করছে কী ভরা হবে এর মধ্যে সেটার ওপরে।
    জল ভরা হবে।
    তাহলে আঠারো কিলোর মতৈ হবে।
    রোজ সকালে ঐ জারিকেন নিয়ে আসে আনন্দ স্যার, সন্ধ্যেবেলা অ্যাকোয়াগার্ডের জল ভরে গাড়ীতে তুলে দিতে হয়। নিজে বইবে না মালটা।
    রোজ আঠারো লিটার জল বালীগঞ্জ থেকে দমদমে যায়?
    যায়। ওখানে পৌঁছালে ড্রাইভার যে থাকে মনে করুন, পারভেজ কি মুখার্জ্জিদা, যার যেদিন ডিউটি সে ঐ মালটা তুলে ওর ফ্ল্যাটে দিয়ে আস্বে। এই চলছে ডেইলি। দমদমের জল নাকি খারাপ। ঐ জলে খাবে দাবে রান্না হবে। সাধে শনিবারেও অফিসে আসে? মহা ঢ্যামনা।
  • Arpan | 125.118.215.230 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:১৫652576
  • শুয়োরের বাচ্চা।

    (ওই ডাক্তার দম্পতির উদ্দেশ্যে)
  • ... | 117.193.242.2 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:২৮652577
  • সে কে প্রণাম করতে ইচ্ছে করছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:২৯652578
  • এ অফিসে অনেকরকমের ডিভিশান আছে। সফ্‌ট্‌ওয়্যারের কোম্পানী তো, তাই অধিকাংশেরই ইঞ্জিনীয়ারিং এর ডিগ্রী, তা ছাড়াও আছে কিছু এম্‌সিএ, যারা নিজেদের ইঞ্জিনীয়ারদের সমগোত্র হবার চেষ্টা করে, কিন্তু সেরকম পাত্তা পায় না, আর আছে কমার্সের লাইনের লোকেরা, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বা অন্য কোনো কমার্সের ডিগ্রীধারী। তবে মূল ক্ষমতা ইঞ্জিনীয়ারদের হাতে। এই ইঞ্জিনীয়ারদের মধ্যেও প্রচণ্ড আণ্ডার কারেন্ট। আইআইটির ইঞ্জিনীয়ারদের পোজপাজই আলাদা। তারা কারোকেই পাত্তা দিতে চায় না, গম্ভীরভাবে থাকে। যাদবপুর, বিই কলেজ, দুর্গাপুরের থেকে পাশ করা যারা এখানে আছে, সব বাঙালী। এরা সারাক্ষণ হ্যাহ্যা হিহি করছে, নর্থ বেঙ্গল থেকেও এক দুজন আছে, তারা এমসিএদের সঙ্গে বেশি মেশে। পরিষ্কার ক্লাস ডিফারেন্স। এছাড়া আছেন ওয়ান অ্যাণ্ড ওনলি আনন্দদা, যিনি ফিজিক্সের গ্র্যাজুয়েট, তিনি সবার ওপরে টেনিদা স্টাইলে দাদাগিরি করে চলেছেন।
    ভেবে দেখেছি, নিরপেক্ষভাবে যদি জায়গাটা দেখতাম, যদি আমার ওপরে এই পেজোমিগুলো না হোতো, তবে এই অফিসে মজার মজার ব্যাপার কিছু কম ছিলো না।
    পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের থেকে টাকা নিয়ে তৈরী হয়েছে এই সংস্থা। প্রোজেক্টে লোক খাটিয়ে টাকা আসবে। কিছু দেশি প্রোজেক্ট, যেমন একটা অ্যালুমিনিয়ামের কারখানা, কিংবা ওষুধের কোম্পানী, নয়ত প্রাইভেট হাসপাতাল, অথবা আয়ারল্যান্ডে গিয়ে গিয়ে কাজ করে এসো। তেমনি অনেক এম্‌প্লয়ীই ছিলো যাদের চোখের দেখা দেখেছি হয়ত এক কি দুবার, তারা সমস্ত সময় ঐ ডাবলিনেই থাকত। সেই ব্যবসার টাকায় ও শিল্পোন্নয়ন নিগম থেকে ধার নিয়ে নিয়ে আমাদের সবার মাইনে হোতো মাসের শেষে।
    এরপরে আবার সবাই অ্যামেরিকা যেতে চায়, কিন্তু কেউ পারে, কেউ পারে না।
    ডিসেম্বরের মাঝামাঝি, আমার বাচ্চা তখন নার্সিং হোম থেকে ফিরে এসেছে কেউ কিচ্ছুটি জানে না, হঠাৎ করে টিফিনের ছুটিতে বাড়ী ফিরে দেখি আবার অশান্তি।
    টিফিনটা অনেকদিনই বাড়ি গিয়ে খেতাম, এই অফিসে যা মোচ্ছাব সর্বক্ষণ, যেরেটে খাওয়া দাওয়া চলত, যেন এর আগে কখনো কিছু খায় নি, জম্মের সব খাওয়া এখানেই খেয়ে নিচ্ছে। পিওনেরা হিমশিম খেতো টিপিনের অর্ডার সময়্মতো নিয়ে আসতে। তাও তো সকলে টিফিন খেতো না, জনা পনের লোক বিকেলের দিকে আসত অফিসে। তারা রোজ সকালে যে যার বাড়ী থেকে ট্যাক্সি করে সল্ট লেকে যেত ট্রেনিং এ। বিকেলে এসে সেগুলো প্র্যাক্টিস করত আর ট্যাক্সিভাড়ার পয়সা ফেরৎ নিতো ক্যাশিয়ার বাবুর থেকে। সল্টলেকের কন্টিনেন্টাল বলে একটা জায়গায় এরা দলে দলে শিখতে যেত ওর‌্যাক্‌ল্‌ ফাইনানশিয়াল। লাখ টাকার কোর্স সেসব। সেসব বাবুরা সন্ধ্যের মুখটায় খেটেখুটে পড়াশুনো করে ফিরে এলে গমগম করে উঠত সেঞ্চুরী। সম্মান দেখিয়ে নিজেদের কম্পিউটার এদের জন্যে ছেড়ে দিতাম। এঁরা প্র্যাক্টিস করতে বসতেন, মেল চেক করতেন, একটু কোণের দিকে যাঁরা বসার জায়গা পেতেন, তাঁদের মনিটরের ব্রাইটনেস কখনো খুব কমে যেত, সেদিকে অল্প ভীড়ও থাকত তখন। এঁরা আমার মতো ছ হাজারি কেরাণী নয়, একেকজনের দক্ষিণা তিরিশ পঁয়ত্রিশ হাজার। সামনে ব্রাইট ফিউচার। একেকটি ঘোড়ায় চড়া রাজপুত্র তৈরী হচ্ছে অ্যামেরিকায় যাবার জন্যে। দীপক দৌড়তো চিকেন রোল, কাটলেট এসব কিনতে।
  • b | 24.139.196.6 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:৪০652579
  • যেটা বরাবরই খুব ভালো লাগে, লেখার মধ্যে একটা নৈর্ব্যক্তিক উদাসীনতা, যেন এগুলো ওনার সাথে হয় নি, অন্য কারুর সাথে হয়েছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:১১652580
  • হ্যাঁ, যা বলছিলাম, টিফিনের ছুটিতে বাড়ী ফিরে দেখি আবার অশান্তি। খাওয়া দাওয়া মাথায় উঠলো। অবস্থা যা দাঁড়াচ্ছে, নিজের নাক কেটে যাত্রাভঙ্গ করবার মতো। আমায় এরা চাকরি করতে দেবে না। সেজন্য ভুগতে হচ্ছে বাচ্চাটাকে। তার ক্ষতি করতে পারলেই আমাকে বিদ্ধস্ত করা সম্ভব। সে যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে বা আহত হয়, তাহলে তো তাকে ফেলে আমি কাজে যেতে পারব না; এর আগেও সে চেষ্টা হয়েছে কিছুদিন - তাকে একলা আন্‌অ্যাটেন্‌ডেড করে রেখে। সেই সঙ্গে নানারকম ভয়ও দেখানো হয়েছিলো। সেগুলোও কাজে দেয় নি। যত বাধাবিপত্তিই আসুক না কেন, কাজে আমি রোজ যাচ্ছিই। এখন হোস্টেল ছুটি দিয়েছে, সামনে ক্রিস্টমাস আসছে, নতুন বছর হলেই তো আবার হোস্টেল খুলে যাবে, মাত্র কটা তো দিন মধ্যিখানে, তারই মধ্যে বাচ্চাটা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় নার্সিং হোমে থেকে এলো, তবু শত্রুতার শেষ নেই। যে করে হোক আমার চাকরিটা যতক্ষণ না যাচ্ছে, বাচ্চাটাকে তার মাশুল দিতে হবে।
    মাথাটা গরম হয়ে যায়। হাফ প্যান্ট টিশার্ট পরা বাচ্চাটাকে সঙ্গে করে বেরিয়ে যাই সেখান থেকে।
    চল্‌ আমার সঙ্গে অফিসে। চুপ করে বসে থাকতে পারবি তো?
    পারব।
    কোনো ঝামেলা করবি না?
    না।
    কারো সঙ্গে কথা বলতে যাবি না?
    কথা বলব না।
    যেখানে বসিয়ে রেখে আসব ঠিক সেইখানে থাকবি?
    থাকব।

    অফিসে ঢুকে দীপককে বলি, শোন আমার বাচ্চাকে কোথাও একটা লুকিয়ে রাখতে পারবি?
    লুকিয়ে কেন দিদি? আমাদের চায়ের ঘরে এসে বসুক।
    না।
    তাহলে ঠিক আছে, ওকে ঐ বড়ো ঘরটায় কাঠের টেবিলগুলো যেখানে তৈরী হচ্ছে সেগুলোর আড়ালে রেখে দেবো।
    কেউ দেখতে পাবে নাতো?
    আপনি চিন্তা করবেন না।
    কাঠের মিস্তিরিরা নেই?
    এখন তো কদিন কাজ বন্ধ আছে। ফল্‌স্‌ সীলিং এর কাজ হচ্ছে এখন, দুটো একসঙ্গে হবে না, আনন্দস্যার বলছিলো।

    বাচ্চাটাকে চুপচাপ দীপকের হাতে দিয়ে আমি কাজে চলে যাই সেই লম্বা ঘরটায়। ঐ ঘরটাকে কেন যে এরা "ল্যাব" বলে ভগবান জানে।
    আমার কাজের আরো নানারকম খুঁত বের করে ফেলেছে আনন্দ এরই মধ্যে। সরাসরি অবশ্য আমায় কখনো কিছু বলে না, চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সাঙ্গোপাঙ্গোসহ ঢুকে যায় স্মোকিং রুমে তারপরে সেখানেই চলে নিন্দে মন্দ। এসব কথা আমার কানে এনে দেয় আশিসদা, অজয়দা, দীপক। চায়ের কাপে তুফান তুলে, মৌজ করে সিগারেট ইত্যাদি খাবার পর, দলটা যখন ফিরে আসে ঐ ল্যাবে তখন তাদের মুখে খুশির ছোঁয়া। এবার অ্যাটাক শুরু হবে, এ তারই পূর্বাভাস। খুব শান্তভাবে ভালোমানুষের মতো মুখ করে একটা নিরীহ প্রশ্ন করবে সে। বাকি দলটা রেডি হয়ে থাকবে মজা দেখবার জন্যে। চেনা ছক। এ জিনিস প্রায় প্রায়ই হচ্ছে। আমি প্রস্তুত। শুধু প্রতিবাদ করবার সাহস নেই। ছটা মাস না কাটলে কিচ্ছু করা যাবে না।
    আনন্দ নিরীহভাবে আমাকে জিগ্যেস করল, কিছু একটা নিয়ে। সম্ভবতঃ নেটস্কেপ ন্যাভিগেটর বলে একটা ব্রাউজার ব্যবহার করা হোতো, সেই সংক্রান্ত কিছু।
    মানে এখন আমার পরীক্ষা হবে, বাকীরা মজা দেখবে।
    এই খেলা আমি জানি, তাই সময় নিচ্ছি। উত্তর দেবার কোনো তাড়া নেই। এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই ফিরে এসেছে কন্টিনেন্টাল ফেরৎ পড়ুয়ারা। তারা দুড়দাড় ঢুকে পড়ল ল্যাবে। সরবে। হুলুস্থূল ব্যাপার।
    আমায় জেরা করার ব্যাপারটা ধামাচাপা পড়ে গেল কিছুক্ষণের জন্যে। এইসময়টার আবার অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ্‌ অ্যাসিস্‌ট্যান্ট মেনকা চোপড়া কে ও আমাদের জায়গা করে দিতে হয়, কন্টিনেন্টাল ফেরৎ পড়ুয়া কানপুর আইআইটির ইঞ্জিনীয়ার আলোকরঞ্জনের সঙ্গে সে তখন উইন্ডোজ এর চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন মারফৎ প্রেমালাপ করে। একই ঘরে, কিন্তু একটু দূরে দূরে বসে। সমস্ত মেশিনে উইন্‌পপ্‌আপ এর শর্টকাট বানিয়ে দিয়েছি আমি। প্রেমালাপ ছাড়া আর কোনো কারণে এই চ্যাটিং টুল ব্যবহৃত হতে দেখা যায় না।
    আনন্দ একটু অপ্রতিভ; আমায় নিয়ে মজা টিটকিরি করবার প্ল্যানটা ভেস্তে গেল।
    ঠিক এমনি সময়ে ল্যাবের বাইরে একটা সরু করিডোর পেরিয়ে সেই স্মোকিং রুমের সামনেটা থেকে সামান্য সোরগোল মতো শোনা গেল। প্রথমটায় আমি ওদিকে কান দিই নি, কিন্তু অন্য অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ অ্যাসিস্‌ট্যান্ট ও যাদপ্পুরের ইঞ্জিনীয়ার একটি মেয়ে, তারপরে একজন এমসিএ মেয়ে, তিনজনের কাঁই কাঁই কোরাস শুনে ওদিকে পা বাড়ালাম। গিয়ে দেখি কেলেঙ্কারী কাণ্ড! একটা বেওয়ারিশ বাচ্চা ছেলে এখানে পাওয়া গেছে। ভীড় হয়ে গেছে। বাচ্চাটাকে যতই কিছু জিগ্যেস করা হয়, সে একটা কথাও বলে না। বাচ্চাটা বোবা কিনা সে সন্দেহও ঘণীভূত হয়েছে। বেচারা দীপকের হাতে একটা বিস্কুট।
    আমার পেছন পেছন মেনকা চোপড়াও এসে পড়ল। আমি মনে মনে ভাবছি, বাচ্চাটাকে কীকরে ওখান থেকে বের করে আনা যায়। কেন উঠে এলো যেখানে বসে ছিলো সেখান থেকে? দীপক আমার দিকে আড়চোখে করুণভাবে তাকাচ্ছে। তুমুল নাটক। আনন্দস্যারও এসে গেছেন ঘটনাস্থলে।
    এত ভীড় যে আমি সামনের দিকটায় ঢুকতেই পারছি না। ওকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, তুমি কে?
    তোমার নাম কী?
    কোথায় থাকো?
    কোত্থেকে এলে?
    ও একদম চুপ।

    আমি আর অপেক্ষা করলাম না, ডাকলাম - এদিকে আয়।
    সে আমার কাছে চলে এলো।
    সেটা দেখে সবার কি হাসি।
    ওমা! দ্যাখ, ওর কথা শুনলো, আমাদের কোনো কথার উত্তর দিচ্ছিলো না।
    এখানে উঠে এসেছিস কেন?
    আমি উঠে আসিনি, ওখানে মশা...
    দীপক বলে, দিদি ওখানে লাইট নেই তো, অনেকক্ষন অন্ধকার হয়ে গেছে, বাইরে থেকে মশা আসছে, তাই ডেকে এনে ভাবলাম একটা বিস্কুট দিই।
    সবাই কেমন চুপ হয়ে রয়েছে।
    ঝামেলা যাতে আর না বাড়ে, সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম, এ আমার বাচ্চা, আমার সঙ্গে অফিস দেখতে এসেছিলো।
    এরা তখন স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করছে।
    আমি তখন আর ওখানে থাকতে চাই না, ছটাতো অনেকক্ষণই বেজে গিয়েছে, তাই বাচ্চাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম সেখান থেকে।
  • Arpan | 125.118.215.230 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:৫৯652581
  • আহ! সেই উইনপপ্‌আপ। সেই কত পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল তার সাথে।

  • ranjan roy | 113.240.99.39 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:২৩652582
  • সে,
    কোলকাতায় বেড়াতে আসবার কোন প্ল্যান নেই?
  • s | 117.131.42.250 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:২৮652584
  • বসকে আবার সেলাম। সেই কব্বে থেকে আমি হীরে চিনেছি, তোমার প্রথম পাখা হয়েছি।
    প্রথম ভক্তের উদ্দেশ্যে একটা ছোট্ট বানী দিয়ে দাও প্লিজ, গর্বের সাথে বুকে করে রাখবো।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:২৯652585
  • এই কোম্পানীতে প্রত্যেকের জন্যে হেল্‌থ্‌ ইন্‌শিওরেন্স্‌ আছে। তিনলাখ টাকা। এর মধ্যে ভাগাভাগি করে ডিপেন্ডেন্ট ফ্যামিলি মেম্বারদের ও অংশীদার করা যায়। যেমন বউ, বাচ্চা, বুড়ো বাপ মা। এই হেল্‌থ্‌ ইন্‌শিওরেন্সের ব্যাপারটা যদি আগে জানতাম, তবে বাচ্চার হেড্‌ইন্‌জুরি বাবদ যে মোটা টাকা খরচ হয়ে গেল নার্সিং হোমে, সেটা হয়ত পাওয়া যেত, কিন্তু অনেকে বলে হয়ত পাওয়া যেত না, কারণ তখনতো কোম্পানীতে আমার এক মাসও হয় নি।
    কিন্তু এই সুবিধেটা অনেকেই ভোগ করে। ছোটোখাটো জ্বরজারিতেও বেলভিউ, কোঠারি, নিদেনপক্ষে ইইডিএফ্‌ তো বটেই। লাগে টাকা, দেবে ইন্‌শিওরেন্স্‌। আদায় করা কোনো সমস্যাই নয়, কোম্পানীই চাপ দিয়ে আদায় করে আনবে সেই টাকা। এসব জিনিস আগে কখনো দেখিনি। আগে যেসব জায়গায় কাজ করেছি, সেসবখানে এত প্রাচুর্য্য অকল্পনীয়, বরং রীতিমতো ঠকানো হয় এম্‌প্লয়ীদের। এখানেও আমায় অসম্ভব কম মাইনেতে রেখেছে। ক্যাশিয়ারবাবুর পেট থেকে কথা বেরিয়ে যায়, তাই মোটামুটি কার কত স্যালারী সেটা প্রায় সকলেই জানে। স্যালারী বুঝেই লেভেল ঠিক হয়, কার কতটা সম্মান প্রাপ্য। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে পিওনরা সবচেয়ে কম পায়, তার পরেই অ্যাড্‌মিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসিট্যান্ট্‌রা ও আমি। এরপরে ক্যাশিয়ারবাবু। তারপরে বিরাট একটা জাম্প। সেই লেভেলে থাকে যারা প্রোজেক্টের কাজ করছে বা করবে, তারা।
    ডিসেম্বর মাস শেষ হয়ে আসছে, আসছে ক্রিস্টমাসের পরে কটা দিনের ছুটি। বড়দিনের পরের দিনটা কোনোমতে ছুটি নিয়ে নিতে পারলে টানা চারদিনের ছুটি হয়ে যায়। সবাই চাইছে এই ছুটিটা নিতে। আমি একজন ডিরেক্টরকে জানিয়ে দিই যে পঁচিশ থেকে আঠাশ আমায় পাওয়া যাবে না। ছুটি মঞ্জুর হয়ে যায়। সবই মৌখিক।
    চব্বিশে ডিসেম্বর সন্ধ্যেয় আনন্দ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে তার নিজের ছুটির কথাটা পাড়ে সেই একই ডিরেক্টরের সামনে। অজিত ভট্‌চাজ। ব্যবসার ফাঁকে ফাঁকে ইনি আমার অভিনেতাও বটে। ক্যাজুয়াল আড্ডা হচ্ছে তখন, আমি বেরোবার তোড়জোড় করছি।
    তুমিও ছাব্বিশে ছুটি নিচ্ছ? তা কীকরে হবে? ও-ও তো ছুটি নিচ্ছে ঐ সময়।
    অজিত ভট্‌চাজ আমাকে দেখিয়ে আনন্দকে বলেন কথাগুলো।
    দুজনে চলে গেলে সিস্টেম দেখবে কে?
    চিন্তার প্রশ্ন। যে কোম্পানীতে প্রতি সন্ধ্যেয় সার্ভার শাট ডাউন করে দেওয়া হয়, সেখানে ভয়ের কী আছে কে জানে! কিন্তু এসব কথা মুখে আনতে নেই, বড়োরা কথা কইছেন, আমি তো ক্ষুদ্র জীব।
    আনন্দ এবার বলে, আসলে কি জানোতো অজিত অনেক বছর পরে এইবার ফ্যামিলি নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছি। বউ, মেয়ে, এদেরতো কোথাও নিয়ে যেতে পারি না।
    ওহো! তোমার বুকিং হয়ে গেছে?
    হ্যাঁ, হোটেল টোটেল সব বুক করা। অবশ্য তুমি যদি বলো, সব ক্যানসেল করে দিচ্ছি। বউকে এখনি ফোন করে বলে দিচ্ছি।
    এই বলে আনন্দ টেবিলের ওপর থেকে ফোনের রিসিভারটা তুলে নেয়।
    আরে দাঁড়াও দাঁড়াও, ফোনটা রাখো এখন। ক্যানসেল করবে কেন? একজন থাকুক। ও থেকে যাক।
    এটা আমাকে লক্ষ্য করে বলা।
    আমারও তো টিকিট কাটা, হোটেল বুক করা আছে।
    তোমার?
    যেন খুব আশ্চর্যের কথা বলেছি, এমনভাবে তাকায় ওরা দুজন।
    হ্যাঁ।
    আচ্ছা? তুমিও যাচ্ছো কোথাও ছুটিতে?
    হ্যাঁ।
    ওদের দুজনের মুখে চাপা হাসি।
    কোথায় যাচ্ছো?
    দীঘা।
    দীঘা? (অজিত ভট্‌চাজ হাসি প্রায় চাপতে পারছেন না)
    দীঘায় তো আমি যাচ্ছি। (আনন্দ বলে ওঠে)
    আমিও যাচ্ছি।
    এবার ওরা দুজনেই কেন যে খুব হাসে নিজেদের মধ্যে, তা বোঝা সম্ভব হয় না।
    তারপরে অজিত বলে ওঠে, ঠিক আছে ঠিক আছে দুজনেই ছুটি নাও। একটা দিনের তো ব্যাপার, ও ঠিক ম্যানেজ হয়ে যাবে।
    আমি বেরিয়ে চলে আসছি, শুনতে পাই অজিত ও আনন্দ খুব হাসছে দুজনে, দীঘা, আরে ও-ও তো যেতেই পারে, পারে না? কি মুশকিল, কার সঙ্গে যাচ্ছে সেটা দিয়ে কী করবি তুই? এইসব নানারকম উক্তি ভেসে আসছে। খুব মজা পেয়েছে ওরা।
    এসব ভেবে লাভ নেই, আর কটা ঘন্টা পরেই ক্রিস্টমাস।
  • s | 117.131.42.250 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৭652586
  • আর এই সিস্টেম ইঞ্জিনিয়র, ডিবিএ এই ধরনের রোলে থাকা কিছু বাঙালী চাকুরীজীবির সঙ্গে আমাকেও অনেকবার কাজ করতে হয়েছে। অনেকেরই মধ্যে অসহ্য রেল্লা দেখেছি। অন্যের পিছনে কাঠি করা। 'অ্যাক্সেস দেবো না। যাও জিএমের পারমিশন নিয়ে এসো।' এই টাইপের অ্যাটিটুড সবসময়। সার্ভার রুমে সাধরনত এসি স্ট্রং। গরমের সময়ে ব্যপক আরাম। রুমে সাধারনের ঢোকার অ্যাক্সেস নেই। আরাম করে এসিতে বসে সকলের আড়ালে একলা কম্পিউটারে শেয়ার বেচাকেনা থেকে পানু দেখা সব চলত। এইরকম একটা মালকে একবার টেকনিক্যালি উদোম চেটেছিলাম। গায়ের জ্বালা জুড়িয়ে নিয়েছিলাম।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫০652587
  • (এখন আমি মন দিয়ে লিখছি, তাই কোনো উত্তর টুত্তর দিচ্ছি না)
  • ayan | 213.219.201.58 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৪৪652588
  • লেখো বস লেখো। কি বলব, পাখা আর ফ্যান একসাথে হয়ে গেলুম।
  • !! | 134.123.196.122 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:০৮652589
  • এটা ইঞ্জি বা ডিবিএ নয়, আমরা এই রকমই - এখনও কলকাতার কোম্পানীতে যাদবপুরের ছেলেরা, শিবপুরের চেয়ে নিজেদের উন্নততর আর খড়গপুরের ছেলেরা তাদের চেয়ে উন্নত এই রকম সামাজিক অবস্থান মেনে চেলে। আই আই এমের লোক আরো নাক উঁচু
  • !! | 134.123.196.122 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:১০652590
  • আর ঐ খাওয়া নিয়ে হ্যাংলামি আজ এই ২০১৫ তো একই রকম। কাজ করতে দিলেই মুখ হাঁড়ি, অন্যকে কাঠি করা, চিত্রটা বেশি বদলায় নি।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:২৭652591
  • যেদিন ফিরব দীঘা থেকে, দুপুর বারোটা নগাদ বাস, সকালে সমুদ্রের ধারে পাথরগুলোর ওপরে যেখানে ইট দিয়ে বাঁধাই করা আছে সেখানে টোস্ট অমলেটের ফেরিওয়ালার সামনে দেখলাম সস্ত্রীক, সকন্যা আনন্দ সেনগুপ্তকে। অল্প কুশল বিনিময়, তারপর আমরা হেঁটে চলে গেছি অনেকটা পশ্চিমে। যাক বাবা, দেখা হয়ে গিয়ে ভালোই হলো, আমাকে হয়ত মিথ্যেবাদী ভাবছিলো ওরা। কী? এখন তো হাতেনাতে প্রমাণ পেলি!
    দীঘা থেকে ফিরে কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হয়ে যায় একটা। কোনো ঝামেলা ছাড়াই ইন্টারনেট কানেকশান হয়ে যায় সেদিন। সেই প্রথম। আনন্দ সেদিন অফিসে ঢুকে আর সুযোগ পায় না আমায় নীচু করবার। বড্ড অদ্ভুত লাগে। কী এমন পরিবর্তন হলো এই কটা দিনের ছুটিতে, যে এক চান্সে ইন্টারনেট কনেকশান হয়ে গেল? আমি তো অন্যদিনের মতোই সব কিছু করলাম, হুবহু একই স্টেপ। অন্যদিন কি তবে কিছু ভুলে যেতাম? ডায়াল আপ কানেকশান এটা। নাঃ কাল আবার দেখতে হবে তো! অন্ততঃ একটা ঝামেলা তো বাঁচল।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৪:০৫652592
  • নিউ ইয়ারের আগে এক সন্ধ্যায় একটা মেয়ে ঢুকে এলো ল্যাব নামক সেই ঘরটায়। রোগা পাতলা খুবই সাধারণ চেহারা। হাতে একটা কাগজ, তাতে কিছু লেখা আছে। আনন্দ তাকে একটু দূরে একটা কম্পিউটারের সামনে বসিয়ে দিলো। মেয়েটা ওয়ার্ড খুলে তাতে কী সব যেন লিখছে। ডিসেম্বরের অত ঠান্ডা তার ওপরে ল্যাবে এসি চলছে কারণ সার্ভার সেখানেই রয়েছে, কিন্তু তবুও মেয়েটা টাইপ করতে করতে বারবার হাত মোছে কামিজে। তার হাত ঘেমে উঠছে টেনশনে। কাছে গিয়ে দেখি ঐ কাগজটায় শর্টহ্যান্ডে কিছু লিখেছে সে; এখন এটাই ঝড়ের বেগে নির্ভূল টাইপ করে দেখাতে হবে ইন্টারভিউয়ারকে। কিছু বানান ভুল করেছে, কিছু গ্রামারে ভুল, যদিও সামান্য, তবু পাশে গিয়ে ওকে ভুলগুলো দেখিয়ে দিই। ও কারেক্ট করে নেয়, তারপরে বলে, এর একটা প্রিন্ট আউট নিতে হবে। প্রিন্ট আউট নিয়ে সে ঢুকে যায় শান্তনু করের ঘরে।

    পয়লা জানুয়ারী অফিসে এসে কাজ করছি অনেকক্ষণ, তখনো আর কেউ আসে নি, দেখি সেই মেয়েটা এসেছে। আমাদের সিকিওরিটি গার্ড রাজীবদা ওকে আমার কাছে নিয়ে এলেন, এই দেখুন, ইনি আজ জয়েন করলেন।
    কী নাম তোমার?
    মিতা। মিতা রায়। তুমি আমাকে সেদিন হেল্প করেছিলে মনে আছে?
    তোমার ইউজার অ্যাকাউন্ট, হোম ডিরেক্টরি সমস্ত বানিয়ে দিচ্ছি, একটু বোসো।
    মেয়েটা ঘুরে ঘুরে অফিসটা দ্যাখে।
    রাজীবদা বলেন, এখন থেকে ইনিই হবেন রিসেপশানিস্ট। আমার কাজ একটু কমল।
    সেদিন থেকে এই অফিসে রিসেপশানিস্ট কাম টেলিফোন অপারেটরের পোস্টটা ভর্তি হলো। আপাতত দুটো লাইন আছে অফিসে টেলিফোনের জন্যে। আরো একটা লাইন আছে ইন্টারনেটের জন্যে। সে লাইনে ফোন আসে না। সে লাইনে ইন্টারনেট কানেকশান ঐ একদিনই করতে পরেছিলাম, আবার যেই কে সেই, আমার হাতে কিছুতেই কানেকশান হয় না। আজকাল আর চেষ্টাও করি না বারবার, আনন্দ এলে সে নিজেই কানেকশানটা করে দেয়।

    নতুন কোম্পানীর এই প্রথম নিউ ইয়ারের দিন, তাই আজ সন্ধ্যের দিকে অফিসের পরে পার্টি হবে ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবে। সবাই আমন্ত্রিত। সপরিবারে। মিতা আমার কাছে এসে বলে, আমার তো আজ ফার্স্ট ডে, আমিও কি যাবো?
    যাবে না কেন?
    না মানে, আমি তো কাউকে চিনি না এখনো।
    আমাকে তো চেনো, আমার সঙ্গে থেকো।
    একটু ভয়, না মানে ভয় নয়, কিরম একটু আনিজি লাগছে আরকি।
    ভয় নেই, আমরা কি ভূত?
    আচ্ছা, আমার মা কে সঙ্গে আনতে পারি?
    আমি একটু মুশকিলে পড়ে যাই। এ প্রশ্নের উত্তর আমারো অজানা। ইনভাইট করেছেন মিঃ কর ও ডিরেক্টরমণ্ডলী। এঁদের কী কী নিয়ম, সেসব আমি নিজেও জানিনা। প্রায় সকলেই তো শুনছি বৌ বাচ্চা নিয়ে যাবে, মানে ফ্যামিলি। বৌ বাচ্চার বদলে মা কে সঙ্গে করে নিয়ে গেলে কি খুব একটা দোষের হবে? প্যানপ্যানে হিন্দি সিনেমার ইমোশনাল সীন না হয়ে যায়। এরা বড্ড আনপ্রেডিক্‌টেব্‌ল্‌।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৪:৪৩652593
  • সন্ধ্যে সাড়ে আটটার পরে ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের মুক্তাঙ্গনে জড়ো হয়েছি সকলে। জমজমাট আয়োজন, বুফে ডিনার, একধারে কড়া পানীয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেকগুলো ছোটো ছোটো গোল টেবিল। সেগুলো ঘিরে তিঅটে চারটে করে চেয়ার। খোলা আখাশের নীচে হলেও আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মশা আছে। থেকে থেকেই বয়ে যাচ্ছে লেকের হাওয়া। মোটামুটি সবাই অফিস থেকে বাড়ী ফিরে চান টান করে জামাকাপড় পাল্টে পার্ফিউম আফটারশেভ লাগিয়ে নিজ নিজ বৌ সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত। কেউ কেউ বাচ্চাও সঙ্গে এনেছেন। এই কোম্পানীতে একটাও ম্যারেড মেয়ে নেই, তাই মেয়েরা সবাই একা একা এসেছে। ব্যতিক্রম আমি ও মিতা। আমি তো বাচ্চা বগলে করে সেজেগুজে খেতে এসেছি। মিতা সম্ভবতঃ পার্টির শেষে বেশি রাত হবে দেখে একা বাড়ী ফিরবার ভয় পেয়েছিলো। সে তার মায়ের সঙ্গে এসেছে। কেউ কোনো ঝামেলা করেনি তার সঙ্গে। একধারসে হুইস্কি এবং অন্যান্য হার্ড ড্রিঙ্ক্স পরিবেশিত হচ্ছে। পরিবেশনের দায়িত্বে আবার অজয়দা। অজয়দার বৌ একটু তফাতে একটা টেবিলে বসে খাচ্ছেন। এই পার্টিতে পুরুষরাই মদ খায়, মেয়েদের ওদিকটায় যেতে নেই। মেয়েরা সেজেগুজে খিলখিলিয়ে হাসে, ছোটোখাটো চুট্‌কি, বেশ বিয়েবাড়ী বিয়েবাড়ী পরিবেশ, যদিও বিয়েবাড়ীর গুমোট ব্যাপারটা এখানে নেই। চল্লিশোর্ধ সৌম্যদা জমিয়ে আড্ডার মেজাজে। ইনিও ওর‌্যাক্‌ল্‌ ফাইনানশিয়ালের কোর্স করছেন, এই কোম্পানীতে জয়েন করবার আগে জেনসন অ্যান্ড নিকোল্‌সনে একটা ভালো পোস্টে ছিলেন। বড়ো কিংবা মেজো সাহেব না হলেও সেজ সাহেব গোছের কিছু তো ছিলেনই। কিন্তু আইটিতে পয়সাকড়ি ভালো এবং হু হা অ্যামেরিকা যাওয়া যায় দেখে রিস্ক নিয়ে তড়িঘড়ি কেরিয়ার পাল্টে ইআর্পি তে এসে গেছেন। সৌম্যদার ওয়াইফ ( সৌমদ্যা কখ্‌নো স্ত্রী বা বৌ বলেন না, বলেন ওয়াইফ্‌) ওঁদের বছর তিন চারেকের মেয়েটাকে খাওয়াতে ব্যস্ত। আমরা, মানে মিতা, মিতার মা (এঁকে সবাই এখন মাসীমা বলে ডাকছেন, এমনকি সৌম্যদাও), বাচ্চাসহ আমি একটা গোল টেবিল ঘিরে বসেছি। কিছু স্টার্টার আনা হয়েছে। বাচ্চারা চেয়ারে বেশিক্ষণ বসছে না, ছুটোছুটি করতে চায়, অন্যদিকে অনেকেই ডিরেক্টরদের সঙ্গে খুব গদোগদো হয়ে কথা বলছেন, এমনি সময়ে আমার মেয়ে কোত্থেকে যেন দৌড়ে এসে দুটো খবর দিলো। দুটো ই খুব ইম্‌পর্ট্যান্ট্‌। এক, জাস্ট এইমাত্র বড়ো বড়ো চিংড়ির কাটলেট এনে রেখেছে। সবাই তুলে নিচ্ছে, দেরি করলে ফুরিয়ে যাবে। দুই, যে লোকটা মদ ঢেলে দিচ্ছিলো সবাইকে, সে ধুপ করে পড়ে গেছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:১৬652595
  • চিংড়ির জন্যে উঠতেই হোলো।
    গিয়ে দেখলাম, অজয়দা পুরো মাতাল হয়ে গেছে। এত দামী দামী মদ সার্ভ করতে গিয়ে নিজেকে সামলাতে পারেনি। একটার পর একটা খেয়েছে, তারপরে আর দাঁড়াতে পারে নি। দীপক ওকে তুলে, ধরে ধরে একটা চেয়ারে নিয়ে গিয়ে বসালো। পাশেই অজয়দার বৌ বসে আছে। অজয়দার আর বাহ্যজ্ঞান নেই, খুবই ইন্টিমেট কথা একটু হাই ভলিউমে বৌকে বলে চলেছেন। বৌ কোনো উত্তর দিচ্ছে না, মন দিয়ে খেয়ে যাচ্ছে। দীপক হেসে হেসে বলছে, মাথার স্ক্রুপ পুরো খুলে পড়ে গেছে। যাও, ও বৌদি, যাও না ওকে একটু বাইরে নিয়ে গিয়ে মাথাটা ঠাণ্ডা করিয়ে আনো।
    আশিসদা খুব সিরিয়াস। রেগে গজগজ করছে। যা গিলতে পারিস না সেটা গিলিস ক্যানো? এতগুলো লোকজনের সামনে একটা রেসপেক্ট নেই?
    দেখলাম ওরা ধরে ধরে অজয়দাকে বাইরে নিয়ে গেল।
    পিওনদের এই ঝামেলায় কিন্তু অন্যরা ভ্রূক্ষেপও করেনি। একটু আগে এইচ ওয়ান বি ভিসা, বিওয়ান বিটু ভিসা, এসমস্ত নিয়ে গম্ভীর আলোচনা কানে আসছিলো, এখন মেজাজ পাল্টে গিয়ে সিনেমার আলোচনা হচ্ছে। দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড আর টাইটানিকের মধ্যে কোনটায় বেশি কম্পিউটার গ্রাফিক্স ইউজ হয়েছে সেই নিয়ে ডিবেট। হাজার হোক, এটা একটা আইটি কোম্পানী বলে কথা। টাইটানিক তৈরীর সময়ে লিনাক্স সার্ভার ইউজ করা হয়েছিলো, নাকি ইউনিক্স, এই নিয়েও অনেকেই অনেক মতামত দিয়ে ফেলে। আনন্দ ঘোষণা করে, যে সে দেখেছে সিনেমার শেষে ক্রেডিট লিস্টের মধ্যে কতগুলো সার্ভার কী বৃত্তান্ত স অ ব লেখা ছিলো।
    সবাই তো তখন হল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমি তখনো লিস্টটা দেখেই যাচ্ছি, দেখেই যাচ্ছি, বুঝলিতো.. .দেখি, উরিত্তারা! কত্তোগুলো সার্ভার রে!
    লিনাক্স না উইন্ডোজ সেটা দেখেছিলে আনন্দদা? মানে লেখা ছিলো?
    বিশ্বাস না হয় আরেকবার দেখে আয় না হলে গিয়ে।
    আনন্দ ক্ষেপে যায়।
    আবার ঝামেলা শুরু হতে পারে দেখে, মেনকা চোপরা বলে ওঠে।
    ১৯৯৭ এর বেস্ট ফিল্ম হচ্ছে দিল তো পাগল হ্যায়।
    সবাই হ্যাঁ হ্যাঁ করে সায় দেয়।
    কতো ভালোভালো গান আছে। টাইটানিক, লস্ট ওয়ার্ল্ড, এসবে কোনো গান নেই, শুধু টেনশন।
    ঠিক, ঠিক বলেছে মেনকা। নো টেনশন।
    চিয়ার্স!
    হ্যাপী নিউ ইয়ার!
    চাক দুম্‌ দুম্‌, চাক দুম্‌ দুম্‌
    , চাক দুম্‌ দুম্‌...
  • kiki | 53.230.133.72 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:৩৩652596
  • একেকটা দিন একসময় বছরের থেকেও বড় ছিলো। একবার বরের অপারেশন হয়েছে। নার্সিং হোমে রয়েছে। সকালে জ্বরো বছরখানেকের ও হয়নি মনে হয় বাচ্চার কান্না না শুনতে পাওয়ার ভান করে কাজ করছি, ছড়িয়ে লাট করছি, তখন ও কাজে অভ্যস্ত হতে পারিনি। কেমন করেই বা পারবো, একের পর এক ঝাপটা। তারমধ্যে হাসপাতালের খাবার, পরিস্কার জামা কাপড়, তোয়ালে রেডি করা। মা উঠে রেডি হবেন(ছেলেকে দেখতে যাওয়া নয়, আমায় ধন্য করা) , তাকে সময় মত গরম খাবার ধরে দিতে হবে। তারপর ছেলেকে বুকে চেপে ধরে কান্না থামানো আর নিজের কান্না। তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া। সময় পেরিয়ে যায় রোজ ই।আমি তখন দিনে একবেলাও খেতাম কিনা সন্দেহ।বিকেলে সেই একবেলার খাবারটা যখন পেতাম তখন প্রায় কিছুই থাকতো না, তাও মা এসে ভ্রু কুঁচকে দেখতেন ভালো কিছু খেয়ে ফেলছি কিনা। দিনের পর দিন এটা চলতো। কেউ তাকিয়েও দেখতো না। আমার ই দোষ। বড্ড আদরে বড় হয়েছিলাম , বেঁচে থাকার নিয়ম গুলো জানতাম না। একদিন খুব মাথা যন্ত্রনা আর পেট ব্যাথা। টয়লেটে গেছি হু হু করে রক্ত বেরিয়ে যাচ্ছে পটির বদলে। গ্যাসট্রাইটিসের শুরু। কতদিন হয়েছে ব্যাথায় প্রায় অজ্ঞান হয়ে পরে থেকেছি। এসব গল্পের শেষ নেই। দশ বছর নিয়ে অনায়াসে দশটা উপন্যাস লিখে ফেলা যায়। তবে একটাই ভালো বড় আঁকড়ে ধরা টাইপ ছিলাম । জীবন এমন শিক্ষা দিয়েছে এখন কিছু ছেড়ে দিতে আর কোন কষ্ট নেই। সে যা হোক, বিকেলে সেদিন দালিয়া বানিয়ে দুটো আলাদা প্লেটে দালিয়া রেখে ঢেকে রেখে গেলাম। একটা মায়ের, আরেকটা ছেলের। নার্সিং হোম থেকে ফিরে দেখি ছেলের গলা শুকুচ্ছে। মা গল্প করছেন তাঁর বান্ধবীর সাথে। হুঁশ নেই। দুপুরের পর থেকে ছেলেটার পেটেও কিছু পরেনি। নিজের খাবারটি খেয়ে প্লেট সেখানেই ফেলে রেখেচেন। আমি তো সব সময়ের ঝি। আমি থাকতে কেউ কেন শরীর নাড়বে। মায়ের ছেলে ছিলো আরো অদ্ভুত, কিছু ঝামেলা হলে আরো ঝামেলা পাকিয়ে বাড়ী থেকে চলে যেতেন। ওটাই তার শাস্তি দেবার ধরন, আর মাকে কিছু বললে আমার হয়ে সাফাই গাওয়া , কেন ও কি কাজ করে না? কোনদিন এই প্রশ্ন করা হল না, ও কেন সব কাজ করবে? আমি সেদিন না পেরে জিজ্ঞাসা করলাম ওকে খাওয়াও নি কেন? বন্ধুর সামনে বললেন ও খেলো না, বন্ধু ও সায় দিলেন এত নোংরা মানুষ গুলো। অথচ সেই খাবার চামচ ডোবানোর ছাপ পর্যন্ত নেই। যেখানে যেমন রেখে গেছিলাম সেখানে তেমন ই রয়েছে।

    এরা শাস্তি ও পায়। পেতে হবেই। আমায় তাড়িয়ে দেবার পর আট বছর পর অসুস্থ হয়ে সবাই যখন দুচ্ছাই করছে তখন আমার ই কাছেই এলেন। মজা হল যেরকম সেরে উঠতে লাগলেন আবার সেরকম ই বদমায়েশি শুরু করলেন। ততদিনে মেয়ে তাকে চুষে ছিবড়ে করে দিয়েছে। মেয়ে শেষে নিয়েও গেলো লাষ্ট যে ফ্ল্যাট টা তার গর্ভে তখন ও যায় নি, সেটা আমরা নেবো না এই কড়ারে। তা নিয়েও ভাবিনি, কারন আমরা কিছু পাবার তোয়াক্কা করিনি। কিন্তু নিয়ে যাবার পর মাত্র পাঁচ মাস বাঁচলেন আর মেয়ের কাছেই বাজে ব্যবহার সহ্য করে।
  • b | 24.139.196.6 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:১০652597
  • এই টইটা সে-র-ই থাকুক।
  • lcm | 118.91.116.131 | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২৩:০৩652598
  • হা হা, রিয়েলি! টাইটানিক-এর এন্ড টাইটেলে সার্ভারের ডিটেইল্‌স ছিল। মানুষ পারেও।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪১652599
  • কিকি,
    খামোখা মেসেজ ডিলিট করতে চাও কেন? থাকুক না। আমার তো মনে হয়, এই মেসেজটা একটা আলাদা মাত্রা দিলো এই গল্পে।
    থাকুক।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৬652600
  • জানুয়ারীর শেষে মাইনে পেলেই আমার বকেয়া ঋণ শোধ হয়ে যাবে। নিভাশশীর কাছে ধার করতে হয়েছিলো নার্সিং হোমের খরচ মেটাতে। ডিসেম্বরে খানিকটা শোধ করে দিয়েছি, বাকিটা দেবো জানুয়ারীর শেষে মাইনে পেলে। এখন আস্তে আস্তে পয়সা জমাতে হবে।
    আনন্দ এখন নতুন নতুন উপায় বের করেছে আমাকে উত্যক্ত করবার।
    কম্‌প্যাকের মেশিনগুলোয় ছোটোখাটো কোনো ঝামেলা হলে ওদের ফোন করতে হয়, ওরা ওদের সার্ভিস ইঞ্জিনীয়ারদের পাঠিয়ে দেয়। মেশিনগুলো এখনো এক বছরের গ্যারান্টি পিরিয়ডের মধ্যে আছে যেহেতু। এইসব ঝামেলা যখন হয়, তখন দীপঙ্কর বলে একজন আসে। সে এলেই তার পেছনে লাগে আনন্দ। ছেলেটা চুপচাপ হাসিমুখে ঐসব মশকরা সহ্য করে। যেমনঃ
    দীপু তো আমাদের ঘরের ছেলে!
    দীপু এসে গ্যাছো? ভালো করেছো। মাঝে কতদিন দেখিনি তোমায়। মনটা আনচান করছিলো। ভাগ্যিস মেশিনটা গড়বড় করলো।
    দীপুর এবার একটা বিয়ে দেবো আমি, দিয়েই ছাড়বো। তোমার জন্যে মেয়ে দেখে রেখেছি।
    এইটে বলেই আনন্দ ডাকে, মধুমিতা, এদিকে একবার আয়।
    কী হয়েছে আনন্দদা?
    (মধুমিতা আরেকজন অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ অ্যাসিস্‌ট্যান্ট)
    আয় না, এদিকে, আহা লজ্জা পাচ্ছিস কেন?
    দীপু এসেছে।
    মধুমিতা রেগেমেগে চলে যায় সেখান থেকে।
    এসব উক্তি বাদ দিলে অন্যরকমের ব্যাপারও আছে। টেকনিক্যাল জ্ঞান নিয়ে আক্রমন।
    দ্যাখো, আমার বলাটা হয়ত ঠিক হচ্ছে না, আমার তো সেরকম ডিগ্রী ফিগ্রী নেই তোমাদের মতো, তবু বলছি, কন্ট্রোল প্যানেলটা ওপেন করো, এবার দ্যাখো।। ইত্যাদি।
    কিংবা , দীপু হচ্ছে মাইক্রোসফ্‌ট্‌ সার্টিফায়েড ইঞ্জিনীয়ার, দীপুই পারবে এসব বাগ্‌ ফিক্স্‌ করতে।
    দীপঙ্করের সঙ্গে যখন এসব হয়, দেখি সবাই বেশ উপভোগ করে এসব। তার মানে আমার সঙ্গে যখন দুর্ব্যবহার করে আনন্দ তখনো সেই ব্যাপারটা উপভোগ করবার লোকের অভাব হয় না নিশ্চয়।
    কিন্তু সবার সঙ্গে ও এরকম করবে না।
    ক্বচিৎ কোনোদিন হয়ত কম্‌প্যাক থেকে দীপঙ্করকে পাঠালো না। সেসব দিন অন্য একটা ছেলে আসে, অবাঙালী। নর্থ ইস্টের ছেলে। কিন্তু ভাঙা ভাঙা বাংলা বলে। তার পেছনে লাগতে যায় না আনন্দ, বরং তার কাজ খুব অ্যাপ্রিশিয়েট করে, ফাঁকে ফাঁকে দীপুর বিরুদ্ধে দুয়েকটা ছোটোখাটো হাসির মন্তব্য, দীপু কত কম জানে আর এই ছেলেটা কত ভালো কাজ জানে - এইধরণের তুলনা করে। তারপরে ওকে অফার দেয় এই কোম্পানী জয়েন করতে। আনন্দর নাকি ভালো কাজ জানা লোক চাই। এখন যে আছে (অর্থাৎ আমি) তাকে দিয়ে হচ্ছে না।
    এসব, সে আমার সামনেই প্রায় বলে। হয়ত একটু তফাতে দাঁড়িয়ে আছি আমি। কিন্তু শুনতে তো পাই।
    ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়, কান্না পেয়ে যায়। মন থেকে শুধু বেরিয়ে আসে অভিশাপ। সেটা রুখবার সামর্থ থাকে না।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১০652601
  • কন্টিনেন্টাল থেকে ওর‌্যাক্‌ল্‌ ফাইনানশিয়ালের কোর্স শেষ হতেই জনা পনের কুড়ি লোক বেড়ে যায় অফিসে। এরা এখন আর রোজ রোজ সল্টলেকে যাবে না, অফিসেই আসবে। এদের মধ্যে একজনই মেয়ে, বাকী সব পুরুষ। নানান বয়সের। বিরাট রেঞ্জ। কেউ সাতাশ আঠাশ তো কেউ মধ্য চল্লিশ। এতজন লোক আসায়, ঐ অফিস স্পেস খোলা হয়ে গেল। ওখানে চৎকার সব কিউবিকল বানানো হয়েছে। প্রায় সব কিউবিকলের পাশেই জানলা, প্রচুর জায়গা, আরামের চেয়ার, সব মিলিয়ে দুর্দান্ত ব্যাপার। যারা আগে অন্যান্য বাঘা বাঘা কোম্পানীতে চাকরি করে এসেছে, তারাও তারিফ করে বললো, এরকম ভালো অফিস স্পেস তারা কোথাও দেখেনি, এমনকি অ্যামেরিকা ফেরৎ একজনও বললো, সেখানেও এমনটা দেখেনি সে।
    এখন বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের অফিসে এনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সমস্ত দেখানো হয়। কতজন যাদপ্পুরের গোপ্ল্ড মেডেলিস্ট, কে কে কোড লেখায় চ্যাম্পিয়ন, সার্ভাররুমের সার্ভার থেকে শুরু করে ঐ তাগড়া ইউপিএসটাও দ্রষ্টব্য বসু। এসব করবার পরে প্রোজেক্ট কতটা কীরকম আসে সেটা বোঝা যায় না। কন্‌সাল্টেন্ট বাবুদের দেশি প্রোজেক্টের পছন্দ নয়। আলিশা চিনয় এর মেড ইন্‌ ইন্ডিয়ার ভিডিওর মতো অভিব্যক্তিতে মুখ ঘুরিয়ে নেন এসব অফার থেকে। তার ওপরে ঘনঘন তাড়া দেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কি মার্কেটিং ডিরেক্টরদের। কেন অ্যাতো দেরি হচ্ছে আমাদের অ্যামেরিকা পাঠাতে? বেশি দেরি করলে চাকরি ছেড়ে চলে যাবো কিন্তু! ওর‌্যাক্‌ল্‌ ফাইনানশিয়াল শেখা কন্‌সাল্টেন্টদের অন্য কোম্পানী জাস্ট লুফে নেবার জন্যে বসে আছে। লুফে নিয়েই অ্যামেরিকায় চালান করে দেবে।
    অন্যদিকে আরেকটা গ্রুপ; এরা সি ও সি প্লাস প্লাস প্রোগ্রামার। এদের মার্কেট রেট একটু কম। কিন্তু এরাও কম যায় না। এরা ছোটোখাটো প্রোজেক্টে কাজ করছে, কিন্তু চাপে রেখেছে ম্যানেজমেন্টকে। এখন কিছুদিন দেশি প্রোজেক্ট করছি, কিন্তু বেশিদিন অপেক্ষা করব না। অ্যামেরিকায় পাঠাতে দেরি করলে, হুঁ হুঁ, ... দ্যাখোই না দেরি করে..
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৪652602
  • অ্যামেরিকায় দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিরেক্টটররা ঝপাঝপ গোটা চারপাঁচজনের ইন্টারভিউয়ের ব্যব্স্থা করে ফেললেন। তারপরে ভিসা হয়ে গেল ঝপাঝপ। এইচ ওয়ান বি নয়, বি ওয়ান ভিসা। সেই ভিসা নিয়েই সুটকেশ গুছিয়ে পাঁচ রাজপুত্র রওনা হয়ে গেল পক্ষীরাজে চড়ে। বাকি যারা ছিলো, তাদের মুখে মিশ্র অভিব্যক্তি। এক দিক দিয়ে তরা নিশ্চিন্ত, যে লোক পাঠানো শুরু হয়ে গেছে অ্যামেরিকায়, অন্য দিকে ক্ষীণ দুশ্চিন্তা, তাদের টার্ণ কখন আসবে। কতদূর, আর কতদূর? এরা এখন আর হুমকি দেয় না। কান এঁটো করে হেসে হেসে সকাল বিকেল দুপুর, যখন পারে, যতটা পারে ডিরেক্টরদের পেছন পেছন ঘোরে। স্মোকিং রুমটায় সবসময় ভীড়। দীপকের চায়ের সস্‌প্যানে সর্বক্ষণ চা ফুটছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১৪652603
  • পরিস্থিতি খুব সিরিয়াস। মেনকা চোপড়া সর্বক্ষণ সিভি টাইপ করে চলেছে।, তার মুখে মেঘের ছায়া। গোছা গোছা সিভি পালিশ করে করে চকচকে করা হচ্ছে, মাঝী মাঝে সেসবের প্রিন্টাউট নিয়ে নিয়ে চেক করা হয়, ফের মাজাঘষা; কিন্তু এই সমস্ত সিভির মধ্যে আলোকরঞ্জন মুখার্জ্জির সিভিও রয়েছে যে! খুব শীঘ্রই আলোকরঞ্জনের জন্যে বিওয়ান ভিসার অ্যাপ্লিকেশন লেটারও তাকেই টাইপ করতে হবে। এত কাজের চাপ, তার মধ্যে উইনপপ্‌আপ দিয়ে চ্যাট করবার সুযোগও বেশি মেলেনা। মেজাজ খিঁচড়ে আছে তার। সে ধনীর দুলালি, কলামন্দিরের সামনেই তার বাসস্থান। এন্‌আইআইটি থেকে কোর্স করে বেরিয়েছে, আইটিতে ঢুকতে চায়। কিন্তু কোথাও চান্স পায় নি। অবশেষে তার বাবা কিনেছেন এই কোম্পানীর বেশ কিছুটা শেয়ার, মেনকা চাকরি পেয়েছে, অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ অ্যাসিস্‌ট্যান্টের। তাকে আশা দেওয়া হয়েছে, যে বছরখানেক কাজ শিখুক, কম্পিউটারে হাতটা পাকুক, তারপরে ধীরে ধীরে অ্যাবজর্ব করে নেওয়া হবে আইটিতে। সেই আশাতেই চাকরি করে সে। সর্বক্ষণ তার গাড়ি ও ড্রাইভার অপেক্ষা করে বাইরে। তবু মাঝে মাঝে যেন ক্ষীণ সন্দেহ উঁকি দেয় মনে, এই প্রতিশ্রুতি মিথ্যে নয় তো?
    কিন্তু ছাড়তে চাইলেও ছাড়তে পারছে না সে এখন এই কাজ। বাঁধা পড়ে গেছে এখানে। পুরোদমে। অথচ সেই বন্ধনও ছিঁড়ে যাবে এখন? টাইপ করতে করতে বারবার ভুল হয় তার। একজনের সিভির মধ্যে অন্যজনের ডিটেল ঢুকিয়ে ফ্যালে। তারপরে বিকেলের দিকে চলে যায় শপিং এ। যে অ্যামেরিকায় যাচ্ছে, তাকে তো যেমন তেমন করে পাঠানো যায় না। মফস্বলের ছেলেটার জন্যে দামী দামী শার্ট কিনে আনে সে। মেনকা চোপড়ার বয়ফ্রেন্ড হো তুম্‌, কৈ অ্যায়রা গ্যায়রা নেহি!
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৪৮652604
  • ফেব্রুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়ার দিকে আমার বাচ্চা হোস্টেল থেকে ফিরে এসেছে। কদিন ধরেই নাকি খুব জ্বর ছিলো। কিছু খেতে পারে না, জ্বর নামছে না। বাড়ী ফিরে দেখি জল খেতেও পারে না। জল খেতে গেলেই নাকি মাথার ভেতরে কষ্ট হয়। কিন্তু জল গিলতে না পারলে ওষুধ খাবে কী করে? একজন চাইল্ড স্পেশালিস্ট আছে একটু দূরে, তার ওষুধেও কাজ হয় না। তিনি বলেন, ইইডিয়েফ থেকে সোয়ব টেস্ট করিয়ে নিন। ইইডিয়েফে দিনের বেলায় যেতে হবে, তখন কি আনন্দ আমায় ছুটি দেবে? দেবে না। অপমান করবে। আমি নিজে যাই না, কিন্তু সোয়ব টেস্ট করানো হয়। পরের দিন, সেদিন শুক্রবার, টিফিনেও বাড়ী ফিরতে পারিনি, আনন্দ বলেছে কাল শনিবারেও আসতে হবে, - শুক্রবার রাত আটটায় বাড়ী ফিরে দেখি পরিস্থিতি ভালো নয়। সোয়ব টেস্টের রেজাল্ট নিয়ে চাইল্ড স্পেশালিস্টকে দেখানো হয়েছিলো, তিনি বলেছেন ইমিডিয়েটলি আইডিতে নিয়ে যেতে। বেলেঘাটায়। আমার জন্যেই অপেক্ষায় ছিলো। আমি এসেছি, এখন হাসপাতালে যেতে হবে।
    ট্যাক্সি করে যখন বেলেঘাটার আইডিতে পৌঁছলাম, রাত প্রায় দশটা। পোরু রাস্তা লাল কাপড় উড়িয়ে উড়িয়ে আসতে হয়েছে ভীড়ভাট্টা বাঁচাতে।
    আইডির অ্যাড্‌মিশনরুমের ডাক্তার দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে ফেললেন।
    আর অন্য কোথাও ভর্তি করা যাবে না ডাক্তারবাবু?
    না। এ রোগের চিকিৎসা এখানেই হয়।
    আপনি কি শিওর যে ডিফ্‌থেরিয়া হয়েছে?
    আরেকবার সোয়ব নিয়েছি। এখন ভর্তি হয়ে যাক, কাল সকালে এসে খবর নেবেন।
    কিন্তু ওকে তো ভ্যাক্সিনেট করা হয়েছিলো। তা সত্ত্বেও কীকরে হতে পারে ডিফ্‌থেরিয়া?
    সেটা এখন বলতে পারছি না। ভর্তি করে দিন। এই এনার সঙ্গে চলে যান বাচ্চাটাকে নিয়ে।
    হাসপাতালের কম্পাউন্ডের মধ্যে অন্ধকারে কিছুটা মাঠের মত জায়গা দিয়ে হেঁটে পার হয়ে পৌঁছে গেলাম একটা পাঁচতলা বাড়ীর সামনে। টিমটিমে আলো। লিফ্‌টে করে চারতলায়। অন্ধকার বারান্দা, লোহার জাল দেয়া জানলার ওপাশে ডিফ্‌থেরিয়া ওয়ার্ড। দুদিকে সারিসারি লোহার খাট। সেখানে শুয়ে আছে পেশেন্টরা। একটা খালি খাটে তোশকের ওপর চাদর বিছিয়ে দেয়। বাচ্চাকে সেখানে শুইয়ে দিতেই আমায় বের করে দেয় সেখান থেকে।
    এখন চলে যান, কাল আসবেন।
    ডাক্তার কখন আসবেন?
    ডাক্তার দেখবে। ঠিক দেখবে। এখন এখান থেকে বেরিয়ে যান।
    ডাক্তারবাবুর সঙ্গে দেখা হবে না?
    বলছি তো কাল আসবেন।

    ধীরে ধীরে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে নীচে আসি। বাড়ীটার বাইরে কিছু লোক ঘুরঘুর করছে, দালাল হতে পারে, কিংবা ওয়ার্ড বয়। কত খরচ লাগবে, কী ওষুধ লাগবে কিছুই তো বলনা আমায়।
    অবশ্য এখনোতো নিশ্চয় করে কিছু বলা যাচ্ছে না যে ডিফ্‌থেরিয়াই হয়েছে। কী করে হবে? ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছিলো তো। ডিফ্‌থেরিয়া হলে লোকে বাঁচে তো?
  • সে | 188.83.87.102 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৫৯652606
  • ট্যাক্সি করেবাড়ী ফিরবার পথে সেই গভীর রাতে ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে কিছু টাকা তুললাম। কাল ভোরে আবার হাসপাতালে যেতে হবে, কত খরচ,কী ওষুধ কিছুই তো জানি না।
    খুব ভোরে বেরিয়ে গেছি হাসপাতালের দিকে। সকাল সাতটা হবে। রাত্রিবেলায় অন্ধকারে সেরকম কিছু দেখতে পাইনি। দিনের আলোয় দেখতে পেলাম ভালো করে বিল্ডিংগুলো। ঢুকেছি ভেতরে। লিফ্টটা কোনদিকে ছিলো খুঁজে পাচ্ছি না। একতলায় বাঁদিকে একটা করিডোরমতো, সেখান দিয়ে ঢুকে কারোকে জিগ্যেস করবো ভাবি। একটা বেড দেখা যাচ্ছে, একটা পেশেন্ট শুয়ে আছে।
    হঠাৎ কোত্থেকে একজন ওয়ার্ড বয় এসে আমায় ঠেলে বের করে দেয়।
    এখানে কেন ঢুকেছেন?
    আমার বাচ্চা কাল রাত্রে ভর্তি হয়েছে এখানে।
    কী নাম?
    ওপরের তলায়।
    নামটা বলবেন তো।
    নামটা বলি।
    সে একটা চার্ট দেখে দেয়ালে। তারপরে বলে, না, নেই।
    নেই? নেই মানে কী!
    আমার মাথা ঘুরছে।
    নেই মানে কী?
    আমি চিৎকার করছি। চারিদিকে সব অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।
    আরেকজন লোক এসে আমাকে ধরে সেই বিল্ডিং থেকে বের করে দেয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন