এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • চাগ্রীর গপ্পো

    সে
    নাটক | ১৩ নভেম্বর ২০১৪ | ২০৮৫১ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 188.83.87.102 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৪652707
  • মিতা চটপটে মেয়ে। হতে পারে সে পড়াশুনোয় চৌকস্‌ নয়, অঙ্কে বিজ্ঞানে কাঁচা, কিন্তু বাংলা অনার্স নিয়ে দক্ষিণ কোলকাতার অনামী কলেজ থেকে পাশ করে টাইপিং শর্ট্‌হ্যান্ড শিখে কয়েক জায়গায় চাকরি করে আজ সে সেঞ্চুরীর মতো একটা আইটি কোম্পানীর অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ অ্যাসিট্যান্ট। মাস গেলে হাজার পাঁচেক স্যালারী। নিজের কম্পিউটার আছে, নিজস্ব বসবার জায়গা, সারাক্ষণ ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, টুকটাক অনেক কিছু শিখছে, আজ সে ফ্রেঞ্চ শিখতে চায়। তার মনে উচ্চাশা। সে খবর নিয়ে এলো আলিয়াঁস ফ্রাঁসেস থেকে। সামনের মাসেই নতুন কোর্স শুরু হচ্ছে। তিনমাস তিনমাস করে অনেকগুলো কোর্স। কিন্তু দামটা চড়া। ওর একমাসের মাইনের চেয়েও বেশি পড়বে যদি কয়েকটা কোর্স করে।
    মিতা চিন্তায় পড়ে যায়। আমার সঙ্গে এসে আলোচনা করে। শিখতে তো খুবই মন চায়, কিন্তু সব মিনিয়ে পড়বে ছ হাজারেরো বেশি। সব অবশ্য একসঙ্গে নয়, কিন্তু তা ও, অনেকগুলো টাকা। এতগুলো টাকা পাবে কোথায় সে?
    সে নিজে যদিও রোজগার করছে, তার নিজেরতো কিছু সঞ্চয় থাকতেই পারে। সেই ব্যাপারেই জিগ্যেস করি, তোর নিজের কোনো জমানো টাকা নেই?
    না। সবই তো বাবাকে দিয়ে দিই। মাইনের চেকটা বাবাকেই দিই।
    তারপর?
    তারপর বাবা ওটা আমার নামে জমিয়ে রাখে।
    সেখান থেকে কিছু নিতে পারবি না?
    না। বাবা রাজি হবে না। রাগ করবে।
    কেন?
    বাবা পছন্দ করে না, আমি টাকা পয়সা নিয়ে মাথা ঘামাই। বাবা জানে, কোন স্কীমে কীভাবে আমার নামে টাকা জমাবে।
    আর তুই যে টাকাটা নিজে রোজগার করছিস, সেটার ওপরে তোর কোনো অধিকার নেই?
    অধিকার নেই কে বলল? ওটাতো আমার নামেই জমা হচ্ছে।
    হ্যাঁ জমা হচ্ছে, কিন্তু খরচ করবার অধিকার তোর নেই। সেটা বুঝতে পারছিস কি?
    সেটাতো আমার ভবিষ্যতের জন্যেই তোলা থাকছে। বাবা তো আমার ভালোর জন্যেই এটা করছেন। তাই না?
    সেসব তো ভালো ভালো কথা মিতা। কিন্তু একটা জিনিস তোকে বলি, তোকে তোর বাবার বিরুদ্ধে কিছু বলছি না, কিন্তু, তুই তো আর বাচ্চা মেয়ে নস। ঠিক তো? ছাব্বিশ সাতাশ বছর বয়েস হয়েছে কি? নাকি হয় নি?
    পঁচিশ।
    আচ্ছা, পঁচিশ। সেটাও কম নয়। বিয়ের জন্যে ওয়েট করছিস। ঠিক তো?
    হ্যাঁ।
    চাকরি করছিস।
    করছি।
    অজিত ভট্‌চাজ তোকে একশো পাতা টাইপ করতে দিলে সেটা তোকে করতে হবে। প্রত্যেকটা আউটগোয়িং কলের হিসেব রাখতে হয়। হয়তো?
    হয়।
    খেটে রোজগার করিস তো?
    সেতো করি।
    সেই পরিশ্রমের বিনিময়ে তুই যেটা আয় করছিস, সেই টাকা দিয়ে তুই একটা শখ মেটাতে পারবি না?
    মিতা চুপ করে থাকে। একটু হাসে। দুঃখ দুঃখ হাসি। তারপরে বলে, আচ্ছা দেখছি। বাবাকে জিগ্যেস করব। দেখি কী বলে।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:২০652708
  • দুটো দিন মিতা এ ব্যাপারে আমায় কিছুই বলে না। তারপরে একদিন বিকেলের দিকে দৌড়ে আসে আমার সীটের কাছে। রীতিমতো হাঁফাচ্ছে। আমার আশেপাশে তখন অনেকেই সীটে নেই।
    শোন, একটা ইম্‌পর্ট্যান্ট কথা, কিন্তু আর্জেন্ট।
    স্মোকিং রুমে চল।
    না, ওখানে এরা সব আছে, আসবার সময় দেখে এলাম। এখানেই বলছি। তুই আমায় একটা হেল্প করতে পারবি?
    কী হেল্প?
    তোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নাম্বারটা দিবি?
    আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে তুই কী করবি?

    এরপরে মিতা আমায় যা শোনায়, তা কল্পনাও করিনি। ওর সেই চ্যাটের বন্ধুকে ও বলেছে যে প্রেঞ্চ শিখতে চায়, কিন্তু শিখবার খরচ খুব বেশি। তাই শুনে সেই বন্ধু খুব খুশি। শিখবার খরচ বেশি শুনে জানতে চেয়েছে, - কত খরচ?
    তাতে মিতা একটু বাড়িয়েই বলেছে। তখন সেই অঁদ্রে সেটা ফ্রেঞ্চ ফ্রাঁ তে কত হয় হিসেব করে দেখে বলেছে, এর চেয়ে বেশি টাকা তো আমি অনেকদিন রেস্টুরেন্টেই খরচ করি, আমার দুই মেয়ে আছে, তারাও যখন তখন আমার কাছ থেকে টাকা চায়, তাদের কোনোদিনো টাকা দিয়েও খুশি করতে পারলাম না। এইটুকু টাকা যদি আমি তোমায় দিই, নেবে? যদি নাও, তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দাও।
    এই অবধি আলোচনা হবার পরে মিতা পড়েছে সংকটে। তার নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সে জানেনা ভালো করে, এবং জানলেও লাভ নেই। বাবা সব জেনে যাবে। সে মহা অন্রথ হবে। টাকা নিতে সে রাজি; এখন আমি যদি আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওর টাকাটা ট্রান্সফার করতে দিই। তার ওপরে অঁদ্রেকেও জানাতে হবে এসমস্ত। অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম তো আর মিতা নয়, সেটা হবে আমার নাম। আমি যদি রাজি থাকি তবে ও অঁদ্রে কে জানাবে।
    আমি রাজি হয়ে যাই।
    ও নিজের জায়গায় চলে যায়, একটু পরে আবার ছুটে আসে।
    শোন্‌! অঁদ্রে রাজি। তোর সঙ্গে কথা বলবে। ফোন করবে এখুনি। ফোনটা এলেই আমি তোর টেবিলে ট্রান্স্‌ফার করে দেবো।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৫৫652709
  • লাঞ্চ ব্রেকে হংকং ব্যাঙ্কের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছি আমরা দুজনে। এটিএম কার্ড দিয়ে তুলব না টাকাটা। কাউন্টারের ভদ্রলোক বলে দেন সঠিক কত অ্যামাউন্ট এসেছে। প্রায় ন হাজার টাকা। এক্‌জ্যাক্‌ট্‌লি ঐ অ্যামাউন্টটুকু তুলে নিই কাউন্টার থেকে।
    নে, ধর তোর টাকা। এবার নির্দ্বিধায় ভর্তি হয়ে যা ফ্রেঞ্চ শিখতে।
    মিতা ছুটে চলে অফিসে। চ্যাটে জানিয়ে দেয় অঁদ্রেকে, টাকা এসে গেছে, সে কালই গিয়ে ভর্তি হয়ে আসবে।
    অঁদ্রেও খুশি। তার নাকি খুব ভালো লেগেছে, সুদূর ভারতবর্ষের একটা শহর, যেটার নাম কোলকাতা, সেই শহরে বা সেই দেশটায় সে কোনোদিনো আসেও নি, সেখানকার একটা মেয়ে ফ্রেঞ্চ শিখতে চেয়েছে। অঁদ্রের সঙ্গে চ্যাটে আলাপের পরেই মেয়েটা ভাষাটা শিখতে চাইলো। এই পুরো ব্যাপারটাই অঁদ্রের কাছে দারুণ কিছু মনে হয়েছে। সেইজন্যেই সে খুশি। সে চায় মিতা মন দিয়ে ভাষাটা শিখুক।

    মিতা সন্ধ্যের ক্লাসে যেতে পারবে না। অফিস থেকে বেরোতে দেরি হয়ে যায়, পার্ক স্ট্রীট অবধি পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। তাই সে নিয়েছে ভোরের ক্লাস। সপ্তাহে দুটো দিন অফিসে আসতে অল্প দেরি হয়ে যাবে ঠিকই, কিন্তু কী আর করা যাবে? ও ঠিক ম্যানেজ হয়ে যাবে। আর চাই ভালো পোশাক, অন্যদের মতো। এই দেড়শো টাকার রেডিমেড সালোয়ার কামিজ নয়, প্যান্ট কিনতে হবে। ওখানে অন্যদের দেখে এসেছে, কি সুন্দর সব জিন্‌স্‌ টপ পরা।
    মিতা আমাকে বলে, আইস স্কেটিং রিঙ্কে না কি সুন্দর সুন্দর সব জিন্‌সের সেল হচ্ছে। জিন্‌স্‌, টপ। অঁদ্রের টাকা থেকেই দুটো জিন্‌স্‌ আর কয়েকটা টপ হয়ে যাবে। ওতো বেশি বেশি করে পাঠিয়েছে। কীরে? হবে না এই টাকা থেকে?

    কাক ভোরে জিন্‌স্‌ ও টিশার্ট পরে, সে চলে যায় ক্লাসে। ক্লাস থেকে অফিস। অফিসের শেষে, পোশাক বদলে বাড়ী ফেরে। ভোরের দিকে বাবা টের পান না যখন সে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন ফেরে, তখন তো দেখতে পাবেন। তাই তখন সে সালোয়ার কামিজে ফেরে।

    ওর এই হঠাৎ পরিবর্তন অফিসেও অনেককে বিষ্মিত করেছে। অনেকেই সন্দেহ পোষণ করছে যে, ওর এই পরিবর্তনের পেছনে আছে আমার হাত। আমার সঙ্গে মিশে মিশেই ও এখন প্যান্ট পরে অফিসে আসা শিখেছে। অথচ এই কদিন আগেও ও ছিলো একটা নিষ্পাত মিষ্টি মেয়ে। জিন্‌স্‌ দূরে থাক, সালোয়ার কামিজেরও ওড়না সবসময় ঢেকে রাখত ওর বুক। কোনোদিনো কেউ কোনো বেচাল দেখেনি। সেই মেয়ের অঙ্গে এখন উদ্ধত শার্ট। টাইট জিন্স্‌।
    অথচ নালিশ করবারো উপায় নেই। এ অফিসে কোনো ড্রেস কোড নেই তো।
    তবু অনেকেই চিন্তিত। ঝাজীও জানালেন, স্মোকিং রুমে এই নিয়ে অনেক আলোচনার ঝড় বয়ে গেছে। মিতার মতো শান্ত ভদ্র নম্র মেয়ে যদি আমার পাল্লায় পড়ে এভাবে পাল্টে যায়, কে বলতে পারে, কাল হয়ত সে সবার মুখে মুখে কথা বলতে শুরু করে দেবে। অসৎসঙ্গে সর্বনাশ হতে বসেছে মেয়েটার।
  • nina | 83.193.157.237 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৭:৩১652710
  • পড়ছি---
  • adhuli | 129.225.209.190 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৮:৪১652711
  • একটা কথা ভেবে বেশ মজা লাগে, বাঙালি ছেলেদের আড্ডায় প্রায় বলা হয়ে থাকে পরনিন্দা পরচর্চা মেয়েদের একচেটিয়া দোষ, অনেক বার শুনেছি মেয়েরা নাকি ঠিক আঁতেল বা রাজনীতিক আলোচনাতে যোগ দিতে পারে না। কিন্তু কলকাতায় অফিস-এ ছেলেদের স্মোকিং রুম-এ আমি যে লেভেলের PNPC দেখেছি, সারাক্ষণ অফিসের বাকি মেয়ে বা ছেলেদের চরিত্র/ দুশ্চরিত্র আনালিসিস, তাতে মেয়েদের একচেটিয়া দোষ দিতে পারি না। যদিও জানিনা মেয়েরা আদৌ এই লেভেল-এ PNPC করে কিনা। করলেও ছেলেরা যে খুব পিছিয়ে নেই, সেটা বলা যেতেই পারে।
  • de | 69.185.236.51 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৩:৩৩652712
  • আমাদের আপিসে মেয়েদের অনেকগুণ বেশী পিএনপিসি ছেলেরা করে। কখনো কখনো লাঞ্চ টেবলে গিয়ে লাঞ্চ করলে পুরো ভেবলে যাই তার মাত্রা দেখে।

    এই মিতা এবং তার বাবাকেও আমার অদ্ভুত লাগছে -
  • - | 109.133.152.163 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:৪৪652713
  • মিতা ও তার বাবা বেশ যথাযথ -- স্কুলের সেই দিদিমনি, "বাবা বিয়ে দিলো না" বলে আত্মহত্যা করলেন, তাঁর কথা মনে রাখলে।
  • Nina | 83.193.157.237 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৫:১৫652714
  • এই বাবা মা হওয়ার বেশ ঝক্কি আছে ঠিক কোনটা করা উচিত বোঝা বেশ শক্ত পেরেন্টিঙ্গ স্কুল থাকলে বেশ হয়
  • সে | 188.83.87.102 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৩:২০652715
  • নাঃ। কথায় কথায় তো এইটে বলতে ভুলেই গিয়েছে। অল্প ফ্ল্যাশ্‌ব্যাক করে নিই এই গল্পটায়।
    তখনো দীপক লাঞ্চের বিজনেস খোলে নি। সবেমাত্র কাজ শেষ হয়েছে অফিস স্পেসের। লাল লাল গদিমোড়া রিভলভিং চেয়ারে কিউবিক্‌লে ভেলেভেটে মোড়া পার্টিশন বোর্ড ইত্যাদিতে ঝলমল করছে সেঞ্চুরী।
    যে খোলা যায়্গাটায় আমার স্থান হয়েছে, সেটার পেছনে খানিকটা হাঁটার জায়গা ছেড়ে একটু দেয়াল একটু আড়াল ওয়ালা একটা জায়গায় জায়গা হলো সদ্যাগত মিঃ চক্রপাণির। তিনি এর আগে সাড়ে সাতবছর টাটা কন্‌সাল্টেন্সিতে কাজ করেছেন; সেই চাকরি ছেড়ে তিনি সেঞ্চুরীতে এলেন। সবাই বিষ্ময়ে শ্রদ্ধায় ভক্তিতে বিনয়ে থমকে গেল। কটাদিন চেঁচামেচি হৈ হট্টগোল একটু যেন কম। চক্রপাণিদা এসেছেন। শুধুযে অতবড়ো একটা কোম্পানীর চাগরি ছেড়েছুড়ে আমাদের এই স্টার্টাপ কোম্পানীতে জয়েন করে কৃতার্থ করেছেন সকলকে, তাই ই নয়, আসবার পরেপরেই এ অফিসে রোজ নানান মহাজন ও গুণিজন আসেন। (মহাজন শুনে চমকাবার কিছু নেই। এই কোম্পানীকে যারা আর্থ জোগান সেই পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমই এখন মহাজন। তাদের লোকজনই সরজমিনে ইন্‌স্‌পেক্ট করে যায় অফিস। কী খাতে কত খরচ হচ্ছে, এই সমস্ত)। দিব্যেন্দুদা তাদেরকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অফিস স্পেস দেখান, সার্ভার রুম ইউপিয়েস ইত্যাদির সঙ্গে আমাদের ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট ত্রিদিবদার থেকেও আরো জ্বলজলে নক্ষত্র হচ্ছেন এই মিঃ চক্রপাণি। ইনি শুধু বিই নন, এম্‌ই! যাদপ্পুরের আরেকটি সোনার মেডেল আমার ঠিক পিছনেই অল্প তফাতে বসে থাকেন। ওঁর টেবিলের সামনে যে ভেলভেটে মোড়া পার্টিশান বোর্ড, তাতে দুটো বড়ো বড়ো ডিগ্রীরই জেরক্স কপি বোর্ড পিন দিয়ে পাশাপাশি সেঁটে রেখেছেন ইনি নিজেই। গোল্ড মেডালিস্ট যে, সেটার প্রমাণও ঐ লাল ভেলভেটের ওপরে। শুধু ঝাজী টাইপের কিছু বদলোক আশা করছে, কোনদিন হয়ত চক্রপাণিকে গলায় মেডেল পরে বসে থাকতে দেখা যাবে ওঁর চেয়ারে।
    ঝাজীর এই বক্তব্য খুবই হিংসুটে প্রকৃতির, কারণ চক্রপাণি একদিন সেই সোনার মেডেল অফিসে এনেছিলেন ঠিকই কিন্তু গলায় একটিবারের জন্যেও পরেন নি। পরলে সে খবর সঙ্গে সঙ্গে রটে যেত।
    ভদ্রলোক রোগা ফর্সা লম্বা। নতুন অফিস আলো করে বসে আছেন। সিনিয়র ম্যানেজার। নতুন নতুন ফ্রেশি যারা জয়েন করবে, তাদের গড়ে পিঠে মানুষ করবার দায়িত্ব এঁকেই দেওয়া হয়েছে।
    সামনে সুবিশাল পথ। সে পথ হয়ত প্রশ্বস্ত নয়, হয়ত ম্সৃণ নয়, কিন্তু এগিয়ে তো যেতেই হবে। সবার অনেক আশা এই কোম্পানীকে কেন্দ্র করে।
    চক্রপাণি জয়েন করবার এক দুদিন পরেই কয়েকঘন্টার জন্যে ভাঁটা পড়ল কাজে। কাজে- মানে চ্যাট, ইন্টারনেটে সার্ফিং, আড্ডা, ইত্যাদিতে। বড়ো বড়ো ফ্ল্যাশ্‌বাল্ব সমেত বাবরি চুল মধ্যবয়সী রংচঙে ফুলফুল হাফহাতা শার্ট কাঁচাপাকা চুল ভারিক্কি চেহারা ফোটোগ্রাফার এসে পড়েছেন অফিস স্পেসে। সঙ্গে তাঁর লিক্‌পিকে অ্যাসিট্যান্ট।
    অল্প সময়ের মধ্যেই এই ফোটোগ্রাফার বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে অফিস স্পেসটা পর্যবেক্ষণ করে নিলেন। তারপরে কম্পিউটার সমেত এক্‌জিকিউটিভদের ফোটোশুট্‌ শুরু হোলো। আমি আবার সেদিন ফ্রক পরে এসেছি। আনন্দ কটমটিয়ে তাকাচ্ছে। একবার ভাবলাম এইখান থেকে পালাই বরং। কিন্তু দিব্যেন্দুদা আমায় ডেকে বললেন, তুমি আবার কোথায় যাচ্ছো? বোসো বোসো। সবার ফোটো উঠবে। অ্যাই, তোমরা সব চুল টুল আঁচড়ে পাউডার টাউডার যা মাখার মেখে নাও তাড়াতাড়ি। কোম্পানীর ব্রোশিওরের জন্যে ফোটো তোলা হবে আজ। চলো চলো, তাড়াতাড়ি, কুইক্‌!
  • সে | 188.83.87.102 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৪:১৯652717
  • ফোটো তুলবার জন্যে কম্পিউটারের মুখোমুখি কক্খনো বসতে নেই, বেশি খানিকটা অ্যাঙ্গেল রেখে নিতে হয়, তা সে অন্ততঃ পঁয়্তাল্লিশ ডিগ্রি তো হবেই, বেশি হলেও ক্ষতি নেই। এতে স্ক্রীণটাও দেখা যাবে, আবার যে স্ক্রীণের সামনে বসে আছে তার মুখটাও ধরা পড়বে একটি ফোটো ফ্রেমে। একটি থ্রি ডাইমেনশনাল ব্যাপারকে টু ডাইমেনশনের মধ্যে বেঁধে ফেলতে গেলে এটুকু কারচুপি তো করতে হবেই। এতো আর র‌্যাম্পে হাঁটা নয়, এ হচ্ছে ব্রোশিওর। পাব্লিক দেখবে এসব। স্ক্রীণে তখন নেমে এসেছে কঠিন কঠিন সব ব্যাপার। কিছুটা ওর‌্যাকল, কিছুটা পাইথন, দুয়েকটা কম্যান্ড প্রম্প্টের উইনডো, সমস্ত কিছুই খোলা আছে একটা স্ক্রীণে, পাশাপাশি বা একটার তলা থেকে আরেকটা উঁকি মারছে। খুব শক্ত শক্ত টেকনিক্যাল গুরুগম্ভীর লাগে যেন স্ক্রীণটা। একজন বসে আছে সেটার সামনে ঐ পর্টিফাইভ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেল করে। তার পেছনে জনা তিন চার উৎসুক দর্শক। কড়কড়ে কলারওয়ালা শার্ট পরনে। শার্টের রঙের কন্ট্রাস্টের কারণে এদের পোজিশন পাল্টে দিয়ে গেছেন ফোটোগ্রাফার। একজনের চোখে চশমা ছিলো, তিনি এইচার ম্যানেজার। তিনিও ব্রোশিওরে থাকতে চান। তিনি ঝুঁকে পড়ে কী যেন বোঝাচ্ছেন। ডানহাতের তর্জনী একমাত্র ওঁরই উঠে রয়েছে, সেটা স্ক্রীণের দিকে তাগ করা। বাকিরা কেউ ভুরু কুঁচ্‌কে, যেন স্ক্রীণের সেই কঠিন সমস্যাটা সে মন দিয়ে অনুধাবন করছে, আরো কেউ কেউ শুধুই চেয়ে রয়েছে স্ক্রীণের দিকে। আসলে এরা কেউই কিন্তু স্ক্রীণের দিকে চেয়ে নেই, সবাই চেয়ে আছে অনেকটা অ্যাঙ্গেল করে। কয়েকটা ফোটো নেওয়া হলো। তখনো তো ইলেকট্রনিক ক্যামেরা সেভাবে আসেনি মার্কেটে, তাই কী ছবি উঠছে সেসব বোঝা যচ্ছে না। পরে প্রিন্ট এলে তখন জানা যাবে। আমাকেও প্রিন্টারের দিকে তাকিয়ে হাতে মাউস নিয়ে পোজ দিতে হোলো। আমার সঙ্গে কেউ পোজ দিতে এগিয়ে আসেনি। তারপরে ফোটোগ্রাফার এগিয়ে গেলেন চক্রপাণির দিকে। চক্রপাণির ডেস্কের ড্রয়ার অল্প খোলা, সেখান থেকে উঁকি মারছে সোনার মেডেলটা। ওটা উনি ওখানেই রাকেন। রোজ তালাচাবি মেরে চলে যান ছুটির সময়ে। কিউবিকলের পর্টিশানেও জ্বলজ্বল করছে শংসাপত্রগুলোর অনুলিপি। কিন্তু ফোটোগ্রাফার ওসব অ্যাঙ্গেলে গেলেনই না। কিছুক্ষণ ওঁকে আপাদমস্তক দেখে নিয়ে টেবিলে খানিকটা জায়গা করে ফেললেন কীবোর্ড বইখাতা এসব সরিয়ে। সেই ফাঁকা হ্জায়গায় রাখা হোলো একটা মাউস প্যাড। তার ওপরে বসলো মাউস। ফোটোগ্রাফার ওঁকে বললেন, এই মউসে হাতটা রাখুন একটু। অ্যাঁ হ্যাঁ, আরেকটু নীছে, হ্যাঁ হ্যাঁ, ব্যস্‌ ওতেই হবে। ওঁর শার্টের হাতার আস্টিনাঅ একটু সরিয়ে পোজিশন করে দিলেন তিনি। তারপরে ফচ্‌ ফচ্‌ করে স্ন্যাপ নেওয়া। নানান দিক থেকে। কখনো ঝুঁকে পড়ে তো কখনো সাইড থেকে। উঁহু, হাতটা নাড়াবেন না। দারুণ সুন্দর আঙুল তো আপনার। একেবারে মেয়েদের ম... মানে এত সুন্দর আঙুল সচরাচর দেখা যায় না। মেয়ের্দেরো আঙুল সুন্দর হয়, তাই এটা কিন্তু খারাপভাবে নেবেন না।
    চক্রপাণির হাতের ফোটোসহ ব্রোশিওর এসে যায় দিন সাতেকের মধ্যেই। লাল রঙের মাউস প্যাডের ওপরে সরুসরু আঙুলওয়ালা একটা হাত ধরে রেখেছে মাউস। চক্রপাণি ছুঁয়ে দেখেনা সেই ব্রোশিওর। বিরক্তিতে।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৬:২৭652718
  • ব্রোশিওরে আমারও ফোটো ছেপেছে, কালার্ড ফোটো। আনন্দর ফোটো নেওয়া হয়েছে সার্ভাররুমে। সার্ভারগুলো খুব বেশি সরানো যায় নি, তাই সবকটা সার্ভার একটা ফোটোয় ধরা পড়েনি, কিন্তু ফোটোটা খুব সিরিয়াস টাইপ। আনন্দ খুব গম্ভীর হয়ে ভুরু টুরু কুঁচকে ফাইল সার্ভারটার সামনে দাঁড়িয়ে। অনেক তার টার দেখা যাচ্ছে ব্যাকগ্রাউন্ডে। পেছনের ঘরটা থেকে ইউপিয়েসটা থাকলে ফোটোটা আরো জমে যেত, রেলের সিগ্‌ন্যালরুমের মতো অনেক আলোটালো জ্বলত; খুব কালারফুল হতো ব্যাপারটা। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি। না হলেও ক্ষতি নেই। এরই মধ্যে কে আবার যেন বলল, আমার ফোটোটাও তো সার্ভাররুমে তোলা যেত, তা না নয় শুধু আনন্দর ফোটো কেন? ও কি একাই সিস্টেম্‌ অ্যাড্‌মিনিস্ট্রেটর নাকি?
    কিন্তু এর উত্তর আমি আগেই জানি। ফোটোগ্রাফার ভদ্রলোক আনন্দকেই বেছে নিয়েছেন ঐ ফোটোর জন্যে। প্রক পরা রোগা পাতলা একটা মেয়েকে ঠিক সিস্টেম্‌স্‌ অ্যাড্‌মিনিস্ট্রেটরের পোজে মানায় না। ও থাক প্রিন্টারের সামনে। টল ডার্ক গোঁফওয়ালা হ্যান্ডসাম আনন্দকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য লাগবে ঐ রোলে। এই ব্রোশিওরই তো আমাদের কোম্পানীর খবর পৌঁছে দেবে দুনিয়ার কাছে। শুধু লেখা নয়, সঙ্গে থাকবে ফোটো। লেখার পরিপূরক হচ্ছে ফোটো। সেই কবেই তো এই সারসত্যটি জেনে এসেছি আনন্দবাজারের অফিসে। সেই ফোটোর মূল্য অপরিসীম। ক্লায়েন্ট কি এমনি এমনি আসবে? এই ব্রোশিওর শেঘ্রই পৌঁছে যাবে বিশ্বের দরবারে।
    বিশ্বের দরবারে শুনে আশ্চর্য লাগছে বুঝি?
    ওমা! সেকি? কেন বলিনি বুঝি আগে? ভুলেই গিয়েছি। মার্চেই যে এই সমস্ত ব্রোশিওর সঙ্গে নিয়ে রওনা হচ্ছেন ডিরেক্টরেরা। কোথায় বলুন তো? উঁহু, অ্যামেরিকা নয়, অ্যামেরিকা নয়। জার্মানী। সেবিট ফেয়ারে বিশ্বের দরবারে থাকবে সেঞ্চুরীর প্যাভিলিয়ন।
    এক হপ্তাও টাইম বাকি নেই।
    এদিকে অ্যাড্‌মিনিস্‌ট্রেটিভ অ্যাসিস্‌টেন্ট্‌দের মধ্যে কম্পিটিশন লেগে যায়, কার বস্‌ বিদেশে যাবে, এই নিয়ে। নেক্‌ টু নেক্‌ কম্পিটিশন। মধুমিতা মূলতঃ ক্যশিয়ার পুলকবাবুকে হেল্প করে। অন্যদিকে মেনকা চোপড়া সমস্ত সময়েই মিঃ শান্তনু করের ঘরে গিয়ে ডিক্টেশন নেয়। কিন্তু আজ এই দুজনে কামড়াকামড়ি করছে টম্‌ ক্রুজের সেক্রেটারি হবার জন্যে। কারণটা পরিষ্কার। পুলকবাবুর জার্মানী যাবার প্রশ্নই ওঠে না। শান্তনু স্যারেরও অন্য ইম্‌পর্ট্যান্ট কাজ আছে। দিব্যেন্দু ও টম্‌ক্রুজ এরাই রিপ্রেজেন্ট করবেন সেঞ্চুরীকে সেবিটে। মধুমিতাকে টম্‌ক্রুজ হাঁক দিয়ে ডাকেন ঘরে। সে দৌড়ে দৌড়ে যায়। দীপক সেখানে দু বাক্স চাইনীজ এনে রেখেছে। একটায় ফ্রায়েড রাইস, অন্যটায় চিলি চিকেন। একটা প্লেটও রয়েছে। পাশে কয়েক প্যাকেট সস। সঙ্গে চামচ দুটো।
    এই মধুমিতা, এসো। এই এতো খাবার দিয়ে গেছে। আমি পারব না এতটা একা। নাও তুমিও খাও। আরে খাও খাও।
    এই বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যান টম্‌ক্রুজ।
    মধুমিতা আমাদেরো ডেকে আনে।
    অ্যাই তোরাও খা না। খা। ও (টম্‌ ক্রুজ্‌) আর খেতে পারবে না বলল, তোরাও খা।
    কে একজন পেছন থেকে খুব নীচু গলায় বলে ওঠে - ও আর খেতে পারবে না। ও!
    সেই শুনে খুব মৃদু ফিস্‌ফিস্‌ হাসি। অল্পক্ষণের জন্যে।
    তারপরে কেউ বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে না দেখে মধুমিতা একাই খেতে শুরু করে দেয় চামচ দিয়ে।
    এরই মধ্যে ফিরে আসে টম্‌ ক্রুজ। মধুমিতা খাওয়া থামিয়েছে।
    ওঃ, এখনো শেষ করোনি খাবারটা?
    কী করে শেষ করব? অ্যাতোটা খাবার..
    কী ভেবে টম্‌ ক্রুজ দু চামচ তুলে খেয়ে নেয় আবার, তারপরে নিজের হাতের চামচটার তাকিয়ে থাকে একটু।
    এটা কী!
    কী?
    এটা কী লেগে আছে?
    তাইত? কী লেগে আছে? কয়েকজন ঝুঁকে দেখলো।
    মেরুন লিপ্‌স্টিক লেগে রয়েছে চামচটার হাতলের গোড়ার কাছটায় ও ভেতরেও। মধুমিতার ঠোঁটের মেরুন রং অনেকটাই উঠে গিয়ে লেগেছে ওখানে। একেবারে সেম শেড।
    টম্‌ক্রুজ উঠে চলে যায় ওখান থেকে। এ নিয়ে কথা বিশেষ বাড়ে না। কোনো মন্তব্য নয়, সবাই চুপ। আজ সন্ধ্যেবেলাই অফিস থেকেই সো ও জা সবাই চলে যাবে এয়ারপোর্টে। রাতের ফ্লাইট। অনেক ব্রোশিওর আছে। ওজন মাপা হয়ে গেছে। দরকার পড়লে এক্‌সেস্‌ ব্যাগেজ ফি দিতে হবে।
    লাঞ্চের পরেই দুই ডিরেক্টর বাড়ী থেকে ঘুরে এলেন নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে একেবারে রেডি হয়ে। তারপরেও অফিসে অনেক কাজ। অনেক কাগজপত্র, প্রিন্ট আউট, লাস্ট মোমেন্ট সাজেশান এই সমস্ত চলল। কেউ কেউ এই সুযোগে জানিয়ে রাখছে এঁদেরকে, যে সেরকম পরিস্থিতি হলে তারা অ্যামেরিকার বদলে জার্মানীতেও প্রোজেক্ট নিতে রাজি আছে। মানে, জার্মানী তো খুব একটা বাজে জায়গা নয়, সেভাবে দেখতে গেলে। অ্যামেরিকায় যেতে যদি একান্ততই দেরি হয়ে যায়, তো তারা রাজি, জার্মানী এমন আর কি খারাপ অপশান? তারপরে আরো তো ইয়োরোপিয়ান কান্ট্রিজ রয়েছে।
    মেনকা ও মধুমিতা দুজনেই যেন আজ অজিত ভট্‌চাজের দায়িত্ব নিয়েছে। কাড়াকাড়ি করে ছুটে যাচ্ছে। দিব্যেন্দু দত্তর কোনো অ্যাসিস্ট্যান্ট নেই। ইনি একবার ফোনে, তো অন্যবার বাক্সের ভেতরে কতগুলো ব্রোশিওর, এই সমস্ত গুণে গুণে লেবেল লাগাচ্ছের দীপকের সাহায্যে। মধুমিতা বলে দিচ্ছে টম্‌ক্রুজকে শার্টের কলার একদিকে বেঁকে গেছে কিনা, টাইএর নটটা আরেকটু টাইট হলে ভালো হতো। নিজে হাত লাগাচ্ছে না, কিন্তু টম ক্রুজের সাজপোশাকের দিকে খুব কড়া নজর তার।
    মিতা আমায় ডেকে নিয়ে গেল ওদিকে।
    ওরে আয়, আয়, এ জিনিস মিস্‌ করিস না।
    সাড়ে ছটার মধ্যেই সব রেডি। দরজা খুলে সুটকেস ব্যাগ ব্রোশিওরের বাক্স নামাচ্ছে ড্রাইভারেরা, অজিত ভট্‌চাজ সবাইকে টাটা বলে বেরিয়ে যাচ্ছেন গেট দিয়ে, নীচে কয়েক ধাপ সিঁড়ি। পেছন পেছন মধুমিতা। সে ও চাইছে এয়ারপোর্ট অবধি যেতে। কয়েকবার গেয়ে রেখেছে, এয়ারপোর্ট অবধি যেতে চায়।
    এবার দিব্যেন্দু দত্তও নিজের ব্যাগ নিজের কাঁধে নিয়েই বেরিয়ে গেলেন।
    হঠাৎ দেখি প্রায় দৌড়ে ফিরে এলো মধুমিতা। একটু ভয় পেয়েছে মনে হয়। হাঁফাচ্ছে।
    কিছু ভুলে গেছ নাকি?
    পুলকদা জিগ্যেস করেন।
    না।
    তবে? যাবে না ওদের সঙ্গে?
    মধুমিতা চুপ করে থাকে।
    সিঁড়ির দিকটায় আলো তেমন তেজ নয়। কিছু ভালো করে দেখা গেল না। আওয়াজ পাওয়া গেল গাড়ীটা বেরিয়ে গেল প্রেমিসেস থেকে।
    কী হোলো বলোতো? এই এত যাবে যাবে করে লাফাচ্ছিলে, তো লাস্‌ মোমেন্টে ফিরে এলে কেন?
    পুলকদা আবারো জিগ্যেস করেন ওকে।
    না। গাড়ীতে জায়গা হবে না। ওর ওয়াইফ এসে ঢুকল তখন, সে ও যাবে এক গাড়ীতে।
    হ্যাঁ। তাই বলো। অজিত ভট্‌চাজের বৌ ও যাচ্ছে এয়ারপোর্ট। তাতো যাবেই। এরকম একটা হ্যান্ডসাম হাজবেন্ডকে একটু চোখে চোখে রাখবে না? এই নিয়ে মন খারাপ করলে চলে?
    মধুমিতা রেগে উঠে চলে যায় ওখান থেকে।
    আরে ধুস্‌! এসব ছোটোখাটো জিনিস নিয়ে মাথা গরম করে লাভ আছে? হিঁঃ। ওটা ওর বাড়ী, আর এটা অফিস। সেই পার্থক্যটুকু মনে না রাখলে চলবে তোমার? খামোখা মাথা গরম করে মেয়েটা। এই বুদ্ধি নিয়ে চাকরি করতে এসেছো? হিঁঃ হিঁঃ। আরে বাবা, বাড়ীটা হচ্ছে বাড়ী, আর অফিসটা অফিস।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:০৬652719
  • এই যে সব চলে গেল জার্মানীতে, দুগ্গা দুগ্গা বলে ওঠেন পুলকদা। সব ভালোয় ভালোয় হয়ে গেলে আমাদেরই তো ভালো।
    অনেকেই ফ্লাইট কটায়, কোন এয়ারলাইন্স্‌, কবার চেঞ্জ, ফার্স্ট স্টপ ওভার কোথায়, ফাইনাল ডেস্টিনেশন কোথায়, এসব জিগ্যেস করে।
    মেনকা স্মার্ট্‌লি জবাব দেয়। সেবিট ফেয়ার, হ্যানোভার, জার্মানী। ফ্র্যাঙ্কফুর্টসে বাই ট্রেন জানা পড়েগা।
    অদ্ভুত লাগে আমার। আমাদের এই সমস্ত কাগজ পত্র উড়ে যাচ্ছে সেবিটে। সেঞ্চুরীর জন্যে গর্ব হয়। এইসব প্রোজেক্ট ফোজেক্ট ভালো বুঝিনা, কিন্তু কীভাবে পাল্টে যাচ্ছে আমার জীবন।
    গাড়ী এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হবার পরে ভাঙা হাটের মতো দৃশ্য এখানে। আজ কেউ কাটলেট আনতে ছুটছে না ক্যাম্পারীতে। শান্তনু স্যারও বেরিয়ে গেছেন।
    কোত্থেকে যেন অনির্বান এসে গল্প জুড়ে দেয়।
    হোয়েন আই ওয়েন্ট টু জার্মানী, আমি যখন জার্মানী গেছলাম, জাস্ট ফাইভ আওয়ার্স নোটিসে।
    চিবিয়ে চিবিয়ে বলছে অনির্বান। আমরা জানি যে ও আগে প্রায় বছর ছ সাত সিমেন্সে চাকরি করেছে। কিন্তু মাত্র ফাইভ আওয়ার্স নোটিসে জার্মানী? একটু বেশি হয়ে গেল না কি?
    আমিই জিগ্যেস করি। সেকি? ভিসা নিতে হয় নি?
    হয়েছিলো। দ্যাট ওয়জ ভেরি কুইক। জাস্ট অ্যা ম্যাটার অফ হাফ্‌ অ্যান আওয়ার অর সো।
    বলে কী ও?
    কোলকাতা থেকে?
    আধঘন্টায় ভিসা? কত সালে বলোতো? কোন ইয়ার? কটা জার্মানী ছিলো তখন?
    আমি চেপে ধরি। গুল মারার একটা লিমিট
    থাকা উচিৎ।
    কটা জার্মানী, কোন ইয়ার, এসব জেনে কী করবে? আমি কি মিথ্যে বলছি? বিশ্বাস না হয়, বিশ্বাস কোরো না।
    এই বলে সেখান থেকে সরে যায় অনির্বান।

    আচ্ছা, এরকম অবস্থায় একটা গান হলে কেমন হোতো? কেউ গায় না অব্নশ্য। তবু মনে হয় এই রবীন্দ্রসংগীতটা খুব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট এই সন্ধ্যার জন্যে।

    জয়যাত্রায় যাও গো-

    (ইউ টিউবে লিঙ্ক পেলাম না)।

    এখন ব্রেক।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৮:৪৮652720
  • ব্রেক শেষ।

    ব্রেকের আগে অল্প ফ্ল্যাশব্যাকে কেন যেতে হয়ছিলো সেটা বুঝিয়ে বলি। আসলে গল্প বলতে বলতে, প্রায় পুজোর ছুটি অবধি এগিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে খেয়াল হোলো একটা ঘটনা বলতে ভুলে গেছি, যে ঘটনাটা ছোটো হলেও মনে আছে। চক্রপাণির কথা সেই প্রসঙ্গেই মনে পড়ে গেল, এবং সেই সূত্রে ফোটো সেশন, ব্রোশিওর, অবশেষে সেসব ধরে ধরে সেবিট ফেয়ার, সেক্রেটারী মেয়েদের রেষারেষি, চেন রিয়্যাক্‌শানের মতো। হয়ত পুজোর ছুটির সেই গল্পটুকু মনে না পড়লে এই সেবিট ফেয়ার ইত্যাদি বাদই পড়ে যেত আমার চাগ্রীর গপ্পের এই লেখা থেকে।

    হ্যাঁ, যা বলছিলাম। দেখতে দেখতে পুজোর ছুটি পড়ে যাচ্ছে ইস্কুল কলেজগুলোয়। পঞ্চমীর দিন থেকে, কোথাও বা একদিন আগে থেকেই ছুটি দিয়ে দিয়েছে। তা বলে অফিসে, বিশেষ করে প্রাইভেট সেক্টরের অফিসে তো আর অত ছুটি থাকবে না। থাকা উচিৎ ও নয়। আমাদের সেঞ্চুরীতে বড়োজোর অষ্টমী নবমী দশমী পুজোর ছুটি দিলেও দিতে পারে। তার মধ্যে আবার যদি শনি রোববার পড়ে যায় তো সে ছুটিও মারা যাবে।
    পুজো অবধি এগোতে এগোতে অফিসেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। গোটা দু তিন দল তৈরী হয়ে গেছে সে বেশ টের পাই। একটা দলে আছে আনন্দ ও তার ভক্তসকল। আনন্দর এইরকম টেনিদা মার্কা পপুলারিটিতে আবার খুবই অসন্তুষ্ট এইচারের সেই চশমা পরা ভদ্রলোক। ইনি হাইটে, চেহারায়, হ্যাণ্ডসামত্বে, আনন্দর থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। যদিও বিদ্যায় বুদ্ধিতে পোজিশনে আবার যোজন সমান এগিয়ে। কিন্তু পপুলারিটি এমন একটা জিনিস, যেটার লোভ ত্যাগ করা খুব শক্ত। ক্ষেত্রবিশেষে এটা পয়সা কড়ির চেয়েও বেশি লোভের জিনিস। এই একই লেভেলে মার খাচ্ছেন মিঃ চক্রপাণি। এঁর চেহারায় হাইট আছে, ফিগার আছে, কাঁচা সোনার মতো রং আছে, কিন্তু হ্যান্ডসামত্বের অভাব। কী যেন নেই। সেটা খুঁজে বের করা যাচ্ছে না, কিন্তু নেই যে - সেটা পরিষ্কার বোঝা যায়। জ্ঞানে বিদ্যায় বুদ্ধিতে এগিয়ে থেকেও এঁরা তেমন কইয়ে বলিয়ে নন। আনন্দ পাজি লোক সেটা প্রত্যেকে একবাক্যে মেনে নেবে, কিন্তু তার একটা পার্সোনালিটি আছে। তার ওপরে সে হচ্ছে অজিত ভট্‌চাজের পেয়ারের লোক। দিনে অন্ততঃ দুতিনবার সর্বসমক্ষে খোলাখুলি তেল দিয়ে আসে অজিত ভট্‌চাজকে। তা সে কোনো দরকার থাকুক বা না থাকুক। কখনো তার ঘরে ঢুকে পড়ে তেল দেয়, কখনো স্মোকিং রুমে, মানে যখন যেখানে পাবে - তেল ও দেবেই দেবে। এটা ওর রুটিন টাস্ক। ফলে লোকজন, মানে ভক্তের দল আনন্দর দিকেই বেশি ঘেঁষা। তাদের সংখ্যাও কম নয়। অন্যদিকে চক্রপাণি, ইত্যাদি কয়েকজন সেভাবে শিষ্যসংখ্যা বাড়াতে পারছে না। নতুন নতু জয়েনিরা এদের কাছে এসে কাজ শিখে নিয়েই অকৃতজ্ঞের মতো "আনন্দদার দলে" যোগদান করছে, এ জিনিস বেশিক্ষণ সহ্য করা যায় না। এসব সত্ত্বেও এদের দলে অল্প দুচার জন আছে। এবার তিন নম্বর দলটা হচ্ছে অজিত ভট্‌চাজের নিজের দল। সেই দলের গতি প্রকৃতি অন্য লেভেলের। সেই দলের মোডুস অপেরাণ্ডি এত স্বল্প পরিসরে বর্ণনা করবার মতো নয়। হয়ত কিছু কিছু আভাস প্রসঙ্গক্রমে আসবে, গল্পের প্রয়োজনে।
    কিন্তু এত কথা বলবার পেছনে যেটা বলতে চাচ্ছি, সেটা হচ্ছে যে আনন্দ ও তার প্রত্যক্ষ বিরোধীপক্ষের মধ্যে লেগে গেছে লড়াই। চোরাগোপ্তা অ্যাটাকের সম্ভাবনাও এখানে অমূলক নয়।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৯652721
  • শনিবারে আমি বড়ো একটা যাই না অফিসে। প্রথমদিকে খুবই যেতাম, তাতে দেখি হয় খেটে মরতে হবে, নয়ত কোনো কাজই নেই অথচ বসে থাকতে হচ্ছে। না আছে কোনো ওভারটাইম, না আছে প্রশংসা। এইরকম শনিবারে আনন্দ ও স্নেহার হ্যাহ্যা হিহি, জুতো খুলে খালি পায়ে দৌড়োদৌড়ি অফিস জুড়ে, এক দুবার দেখেছি, শুনেওছি ড্রাইভারদের থেকে কি দীপক বা অজয়দার কাছে। তারপর আর বিশেষ যেতাম না শনিবারে, খুব জরুরী কিছু থাকলে তবেই যাবার দরকার থাকবে। যারা শনিবারে আসে, তারা এটুকু জেনেই আসে যে আনন্দ বা অন্য কেউ থাকবে ইউপিয়েস ও সার্ভার অন করে দেবার জন্যে।
    সেই শনিবারে অফিসে গেলাম শুধু ঘুরে দেখতে। এর আগেও এ অফিসে দিব্যেন্দুদা তাঁর বাচ্চা ছেলে সম্রাট কে নিয়ে এসেছিলেন। সে বেশ ছুটোছুটি করেছিলো, আমাদের মনে আছে। আনন্দও এনেছে তার মেয়েকে কয়েকবার। তার মেয়েও ক্লাস ওয়ান টোয়ানেই পড়ে মনে হয়। এদিন আমিও মনে করলাম, বাচ্চাকে নিয়ে একটু দেখিয়ে আনি- সেই যেখানে আগে কাঠের মিস্তিরিরা কাজ করত, সেই জায়গাটা কী সুন্দর অফিস স্পেসে রূপান্তরিত হয়েছে।
    সেদিন শনিবার। দুর্গাপুজোর ঠিক আগের শনিবার। এদিন তো আমার অফিসে যাবার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এফিসে কোনো কার্ড সিস্টেমও নেই। এগারোটা নাগাদ একটু দেখবার ছলে গেলাম। গিয়ে দেখি দীপক আছে। হয়ত চা বানাচ্ছিলো, ঠিক মনে নেই। আরো এক দুজন এসেছে। আমায় দেখেই বলল, একটু ইউপিয়েস আর সার্ভার অন করে দিতে। করে দিয়েছি। তারপরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অফিসটা দেখাচ্ছি শিশুটিকে। এইবারে চক্রপাণির প্রবেশ। সে ভেবেছে আনন্দ বুঝি এসেছে। আনন্দ আসেনি শুনে, জিগ্যেস করে জেনেছে যে আমি এসেছি।
    চক্রপাণি এসেছে কোনো কাজ করতে। সে নিজেও ইউপিয়েস অন করতে জানে। বা হয়ত জানেও না। কিন্তু সার্ভার সে এর আগেও নিজেই অন করেছে এই ধরণের শনিবারে। এই লোকটার অদ্ভুত সন্দেহ বাতিক মনে হয়। সে এসি নিজের টেবিলে কীসব খুঁজতে লাগল। শনিবারে আমার অফিসে আসাটা একেবারেই পছন্দ করেনি সেটা তার মুখের ভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সরাসরি আমায় কিন্তু কিছু বলছে না। নিজের মনেই ফোঁশ্‌ফোঁশ্‌ করছে। খুব অস্বস্তিতে রয়েছে যেন।
    আমি নিজেও তখন খুব বেশিক্ষণ আসিনি, এবং থাকবার জন্যে আসিওনি, অফিস দেখাতে এনেছিলাম, দেখানো হয়ে গেছে, চলে যাবো, বাকিরা রয়েছে থাকুক, কাজ করুক।
    হঠাৎ শিশুটিকে দেখতে পায় চক্রপাণি। বা হয়ত আগেই দেখে নিয়েছিলো। এবার তার সমস্ত রাগ সে ঢেলে দেয় এই অজুহাতে।
    তুমি একে নিয়ে অফিসে এসেছো কেন?
    আমি একটু অপ্রতিভ হয়ে যাই। শিশুটিও সঙ্কোচে আড়াল খুঁজছে।
    না মানে, ওকে নিয়ে বেড়াতে এলাম। দেখাবার জন্যে।
    এটা কি বেড়াবার জায়গা?
    আমি কিছু বলি না।
    এবার থেকে তাহলে সবাই এরকম যাকে পারবে তাকে নিয়ে বেড়াতে চলে আসবে।
    এই কথার কোনো উত্তর হয় না।
    শিশুটিকে নিয়ে আমি বেরিয়ে যাই।
    চল, আমরা এখন বাইরে যাই।
    সে বলছে, ঐ লোকটা তোমাকে ওরকম বলছিলো কেন? বাইরের লোকের অফিসে আসা বারণ?
    হতে পারে, আমি ঠিক করে জানি না।

    বাইরে বেরিয়ে গিয়ে ভাবি, কেন এমন করল আমার সঙ্গে চক্রপাণি? দিব্যেন্দুদার ছেলে এসেছিলো, আনন্দর মেয়েও এসেছে, কই তাদের তো বলে নি। বলতে পারে না। ওর সে সাহস নেই। কীসের এত ভয় ওর? ওর দেরাজ ভেঙে সোনার মেডেল চুরি করে নেবো আমি?

    অফিস থেকে বেরিয়ে মনটা খারাপ হয়ে থাকে। এত সুন্দর একটা দিন ছিলো। সামনে পুজো আসছে, অথচ এই হিংসুটেগুলো অন্যের মুখের হাসি সহ্য করতে পারে না। যে করে হোক মানুষের মুখের হাসিটুকু কীকরে মুছে দেবে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে।
    তার চেয়ে আমর বরং একটু ঘুরে বেড়াই। হেঁটে হেঁটে অব্নেকটা ঘুরে বেড়াই, ফেরার পথে একসময় গোলপার্কের কাছে ইউটিআই ব্যাঙ্কটার সামনে, দেখি ঢেলে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকার পুজাসংখ্যাগুলো। শারদীয়া দেশ, আনন্দবাজার, আনন্দমেলা, আরো অনেক কিছু। একটা শারদ সংখ্যা কেনা যেতেই পারে শিশুটির জন্যে সে যদি চায়। এমন সময় ঘিরে ধরে দুটো তিনটে শিশু। গরীব, ভিখিরি শিশু। ভিক্ষা চাইছে। পয়সা চাইছে। আমার শিশুটি দেখি বইপত্র ভুলে ওদের দিকে দেখছে।
    একটা খেয়াল চাপে মাথায়। ওকে বলি - ওদের কিছু দিবি?
    দেবো।
    ঠিক আছে, তবে কিন্তু আনন্দমেলা কেনা হবে না।
    সে একটু চিন্তা করে নেয়। তারপরে রাজি হয়ে যায়।
    আনন্দমেলার দাম ও তার সঙ্গে আরো একটু টাকা জুড়ে ঐ তিনটে শিশুকে আমরা কিনে দিই খাবার। পাশের দোকান থেকে। দামী কিছু খাবার নয়। মুড়ি, তেলেভাজা, মিষ্টি। তিনটে ঠোঙা সে এগিয়ে নিয়ে ধরিয়ে দেয় তারই সমবয়সী তিনজনকে। তারা খাবার নিয়ে চলে যায়।
    আমি কি পারতাম না, খাবার ও আনন্দমেলা দুটোই কিনে দিতে? বেশ পারতাম। আমার তো আজ টাকার কোনো অভাব নেই। তবু দিলাম না। শিশুটি জানুক, সে নিজে দিলো ঐ তিনজনকে। নিজের থেকে। নিজের প্রাপ্য অংশ থেকে কিছু দেওয়া। দিতে শিখুক। দিয়েও তো আনন্দ পাওয়া যায়। তার থেকেও আনন্দমেলা হয় না কি? ও তো আনন্দ পেয়েছে। বইটা কিনলে, তাতে অনেক গল্প, কবিতা, ছবি, কমিক্‌স্‌ থাকত। থাকত ভালো মানুষ হবার অনেক থিয়োরি। অনেক তো থিয়োরি হোলো। এবার একটু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও করুক।
    প্র্যাক্টিকাল ক্লাসের আনন্দে মেতে উঠি আমরা দুজনে। আরও অনেক কিছু করতে হবে আজ। আজ আমরা ঘুরে ঘুরে অনেক হাসি কিনব। কারও সাধ্য নেই আমাদের হাসি ম্লান করে দেয়।
  • kc | 198.71.230.227 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৯652722
  • জ্জিও।
  • 4z | 208.231.20.20 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৪652723
  • সুন্দর
  • tdd | 219.20.111.1 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫১652724
  • এই প্রসঙ্গে আমার নিজের জীবনের এক ঘতনা মনে পরল ।বলে নি এইখানে

    বছর ২ অগে, একদিন শনিবার দুপুরে দমিনোস গেছি পিজা খেতে। ভর দুপুর দোকন খুব ফান্কা।।।খেতে খেতে খেয়াল হোলো সামনের দিকে কয়েক্তি বাচ্চা বসে আছে।।খলি পা।।রুখো চুল।।ময়্লা জামা। অনভ্যস্ত চোখে বড় অবাক থেকলো।।।কৌতুহলি হোয়ে তাকিয়ে থকি। খানিক বাদে দেখি কাউন্তার এর ছেলেতি ওদের এক্তা বক্স এ করে কতগুলো ব্রেদ স্তি্ক এর মতো জিনিশ দেয়।।। আর সাথে কেচাপ। বাচ্চাগুলো সেই স্তি্ক সশ লাগিয়ে খেতে থাকে অতি আনন্দের সাথে।

    কেন্দে ফেলি অমি।।।কাউন্তার এ গিয়ে জিগ্গাসা করি।।ওরা বলে, বেচে থাকা ময়্দা ওর ওভাবে বেক করে দেয়।।বচ্চাগুলো খুসি হয়। কি অসহায় লাগে নিজেকে কি বলি।।।আমি আর আমার সাথের বন্ধু মিলে এক্তা ভেজ পিজ্জা অর্দার করে দিই ওদের জন্ন্য।।বাড়ির পাশেই এসেছিলাম সাথে কার্দ ছিলনা।।৪০ তাকা কম পড়ে ২ জনের মিলিয়েও।।।কাউন্তার এর ছেলেতিকে বল্লাম।।সে হেসে বল্লো,আপ্নারা বাকিতা দিলেন এতুকু আমরা সবাই মিলে দিলাম। লজ্জাই মাথা নত হয়ে এলো।।।ওনেক কিছু শেখা বাকি হয়্তো এখনো।।

    "সে " লেখাতে বাধা দেবার জন্ন দুখ্খিত।।।কিন্তু মনে হল দিতে জানার এই শিখা নিতে হয় জীবনভর সবাইকে

    নতুন তাই অনেক বানান কিভাবে লিখব জানিনা
  • Nina | 83.193.157.237 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৫১652725
  • সে খুব ভাল লাগল তোমার চিন্তাধারা
    অমার বাবা বল তেন
    কি দিতে পার তাই নিয়ে চিন্তা কোরো কি পেতে পার তা নিয়ে নয় তহোলে জীবন খুব সুখের হবে
  • de | 24.139.119.173 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:৩৫652726
  • আহা! ক্ষী ভালো!
  • Som | 34.233.64.121 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:০৪652728
  • সত্যি এই ভাবে ভাবা তাও একটা শিক্ষা। আমরা কজন পারি এভাবে ভাবতে ।
  • Tim | 101.185.30.68 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৪০652729
  • চমৎকার লাগছে পড়তে। লেখার এমন স্টাইল সে-দির একচেটিয়া।

    এইভাবে ভাবার, কিন্তু কথাই ছিলো। ছোট থেকে মানুষ দেখতে শিখবে, ভাবতে শিখবে, শুধু নিজেকে নিয়ে না অন্যদের নিয়েও, এগুলো স্বাভাবিকভাবেই আসা উচিত ছিলো। এইগুলো শেখাতে তো ডিগ্রি বা পেডিগ্রি কিসুই লাগেনা।

    অনেকে অবাক হচ্ছেন এই ভাবনা বা শেখানো দেখে। আমি অবাক হই ভাবনার অভাবটা দেখে। তবে কি লোকজন টেকি আর বেশি রোজগেরে হয়ে এইগুলোর দরকার সম্পর্কে উদাসীন হয়ে গেল?
    ছোটবেলায়, আমার চারপাশে অনেক কম এক্সপোজার ও শিক্ষাগত যোগ্যতার মা বাবাদের দেখেছি নিজের সন্তানের মধ্যে এগুলো চারিয়ে দিয়েছেন। আলাদা করে এসো আজ আমরা অন্যের জন্য ভাবতে শিখি বলে ওয়ার্কশপ করতে হয়নি।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৬:০৫652730
  • ট্রেনিং রুম, থুড়ি লাঞ্চ রুমটা এখন মোটামুটি দীপকেরই অধীনে। ও নিজেই সুইপারকে দিয়ে ঐ ঘরটা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করায় নিয়মিত। তক্তা লাগানো চেয়ার সংখ্যার হিসেব বুঝে দুটো তিনটে ব্যাচে কতক্ষণ ধরে খাওয়া দাওয়া হবে, সবই সে ম্যানেজ করে চলেছে। যদি কখনো কারো দরকার পড়ে ঐ ঘর - হয়তো কোনো মিটিঙের জন্যে বা কয়েকজন মিলে প্রোজেক্টের ব্যাপারে দুটো কথা বলে নেবে, হোয়াইট বোর্ড আছে ঐ ঘরে, ফ্লিপ চার্ট আছে, - তখন দীপকের কাছ থেকে জেনে নিতে হয় যে, ওমুক সময় ঘরটা নিচ্ছি কিন্তু। সে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যায়। বলে দেয়, হ্যঁ স্যার, সাড়ে চারটের সময় তো? হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি ঘর একদম পরিষ্কার করে রেডি করে রাখবো। কোন স্যারের কতটা ক্ষমতা, এসব সে খুব ভালো করে দেখে আসছে। কার সঙ্গে কতটা কী বলতে হয়, সব জানে।
    এই গেলবারে, বছরের গোড়ার দিকে যখন লোকসভা ইলেকশান হচ্ছিলো, অফিসে কেবলই পোলিটিক্যাল আলোচনা। কী হয়, কী হয়, আবহাওয়া। অজিত ভট্‌চাজ হেন ইন্টেলেক্‌চুয়াল থেকে শুরু করে আনন্দ সেনগুপ্তর মতো তুখোর সিস অ্যাড্‌মিন, সারাদিন শুধু পোলিটিক্‌স্‌ আর পোলিটিক্‌স্‌। টিএমসি বলে একটা পার্টি তৈরী হয়েছে, সেই নিয়ে খুব হাসাহাসি। কে জিতবে, এই নিয়ে সবাই চিন্তিত। ইন্টেলেক্‌চুয়ালেরা চিন্তা করে বের করলেন, সাধারণ মানুষ কি চাইছে সেটা জেনে নিতে হবে। সাধারণ মানুষ। আমরা নিজেরা তো ঠিক সাধারণ মানুষ নই - স্লাইট অসাধারণ। সেই জন্যে একেবারে জনগনের ভেতর থেকে স্যাম্প্‌লিং শুরু হলো। যথা চাকর বাকর শ্রেণী। হাতের নাগালে পাওয়া যায় দুজনকে। এক হচ্ছেন অজয়দা। ইনি শুধু সেঞ্চুরীর পিওন ই নন, ইনি আবার ডুবুরীও বটে। ফি বছর গঙ্গাসাগরে সাগরমেলায় পুলিশের সঙ্গে অজয়দা ও অজয়দার বৌ দুজনেই যান। ডুবে যাওয়া আধমরা মানুষ বা ডেডবডি তুলে আনতে। এরা হচ্ছে মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষ।
    অজয়, একটু শুনে যাও এদিকে।
    ল্যাগ্‌ব্যাগ্‌ করে হাঁটতে হাঁটতে অজয়দার প্রবেশ।
    ডাকছিলেন স্যার?
    হ্যাঁ, তোমার কাছে একটা সিম্প্‌ল্‌ প্রশ্ন আছে (অজিত ভট্‌চাজ বলেন এটা)।
    অজয়দা পরিস্থিতি ঠাওর করতে না পেরে এঁদের মুখ দেখে সমূহ কোনো বিপদের আশঙ্কা করেন। হয়ত মনে মনে ভাব্ছেন যে সকালে ঐ দুধ খেয়ে নেওয়া, কি রোজ রোজ অফিসে এসে পায়খানা করা, কি ম্যানেজিং ডিরেক্টরের টয়লেটে ওঁরা যে পালা করে করে হাগেন, বা অন্য কিছু খবর রটে গেল কিনা। সবই সম্ভাবনা, সবই "হয়ত"। আমার আন্দাজ। আমি তো আর অজয়দার মনের মধ্যে ঢুকে দেখতে যাচ্ছি না। কিন্তু অজয়দার মুখ দেখে মনে হয় ঘাবড়ে গেছেন। একবর আনন্দস্যারের দিকে, আরেকবার অজিত স্যারের মুখের দিকে তাকাচ্ছেন। আশে পাশে হালকা ভীড় জমেছে।
    প্রশ্নটা শুনে তুমি কিন্তু বেশিক্ষণ ভাবতে সময় পাবে না। যা মনে আসবে সঙ্গে সঙ্গে বলে দেবে।
    আমি ভাবি, এরা তো দিব্যি লাই ডিটেক্‌শানের মেথড অবলম্বন করছে।
    অজয়দা ঘাড় নেড়ে সায় দেন।
    এবার অজিত ভট্‌চাজ ও আনন্দর মধ্যে চোখে চোখে অল্প হাসি ও কৌতুক বিনিময় হয়, বাকিরা এলেবেলে, তারা মজা দেখছে।
    বলোতো, এই যে সামনে বোট হবে।, তুমি কাকে ভোট দেবে, সিপিয়েম না তৃণমূল?
    ও! এটা প্রশ্ন?
    অজয়দা ভাবতেই পারেননি, এরকম একটা প্রশ্নের জন্যে তাঁকে রান্নাঘর থেকে ডেকে আনল কেন এরা। স্যারেদের অদ্ভুত অদ্ভুত সব বাই।
    উঁহু, অতক্ষণ ভাবতে পারবে না।
    কে কে দাঁড়িয়েছে সেটাই তো ভালো করে জানি না।
    তখন দুই প্রার্থীর নাম বলে দেন আনন্দস্যার।
    অজয়দা মাথা নেড়ে বলেন- এখনো ভালো করে ভেবে দেখিনি স্যার।
    ঠিক আছে, তুমি যেতে পারো।
    অজয়দা চলে গেলে এঁরা বলাবলি করেন, উঁহু, এরা অত সহজে সবসময় বলে না।
    ঠিক আছে ডাকো দীপককে।
    দীপক আসে।
    তোর বোটার কার্ড আছে?
    আছে তো। আগের বারেও ভোট দিয়েছি।
    এবারেও দিবি তো? কাকে দিবি?
    দীপক হেসে গলে যেন গড়িয়ে পড়ে। তারপরে বলে, আমরা যাদবপুরের ছেলেরা সব একধারসে সিপিয়েম।

    লোকসভা নির্বাচনের রেজাল্ট বেরোনোর পরে অবশ্য কেউ আর দীপককে ডাকে নি। কিন্তু আনন্দস্যার ঠাট্টার ছলে বলেছিলেন, কী বলেছিলি, কিছুই তো করে দেখাতে পারলি না।
    দীপকও কম যায় না, সে মুচকি হেসে উত্তর দিয়েছিলো - বাঃ ছোটো ভায়েরা মিলে দিদিকে কেমন জিতিয়ে দিলাম বলুন?
  • Som | 34.233.64.121 | ০৩ মার্চ ২০১৫ ০৮:১৬652732
  • লেখা কি? অপেক্ষা করছি যে !!
  • সে | 203.192.231.217 | ০৬ মার্চ ২০১৫ ২০:৫৯652733
  • আমি খুব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছি, তাই এখন লিখছি না।
  • asmitaa | 162.79.255.200 | ০৭ মার্চ ২০১৫ ০০:২৩652734
  • ইস, হাসপাতালে থাকা মোটেই ভাল কথা নয়। তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন, শুভেচ্ছা রইল,
  • Nina | 83.193.157.237 | ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৭:৩১652735
  • তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন -- সাবধানে থাকবেন
  • ranjan roy | 24.99.200.126 | ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৭:৪৫652736
  • সে,
    ভাবছিলাম নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে। সেরে উঠুন। ভাল করে বিশ্রাম নিয়ে শুরু করুন, আমরা অপেক্ষায় থাকব।
  • কল্লোল | 125.185.145.91 | ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৮:৫০652737
  • তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন।
  • | ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৯:৫৬652740
  • এবাবা!
    তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন