এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কারাগার, বধ্যভূমি ও একঝাঁক স্মৃতি বুলেট

    kallol
    অন্যান্য | ২৬ অক্টোবর ২০০৬ | ১৩৩৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kallol | 220.226.209.5 | ০৮ নভেম্বর ২০০৭ ১১:৪৬695698
  • দীপকদা আর সঞ্জয়দা দুজনেরই রাতে ঘুম হতো না। দুজনেই প্রায় সারা রাত আড্ডা মেরে কাটাতো, প্রায় সব রাতেই আড্ডার তৃতীয় ব্যক্তিটি আমি। সেই সময় রাত রাত জেগে দীপকদার মুখে শুনেছি চারুবাবুর কথা, চটেরহাট-ইসলামপুরের কথা। সে সব লিখেছি ২ পাতায় - ৩ নভেম্বরের পোস্টে - ঠিক এক বছর আগে।
    দীপকদার সাথে সম্পর্কটা এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছিলো যেখানে আমি নি:সংকোচে যা মনে আসতো বলতাম, যা ইচ্ছে হতো জিজ্ঞাসা করতাম। একবার মনে আছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম
    - পাগল হলে কেমন লাগে?
    খুব হেসেছিলো দীপকদা।
    - তাই যদি বলতে পারতাম তবে কি আর পাগল হতাম। তবে একটা কথা মনে আছে। শিলিগুড়ি জেলে একটা কূঁয়ো ছিলো। ওটার সামনে দাঁড়ালেই মনে হতো ওর ভেতর দিয়ে মিশরের পিরামিডে যাবার রাস্তা আছে।
    - সব ছেড়ে মিশরের পিরামিড কেন? চীনের প্রাচীর বা তিয়েনানমিন স্কোয়ার হলেও না হয় বোঝা যেতো।
    - কি জানি! পাগলে কি না ভাবে!
    কিন্তু বার বার ইচ্ছে হলেও চারুবাবুর ধরা পড়ার কথা জিজ্ঞাসা করি নি।
    একবার নানান কথায় মানবতা, ভদ্রতা এসব নিয়ে কথা হচ্ছিলো। দীপকদা চুপ করে ছিলো। আমার আর সঞ্জয়দার মধ্যে তর্ক হচ্ছিলো। আমার কথা ছিলো কমিউনিষ্ট বিপ্লবীরা সাধারন ভাবে ভদ্র আর মানবিক। এটাই স্বাভাবিক। সঞ্জয়দা মানছিলো না। নানান উদাহরন-পাল্টা উদাহরন আসছিলো। তবে সবই তঙ্কেÄর জায়গা থেকে। মার্কস-লেনিন-স্তালিন(!)-মাও......
    দীপকদা হঠাৎ বলে উঠলো।
    - আরে সঞ্জয় আপনেও পারেন। এইটা তো পোলাপান। দুনিয়া কতটুকু দেখছে?
    তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললো
    - শোন। আমি যখন প্রথম এই জেলে এলাম, সেলে ছিলাম অরও তিনজনের সাথে। তিনজনেই আমাদের কমরেড। তারা আমার সাথে কথা বলতো না। আমি তো শালা বিশ্বাসঘাতক। সে ঠিক আছে, আমার ওসব গা সওয়া হয়ে গেছিলো। যে লোকটা একটার পর একটা কমরেডকে ধরিয়ে দিয়েছে, সেও আমায় দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিতো। একদিন বাড়ি থেকে তোর বৌদি এসেছে দেখা করতে। সন্দেশ নিয়ে এসেছিলো। আমি তো আর ওদের সামনে বসে একা একা সন্দেশ খেতে পারবো না, তাই ওদেরও দিলাম। ওরা নিলো। না করলো না। তারপর আমার সামনে সন্দেশগুলো ড্রামে ফেলে ততে পেচ্ছাপ করে দিলো।
    দীপকদা কাঁদছিলো। আমি এই প্রথম একটা মানুষের চোখ থেকে রক্ত ঝরতে দেখেছিলাম।
    সেই রাতে - সব , হ্যাঁ সব বলেছিলো দীপকদা।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৮ নভেম্বর ২০০৭ ২২:১৬695699
  • কল্লোল
    বাকীটা যতক্ষন না বলছো ,আমি তো,আমি তো নি:শ্বাসই নিতে পারছি না।

    এট্টু হাত চালিয়ে ল্যাখো।
  • sucheta | 202.63.56.114 | ০৯ নভেম্বর ২০০৭ ০০:৫২695700
  • আরও কোনো মানুষের চোখের জল রক্ত হয়ে জমাট বেঁধে আছে ৩৫ বছর ধরে, এক ফোঁটাও ঝরেনি, সেটাও ভাবার। যাইহোক, আপনার মত করে বলে যান, খুব তাড়াতাড়ি। অপেক্ষায় আছি।
  • kallol | 122.167.85.203 | ০৯ নভেম্বর ২০০৭ ১১:৫৪695701
  • চারুবাবু যখন থেকে আত্মগোপনে, তখন থেকেই তাঁর সাথে রয়েছেন, দীপক বিশ্বাস, দিলীপ (পদবী মনে পড়ছে না), ডাক্তার অনল রায় (এটা ছদ্ম নাম, আসল নাম আজও জানি না), প্রিয়ব্রত (পদবী মনে পড়ছে না) আর গুরুপদ কুন্ডু।

    ৭১-এর শেষ দিক থেকেই শেল্টার পাওয়া কঠিন হয় গেছে। বাড়ি ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। চারুদার মত একজনকে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকাটা ভীষনই ঝুঁকির, কিন্তু উপায়ও নেই। একে তো পুলিশ থেকে চারুদার ছবি দিয়ে সারা ভারত জুড়ে পোস্টার ছড়িয়ে দিয়েছে, তার উপর মানুষটা প্রচন্ড রকমের অসুস্থ। ক্রনিক অ্যাজমা। সারাক্ষণ অক্সিজেন সিলিন্ডার কাছে রাখতে হয়। প্রায়ই পেথিড্রিন ইঞ্জেকশন দিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে ঠিক হল, মফ:স্বল বা গ্রাম নয়, কলকাতাই চারুদার আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকার সঠিক জায়গা। কলকাতায় বাড়ি ভাড়া পাওয়া তুলনায় সহজ। ওষুধ, ইঞ্জেকশন, অক্সিজেন সবই কলকাতায় অনায়াসে, সবচেয়ে বড় কথা, কারুর কৌতুহল না জাগিয়ে জোগাড় করা যাবে। কলকাতার পাঁচমেশালী ভিড়ে লুকিয়ে থাকাও সহজ। তাই কলকাতা।

    কোন বাড়িতেই বেশীদিন থাকা যাবে না। বড়জোড় দুমাস। তারপর আবার বাড়ি খোঁজা, ঠিকঠাক বাড়ি পাওয়া এবং সমস্ত লটবহর সমেত চারুদাকে নিয়ে বাড়ি পাল্টানো। সেটা কোনো গেরিলা অ্যাকশনের চাইতে কম নয়। মাঝে মাঝে খবর আসে, যে বাড়িতে চারমাস আগে ছিলাম, সেখানে পুলিস হানা দিয়েছে। বুঝতে পারছি, দেরীতে হলেও খবর যাচ্ছে।
    তখন কাজ বলতে একমাত্র চারুদাকে মোটামুটি সুস্থ আর পুলিশের হাতের বাইরে রাখা। লড়াই যে রকরকম শেষ, তা ক্রমে ক্রমে বুঝতে পারছি। কিন্তু চারুদাকে বলা যাবে না। চারুদা মানতেই চান না, আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। হঠে যাচ্ছি। তর্ক হলেই, ভীষণ আবেগী হয়ে যাচ্ছেন। কাঁদছেন। বারবার বলছেন, আমার শরীরটা ভালো থাকলে.......
    আবার তার উপর হঠাৎ হঠাৎ খবর আসছে কখনো নদীয়ায়, কখনো বাঁকুড়ায়, কখনো বীরভূমে গণফৌজ মার্চ করছে। চারুদা আমাকেই পাঠাতেন।
    - যাও দেখে এসে রিপোর্ট কর।
    যেতাম এবং দেখতাম কিছুই নেই। প্রত্যেকবার একই ব্যাপার। তবুও যেতেই হত। আর প্রত্যেকবারই চারুদাকে মিথ্যে বলতে হত - গণফৌজ ধীরে ধীরে হলেও এগোচ্ছে।

    এই ক্রমাগত মিথ্যাচার, বারবার একই মিথ্যা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। বুঝত পারছি, আমরা হেরে যাচ্ছি। যে স্ফুলিঙ্গের দাবানল হয়ে ওঠার কথা ছিলো, তা মিলিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। আমাদের সমস্ত স্বপ্ন, সব প্রত্যয়, প্রতিটি বিশ্বাস কণা, হারিয়ে যাওয়া নদীর মত ফেলে রেখে যাচ্ছে বালুচর। সেই সব অন্ধ দিনে এই চার পাঁচটি প্রাণ, প্রাণ খুলে হতাশও হতে পারতাম না। হা হুতাশ করাও যে সময় সময় কতটা জরুরী তা জীবন দিয়ে বুঝেছিলাম। চরুদার সামনে এসব নিয়ে কথা বলা যেতো না। সেখানে বিপ্লবী জোস বজায় রাখতে হতো। সবার উপরে চারুদার শরীর আর নিরাপত্তা, আমাদের অন্য কোন ভাবনার সময়ও দিতো না। এই প্রচন্ড যন্ত্রনা আমাদের ভিতর থেকে ফোঁপরা করে দিয়েছিলো। আমরা প্রত্যেকেই বোধহীন, অনুভূতিহীন এক একটা বোবা ও অন্ধ প্রানীর মত বেঁচে ছিলাম। বা হয়তো বাঁচার ভান করছিলাম।
  • dd | 202.122.20.242 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ০০:৫৬695702
  • হ্যাঁ, নাকই গলাচ্ছি। থোরা সা ব্রেক।

    এই লং মার্চের কথা অনেকবার শুনেছি। অনেক বার। অনেক বার।

    শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা। বীরভুম থেকে কলকাতা। গোপীবল্লভপুর থেকে ..... ঐ কলকাতাই।

    শুনেছি হাতে আছে দুশো রাইফেল। গোটা দশেক লাইট মেশিনগান। ইত্যাদি। পুরো ব্যাপারটাই ছেলেমানুষী। খোকাগিরি। তখন বুঝি নি। খুব উদ্দীপিত হতাম।

    এক বিরোধী কাল্টের নেতা বলেছিলেন এই সব হচ্ছে পেশাদার স্বপ্নরচনাকারদের কাজ। তারা স্বপ্ন ছড়ায়। বাচ্চাদের বিমোহিত করে। তাদের খুন করে।

    পিছনে ফিরে মনে হয় সেটাই ঠিক।

  • nyara | 67.88.241.3 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ০১:১৯695703
  • ব্রেক যব হো হি গিয়া ...

    বাঙালীর, বিশেষত: ইন্টেলিজেন্টসিয়ার, নক্সাল মুভমেন্ট নিয়ে এই রোমান্টিসিজম আমাকে খুব অবাক করে। হতে পারে এই জন্যে যে আমার এ বিষয়ে খুব পড়াশুনো নেই। যে পরিমানে স্টেটকে (পড়ুন মানু রায় বা পুলিশ গুহনিয়োগীদের) দোষারোপ করা হয় তার কোটি ভাগের এক ভাগও দেখিনা কেন চারু মজুমদার বা অন্য নেতাদের ওপর? জানার ইচ্ছে এদের হঠকারিতার ওপর কি ধরণের গবেষণা হয়েছে, তার কত প্রকাশিত হয়েছে? বুদ্ধিমান, করিৎকর্মা, কর্মঠ (প্রায়) একটা জেনারেশান মৃত, অকেজো হয়ে যে পশ্চিমবঙ্গের কি দুর্দশা হয়েছে (বা হয়নি) তার খতিয়ান হয়তো একদিন বেরোবে, কিন্তু তার দায়ভাগের কতটা এই রোম্যান্টিক হঠকারিরা বহন করেন সেটা দেখার জন্যে আশা করি বেঁচে থাকবে।
  • tan | 131.95.121.132 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ০২:২৬695704
  • কিন্তু উদ্দেশ্যটা কি ছিলো? হ্যামেলিনের বাঁশী শুনিয়ে বাচ্চা ভুলিয়ে বার করে নিয়ে খুন করার?
  • kallol | 220.226.209.5 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ১০:৫১695705
  • দীপ্তেন - পেশাদার স্বপ্ন রচনা নয়। খুব দায়িত্ব নিয়ে এটা বলতে পারি। দুটো কারনে -
    ১) নকশালদের মধ্য পেশাদারিত্ব বস্তুটি কোনকালেই ছিলো না (আমি নকশাল বলতে ৬৭-৭৭ এর কথা বলছি। তারপর নানান ধান্দায় নানান রকম অবতার হয়েছেন তারা)। ফলে পেশাদার স্বপ্ন রচয়িতা তারা নন। তবে খুব অপটু অপেশদার স্বপ্ন ফেরিওয়ালা এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
    ২) পেশাদার স্বপ্ন রচয়িতারা নিজেরা স্বপ্ন দেখে না। অন্যদের স্বপ্নের জালে ফাঁসালেও নিজেরা ফাঁসে না। এক্ষেত্রে স্বপ্ন ফেরিওয়ালাদের অনেকেই নিজের জীবন দিয়েছেন - চারু মজুমদার, সরোজ দত্ত, সুব্বারাও পনিগ্রাহী, পঞ্চাদ্রী কৃষ্ণমূর্তি, সুশীতল রায়চৌধুরী (ইনি হয়তো পুলিশের হাতে মারা যান নি, কিন্তু আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকাকালীন প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন)....... এরকম অজস্র নাম বলা যেতে পারে। আর নেতাদের মধ্যে যারা বেঁচে, একমাত্র অসীম চাটুজ্জে বাদে, কেউই সেই অর্থে মোটামুটি মধ্যবিত্ত অবস্থানেও নেই। কানু সান্যাল, আজিজুল হক, সন্তোষ রানা, মহাদেব মুখার্জি এরা কেউই খুব ভালো নেই। তাছাড়া এরা প্রত্যেকেই জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন জেলে আর ভয়ংকর শারিরীক-মানসিক অত্যাচার সয়ে। এদের অনেকেই অত্যাচারের ফলে শারিরীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ডেবরার নিতাই দাসের কনুই আর কাঁধের হাড় এমন ভাবে ভাঙ্গা হয়েছে সে আর কোনদিন হাল-লাঙ্গল ধরতে পারবে না।
    তাই আমি মনে করি এরা আর যাই হোক পেশাদার স্বপ্ন রচয়িতা নয়। এরা অনর্থক স্বপ্ন দেখেছিলেন, ভুল স্বপ্ন দেখেছিলেন, চূড়ান্ত আবেগে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাজার হাজার তরুন-তরুনীর আত্মবলিদান এদের ভুলে ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু এরা নিজেরাও সেই আগুনে ঝাঁপ দিয়েছেন। এখানেই এরা অনন্য। এরা হয়তো বোকা কিন্তু সৎ ছিলেন। নিজেদের বিশ্বাসের সাথে তঞ্চকতা করেন নি।
    ট্যান - তাই এরা হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা নন। কারন বাচ্ছাদের সাথে এরাও পুড়েছেন - বধ্যভূমি, কারাগার আর একঝাঁক বুলেটের মুখোমুখি।

  • kallol | 220.226.209.5 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ১১:১৪695706
  • ন্যাড়া - আগেই ডিসক্লেইমার দিয়ে রেখেছো, ""খুব পড়াশুনা নেই"" বলে।
    নকশাল রাজনীতি নিয়ে বিশেষ করে সিপিআইএমএল-এর রাজনৈতিক-সামরিক-সাংষ্কৃতিক চিন্তা ভাবনা নিয়ে অজস্র সমালোচনা হয়েছে। প্রচুর লেখা, প্রচুর বই এবং বেশীরভাগটাই ঐ আন্দোলনে ওতোপ্রেতভাবে জড়িয়ে থাকা মানুষজনের লেখা। গোড়ার দিকে শুরু করেছিলেন কানুদা তার More On Naxalbari দিয়ে। ওটা জেলে বসেই লেখা। ছাপা হয়েছিলো ""ফ্রন্টিয়ার"-এ। তারপর অজস্র লেখা হয়েছে এই নিয়ে। ৭৭ থেকে প্রায় ৮৭ পর্যন্ত এই ধরনের লেখার বন্যা বয়ে গেছে। এবং আবারও বলছি এর বেশীরভাগটাই যারা নিজেরা সক্রিয় ভাবে এই রাজনীতিতে ছিলেন - তাদের লেখা। আবারও এখানেই এই আন্দোলন অনন্য। নিজেদের ভুল খোলাখুলি স্বীকার করার সাহস যুগিয়েছে এই আন্দোলন। তাই নিয়ে খেলাধূলা হয় নি তা নয়। করেছে অসীম চাটুজ্জের মত কেউ কেউ। তবে তা নেহাৎই ব্যাতিক্রম।
  • Samik | 122.162.85.28 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ১৬:৩৯695708
  • কল্লোলদা, একটু ধারাবাহিকভাবে লেখো। তুমি জেলে ছিলে, সেখান থেকে হঠাৎ দেখছি চারুবাবুর কাছে হাইডআউটে। মাঝে কী হল? দীপকদা-র স্বীকারোক্তি কী ছিল? ...
  • r | 59.162.191.115 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ১৭:১২695709
  • এই র‌্যাডিকাল রোমান্টিসিজমের ইতিহাস বেশ ইন্টারেস্টিং। শুরু হচ্ছে উনিশ শতকের শেষের দিকে, মূলত: অরবিন্দের দলবল সংঘটিত করছেন, ব্যাকগ্রাউন্ডে রয়েছেন নিবেদিতা এবং ইন্টেলেকচুয়াল রসদ আসছে স্বামী বিবেকানন্দের লেখা থেকে। গুপ্তসমিতি, গুপ্ত আন্দোলনের বান ডেকে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ সেই বীরত্বকে শ্রদ্ধা জানিয়েও এই পথের বিরোধিতা করছেন। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের নিজেদের মধ্যে লড়াইও চলছে। পরবর্তী ঝোঁকটা এল সুভাষচন্দ্রের হাত ধরে। তবে এখানে গুপ্তসমিতির থেকেও সশস্ত্র লড়াইয়ের উপর বেশি জোর দেওয়া হল। কিন্তু সুভাষচন্দ্রেরও উপাস্য বিবেকানন্দ। স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালী বামপন্থীদের বেশির ভাগ এই দুই স্রোত থেকে এসেছেন। কাজেই র‌্যাডিকাল রোমান্টিকতার ধারা প্রায় দুশ বছরের পুরোনো। যেটা বদলে গেল, সেটা হল গ্যারিবল্ডি ম্যাজ্জিনিদের জায়গায় উপবিষ্ট হলেন স্তালিন এবং মাও। গান্ধীজি সেইভাবে বাঙালী রাজনৈতিক ইডিয়মে কখনই ঢোকেন নি। এখনকার রাজনীতির রেটরিক শুনলে ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়। কংগ্রেসীরা অহিংস সত্যাগ্রহ, বা অসহযোগের থেকে কিন্তু বেশি বলে খাদ্য আন্দোলন আর তেভাগা আন্দোলনের কথা, স্টেজে বসে হাততালি দিয়ে ইপ্টার গান গায়। এবং এই ধারাটা ভীষণভাবে বলবান থাকায় হিংসা নিয়ে বাঙালী রাজনীতির স্ট্যান্ডটাও খুব ধোয়াঁটে। যে কোনোধরনের হিংসাকে সম্পূর্ণভাবে নিন্দা করার ঐতিহ্য আমাদের রক্তে নেই।
  • kallol | 122.167.83.254 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ২০:০৩695710
  • শমীক.... চারুবাবুর আত্মগোপন পর্ব পুরোটাই দীপক বিশ্বাসের জবানীতে। আমি যেমন শুনেছি।
  • kallol | 122.167.83.254 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ২০:৪৪695711
  • ১৯৭২ জুলাই। নিরাপত্তার খাতিরে ঠিক হল চারুদা আর ডাক্তার অনল এক বাড়িতে আর অন্যরা (দীপক বিশ্বাস, প্রিয়ব্রত, দীলিপ আর গুরু কুন্ডু) আলাদা বাড়িতে। সেই মত আলাদা দুটো বাড়ি ভাড়া নেওয়া হল।
    ধীরে ধীরে চারুদাও বুঝতে পারছিলেন কোথাও একটা গোলমাল হচ্ছে। আমরা লড়াই থেকে হঠে আসছি। দীর্ঘক্ষণ অলোচনা হল। চারুদা মানলেন গণসংগঠন-গণ আন্দোলন থেকে সরে আসাটা ভুল হয়েছিলো। শুধু গেরিলা অ্যাকশন দিয়ে বিপ্লব হবে না। সেই মত পার্টির সমস্ত ইউনিটগুলোতে নির্দেশ পাঠানোর কথা হল ২০শে জুলাই সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দিবসে মিছিল হবে। যেহেতু বেশীরভাগ কমরেডই আন্ডারগ্রাউন্ডে তাই হঠাৎ জমায়েৎ হয়ে মিছিল করে কিছুদূর গিয়েই মিছিল ভেঙ্গে মানুষের সাথে মিশে যেতে হবে। তখনো চারুদার ধারনা ছিলো সব পার্টি ইউনিটগুলই সক্রিয় রয়েছে।
    গুরু কুন্ডুর মাধ্যমে নির্দেশ পাঠানো শুরু হল।
    ১২ তারিখ চারুদা নতুন পরিকল্পনা সব জানিয়ে লীলাবৌদিকে চিঠি লিখলেন। প্রিয়ব্রত চিঠি নিয়ে যাবে শিলিগুড়ি। দার্জিলিং মেলএ টিকিট। প্রিয়ব্রত রওনা হয়ে গেলো।
    বাস ডালহাউসি ছাড়াতেই জ্যামে পড়ল। প্রচন্ড জ্যাম। দেরী হয়ে যাচ্ছে দেখে, হাঁটা লাগালো প্রিয়ব্রত। তাড়াহুড়োয় মারাত্মক ভুল করল, একেবারে লালবাজারের ফুটপাথ দিয়েই হাঁটা দিলো।
    লালবাজারের প্রধান ফাটকে রুনু আর তার চ্যালারা দাঁড়িয়ে। কোথাও হয়তো যাবার ছিলো। কিংবা হয়তো এমনিই। চ্যালাদের মধ্যে ছিলো কমল। কমল ইছাপুরের ছেলে। পার্টিতে ছিলো। ধরা পড়ার পর রুনুর ইনফরমার হয়ে যায়। প্রিয়ব্রতকে কমল ভালোভাবেই চিনতো। ওরা কাছাকাছি এলাকার। কমল যদিও প্রিয়ব্রতর তখনকার অবস্থান জানত না, তবু একরকম হেনস্থা করার জন্যই রুনুকে বলল
    - স্যার, মালটা নকশাল করতো। ডাকবো?
    রুনুর সম্মতি পেতেই, দৌড়ে গিয়ে ধরলো।
    গোটা ব্যাপারটা এতই আকস্মিক যে প্রিয়ব্রত আর কিছু ভাববারও সময় পেল না।
    প্রিয়ব্রতকে ডিডি দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হল। নিয়ম মাফিক তল্লসীতেই চারুদার চিঠি বেরিয়ে পড়ল।
  • dd | 202.122.20.242 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ২১:৫৬695712
  • আরে কল্লোল।
    বল্লে বেশী করে লিখবে তো এমন কিপটেমি করে লিখছো ক্যনো ? এ তো দুর্দান্ত ইন্টেরেস্টিং তথ্য।

    কিন্তু একটা প্রশ্ন,ডালহৌসী স্কোয়ার থেকে হাওড়া স্টেশন যেতে হলে (পায়ে হেঁটে) লালবাজারের ফুটপাথ আসে কোথে্‌থকে?

    খটকা লগছে।

  • dd | 202.122.20.242 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ২২:০৬695713
  • আবার নাক গলাচ্ছি।

    কল্লোল,
    চারু,সুশীতল,সরোজ পেশাদার স্বপ্ন ছড়াতেন - এটা আমি বলি নি। ভাবিও না।

    কিন্তু ৭০-৭১ সালে তুমি আমি না হয় নিতান্ত বালক, বা কিশোর। কিন্তু চারু সুশীতল সুনীতি সরোজ এরা তখন পঞ্চাশোর্দ্ধ। পোড় খাওয়া পলিটিশিয়ান। কৃষক আন্দোলন করেছেন হাতে কলমে।

    এরাও ভাবতেন, বিশ্বাস করতেন বীরভুমের কৃষকেরা (বা উত্তরবংগের,বা মেদিনীপুরের) দুশো বন্দুক আর পাইপগান নিয়ে কলকাতায় হানা দেবেন ? রাষ্ট্র হার মেনে নেবে?

    চারুবাবু অধীর হয়ে প্রশ্ন করছেন লং মার্চ শুরু হলো? (যেমন তুমি লিখলে)। এই ডেলিউশন,এই রাজনৈতিক অজ্ঞতাকে শুধুই রোম্যান্টিকতা দিয়ে ঢাকা যায়?
  • kallol | 122.167.79.41 | ১০ নভেম্বর ২০০৭ ২২:৪৪695714
  • দীপ্তেন - দার্জিলিং মেল চিরকাল শিয়ালদা থেকে ছাড়ে।

    আর, ওদের বিশ্বাসের কথা ?
    চেও বিশ্বাস করতেন গোটা কয়েক গেরিলা যোদ্ধা বলিভিয়া তথা গোটা লাতিন আমেরিকার মুক্তি এনে দেবে। চেও যথেষ্ট পোড় খাওয়া মানুষ ছিলেন। বিশ্বাস অনেকটা প্রেমের মত একবার হয়ে গেলে, খুব দাগা না খেলে ছাড়ে না। এও তাই।

  • nyara | 64.105.168.210 | ১১ নভেম্বর ২০০৭ ০০:১৪695715
  • কল্লোলদা, আমার সত্যি এ বিষয়ে পড়াশুনো কম, আপনার তুলনায় তো বটেই। স্ট্রাকচারডও নয়। কিন্তু আপনি যে কথা বললেন আমার লাইন ঠিক সেটা ছিলনা। এই থ্রেডে নয়, অন্য কোথাও আলোচনা করা যাবে। এখানে কূটাকাচালি করে রসভঙ্গ করতে চাইনা আর।
  • Du | 67.111.229.98 | ১৩ নভেম্বর ২০০৭ ০২:৫২695716
  • এখানে তপন মিত্র কোথায় ?
  • deb | 71.140.114.198 | ১৩ নভেম্বর ২০০৭ ০৩:১৯695717
  • কল্লোলদা,
    লেখাটা খুব ভালো হোচ্ছে,চালিএ যান।
    জনগন:
    প্লিজ ডাইভার্ট কোরোনা কল্লোল কে।
    চারু দা খুব honest লোক ছিলেন,আমার মতে he was a great leader like Subhas Bose but he is not like Jyoti babu or SubhasDa or many double standard leader.He may did some mistake....after all he is a man .why everyone blamed him? His intention was good.
    দেবু
  • m | 12.217.28.221 | ১৩ নভেম্বর ২০০৭ ০৩:২৪695719
  • কল্লোল দা,
    ভদ্রলোকের পদবী বসু,প্রিয়ব্রত বসু।

    আর ঐ লালবাজারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাবার সময় নয়,ভদ্রলোক ট্রামে করে যাচ্ছিলেন। শুনেছি ওকে চিনতে পেরেই সম্ভবত সহযাত্রী সাদাপোশাকের পুলিশ লালবাজারে পাঁজাকোলা করে ঢুকিয়ে দেয়।
  • kallol | 220.226.209.5 | ১৩ নভেম্বর ২০০৭ ১২:০৬695720
  • কদিন একটু Bangalore Protesting Nandigram নিয়ে দৌড়ঝাঁপে আছি। ১১ তারিখ এক রাতের প্রস্তুতিতে গোটা পাঁচেক পোস্টার আর গোটা পনেরো বন্ধু নিয়ে ফুটপাথে বসে পড়েছিলাম। আমাদের গুরুর সুহাসিনীও ছিলো। আজ আরও অনেকের সাথে বসা। পরের শনি-রবি যাতে বড় করে কিছু করা যায়।
    আমি প্রস্তাব রেখেছি - মিছিল করে পেছনে হাঁটা। ফার্নান্দো সোলানাসের ফিল্ম ""দ্য ভায়লিন"" থেকে অনুপ্রানিত ভাবনা। প:ব: সরকার সমেত যারা হিংসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন তাদের জন্য বার্তা - আপনারা পেছনে হাঁটছেন - গণতন্ত্র থেকে ফ্যাসীবাদে।
    তাই আবার কয়েকদিন লিখতে পারবো না।
    একটু সয়ে নাও।

    ম - হ্যাঁ, মনে পড়েছে। প্রিয়ব্রত বসু। তবে আমি যেমনটা দীপকদার কাছে শুনেছি - তাই লিখেছি। তোমার তথ্য ঠিকও হতে পারে। দীপকদা কার থেকে জেনেছেন, প্রশ্ন করিনি। হয়তো প্রিয়ব্রতর কাছ থেকে, হয়তো বা অন্য কারুর মারফৎ।

    এই লেখাটায় আমি তথ্যের সঠিকতা নিয়ে মাথা ঘামাই নি। আমি, প্রচলিত ইতিহাস লেখার যে আঙ্গিক, তার বাইরে এসে লিখছি। স্মৃতি এর আধার। শুধু আমার স্মৃতি নয়। আরও অনেকের স্মৃতি। এই লেখাটা বলতে পারো আমি ও আমার বন্ধুদের যৌথ স্মৃতিচারণ; 'আজ' যেভাবে 'সেদিন' আমার চেতনে বিরাজ করে। তাতে কখনো কখনো সাল তারিখও এসেছে, যেমনটা প্রচলিত ইতিহাস লেখায় আসে, তাতে আমার মহাভরত অশুদ্ধ হবে না।
  • kallol | 220.226.209.5 | ২০ নভেম্বর ২০০৭ ১৪:৫১695721
  • গোটা ডিডি ঝাঁপিয়ে পড়লো প্রিয়ব্রতর উপর। রুনু আর তার চ্যালারা সাধারন নকশাল বন্দীদের ওপর কি ধরনের অত্যাচার নামিয়েছে তা সকলেরই জানা। সামান্য একটা ধরতাই। অর্চনা গুহ-লতিকা গুহ মামলায় আদালতে অর্চনাদি যখন অত্যাচারের বর্ণনা দিচ্ছিলেন বিচারপতি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন এবং সেদিনের মত আদালতের কাজ বন্ধ করে দেন। কাজেই মারিয়া হলে তারা কি করতে পারে তা আবার নতুন করে বলার কোন মানে হয় না।

    দুদিন একনাগাড়ে তান্ডব চলার পর প্রিয়ব্রত ভেঙ্গে পড়ে। যদিও প্রিয়ব্রত চারুদার শেল্টার জানতো না। কিন্তু দীপকদাদের বাসাটা চিনতো। ১৪ তারিখ কাক ভোরে সেই বাসা ঘিরে ডিডি তুলে আনলো দীপকদাকে আর দিলীপকে। ক্রমাগত মার চলল। দুদিনের মাথায় দীপকদারাও ভাঙ্গলেন। ১৭ তারিখ গ্রেপ্তার হলেন চারুদা।

    এই পুরো ঘটনাটাই দীপকদার মুখে শোনা। নিজের মুখে নিজের ভেঙ্গে পড়ার, হেরে যাবার কথা, এভাবে কাউকে বলতে শুনিনি। একবার শুধু বলেছিলাম
    - কত মানুষ তো কত অত্যাচার সয়েও একটা কথাও বলে নি। তুমি পারলে না ?
    দীপকদা ম্লান হেসে বলেছিলো
    - পারিনি। কি দিয়ে পারব। মানুষ অত্যাচার সয়ে যেতে পারে মনের জোরে। সেটাই তো ছিলো না। তখন তো জেনে গেছি - কোথাও কিছু নেই। আমরা চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত। যা যা বলা হয়েছিলো, ভাবা হয়েছিলো সবটাই ব্যর্থ। স্ফুলিঙ্গ দাবানল তৈরী করেনি। আগুন নিভে গেছে। মুক্তাঞ্চল, গেরিলা জোন সব সব এক ঝটকায় ধূ ধূ বালুচর। তীব্র অন্ধকারে উলঙ্গ দাঁড়িয়ে আছি, দুহাতে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছি কিছু একটা। হাতের মুঠোয় উঠে আসছে চাপ চাপ অন্ধকার, চটচটে অন্ধকার, কমরেডদের রক্ত জমাট বেধে আছে সারা হাতে, সারা শরীরে। একটা চটি বই লিখেছিলাম - ""নকশালবাড়ীর শিক্ষা""। ঐ বইটা, ওটার প্রতিটি অক্ষর আমায় তাড়া করতো, ছোবল মারত। প্রতিদিন প্রতি মুহুর্তে ওরা আমায় ছোবল মারতে মারতে একটা খাদের কিনারায় নিয়ে যেত - আমি মৃত্যুভয়ে চিৎকার করতাম। ওরা হা হা করে হাসতো। আমি অন্য একটা জগতে চলে যাচ্ছিলাম। তখন আমি শিলিগুড়ি জেলে। খবর পেলাম চারুদা নেই। শিলিগুড়ি জেলের কূয়োঁটার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হল
    - এই তো ঝাঁপ দিলেই পিরামিডে পৌঁছে যাবো।

  • sucheta | 202.63.56.114 | ২০ নভেম্বর ২০০৭ ১৫:১৬695722
  • হুঁ ---
  • tan | 131.95.121.132 | ২০ নভেম্বর ২০০৭ ২০:৪১695723
  • অর্গানাইজ্‌ড সশস্ত্র বিপ্লবীদলের মধ্যে সদস্যদের সঙ্গে(পকেটে না,নিয়ে নেবে তো,অন্য কোথাও,লকেটে বা আংটিতে বা তাবিজে বা ঐরকম কিছুতে যেগুলো ধর্মীয় বা অন্য কারণে রক্ষা পেয়ে গেলেও যেতে পারে) সবসময় সায়ানাইড বা ঐরকম কিছু কড়া বিষ রাখার নিয়ম না?

  • kallol | 122.167.117.38 | ২০ নভেম্বর ২০০৭ ২১:২০695724
  • কমিউনিষ্টরা আত্মহত্যাকে অনুমোদন করে না। তাদের কাছে, আত্মহত্যা পাপ তো নয়, কারন কমিউনিষ্টরা পাপ-পূণ্য মানে না, হয়তো ""বুর্জোয়া"" কিংবা সংশোধনবাদীতা। তাই ওরকম কোন রেওয়াজ কোন কমিউনিষ্ট বিপ্লবী দলে ছিলো না, এখনো নেই।
  • tan | 131.95.121.132 | ২০ নভেম্বর ২০০৭ ২১:২৪695725
  • কিন্তু স্ট্রাটেজী হিসাবে অনেকসময় কাজের।
    যুদ্ধকৌশল যখন, সেটা কার থেকে নিচ্ছি, জরুরী কি?
  • kallol | 220.226.209.5 | ২১ নভেম্বর ২০০৭ ১০:৪০695726
  • হ্যাঁ, জরুরী।
    আমি যখনকার কথা বলছি তখনও সেটা জরুরী ছিলো। তখনও আমরা যারা নকশাল রাজনীতি করতাম তাদের কাছে জরুরী ছিলো। আমরা মনে করতাম ""উদ্দেশ্য কখনও উপায়কে বাদ দিয়ে নয়""। তাতে বহু ছেলেমানুষি হয়েছে, বহু ভুল হয়েছে। আর তার চরমতম মূল্য দিতে হয়েছে আমাদের।
    একটা ছোট উদাহরণ দেই। চারুবাবু ৭০-এ একটা লেখায় লিখলেন অ্যাকশন করতে হবে ছুরি, দা, বল্লম দিয়ে। উন্নত অস্ত্র নিয়ে অ্যাকশন করা মানে আত্মত্যাগে ভীত হওয়া। একেবারে মানে হয় না এসব কথার। কিন্তু তখন মনে হয়েছিলো - হ্যাঁ, তাই তো হওয়া উচিৎ। মরতে ভয় পাবো কেন। চারুবাবুর এই ভাবনায় কোন ষড়যন্ত্র ছিলো না, যা ছিলো তা আদর্শের নামে গোঁড়ামী যা মূর্খতার নামান্তর। তাই সায়নাইড পুরিয়া নয়।
  • m | 12.217.28.221 | ২১ নভেম্বর ২০০৭ ১১:৫৩695727
  • কল্লোল দা,
    আমি শুনেছি,সে সময় নিয়ম ছিলো চার ঘন্টার মধ্যে কোনো খবর না এলে শেল্টার বদল করতে হবে,সেটা তখন নাকি প্রায় বাধ্যতামূলক ই ছিলো- চারু মজুমদার কে বাঁচানোর জন্য প্রিয়ব্রতবাবু বহু সময় ধরে পুলিশ কে নানা উল্টোপাল্টা ঠিকানা জানান- কেননা তার মনে হয়েছিলো,চার ঘন্টা অতিক্রান্ত হলে নিশ্চয় ই চারু মজুমদারকেও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে,কার্যক্ষেত্রে সেটা হয় নি।
  • kallol | 220.226.209.5 | ২১ নভেম্বর ২০০৭ ১২:৫২695728
  • আগেই লিখেছি, চারুবাবু তখন খুবই অসুস্থ। পেথিড্রিন দিতে হয়, অক্সিজেন লাগে। ঐ রকম শারীরিক অবস্থায় ঐ লটবহর নিয়ে, পঞ্চম ঘন্টায় ঐ শেল্টার ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিলো না। আর শেল্টার বলতে তো ভাড়া বাড়ি। হুট বললেই তো বাড়ি ভাড়া পাওয়া যেত না, তখনও না। এটা চারুবাবু আর দীপকদাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই সত্যি। তাই হয়তো শেল্টার ছাড়তে পারেন নি ওরা কেউই।
    আর তাছাড়া প্রিয়ব্রতর শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা। তখন এস.টি.ডি বা সেল ফোনের কোন গল্প নেই। কাজেই প্রিয়ব্রত শিলিগুড়ি পৌঁছেছে কি না তা জানার কোন উপায় ছিলো না। প্রিয়ব্রতর ধরা পড়ার কথা স্বাভাবিক ভাবেই খবরের কাগজে ছপে নি, কারন তাদের খবর দেওয়াই হয় নি।
    চারুবাবুর পক্ষে একা বা শুধু ডাক্তার অনলদার সাহায্যে শেল্টার পাল্টানো সম্ভব ছিলো না।
  • tan | 131.95.121.132 | ২২ নভেম্বর ২০০৭ ০০:০৬695731
  • আমার নিজের কোনো পড়াশোনা নেই, এই GC তে পুরানো কিছু সংখ্যায় দীপ্তেনদার লেখা,এখানে টইয়ে লেখা এইসব পড়ে মনে হয় নকশাল আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় তত অবাক হবার কিছু নেই!
    ভাবা যায় একটা সশস্ত্র বিপ্লব হচ্ছে, কোনো সমানে-সমানে টক্কর দেবার মতন প্ল্যান নেই, কোনো সামরিক কৌশল নেই, নেটওয়ার্ক পর্যন্ত তেমন নেই! একদল ভালো ভালো কলেজে পড়া মূল সমস্যা থেকে বহুদূরে থাকা কাঁচা আদর্শবাদী গ্রামে গিয়ে ধেয়ে এসে সব পাল্টে দেবে! একবার কামড় দিলেই তো এর ফাঁপা বেরিয়ে পড়ে! কেউ কইলো না!
    মনে হয় না কোনো সশস্ত্র বিপ্লব এভাবে হয়েছে!
    একি হোস্টেলে হোস্টেলে ছেলেপিলেদের লড়াই নাকি?

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন