এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কারাগার, বধ্যভূমি ও একঝাঁক স্মৃতি বুলেট

    kallol
    অন্যান্য | ২৬ অক্টোবর ২০০৬ | ১৩৩৫৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | 202.122.17.210 | ২৪ নভেম্বর ২০০৭ ০১:৪০695732
  • কল্লোলকে
    উত্তাল উদ্দাম ভালো লেখা হচ্ছে।
    রোজই ভাবি আরেকটু বোধ হয় লিখেছো, কিন্তু খুব টিপে টিপে কিপটের মতন লিখছো। ক্যানো?
    এম সি সি নিয়ে একটু বিশদে লিখবে ?
  • kallol | 220.226.209.5 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ১১:৩৩695733
  • এইসব আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে নানান আলাপ আলোচনা বিতর্ক সবই চলতো। মাঝে মাঝে বিতর্ক অদ্ভুত সব জায়গায় চলে যেতো। মাওএর ইয়েনান ফোরাম তখন নকশাল রাজনীতি করা লোকজনের কাছে সাংষ্কৃতিক কর্মকান্ডের দিশা ছিলো। সেই নিয়ে লেগে গেলো শান্তনুদা (সৌমেন গুহ) আর নিমাইদার (নিমাই ঘোষ - সিপিআইএমএল-এর ইংরাজি মুখপত্র লিবরেশনের সম্পাদক। পরে বিনোদ মিশ্রর গ্রুপ এই নামে পার্টির নাম দেয় সিপিআইএমএল - লিবারেশন)। শান্তনুদা পড়িয়ে লোক। সে কিসব মার্ক্স-এঙ্গেল্‌স তুলে প্রমান করে দিলো মাও-এর ঐ লেখাটা ""নন-মার্ক্সিস্ট""। ব্যস। লেগে যা নারদ নারদ। সে এক ধুন্ধুমার। মাও কে অমার্ক্সবাদী বলা হয়েছে, তো মহাভারত থুড়ি ক্যাপিটাল অশুদ্ধ হয়ে গেছে। শান্তনুদাকে ফাইল থেকে বহিষ্কারের দাবীও উঠে গেলো। শান্তনুদাও সলিটারি সেলে চলে যাবেন বলে রুখে গেলো। শেষে সমীরদা, পরিমলদা আর তারকদা (আমাদের ওয়ার্ডের ব্রহ্মা-মহেশ্বর-বিষ্ণু) আর আমি, দেবাশিস, সঞ্জয়দা মিলে হৈচৈ লাগালাম। আগে প্রমান করো শান্তনু যা বলেছে তা ভুল, তবে তো বহিষ্কার-টহিষ্কার!
    যা: ওমনি সব চুপচাপ। অভিযোগকারীরা কেউ তর্কে রাজি নয়। যুক্তি অদ্ভুত - ওর পড়াশোনা বেশী বলে ও সব গুলিয়ে দেয়। কথাটা যে খুব মিথ্যে তাও নয়। ফলে স্টেলমেট। শেষে কড়ার হলো, খুঁচিয়ে শান্তনুদার সাথে কেউ তক্কো করতে যাবে না। পুনরায় শান্তি বিরাজ করতে লাগলো, নতুন কোন অশান্তির অপেক্ষায়।

  • nyara | 64.105.168.210 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ১১:৪৩695734
  • সবুরে শেষে মেওয়া ফলল। কল্লোলদা, শেষ না হওয়া অব্দি এটাকে আর থামতে দেবেন না প্লিজ।
  • kallol | 220.226.209.5 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ১৪:৪৮695735
  • এর মধ্যে পয়লা মে এসে গেলো। তখন শান্তি পর্ব চলছে। ফলে শান্তনুদা নাটক লিখে ফেলেছেন, তার মহলা চলছে। লোকজন প্রচন্ড উৎসাহে মহলা চলাকালীন অন্য ওয়ার্ডে চলে যাচ্ছে। কারন মহলাই যদি দেখা হয়ে গেলো তবে আর সেদিন নাটক দেখবে কি?
    আমাদের থাকার জয়গাটার নাম সাতখাতা। হয়তো সাত নম্বর খাতায় এখানকার কয়েদীদের হিসেব থাকতো। প্রেসিডেন্সী জেলের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে দোতলার চারটে ওয়ার্ড নিয়ে আমাদের সাতখাতা - ১৭, ১৮, ১৯, ২০। তার মধ্যে দুটো ভাগ। আগে বলেছি বোধহয়। তবু আর একবার বলি। পার্টি আর নো পার্টি এই দুইভাগ। নো পার্টি মানে যারা মনে করেন কোঅর্ডিনেশন কমিটি (এটা মহাকরনের বাবু ট্রেড ইউনিয়ান নয়। নাম সম্ভবত: ছিলো অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি অফ কমিউনিষ্ট রেভলিউশনারিজ - AICCCR) থেকে সিপিআইএমএল গঠনের প্রক্রিয়া ঠিক ছিলো না। আর এটা যারা মনে করেন না - তারা পার্টি। এই দুই ভাগেই অজস্র উপভাগ ছিলো। নো পার্টিতে বড় গ্রুপটি ছিলো কানুদার (কানু সান্যাল) নেতৃত্বে। কানুদা আর জঙ্গলদা ছিলেন আলিপুর সে¾ট্রাল জেলে। প্রেসিডেন্সীতে ওদের নেতা ছিলো অসিতদা (সেন নয়, সিন্‌হা)। উত্তর কলকাতার সোমনাথদাদের আলাদা গ্রুপ। এছাড়া আর সবাই ব্যক্তি হিসাবে ছিলেন। শুধু আমরা - আমি, সঞ্জয়দা, দেবাশিস, তারকদা এপিডিআর করতাম বলে - গণতান্ত্রিক লোকজন বলে গণ্য হতাম। তবে সে কারনে কোন বিশায়ে কোন বিধি নিষেধ ছিলো না।
    তা সে যাই হোক, নো পার্টিরা থাকতাম ১৭ আর ২০ নম্বরে আর পার্টিরা থাকত ১৮ আর ১৯ নম্বরে। আমাদের কেন যে ওরকম পশ্চিম পাকিস্থান-পূর্ব পাকিস্তান ব্যবস্থা ছিলো কে জানে। তবে ১৭,১৮,১৯,২০র মাঝখানের দরজা কখনো বন্ধ হতো না। ফলে এপাড়া ওপাড়ায় অবাধ যাতায়াত ছিলো। এমনকি খুব জাতীয়-আন্তর্জাতিক ঝামেলা না থাকলে পার্টি-নো পার্টি মিলে মিশে আড্ডাও হতো চমৎকার।
    তা ওদিকে নাটকের মহলা চলছে। এদিকে গানের। আমিও ভিড়ে গেছি গানের দলে। এখানেও শান্তনুদাই মূল হোতা। তবে পার্টির প্রদীপদা (প্রদীপ ব্যানার্জি - কলকাতার প্রথম পুলিশের সাথে এনকাউন্টার শহীদ, তালতালার কাজল ব্যানার্জির দাদা। ওদের আর এক ভাই উদয়ভানু বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলেছে। ওদের বাবা মোহিনী ব্যানার্জি একসময়ে ইষ্টবেঙ্গলে ফুটবল খেলেছেন।) বেশ কিছু গানও শিখিয়েছিলো। সে গান গুলো মেঘনাদদার গান (এও তালতলার বাবু দাশগুপ্ত)। সাঁওতালি লোকসুর থেকে করা গানগুলো অন্যরকম একটা আমেজ আনতো।
    ওদিকে সমীরদা ঘাড় গুঁজে কি সব লিখে চলেছেন। কি সব মানে, কবিতা। সমীরদার কবিতার বই তখন আমাদের হাতে হাতে - রণপায়ে হেঁটে যাবো।
    আমরা, মানে আমি, শান্তনুদা, ডেবরার নিতাইদা আর শ্রীকাকুলামের নাগেশ্বর, আমাদের নাগুয়া - গাইছি বিস্তীর্ণ দুপাড়ে / অসংখ্য মানুষের / হাহাকার শুনেও.....। নাগুয়াকে বিস্তর পরিশ্রম করেও "দুপাড়ে" বলানো গেলো না, সে বলেই গেলো "দুপড়ে" আর অবশ্যই "অzঙ্ক মনুষের আআকার" কিছুতেই হাহাকার-এ এলো না। শান্তনুদা বললে - চালাও পানসী নক্সালবাড়ি - ওতেই হবে।
  • ranjan roy | 122.168.84.110 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ২০:০৬695736
  • উ: কল্লোল! নভেম্বরের পরে এপ্রিল? তোমাকে আমি-----। তুমিও "" চালাও পান্সী''। থামতে পারবে না। অন্তত: ১৯৮ও তে পৌঁছে, তবে বাথরুমে যাবার পারমিশন পাবে।
    আচ্ছা? চারুবাবুর সঙ্গী দিলীপ কি নর্থ বেঙ্গলের দিলীপ বাগচী? আগে ""সূর্য্য সেন'' গ্রুপে ছিলেন?
    প্রেসিডেন্সি কলেজের ক্যান্টিনে মেঘনাদের অসম্ভব সুরেলা গলায় সলিল চৌধুরির "" রুখবে কে আর, উদ্দাম এই প্রাণের জোয়ার'' এবং "" দূর নয়, দূর নয়, দিগন্ত দূর নয়, ঐ শোন মুক্তির বরাভয়। সূর্য্যতোরণদ্বার ভাঙ্গবার ভাঙ্গবার, এসেগেছে দিন আর দেরি নয়।'' -শুনেছি।
    প্রদীপ রায় কি ফর্সা? বড় বড় হাসি-হাসি চোখ? খাড়া নাক? বক্সিং করতেন?
    সরি, সরি। নস্টালজিয়ায় ভুগছি। আর কথা নয়। তুমি ১৯৮০তে পৌঁছনো পর্য্যন্ত টুঁ শব্দ করবো না।
  • kallol | 122.167.105.237 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ২০:৪১695737
  • রঞ্জন - মেঘনাদ মিলে গেছে। দিলীপ বাগচীও মেলাই। তবে উত্তর বাংলার সে যে "দক্ষিণ দেশ"এ ছিলো তা তো জানতাম না! আর, কি যেন বলে, প্রদীপ রায় নয়, ব্যানার্জি- তালতলার। যেমন দেখতে বলছো তেমনই। তবে বক্সিং কেসটা জানিনা। হতেও পারে। ওদের তো খেলাধূলার বাড়ি। আর ওয়েলিংটন স্কোয়ার তো পাশেই।
  • kallol | 122.167.105.237 | ২৫ এপ্রিল ২০০৮ ২১:১৭695738
  • ওদিকে সংষ্কৃতিপ্রেমী নকশালদের পাশাপাশি খাদ্যরসিক নকশালও কম ছিলো না। অনেকেই দুই গ্রুপেই ছিলেন। আমরা আসার আগে ব্যবস্থা অতীব চমৎকার ছিলো। প্রত্যেক ওয়ার্ডের আলাদা চৌকা (রান্নাঘরের জেল- প্রতিশব্দ) ছিলো। তাতে আমরা নিজেরাই রান্না করতাম। জেল কতৃপক্ষ কাঁচা বাজার আর তেল মশলা যোগান দিতো। আজিজুলদারা জেলপালানোর পর, সে সব বন্ধ করে দেওয়া হলো।
    সেবার খুব "জনমত" উত্তাল - মেদিবস উপলক্ষে একদিনের জন্যও যদি চৌকার পারমিশন পাওয়া যায়। আমাদের ওয়ার্ডের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের বিষ্ণু, তারকদা, মুশকিল আসান হলেন। হঠাৎ বেলা দশটা নাগাদ দেখি, পাঞ্জাবি-লুঙ্গী পরে চুল-টুল আঁচড়ে তারকদা আমায় ডাকলেন,
    - এই তো কল্লোলের বেশ লাল্টু চেহারা আছে, এতেই হবে। কই হে, চলো তো দেখি আমার সাথে।
    আমি তো এক পায়ে খাড়া।
    নানা প্রকার চিরকুট ইত্যাদি দেখিয়ে, গোটা চারেক গেট পার হয়ে, মূল ফাটকের ভিতরে জেলারের অপিসে পৌঁছানো গেলো।
  • kallol | 220.226.209.5 | ২৬ এপ্রিল ২০০৮ ১৪:৫৪695739
  • তারকদাকে দেখেই জেলারবাবু বেশ হাতটাত বাড়িয়ে হেঁকে ডেকে বললেন - আরে তারকবাবু যে। এই ডিউটি, দো কাপ চ্যায়।
    - হ্যাঁ বলুন কি ব্যাপার, কি করতে পারি।
    তারকদা আমার দিকে দেখিয়ে বললেন
    - দুটো গুলি করে দিন, ব্যস ঝামেলি ফট।
    জেলারবাবু চোখ গোল গোল করে কেসটা বোঝার চেষ্টা করছেন, আর মুখে বলছেন - সেকী ! সেকী!
    আমার তো কানের কাছটা কেমন ঝাঁ ঝাঁ করতে লাগলো। হাত দিয়ে দেখি রগের কাছটা কেমন গোল হয়ে উঠছে। শরীরের অন্য স্থানে কিছু-মিছু নেই নেই মালুম দিচ্ছে।
    শেষে জেলারবাবু সম্বিত ফিরে পেয়ে বললেন
    - আহা, ব্যারাপটা কি?
    - আরে মশয়, চেয়ারাটা দেকেচেন ? বক্তব্যের লক্ষ্য এবারো আমি।
    - ভদ্র ঘরের ছেলে মশয়। যা খাওয়া রোজ খাওয়ান তা কি রোচে! আমাদের কথা বাদ দিন। আমরা শালা তালেগোলে হরিবোল। এই বাচ্চাগুলোর কথা একটু ভাবুন! তা বিপ্লব করতে এয়েচে বলে তো সাধ আহ্লাদ চুলোর দোরে যায় নি। সামনে আমাদের মে ডে, জানেননই তো। আমাদের দোল-দূর্গোচ্ছব যা বলুন ঐ তো। তা সেদিন এরা একটু.......
    জেলারবাবু আর কথা বাড়াতে না দিয়ে বলে দিলেন
    - হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে, ঠিক আছে। আমায় কি করতে হবে।
    - সামান্য ব্যাপার, এই একটু একদিনের জন্য চৌকার পারমিশন।
    - সেতো ঠিক আছে। কিন্তু ঐ কি বলে ডায়েট যা সরকারী হিসাবে যা আছে, তাতে তো আমার আর কিছু করার নেই।
    - অ্যায়, ঠিক ওটাই করতে হবে আপনাকে - আপনি কিচুটি করবেন না। তাহলেই আমি যা করার করে নেবো। হিসাব বরাব্বর থকবে। চিন্তা করবেন না। তবে চলি।
    - হ্যাঁ, হ্যাঁ। আচ্ছা বেশ তবে ঐ কথাই রইলো।
    তারকদা বাইরে বেরিয়ে একগাল হেসে চশমার পেছন থেকে পট করে চোখ মেরে বললেন
    - একটু নাটক করতে হয় - বুইলে!
    আমার তখন মনে হচ্ছিলো পায়ের ধূলো নিয়ে বলি
    - আপনি থাকতে উৎপল দত্ত !

  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ১৬:৪৫695740
  • পরের গন্তব্য বড় চৌকা। অর্থাৎ প্রধান রান্নাঘর। তারকদা সেখানে পৌঁছেই - দুলাল দুলাল বলে হাঁক পাড়লেন। একটা সিড়িঙ্গে মত লোক এসে বললো
    - দুলাল নেই। অপিস কল হয়েছে।
    তারকদা বললেন
    - অ, তবে দাঁড়াই। আমাদেরই কাজে গেছে।
    মিনিট দশেক পরে মিশমিশে কালো, সবুজ লুঙ্গী আর সাদা কয়েদী জামা (মোটেও ডোড়াকাটা নয়) পড়া দুলাল আবির্ভূত হলেন। তারকদাকে দেখেই একগাল হেসে বললে
    - কমরেটবাবুদের টেইম ঠিক আছে।
    এরপর তারকদা যা করলেন সেটা করতে পারলে আজকে অমর্তবাবুও শ্লাঘায়িত হতেন। বিনিময় অর্থনীতির আমলে অর্থনীতিবিদ বলে কিছু হত কি ? যদি হতো, আর যদি ঐ অর্থনীতিতে নোবেল বলে কিছু থাকতো, তো সেটা এক এবং একমাত্র তারকদার গলাতেই বাঁধা থাকতো।
    একটু বিশদ হই।
    আমরা "পলিটিকাল প্রিজনার"। ফলে প্রথম শ্রেনীর বন্দীর "মর্য্যাদা" পেতাম। এ নিয়ে প্রচুর তর্ক ছিলো। চারুবাবুর নির্দেশ ছিলো "ডিভিশন" (প্রথম শ্রেনীর বন্দীর মর্য্যাদা) না নেওয়া। ওটা বুর্জোয়া বিচ্যুতি। তর্ক হলো, রাজনৈতিক বন্দীদের প্রথম শ্রেনীর মর্য্যাদা আদায় করতে বৃটিশ আমল থেকে বহু রাজনৈতিক বন্দী লাড়াই করেছেন। আগে জেলের শ্রেনী বিভাগটা হতো বন্দীর পরিবারের আয়ের উপর ভিত্তি করে। আয় একটা অঙ্কের বেশী হলে তবেই ফার্স্ট ক্লাশ। এই নিয়মটার ব্যত্যয় ঘটে লাহোর জেলে যতীন দাসের অনশনে মৃত্যুর পর। ওনার লড়াই ছিলো, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীকে প্রথম শ্রেনী মর্য্যাদা দেবার দাবীতে। সেটা পরে বৃটিশ সরকার মেনে নেয়। তাহলে, যে অধিকার মানুষ লড়াই করে, জান দিয়ে পেয়েছে, তা আমরা ছেড়ে দেবো কেন?
  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ১৭:৪৯695742
  • প্রথম শ্রেনীর বন্দীদের খাবার অন্য শ্রেনী তুলনায় ভালো। এরা খবরের কাগজ, বই, কাগজ, কলম আনাতে পারতেন - অবশ্যই সেন্সারড হয়ে। একজন সেন্সার অফিসার থাকতেন সে সব পাস করার জন্য। সে গব্ব-যন্তোনাটির কথা আগেই ব্যাখান করেছি। যিনি হল অ্যান্ড স্টিভেনসের জিওমেট্রির বই পাস করেন নি - ওসব দিয়ে মাপজোঁক করে দেওয়াল ভাঙ্গা হবে- তাই। ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাসের বই ছড়েন নি - পড়ে কিছু বোঝা যাছে না বলে।
    খাবার কথায় আসি।
    সকালে এক মগ চা, ছোলা সেদ্ধ। চা তত খারাপ নয়। তবে ছোলা সেদ্ধে প্রচুর অ্যানিম্যাল প্রোটিন থাকতো। একটু বেছে খেতে হতো। এছাড়া রোটেশনে সপ্তাহে একদিন ডিম সেদ্ধ (আধখানা) আর বোধহয় দুদিন পাঁউরুটি মাখন পাওয়া যেত। এটা ছিলো মেডিকেল ডায়েট। তা, আমাদের অনেকেরই মেডিকেল ডায়েট করানো ছিলো। সেটাই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সবাইকে দেওয়া হতো। দুপুরে ভাত, ডাল, তরকারী। সপ্তাহে একদিন মাছ, একদিন মাংস। তরকারীটা সাধারনত: কুমড়োর ঘ্যাঁট জাতীয় কিছু, তাতে ভাতের ফ্যান থাকতো প্রচুর (স্বাস্থ্যকর!!)। ডাল ছিলো শুকনো লঙ্কা দেওয়া ডালের রং ও গন্ধওয়ালা নোনতা জল মতো। আর মাছ বলতে আমরা বাড়িতে যে চারা পোনার ঝোল খাই, তাকে, মাথা বাদ দিয়ে, গোটা আষ্টেক টুকরো করলে যা হয়, তাই। মাংসের ঝোলে গোটা চারেক কিমার টুকরো পাওয়া গেলে - চোখ বুঁজে লটারী কাটা যেতো।
  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ১৮:৪৭695743
  • এবার তারকদার বার্টার ইকনমির কামাল।
    তারকদা দুলালকে বোঝালো, আমরা দুই সপ্তাহের মাছ আর মাংস ছেড়ে দিলাম। সেই দুবারের মাছের বদলে, মাংস; আর দুবারের মাংসের বদলে মাংস - পয়লা মে-তে আমরা নেবো। এবার ওজনের হিসাব। এখন ভালো মনে নেই, তবু যতটা মনে আছে, দেখি। নিয়ম মত আমরা একজন সপ্তাহে কুড়ি গ্রাম মাছ আর কুড়ি গ্রাম মাংস পাবো। তার মানে সপ্তাহে ৬০ জনে ১.২০০ কিলো মাছ আর ১.২০০ কিলো মাংস পাবো। দুইয়ে মিলে ২.৪০০ কিলো মাংস। জোগাড় হলো। পয়লা মে-এর ভাতের বদলে আটা। তারপর তারকদার পাঞ্জাবির পকেট থেকে বের হলো দুই প্যাকেট চারমিনার। দুলালের হাতে সেগুলো চালান করে কানে কানে কিসব ফুশফুশ হল।
    বড় চৌকা থেকে বেরিয়ে পরের গন্তব্য হাসপাতাল।
    পথে যেতে যেতে তারকদা ফুশফুশ ভেঙ্গে বলল,
    - আরে মাথা পিছু ৫০ গ্রাম মাংস তো চাই। দু প্যাকেট চারমিনারে বাকি ৬০০ গ্রাম ম্যানেজ হলো।
    হাসপাতালেও বার্টার ইকনমির কামাল। ডিম, পাঁউরুটি আর মাখনের বদলে, দুধ আর চিনি।
    ব্যস, পয়লা মে-এর রাতে ফিস্টির মেনু ফাইনাল - পরোটা, মাংস আর পায়েস। পায়েসের চালটা এলো ডিম-পাঁউরুটি-মাখনের বদলে যে দুধ আর চিনি পাওয়া গেলো, সেই চিনি থেকে কিছু ছেড়ে।
    ওয়ার্ডে ফিরতে ফিরতে তারকদা বলছিলেন
    - আরে, আমাদের বয়স হলো, কবে কি হয়। এসব শিখে রাখো। পরে করবে কে এসব!
  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ১৯:১২695744
  • পয়লা মে। সকাল থেকে হৈ হৈ। শান্তনুদা একবার নাটকের মহলায় একবার গানের দলে ছোটাছুটি করছে। তারকদা আর অসিতদা বার্টার ইকনমির ফলিত দিকটা সামলাতে বড় চৌকা-হাসপাতাল-ওয়ার্ড চরকি মারছে। দুপুরের খাওয়ার পর, উনুন-হাঁড়ি-ডেকচি-গামলা-হাতা-খুন্তি, চাল-আটা-মাংস-দুধ-চিনি এসে গেলো। অসিতদা-নিতাইদার নেতৃত্বে রান্নার টিম ঝাঁপিয়ে পড়লো। পারোটা ছাড়া আর সব নেমে গেলো বিকাল ৫টার মধ্যে। আটা মেখে রাখা হলো। রাতে গরম গরম।
    সন্ধ্যা সাতটায় ইন্টারন্যাশনাল গেয়ে শুরু হল গান, তারপর নাটক। সব শেষে সমীরদা কবিতা পড়লেন। বললেন - তোমাদের নিয়েই কবিতা লিখেছি। বীরেনদা (চট্টোপাধ্যায়) মে দিবস উপলক্ষে একটা কবিতা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন, ওঁরা একটা কবিতার ফোল্ডার বার করবেন আজ। সেই কবিতটাই পড়বো। আমাদের কারুর কারুর কথা এসেছে এই কবিতায়। ব্যক্তিগত ভাবে যদি কেউ কষ্ট পাও, আমায় ক্ষমা করো। তোমাদের কথা এভাবেই সকলকে পৌঁছে দিতে চাই।
  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ২২:৪২695745
  • আমি মে দিবসের কবিতা লিখতে পারিনি বীরেনদা
    - সমীর রায়

    বীরেনদা,
    ক্ষমার অযোগ্য নই, তাই ক্ষমা করবেন আমাকে।
    আপনারা যখন কলকাতা শহর জুড়ে
    সাতটা নয়, পাঁচটা নয় -
    অন্তত: একটা সমুদ্র কাঁপিয়ে
    লক্ষ হাতে লাল নিশান উড়িয়ে কবিতা লিখছেন
    তখন আমি এইখানে
    এই কলকাতার প্রেসিডেন্সী জেলে
    চাঁদের লাবন্যকে খুঁজে খুঁজে না পেয়ে
    অবশেষে শুধু হাতেই আমার মায়ের মুখে হাত বোলাই;
    মা আমার অসুস্থ, রুগ্ন, গায়ে জ্বর।
    আমি মে দিবসের কবিতা লিখতে পারিনি বীরেনদা।

    রাত্রে আমার ঘুম আসে না
    আমি সারা রাত জাগি আর শুনি
    আমার ডান পাশে বিশ বাছরের কিশোর অসীম
    রাতভোর মাকে ডেকে ডেকে হয়রান
    জালের এপাশে দাঁড়িয়ে অনেকদিন দেখেনি ও মাকে -

    আমার বাঁদিকে রঘুনাথ বীর প্রধান,
    বলিষ্ঠ চেহারা
    গ্রীসের যুবক যেন পাথর হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
    এ জেলে আসার পর ওর বাবা মারা গেছেন
    মা সেই থেকে শয্যাশায়ী,
    একটি মাত্র বোন।
    সংসার অচল;
    তবু আমি বীরের চোখে জল দেখিনি
    পাথরের চোখে জল নেই বুঝি!
    কিন্তু এ পাথর হাসে কথা বলে
    এ পাথরে লাল সাদা রক্ত আছে
    যতটা দরকার
    হাসবার জন্য, কথা বলার জন্য -
    তবু যখন সেন্সারড অ্যান্ড পাসড -
    মায়ের চিঠি আসে
    কেমন যেন পাথর, পাথর তবু গলে
    আমি বীরের চোখের দিকে তাকালেই
    মায়ের চোখের জল দেখতে পাই
    আঙ্গুরের ফল বুঝি চোখ থেকে জল হয়ে ঝরে
    তাই আমার ঘুম আসে না,
    সারারাত সে¾ট্রাল সেϾট্র টাওয়ারে ঘন্টার শব্দ শুনি
    আর মায়ের চোখের দিকে হাত বাড়াই।
    মা আমার ঘুমাও ঘুমাও
    আমি তো লক্ষী ছেলের মত তোমার পাশেই বসে আছি।
    তবু কি করি বলুন তো
    মা আমার ঘুমাবেনা
    তেষ্টা পেলে জল গড়িয়ে খাবে না।
    আমি মে দিবসের কবিতা লিখতে পারিনি বীরেনদা।

    (চলছে...)
  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ২৩:০১695746
  • আমার বাঁদিকে একটু দূরে
    মাথায় গামছা বেঁধে ছটফট করছে অরুণ।
    সারা জীবন জেলে থাকার ছাড়পত্র দিয়েছেন ঈশ্বর -
    ভুল করবে না বলে ঘর থেকে বেরিয়েছিলো সেই কবে
    মা বলেছিলেন, "আশীর্বাদ করি বাছা, জয়ী হয়ে ফিরে আসিস আমার কোলে।"
    অরুণ ফেরেনি মায়ের কাছে।
    সেϾট্র বক্সে ঘেরা জেলের ভিতর ছটা বছর কেটে গেছে
    ছটা বছর ভুলের তরঙ্গ, ঢেউ সাঁতরে পার হতে হতে
    এখন নদীতীরে এসে ক্লান্ত, বেশ ক্লান্ত অরুণ।
    ছোট ভাইটি মারা গেছে
    বাবা এসে খবর দেন, "মা তোকে দেখতে চায়।
    বিছানা ছাড়েনি এখনো।"
    প্যারোল পিটিশন, বাবার টেলিগ্রাম, সব
    শরৎবাবুর অভাগীর স্বর্গযাত্রা
    ধোঁয়ার কুন্ডলী যেন কোথায় মিলিয়ে যায়।
    মাকে আর দেখা হলো না অরুণের।
    মাথায় গামছা বেঁধে ছটফট করছে অরুণ।
    একটু পরে উঠে বসে একটা বিড়ি ধরিয়ে গান গাইবে
    না হলে লেনিনের বই টেনে নেবে।
    চোখ দুটো গ্রীষ্মে
    গ্রীষ্মকে লজ্জা দিয়ে জ্বলে।
    আমার আর মে দিবসের কবিতা লেখা হলো না বীরেনদা।

    (চলছে.......)

  • kallol | 122.167.78.69 | ২৭ এপ্রিল ২০০৮ ২৩:৩৩695747
  • আমার ডান পাশে পঞ্চাশ গজ দূরে ইয়াসিন মোল্লা
    মা ওর হারিয়ে গেছে অনেক, অনেক দিন, সেই শৈশবে
    সেই থেকে ঘর ছাড়া
    কেমন যেন পাঁজা পাঁজা মেঘের গড়ন -
    মেশিনের সবগুলো পার্টস ওর চেনা
    তবু যেন মেশিন পার্টসের ছন্দে আর জীবনের গানে বেণী বাঁধা হলো না -
    বার বার সংঘর্ষে ছিন্নভিন্ন ইয়াসিন
    মেশিনে মাকে পায় নি, জীবনে মাকে পায় নি
    তাই উদভ্রান্ত যুবক ইয়াসিন সারা জীবন ঘুরেছে রোদ্দুরে -
    সেই ইয়াসিনের মায়ের চিঠি এলো কুড়ি বছর বাদে।
    ইয়াসিনকে আমি দেখেছি স্রেফ কাঁপতে
    অন্য কোন উপমা-টুপমা এখানে খাটবে না
    ইয়াসিন স্রেফ কাঁপছে, মায়ের চিঠি হাতে নিয়ে
    এই আমারই সামনে -
    ইয়াসিনের মা রোববার আসবেন
    এসেছিলেনও।
    কিন্তু দীর্ঘ কুড়ি বছর বাদে কুন্তীর প্রবেশপত্র মেলেনি বীরেনদা
    চ্যালেঞ্জ গেট পার হয়ে ছেলেকে দেখে যেতে পারেনি
    ইয়াসিনের মা -
    আমার চোখের সামনে এখন ইয়াসিনের মা
    চ্যালেঞ্জ গেটের কাছ থেকে ফিরে যাচ্ছেন ইয়াসিনের মা,
    আমার মা।
    আমি মে দিবসের কবিতা লিখতে পারিনি বীরেনদা।

    (চলছে.......)

  • kallol | 122.167.78.69 | ২৮ এপ্রিল ২০০৮ ০০:৫৮695748
  • পাশাপাশি চারটে ওয়ার্ড
    তারই একটাতে কাত হয়ে শুয়ে রবি কবিতা লিখছে
    ছন্দকে ছাপিয়ে যায় বুকের জ্বালা
    বর্ষার মাতলা নদী;
    ঢেউয়ে ছন্দের লাবন্যকে খুঁজো না -
    মুখোশ ছিঁড়ে ফেলে সে যেন এগিয়ে আসছে
    নিজের ভয়ংকর জ্বালা বুকে নিয়ে -
    কলম কাগজকে বিদ্ধ করে, সব রক্ত হাতে।
    রবি উঠে বসে।
    মনে পড়ে আকাশবানীর জল পড়ে পাতা নড়ে -
    এমনই সহজ সরল সংবাদ।
    ""পুলিশের সাথে সংঘর্ষে যুবক নিহত"" -
    অজয় নদীর জলে ভেসে গেলো ভাইয়ের লাশ।
    সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতা নিয়ে যখন দিল্লীর পার্লামেন্ট ভবনে
    পোলো খেলছেন ঈশ্বর
    তখন ভাইয়ের কপালে, বুকে, পেটে তিনটি বুলেট
    যেন তিনাটি সোহাগী চাঁদবদনী মেয়ে জড়ালো, আহা -
    রবি উঠে দাঁড়ায়
    চারটি ওয়ার্ড তছনছ করে হাঁটছে রবি
    ইন্টারোগেশন চেম্বারে মায়ের মুখ
    সেই কোন সকালে বেড়িয়েছে
    দুটি জেলা, দশটি জেল খুঁজে খুঁজে
    এখন ইন্টারোগেশন চেম্বারের সামনে মায়ের মুখ -
    হায়, এত বড় বুকে ঐটুকু নিজের ছেলেকেও
    আদর করে জড়াতে দেবে না, লুকোতে দেবে না ঈশ্বর !
    চোখের জল সামলাতে গিয়ে বুকে আছাড় খেলো পাগল ঘোড়া
    মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
    রক্ত গড়িয়ে পড়ছে মায়ের
    পলাশ শিমূলের দেশে মা তুই লজ্জা দিলি
    এত রক্ত লাল !
    ইন্টারোগেশন চেম্বার থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামছেন মা
    বুকের রক্ত মুখে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামছেন রবির মা -
    ""একবার কোল খালি হলে মায়ের বুক আর ভরে না লো ভরে না""
    আমি মানি না, আমি মানি না,
    আমি মানবো না এই গ্রাম্য প্রবাদ মাগো।
    মা তুমি ঘুমাও
    আমি তো লক্ষী ছেলের মত তোমার পাশেই বসে আছি।
    চাঁদের লাবন্যকে পাইনি খুঁজে
    তাই শুধু হাতে তোমার মুখে হাত বোলাই -
    মা তুমি ঘুমাও, ঘুমাও
    ঊষার আলোয় ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমাকে ছুটি দিও।
    আমার চোখের সামনে এখন রবির মা
    ইন্টারোগেশন চেম্বার থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামছেন রবির মা
    বুকের রক্ত মুখে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামছেন রবির মা।

    আমি মে দিবসের কবিতা লিখতে পারিনি বীরেনদা।

  • kallol | 122.167.78.69 | ২৮ এপ্রিল ২০০৮ ০১:১০695749
  • কবিতাটি পুরোটা এইভাবে লিখতে হলো, কারন আমার দেখা ১৯৭৬এর প্রেসিডেন্সী জেলের সাতখাতার, এর চেয়ে ঠিকঠাক বর্ণনা স্রেফ হয়না।
    কবিতা হিসাবে ভয়ানক মহান কোন কবিতা হয়তো নয়। কিন্তু কিছু পরে - ছাড়া পাওয়ার পর যাদবপুরে গান্ধী ভবনে যখন এই কবিতা পড়ছেন সমীরদা, হল ভর্তি সদ্য নবীন প্রাণগুলো নিশ্বাস নিতেও ভুলে গেছিলো। এ আমার এই পোড়া চোখে দেখা।

  • pinaki | 131.151.54.206 | ২৮ এপ্রিল ২০০৮ ১৪:০২695750
  • aweসাধারণ
  • Suvajit | 59.154.50.124 | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ ০৭:৪৯695751
  • কল্লোলদার এই লেখাটার মাঝখানে আমি কখনও ফুট কাটি নি, জাস্ট মুগ্‌ধ হয়ে পড়ে গেছি। কিন্তু ওপরের কবিতাটা পড়ে ভাল লাগল, দারুন লাগল এসব বলব না, বলব বুকে একটা তীব্র জ্বালা অনুভব করলাম।
    কল্লোলদা এটা কি পরে কোথাও প্রকাশিত হয়েছিলো? পড়তে গিয়ে কেমন কোথায় পড়েছি কোথায় পড়েছি মনে হচ্ছিলো।
  • Suvajit | 59.154.50.124 | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ ০৭:৫০695753
  • *মুগ্‌ধ
  • kallol | 220.226.209.5 | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ ১০:০৭695754
  • এটা ছিলো সমীর রায়ের - জেলখানার কবিতা বইটাতে। কাদের প্রকাশনা মনে নেই ভাই।
  • kallol | 220.226.209.5 | ০২ মে ২০০৮ ১০:৪৫695755
  • বৌদ্ধিক সংষ্কৃতি চর্চা শেষ হতেই পৈটিক সংষ্কৃতি চর্চার আয়োজন হতে লাগলো। এর মঝে ছোট ছোট দলে নাটক গানের প্রশংসা-সমালেচনা চলছে। কেউ কেউ নিছক আড্ডা মারছে, আর কেউ কেউ ..........
    ২০ নম্বরে গুরু কুন্ডুদের একটা দল ছিলো (না, না কোন রাজনৈতিক গ্রুপিং নয়)। ঐ যেমন আড্ডার দল থাকে আর কি। তাতে দীপকও ছিলো। এ দীপক অন্য দীপক। ওর পদবীটা ভুলে গেছি। এ দীপকের খুব শখের একটা গোঁফ ছিলো। দীপক সকালে উঠে প্রাত:কৃত্য সেরে, একটা আয়না নিয়ে, জানালার পাশে অন্তত: ঘন্টাখানেক, গোঁফের পরিচর্যায় মগ্ন থাকতো। পরিচর্যা বলতে মূলত: একটা ছোট চিরুনী দিয়ে আঁচড়ানো, আর এদিক ওদিক করে আয়নায় গুম্ফ অবলোকন। ওর গোঁফটা স্তালিনের মত বললে খুব খুশী হত।
    তো, ওদিকে পরোটা বেলা, ভাজা চলছে। আমরা পেটে শান দিতে দিতে গান গাইছি - গৌরীশৃঙ্গ তুলেছে শির / বহিছে সিন্ধু গর্জমান / গঙ্গা, যমুনা, রাইনে, নাইলে, মিসিসিপি মিলে তুলেছে তান / পরোটা আন, পরোটা আন, পরোটা আন।
    এর মধ্যে দেখি হঠাৎ গুরু কুন্ডুদের জটলায় মৃদু গন্ডোগোল। দীপক বলছে - না না।
    অন্যরা বলছে - হিম্মত থাকলে রাজি হ, নয়তো ছেড়ে দে - দম বোঝা গেছে।
    কেস কি ? না, বাজী হয়েছে কে কত মগ পায়েস খেতে পারবে, পরোটা মাংস খাওয়ার পর। মগ ব্যাপারটা পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। আমাদের জেলের অস্থাবর সম্পত্তি বলতে (স্থাবর আর কোথায় পবো), থালা, মগ, কম্বল। জেলের প্রবাদ - জেলেতে সম্বল, থালা, মগ, কম্বল। ঐ মগটা আমাদের সব রকম পানীয় বা তরল, আধা তরল খাদ্য পদার্থ ধারন করতো। চা, জল, ডাল ইত্যাদি। ফলে পায়েসও মগেই ঢালা হবে, তাই পায়েস খাওয়ার বাজীর একক হল মগ। মগটা এনামেলের, আড়াইশো মিলি লিটার মত ধারণ ক্ষমতা।
    জানা গেলো কেউ বলছে, চার মগ, কেউ ছয় মগ, দীপক বার খেয়ে বলে ফেলেছে পনেরো মগ।
    ব্যস। দুনিয়ার হাড়ে-বিচ্ছু হাঁ হাঁ করে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলেছে - বাজী ধর। বাজী ধরা, লটারী খেলা, অমার্কসীয় বলে ধরা হতো। কিন্তু পেছনে লাগার সময় কে আর অত পলিটিকালি কারেক্ট থাকে! তা, বাজী কি? না পারলে গোঁফ কাটা যাবে। দীপক কিছুতেই রাজী নয়। অন্যরা দীপকের ""দম"", ""হিম্মত"", ""মরদ কি বাত"" এমনকি ""বিপ্লবী দৃঢ়তা"" ইত্যাকার নানাপ্রকার তোল্লাই দিয়ে রাজী করিয়ে ফেললো।
    খাওয়া দাওয়া হল। ভালই হল। সবার খাওয়া শেষ - এমনকি পায়েসও। এবার দীপক পায়েস খাবে। ওকে ঘিরে গোল হয়ে সবাই উৎসাহ দিচ্ছে। দীপকের মগে পায়েস ঢালা হচ্ছে - ঢালছে গুরু কুন্ডু। এক, দুই, তিন, চার ............
  • DB | 71.138.255.186 | ০২ মে ২০০৮ ১০:৫০695756
  • না! ১৫ বোধ্‌হয় হোলোনা?
  • kallol | 220.226.209.5 | ০২ মে ২০০৮ ১২:০৯695757
  • পাগল !
  • santanu | 82.112.6.2 | ০২ মে ২০০৮ ১২:২১695758
  • তাইলে গোঁফের কি হইলো?
  • kallol | 220.226.209.5 | ০২ মে ২০০৮ ১৩:৩১695759
  • গোটা চারেক সাধারন মাপের পরোটা আর ৫০ গ্রাম মাংস খাওয়ার পর, পনেরো মগ সাধারন ঘনত্বের পায়েস কেউ কখনো খেতে পারবে না এমন নয়। তবে ব্যাপারটা ঘটিয়ে ফেলা - সামান্য অতিমানবিক। আমার বকুলবাগানের বন্ধু শুভঙ্কর হলে পারতো। সে গল্প তোলা রইলো। কিন্তু দীপক, প্রাণপণ করেও পাঁচটার বেশী পারলো না। পাঁচ নম্বর শেষ করেই দীপক ঘামতে শুরু করে। ছয় নম্বরের সময় জনতা স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজিত এবং নানবিধ রাজনৈতিক শুদ্ধ-অশুদ্ধ উৎসাহ নাদে সাতখাতা কম্পমান। এর মধ্যে দীপক হঠাৎ উঠে দাঁড়াল। তার পর শ্রীচৈতন্য কায়দায় হাত তুলে বলল - এত গোলমালে খাওয়া যাবে না।
    আর যায় কোথা। সেই হাড়ে-বিচ্ছুর দল হা রে রে রে করে পেড়ে ফেলল দীপককে এবং দীপকের গোঁফ পালনের মানবাধিকারের বিন্দু মাত্র তোয়াক্কা না করে চড় চড় করে একটা নতুন ব্লেডে (কোত্থেকে জোগাড় করলো কে জানে ! পরে জেনেছি, এও ক্ষুদ্র বিনিময় পদ্ধতিতে - দুটো চারমিনারের বিনিময়ে পাওয়া) ফর্সা। দীপকের হুলিয়া পাল্টে গেলো।

    দীপক প্রচুর ক্ষেপলো। কেউ কেউ প্রকাশ্যে, কেউ কেউ গোপনে দীপককে এই অধিকার হরণের বিরুদ্ধে আমাদের জেল কমিটিতে নালিশ ঠুকতে বলল (এটাও আর একটা ""মজা"" পাওয়ার জন্য)। আমরা কজন দীপককে বারন করলাম। তো মণিহারা ফনীর হৃদয় জ্বালা কি উপদেশে উপশম হয়। তার তখন ""শ্রেণীঘৃণা"" উপচে পড়ছে। ফলে নালিশ হলো। জেল কমিটির জনতাও তাকে বুঝিয়ে পারলো না। শেষে জি.বি. বসলো।
    এ এক অদ্ভুত অবস্থা। গোঁফ ডাকাতির বিচার। দীপক দোষী চিহ্নিত করতে গেলে - গোটা ব্যাপারকে জিলিপি জটিল করে দিলো সুধাংশুদার (পরিমলদার বন্ধু - সেই অসম্ভব ভালো মানুষ) আপত্তি। সুধাংশুদা বল্লে,
    - দায়ী দীপক ছাড়া অন্য সবাই। সকলের সামনেই এটা ঘটেছে। কেউ প্রতিবাদ করেতো নি-ই, বরং তারিয়ে তারিতে দেখেছে, এমনকি আমিও।
    লাও, এবার কার বিচার কে করে! আমাদের জেল কমিটির আহ্বায়ক আসিতদা খুব বিচলিত হয়ে বলেই ফেললো,
    - তবে কি ওদের থেকে (১৮-১৯ নম্বরের পার্টিওয়ালাদের) কাউকে কাউকে আসতে বলবো!
    বিচারকেরা সকলেই আসামী হলে বিচার করে কে!
    দীপক ভয়নক ঘাবড়ে গিয়ে, সুধাংশুদার ওপর রেগে গেলো,
    - ধুর মশাই, কিছু বোঝেন না, খালি পড়াশোনা করেন। দিলেন তো ব্যাপারটা কেঁচিয়ে।
    তারপর বললো,
    - না না, আমার তো সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আমি তো অভিযোগকারী। অভিযুক্ত কে বা কারা সে তো আমি বলবো।
    তাও বটে। কিন্তু এও বটে। পরিমলদা কেমন গব্ব গব্ব মুখ করে সুধাংশুদার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললে,
    - দানিয়েল, দানিয়েল। আ দানিয়েল কাম টু জাজমেন্ট!
    বিস্তর রঙ্গ রসিকতার পর পরিমলদাই উপায় বাৎলালো।
    - আরে গোঁফের লস তো আর পার্মানেন্ট নেচারের নয়। ও তো আবার গজিয়ে যাবে। আর এর মধ্যে নিশ্চই গোঁফ না থাকা জানিত কারনে দীপকের আর কোন ক্ষতি হচ্ছে না। এতএব এসো আমরা সবাই মিলে দীপকের কাছে ক্ষমা চাই।
    এইবার ক্ষমা চাওয়ার ধুম পড়লো। সে আর এক খোরাক।
  • b | 193.1.100.109 | ০২ মে ২০০৮ ১৪:২১695760
  • এটাকে বই হিসেবে লিখে ডাউনলোডের পাতায় রাখা হোক।
  • kallol | 220.226.209.5 | ০২ মে ২০০৮ ১৮:০০695761
  • একটু ছড়িয়েছি। ওটা মে দিবস নয়। নভেম্বর বিপ্লব দিবস। সমীরদা ঐ কবিতাটা পড়েছিলেন মনে আছে। তাই গুলিয়ে গিয়েছিলো। পরে লিখতে গিয়ে মনে হলো, ধরা পড়লাম ৭৬ এর অক্টোবরে, জরুরী অবস্থা উঠলো ৭৭ এর মার্চে - এর মধ্যে মে দিবস এলো কোথা থেকে!!!
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০২ মে ২০০৮ ২০:১৯695762
  • কল্লোলদা শেষ করে, (ইচ্ছে হলে) একটু এডিট করে দিলেই রাখা হবে। কিন্তু আগে শেষ করতে দ্যান তো। :)

    (এখানে আমি সম্পাদক হিসাবে বক্তব্য রাখলাম। :) )
  • kallol | 220.226.209.5 | ০৩ মে ২০০৮ ১২:৪২695764
  • এই ভাবে কাল কাটতেছিলো দিব্যি। সকালে ঘুমটুম ভেঙ্গে, দাঁত মেজে, চা পাউরুটি সহ পাশের কম্বলে শান্তনুদার সাথে আড্ডা। দেবাশিস তখন গতকালের খবরের কাগজ নিয়ে পড়েছে। ওর দরকারী খবর কাটা আর সাঁটা চলছে একটা বড় খাতায় (কালে কালে সাংবাদিক হবে বোঝাই যাচ্ছিলো)।
    কেউ কেউ যোগে মগ্ন। বডিকাটার ইউনিয়ানের অবিনাশদা পদ্মাসনে বসে ফোঁৎ ফোঁৎ করে পেটের পেশীর সংকোচন ঘটিয়ে নিশ্বাস ছাড়ছে (নিচ্ছে কখন কে জানে!)। অবিনাশদার প্রায় ওয়ান ডায়মেনশনাল চেহারা। ফলে গোটা ব্যাপারটা দেখতে লাগছিলো শিলিগুড়ি স্টেশনে (নিউ জলপাইগুড়ি নয়) অপেক্ষারত বাষ্প ছাড়তে থাকা টয় ট্রেনের ইঞ্জিন। তখন কে জানতো বাপু অ্যারেই কয় প্রাণায়ম।
    বডি কাটার ইউনিয়ানের আরেক জন দিলীপদা এ ফর অ্যাপেল, বি ফর বল করে যাচ্ছে। ইংরাজিটা শিখতে হবে - নইলে ইউনিয়ানের কাজে বড় অন্যের উপর নির্ভর করতে হয়। আর মাঝে মাঝে আমার দিকে কড়া চোখে তাকাচ্ছে। কি ব্যাপার? না, আমায় সে ইংরাজির গুরু মেনেছে। কিন্তু গুরু ব্যাটা ল্যাদখোর। সকালে তার পুরোনো পড়া ধরে, নতুন পড়া পড়ানোর কথা। তা, সে তো চা পাঁউরুটি সেরে, স-বিড়ি আড্ডায় ডুব মেরেছে। কড়া নজরে কাজ না হলে। একটু পরে হাঁক পড়বে
    - কল্লো ও ও ও ও ও ও ও ল
    অমনি সমবেত ঐক্যতান শোনা যাবে
    - পড়া আ আ আ আ আ আ তে বসো।
    দিলীপদাকে এখন ইউনিয়ানের কাজে ইংরাজির জন্য কারুর কাছে যেতে হয় না।
    কোনার দিকে রঞ্জন দুটো ইঁটের উপর হাত রেখে বুকডন দিচ্ছে। হাতকাটা গেঞ্জি আর লুঙ্গী ভাঁজ করে পড়া। মাঝে মাঝে ডনের চোটে লুঙ্গী বিপজ্জনক হয়ে পড়ার মত হলেই - কেশব হেঁকে উঠছে - হেঁই সাম্‌হালো - হেঁই সাম্‌হালো। রঞ্জন লজ্জা লজ্জা মুখ করে লুঙ্গী ঠিক করছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন