এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • পায়ের তলায় সর্ষে - ৭

    Binary
    বইপত্তর | ২২ জুন ২০০৭ | ২০৭০৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • r2h | 208.175.62.19 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ০২:৩৬389192
  • Blank | 69.93.243.112 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ০৩:২১389193
  • আরে এতো সেইটা। কাল চাপ না থাকলে লিখবোখন।
  • Blank | 180.153.65.102 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:১৩389194
  • অনেক দিন হয়ে গেলো। পায়ের তলার সর্ষে এদ্দিনে গাছ হয়ে গেছে। তাও দু লাইন লিখেই দি।
  • Blank | 180.153.65.102 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:৩৯389195
  • ১৪ ই জুন
    যেমনটি হয় আর কি। মানে অন্য সব দিনের মতন এদিন ও আমরা ঘুম থেকে জাগলাম একদম ভোরবেলা। বাইরে বেশ রোদ্দুর উঠেছে ভোরের দিকে। অত ভোর তো, তাই গাড়ি টারি কিস্যু নেই। এদিক সেদিক ঘুরে টুরেও কিছু পেলাম না।
    ফের ঘুমোনোটা উচিৎ কিনা, এই সব ভাবনার মাঝে এক পিস শেয়ারে গাড়ি এলো। সেই গাড়ি সারি অব্দি যাবে না, যাবে মাস্তুরা অব্দি। সে নিয়ে চিন্তা নেই। আমরা যারে কর প্রো-ট্রেকার। কয়েক কিমি এক্স্ট্রা হাঁটা তো কোনো ব্যপারই না।
    তো সেই গাড়ি তে চড়ে আমি আর চাঁদু, মানে এক মহাপুরুষ আর এক কচি মহাপুরুষ এসে নামলো মাস্তুরা তে।
    সামনের দোকান থেকে খান দুই বোতল সফ্ট ড্রিংক্স (একদম সফট) নিয়ে মাস্তুরা থেকে হাঁটা শুরু হলো ওপরে সারির র দিকে।
    দুপুর রোদ্দুরে ট্যাংস ট্যাংস করে উঠছি ওপরে। গ্রামের মধ্যে দিয়ে রাস্তা, ভাঙা সিড়ি, উঁচু নীচু পাথর পেরিয়ে। হাসি হাসি মুখে লোক জনের দিকে তাকাচ্ছি, কারন শাস্ত্রে বলেছে জে মহাপুরুষদের সবসময় স্মিত হাসি নিয়েই পথ চলতে হয়। এমনি করে ঘাম ঝরিয়ে টরিয়ে, বেশ কিছুক্ষন হ্যা হ্যা করতে করতে এসে পৌছলাম সারিতে। গ্রামের বেশ কিছু পুরনো বাড়িতে অসাধারন কাঠের কাজ দেখলাম। জানিনা ওগুলো কোথা থেকে আনা হয়েছে।
  • Blank | 180.153.65.102 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:৩৯389196
  • ১৪ ই জুন
    যেমনটি হয় আর কি। মানে অন্য সব দিনের মতন এদিন ও আমরা ঘুম থেকে জাগলাম একদম ভোরবেলা। বাইরে বেশ রোদ্দুর উঠেছে ভোরের দিকে। অত ভোর তো, তাই গাড়ি টারি কিস্যু নেই। এদিক সেদিক ঘুরে টুরেও কিছু পেলাম না।
    ফের ঘুমোনোটা উচিৎ কিনা, এই সব ভাবনার মাঝে এক পিস শেয়ারে গাড়ি এলো। সেই গাড়ি সারি অব্দি যাবে না, যাবে মাস্তুরা অব্দি। সে নিয়ে চিন্তা নেই। আমরা যারে কর প্রো-ট্রেকার। কয়েক কিমি এক্স্ট্রা হাঁটা তো কোনো ব্যপারই না।
    তো সেই গাড়ি তে চড়ে আমি আর চাঁদু, মানে এক মহাপুরুষ আর এক কচি মহাপুরুষ এসে নামলো মাস্তুরা তে।
    সামনের দোকান থেকে খান দুই বোতল সফ্ট ড্রিংক্স (একদম সফট) নিয়ে মাস্তুরা থেকে হাঁটা শুরু হলো ওপরে সারির র দিকে।
    দুপুর রোদ্দুরে ট্যাংস ট্যাংস করে উঠছি ওপরে। গ্রামের মধ্যে দিয়ে রাস্তা, ভাঙা সিড়ি, উঁচু নীচু পাথর পেরিয়ে। হাসি হাসি মুখে লোক জনের দিকে তাকাচ্ছি, কারন শাস্ত্রে বলেছে জে মহাপুরুষদের সবসময় স্মিত হাসি নিয়েই পথ চলতে হয়। এমনি করে ঘাম ঝরিয়ে টরিয়ে, বেশ কিছুক্ষন হ্যা হ্যা করতে করতে এসে পৌছলাম সারিতে। গ্রামের বেশ কিছু পুরনো বাড়িতে অসাধারন কাঠের কাজ দেখলাম। জানিনা ওগুলো কোথা থেকে আনা হয়েছে।
  • de | 190.149.51.69 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:৫৬389197
  • মাইরী, মহাপুরুষ !!! দু বচ্ছর বাদে টই সেশ কচ্চে -- এইসব ডেট্গুলো সব মনে আচে? ঃ))
  • Blank | 180.153.65.102 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:৫৭389198
  • সারিতে এসে ম্যাগি খেয়ে মন তা একটু ভালো হলো। সত্যি কারের স্মিত হাসি বেড়িয়ে এলো মুখ দিয়ে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, এই বারে আমাদের যেতেই হবে দেওরাতালে। সামনে ই উঠে গেছে সোজা রাস্তা, ৪ কিমি পাহাড় বেয়ে।
    রাস্তার দুপাশে ফাঁক ফোকরে অজস্র গিরগিটি, উঁকি ঝুঁকি মেরে দেখছ। একদম ফাঁকা নয়, এদিক সেদিক বেশ কিছু লোকজন উঠছে ওপরে, তার ওপরে আবার একটা বাঙালী পরিবার। সামনে দুটো বাচ্চা দৌড়চ্ছে, ছুটছে, আর পেছনে তাদের মা চেচাচ্চে - কমলালেবু খা, সোয়েটার পর .... পুরো ইসে টাইপ কেস যাকে বলে। সেই সব এড়িয়ে আর অনেক গুলো গ্রুপ পেরিয়ে কিলোমিটার খানিক উঠে এসে রাস্তায় পরে একটা মন্দির। মন্দির তার কথা আগেই শুনেছিলাম। ভেতরে একজন সন্যাসি থাকে - সে নাকি ভালো গাঁজা বানায়।
  • Blank | 180.153.65.102 | ০৯ আগস্ট ২০১২ ১৫:৫৭389199
  • লাস্ট ডেট থেক ১ যোগ করে এগোচ্ছি ঃ)
  • pipi | 183.161.6.201 | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৯:৩৪389200
  • তারপর কি হল??? নাকি আবার দু বছর পর?
  • test | 60.82.180.165 | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৯:৪৬389203
  • টেস্ট
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০১:০৬389204
  • লাস ভেগাস যাবেন? যান। লটারী কিনবেন? কিনুন। আমি নেই এর মধ্যে। ও সব আমার ভাগ্যে নেই।

    কেন? বলি, এই যে গত তিন বছর ধরে, প্রতিবছর ইয়োসেমিতি ন্যাশনাল পার্কের হাই সিয়েরা ক্যাম্পের লটারীতে নাম লিখিয়ে চলেছি , বলি পেয়েছি কি? নোপ। ইস ... পেলে কতোটা হাইকিঙ্গ করা যেতো, ব্যাক কান্ট্রী করে Yosemite দেখা যেতো! এ আমাদের ভাগ্যে নেই। তাই বলছিলাম, লটারীর ভাগ্য ভাল না।

    ইয়োসেমিতি আগে গেছি দুবার, মন ভরেনি, ভীষন কমার্সিয়াল মনে হয়েছে, ভ্যালিতে গেছি দুই বারই। শীতকালে, বরফ দেখার জন্যে, আর ফায়ার ফল্স দেখবার জন্য। হাফ ডোম, ইয়োসেমিতি ভ্যালির, ফল্সের প্রচুর ফটো net এ ঘুরে বেরায় ... আমার পতিদেবতা ও অনেক তুলেছে মনে হয় , ... এর সব সুন্দর, সব ভালো, প্রচুর ব্যাবস্থা যাতে মানুষের কোনো অসুবিধা না হয়।
    কিন্তু কোথায় যেন মন ভরেনি, কি যেন হোলো না , সব ন্যাশনাল পার্কের একটা Wow factor থাকে, সেটা যেন পেলাম না মনে হয়েছে। এতো বদ স্বভাব কেন আমার? সব মিলিয়ে ছয়/সাত দিন তো হলো Yosemite তে, কেনো মন ভরে না? তাই শেষবার (এ বছর Feb ২০১২) ইয়োসেমিটি ঘুরে এসে, ঠিক পরের দিন বসে গেলাম আবার Yosemite যাবার প্ল্যান কোর্তে। খুশী মনে না, গজগজ কর্তে কর্তে।

    কিন্তু ... হাই সিয়েরা ক্যাম্প পাওয়া মুখের কথা নয়, কতো লোকে সারা পৃথিবীর বিভিন্য জায়গা থেকে চেষ্টা করে, সেপ্টেমবর - নভেমবর এর মধ্যে লটারী হয়, পরের বছরের গ্রীষ্মের শুধু দুই মাসের জন্যে! ৩৬ টা মোটে জায়গা! ক্যানসেল হবার সাথে সাথে সেটা পূরণ হয়ে যায় ৫ মিনিটের মধ্যে!

    High Sierra camp বলতে পাচটা ক্যাম্প সাইট বোঝায়। এরা পর্যায় ক্রমেঃ Glen Aulin , May Lake , Sunrise , Merced Lake , Vogelsang। যাত্রা শুরু আর শেষ হয় Toulumni মেডো তে।
    তুলৌম্নি মেডো আর মে লেক এর যায়্গা পেলাম এক মাস ধরে প্রচুর ইমেল চালাচালি, কাজের মাঝে ফোন কল, আমার পতিদেবতার "ধুর হোগ্গে ছাই, এ পোষায় না, আবার সামনের বছর apply করবো" এ সব উপেক্ষা করে ...

    এতো কথা বলার কারণ হলো একটাই ... মুখিয়ে ছিলাম ছয় মাস ধরে এই ট্রিপটার জন্য ...

    ( ছবি চাইলে শিবে ব্যাটাকে খোচাতে হবে বলেদিলাম ... )
  • hu | 22.34.246.72 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০১:১৩389205
  • দারুন হচ্ছে। পশ্চিম উপকূলে যারা থাকে তাদের আমি ভীষন হিংসে করি। কেমন কতবার করে ঘুরতে পারে তারা!
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০৩:০৬389206
  • Toulumni Medow তে প্রথম দুদিন, আর মে লেক এ জায়গা হোলো প্রচুর উদ্যমে। গাড়ী ভাড়া করে অদম্য উত্সাহে রওনা হলাম রবিবার অগষ্ট ১২।
    এ বছর আমাদের শারীরীক ক্ষমতার কথা বিচার করে, বেশী হাঁটার কথা ভাবিনি। রোজ ৫/৬ মাইল ম্যাক্সিমাম, কোথাও বেড়াতে গেলে যেটা মোটামুটি স্বাভাবিক। যদি লটারী পেতাম, তাহলে তো রোজ জিমেও যেতাম ... + আর যা যা ছুতো আছে জিম এ না যাবার, সবের কোটা পূরণ হয়ে গেছে এবছর। তাই বেশী হাঁটার প্ল্যান করা হয় নি। আর তাছাড়া, এই ন্যাশনাল পার্কগুলা এতো বড়ো যে সব কিছু একবারে হয়ও না।

    ভোর ছয়টায় রওনা হলাম Yosemiteর দিকে। আমাদের এখান থেকে ঘন্টা সাতেকের ড্রাইভ। কুখ্যাত I405 (হারকিউলিক্সের কাজের মধ্যে এটা একটা হওয়া উচিৎ, ৪০৫-এ আপিস টাইম ট্রাফিকে ড্রাইভ করা) পেরোলাম কুড়ি মিনিটের মধ্যে, যেটা দেড় ঘন্টা লাগে! দুগ্গা দুগ্গা ...

    Yosemite তে যাবার যেটা পপুলার রাস্তা, সে রাস্তায় আমরা যাচ্ছি না। আমরা যে রাস্তায় যাচ্ছি, সে রাস্তায় কোথাও Yosemiteর বোর্ড নেই। আমরা ঢুকবো Tioga পাস ধরে, পূবদিক দিয়ে। একদম পুরোপুরি গিরীপথ। সারা শীতকাল বরফ পড়লেই এ পথ বন্ধ হয়ে যায়, Yosemiteর এই দিকে তাই যেতে দেয় না গরমের সময় ছাড়া।

    যে কেউ কোনোদিন গাড়ী চালিয়েছে, সেই জানে ,ড্রাইভারের জীবনের স্বপ্ন হলো কনস্ট্রাক্সনের মধ্য দিয়ে গাড়ী চালানো, আর সেটা যদি সিঙ্গল লেন হাইওয়ে তাহলে তো কোনো কথাই নেই! আমাদের তো 'স্বর্গ আসিছে মাটিতে যে আজি নামি'! আহা হা গো, Tioga পাসে কনস্ট্রাকসান! এক পাশে বাঁদিকে খাড়া পাহাড়, ডানদিকে ঢালের গায়ে দুঃধর্ষ একটা ঝরণা প্রায় পাঁচশ ফুট নিচে লাফিয়ে পড়ব, নাকি আদুরী মেয়ের মত গা গড়ীয়ে নামবো, এই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না- সেখানে মুর্তীমানের মতো রসভঙ্গ করে, কমলা রঙ্গের দু বছর না কাচা জামা কাপড় পড়ে, সিঙ্গল লেনের একটা লেন বন্ধ করে বাবারা জলের পাইপ সারাচ্ছেন! আইরনি টা কারও চোখেও পড়ছে না। দুগ্গা দুগ্গা, এবার চলরে বাবা। যেতে দে।

    পৌঁছে গেলাম Tioga পাস এন্ট্রান্স। Yosemiteর এদিক দিয়ে গাড়ি কম ঢোকে বলে ভিড় কম এই রাস্তায়। তাও আছে ভীড়। এক পাগল ছবি তুলতে তুলতে চলেছে, Tioga পাস ধরে, আমাদের গাড়ী চলেছে এই ভদ্রলোকের চেয়ে ধীরগতিতে। পয়সা দিয়ে যখন Yosemiteতে ঢুকলাম, তখন বাজে মোটে বারোটা। ঘর দেবার সময় পাঁচটা। বড় বড় করে ঢোকার মুখে লেখা আছে 'Elev 9945' । দশ হাজার ফুট!

    তোমরা যারা হিমালয় ঘুরে এসেছো, তাদের কাছে এই উচ্চতা কিছু নয়, সেটা জানি। আমার বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা, পথের পাঁচালির অপুর মতো মন নিয়ে হাঁ করে প্রকৃতি দেখি। আমি ইয়সেমিতির এই রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম!
    আকাশের রং এক্দম Azur, তার সাথে স্কাই ব্লু মাঝে মাঝে ছুঁয়ে গেছে, আর স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়া কিশরীর মতো হাসিখুশী মেঘেরা দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর তাদের হা হা হি হি তে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য দেয়াল তুলে দাঁড়িয়ে আছে পর্বতমালা। একটু আরো এগোলে এসে গেলো প্রাণ জুড়ানো টৌলুম্নি মেডো।
    বাঁদিকে পাহাড়,লেক, আর ডানদিকে মেডো।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০৩:৫৫389207
  • টায়োগা পাসটা বেশ অনেকখানি লম্বা রাস্তা। ইয়োসেমিতিকে পুব থেকে পশ্চিমদিক পর্যন্ত মাঝখান দিয়ে কেটেছে এই Tioga পাস। পুরোটা বোধ হয় পন্চাশ মাইল লম্বা। ইয়োসেমিতিতে ঢোকার পর, তৌলোম্নি আট মাইল।

    আমরা ঠিক করলাম, আরো খানিকটা ড্রাইভ করে, তেনিয়া লেকের ধারে বসে লান্চ খাবো। সঙ্গেই ছিলো লান্চ, কুলারের মধ্যে। বেগেল, চিজ, ডিম সেদ্ধ, আপেল, ড্রাই ফ্রুট- এই সব দিয়ে বেশ স্বাস্থকর লান্চ করা হলো।
    তেনিয়া লেকটা বেশ সুন্দর। জলে স্নান করা বারণ নয়, লোকে তো বেশ গা ডুবিয়ে বসে আছে , দেখে আমার কন্যা চটপট সাঁতারের জামা কাপড় পরে তৈরী হয়ে জলে নেমে গেলো, আর আমরা একটু লেকের চারপাশটাতে একটা চক্কর দিতে চল্লাম। আমারও একটু ইচ্ছা করছিল জলে নামতে, কিন্তু থাকগে, পরে নামবো, ভেবে হাঁটতে চললাম।
  • Kakali | 60.46.236.80 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ০৮:৩৯389208
  • চালিয়ে যান, yosemite ভ্রমণ কাহিনী পড়ার ইচ্ছে অনেকদিনের, বিশেষ করে আপনি যেহেতু পার্ক এর ভেতরে campground -এ থেকেছেন, অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রইলাম ।
  • aka | 85.76.118.96 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১৬:১৫389209
  • এতক্ষণ হাঁটলে তো পায়ে কড়া পড়ে যাবে।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ১৯:৪৫389210
  • aka, হাঁটলে পায়ে কড়া পড়ে না। প্রথমে ফোস্কা পড়ে, টেনিস শু টা তখন পরার আগে পা মোজা পরতে হয়, তারপর আঙ্গুল্গুলো duck tape দিয়ে জড়াতে হয়, যাতে ঘষা না লাগে, তাপ্পর মোজা পরে জুতো পরতে হয়। ট্রেলে হাঁটার ট্রেড সিক্রেট বলে দিলাম।
  • rimi | 178.26.205.19 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ২০:৩৪389211
  • সিয়েরাতে ক্যাম্পিং করা দুজন ক্যালিফোর্নিয়াবাসীর একজন হ্যান্টাভাইরাসের ইনফেকশনে মারা গেছে। এইমাত্র খবরে পড়লাম। পড়ে ভাবলাম তোমরা নাকি? বেঁচে আছ তো?
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ২১:০১389212
  • কন্যার সাথে জলে নামবো বলে জুতো খুলে চপ্পল পরে ছিলাম, জিনস ছেড়ে Capri পরে ফেলেছিলাম, তাই পরে হাঁটতে চললাম।
    তেনিয়া লেকের ডানদিকে টায়োগা পাস, রাস্তার উপরেই গাড়ি পার্ক করা যায়। লেকের শুরু আর শেষে দুটো পিকনিক এলাকা। বাঁদিকে পাহাড় আর জঙ্গল। আমরা বাঁদিকে হাঁটতে চললাম।

    Yosemite তে অনেক লেক। ভ্যালির বিখ্যাত Mirror লেক তো আছেই, Upper Yosemite তে আরও অনেক লেক, এবং তার অনেক গুলোরই চারপাশে হাটার জন্য রাস্তা করা আছে। অবশ্য অনেক গুলো লেক দেখা হলো না। Cathedral আর টেন লেকস দেখতে গেলে দশ মাইল করে হাঁটতে হয়। টেন লেকস করতে গেলে backcountry backpacking করতে হয়।

    আমরা ঘুরে এসে দেখি আমার কন্যা জলের মধ্যে হিহি করে কাঁপছে। আমার আর নামা হলো না জলে, খানিকটা ঠান্ডার ভয়েই।

    ওখান থেকে গেলাম Olmsted পয়েন্ট। ওখানে সিকি মাইল হাঁটলে একটা জায়্গা থেকে Half Dome এর একটা ভালো ভিউ পাওয়া যায়। এই হাটাটা খারাপ না, এন্ডাগেন্ডা নিয়ে অনেকেই এসেছে এখানে। পরের থামা White Wolf campsite।
    পথে মে লেক আর Sunrise যাবার বোর্ড নজরে পড়েছে, আমরা ওগুলো ছেড়ে আরও পশ্চিম মুখো ড্রাইভ করেছি, সব মিলিয়ে Yosemite ঢোকার পরে এই পর্যন্ত মোটামুটি তিরিশ মাইল।
    যদি আমরা Hetch Hetchy অবধি যাই, তাহলে আরও মাইল পন্চাশেক রাস্তা।
    ওখানে বসে কফি খাওয়া হলো। তখন বাজে তিনটে। ফেরার প্ল্যান করা হল তৌলোম্নি মেডো তে।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ২১:০৮389214
  • রিমি, আমার কুস্ঠীতে আছে ৮২ বছর আয়ূ, আর কোনো ফাঁড়া নেই! বলে আজ্জোর মতো জামাই নিয়ে ভাল্লুকের ল্যাজের গুঁতো খেয়ে জ্যান্ত ফিরলাম! তুছ্ছু ভাইরাস ! আহা, ভাইরাসের কি আর সে কপাল হবে?
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ২২:৩৭389215
  • এখানে Yosemite র সম্পর্কে কটা কথা বলা দরকার। Yosemite Valleyর ফ্লোরের উচ্চতা প্রায় চার হাজার ফুট। Yosemite ফল্স চব্বিশ শো ফুট। হাফ ডোম এদের চেয়ে উঁচূ, তার উচ্চতা ৮৮৩৫ ফুট। আর আমরা যে এলাকায় আছি, তার ন্যূনতম উচ্চতা ৯২০০ ফুট। মাউন্ট Whitney বোধ হয় সব চেয়ে উঁচূ। তবে সেটা Yosemiteর অংশ কিনা জানি না। বেশী দূরে না এখান থেকে।

    Yosemite হলো আমেরিকার প্রথম ন্যাশনাল পার্ক। জন মুইর এর জন্য সারাজীবন চেষ্টা করেছেন, লড়াই করেছেন। উনিশ বছর বয়সে একটা ছোটো চাকরি নিয়ে Yosemite লজ-এ কাজ করতে আসেন, তার আগে তিনি তৌলুম্নি মেডো তে ভেড়া চরানোর কাজ করতেন। শেষ জীবনে তিনি প্রেসিডেন্ট Roosevelt এর সহযোগিতায় এই ন্যাশনাল পার্ক আইডিয়া শুরু করেন। কেন বার্ন এটা নিয়ে পাবলিক টেলিভিসনে একটা সিরিজ করেছেন। তৌলুম্নি নদী টা এই তৌলুম্নি মেডোর মাঝখান দিয়ে অনেকখন ধরে বয়ে গিয়েছে, তারপর Hetch Hetchy ভ্যালিতে গিয়ে পড়েছে। বহুদিন পর্য্ন্ত Hetch Hetchy ভ্যালিতে একটা সুন্দর ফল্স ছিল, জন মুইর এর মতে Yosemite র সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো Hetch Hetchy ভ্যালি। সান ফ্রান্সিসকোর বাসিন্দারা এই খানে একটা জলের ড্যামের আবেদন, লড়াই করে চলেছিল অনেক দিন ধরে, জন মুইর চেষ্টা করেছেন এটা বাঁচাবার। বিংশশতাব্দির প্রথম দিকে যে ভয়ংকর ভূমিকম্পে সান ফ্রান্সিসকোর প্রচুর লোক মারা গিয়েছিল, সেই ভূমিকম্পের পরে এই ভ্যালিতে ড্যামের আবেদন মন্জুর হয়ে যায়, Hetch Hetchy ভ্যালিতে তাই আর একটা ড্যাম ছাড়া শুনেছি আর কিছু নেই।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৭ আগস্ট ২০১২ ২৩:৪৪389216
  • ফেরা হল লজের বুকিং এর জন্য। Toulumni লজে ডিনার বুক করা ছিল সোয়া ছয়টায়। পুরো আপার ইয়োসেমিতিকে বলে 'Bear Country', প্রচুর ভাল্লুক এখানে, তাই খাবার রাখার কড়াকড়ি অনেক বেশী। আগে যত জায়গায় আমরা ক্যাম্প করেছি, ভাল্লুকের হাত থেকে খাবার সেফ রাখার জন্য যে বেয়ার বক্স আসে , সেটা ক্যাম্পসাইটের পাশেই থাকে, এখানে একদম পার্কিং লটের পিছনে, লম্বা সারি দেওয়া বেয়ার বক্স, কোনো গন্ধওলা জিনিস ক্যাম্পের ভিতর নেওয়া বারণ। টুথ্পেস্ট, পারফিউম, ক্রিম- সব ফুড আইটেম।খাবার তো বারণ বটেই। এতটা আর কোথাও দেখিনি।

    যেটাকে লজ বলে, সেটা আসলে কেবিন। মাটিটা সিমেন্টের, আর তার ওপর মেটালের পোস্টের উপর দিয়ে মিলিটারি ক্যাম্পের মত করে তাঁবু করা সাদা রঙের। ভিতরে চারটে ক্যাম্পখাট পাতা, জাজিম, আছে, কম্বল, চাদর, ব্ল্যান্কেট আছে, টেবিল আছে, সবচেয়ে আরামের ব্যাপার হল একটা কাস্ট আয়রনের কাঠের আগুন জ্বালাবার ফায়ার প্লেস আছে, কাঠটা ফ্রী আসে লজের বুকিং-এর সাথে। আপার ইয়োসেমিতি সারা বছর ঠান্ডা। রাতের বেলায় আগুনটা দরকার হয়।

    ঘরে বা বাইরে রান্না করা বারণ ভাল্লুকের উৎপাতে। খাবার খেতে হলে হয় এদের রান্না খেতে হবে, নইলে এদের যে অন্য টেন্ট ক্যাম্পসাইট আছে সেখানে যেতে হবে, বা বাইরে দেড় মাইল দূরে ভিজিটার সেন্টারের সাথে যে একটা মাত্র খাবার জায়গা আছে সেখানে খেতে হবে, সেটা খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায়, বোধ্হয় বিকেল সাড়ে ছয়টার মধ্যে। সবচেয়ে কাছের শহর ফেলে এসেছি কুড়ি মাইল দুরে। গুগুল ম্যাপ বলেছে ২৯ মিনিটের রাস্তা।

    আমাদের অবশ্য ব্যবস্থা করা ছিল এদের সাথে। খাবার বেশ ভালো। তিন চার রকমের ডিনার চয়েস আছে, ফ্যামিলি স্টাইল বসার ব্যবস্থা। এক একটা টেবিলে আট জন করে।

    লজে ঢুকেছি সাড়ে চারটে নাগাদ। তারপর থেকে শুধু বৃষ্টি পড়ে চলেছে ঝমঝমিয়ে, প্ল্যান ছিল মেডো তে যাওয়া হবে খাবার পরে, সে গুড়ে বালি।

    আপার Yosemiteর ব্যবস্থা পত্র একেবরেই নিচের ভ্যালির মতো নয়। এরা বেশ লেট-লতিফ। সব কিছুতেই প্রচুর সময় লাগায়, প্রধাণত এখানে যারা কাজ করে তারা শুধু সামারে কাজ করে, নিচের ভ্যালির মত সব প্রশ্নের জবাব হাতের মুঠোয় তৈরী থাকে না। লোক ও কম কাজ করার ভ্যালির তুলনায়। কিন্তু ভীষন ভদ্র আর ভাল ব্যবহার। সাহায্য চাইলে পাওয়া কোনো ব্যাপার নয়।

    খাওয়া শেষ হতে হতে বাইরের আলো চলে গেছে। খাবার খাওয়া শেষ হল প্রায় পৌনে নটা। লোকে বসে গল্প করে খায়, আর এরাও তো লেট-লতিফ, সেতো আগেই বলেছি।

    ভাগ্যে ঘরে আগুনটা জ্বালিয়ে খেতে এসেছিলাম!
  • kd | 69.93.240.158 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১৪:৪৯389218
  • ইয়োসোমিটি (১৮৯০) তো প্রথম ন্যাশানাল পার্ক না, ইয়োলোস্টোন প্রথম (১৮৭২)।
  • kd | 69.93.240.158 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১৫:১৫389219
  • আমি প্রতিবারই টিয়োগা পাস পশ্চিম থেকে পুবে গেছি। তবে লাস্ট গেছি বছর পাঁচেক আগে কলকাতার বন্ধুদের নিয়ে - ওদের টিয়োগা পাসের বিউটি বলে কান ঝালাপালা করে - বরাত এমনই, পৌঁছে দেখলুম তখনও (মে মাসে) পাস খোলেনি।

    প্রথমবার (৭৩) পাস দেখে এত মুভ্‌ড হয়েছিলুম - পাগলের মতো ক্যাম্পসাইট খুঁজেও জায়গা পাইনি। শেষমেষ জায়গা পেলুম পার্ক থেকে বেরিয়ে টিয়োগা লেকের ধারে। ওখান থেকে মোনো লেক খুব কাছে - ওই লেকটাও যাচ্ছেতাই টাইপ সুন্দর - অদ্ভুত রকমের সুন্দর।

    সারাজীবন ইস্টকোস্টে থেকেও ও'দিকের প্রায় সব পার্কগুলো একাধিকবার দেখতে পেরে নিজেকে ভগবানের আশীর্বাদধন্য মনে হয়।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ১৯:৩৪389220
  • মামা,
    ভুল ধরে দেবার জন্য ধন্যবাদ। কেমন আছেন?
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৮ আগস্ট ২০১২ ২০:৪৪389221
  • তুলৌম্নি মেডোতে ডিনার খেতে বসে এক পাগলের সাথে , না ঠিক বলা হল না, এক পাগলা মাতালের সাথে আলাপ হল। পাগলা বৌ নিয়ে বেরিয়েছে জুলাই ১৩ তে, Mount Whitney থেকে, যাবে Yosemite vally তে, ব্যাকপ্যাকিং করে, চৌত্রিশতম বিবাহ বার্ষিকী পালন কর্তে। আমাদের টেবিলেই বসে ছিল খেতে, মজার জনতা। ভদ্র মাতাল। ছেলে মেয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে নিজের নিজের মতো আছে, এ পাগলা বৌ নিয়ে বা না নিয়ে অর্ধ-রিটায়ার হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। ২০১০-এ কোথায় এই রকম হাইকিঙ করতে গিয়ে দুটো হাঁটু ভেঙেগিয়েছিল, তখন আবার তার সাথে কেউ ছিল না। তারপর Knee Replacement surgery করে , সুস্থ হয়ে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন করেছে, এই ট্রিপটার প্রিপারেশন হিসাবে। মাতালের হাতে পড়ে আমার পতিদেবতার গুগুল লেখা টি-শার্ট টি যেটা পড়া ছিল, বেহাত হয়ে গেল, ওর নাকি ওটা চাই-- বদলে গেল শার্ট ডিনার টেবিলে, ঘর ভরা লোকের সামনে -- ওর ছাই ছাই রঙের শার্টটা নাকি তিন বার Mount Whitney ঘুরে এসেছে -- ইত্যাদি ... ওর বৌ দেখলাম ওর এসব পাগলামিতে বেশ অভ্যস্ত। নইলে আর থাকে কি করে এই পাগলের সাথে!! টেবিলে বাকিদের মধ্যে এক জন রিটায়ার্ড প্রফেসর, এক মহিলা ইস্ট কোস্ট-এর স্কুল টিচার, আর দুই বয়স্ক মানুষ যারা লটারী জিতেছে সব কটা ক্যাম্প করবে বলে।

    মনে মনে প্রতিঞ্জা করলাম মরে গেলেও এখানে আর খাবার খেতে ঢুকছি না। আবার কোন পাগলের হাতে পড়ব তার কোনো ঠিক নেই।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ১৯ আগস্ট ২০১২ ০১:৫৭389222
  • Mount Whitney থেকে ভ্যালি ২২০+ মাইল দুরে। ওরা এক মাস ধরে যাচ্ছে ব্যাগপ্যাকিং করতে করতে, জন মুইর ট্রেল ধরে। যাক, অবশেষে ক্যাম্পে ফিরলাম, পৌনে নটা নাগাদ। বাইরে তখন লোকজন community ক্যাম্পফায়ারের ধারে বসে আছে।
    চুল্লির আগুনটা একটু ভাল করে জ্বালিয়ে, কম্বলের মধ্যে ঢুকে পড়লাম। এতক্ষন খেয়াল করিনি, শুয়ে পড়ার পর খেয়াল করলাম, টেন্ট-এর পিছন থেকে একটা জলের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, নদী তো কাছেই, কিন্তু সেতো মাঠের মাঝ্খান দিয়ে বয়ে গেছে! কাল সকালে খোঁজ করব, এখন তো ঘুমাই।

    ঘুম ভেঙে গেলো আলো ফোটার আগেই। শুয়ে শুয়ে জলের শব্দ শুনছি, আকাশের ঘুম তখনও ভাঙেনি, বেরিয়ে পড়লাম পা টিপে টিপে। ভাল্লুকের ভয়ের চেয়েও বেশী ভয় এখন আমার পতি পরম গরুকে। কান ধরে বিছানায় ফেরৎ পাঠাবে আলো ফোটেনি বলে।

    একটাই ভরসা যে ভাল্লুকদেরও ঘুম পায়। যতটা সম্ভব পাইন ইত্যাদি এড়িয়ে, খোলা জায়গা ধরে জলের শব্দের উৎস ধরে চললাম। বেশী দূর যেতে হল না, পেয়ে গেলাম একটা ঝরনা, আমাদের টেন্টের পিছনে, টৌলুম্নি নদী এখানে ঝরণা হয়ে নেমেছেন পাথরে ঝরে ঝরে পড়ে, এঁকে বেঁকে গেছে, তারপর একটা বাঁক নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে আপন খেয়ালে।

    বসে থাকলাম অনেকখন। একবার আবার ঝরণাটা পেরলাম, ঝরণার ওপরে উঠে, পাশে একটু চুপ করে বসে রইলাম। আস্তে আস্তে ভোর হল, তারপর ঝকঝকে আলোয় ভরে গেল চারিদিক। আশপাশের লোকজনের তখনও ঘুম ভাঙেনি।
  • Bublee | 118.23.96.4 | ২০ আগস্ট ২০১২ ২০:৪৬389223
  • চটপট কফি খেয়ে, কুলারে রাখা কিছু খাবার খেয়ে, লান্চ আর জল প্যাক করে আমরা Gaylor লেক দেখতে চললাম। ঘড়িতে বাজে তখন সোয়া সাতটা। লোকজন তখন ব্রেকফাস্ট খাবার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। Gaylor লেক যাবার বাস আসবে নটায়। এত দেরি করে যাবার কোনো মানে হয় না। কত কিছু দেখার আছে।

    আমরা যখন কোথাও যাই, তার আগে মোটামুটি ভাবে, কোন জায়গাটা দেখব, কতটা হাঁটব, তার একটা প্ল্যান করে নেওয়া হয় আগে থেকে, তারপর অবস্থা বুঝে প্ল্যান তো বদলায়। Gaylor লেক আমাদের লিস্টে প্রথমে ছিল, কিন্তু গতকাল বিকালে বৃস্টির সম্ভাবনা ছিল বলে বাতিল করে, মেডো তে সূর্যাস্তের সময় থাকার প্ল্যান হয়েছিল। তাও হয় নি বৃস্টির জন্য। আপার Yosemiteর এই আবহাওয়া ...রোদ, বৃস্টি পর্যায় ক্রমে সারাদিন ধরে চলতেই থাকে।

    Gaylor লেকটা আমরা যেখান দিয়ে গতকাল ঢুকেছি ঠিক তারপরেই। পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করে যখন উপর মুখী হাঁটতে শুরু করলাম, তখন কিরকম অসুস্থ লাগছে হঠাৎ, বুকের মধ্যে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে! আর এই লেকের যাবার রাস্তা এক মাইল, প্রথমের তিন ভাগে ৭০০ ফুট হাইট গেন, তারপরে ২০০ ফুট নামা। দু'পা হেঁটে একবার করে দাঁড়াতে হচ্ছে, আমার কন্যা জবাব দিয়েদিল, যে সে নাকি দম নিয়ে কুলাতে পারছে না, নেমে গিয়ে পার্কিং লটে বসে থাকবে, ভাল কথা। আস্তে আস্তে এগোতে থাকলাম, এতো কেন মাথা ঘোরাচ্ছে, শরীর এত খারাপ লাগছে কেন? তারপর বুঝলাম কেন। হাই অলটিচূডে শরীর খারাপ লাগছে, গতকাল যাকে ভোরে উঠে বেরানোর ক্লান্তি বলে মনে করছিলাম, সেটা আসলে অল্টিচুড সিকনেস! কি সর্বনাশ! শেষে কি Gaylor লেক দেখতে এসে প্রান যাবে? আস্তে আস্তে উঠি। আর রাস্তার কথা কি আর বলব, যতবার উপরে তাকাই, শুধু পাইন গাছের গোড়া, আর পাথর, আকাশ নেই মাথার উপর। সোজা খাড়া ওঠা ৭০০ ফুট। ভরসার কথা এই যে আমার সামনে এক ভদ্রলোক তারবছর পাঁচেকের মেয়েকে নিয়ে উঠছেন, আর মেয়ে মেডোতে হাঁটবে, এখানে হাঁটবে না বলে খ্যানখ্যান করতে করতে চলেছে। এ ছাড়া আর কোনো লোক নেই এখন এই রাস্তায়। আপার ইয়োসেমিতিতে অবশ্য লোক অনেক কম। এমনকি, শীতকালে নীচের ভ্যালিতে যে পরিমান লোক থাকে, আপার Yosemiteতে গরমের সময় তারচেয়ে লোক কম।

    অবশেষে পৌঁছে গেলাম গেইলর লেক। পৃথিবীতে স্বর্গ বলে কিছু যদি থাকে, তাহলে সেটা এই জায়গাটা। ভাষায় বর্ণণা করা সাধ্যের বাইরে। ঘন নীল জল, সরবতের মতো মিস্টি, তিন দিকে পাহাড়, সে পাহাড়ের ছায়া পড়েছে জলে, এত পরিস্কার জল যে তার নীচ দেখা যায় অনেক্দূর। ক্যামেরাতে এ ছবি আসে না। শিবু বলছিল যে, সুইজারল্যান্ডের লেকগুলো নাকি এর চেয়ে কম সুন্দর। বসে থাকতে থাকতে মনে ঝিম ধরে যায়। ধরনীর সৃজনক্ষমতায় শ্রদ্ধায় মাথা আসে নত হয়ে, প্রকৃতির কাছে মানুষ কত ছোট, এই বোধ আবার ফিরে আসে, কত কিছু এখনও জীবনে দেখিনি ... এই সব ভাবতে ফেরার পথ ধরলাম। এই হাইকিং টাকে ৫-স্টার রেটিং করেছে সৌন্দর্যের জন্য। ঠিক রেটিং। নীচের থেকে তখন লোকের ওঠার পালা। ক্যাম্পে ফেরৎ এলাম সময় নিয়ে বসে লান্চ খাবার জন্যে, তখন বাজে সাড়ে এগারোটা। অল্টিচূড সিকনেসটা এখন ভালভাবে টের পাচ্ছি, আর অবহেলা করা যাচ্ছে না।
  • hu | 22.34.246.72 | ২০ আগস্ট ২০১২ ২০:৫৮389225
  • খুব ভালো লাগছে পড়তে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন