এলগিন মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। হাঁটার পথটা পেরিয়ে এসে আমার প্রিয় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। এদিক ওদিক দিয়ে নানারকম যানবাহনের আপন গতিতে ছুটে চলা দেখতে বেশ ভালোই লাগে এই সময়টা। পাশে নানা লোকজনের নানা রকম মুখের ভাজ দেখতে আরও ভালো লাগে। মুখের ভাঁজ গুলো অনেক রকমের হয়। যেমন বাস দেরি করে আসার একরকম ভাঁজ আবার বাস মিস হয়ে যাবার আর এক রকম ভাঁজ। নানা-রকম ভাঁজের মাঝে নিজেকেও গুলিয়ে ফেলি মাঝে মাঝেই। কারণ আমারও বিরক্ত লাগে বাসের জন্য দশ মিনিটের বেশি দাঁড়াতে। আজ সেই বিরক্তিই হচ্ছিল। প্রায় পনের মিনিট দাড়িয়েও বাসের দেখা পাচ্ছি না। মনে মনে রাগও ধরছে। ... ...
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম উপাদান লোকসাহিত্য যা সমৃদ্ধ হয়েছে জানা অজানা রচয়িতাদের রচিত অনেক মৌখিক কেচ্ছা, ধাঁধা ও কাহিনিতে। পদ্যের ছন্দে রচিত এইসব কাহিনি কিংবা গীতিকায় যেমন বিধৃত হয়েছে প্রেম ও ব্যার্থতার উপখ্যান, তেমনি উঠে এসেছে পারিবারিক দ্বন্ধ, রাজনীতি ও সামাজিক বৈষম্যের কথাও। গীতিকার প্রসঙ্গ উঠলেই, বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় “ময়মনসিংহ গীতিকার” এর কথাই আগে আসে কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গীতিকাগুলো রয়ে গেছে আলোচনার কিছুটা বাইরে। সিলেট গীতিকার ক্ষেত্রেও তেমনি ঘটেছে। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার দুর্বোধ্যতাও তার বড় কারন হতে পারে। ... ...
তখনও বাঙালী অ্যাপার্টমেন্টবাসী হয় নি। বাঙালী তখন সবেমাত্র 'ছোট পরিবার সুখী পরিবার' থিমে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে। পরিবারে তখনও ঠাকুমা, দাদু, পিসি, জেঠু, কাকুরা জেঠিমা, কাকিমারা আর সেইসঙ্গে কুচোকাচার দল শোভা পেত। বাঙালির বাঙালিয়ানা রসনার পরিতৃপ্তিতে। বাড়ির হেঁশেলে মাছ, মাংস, শাক সব্জি র মধ্যে অন্যতম স্থান পেত পোস্তর নানা পদ – আলু পোস্ত, ঝিঙে পোস্ত, পোস্তর বড়া ইত্যাদির রূপে। নিরামিষ দিনে ডাল, বিশেষতঃ বিউলির ডালের সঙ্গে আলু বা ঝিঙে পোস্ত বাঙালির অতি পছন্দের পদরূপে সম্মান পেত। তখনও পোস্তর দাম আকাশছোঁয়া হয়ে না গেলেও পোস্ত একটু দামীই ছিল। সামান্য একটু পোস্ত শিলে মিহি চন্দনের মতো করে বেটে পুরো সংসারের জন্য একটি ... ...
নেত্রী বলেছিলেন দুদিন পরে আধা সামরিক বাহিনী থাকবে না, তখন দেখে নেব। ভাইরা বলেছিলেন রেশন বন্ধ করে দেব। তাই, এটা হবে জানাই ছিল। শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের ভোটে তবু জয়ী গত বারের শাসক দল।
গৃহবন্দী এবং কয়েকটি মুখোশ, মুখোশ -না মুখোশ দেখে ভাববেন না যে আমি সরকারি হাসপাতালের সমস্ত কর্মীদের মুখে বাঁধা একফালি ন্যাকড়ার কথা বলছি অথবা মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সঙ্গী সাথীদের মুখে বাঁধা, N 95 লেখা মুখোশের কথা বলছি।এ অন্য মুখোশ,তার কথা পরে হবে, আগে খুব ছোটবেলায় পড়া একটি গল্প শুনুন। গল্পটা মজার।ধরা যাক সেটা আঠারোশো শতাব্দীর ইংল্যান্ড অথবা ইউরোপের যে কোন শহর হতে পারে।চার যুবক বন্ধু এক সরাইখানায় আড্ডা দিচ্ছে। হাতে পানীয়ের পাত্র। চার বন্ধুর আর্থিক অবস্থায় তারতম্য আছে। একজন অর্থনৈতিক ভাবে যথেষ্ট দুর্বল, আর একজন ধনী ব্যবসায়ী পুত্র। বিস্তর অর্থের মালিক। বিত্ত বৈভবে সে সকলকে টেক্কা দিতে পারে। আচরণেও তার বেশ ভালোরকম ... ...
পর পর দুটো জন্মের মাঝে যে চিকন ফাটল / তা দিয়ে ঝুপ করে একটা নদী ঢুকে পড়ে
সাগরের খাড়ির ধারে ও-ই মস্ত উঁচু টাওয়ারে পতাকাটা শনশনিয়ে পাক খাচ্ছে কদিন ধরে। ঘোলাটে আকাশ । বাতাসে ভিজে ঢেউ। জব্বর একটা ঝড় আসছে নাকি। ম্যানগ্রোভের সংসারে যেন কিসের শংকা। কড়াক লড়াইয়ের প্রস্তুতি। ঝরঝর ঝরঝর করে বেপরোয়া ডাকাবুকো হাওয়া জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দৌড়োদৌড়ি করছে যুদ্ধবাজের মতো।
তোলেদো। তাগুস নদীর কিনারায় অবস্থিত প্রাচীন পার্বত্য নগরী। শহর না বলে গ্রাম বলাই ঠিক। তবে একরত্তি একলা গ্রাম নয়, বেশ জমাটি 'ভিলেজ টাউন'। স্পেনের এই এক চিলতে জায়গায় কী জাদু কে জানে, হাজার বছর ধরে অনুপ্রবেশকারীরা তোলেদো দখল করবে বলে হাপিত্যেশ করে বসে থেকেছে। রোমান, মুর, ভিসিগথ-- নতুন প্রজন্মের সঙ্গে নতুন নতুন ইতিহাসের পাতা যোগ হয়েছে তোলেদোতে কিন্তু পুরোনো পাতাগুলো মুছে যায়নি কোনোদিনই, বরং সময়ের সাথে সাথে তাদের অস্তিত্ব আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। সেই শহরে গিয়ে পৌঁছেছি সেইবার। রূপকথার রাজ্য, কিন্তু সে রাজ্য পাথর দিয়ে গড়া। লোরকার ভাষায় স্পেন হল জ্যান্ত ভূতের দেশ, বর্তমান এখানে গৌণ। ভুল বলেননি। এখানকার ভুগোল, ইতিহাস, ... ...
প্রশ্নটা হচ্ছে, কফি হাউসের ভেতরেও কি পোস্টার গুলো মারা ছিল। কিছুদিন আগেই গিয়েছিলাম। দেখলাম না তো। অদৃশ্য হয়ে ছিল বোধহয় বা চোখ খারাপ ছিল। তাই কাল চশমা নিয়েছি। পাহাড়ী বাবু বলেছেন গত ছাব্বিশ বছরে এরকম তান্ডব তিনি দেখেননি কফি হাউসে। প্রথমে বিদ্যাসাগর , তারপর একে একে বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে দাঁড়ি বাড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ সব প্রচেষ্টা কি বিফলে তাহলে? তাই এবার কফি হাউসে শক্তি প্রদর্শন। আহা, গোবর ভরা মাথায় খালি প্রশ্নগুলো আসছে। উত্তর কে দেবে? ওদিকে কাকে যেন নিজের গাড়ির দরজা চেপে দিয়েছে। ভগবান, এত অনাচার, অত্যাচার কেবল মানুষের সেবা করার ইচ্ছা নিয়ে থাকা মানুষগুলোর উপর কেন? রক্ষে করো রঘুবীর। বিষ্ণুমাতা একটু দেখো। আর ... ...
সকালবেলা চেয়ারটা টেনে নিয়ে পাতা উল্টাতে উল্টাতে / সবে মাত্র চায়ের কাপে চুমুক দিয়েছি—
এরকম একটা জীবনের বড্ড শখ ছিল। আজীবন এই নির্দ্ধারিত স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতেই শেষ হয়ে যাব।
বড় বড় বইয়ের ঘ্যামা ঘ্যামা ব্যাপার, যেমন গড়ন তেমনই দাম। গুরুচণ্ডা৯ নিয়ে এসেছে চটি বই, যা একাধারে সস্তা ও পুষ্টিকর।
মহাকাশ বিজ্ঞান বা গবেষণা নিয়ে ফেসবুকে বিশেষ আগ্রহ দেখি না। কয়েকজন অবশ্য নিয়মিত পোস্ট করেন, ভালো ছবি-টবি থাকলে অনেকে সেই পোস্টে লাইক করে এগিয়ে যান। অথচ এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসে, যুগান্তকারী সব আবিষ্কার হচ্ছে। হাবল টেলিস্কোপের নতুন নতুন ছবি আসছে, ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে ভয়েজর-১ আর ভয়েজর-২ এমন সব তথ্য পাঠাচ্ছে যে মহাকাশবিজ্ঞানীরা নড়েচড়ে বসেছে।ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রনমিতে Coryn A.L. Bailer-Jones কয়েকদিন আগে ইন্টারস্টেলার নেভিগেশন নিয়ে একটা পেপার সাবমিট করেছেন, সেটা নিয়ে হইচই পড়ে গেছে। প্রসঙ্গত বলা ভালো ব্যাপারটা নতুন কিছু নয়, ভয়েজরের পাশাপাশি নিউ হরাইজনও 'হেলিওপজ' বা সোলার সিস্টেমের সীমানা অতিক্রম করে কিছুদিন পর আন্তনক্ষত্র মহাকাশে পৌঁছে ... ...
একটি ননসেন্স ও অ্যাবসার্ড লেখা। আপনাদের মনে পড়ে, সেই যে সেই জানলাটা খোলা ছিল না? যে জন্য মাছিটা বেরোতে পেরেছিল, সেই জানলাটা খোলাই ছিল। ঐ খোলা জানলাটুকু দিয়েই লোকে শুনতে পেল, কয়েকটা কণ্ঠস্বর একযোগে বলে চলেছে, ক্যাট ব্যাট ওয়াটার ডগ ফিশ
এখন বাড়িতে কম খরচায় ১ কিলো ওয়াট এর উপর সোলার প্ল্যাণ্ট বসিয়ে অন গ্রীড পরিষেবা নেওয়া যাবে। এই পরিষেবায় ইলেক্ট্রিক বিল অনেক কমে যাবে। ইচ্ছুক ব্যক্তিরা আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমার দূরাভাষ - ৮০১৭৩৫৩৮২২। এই নম্বরে হোয়াটস আ্যাপ ও আছে।
আমার কলম আমাকে দিয়ে কখন যে কি লেখায় আমি নিজেই তার ব্যাখ্যা দিতে পারিনা। অদ্ভুত ভাবে মাথায় শব্দগুলো কিলবিল করে, আর আমি সেগুলোকে ল্যাপি অথবা ফোনের স্ক্রিনে ঘষতে থাকি । সাধারণত কোন মহৎ ব্যক্তিত্বকে নিয়ে লিখতে গেলে একটু দিনক্ষণ দেখতে হয়। যেমন তাঁর জন্মদিন অথবা মৃত্যুদিন। আমার পাগল শব্দেরা আমায় দিনক্ষণ নিয়ে ভাবার সুযোগ দেয়না। তারা মাথায় এসে ভিড় করে, আর উচ্চস্বরে চিৎকার করতে থাকে যতক্ষন পর্যন্ত আমি তাদের মগজ থেকে কালো কালিতে রুপান্তরিত না করছি। আজ আবার হল এরুপ। তারই ফলস্বরূপ এই লেখা। জানিনা তাঁকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা আমার আছে কিনা। তবুও তাঁর অন্ধ ভক্ত হিসেবে আমি সবসময় তাঁকে নিয়ে ... ...
আন্দালুসিয়ার শহরে একটা বইয়ের দোকানে ঢুকে কয়েকটা বই নজরে পড়েছিল। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে পর্তুগিজদের ভারতবর্ষে আসা নিয়ে লেখা, বিশেষত বাংলা ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের নানা দেশ আর রাজ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করার কাহিনী। মুর রাজাদের জাহাজ ব্যবহার করে পর্তুগিজ ব্যবসায়ীরা ভারতে পাড়ি দিয়েছিল, এদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তী সময়ে কুখ্যাত হয়ে উঠেছিল জলদস্যু হিসেবে। স্বাভাবিকভাবেই বইগুলো ছিল স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ ভাষায় লেখা।যাই হোক, বাংলার এই ইতিহাস নিয়ে স্পেনের দোকানে সারি সারি বই দেখে আমি বেশ অবাকই হয়েছিলাম। সেই যুগের ইতিহাস ও পর্তুগিজ শাসকদের বাংলা ঔপনিবেশবাদ গড়ে তোলা নিয়ে বাংলায় খুব কম লেখাই চোখে পড়েছে। ... ...
এ এক অদ্ভুত সময়। এ এক হননকাল। পৃথিবীতে কালান্তক করোনার আক্রমণের বাইরেও ঘটে চলেছে একটানা প্রাণঘাতী হননযজ্ঞ। না, ভাইরাস না। ভাইরাস মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু এখানে যার কথা বলা হচ্ছে, তা রীতিমতো আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষেরই নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক ভাবে নিত্যদিন ধ্বংস করা হচ্ছে, জল, জঙ্গল আবাসভূমি। এ এক অদ্ভুত সময়, যখন সাড়ম্বরে ধ্বংসসাধনের নাম দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন, বন্যাকে চিরস্থায়ী করার নাম হয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ, উচ্ছেদকে বলা হচ্ছে নগরায়ন, আর কর্পোরেট শকুনের নাম বেদান্ত। ... ...