শীতের শুরুতেই বেশ ভালো ট্যাংড়া মাছ পেলাম ভাইয়ের কাছে। ভাই। নামটা তার পোষাকি, না নিকনেম - জানি না। জানার চেষ্টাও করি নি কখনো। মাছওয়ালা। ভাটপাড়ার ধুনি মুখুজ্জের রোয়াকে বসে মাছ বেচে। ট্যাংড়া মাছ দেখলেই আমি বড্ড স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। শীতের বড়ো তেলালো ট্যাংড়া বড্ড ভালোবাসতেন জ্যোতিবাবু। নৈহাটি বাজারের সুকুমারদার কাছে একটা সময় ছিল, যখন শীতে বড় ট্যাংড়া আসলেই তা থেকে খানকতক যেত ইন্দিরা ভবনে। ... ...
'জীবনপণ' সুপার স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট চেম্বারে মিটিং চলছে খুব গোপনে। সুপারের টেবিলের সামনে মোট তিনজন বসে। তিনজনেই সিনিয়র ডাক্তার। এই হাসপাতাল শুধু নয় তাঁরা প্রত্যেকেই শহরের আরো বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে যুক্ত। "আজকের ভর্তি নিয়ে টোটাল ক'টা পেশেন্ট ?" খুব চাপাস্বরে সুপার জিজ্ঞেস করলেন। "শুধু কি কভিড পেশেন্ট বলব ?" ডা: সুবীর সরকার বললেন। "তা নয়ত কি, অন্য পেশেন্ট নিয়ে কথা বলতে বসেছি ?" সুপারের গলায় ঈষৎ ঝাঁজ। "আজকের নিয়ে টোটাল ছত্রিশ।" "ফিফটি আপ কজন ? আর কদিনের পুরনো ?" "স্যার, প্রায় কুড়ি জন ফিফটি আপ। আঠাশ জন কো-মর্বিডিটি প্লাস। তারমধ্যে বাইশ জন পুরোনো। আইসিইউতে রয়েছে আঠেরো। তার মধ্যে চারজন বিলো ফর্টি।" "ওই বাইশ জনের মধ্যে ... ...
গত মাসে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু অঞ্চল জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ অনুভূত হয়ে চলেছে। প্রশান্ত মহাসাগর তীরবর্তী এই অঞ্চল গুলোয় গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা চড়েছে লাগামছাড়া ভাবে যা গত উনবিংশ শতাব্দীর স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে রদবদলের অত্যন্ত বেশি সম্ভাবনা (প্রায় ১৫০ গুন) বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। পারদ ইতিমধ্যে ছুঁয়েছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাঁটা।
একটার পর একটা দিন কেটে যায়। দিন শেষের সূর্য ঢলে পড়ে পশ্চিমে।দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ যেন মেতে ওঠে অকাল হোলির আনন্দে।সূর্য একা নয় ,সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে আজকের মতো পাখিদেরও মিলেছে ছুটি।পিছুটান রাখতে নেই...রাখলে শুধু কষ্টই বাড়ে।এটা কি পাখিরা জানে না?জানে নিশ্চয় জানে তারা কিন্তু কিছু পিছুটানই যে শেষপর্যন্ত আশ্রয় দিয়ে যায়,সম্পর্কগুলোকে একটা সুতোয় বেঁধে রাখে।এই কারণেই পাখিরাও বোধহয় দিন শেষে ফিরতে চাই ঘরে,আপনজনের কাছে।হয়তো একটু নিরাপদ নিভৃত আশ্রয়ের আশায়। আচ্ছা পাখিরাও ঠিক যেনো আমাদের মতোই,বরং আমরা ওদের থেকে একটা দিকে পিছিয়ে।আমরা যে ইচ্ছে হলেই ইচ্ছেডানায় ভর করে সীমানা পেরোতে পারি না,ভাঙতে পারি না অচলায়তন।সীমানা?অচলায়তন?হ্যাঁ তা বটে,এই সীমানা রক্ষার জন্যই কতো লড়াই,অচলায়তন ভাঙার আশায় ... ...
জয়তী ঝড়ের বেগে ঘরে ঢুকে বলল, ‘ ওঠ ওঠ .... বেলা নটা বাজে ... আর কত ঘুমোবে। ওঠ তাড়াতাড়ি। আজ রোববার। ঘরের ঝুল ঝাড়ব। পড়ে পড়ে ঘুমোলে জীবন চলবে ? ‘ অর্ণব কথা না বাড়িয়ে বিছানা ছেড়ে বাইরে বেসিনের দিকে যায়। সেখানে তখন তার সাত বছরের ছেলে চিন্টু দাঁত ব্রাশ করছে। আজ রবিবার বলে দেরিতে দাঁত ব্রাশ। বাবাকে দেখে মাজনের ফেনা ভরা মুখে বলল, ‘ বাবা বাবা ...... আমাদের স্কুলে না সায়েন্স একজিবিশান হবে নেক্সট স্যাটারডে অ্যান্ড সানডে। সবাইকে হান্ড্রেড রুপিজ করে দিতে হবে। দেবে তো ? ‘ চিন্টুর শিশুমনে এই মুহুর্তে এইটাই চিন্তা ও উত্তেজনার প্রধান বিষয়বস্তু। ... ...
একটা টাটকা শোক থেকে আরেকটা টাটকা শোকে চলে যাচ্ছি। প্রথমটার থেকে দ্বিতীয়টায় গেলে পরের গুলো লঘু হয়ে যাচ্ছে। আসলে ধীর গতিতে দেখলে আমাদের এই শোক উবাচ অনেকটাই সময় ধারার মতো ইতিহাস মেনে চলছে, যুগ বদলালেও আমরা একেবারে যুগপৎ বদলে যাইনি। রামের কাছে একটা মৃত্যু ভোর ভোর এসে পৌঁছায় তো সেটা শ্যামের কাছে সেটা প্রাক দুপুরে। তারপর দুজনের শোকবহর চলে প্রকৃতি মেনে। আমি আপনি সেখানে হাত ঢোকাতে পারিনা। বড়জোর পারলেও আম্ফান ইয়াসে ভেসে যাওয়া শুকনো ত্রাণ বিনিময়ের মতো, হাত বুলিয়ে ছেলে ভুলোনো। কিন্তু রাম শ্যাম? রাম শ্যাম রহিম করিমের আবহাওয়ার খবর ভেসে যায় পাড়া থেকে বেপাড়া হয়ে পরিচিত গ্রহান্তরে। ... ...
১বাঙালি ভ্রমনপাগল জাতি, চিরায়ত প্রবাদ। সেই আদিকাল থেকে তারা পাড়ি দিয়েছে নানা দেশে বিদেশে ভ্রমনের নেশায়। দেশে বিদেশে তো দিয়েছেনই তাছাড়া ও পাড়ি দিয়েছে বঙ্গভূমির নানা জানা ও অজানা প্রান্তে।সময়টা ১৮৭১ সাল । হুগলির বিজয়নারায়ণ কুন্ডু নামক এক মহাশয় প্রথম পাড়ি দিয়েছিল অবিভক্ত বাঙ্গলার পশ্চিমপ্রান্তে, বনে জঙ্গলে ঢাকা পাথুরে মালভূমি অঞ্চল সাঁওতাল পরগণায় । মধুপুর-গিরিডি শাখার রেল লাইন পাতার ঠিকাদারির কাজ নিয়ে। তখন সেখানে মানুষ বলতে ছিল আদিবাসী কোল,ভিল, সাঁওতাল।শিকার ছিল তাদের প্রধান জীবিকা।বন থেকে পেত ফল, মধূ।পরে সেখানেই থেকে যান তিনি। সেই থেকে শুরু হয় বাঙালির সাঁওতাল পরগনায় আসা।তারপর একেরপর এক বাঙালির চরনধুলো পরল সেই ভূমিতে, গড়ে উঠল একটি ... ...
বিপ্লব রহমানের বই ‘পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ’ [সাংবাদিকের জবানবন্দিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অকথিত অধ্যায়] চার বছর পর আবারও অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বেরিয়েছে বর্ধিত কলেবরে, দ্বিতীয় সংস্করণ আকারে।পাহাড়ের অজানা, অব্যক্ত নানা ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষ দেখা থেকে লেখা এই বই। এটি নিছক সাংবাদিকের লেখনিতে পরিস্থিতির বিবরণ নয়, বরং অনেক ঘটনার নেপথ্য ঘটনা তথ্য-প্রমাণসহ সরাসরি উপস্থাপন করা হয়েছে এই বইতে। অসংখ্য সাক্ষাৎকার, টিকা-টিপ্পনী, তথ্যসূত্রে এটি হয়ে উঠেছে একই সংগে জীবন্ত দলীল।এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন সব্যসাচী হাজরা, একুশের বইমেলায় এটি পাওয়া যাচ্ছে "সংহতি প্রকাশন" এর স্টল-২০৫-৬ এ, এর দাম পড়বে ৩২০ টাকা মাত্র (২৫% ছাড়)। বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে রকমারি ডটকম-এ এই বইটি অনলাইনে কিনতে পাওয়া যাবে। ... ...
'মিথ্যামেব জয়তে' প্রকাশিত হয়েছে তিন মাস হয়ে গেল। পঞ্চম বই, আলাদা করে তেমন কোনও অনুভূতি হয়নি। তাও বই প্রকাশের সময়ের এই পোস্টটা আরো একবার দিয়ে রাখলাম। ফেসবুক কখন উড়িয়ে দেয় ঠিক নেই। সুতরাং ব্যাকআপটুকু থাক... দীর্ঘ সময় ধরে বহন করে চলা একটা লেখা যখন অবশেষে দু মলাটে বাঁধাই হয়ে বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, তখন মনে নানা রকমের ভাবের উদয় হয়। আনন্দ, গর্ব, স্বস্তি, কৃতজ্ঞতা...কিন্তু আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, আমার ক্ষেত্রে এই সমস্ত ইমোশনকে ছাড়িয়ে গেছে বিষাদ। বন্ধু বিচ্ছেদ আর হতাশার হাত ধরেই যে লেখার সুত্রপাত, অসহায় যাপন আর নীরব দীর্ঘশ্বাস অবলম্বন করেই যে আখ্যান গড়ে উঠেছে, সেখানে আর আনন্দের অবকাশ ... ...
একটার পর একটা দিন কেটে যায়। দিনাবসানে ক্লান্ত সূর্য পায় ছুটি। রোজ দশটা-পাঁচটার ডিউটি করতে করতে শহরটাও সামান্য সময়ের জন্য পাওয়া এই অবসরটাকে আঁকড়ে ধরে। কাল আবার প্রতিদিনের মতো অসংখ্য মানুষের কোলাহলে বিদীর্ণ হবে শহরটার কান। অসংখ্য অফিসযাত্রী অথবা 'বেকার' যুবক মারফত পদপিষ্ট হতে হতে হাসফাঁস করে উঠবে এই বুড়ো শহরটা। ... ...
ইংরেজি নববর্ষের পরে প্রথম কাজের দিন। বর্ষবরণ উৎসবের মদিরতার শেষে আর অনেক অনিচ্ছায় শীতের ওম ভেঙে কলকাতা সবে পথে নেমেছে । আজ অফিসের গাড়ি হাওড়া থেকেই নিতে হবে। এক রাশ অনিচ্ছা আর বিরক্তিকে সঙ্গী করে গুটি গুটি যাদবপুরের এইট-বি বাস স্ট্যান্ডে এলাম ই-ওয়ান ধরব বলে। মেয়েটিও হাওড়া যাওয়ার বাস ধরবে বলে আমারই সাথে দাঁড়াল। ... ...
তুমি বসবে গদীতে
এক নিবিড় রাতে আকাশের বুক থেকে চুরি হয়ে গেল অহংকারী চাঁদ। মুহূর্তেই অন্ধকারে ঢেকে গেল সমগ্র পৃথিবী। মৌ মৌ করে রটিয়ে গেল খবরটা। টিভির পর্দা থেকে ফেসবুকের পাতা হৈহৈ পড়ে গেল। যথারীতি সরকারি দল দোষ চাপিয়ে দিল বিরোধী দলের উপর। বিরোধী দল ফুঁসে উঠে বলল, সরকারের পদত্যাগ চাই। রাজপথে নামলো একদল মানুষ। উচ্ছৃঙ্খল হল শহর, উত্তাল রাষ্ট্র, বিশৃঙ্খল দেশ। কেউ কেউ আর্তনাদে হায় হায় করে উঠলো। কেউ কেউ বিদ্রুপ করে বলল, ঠিক হয়েছে, রোজ রাতে বেড়োয় কেন? এক পৌঢ়া নারী ব্যঙ্গ করে বলল, রূপের কি দেমাগ। যুবক আক্ষেপ করে বলল, ইশ, আমি যদি চুরি করতে পারতাম ঐ জৌলুস চাঁদটা। ... ...
আমার বাবার অনেক ভাইবোন ছিল । তাদের সব অদ্ভুত অদ্ভুত ডাকনাম ... বড় পিসির নাম কুকু, মেজ জেঠুর নাম বুবু, ছোট কাকার নাম লুলু । বাবার নাম টাই মাঝখান থেকে কে যে খোকা রেখেছিল, জানা যায় না । পরবর্তী সময়ে এনারা সব কেউ শিকাগো, কেউ রোম, কেউ লন্ডন এ গিয়ে সেটল্ করেছিলেন । এক আমরাই পড়ে রইলাম এই কোলকাতায় ...ইটালিতে থাকার সময় আমার ছোট কাকার একটা অদ্ভুত নাম দিয়েছিল ওখানকার স্থানীয় লোকেরা । কি সেই নাম, কেউ বলতে পারবে ? ... ...
ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে এখনও। সকাল বিকেল অফিসের অনলাইন মিটিং করছি। অফিস মানে মিটিং তো ছিলই, ইদানিং মিটিং মানেই অনলাইন হয়েছে। মিটিং-এর আলোচ্য বিষয়বস্তু অবশ্য কোনোদিনই আমার মাথায় ঢোকে না। অফিসে বসে মিটিং করলে মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। আর অনলাইনে ইয়ার প্লাগ বেয়ে এ কানে ঢুকে ও কান দিয়ে বেরিয়ে সার্কিট কমপ্লিট করে। একটু কান কটকট করলেও মাথাটা বেশ হালকা থাকে সারাদিন। ব্যান্ডউইড্থ না কি একটা কারণে ক্যামেরা বন্ধ থাকায় মিটিংগুলো খুব আরামের হয়। সে যাইহোক, কয়েকদিন আগে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা হল এখানে। পরদিনের মিটিং-এ অফিসের এক গুরুজন সঠিক পরিকল্পনা, সময় আর সম্পদের সদ্ব্যবহার, খরচ কমানো, দক্ষতা বৃদ্ধি, 'ওয়ার ফুটিং'-এ ... ...
এটা কতটা পরীক্ষিত? 6 ঘন্টাই করোনা আসবে না কেন? প্রতি স্প্রেতে ছ’ঘণ্টা দূরে থাকবে করোনা, অভিনব আয়ুর্বেদিক মাউথ স্যানিটাইজার আনল হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিকস লিমিটেড বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: হলুদ, অ্যালোভেরা, গ্রিন টি’র নির্যাস সহ বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষধি দিয়ে তৈরি মাউথ স্যানিটাইজার আনল দেশের নামকরা কেন্দ্রীয় সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিকস লিমিটেড (হ্যাল)। সংস্থার দাবি, এই স্যানিটাইজার মুখের ভিতর স্প্রে করতে হবে। প্রত্যেকবার চার থেকে পাঁচটি স্প্রে করলেই অন্তত ছ’ঘণ্টা করোনাও থাকবে দূরে! এভাবে ছ’ঘণ্টা অন্তর পুরোটা পড়ুন ... ...
- দাদা, দুটো নবান্ন থেকে ধর্মতলা -- (কুড়ি টাকা হাতে ধরিয়ে দিতে বাস কনডাক্টর বলল...) আরও ১০ টাকা দিন- মানে! (পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড় আমার)- হ্যাঁ দাদা, মিনিমাম ভাড়া ১২ টাকা, আর ধর্মতলা পর্যন্ত ১৫ টাকা- কিন্তু কবে থেকে? এই তো লকডাউনের আগে ১০ টাকা ছিল- লকডাউনের আগে অনেক কিছুই ছিল দাদা, এখন আর নেই। লকডাউনের আগে আমার এক মাথা চুল ছিল, এখন ন্যাড়া। বুঝতেই পারছেন!- তা বলে বলা নেই কওয়া নেই একধাক্কায় এত টাকা বাড়িয়ে দিলে-বলা নেই কওয়া নেই ডিজেলের দামও তো বাড়ছে। কথা না বাড়িয়ে ১০ টাকা বার করে রাখুন এই বলে হন্তদন্ত হয়ে গেটের দিকে চলে গেল কনডাক্টর। ... ...