এক শহরের গপ্পো
জানি তো ফিরবেনাকুলে তো ভিড়বেনাভেঙেছে মাস্তুল, ডুবেছে শিপ। তবুও সন্ধ্যায়বন্ধ জানালায়হঠাৎ ছায়া, বুক কী ঢিপঢিপ। এখনও পড়ে মনেরামনবমী দিনেতোমার জামা আর সিঁদুরে টিপ। তোমার বাণী যত কীভাবে অবিরতছড়িয়ে দিত ওই দুইটি লিপ। সত্যি ফিরবেনা?শিকে কি ছিঁড়বেনা?কখনও কোনোদিন, আর দিলীপ? পু: জীবনানন্দের পরে এমন মরমী কবিতা আর হয়নি। কেউ যদি বুঝতে না পারেন, তো মানেবইএর অংশ হিসেবে বলে দিলাম। ... ...
পাহাড়চূড়ার সেই রাতটি আজও মনে পড়ে। / দিনের শেষে পাখিরা ফিরেছিল কুলায়। / কিছু পরেই, সূর্য গেল অস্তাচলে।
গত বছর লিখেছিলাম চাষাদের নিয়ে। অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের চাষা রা নয়। পশ্চিমবঙ্গে কৃষকরা হয় খুব রাজনীতি বোঝে, না হয় রাজনীতি চাষাদের খুব বোঝায়।বিশ্বাস করুন কৃষকদের নিয়ে লেখার ইচ্ছে একদম নেই। এই শ্রেণীর মানুষরা খুব স্বার্থপর বুঝলেন। শুধু নিজের কথা ভাবে। শুনুন ..এরা নেশা করে না। মদ খেয়ে বাওয়াল করে আন্দোলন করে না। চক্রবর্তীদের মেয়ে বা রাজপুতদের ছেলে নিয়ে এদের মাথাব্যথা নেই। এরা তৈমুর এর হাগুর গন্ধ জানতে চায় না কিম্বা কাশ্মীরের RDX নিয়ে মাথা ঘামায় না। দুধ থেকে সোনা বেরোনো নিয়ে এদের মাথাব্যথা নেই। হাইড্রক্সি ক্লোরোমুনন্ন আর জামাতি নিয়ে এরা নিস্পৃহ। এমনকি মন্দির মসজিদ কোথায় হবে সেটা নিয়েও রক্ত গরম করে ... ...
১৬ই ডিসেম্বর বা ২৬শে জুলাই জানেন কি? কেনই বা জানবেন। আসলে প্রসঙ্গগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর আপামর ভারতবাসী সেটা গিলছেও। আসলে অশিক্ষা নয় রীতিমত কুশিক্ষায় দেশটা ভরে গেছে। তাই আত্মদানের এই মহান স্বাধীনতা দিবস আজ আমাজন আর ফিল্পকার্টের সেলেই সীমাবদ্ধ। আর বাঙালি? বাঙালি নিজ স্বত্তা ভুলে হুবাহু এই কুশিক্ষাকে নিজ অন্তরে মজ্জাগত করে চলছে। পথের পাঁচালি খ্যাত বাঙালি আজকাল বাংলা সিনেমাকে ন্যাস্টি কালচার বলে। কথায় কথায় ফাক ইউ আর WTF বলা বাঙালি আজ সারাদিন সেট ম্যাক্স নয় তো জি সিনেমা বা স্টার মুভিস নিয়ে বসবে। ... ...
গ্রামে দুটো মাত্র প্যান্ডেল হত। ছোটখাটো। দুটোরই মঞ্চে যারা থাকতেন তাদের জন্যই আপনি গালি খেতেন। সিক্সে জানতাম আপনি ঠাকুর। দাঁড়িবালা ঠাকুর। হেব্বি লাগতো স্টাইলটা। চাচা নাখুস ছিল। বলতো সালা কুজাতের লোক, মুসলমানদের মত দাঁড়ি রাখে। ঈমান নাই। তখন থেকেই মনে হয় ধর্মে খড়ি। তখন থেকেই কাফের মনে হয়। আপনিই দায়ী। এইটে যখন পামেলা এন্ডারসন হিট। তখন শুনলাম আপনি বৌদিবাজ। হেব্বি কেচ্ছা নাকি কিসব চিঠিপত্র নিয়ে। সদ্য তখন টেস্টোস্টেরন থেকে প্রজেস্টরনের শুরু। আপনি তখন থেকেই গুরু, দেব নন। দেব মানে মূর্তি মনে হয়। ... ...
"সূচনায় সাবর্ণ পরিবার" বাংলায় ইংরেজ পদার্পণের সাথেই শুরু হয় বর্তমান কলকাতার নগরায়ন, ভেসে আসে সাবর্ণ রায়চৌধুরীর নাম যার থেকে কলিকাতা সুতানুটি ও গোবিন্দপুর তিনটি গ্রাম ইজারা নিয়ে কলিকাতা নগরের পত্তন করেন জোব চার্ণক । যদিও কোলকাতায় জোব চার্ণক এর পদার্পণের অনেক আগেই কলকাতার দুর্গাপুজোর সূত্রপাত এই রায়চৌধুীরি পরিবারের হাত ধরে। সময়টা আজ থেকে প্রায় ৪৩০ বছর আগে, বাংলার রাজনীতিতে তখন বারো ভু্ঁইয়ার রাজত্ব। কলিকাতা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল তখন ছিল যশোর অধীনস্ত বারো ভুঁইয়ার অন্যতম রাজা বসন্ত রায়ের অধীনে। ... ...
এবার নাকি রুনু গুহনিয়োগির 'সাদা আমি কালো আমি' অবলম্বনে হিন্দিতে রাজনৈতিক ওয়েবসিরিজ। চারু মজুমদার চরিত্রে নওয়াজ সিদ্দিকি। জ্যোতি বসু চরিত্রে, পরেশ রাওয়াল কিংবা বোমান ইরানি। একটা বাংলা ভারসানও নাকি হবে। নির্ঘাত ডাব-টাব। সত্যি-মিথ্যে জানিনা, ডিজিটাল আনন্দবাজারে পড়লাম। প্রথম রিঅ্যাকশনে আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয়েছিল। কিন্তু হিন্দি সিনেমার উপর রাগ করে আত্মহত্যা করতে হলে অনেক আগেই করা উচিত ছিল। তা যখন করিনি, এবারও ক্ষান্ত দিলাম। পরের চিন্তাই মাথায় এল, এবার একখানা ফিলিম বানিয়ে ফেলি। কত আর খারাপ হবে। খারাপ হলেই বা কী। যত খিস্তি, তত ভিউ। একদম ইংরিজিতে বানাব। ভারতের ইংলিস মিডিয়াম বিপ্লবী থেকে আমেরিকান আঁতেল, সব্বাই দেখবে। ... ...
সময়ের সিন্দুকে বন্দি রেখেছি আমার / দূরন্ত শৈশব কে / আমার যৌবন আমার বার্ধক্য দিয়েছি / দায়িত্ব ও কর্তব্য কে
যাচ্ছেতাই ...আরবে কেউ নাই আমার। ঘরের লোক বেছে বেছে ইয়া বড় মুসলমান নাম কিকরে রাখলো তা আজ অবধি বুঝিনি। নামের আগে আবার শেখ আছে আমার। আধার, রেশন, ভোটার সব ভুলের বাধা টপকে যখন সরকারি খাতায় ঠিক নাম দেখি তখন একটু জিরান আসে মনে। তাও শান্তি নাই। ইদিকের পঞ্চায়েত মেম্বার হেব্বি খাতির করে বলে কিনা আপনে মুরুব্বি মানুষ। জীবনে কিচ্ছু গোছাতে পারিনি। তাই কয়েক বছর ধরে নিজের ইমেজ গোছাচ্ছি। পলিটিক্যাল ইমেজ। নন পলিটিক্যাল নাকি আ পলিটিক্যাল জানি না। তবে দুটোই গোছাচ্ছি। ... ...
#redvolunteershaltu হালতু শ্রমজীবী ক্যান্টিন গত ৭০ দিনের উপর চলছে। ২০/- টাকা মূল্যে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। মূলতঃ স্বল্প আয়ের মানুষজন আসেন খাবার নিতে। কলকাতা বা কলকাতার কাছে যারা থাকেন, হালতু শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সাহায্যার্থে যদি কেউ চাল, ডাল, তেল, সোয়াবিন, মসলা, নুন, তাজা তরকারি, ডিম, চিকেন, মাছ খাদ্য সামগ্রী হিসেবেই সরাসরি দিতে চান, আমাকে দয়া করে জানাবেন। ... ...
তোমাকে প্রথম যেদিন আমি দেখেছিলাম, সেদিন তুমি মাক্স পড়ে ছিলে। আর সময়ই বা কতক্ষণ ছিল, খুব হলেও দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড। তোমরা আসলে আর চলে গেলে। আমি তোমার নামে কিছু কথা আগেই শুনেছিলাম, তাই একটু হলেও কৌতুহল ছিল তোমাকে দেখার জন্য। যখন তোমরা ঘরে ঢুকলে ব্যাগপত্র রাখার জন্য, তখন আমি একবার শুধু তোমার দিকে তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিই এই ভেবে যে, কেও যেন দেখে না ফেলে। কিন্তু, আজ যতটুকু তোমার সাথে কথা বলে তোমায় জানতে পারলাম, তাতে তোমার প্রতি আমার আগ্রহ বাড়তে থাকে। আমি যখন জেঠিমার সাথে কথা বলতে বলতে তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি, দেখি তোমার কোনো ইচ্ছাই ... ...
নিশাপুর গ্রামে এক দুপুর বেলায় সবার সামনে শামসুকে ন্যাংটা করা হলো, এবং তারে পুরা নিশাপুর গ্রাম ঘুরানো হল। উলঙ্গ অবস্থায় মাথা নিচু করে শামসু হেঁটে গেল। তার পেছনে পেছনে উৎসুক গ্রাম জনতা, তাদের নেতৃত্বে বিচারকবৃন্দ, তবারক আলি, করিম মিয়া, মুতাহার হুসেন ও আফতাব শেখ। শামসুর শাস্তি কী হবে এ নিয়ে মতবিরোধ হয়েছিল। গতকাল রাতে, টিনের বাড়ির সামনের বিস্তৃত উঠানের এক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে, এতে পোড়া কাঠ, বাঁশপাতা ইত্যাদি দিয়ে আগুন ধরিয়ে বসেছিলেন বিচারকেরা। শীত পড়া শুরু হয়েছে, এমন আবহাওয়ায়, এমন ঠান্ডা ঠান্ডা রাতের বাতাসে আগুনের সামনে বসে গল্প করতে ভাল লাগে গ্রামবাসীদের। চা আর মুড়ি খেতে খেতে করিম মিয়া প্রসঙ্গটা তুলেন। ... ...
ব্যথাগুলো ফেরত চাই... পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে নিলেও ঘরের লোকগুলো যারা বলতেন বেশ করেছেন, আরো দু চার ঘা দেবেন, বড্ড বাঁদর হচ্ছে দিন দিন, আর আমরা ব্যথার চোটে বড় হবার অপেক্ষা করতাম, সেই ব্যথা গুলো ফেরত চাই..
ছোটোবেলায় দূর সম্পর্কের এক দাদুর বাড়ি বেড়াতে যেতাম স্কুলের ছুটিছাটায়। প্রত্যন্ত গ্ৰামে বৈদ্যুতিক বাতি বিহীন ছিল সেই বাড়ি। গ্ৰামের সাথে পরিচয় আমার সেই সময় থেকে। যেখানে রাতের অন্ধকারে জোনাকের আলো আর জোড়ায় জোড়ায় জ্বলন্ত নিশ্চুপ চোখের চাহনি ছিল চাঁদের সাথী। সেইরকম সত্যি কারের রাতের কোলে লন্ঠনের আলোয় দিদিমা পড়ে শোনাতেন ঊপেন্দ্রকিশোরের টুনটুনির বই। ঘুম ঘুম চোখে আমরাহাঁ করে গিলতাম সেসব। সব চরিত্রের মধ্যে আমার আগ্ৰহ হত শেয়াল কে নিয়ে। মনে হত রাতের অন্ধকারে একা একা একটা শেয়াল চোখে চশমা এঁটে হেঁটে চলেছে। সে যেন বড় একা। মন জানতে চাইত শেয়াল যে পন্ডিত এ কথা জানলে কে? ... ...
গত জুন মাসে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আত্মহত্যার হার নিয়ে একটা চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করে। ওই তথ্য অনুযায়ী নাইন ইলেভেনের পর বিভিন্ন মার্কিন সামরিক অভিযানে ৭০৫৭ জন সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছে।.একই সময়ের মধ্যে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় বা অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছে ৩০,১৭৭ জন। অর্থাৎ সরাসরি সামরিক দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় যা মারা গেছে তার থেকে চার গুণ বেশি মারা গেছে আত্মহত্যা করে।.মার্কিন সামরিক বাহিনীতে সৈন্যদের খুব উঁচু স্তরের সামরিক ও মানসিক ট্রেনিং দেওয়া হয়। ট্রেনারদের লক্ষ্য থাকে সৈন্যদের সমস্ত মানবিক গুণাবলী সরিয়ে ফেলে শুধু আদেশ পালন করার মেশিনে পরিণত করার। ... ...
তখন বৃষ্টি হচ্ছিল, / এখন শান্ত চরাচর। / মেঘমুক্ত নয় যদিও অখিল / আকাশ,তবু পল্লবমর্মর
লেসার এভিল হয়ে ওঠার পদ্ধতি নং #২২১!! মুশকিল হল এটা শুধুই ব্যক্তিগত আদর্শহীনতা, শক্তিশালীদের সেটিং, পয়সার বা আপেক্ষিক গুরুত্বের খেলা কিম্বা ব্যক্তির দার্শনিক যাত্রার খামখেয়ালিপনা বা প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তরুন অভিষেক, ইত্যাদি কাহিনী দিয়ে ব্যাখ্যা করা হবে না, তারপরেও ভীষণ ভেতরের খবরের মতন করে যেটা চালানো হবে সেটাই সবচেয়ে মারাত্মক, সেই আখ্যানে বলা হবে, 'ভালো' আরএসএস বাংলার ভালো চেয়ে বাঙালি সর্বজন গ্রাহ্য নেতা তুলে আনছে, তৃণমূল বাহন মাত্র, বিজেপি একটু দুইটা টাক একটি দাড়ির প্রভাবে কেমন একটু ইয়েমত হয়ে গ্যাছে ... ...
ওগো নির্জনতা, জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে অনেক কথা, গান, গল্প বলে তবুও মনে হয়"কিছুই তো হল না .......কিছুতে মনের মাঝে শান্তি নাহি পাই,কিছুই না পাইলাম যাহা কিছু চাই।"এবার তোমার হাতে হাত রেখে পথ চলতে চাই।ব্রাহ্মমুহূর্তের আকাশের মনের কথা জানতে চাই ---প্রথম আলোর ছোঁওয়া পেয়ে আকাশ কেমন সেজে ওঠে দু চোখ ভরে দেখতে চাই ---রবির প্রথম কিরণ মনের অন্তঃস্থলকে আলোকিত করে --- অনির্বচনীয় আনন্দের সাক্ষী থেকো তুমি নির্জনতা!নির্জনতা ! তোমাকে বন্ধু করে, পাখির প্রথম কলরব শুনতে চাই ---শুনতে চাই প্রজাপতি, মৌমাছির পাখা মেলার শব্দ--- আরোও --- আরোও অনেক কিছু চাই ---ঝুপসি গাছের পাতাগুলোর কানাকানি, তিরতির করে বয়ে যাওয়া নদীটার বুকের শ্বাস প্রশ্বাস , ... ...
জীবনের অনেকটা বাঁক পেরিয়ে আমি আমার ছোট্ট বন্ধু মানিকের কথা ভুলতে বসেছিলাম। প্রায় দুই যুগ আগে বিবিসির বাংলা বিভাগের (এখন দৈনিক প্রথম আলোতে ) কুররাতুল আইন তাহমিনা, আমাদের মিতি আপার টেলিফোনে এক লহমায় মনে পড়ে যায় হারিয়ে যাওয়া সেই কালো মানিকের মায়াময় মুখ। মিতি আপা জানতে চান, আপনার কী মানিকের কথা মনে আছে?আমার প্রথমেই সাংবাদিক মানিকের নাম মনে পড়ে।মিতি আপা বলেন, আরে না, আমি টোকাই মানিকের কথা বলছি, ওই যে সে নাকি এক সময় আপানাদের সাথে দল বেঁধে ঘুরতো। আর খুব সুন্দর গান করতো।…হ্যাঁ, মনে আছে। কিন্তু কেনো?সময় থাকলে আপনি এখনই বিবিসির ইন্দিরা রোডের অফিসে চলে আসুন। খুব জরুরী। সে সময় বিবিসি ... ...