সেকেন্ড বার্থমৌসুমী ঘোষ দাস (ছোটো গল্প) অন্ধকার ব্যালকনি থেকেই যূথিকা বুঝতে পারলেন অনির্বাণ আর রিয়া ফিরেছে অফিস থেকে। সারাদিনে এইসময়টাতেই যেন প্রাণ ফিরে আসে বাড়িটায়। যূথিকাও একটু শ্বাস নিয়ে বাঁচেন। তোড়া অবশ্য বিকেলেই ফেরে স্কুল থেকে। খুব শান্ত, কম কথা বলে। চেঞ্জ করে খাবার খেয়ে একটু ল্যাপটপ নাড়াচাড়া করেই স্টাডি রুমে ঢুকে যায় ... ...
"পথিক, তুমি কি পথ হারাইয়াছ?" এ উক্তি বাঙলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উক্তি বলা চলে।পথ হারানোর মধ্যে যে চূড়ান্ত রোমান্টিসিজমের ছোঁয়া আছে তা যুগে যুগে বাঙালির মন ছুঁয়ে গেছে। গানে, কবিতায়, উপন্যাসে বাঙালি বার বার পথ হারিয়েছে বা হারানোর কল্পনায় রোমাঞ্চিত হয়েছে। দুই বঙ্গ কন্যা সেদিন নবকুমারের সেই পথ হারানোর আনন্দ পেতে রাতের কিয়োতো দর্শনে বেড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাধ সাধল গুগুল ম্যাপ। প্রযুক্তির দৌলতে ... ...
থ্রি প্লাস থ্রি ইক্যুয়েল টু সিক্স / আমি জানি, কারণ, আমি খাই হরলিক্স / আমি জানি না, কারণ, হরলিক্স আমি খাই না / খাওন দূরে থাক, এইগুলা আমি নজরে-ও পাই না / মাঝে মইধ্যে আমি খাই ইসবগুলের ভুষি / দ্যাখো কেমন শক্তি আমার / কেমন মারি ঘুষি!
তুমি কি নক্ষত্রকথা আমাকে জানাবে? / বিষ আকাশের নীচে, কমব্যাট-ফেটিগ সবুজ / বন্দুক যা জানে না তা, আমাকে জানাবে? / কালো পিঁপড়ের মতো, মানুষেরা ধুয়ে যায় জলে / কালো শরীরের মতো, মানুষেরা পুড়ে ফেটে যায়
বৃষ্টি হোক বা না হোক আকাশ মেঘলা / সব কালো মেঘ হাওয়ায় জিন দিয়ে আসে / আমি ভিজবো বলে ঠায় দাঁড়িয়ে, একলা- / চিলেকোঠার ছাদে;কোকিল আজো মধুমাসে।
পর্ব ৬ অর্ণব বেড়িয়ে যাবার পর জয়িতা একটু অবসর পায়। কিছু জিনিস শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আর বেড়তে ইচ্ছে নেই জয়িতার। বাইরে যেরকম বরফ পড়ছে। মনটাও কেমন যেন গুম মেরে আছে। আগে হলে অর্ণবের বেড়িয়ে যাবার পর পরই জয়িতা রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়ত। যে স্টোরে জয়িতা কাজ নিয়ে ছিলো সেটা তাদের বাসা থেকে একটু দূরে। জয়িতা ট্রাম ধরে নিত। এদেশের ডিপারটমেন্টাল স্টোর গুলো বেশ বড় । কত যে জিনিস সেখানে পাওয়া যায় তার শেষ নেই। জয়িতা বুদ্ধিমতী ... ...
( শেষ পর্ব ) কলতান সস্নেহে নীলেশের কাঁধে হাত দিয়ে বলল, ' আচ্ছা বাবু .... আখরি বার কব অ্যয়সা হুয়া থা ..... মতলব উও ঈশান বাবু আখরিবার কব উতনা আঁধারেমে আয়া থা ? 'নীলেশ একটু ভেবে তার শিশুসুলভ সারল্যে বলে দিল , ' যিস রাতকো উনকো কাতিল হুয়া থা .... বহুৎ সতানে লাগা ..... ও : ' । কলতান লক্ষ্য করল নীলেশের মুখে আবার ট্রমার ছায়া পড়তে যাচ্ছে। সে নীলেশের সঙ্গে তার আলাপচারিতা আর দীর্ঘায়িত করতে ... ...
রাত পৌনে নটা বাজে । কলতান সোলাঙ্কি প্রণবেশের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। প্রণবেশ দরজা খুলে কলতানকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কলতান হেসে বলল , ' সময় কাটছে না একা একা ..... তাই একটু এলাম । ওই মার্ডার কেসটার ব্যাপারে আমি মাঝে মাঝে এখানে আসি । আজকে রাতটা এখানেই থাকব ।'----- ' ও আচ্ছা আচ্ছা ..... আসুন আসুন । আপনি তো কলতান গুপ্ত, না ? আপনার নাম শুনেছি ... ...
১৯৪১ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কেঁপে উঠেছে ইউরোপ। ব্রিটেনের সামনে একটাই রাস্তা খোলা আছে। যদি নতুন মহাশক্তি আমেরিকা তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। রুজভেল্ট সাহেব চার্চিলকে জানালেন আমেরিকা সব কিছু দিয়ে ব্রিটেনকে বাঁচাবে , কোন সমস্যা নেই।.শর্ত একটাই – যুদ্ধ শেষ হলে সারা পৃথিবীতে ব্রিটিশদের অধীনে যত ভূখণ্ড আছে , সেখানে স্বাধিকার (সেলফ ডিটারমিনেশান) দিতে হবে। এর মানে হল – ব্রিটিশ ... ...
জাপান পূর্ব এশিয়ার সব থেকে বড়ো দ্বীপপুঞ্জের দেশ। যদিও ছোট ছোট অসংখ্য দ্বীপের সমাহার সেখানে তবু মোটের ওপর চারটে প্রধান দ্বীপ হল হোক্কাইডো, হোনশু, শিকোকু আর কিঊশু। উত্তর থেকে দক্ষিণ, আর পূর্ব থেকে পশ্চিম সমুদ্র দিয়ে ঘেরা এক ভূখন্ড জুড়ে কতো যে পুরাণ, কতো যে ইতিহাস ছড়িয়ে আছে তার ইয়ত্তা নেই। দক্ষিণপূর্বের এক কোণ ছুঁয়ে আছে চীন সাগর, পূর্বে আছে ফিলিপিন সাগর আর প্রশান্ত ... ...
কবিতার উপর ভরসা করে একটা শূন্য কিনে রেখেছিলাম। বেশ ভারী, ওজনে সস্তা, হাইড্রোজেনের জেনারেশন গ্যাপ। যে স্পেসে ৭০ থেকে ২২ এক হয়ে যায়। কে বড়, কী সামান্য, সে অসামান্য অসহিষ্ণুতা রাস্তা কেটে দেয়। সে সময়ে ঘড়ি থামিয়ে, ইঞ্জিনে জল ঢেলে, মাও এসে প্রশ্ন করে বিশ্বভারতী কথার অর্থ কী? সেখানে কি মরুঝড় আর তুষারপাতের সখ্যতা আছে? এই প্রশ্নের সাথেই আসে মিষ্টি জলের লেক, এক সামুদ্রিক বিপ্লবী, ও সহজিয়া ছন্দ। কোথায় যাবে , কী-ই বা পড়বে, কেনই বা তার মৈথুন হবে নজরদারি বন্দী? সুড়ঙ্গ কি খুঁড়েই নিয়েছে মৌচাকের অভিবাসীরা? জয় মানে কী? দগ্ধ মানেই বা কী? ভারাভারার কাঠিন্য যেনো পিছরি জাতির পাহারাদার! ... ...
সাত দিন পরে, আট দিনের মাথায় পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাওয়া গেল । বেলা বারোটা নাগাদ সমীরণ ঘোষ ফোন করে জানালেন ----' কলতানবাবু পি এম রিপোর্ট এসেছে । থানায় কপি পাঠিয়েছে মেল করে । এতে যা লিখছে ..... 'কলতান কথাটা চাপা দিয়ে দিল । বলল, ' থাক .... ফোনে কিছু বলতে হবে না মিস্টার ঘোষ ..... প্রবলেম হতে পারে । বিকেলে থানায় যাব । ওখানে গিয়ে দেখব । বডি রিলিজ করে দিয়েছেন ফর ক্রিমেশান ? '----- ' হ্যা হ্যা ..... আমার কনসেন্ট আমি ফরোয়ার্ড করে দিয়েছি ... ...
১ উপমহাদেশের রাজধানী এই শহরে সে আছে দুবছর ধরে। এখানে অলিতে গলিতে নানা মন্ত্রালয় , বড় বড় সরকারি দপ্তর , বিদেশি দূতাবাস। তাকে এখানে পাঠিয়েছে এদেশের এক অঙ্গ রাজ্যের একটি প্রাদেশিক ভাষার সংবাদসংস্থা, তার কাজ রাজনৈতিক খবর সংগ্রহ করা। প্রসঙ্গত, এখন এই দেশে সমস্ত অঙ্গরাজ্য , পঞ্চায়েত , শহরাঞ্চলে একই সাথে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় চার বছর পর পর। মানুষ নির্বাচন করেন দলকে, কোনও প্রার্থীকে নয়। ব্যালটে শুধু রাজনৈতিক দলের রং থাকে। দলীয় কর্মীরা প্রচার করেন নিজস্ব দলীয় পার্টি লাইন, কিন্তু তারা ভোটে দাঁড়ান না। প্রতিটি দল যারা নির্বাচনে অংশ নেয় তাদের আলাদা ... ...
বলবো বলবো করেও হয়নি বলা - / কিছু তারাদের বড় তাড়াতাড়ি থাকে; / চোখের তারায় অনায়াসে আলো জ্বালা - / আকাশকে তারা চিরঋণী করে রাখে।
যে চিঠি কখনও পাঠানো হয়নিইরফান খানকেআপনি আমাকে চেনেন না। কস্মিনকালেও দেখা হয়নি আমাদের। তবু উনত্রিশে এপ্রিল এক মন কেমনের দিন। সেদিন সকালটা ছিল থমথমে, সূর্যেরও মন ভারী। টিভি স্ক্রীনে সকাল হতেই বারবার ভেসে আসছিল একটি মুখ। তা আপনি। বিশ্বাস হচ্ছিল না এই হাসির এখানেই শেষ।সেদিন সবার চোখে জল ছিল। আড়ালে আবডালে আঁচল মুছেছে কেউ, কেউ ফুঁপিয়ে, কেউ আবার সজোরে...কারো বুকের বাঁ দিকটা একদম খালি ... ...
মাস্টারমশাই,ক্লাশ করাচ্ছেন জানি তবু একটু বিরক্ত করতে আসলাম।প্রত্তুত্বরে মৃত্যুঞ্জয় দুটো চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বললে,-কি যে বলেন মাস্টারমশাই,আগে বসুন।আপনারা আমার থেকে অনেক বেশি সম্মানের,আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন এ আমার পরম সৌভাগ্য।মৃত্যুঞ্জয় তখন স্কুলে সবে বাংলা ক্লাশ টা শেষ করে,ইংরেজি ক্লাশ টায় হাত দিয়েছে।ক্লাশের উৎসুক কৌতহলি দৃষ্টি,ওদের মৃত্যুঞ্জয় স্যারের দিকে।মৃত্যুঞ্জয় ওদের চেহারা দেখে সেটা খুব ভালো মতোন বুঝতে পারছে,তাই ওদের কৌতহল ... ...
"ম্যায় নে দিল সে ঢুন্ড লা না খুশি ........." কে ভেবেছিল অর্থের অভাবে প্রথম সারির ক্রিকেট ছেড়ে ১৯৮৪র ব্যাচের ন্যাশনাল স্কুল ওফ ড্রামায় যোগদান করা একটি ছাত্র পরবর্তীতে বদলে দেবে অভিনয় এর চিরায়িত সংজ্ঞা। জানি না কি বলব তোমায় নিয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে .... তোমায় নিয়ে কথা বলতে গেলেই বুকের কাছে জমাট বেঁধে ওঠে একদলা কষ্ট। ২০০৩এ হাসিল, ২০০৪এ মকবুল, ২০০৫এ রোগ, ২০০৬এ দ্য নেমসেক...... জানো ইরফান, ২০০৭এ প্রথম হলে গিয়ে দেখেছিলাম ... ...
শুনেই উথাল পাথাল মন। আসছে..সে আসছে। তার পৌঁছবার পদধ্বনি ওই শোনা গেল বুঝি। দিনের গতির সাথে, আলোর বাড়া কমা। মধুমালতীর পাতায় পাতায় ছায়ামাখা মেঘের ইশারা। চামেলীর সরু সরু ডালে, পাতার ঝিলিমিলি ছায়ায় প্রতীক্ষার প্রহর কি শেষ হবে তাহলে.. দক্ষিণের বারান্দার পুবের কোণে থামের আড়ালে, শ্বেত অপরাজিতা আর ছোট টবে আমগাছের কচি পাতায় ছায়াদের লুকোচুরি। আজ খুব ভোরেই চলে এসেছে পটা। ওহ্, চিনতে পারোনি বুঝি ... ...