কখনও কখনও বেড়াতে যাওয়ার কথা উঠলে, বন্ধু মহলে ইচ্ছা প্রকাশ করতাম আমি জাপান দেখতে যাব। বিশেষত: জাপানের চেরি ফুল ফোটা দেখার ভারি শখ ছিল। মানুষের মনে এমন কতোই তো শখ থাকে। কচু পাতায় জলবিন্দুর মতো সে সব শখ মনের শাখায় দোল খেতে খেতে একসময়ে টুপ করে খসে পড়ে। ভেবেছিলাম চেরি ফুলের শোভা দেখতে চাওয়ার শখটাও তেমনই একদিন মাটিতে মিশে যাবে। ... ...
এখন কলকাতা ও আশেপাশের জেলাগুলিতে প্রচন্ড দাবদাহ চলছে। পারদ চল্লিশ তো পেরিয়েছেই, রীতিমতো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। একেবারেই টেকা দায়। ভাগ্যবান মানুষের তবু ঘরে এসি আছে। আরো যারা ভাগ্যবান তাদের আবার এসির জন্য বাড়তি বিল দেবার ও সামর্থ্য আছে। একটু কম ভাগ্যবানেরা এসিও চালান আবার ভোরের দিকে এসি বন্ধ করে সাশ্রয় করার কথাও ভাবেন। ... ...
লে হালুয়া! কাকে ধরে কাকে ছাড়ি / বগলে চাপা চপ গুঁজে রাখি।
চব্বিশ তারিখে রাত দশটা নাগাদ বৈশাখীর মোবাইলে একটা কল এল। মোবাইল তুলে বৈশাখী দেখল --- কলতান গুপ্তর নাম ।------ ' হ্যা .... বলুন মিস্টার গুপ্ত ..... আমি এক্ষুণি আপনাকে ফোন করতে যাচ্ছিলাম । ভালই হল .... আমরা তাহলে কবে ..... '------ ' কাল সকাল দশটা থেকে বারোটার মধ্যে আমার বাড়িতে আসতে পারেন । যদি সম্ভব হয় দুজনেই একসঙ্গে আসবেন । '------ ' হ্যা ..... আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে দেখি । ওর প্রবলেমটাই বেশি গ্রিম । ... ...
সাফল্য আর ব্যর্থতার মাঝে আমি পাগলামী করে বেড়াই বাস্তবের ঝুলবারান্দা থেকে অবাস্তবের দিকে ঝুঁকে পড়ে, প্রায়ই ৷যতটা সহজে ব্যাপারটা লেখা গেল চমৎকার,ব্যাপারটা তেমন সহজ নয়আপনারা যারা অনেকটা আমার মতই ,একমাত্র তাঁরাই বুঝবেন আমার বিশ্বাস ৷আমার মতই দেখতে হলে ভাল হয়ভুড়িটুড়ি সমেত ,কদম ছাঁট চুল , ছাগুলে ঘোলাটে চোখ এসবই দরকার ।নামটাও এক হলে ভাল হয় আর ইয়ে , আপনাদের কারও রুমের দরজায় ভেতর থেকে লাগাবার ছিটকিনি কি প্রায়ই আটকে যায় ? আপনাকে শুদ্ধ রুমে আটক করে ? এইটেও খুব দরকার কবিতাটা বোঝার জন্য । ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানী নিষ্ঠুরতার ব্যপারে পশ্চিমা মিডিয়া সরব থাকলেও জাপানীদের বীরত্বের ব্যপারে চুপ থাকে । এশিয়ান দেশ হিসেবে জাপান যথেষ্ঠ শৌর্যবীর্যের প্রমাণ রাখে । জার্মানী আত্মসমর্পণ করলেও জাপান প্রতিরোধ চালিয়ে যায় এবং মিত্রবাহিনীর যথেষ্ঠ ক্ষতিসাধন করতে থাকে ।.এই ক্ষতি এড়াতে ও আণবিক বোমার ফিল্ড ট্রায়াল এবং বিশ্বকে পেশী দেখাতে সর্বোচ্চ নিষ্ঠুরতার পরিচয় রেখে আমেরিকা যূদ্ধ শেষ করে । ... ...
মাতৃত্ব তুষার সরদার খাটের তলা থেকে খুড়খাড় আর কিঁচমিঁচ শব্দ হচ্ছিল। রাত বারোটার মতো হবে বোধহয়। পাতলা ঘুমের পর্দা ছিঁড়ে যেতে শিখর উৎকর্ণ হয়। শব্দের উৎসটা বোঝার চেষ্টা করতে থাকে। প্রথমেই তার মনে হল শব্দের উৎস খাটের তলা। খাটের তলায় কাঠের অনেকগুলো তক্তা ডাঁই করা আছে। খাটের তলায় অত তক্তা রাখার কারণ আছে। ছয় আর আট বছরের দুই ছেলেমেয়ে আর বউকে নিয়ে শিখর এখন ভাড়ার বাড়িতে ... ...
মেট্রো রেল পরিষেবা: জাপান ও আমরা ২০১৯ সালে জুলাই মাস নাগাদ কলকাতা শহরে মেট্রো স্টেশনে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। এক ছেষট্টি বছরের বৃদ্ধের হাত মেট্রো রেলের দরজায় আটকে যায়। এবং এক বীভৎস দৃশ্যের সাক্ষী থাকে এই শহরবাসী। তখন মহামারী আমাদের গ্রাস করে নি। অনেক মৃত্যু মিছিল পেরিয়ে আজ আবার আমরা বাইশ সালে দাঁড়িয়ে। ভারতবর্ষে শুরু হতে চলেছে বুলেট ট্রেন পরিষেবা, জাপান থেকে আসছে 'শিনকান্সেন' তথা বুলেট ট্রেনের প্রযুক্তি, এমন একটা খবরে ভারতবাসী হিসাবে গর্ব হওয়াটাই সঙ্গত। কিন্তু ২০১৯ সালে কলকাতা মেট্রোর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের অনেকগুলো প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। এই দুর্ঘটনার দায় কার? বিদেশ থেকে প্রযুক্তি আমদানী করলেই কি সরকারের দায়িত্ব শেষ হয়ে ... ...
সুনন্দ মলের ভিতর ঘুরে বেড়াচ্ছিল একা। সে আগাগোড়াই একা। তার মতো লোকের কোন সঙ্গীসাথী থাকা মুশ্কিল । ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছিল। তারপরে আর টানতে পারেনি । মা এবং বাবা কেউই আর নেই। তারা অনেক চেষ্টা করেছিলেন ছেলেকে ঠিকমতো মানুষ করার । হল না । আত্মীয়স্বজন কে কোথায় আছে সুনন্দ জানে না । জানবার কোন আগ্রহও নেই । বত্রিশ বছর বয়স হয়ে গেল । একা একাই থাকে। ... ...
গল্প আমাকে ছেড়ে গেছে একেবারে, আঙুলগুলো শীতনিদ্রায় জড়োসড়ো যেনো, কলমের সাথে কয়েক আলোকবর্ষ দূরত্ব এখন, পেছনে তাকাই মাঝে মাঝে, অবাস্তব সব 'আমি'কে দেখি, দেখি মায়াবী মুহূর্তের মরীচিকা, দেখি মুছে যাওয়া মেঠো পথ, মাটির গন্ধ লাগে নাকে, নস্টালজিয়া, যদিও ঠুনকো কাঁচের মতো ভঙ্গুর সব, নতুন জীবনের সামান্য আঘাতে গুড়িয়ে যেতে সময় নেয় না মোটেই।পাপা, মেয়ের ডাক, মেয়েরা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে সম্ভবত, ক্যান ইউ হেল্প মি প্লিজ! ... ...
সেদিন একজন আক্ষেপ করে বলছিলেন, ''এত যে লোক আজকাল গান রেকর্ডিং করছে, ইউটিউবে আপলোড করছে ... ক'জনের নাম লোকে জানছে বলুন তো! পরিচিতি তো হচ্ছে হাতে গোনা গুটিকতক লোকের।'' তাঁকে আশ্বস্ত করে বললুম যে শুধু 'আজকাল'-ই যে এমনটা হচ্ছে, তা নয় । গ্রামোফোন রেকর্ডের যুগের (কেসেট, কম্প্যাক্ট ডিস্কের সময়কে বাদই দিন ) বানিজ্যিক ভাবে অসফল শিল্পীদের তালিকা যদি তৈরী করা হয়, তা নেহাত ছোটো হবেনা ... ...
কত শব্দ অন্তরালে ঝরে যাচ্ছে বৃথা / কত শব্দ দূর দেয়ালে মরে যাচ্ছে বৃথা / আগের মত হয় না কিছু, নদীর মরা সোঁতা
অ কাকা, সামু কাকা গো... আম্মো তুমার মত্ত ছেলিব্রিটি হুব। ধুস শালা। সেলিব্রিটি হওয়া কি অত সহজ নাকি রে ! হবো বললেই কি সব হওয়া যায় রে পাগলা.. ইচ্ছে করলে তুই কুলি কামিন, কিংবা ছোটখাট ব্যবসাদার থুড়ি হকার হতে পারিস। চপ শিল্প খুলতে পারিস। কিংবা পান বিড়ি দোক্তা এসবও বেচতে পারিস। এইগুলো ছাড়া, আর তুই যা-ই হতে চাস না কেন। হতে পারবি কিনা কোনো গ্যারান্টি নেই। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যেমন সহজ নয়। তেমনি সেলিব্রিটি হওয়া তো মোটেই সহজ নয় ... ...
নীলেশ একছুটে ঘরে ফিরে এল। দেখল তার মা কি একটা সব্জী রান্না করছে। তার আগে নিশ্চয়ই চাপাটি বানানো হয়ে গেছে। সব্জী পাকানো হয়ে গেলে মাম্মি তাকে খেতে দেবে। জোর ভুখ লেগেছে। এই সময়টা নীলেশের খুব ভুখ লাগে । সেই রাত্তিরে খেয়েছে । ভুখ লাগলেও নীলেশ কিছু বলে না। বেলা সাড়ে দশটা বাজে। পাপা সকাল নটার মধ্যে কাজে বেরিয়ে যায়। এখন পাপা নেই। ... ...
১ কিছুক্ষনের জন্য নীলচে অন্ধকার হয়ে গেছিল চারদিক। পরে হাসপাতালের বিছানায় জ্ঞান ফিরে এলে যযাতি রায়কে জানানো হয়েছিল, একটি বিশেষ খাদ্যে তার এলাৰ্জি ছিল যা সে জানতো না এবং খেয়ে ফেলায় তার শ্বাসনালী ফুলে প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে চার ঘন্টার জন্য সে চলে গেছিল কোমায়, যা থেকে জেগে ওঠা প্রায় অলৌকিক ঘটনা। অলৌকিকভাবে কোমা থেকে জেগে ওঠার থেকেও, এই বিশেষ খাদ্যে এলাৰ্জির বিষয়টা জানতে যে তার অর্ধেক জীবন চলে গেল, এটাই তার রীতিমতন আশ্চর্য লেগেছিল।সে জীবনে সফল একথা বলা যায় , স্ত্রী , ছেলে মেয়ে , মাথার ওপর ছাদ , মাস গেলে টাকা। কিন্ত একবার মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ... ...
সব থেকে সহজ বোধ হয় কোনো কিছু না লেখা। তারপর না লেখা পাতায় বাজারের ফর্দ টুকে ফেলা। সেই বাজার হয়তো করে আনতে হবে কোনো এক রবিবার। তারপর লেখা ফুরিয়ে যায়। যেমন বহুদিন পুকুর পাড় দিয়ে হাটা হয়না বিকেলে, হাটা হয়না পুরনো পাড়া ধরে বাজারের পথে। তেমনই এই ছোট্ট লেখাটা শেষ হয়ে যাবে কোনো এক নির্দিষ্ট শব্দতে পৌঁছে। সেই শব্দ কী আমি জানি? ... ...
ঈশানলাল একটা সিগারেট ধরাল। মুখ দিয়ে বকবক করে মদের গন্ধ আসছে। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি গেছে। ঠিকাদার তো আর বসিয়ে খাওয়াবে না। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছে প্রকাশের। কিন্তু মালিককে তো খুশ রাখতেই হবে। কাজ চলে গেলে নতুন কাজ পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে।
প্রণবেশ ওপরে উঠে কিচেনে ব্যাগ নামাবার আগেই সোলাঙ্কি তড়িঘড়ি জিজ্ঞাসা করল, ' এত দেরি হল যে ! ' প্রণবেশ থলে নামিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে বলল, ' ওই ..... পাশের ঘরের ভদ্রলোক .... সপ্তাখানেক হল এসেছে এখানে ..... ' ------ ' তো ... কি হল ? ' ------ ' না কিছু না ... আলাপ করছিল আর কি........ অমায়িক লোক ... ও : কি গরম .... ' ... ...
তোমাকে পাখি ভাবছিলাম অলীক কোলাহলে / চোখের কোন গাছ ছিলো না, রাত্রি হবে বলে / সমস্ত মুখ ঝাপসা হলো, নির্বাপিত, বাসি / এবার ফিরে যাবার টানে বাস্তু বানভাসি