একটি ঘোষণা। বিশ্বকাপের বাজারে দয়া করে একটু নজর দেবেন। ঘোষণাটি গুরুর এবারের প্রথম বইয়ের। বইটি ইন্দ্রাণীদির। ইন্দ্রাণীদি, ইন্দ্রাণী দত্তর গল্প যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন, সে কী ভয়ানক এক ব্যাপার। যেমন মোলায়েম, তেমনই তীক্ষ্ণ, যেমন তির্যক তেমনই অনুভূতিপ্রবণ। এর আগে এই অনুভূতিপ্রবণতা নিয়েই আমি লিখেছিলাম, যে, ইন্দ্রাণীদি হলেন অনুভূতির টিকিট-পরীক্ষক। অপরীক্ষিত অনুভূতিরা তাঁর গল্পের দরজা পেরোতে পারেনা। অপরীক্ষিত শব্দরা মাড়াতে পারেনা চৌকাঠ। তিনি নিক্তি নিয়ে বসে থাকেন দোরগোড়ায়। প্রতিটি অভিব্যক্তি, প্রতিটি বাক্যকে পরীক্ষা দিতে হয় তাঁর সামনে। পাশ করলে তবে ঢুকতে পারে গল্পের আঙিনায়। এসব লিখেছিলাম তাঁর প্রথম গল্পের বই প্রসঙ্গে। সে বই বেরিয়েছে। যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন, এক বর্ণও বাড়িয়ে বলিনি। বরং, ... ...
একটা গল্প শোনাই আপনাদের। সারা দুনিয়ায় ফি বছর ৪০ মিলিয়ন ফুটবল বেচাবিক্রি হয়। ৪ কোটির ৭০% তৈরি হয় পাকিস্তানের শিয়ালকোটে। হ্যান্ডমেড। হাতে সেলাই। কর্মীদের মেজরিটি নারী। গড়ে কত পায় জানেন বলপ্রতি? এই বছর $০.৭৫ (১৭০ পাকিস্তানি রুপি)।.সেই বল মাল্টিন্যাশনাল এডিডাস কোম্পানি বেচবে কত টাকায়? $১৬৫ ডলারে (৩৭ হাজার রুপি)। পাকিস্তানেরই বহু লোকে কিনবে 'বিশ্বকাপের বল' হিসেবে, স্মারক হিসেবে। এটা হল 'পুঁজিবাদ'। নামমাত্র মূল্যে ৩য় বিশ্ব থেকে শ্রম ক্রয় এবং মুনাফার পাহাড়। সম্পদের একমুখী প্রবাহ।.এডিডাস কোম্পানি কখনোই চাইবে না পাকিস্তান দারিদ্র্যমুক্ত হোক। সিম্পল সাইকোলজি। পাকিস্তান দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে গেলে এতো কম মজুরিতে এরা আর বল বানাবে না। মজুরি বাড়াতে হবে। দুর্ভিক্ষ বাধাতে ... ...
এখন দুয়ারে সব্জিযারা প্রায় রোজই বাজারে যায় বিশেষ করে আমার মতো অবসরপ্রাপ্ত মানুষেরা তাদের কাছে বিভিন্ন ঋতুভেদে সবজির দামের ওঠাপড়া এক দারুণ দেখার বস্তু। অর্থনীতির সাপ্লাই ও ডিমান্ডের তত্ব যে কত নির্ভুল তা চোখে না দেখলে প্রত্যয় হয় না। যেমন ফুলকপি আমি গত অগাস্ট মাসে বাড়ির একটি ভোজ উপলক্ষে ৬টি কিনেছিলাম কড়কড়ে নগদ ৩০০ টাকা দিয়ে।অর্থাৎ এক একটি কপির খুচরো মুল্য ছিল একবারে ৫০ টাকা। এই 'হাফ সেঞ্চুরি' দাম দোকানীকে কিছু কম করতে বলাতে সে এমন মুখটা করেছিল যেন বলতে চাইল 'ও কথা আর বলবেন না।' কড়াইশুঁটি মরসুমের শুরুতে ছিল ৩০০ টাকার মতো। পাতি লেবুও হঠাৎ দামি হয়ে গেছিল। ২০ ... ...
১.বন্দর নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।২.উপকূলীয় ভাঙন কমাতে হবে।৩. ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলির পুনর্বাসন এবং বিনামূল্যে অস্থায়ী আবাস দিতে হবে।৪.দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া জেলেদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।৫.জেলেদের ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে।৬.কেরোসিন তেলে ভর্তুকি দিতে হবে।৭.ক্ষতিগ্রস্ত মুথালাপোঝি বন্দরকে সংশোধন করতে হবে।এই সাতটি দাবি নিয়ে মূলত আন্দোলন করছে ভিজিঞ্জাম বন্দরের মৎসজীবীরা, ২০১৬ সাল থেকে। যবে দিয়ে ফাটকা পুঁজির খ্যাতনামা গাট্টাগোট্টা ব্যবসায়ী- আদানী গোষ্ঠী এই বন্দরে ৭৫০০০ হাজার কোটির প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। তবে দিয়ে বন্দরের লাগোয়া চার্চে, শান্তির পায়রা গুলির আসাও বন্ধ হয়েছে। মৎসজীবীদের আর কী! তাদের জীবনে সুখ শান্তি তেমন করে ছিলোই বা কবে? কখন?গৌতম আদানির সংস্থা ইতিমধ্যেই আন্দোলনে মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর অপরাধে কমপক্ষে ... ...
উওরমুখী বাতাস প্রবাহে ,মন ভাঙে অজস্র পাতার দলের ।তারাও হয়ত একসময়,একাকিত্বে ভোগে ।বুকে আশ্বাস নিয়ে ঝরে পড়ে,নতুন প্রজন্ম কে সাজানোর তাগিদে ।যদি একান্তই ঈশ্বর মানতে হয় , তবে , আমি বলবো , তা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ।তা , প্রকৃতির নিজের মন ।তাদের মৃত্যু প্রতি ঋতুতে, প্রতি কালে ,তবু তারা জীবন যুদ্ধে জয়ী থাকে ।প্রতি ঋতুতে তারা মানবজীবন কে শিখিয়ে যায় ,এ জীবন যুদ্ধ করে যাওয়ার জীবন । এ জীবনের ধ্বংস নেই ,এ জীবন নতুন প্রজন্মকে তৈরি করে দেওয়ার জীবন ।তবু কিছু প্রাক্তন পাতার দল রয়ে যায় ।নবীনদের সাথে ,নবীনদের সাথে মেতে ওঠে নবীনতার ছন্দে ।বাতাস তাদের ও দুলিয়ে যায় ।প্রতিমুহূর্তে হাসিয়ে যায় , আর ... ...
ঠোঁটের পাশেই ক্লান্ত বিধ্বস্ত লিপস্টিকঈশ্বরের স্থানাঙ্ক শরীরের ঠিক মাঝামাঝি-আনন্দ স্বরূপ; অপার্থিব এক পাশবিকমধুরতা; উনসত্তরেও নয় রইলো বাজি। পবিত্র ভন্ড হতে চাই না, চাই না ভিক্ষা গুঁড়িয়ে গর্জন করে নির্মম হতে চাই -সৃষ্টির আশায়।ওগো ঈশ্বরী কিসের অপেক্ষানিজেকে নিঃস্ব না করার সাহস আমার নাই! ওষ্ঠের নিষ্ঠীবনে ক্রমশ পিচ্ছিল পথআমি পা টিপে টিপে চলেছি সন্তর্পণেসব লালিমা শুষে নিয়ে মৃত্তিকার শপথআনবে নতুন কিশলয় বিষবৃক্ষ নিধনে। তারপর অভিষেকের পালা; শবনম..শবনম-উঠে আসবে তোমার বীণা বাজানো তুলিতেআমার কপালের ক্যানভাসে মৌন অনুপমএ তিলক আগুন পোহাবে হিমেল হেমন্তে। ... ...
বেলা বসু ১৯২০ সালে বর্তমান দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কোদালিয়া গ্রামের বিখ্যাত বসু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বেলা বসু। বাবা সুরেশ চন্দ্র বসু অর্থাৎ নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর সেজদা এবং মাতা সুধা বসু। নেতাজী ছিলেন বেলা বসুর আদরের রাঙ্গাকাকা। ১৯৪০ সালে রামগড়ে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন বয়কট করেন সুভাষ চন্দ্র বসু এবং আপোস বিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন। রামগড়েই নেতাজী আপোস বিরোধী সম্মেলন করেন এবং আন্দোলনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বাহিনী তৈরী করে দেন। এইখানেই যে নারী বাহিনী তৈরী ... ...
পারুলবালা মুখোপাধ্যায় আসল নাম পারুলবালা মুখোপাধ্যায় হলেও ১৯১৫ সালে কলকাতায় জন্ম নেওয়া এবং কুমিল্লায় বেড়ে ওঠা শ্রী গুরুপ্রসন্ন মুখার্জী ও শ্রীমতী মনোরমা দেবীর সন্তান, বিপ্লবী অমূল্য মুখার্জীর বোন এবং ঊষা মুখার্জীর দিদিকে বিপ্লবীদলের সদস্যরা ওই নামে চিনতো না। বিপ্লবী পূর্ণনন্দ দাশগুপ্তের হাত ধরে তাঁর বিপ্লবী দলে যোগ দেওয়া। শান্তি, নীহার, আরতি, খুকি শোভারানী, রানী, সুরমাদেবী ইত্যাদি অসংখ্য ছদ্মনামে তিনি বিপ্লবী কাজে সক্রিয় ছিলেন। পূর্নানন্দ দাশগুপ্ত আর শ্যামবিনোদ রায়চৌধুরী ছাড়া তার আসল নাম কেউই জানতেন না। ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ পুলিশ আন্তঃ প্রাদেশিক ষড়যন্ত্র মামলা বিষয়ে তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি ফেরার হয়ে যান। এই প্রথম তিনি শিরোনামে আসেন, কারণ তিনি ... ...
প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম ১৯১৪ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন কুমিল্লা জেলায় (ত্রিপুরাভূক্ত) জন্মগ্রহণ করেন প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম। পিতা শ্রী রজনীকান্ত ব্রহ্ম এবং মাতা শ্রীমতী রঙ্গবাসী ব্রহ্ম। তাঁর পিতা ছিলেন মোক্তার। কিন্তু তিনি কোর্টের পেশা ত্যাগ করে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন এবং এইরকম স্বদেশী ভাবাপন্ন পরিবেশেই প্রফুল্লর বেড়ে ওঠা। পিতার কাছ থেকেই প্রফুল্ল স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পেয়েছিলেন। তৎকালীন কুমিল্লা জেলায় সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলনের জোয়ার এসেছিল সেই জোয়ারে অনেক পুরুষ বিপ্লবীর পাশাপাশি যে কতিপয় নির্ভীক কিশোর-কিশোরী পা রেখেছিলেন প্রফুল্ল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন 'যুগান্তর' দলের প্রথম নেত্রী। তিনিও শান্তি ঘোষ এবং সুনীতি চৌধুরীর মতো কুমিল্লার ফৈজুন্নেসা চৌধুরী বালিকা বিদ্যালয়ের ... ...
সুনীতি চৌধুরী ১৯১৭ সালের ২২শে মে (১লা জৈষ্ঠ্য) তদানীন্তন বাংলার কুমিল্লা জেলায় শ্রী উমাচরণ চৌধুরী এবং শ্রীমতী সুরসুন্দরী দেবীর কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন সুনীতি চৌধুরী। আদি পিতৃভূমি ছিল ত্রিপুরা জেলার নবীনগর থানার ইব্রাহিমপুর গ্রামে। তিনি কুমিল্লার ফৈজুন্নেসা চৌধুরী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং শান্তি ঘোষ, প্রফুল্লনলিনী ব্রহ্ম প্রমুখ তাঁর সহপাঠী ছিলেন। বাবা সরকারী কর্মী হলেও সুনীতি ও তাঁর দুই দাদা বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন এবং 'যুগান্তর' দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। কুমিল্লা জেলার আর এক স্বনামধন্য বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তকে আদর্শ করেই তাঁদের বেড়ে ওঠা। লাঠিখেলা, ছোৱাখেলা, রিভলভার চালানো ইত্যাদিতে সুনীতি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। কুমিল্লা জেলার অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট চার্লস জিওফ্রে বাকল্যান্ড স্টিভেন্স ... ...
আমাদের পরাধীনতার ইতিহাস যত বড় তেমনি স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসও দীর্ঘ। কত শত, সহস্র ভারতবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তার কোনো হিসেব নেই আমাদের ইতিহাসে। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য ছিল পরাধীন মাতৃভূমিকে শৃঙ্খলামুক্ত করা। প্রত্যেকেই তাঁদের নিজস্ব ক্ষমতা অনুযায়ী অবদান রেখে গেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। আমাদের মানে প্রতিটি ভারতবাসীর অতীব লজ্জার বিষয় যে, এঁদের বেশীরভাগেরই নাম ইতিহাসের অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। ইতিহাসের পাতায় তাঁদের নামটুকুও খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা যখন আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি পালন করছি বিগত এক বছর ধরে, তখন কিছু কিছু স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম ও পরিচয় সামনে আনছি "অজ্ঞাত স্বাধীনতা সংগ্রামী" শিরোনাম দিয়ে। এটাও এক ধরণের অসম্মান বলেই মনে হয়। ... ...
(২৬/১১ কে মনে করে... ) 'সন্ত্রাসবাদ' কী আর কেনই বা এই সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছি আমরা - ভাবতে মাথার মধ্যে অসংখ্য প্রশ্ন কিলবিল করে ওঠে। আতঙ্কের একটা কালো চেহারা সমানে গ্রাস করে চলে আমাদের। বুধবার ২৬/১১ র ভয়ানক হামলা যখন মুম্বাইকে গ্রাস করল আবার নতুন করে নড়ে চড়ে বসলাম এই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে। রাতারাতি মুম্বাইয়ের পাঁচটি ল্যান্ডমার্কে একসাথে জঙ্গি হামলা, ও ভয়াবহ গুলিবাজি সহ ত্রাস আবারও প্রমাণ করে গেল যে দেশকে এখনও ততটা সুরক্ষিত করা যায়নি। সর্বোপরি ভারত তথা পৃথিবীর ইতিহাসে ২৬/১১ র এই কালো রাতটাকে মনে রাখবেন অনেকেই, মনে থাকবে চারপাশের বারুদ গন্ধ, চাপ চাপ রক্ত ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কত শত মৃতদেহ, চোখের জল আর ... ...
শিরোনামটা দেখেই সকলের দুটো শব্দের কথা মাথায় আসবে, দ্বান্দিকতা আর প্যারাডক্স। দ্বান্দ্বিকতার অর্থ হল, দুটি পরস্পর বিরোধী সংঘাতজনিত প্রক্রিয়া। আর প্যারাডক্স কথার অর্থ হলো, যে উক্তি আপাতদৃষ্টিতে স্ববিরোধী মনে হলেও সত্য বর্জিত নয়। এককথায় সভ্যতা শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে বলতে হয়, সভ্যতার ইংরেজি শব্দ হল civilization যা ল্যাটিন শব্দ civis থেকে এসেছে এবং যার অর্থ হলো, নগরে বসবাসরত কোন ব্যক্তি। অর্থাৎ মানব ক্রমবিকাশের যে ইতিহাস আমরা জানি, আদিম থেকে ক্রমশঃ গোষ্ঠীবদ্ধ জীব, খোলা আকাশ থেকে ক্রমশঃ বাসস্থান তৈরী, উলঙ্গ থেকে ক্রমশঃ নিজের লজ্জা নিবারণ করা, গাছের ফল আর কাঁচা মাংস খাওয়া থেকে ক্রমশঃ চাষ-আবাদ করে খাদ্যদ্রব্য তৈরী ও ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ, গোষ্ঠী থেকে ... ...
পরের ধন লোয়ো না , তাহাতে বিপদ ।চোরের ধন লৈতে পারো , অতি নিরাপদ ।।
চারঘোলাসুদীপ ঘোষালস্কুল থেকে ফেরে বিজু ঠিক পাঁচটার মধ্যে। কিন্তু তার স্ত্রী খুব চিন্তিত। সাতটা বেজে গেলো এখনও বিজু ফিরে এল না। বিজুর স্ত্রী পাড়ার সব প্রতিবেশীদের বলল,দেখুন আটটা বেজে গেল এখনও আমার স্বামী ঘরে ফেরে নি।পাড়ার ছেলে পিরু বলল, চিন্তা নেই। আমি আছি। দেখছি ফোন করে। ফোন নাম্বার ছিল পিরুর কাছে। কিন্তু ফোনের রিং হয়ে যাচ্ছে। কোন উত্তর নেই। বার বার বারোবার ফোন করেও কোন উত্তর পাওয়া গেল না।বিজু আর রাজু- মাষ্টার দুই বন্ধু। তারা দুজনে মোটর সাইকেলে স্কুলে যায়। তাই বিজুর স্ত্রী নিশ্চিত হল, রাত আটটা বেজে গেল। তার মানে কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাজু- মাষ্টারমশাইয়ের মোটর সাইকেল আ্যক্সিডেন্ট হয়েছে ... ...
তিন
পূজাসুদীপ ঘোষাল তুমুল বৃষ্টির দিনে খোলা আকাশের নিচে চারকাঁধে চলেছে বাবার শবদেহ।বাবা চিরকাল রবীন্দ্রসংগীতের সুরে ভিজে যেতেন।প্রত্যেক বাইশে শ্রাবণে বাবা বাড়ির সামনের ফাঁকা মাঠে কবিসম্মেলনে বিশ্বকবির গলায় ভেজা চোখে মালা দিতেন।নিজে গান গাইতেন, " যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে"... । গান শুনে ভিজে যেত আমার চোখ।আজ বাবা চলেছেন চার কাঁধে শবদেহ হয়ে,ঠিক তার কবিগুরুর মত।বৃষ্টিভিজে বাবা মাথা দুলিয়ে শুনছেন বোধহয় রবীন্দ্রনাথের গান।দূর থেকে মাইকে ভেসে আসছে রবিঠাকুরের গানের সুর, "আমার ব্যথার পূজা হয় নি সমাপন।" ... ...
ঘড়াসুদীপ ঘোষাল সাতন গাজনে সন্ন্যাসী হওয়ার আগে গঙ্গায় স্নান সেরে একঘড়া গঙ্গার জল নিয়ে বাসে উঠল।বাসে খুব ভিড়।হাতে তার বেতের লাঠি।কাঁধে গামছা।কোনোরকমে দাঁড়িয়ে থাকল এক ঘন্টা। কন্ডাকটরের দেখা নেই ভিড়ে।সাতন গন্তব্যে পৌঁছে বাস থেকে নামল।বাস থেকে নামার পর সাতনের বন্ধু বলল,তোর ঘড়া কই?সাতন বলল,ঘড়া নামাতে ভুলে গেছি রে।বন্ধুর কাছে তিরস্কৃত হয়ে সে বলে ওঠে,ঘড়া গেছে যাক, ভাড়া তো দিই নাই। ... ...